× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জাতীয়
তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে হত্যা
google_news print-icon

তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে ‘হত্যা’

তাজরীনের-গেটে-তালা-দিয়ে-হত্যা
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে পোশাক কারখানায় আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কাজ থেকে ওঠার চেষ্টা করলেও তাদের ধমকে বসিয়ে দেয়া হয়। পরে যখন উঠতে দেয়া হয়, তখন দেরি হয়ে গেছে। আবার একটি গেটে তালাও ঝুলিয়ে দেয় মালিকপক্ষ। এ কারণে ১১৪ জনের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা নয়, হত্যা বলছেন শ্রমিক নেতারা।

সাভারের আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনের বেঁচে থাকা শ্রমিকরা জানাচ্ছেন, আগুন লাগার বিষয়টি তারা টের পেয়ে নিরাপদে বের হওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। কারণ কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বারবার বলেছে, প্রশিক্ষণ চলছে; কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এমনকি গেটে তালাও ঝুলিয়ে রেখেছে।

শ্রমিকদের তখনই কাজ ছেড়ে উঠতে দেয়া হয়, যখন আর সিঁড়ি দিয়ে বের হওয়ার সুযোগ ছিল না।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ওই দুর্ঘটনায় ১১৪ জন শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রশাসন। চার-পাঁচ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে কত শত শ্রমিক কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, এটা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।

তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে ‘হত্যা’

এ ঘটনায় করা অবহেলাজনিত হত্যা মামলাটি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এটিও শ্রমিকদের ক্ষোভের একটি কারণ। আবার পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনেক পরিবার আছে কষ্টে।

বেঁচে ফেরার বিষয়টি এখনও বিশ্বাস হয় না খোরশেদ আলম রবিন ও ফাতেমা খাতুন দম্পতির। একই কারখানায় কাজ করতেন।

তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে ‘হত্যা’

চতুর্থ তলায় অপারেটর পদে কাজ করতেন ফাতেমা। পঞ্চম তলায় কোয়ালিটি কন্ট্রোলার পদে ছিলেন রবিন।

দুজনের বিয়ের সবে ছয় মাস। স্বামী-স্ত্রী কাজ শেষে একসঙ্গে ফিরতেন বাসায়।

রবিন জানান, পৌনে সাতটার দিকে অ্যালার্ম বেজে উঠার পর তারা নামার চেষ্টা করেন। তখন কর্মকর্তারা বলেন, প্রশিক্ষণ চলছে, কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

কিছুক্ষণ পর পুরো ফ্লোর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন তারা সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের কারণে পারছিলেন না। একটি সিঁড়িতে আবার কর্তৃপক্ষ তালাই মেরে দিয়েছিল।

এর মধ্যে কোনো রকমে চার তলায় এসে স্ত্রীর খোঁজ করেন রবিন। বলেন, ‘প্রচণ্ড ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে পারছিলাম না। সঙ্গে আগুনের তাপ। সেদিন বুঝতে পারছিলাম, মৃত্যু হয়তো বা এখনই এসে পড়েছে। স্ত্রী আর পরিবারের সবার কথা মনে পড়ছিল। ভাবছিলাম আর বাঁচব না।

তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে ‘হত্যা’

ধোঁয়া আর হুড়োহুড়ির কারণে স্ত্রীকে খুঁজে পাননি রবিন। পরে আবার পাঁচ তলায় ফিরে যান তিনি। ওই ফ্লোরের জানালা ভেঙে পাশের ভবনের ছাদে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হন।

ফাতেমা খাতুন কার কারণে বেঁচে ফিরেছেন এখনও জানেন না। তিনি বলেন, ‘রাত আটটায় ছুটি হওয়ার কথা ছিল। আমরা কাজ করতেছিলাম। সন্ধ্যার দিকে তিন বার হর্ন বেল বাজার পরে আমরা উঠতে লইছি। তখন খবির বস আর ময়মনসিংহের ফ্লোর ইনচার্জ রঞ্জু ছিল। উনারা বলছে, তুমরা উইঠো না। এখানে কিছু হয় নাই।’

বারবার শ্রমিকরা উঠতে চাইলেও তাদের গালাগাল করা হয়। ফাতেমা বলেন, ‘একে একে দুই-তিনবার এমনে উটতে লইছি। তারা বসায় দিছে; গালাগাল শুরু করছে।’

