জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করতে যাচ্ছে রিসেপ তায়েব এরদোয়ানের তুরস্ক সরকার। ঢাকায় আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্যও নির্মাণ করবে তারা।
আগামী মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে এরদোয়ান আসছেন বলেও জানিয়েছেন তুর্কি দূত।
বুধবার সচিবালয়ে সাক্ষাতের পর একথা জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানও।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, একই সঙ্গে ঢাকায় আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক এর একটি ভাস্কর্য করা হবে।’
তুর্কি দূত বলেন, ‘আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি সড়ক আছে। ঢাকায় কামাল আতাতুর্ক এর নামে একটি সড়ক আছে। ঠিক সেভাবে আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্ক এর একটি ভাস্কর্য করা হবে।’
তুরস্কে বঙ্গবন্ধুর আরও একটি আবক্ষ ভাস্কর্য আছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান। তিনি জানান, ২০১৭ সালে তিনি আঙ্কারা সফরে গিয়ে ভাস্কর্যটি দেখে এসেছেন। যেখানে সে দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেখানেই এটি নির্মিত হয়েছে।
এই ঘোষণাটি এল এমন এক সময়ে যখন ধর্মের দোহাই দিয়ে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল। এসব দলের দাবি, ভাস্কর্য ইসলামবিরোধী। তাই এটি নির্মাণ করা যাবে না।
অবশ্য ধর্মীয় আলেমদের মধ্যে একটি অংশ সংবাদ সম্মেলন করেই জানিয়েছে, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে ভাস্কর্য নির্মাণ অবৈধ নয়। সৌদি আরব থেকে শুরু করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সব দেশেই ভাস্কর্য আছে, এমনকি মসজিদের সামনেও আছে।
ভাস্কর্য আছে তুরস্কেও, যে দেশে খেলাফত (ইসলামি শাসন ব্যবস্থা) কায়েম ছিল কয়েকশ বছর। আর মুসলিম বিশ্বে এখনও তুরস্কে কী হয়, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে।
ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে প্রথমে মাঠে নামে ইসলামী আন্দোলন। পরে একই সুর তুলে হেফাজতে ইসলাম। তারা হুমকি দিয়েছে, ভাস্কর্য হলে টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেয়া হবে।
শুরুতে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ থাকলেও সম্প্রতি তারা মাঠে নেমেছে। ভাস্কর্য হলে আরেকটি শাপলা চত্বর তৈরির হুমকি দেয়া হেফাজত নেতা মামুনুল হক প্রতিরোধের মধ্যে পড়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে এখন ভাস্কর্যবিরোধী ধর্মভিত্তিক দলগুলো সুর নরম করেছে।
আগে হুমকি দলেও এখন মামুনুল বলেছেন, তারা ভাস্কর্যবিরোধী হলেও সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবেন না।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস আজ ১১ জুন, রোববার। এক/এগারোর সরকারের অন্যায় সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে বিশেষ কারাগারে দীর্ঘ ১১ মাস বন্দিত্বের পর ২০০৮ সালের এই দিনে তিনি মুক্তি লাভ করেন।
এক/এগারোর অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন ভিত্তিহীন মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
কারাগারে থাকাকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। সে সময় চিকিৎসার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তার মুক্তির জোরালো দাবি ওঠে। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন, আপোষহীন মনোভাব এবং অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন বঙ্গবন্ধু-কন্যা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হারানো স্বপ্ন ও সোনার বাংলা বাস্তবায়িত হচ্ছে আজ তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে।
বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পিতার মতোই আপসহীন মনোভাব নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে শেখ হাসিনার যাত্রা শুরু হয়। জনগণের মুক্তির আন্দোলনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সহ্য করতে হয়েছে অনেক জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন। অসংখ্যবার মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়েছে। জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিতে অকুতোভয় নির্ভীক সেনানীর মতো নিরবচ্ছিন্নভাবে পথ চলেছেন শেখ হাসিনা। সব বাধা-বিপত্তি জয় করে আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বমহিমায় উজ্জ্বল এদেশের জনগণের নেত্রী।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:২০২৪ সালের জুন মাসে পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি জানিয়েছেন, শুরুতে ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত গেলেও আগামী বছরের জুনের মধ্যে তা যশোর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বগাইল এলাকায় ভাঙ্গা-যশোর অংশের (দ্বিতীয় পর্যায়) রেল লাইন স্থাপন কাজের উদ্বোধনকালে রেলমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহেই মাওয়া থেকে ঢাকাগামী ট্রেনের ট্রায়াল রান করাতে পারব। সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
‘ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত (দ্বিতীয় অংশের) কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে এ অংশের কাজ সম্পন্ন করা হবে। কাজ সম্পন্ন হলে রাস্তা অনেক কমে আসবে। এতে সময় বাঁচবে; যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে।’
রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘একটি বৈরী সময়ে আমরা এ প্রকল্পের কাজ করছি। শুরুতে কোভিড-১৯ মহামারি, পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাজের অগ্রগতি বার বার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
‘অবিভক্ত ভারতে আমরা যেভাবে রেল পেয়েছি, পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু রেলকে বিস্তৃত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর রেল শুধুই পেছনের দিকে গেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের গুরুত্ব বুঝতে পেরে আলাদা রেলপথ মন্ত্রণালয় করেছেন।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, ভাঙ্গার ইউএনও মো. আজিমউদ্দিন, ভাঙ্গা থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা, সাংগঠনিক সম্পাদক সোবহান মুন্সী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গত বছরও ডেকেছে সংলাপের জন্য। ভেবেছি ভালো কিছু একটা হবে। দুইবার প্রতারণার শিকার হয়েছি। তাদের কথা আর কেউ শুনবে না। কারণ অতীতে কথা দিয়ে কথা রাখেনি।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শনিবার দুপুরে এক স্মরণসভায় ওই কথা বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। দুইবার পাতানো নির্বাচন হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো আর ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ সংসদে ১০ শতাংশ আসনও পাবে না। চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক।’
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ চার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমূখে পদযাত্রা শুরু করে। পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড়ে এলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। এরপর সেখানেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
এতে সড়কের তিন পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের দাবির সপক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্বাস না আসা পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না।
অন্য তিনটি দাবি হলো অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও একটি ম্যুরাল) স্থাপন করা।
এর আগে বেলা ১১টার থেকে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
পরে তারা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য খোলা চিঠি লিখে সেটি বেলুনে করে উড়িয়ে দেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তারা সনদের ফটোকপি ছিঁড়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ বলেন, ‘৩০ ঊর্ধ্ব সনদের যেহেতু কোনো মূল্য নেই, তাই এসবের ফটোকপি ছিঁড়ে আমরা নিরব প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদযাত্রা নিয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেব। কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দেয়ায় আমরা এখানে বসে পড়েছি।’
আরও পড়ুন:উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত আছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে।
তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গরু উপহার দিলেন কিশোরগঞ্জের এক কৃষক দম্পতি।
বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবেসে উপহার দিতেই গত তিন বছর ধরে তারা গরুটি লালন-পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জানান, প্রধানমন্ত্রী তাদের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গরুটিকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই বিরল ভালবাসার জন্য খুশি হয়েছেন এবং কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাউনা গ্রামের বাসিন্দা বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রী ইশরাত জাহানকে ধন্যবাদ জানান।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুলবুল আহমেদ ও ইশরাত জাহানের গরু পালনের কথা জানান।
সব শুনে প্রধানমন্ত্রী অভিভূত হন এবং উপহার হিসেবে গরুটি গ্রহণে রাজি হন।
হাসান জাহিদ তুষার আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা হলো, গরুটি বুলবুল আহমেদের বাড়িতেই থাকবে এবং ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোরবানির পর গরুটির মাংস স্থানীয় দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করে দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
বুলবুল জানান, ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে তিনি নেত্রকোনা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় গরুটি কিনেন।
‘আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প’ থেকে ঋণ নিয়ে তারা ওই টাকা সংগ্রহ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরাগ ও ভালোবাসা থেকেই আমরা গরুটি কিনে লালন-পালন করেছি।’
প্রায় ৮০০ কেজি ওজনের গরুটি ক্রস ব্রাহমা জাতের। সাদা-কালো-ধূসর রংয়ের মিশ্রণের গরুটি দেখলে যে কারও চোখ আটকাবে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা সারাদেশে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের খেলাধুলার ক্ষেত্রে একটা নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এ ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই দেশে ফুটবলের উৎকর্ষ সাধন হবে। এক সময় আমরা ফুটবলের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়নও হতে পারব বলে আমি মনে করি। সেভাবেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত ‘শেখ হাসিনা আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৩’-এর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
