দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে ‘চুনোপুঁটি’ টানাটানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সত্যিকারের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধানের মেয়াদপূর্তি আসন্ন হওয়ায় আগামীর দুদককে কার্যকর সংস্থা হিসেবে দেখতে চায় টিআইবি।
এক্ষেত্রে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে সৎ, যোগ্য, নিরপেক্ষ, নেতৃত্ব গুণাবলীসম্পন্ন, দৃঢ়চেতা ও পেশাদার নেতৃত্বের নিয়োগ সরকার নিশ্চিত করবে বলেও আশা করছে টিআইবি।
কাল ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস সামনে রেখে এক বিবৃতিতে টিআইবি এই আহ্বান জানায়।
করোনা অতিমারির আর্থ-সামাজিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে স্বাস্থ্য খাতসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, এক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সরকারের জিরো টলারেন্স (শুন্য সহনশীলতা) নীতির কার্যকর বাস্তবায়নও দেখতে চায় ।
‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চাই দুর্নীতির প্রতি শূন্য সহনশীলতা: দুর্নীতি থামাও, জীবন বাঁচাও’ এই প্রতিপাদ্যে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ বছরও দিবসটি উদযাপন করছে টিআইবি।
জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০৩ সালের ৩১ অক্টোবর ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সনদ’ অনুমোদিত হয়। একই বছর ৯ থেকে ১১ ডিসেম্বর মেক্সিকোর মেরিডায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে উচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যে সনদটি উম্মুক্ত করা হয়। স্বাক্ষরের গুরুত্বকে স্মরণীয় রাখতে প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
টিআইবি ২০০৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন করছে এবং ২০১৩ সাল থেকে দিবসটি সরকারিভাবে পালন ও স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ২০১৭ সাল থেকে সরকারিভাবে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সুশাসিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে দেশে আইনের শাসন ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তাই সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রশাসন, বিচার প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশনের নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও দেশবাসীর স্বাধীন মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার অক্ষুণ্ন রাখার জোর দাবি জানায় সংস্থাটি।
করোনায় দেশে দুর্নীতি যে সর্বব্যাপী রূপ নিয়েছে এটাই এখন অপ্রিয় সত্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার’ ঘোষণা থাকলেও এখনকার বাস্তবতায় তা কী অর্থ বহন করে তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেন না। আমরা দেখতে পাচ্ছি -এই ঘোষণার বাস্তবায়ন আটকে যাচ্ছে শুধু চুনোপুঁটিদের টানাটানিতে। অথচ এই পর্যায়েই দুর্নীতির যে ভয়াবহতার কথা আমরা জেনেছি, তাতে এই প্রক্রিয়ার মূল কারিগর- যারা পেছনে থেকে কলকাঠি নাড়ছে, তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপ্তি ও আর্থিক মূল্য কী হতে পারে, সেটা চিন্তা করলেও আতঙ্কিত হতে হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একজন ছাত্রনেতার হাজার কোটি টাকা পাচার করার খবর দিয়েছে গণমাধ্যম মাত্র ক’দিন আগে। আরও ওপরের দিকের দুর্নীতিবাজ নেতাদের অবস্থা তো আমাদের কল্পনারও বাইরে। অথচ তাদের কারও বিষয়ে কোনো তদন্ত বা কার্যকর আইনি ব্যবস্থার খবর তো আমরা কখনও দেখিনি!’
“রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক অন্য যে কোনোভাবে ক্ষমতাবানরা বিচারহীনতা উপোভোগ করছে এমন অভিযোগ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুদক এক্ষেত্রে কার্যত ক্ষমতার বি-টিমের ভূমিকা পালন করছে। দুর্নীতি দমন ও এর কার্যকর প্রতিরোধে দুদককে কাগুজে বাঘের পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, ‘দুদকের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, জাতীয় রাজস্ববোর্ড এবং বিশেষ করে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসকেও তাঁদের নিরপেক্ষতা, দক্ষতা ও কার্যকরতার দৃশ্যমান উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। অন্যথায় গগণচুম্বী অর্থ পাচারসহ সর্বব্যাপী দুর্নীতির রাশ টানা অসম্ভব।
তিনি বলেন, সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কানাডার বেগমপাড়ায় অর্থপাচার সংক্রান্ত যে তথ্য প্রকাশ করেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যম জানাচ্ছে এই তথ্য খণ্ডিত এবং কেবল একটি পেশাজীবী গোষ্ঠীর কথাই জানানো হয়েছে। আমরা আশা করব, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে তথ্য চাইবে।
একইভাবে মালেয়শিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে বাংলাদেশ থেকে যে অর্থ পাচার হয়, তা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক ও জাতীয়ভাবে স্বীকৃত যে পদ্ধতি আছে, তা সরকার অনুসরণ করবে। একই সঙ্গে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনাসহ যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আওতায় আনবে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যম ও দেশবাসী সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং সহযোদ্ধা। অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালাকানুনসহ অন্য আরও সব আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে মৌখিকভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং মুক্ত গণমাধ্যমের প্রচার থাকলেও বাস্তবে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উভয় পদ্ধতিতেই গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তাই অবিলম্বে মুক্ত সাংবাদিকতা ও সাধারণের মতপ্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ৫ ফেব্রুয়ারি হস্তান্তর করা হয়।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। পাশাপাশি বিষয়টি কমিশনের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়। মোট ১৭ অধ্যায়ের প্রস্তাবের দ্বাদশ অধ্যায়ে রয়েছে অংশটি।
কমিশনের প্রতিবেদনে জনপ্রশাসনে কার্যকারিতার লক্ষ্যে সংস্কারের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে নাগরিক পরিষেবা প্রদানে জনপ্রশাসনের ভূমিকা, নাগরিক পরিষেবার কার্যকারিতা, আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সম্পর্কে প্রতিবেদনে সুপারিশমালা পেশ করা হয়েছে।
সুপারিশে আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার বিষয়ে বলা হয়, ‘নাগরিক সেবা প্রদানের বিষয়ে প্রশাসনিক পদ্ধতি তথা আমলাতান্ত্রিক বিধিবিধান সহজতর ও ডিজিটাল করা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে জনপ্রশাসনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সঠিক নীতি-নির্ধারণের স্বার্থে তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করা এবং নীতি-নির্ধারকদের কাছে তা পেশ করার নীতি চালু করা যেতে পারে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রীয় সম্পদ নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ প্রদান টার্গেট জনগোষ্ঠীর চাহিদা ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে হতে হবে। নাগরিকদের বিবিধ সরকারি পরিষেবা প্রদানের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করা এবং সেখানে তাদের অভিগম্যতা সহজতর করার উদ্যোগ নিতে হবে।
‘একটি গতিশীল ও কার্যকর পদ্ধতি চালু করতে হবে যাতে নাগরিকদের মতামত দেয়ার সুযোগ থাকে এবং তারা যেন স্বস্তি বোধ করে যে তাদের কথা শোনা হয়।’
কার্য সম্পাদনে প্রযুক্তি গ্রহণ ও প্রয়োগ বিষয়ে সুপারিশে বলা হয়, ‘কার্যবিধিমালা, মন্ত্রণালয়/বিভাগের কর্মবণ্টন ও সচিবালয় নির্দেশমালা পর্যালোচনা করে তা সংশোধন বা বিয়োজন এবং অনলাইনে তা সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিতে হবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে পাঁচটি ক্লাস্টারে ভাগ করা যেতে পারে।
‘সরকারি পরিষেবা সহজতর করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন পোর্টাল স্থাপন করা। সরকারি পরিষেবা পদ্ধতি গতিশীল করার জন্য ই-গভর্ন্যান্স কৌশল বাস্তবায়ন করা। ডিজিটাল টুল ও ডাটা ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অধিকতর দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ খাতে বেশি বিনিয়োগ করা।’