যখন নির্দেশ অমান্য করে কাজ থেকে উঠেন ফাতেমারা, তখন দেরি হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আগুন অনেক ছড়ায় গেছিল। আমরা আর নামতে পারলাম না। নিচের মেয়েদের গেট দিয়া গেলাম। হেটাও আমরা নামতে পারি নাই। আমি পড়ি গেছি।’

কার বদান্যতায় বেঁচেছেন, সেটা আট বছরেও জানেন না ফাতেমা। ওই লোকটা বেঁচে আছে না মারা গেছে, সেটাও প্রশ্ন হয়ে রইল তার কাছে।

ফাতেমা বলেন, ‘তখন আমার ছয় মাসের বাচ্চা পেডে ছিল। কে যেন আমারে উঠায় নিছে আমি বলতে পারলাম না। পরে উপরে গিয়া পাশের বিল্ডিংয়ের ওরা বাঁশ বাইন্ধা দিছে ওই দিক দিয়া নিচে নামি।

‘পইড়া যাইয়া সাইরা আমি অসুস্থ হইয়া গেছি। আমার পায়ে কাইটা গেছে, কোমড়ে ব্যথা পাইছি। এখনও পায়ে যন্ত্রণা করে। আর ওই দিনের কতা মনে হইলে ভয় পাই।’

তাজরীনের গেটে তালা দিয়ে ‘হত্যা’

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা মালিকের অবহেলা। কারণ ওই দিন কারখানার কলাপসিবল গেট বন্ধ ছিল। এটা কোনো দুর্ঘটনা না, এটা হত্যা, যার কারণে এত মানুষের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো না।’

ক্ষতিপূরণের দাবি

রবিন-ফাতেমা দম্পতি বিদেশি একটি এনজিও থেকে পাঁচ লাখ টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়ি ভাড়ার বকেয়া পরিশোধ আর একটি ব্যবসা করার চেষ্টায় লোকসানের পর কিছুই থাকেনি।

রবিন এখন শাক ও অল্প কিছু মৌসুমি ফল বিক্রি করেন। আগে দুজন আয় করতেন। এখন এক জন করেন যৎসামান্য। স্বভাবতই সংসারের চাকা ঘোরে তো ঘোরে না।

তখন গর্ভে থাকা মেয়ে নূরে জান্নাতের বয়স এখন আট। সাত বছর পর হয় আরেক কন্যা। এখন বয়স ১১ মাস। সন্তানদের ভরণপোষণ ও লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় এই দম্পতি।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আট বছর পার হয়ে গেলেও তাজরীনের আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসনে সরকার বা বিজিএমইএর পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়নি।’

শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘প্রথম দফায় লিংকথিংক নামে একটা বায়ার ১০০ শ্রমিককে ১ লাখ করে টাকা দিয়েছিল। সেটা তারা বিজিএমইএর মাধ্যমে দিয়েছিল। ওটাকে বিজিএমইএ তাদের সাহায্য হিসেবে বলার চেষ্টা করেছিল।’

এরপর ২০১৬ সালে তাজরিন ক্লেইম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি শ্রমিকদের সহায়তা করে। তখন নিহত শ্রমিকদের স্বজনদের ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আহত শ্রমিকরা প্রকৃতপক্ষে এক থেকে আড়াই লাখ টাকা করে পেয়েছে।

তবে ক্ষতিগ্রস্ত সবাই এই ক্ষতিপূরণ পায়নি। ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে ৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৫ শ্রমিক।

শ্রমিক নেতা মিন্টু এ বিষয়ে বলেন, শ্রমিককল্যাণ ফাউন্ডেশন নামে শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য সরকারের বড় ফান্ড আছে। এখানে কোটি কোটি টাকা জমা আছে। এই তহবিল থেকে শ্রমিকদের সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে শুনেছেন; কিন্তু কিছুই হয়নি।

আরও পড়ুন:
‘এইডা ভাইঙা দেইক, না হয় মেরামত কইরা চালু করুক’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
The price has increased but the charger fan does not match
দাবদাহে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং

দাম বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে সংকটও

দাম বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে সংকটও রোববার গুলিস্তানে সুন্দরবন মার্কেটে এক দোকানে চার্জার ফ্যানের জন্য ক্রেতার ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা
দেশজুড়ে দাবদাহের মধ্যে চলছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। এ অবস্থায় চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে। বেড়েছে এসি, আইপিএস, সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারির বিক্রিও। চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন দোকানিরা। তারপরও মিলছে না চার্জার ফ্যান। বলা হচ্ছে, সব বিক্রি হয়ে গেছে।

বেলাল উদ্দিন পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর শান্তিনগরে। চলমান দাবদাহে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে রোববার সকালে গেলেন এলাকার ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানে। উদ্দেশ্য, চার্জার ফ্যান কেনা। একে একে ৪-৫টি দোকান ঘুরেও কোন দোকানেই মিললো না চার্জার ফ্যান। দোকানিদের বক্তব্য, ক্রেতার চাপ বেশি। স্টকে থাকা সবই বিক্রি হয়ে গেছে।

বেলাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৪-৫ দোকান ঘুরে না পেয়ে অবশেষে তিনি যান ওয়াল্টনের শো-রুমে। শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগের দিকে এগুতেই রাজিয়া মঞ্জিলে ওই শো-রুমে যাওয়ার পরও হতাশ হতে হলো। শো-রুমের এক কর্মী বললেন- গতকালই (শনিবার) আমাদের এখানে অন্তত একশ’ চার্জার ফ্যান বিক্রি হয়েছে। স্টক শেষ। কোম্পানিতে অর্ডার পাঠানো হয়েছে। দুই/তিন পর এল পেতে পারেন।’

‘তবে ওই বিক্রেতা ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম বললেন ৩ হাজার ৯৯০ টাকা। আর ১৪ ইঞ্চি আকারে ফ্যানের দাম ৪ হাজার ৩৯০ টাকা। এটা আমার কাছে বেশি মনে হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে লোডশেডিংয়ের সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারা চার্জার ফ্যানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’

বাজার ঘুরে অবশ্য চার্জার ফ্যানের দাম নিয়ে বেলাল উদ্দিনের বক্তব্যের সত্যতা মিলেছে। কোম্পানিভেদে প্রতিটি চার্জার ফ্যানের দাম ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

গুলিস্তানের সুন্দরবন মার্কেটের পাইকারি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিক্রেতা রাজিব খানও দাম বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন।

রোববার দুপুরে রাজিবের ‘খান এন্টারপ্রাইজ’ নামের দোকানে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতার ভিড়। ওই মার্কেটের অন্য সব ইলেক্ট্রনিকসের দোকানেও ক্রেতার ব্যাপক আনাগোনা দেখা গেছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে অনেকেই এসেছেন তার দোকানে। সবার একটাই চাহিদা- চার্জার ফ্যান।

দাম বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে সংকটও

রাজিব খান বলেন, ‘গত ৪-৫ দিন ধরে চার্জার ফ্যানের চাহিদা অনেকটা বেড়ে গেছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এগুলো আমদানি করা পণ্য। মার্কেটে সরবরাহে ক্রাইসিস দেখা দিলেই দাম বেড়ে যায়। আমদানিকারকরা যে পণ্য এক মাস ধরে বিক্রি করবেন, চাহিদা বাড়ায় সেই পণ্য ১-২ দিনেই শেষ হয়ে গেছে।

‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ানোর কারণে আমাদেরও দাম বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বিক্রেতাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গত ৪-৫ দিনে ফ্যানের সাইজ ও কোয়ালিটি ভেদে ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গেছে।’

মহল্লার দোকানেও একই চিত্র

শনিবার রাত সাড়ে ১০টায়ও মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডে ইলেক্ট্রনিক্সের দোকানগুলোতে চার্জার ফ্যান কেনার হিড়িক দেখা যায়।

এখানে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর হাউজিং লিনটেডে। লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে দিনে রুমে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণ পর পরই কারেন্ট চলে যায়। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। কিন্তু দোকানিরা দাম অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। যে ফ্যান আগে ৫ হাজার টাকায় কিনেছি, সেই ফ্যান এখন সাড়ে ৬ হাজার টাকা চাচ্ছে। দোকানি বলছে- ফ্যানের সাপ্লাই কম অনেক, তাই দাম বেশি।’