টুর্নামেন্টের ফাইনালে আল আরাফা ইসলামী ব্যাংককে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে ইউনিয়ন ব্যাংক। প্রধানমন্ত্রী চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খেলাধুলা, শরীরচর্চা ও সাংস্কৃতিক চর্চা করলে মানুষের মেধা বিকশিত হয়। একইসঙ্গে দেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়, আত্মবিশ্বাস বাড়ে, দেশের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ বাড়ে। এই আয়োজন যেন এখানেই থেমে না যায়।
‘এ ধরনের একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় বাংলাদেশ অ্যাসিয়েশন অফ ব্যাংকসকে (বিএবি) ধন্যবাদ জানাচ্ছি। টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স-আপ দলকেও অভিনন্দন জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফুটবলের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন। আমার দাদাও প্লেয়ার ছিলেন। আমার ভাই শেখ কামাল ছিল আধুনিক ফুটবলের উদ্যোক্তা। কাজেই সেই দৃষ্টিতে দেখলে ফুটবলের সঙ্গে আমার অন্যরকম সম্পর্ক রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। যে কারণে ফুটবল খেলাকে আমরা সবসময় গুরুত্ব দেই। আমরা সরকারে আসার পর থেকে খেলাকে সবসময় গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা উদ্যোগ নিয়ে পুরো বাংলাদেশে মিনি স্টেডিয়াম করে দিয়েছি।
‘আমি বলেছি- সেখানে সারাবছর যেন খেলাধুলা হয়। একইসঙ্গে আমাদের দেশীয় খেলাধুলাকে আরও গুরুত্ব দিয়ে চর্চা করা হয়। আমাদের ছেলেমেয়েরাও যাতে পড়াশোনার পাশাপাশি বেশি বেশি খেলাধুলা করে সেটি-ই আমি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট ভালো ছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয়, কোডিভ অতিমারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে আমাদের সবার একটু কষ্ট হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী মানুষ কষ্টে আছে।
‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। গত কয়েক দিন তীব্র গরমে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছিল। অবশেষে বৃষ্টি আমাদের জন্য শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশ সব দিক থেকে বিশ্বের সেরা হবে। খেলাধুলা, অর্থনৈতিক উন্নতি-অগ্রগতিতে দেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মর্যাদা নিয়ে চলবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
‘আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে সবসময় মাথা উচুঁ করে আমরা চলব। এই আত্মবিশ্বাস নিশ্চয়ই আমাদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে থাকবে। আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করা যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জন্য একটা স্টেডিয়ামের আবদার করা হয়েছে। আমরা অবশ্যই স্টেডিয়াম করে দেবো। পূর্বাচলে ইতোমধ্যে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হচ্ছে। সেটির পাশেই আরেকটি ফুটবল স্টেডিয়ামসহ স্পোর্টসের জন্য যাতে একটা স্টেডিয়াম হয় সেই ব্যবস্থা আমরা করব।’
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত কয়েক দিন তীব্র দাবদাহের পর প্রশান্তির বৃষ্টি আমাদের খেলার পরিবেশ বদলে দিয়েছে। আমরা অত্যন্ত সুন্দরভাবে এই টুর্নামেন্ট সম্পন্ন করতে পেরেছি।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসা ও সর্বাত্মক পৃষ্ঠপোষকতা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। এই টুর্নামেন্ট প্রধানমন্ত্রীর নামে নামকরণ করায় তা সব খেলোয়াড় ও কর্মকর্তার মধ্যে সাহস এবং উদ্দীপনা জুগিয়েছে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে টুর্নামেন্টের নামকরণ দেশের খেলাধুলায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকস দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে।
‘তবে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন প্রমাণ করে তারা শুধু দেশের অর্থনীতি নয়, খেলাধুলায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও সবসময় কাজ করে যাবে।
বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘ছেলেদের জন্য আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়েছে। মেয়ে কর্মকর্তাদের নিয়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আন্তঃব্যাংক ব্যাডমিন্টন বা টেবিল টেনিস টুর্নামেন্ট আয়োজন করব। সেই টুর্নামেন্টও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে হবে। উনি আমাদের অনুমতি দিয়েছেন।
‘এই টুর্নামেন্টে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের একটি করে বোনাস দেয়ার জন্য ব্যাংকের চেয়ারম্যানদেরকে বলেছিলাম। এমনকি যেসব কর্মকর্তা খেলায় অংশগ্রহণ করেননি তাদেরকেও অর্ধেক বোনাস দেয়ার কথা বলা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, শেখ হাসিনা আন্তঃব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল, সদস্য সচিব ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, সেনা ক্রীড়া বোর্ডের সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ৩৪ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য