সুপারিশে উল্লেখ করা হয়, ‘নাগরিকদের সেবা প্রদান ও সম্পদ বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারী ও পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিকরণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।’
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন সোমবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিবেশন শেষে এ ঘোষণা দেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘জেলা প্রশাসকরা অভিযোগ করেছেন, অনেক জায়গায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে। তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা চান জেলা প্রশাসকরা।
‘জামুকার (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল) অধ্যাদেশ পরিবর্তন হচ্ছে। তারপর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘টিআর-কাবিখাতে বরাদ্দ নিবিরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যথাযথভাবে যেন পুনর্বাসন কার্যক্রম চলে। এখন থেকে ইউএনওরা টিনসহ কিছু সামগ্রী স্থানীয়ভাবে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কিনবেন।’
অভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যত্থানের পর সরকারি কর্মকর্তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে মনে করি। তাই স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
‘এ মাসের মধ্যেই জুলাই অধিদপ্তর গঠন হবে। জুলাই অভ্যুত্থানে মৃত্যুবরণ করা সবাই জুলাই শহীদ। আর আহতরা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে খ্যাত হবেন।’
আরও পড়ুন:বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জনতা বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে আন্দোলন করছে। এ ক্ষেত্রে শুধু তৌহিদি জনতা নয়, জনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী সব জনতাকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে দুপুরে কোস্ট গার্ড সদরদপ্তরে বাহিনীর ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও কোস্ট গার্ড দিবস-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের নদীপথ ও সমুদ্র উপকূলের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কোস্ট গার্ডের, যা তারা খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে মাঝে মাঝে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। কোস্ট গার্ড সেগুলো সফলতার সঙ্গে সমাধান করছে।
‘বিভিন্ন সময়ে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা আমাদের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রেও কোস্ট গার্ড ভালো ভূমিকা রাখছে। কোস্ট গার্ড ও বিজিবির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপকূল এলাকা আমাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়া সহজ হবে না। কারণ ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া পাসপোর্ট করা যাবে না।
‘রোহিঙ্গারা যেন জাতীয় পরিচয়পত্র না পায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর যারা ইতোমধ্যে পেয়েছে, তাদের ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করা হবে।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের বড় সমস্যা। এটি আমাদের সব ক্ষেত্রকে গ্রাস করে নিয়েছে। গত ছয় মাসে দুর্নীতির পরিমাণ অনেক কমেছে।
‘তবে এটি এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। দুর্নীতি যদি কমানো যায়, তাহলে সব সেক্টরে উন্নতি হবে।’
ওই সময় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন মোট ৫৮ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সচিবালয়ে সোমবার আসন্ন রমজান মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং বিগত ৬ মাসে মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামুদ্রিক জলসীমায়ও ইলিশ ও অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মৎস্য আহরণের ওপর প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সকল প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যেকোনো প্রকার মৎস্য ও চিংড়ি, কাঁকড়া, লবস্টার ইত্যাদি (ক্রাস্টাশিয়ান্স) আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়। এর ফলে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু এই সময়কাল পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সমন্বয় না থাকায় বাংলাদেশের মাছ আহরণে পার্শ্ববর্তী দেশের মৎস্যজীবীরা সুযোগ নিচ্ছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘তাই মৎস্য আহরণকারী সংগঠন এবং মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ব্যানড পিরিয়ড সমন্বয় করার দাবি উত্থাপিত হয়ে আসছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘তারই পরিপ্রেক্ষিতে মৎস্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য অংশীজন এবং মৎস্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। কারিগরি কমিটি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের স্থায়িত্বশীল আহরণ ও স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বঙ্গোপসাগরে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ মাছের ব্রিডিং পিরিয়ড এপ্রিল থেকে জুন মাস হওয়ায় ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মৎস্য আহরণ বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