নোমানের মতো আরও বেশ কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার এই প্রতিবেদকের। তাদের কেউ চার্জার ফ্যান কিনেছেন, কেউবা কিনতে এসেছেন। সবার একটাই কথা, মনের মতো চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না। আর পেলেও দাম অনেক বেশি।

সোলার প্যানেল ও ব্যাটারির দাম বেড়েছে

প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে চার্জার ফ্যানের চাহিদা সবচেয়ে বেশি হলেও এই মার্কেটে এসি, আইপিএস, সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারির বিক্রি বেড়ে গেছে। প্রভাব পড়েছে দামেও।

এ অবস্থায় ঢাকার বাইরে থেকে আসা ক্রেতাদের এসব পণ্য কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

মার্কেটটির ফারহানা ইলেক্ট্রনিকসের বিক্রেতা রবিউল আলম বলেন, ‘সোলার আইটেমের সঙ্গে এসি/ডিসি লাইটের বিক্রিও খারাপ না। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা চার্জার ফ্যানের। তবে সরাসরি বিদ্যুৎনির্ভর ফ্যানের চাহিদা নেই।’

কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মো. সুমন বলেন, ‘গরম বেড়ে যাওয়ার কারণে সোলার আইটেম ও আইপিএসের চাহিদা বেড়েছে। দোকানের জন্য আজ মাল কিনতে এসে দেখি দাম অনেক বাড়তি।’

সুন্দরবন মার্কেটের দোতলায় ওয়ার্ল্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেদের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গরমের কারণে আইপিএসের চাহিদা ও দাম দুই-ই বেড়েছে। সোলার প্যানেল ও ব্যাটারির বিক্রি বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে দামও। সোলার প্যানেলে প্রতি ওয়াটে দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। এছাড়া মানভেদে ব্যাটারির দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীরা মাল কিনতে এসে দেখছেন দাম বেশি। তারাও মন খারাপ করছেন। আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা যেমন দামে কিনি তেমন দামে বিক্রি করি। তবে দাম বাড়লেও বিক্রি ভালো।’

দাম বেড়েছে চার্জার ফ্যানের, বেড়েছে সংকটও

বেড়েছে এসির চাহিদাও

নুরজাহান রোডের আরবি ইলেক্ট্রনিক্সের ইনচার্জ মঞ্জুর মোর্সেদ বলেন, ‘গত ৩-৪ দিনে এসির বিক্রি বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৩-৪ গুণ বেশি এসি বিক্রি হচ্ছে এখন। তবে সমস্যা হচ্ছে এসির সাপ্লাই কম।’

মোহাম্মদপুরের সপ্তর্শী ইলেক্ট্রনিক্সের মালিক সুমন নন্দী বলেন, ‘রোজার ঈদের সময় গরমে এসি বিক্রি হয়েছিল অনেক। তবে গত কয়েক দিনের গরমেও এসির বিক্রি বেড়েছে, তবে রোজার ঈদের সময়ের চেয়ে একটু কম। এসি, কুলার, চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি। আমাদের সাধারণ দোকান। অন্য সময় দিনে ১-২টা এসি বিক্রি হলেও এখন ৫ থেকে ৭টা এসি বিক্রি হচ্ছে।’

এসির টেকনিশিয়ানের অভাব

এসির বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা পড়েছেন আরেক সংকটে। স্বাভাবিকভাবে দিনে এক থেকে দুটি এসি বিক্রি হয়। সেই চাহিদা মাথায় রেখেই দোকানিরা এসি বাসা বা অফিসে নিয়ে সেট করে দিয়ে আসার জন্য টেকনিশিয়ান রাখেন।

বর্তমানে বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এসি নির্দিষ্ট সময়ে সেট করে দিয়ে আসার মতো টেকনিশিয়ান নেই অধিকাংশ দোকানে। এ অবস্থায় সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে হাতেগোনা টেকনিশিয়ানদের। কোনো কোনো ক্রেতার বাসায় গভীর রাতে গিয়ে এসি সেট করে দিচ্ছেন তারা।