‘অর্থাৎ এখন থেকে সামুদ্রিক জলসীমায় ইলিশ ও অন্যান্য মাছের আহরণের নিষিদ্ধ কাল হচ্ছে ৫৮ দিন (১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন)।’
এ ছাড়া হাওরে দেশীয় মাছ সংরক্ষণে জন্য ১৫ মে থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত হাওরে পানি আসার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ দিন বা সর্বোচ্চ ১ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে মতামত দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশ দুর্নীতির অনেক গভীরে ঢুকে গেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দুর্নীতি সব শেষ করে দিচ্ছে। এটা থেকে বের হতে না পারলে বাংলাদেশের কোনো গতি নেই।
রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সামনে বিশাল সম্ভাবনাময় জগৎ, শুধু আমাদের সিদ্ধান্ত এবং কর্মসূচিগুলো ঠিক করার অপেক্ষা। তারুণ্য আমাদের আছে, প্রাকৃতিক সুযোগ আমাদের আছে। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি, এই একটা জিনিস সব শেষ করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যেকোনো সমীক্ষায় আপনারা দেখবেন, বাংলাদেশ দুর্নীতির তালিকায় সর্বনিম্নে। সততা বলে আমাদের আর কোনো জিনিস নেই, শৃঙ্খলা বলে আমাদের আর কোনো জিনিস নেই। কাজেই এই দুর্নীতি থেকে বের না হলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব না।’
জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা আজকে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের সম্মেলনে এসেছি। কাজেই দুর্নীতি কোথায় আছে, কীভাবে আছে।
‘তাদের কাছে এটা অজানা নয়। এটা থেকে উদ্ধার পাওয়া ছাড়া বাংলাদেশের কোনো গতি নাই। এটা থেকে বের হতেই হবে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘এটা (দুর্নীতি) থেকে আমরা কেউ মুক্ত হতে পারছি না। এমন গভীরে ঢুকে গেছি আমরা।
‘আমরা যত বক্তৃতাই করি, এটা অসাড় কথা, যদি আমরা একটা সৎ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারি।’
দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা অল্প সময়ের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের আছি, কতটুকু সমাধান দিতে পারব জানি না। তবে শুরু থেকে আমরা একটা চেষ্টা করছি। সবাইকে এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
দুর্নীতি থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইন কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব জায়গাগুলোতে অনলাইন ব্যবস্থা আছে, সেগুলো পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও চায় আমরা দুর্নীতিমুক্ত হই। কারণ দুর্নীতিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই চলছে না। তারাও চায় আমাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য হোক, এটা তাদের গবেষণা।
‘আমরা তাদের সুযোগ দিতে চাই না। আমরা ব্যক্তিগত সুযোগ নিয়ে ব্যস্ত আছি। জাতীয় সুযোগের জন্য আমরা মোটেই চিন্তিত নই। আমাদের সেই চিন্তা বদলে ফেলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি কার্যক্রমে যুক্ত আছেন, তাদের অনুরোধ জানাই দুর্নীতি থেকে মুক্ত হতে। দুর্নীতি থেকে সরকারকে বের হতে হবে। সরকার যদি দেশের উপকারে আসতে চায়, তাহলে এটা থেকে আমাদের মুক্তি দিতে হবে।’
অনলাইন সেবা চালু করার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের এই আবেদন করব, আমরা থাকা অবস্থায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অনলাইন সার্ভিস, যেগুলো তৈরি আছে সেটা শতভাগ যেন আমরা বাস্তবায়ন করে যেতে পারি।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘কেউ এটা বাধা দেওয়ার জন্য যেন কোমর বেঁধে না লেগে যায়। কোমর বেঁধে লেগে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। কারণ এটি (দুর্নীতি) দিয়েই তো তারা সব সুযোগ সুবিধা পেত।
‘এটা বন্ধ হয়ে গেলে তাদের হবেটা কী? তারা নানা ব্যাখ্যা দেবে, এটা ব্যাহত করার জন্য। আমরা তাদের (দুর্নীতিবাজদের) মুক্তি দিতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘এটা হলো লোহার ফটক (দুর্নীতি), এটা অতিক্রম না করলে উন্নতি বলেন, কিছুই আসবে না। কিচ্ছু হবে না।