এসি কিনতে আসা ঢাকা মেডিক্যালের চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাসায় এয়ার কুলার আছে। কিন্ত এই গরমে তা দিয়ে কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এসি কিনতে এসেছি। তবে সমস্যা হলো দোকানিরা বলছেন তাদের টেকনিশিয়ানের অভাব। এসি সেট করে দিতে একদিন দেরি হবে।’

মোহাম্মদপুরের এইচ এ ইলেক্ট্রনিক্সের বিক্রেতা ওহিদুর রহমান বলেন, ‘এসি টেকনিশিয়ানের অভাব। গরমের কারণে হুট করে এসির চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু টেকনিশিয়ান অর্থাৎ এসি বাসায় গিয়ে সেট করে দেয়ার জনবল তো বাড়েনি। তাই তাদের এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এসি বিক্রি করেও ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস দিতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘মার্কেটে এয়ার কুলারের অভাব। সাপ্লাই থাকলে এখন প্রতিদিন অন্তত ২০টা এয়ার কুলার বিক্রি করতে পারতাম। এসিরও সাপ্লাই নেই। কারণ এলসি করতে পারছে না কোম্পানি।’

গরমে বেড়েছে রোগবালাই

একে তো ভয়াবহ গরম, তার ওপর চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এ অবস্থায় গরমজনিত রোগবালাই বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ফলে ওষুধের দোকানে ভিড় বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা শিশুদের সর্দি-জ্বর, কাশির সিরাপ, ওরস্যালাইন ও গ্লকোজের।

বসিলার রিফাত মেডিক্যাল কেয়ারের মালিক মো. আজাদ বলেন, ‘গত ৪-৫ দিনে এলার্জি ট্যাবলেট, স্যালাইন, ঘামাচি পাউডার, গ্লুকোজ, টেস্টি স্যালাইন, জুস, কোমল পানীয় বিক্রি বেড়েছে। আর শিশুদের সর্দি-জ্বর ও কাশির ওষুধের বিক্রিও অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে এসব ওষুধের সাপ্লাইয়ে কোনো ঘাটতি নেই।’

আরও পড়ুন:
গরম সহসাই কমছে না
গরমে নিয়মিত খাবেন যে ৭ খাবার
গরমে সুস্থ থাকতে যা করবেন
গরম একটু বাড়বে, হতে পারে বৃষ্টিও

মন্তব্য

জাতীয়
How many train accidents rocked India

ভারত কাঁপিয়ে দেয়া যত ট্রেন দুর্ঘটনা

ভারত কাঁপিয়ে দেয়া যত ট্রেন দুর্ঘটনা ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় অনেকে হতাহত হন। ছবি: ওড়িশা টিভি
বিভিন্ন সময়ে ভারতে বড় বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন কিছু দুর্ঘটনার সময় ও তাতে হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে ভারতভিত্তিক বার্তা সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৩৮ জন নিহত ও প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক ও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।

ভারতে এমন ট্রেন দুর্ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে দেশটিতে বড় বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন কিছু দুর্ঘটনার সময় ও তাতে হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে ভারতভিত্তিক বার্তা সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)।

৬ জুন, ১৯৮১

ওই দিন বিহার রাজ্যে সেতু অতিক্রম করার সময় একটি ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়ে বাগমতী নদীতে পড়ে। এতে ৩০০ জনের বেশি যাত্রী নিহত হয়।

২০ আগস্ট, ১৯৯৫

ওই দিন উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদ জেলার পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস নামের ট্রেনের সঙ্গে কালিন্দী এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। এতে ৪০০ জন নিহত হয়।

২ আগস্ট, ১৯৯৯

ওই দিন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গাইসাল স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের সঙ্গে অবাধ আসাম এক্সপ্রেসের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৮৫ জন নিহত ও তিন শতাধিক যাত্রী আহত হয়।

২৬ নভেম্বর, ১৯৯৮

ওই দিন পাঞ্জাব রাজ্যের খান্না এলাকায় জম্মু তাওয়ি-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি ধাক্কা খায় ফ্রন্টিয়ার গোল্ডেন টেম্পল মেইলের লাইনচ্যুত তিন বগিতে। এতে ২১২ জনের বেশি যাত্রী নিহত হয়।