‘সম্মান, উন্নতি যাই বলেন, কিছুই হবে না। এটা ভদ্র লোকের সংসারের মতো হতে হবে, যে আমরা দুর্নীতিমুক্ত জাতি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের মতো দেশ যদি দুর্নীতি মুক্ত হতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না। সবাই মিলে চেষ্টা করলে আমরাও পারব।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি থেকে বিভিন্ন দেশ বের হয়ে এসেছে। এটা সম্ভব, অসম্ভব কিছু না। শুধু চেষ্টার দরকার। শুধু আমাদের প্রতিজ্ঞা দরকার, এটা আমরা করব।’
সম্প্রতি আরব আমিরাত সফরের কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আরব আমিরাতের লোক আমাদের দুর্নীতি নিয়ে বলছে, আমরা তোমাদের কোনো ডকুমেন্ট বিশ্বাস করতে পারছি না। এত ভুয়া। গৃহকাজের লোক কিন্তু সে সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছে মেডিক্যাল ডক্টর হিসেবে।
‘জলজ্যান্ত আমরা দেখছি এ ডাক্তার হতে পারে না। সে ডাক্তার না, কিন্তু সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছে। ডাক্তারের সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি নিয়ে ওখানে আসছে। আমরা কতটা বাছাই করব? লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায় যে, আমরা এটা কিছুই করতে পারছি না। আমরা কেউ না কেউ তাকে এই সার্টিফিকেট দিচ্ছি। এজেন্টরা জোগাড় করে দেয়। শুধু একটা এজেন্ট না বহু এজেন্ট আছে।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের বহু মেয়ে মধ্যপ্রাচ্যে হারিয়ে যাচ্ছে। নিয়ে গিয়ে কীসের মধ্যে ফেলে দিয়েছে কেউ জানেও না। মানব পাচারের যে বিষয়, তা অত্যন্ত বীভৎস।
‘আমাদের মেয়েরা যাচ্ছে, কী অবস্থায় ফিরে আসছে, যদি সশরীরে ফিরে আসতে পারে। কত লাশ কোথায় চলে যাচ্ছে, সেটারও কোনো হিসাব নেই। এই কোনো দেশ বানালাম আমরা। আমরা তো দায়ী।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিজের কাছে, নিজের সন্তানদের কাছে আমরা কী জবাব দেব যে, কাউকে আমরা রক্ষা করতে পারছি না। এই মৃত্যুর জন্য, এই মানব পাচারের জন্য আমরা দায়ী না।’
তিনি বলেন, ‘এ ভীষণ রোগ। আমাদের সারা গায়ে ঘা। এটা থেকে মুক্ত হতে না পারলে কোনো দিকে অগ্রসর হওয়ার উপায় নেই। আমরা আজকে প্রতিজ্ঞা করি, আমরা এই ঘা থেকে মুক্ত হব, সুস্থ হব, দুর্নীতির দায়ে আমাদের কেউ অভিযুক্ত করতে পারবে না। এই রকম সরকার চালাব, এ রকম সমাজ চালাব।’
আরও পড়ুন:পাসপোর্ট পেতে এখন থেকে আর পুলিশের ভেরিফিকেশন লাগবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে রবিবার তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে যে, এখন থেকে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিকদের একটি অধিকার।
‘জন্মসনদ বা এনআইডির জন্য যদি পুলিশ ভেরিফিকেশনের দরকার না পড়ে, তাহলে পাসপোর্টের বেলায় সেটা লাগবে কেন?’
ওই সময় সরকারকে একটি টিম হিসেবে কাজ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা টিমওয়ার্ক। পুরো টিমের সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করে এমন কিছু আমাদের এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’
ডিসিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মহাশক্তিধর একটি সমাবেশ। আমরা যা করি, যা চিন্তা করি, যা পরিকল্পনা করি, সেটাই সরকার; সেটাই সরকারের চিন্তা, সরকারের ভাবনা। সেটাই সরকারের কর্তব্য।
‘কাজেই এই মহাশক্তি নিয়ে আমরা কী কাজ করব, কী কাজের জন্য আমরা তৈরি, কী কাজে আমরা সফল, কী কাজে আমরা বিফল, সেগুলোই আজকের সমাবেশের আলোচ্য বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘সেখানে কাউকে স্তুতি দিয়ে সময় নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এই স্তুতিবাক্য পরিহার করার আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিলাম। সভা-সমিতিতে স্তুতিবাক্য খুব অগ্রহণযোগ্য জিনিস বলে আমরা চালু করব।’
সরকার পরিচালনাকে খেলার দলের সঙ্গে তুলনা করে ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে যা কিছু করণীয়, সেই করণীয়র দায়িত্বে আমরা সবাই আছি। এমনভাবে চিন্তা করুন, আমরা একটা খেলার, ক্রিকেট বা ফুটবল খেলার খেলোয়াড়।’
আরও পড়ুন:গ্যাস বা পেট্রলচালিত ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার (সিএনজিচালিত) অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশনার চিঠি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ফোর-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান সম্পর্কিত বিআরটিএ কর্তৃক ইস্যুকৃত সাম্প্রতিক নির্দেশনাটি আজ বাতিল করা হয়েছে। বিআরটিএ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ডিএমপি কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। ডিএমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবরোধ প্রত্যাহার করে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে চালকদের জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দেয় বিআরটিএ।
মন্তব্য