৯ সেপ্টেম্বর, ২০০২

ওই দিন গয়া ও দেহরি-অন-সোন স্টেশনের মধ্যবর্তী একটি সেতু থেকে লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেসের দুটি বগি। এতে ১৪০ জনের বেশি যাত্রী নিহত হয়।

২৮ মে, ২০১০

ওই দিন খেমাসুলি ও সারদিহা স্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকায় বিস্ফোরণে লাইনচ্যুত হয়ে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খায় জনেশ্বরী সুপার ডিলাক্স এক্সপ্রেস। এতে অন্তত ১৪০ জনের প্রাণহানি হয়।

২০ নভেম্বর, ২০১৬

ওই দিন উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে পুখরায়ন এলাকায় ইন্দোর-রাজেন্দ্র নগর এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ১৫২ জন নিহত ও ২৬০ জন আহত হয়।

২৯ অক্টোবর, ২০০৫

ওই দিন অন্ধ্র প্রদেশের বালিগোন্ডা এলাকায় আকস্মিক বন্যায় রেল সেতু ধসে পড়ার কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে ডেল্টা ফাস্ট নামের ট্রেন। এতে কমপক্ষে ১১৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক যাত্রী আহত হন।

আরও পড়ুন:
অমিত শাহর সফরের আগে মণিপুরে সহিংসতায় নিহত ৫
বিরোধীদের বর্জনের মধ্যে পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন মোদির
মহারাষ্ট্রে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৭
২০০০ রুপির নোট বদলে নেয়া যাবে যেভাবে
সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

মন্তব্য

জাতীয়
Awami League wants fair elections in the remaining four cities as well

বাকি চার সিটিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ

বাকি চার সিটিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ গাজীপুর সিটি নির্বাচনের একটি কেন্দ্রে ভোটারদের সারি। ছবি: নিউজবাংলা
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসন্ন বাকি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার শুধু নৈমিত্তিক কাজ করে যাবে।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মতো বাকি চার মহানগরেও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গাজীপুরে হারলেও বাকি চারটিতে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী দলটি। নির্বাচন যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান দলের নেতারা।

ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, দলের একটি অংশের অহসযোগিতায় গাজীপুরে পরাজয় হলেও বাকি চার মহানগরের নির্বাচনে সব দুর্বলতা কাটিয়ে জয় নিয়ে ঘরে ফিরবে আওয়ামী লীগ, তবে জয়-পরাজয় থেকেও নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ওপর নজর রাখবেন তারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আবদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় পর্যায়ের এই নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। চার সিটিতে দলের মেয়র প্রার্থীর বিজয় যাতে নিশ্চিত করা যায়, সে জন্য দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।

‘এই নির্বাচন যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য আমরা দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাব, যাতে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে উন্নয়ন মহাযজ্ঞ চলছে, তাতে মানুষ অকৃতজ্ঞ হবে না এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীদেরই বিজয়ী করবে।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে দলটি। এ নির্বাচনের কয়েক মাস পরই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তার আগে সিটি নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ভিসা নীতির বিষয়টিও আমলে নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, ইইউসহ অনেক দেশ ও জোট বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছে। এসব রাষ্ট্রের পরামর্শ আমলে নিয়ে সরকারও সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশে-বিদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন। এর মডেল হিসেবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোকে দেখানো হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসন্ন বাকি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার শুধু নৈমিত্তিক কাজ করে যাবে। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আওয়ামী লীগ সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবে।’

চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোর মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচন বেশ গুরুত্ব বহন করে। জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটির ভোটে জয়-পরাজয় সরকার ও দলের জনপ্রিয়তার ওপর প্রভাব ফেলবে। হেরে গেলে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে বলেও আওয়ামী শীর্ষ নেতারা মনে করছেন। তাই সিটির এ নির্বাচনে কোনো বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এগিয়ে চলছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

আগামী ১২ জুন হবে খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচন। ২১ জুন ভোটগ্রহণ হবে সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আবারও দলীয় প্রার্থী। সিলেটে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং বরিশালে আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে প্রার্থী করেছে আওয়ামী লীগ।

আরও পড়ুন:
আচরণবিধি লঙ্ঘন: আনোয়ারুজ্জামান ও বাবুলকে ইসির শোকজ
গাজীপুরের ফলে সিলেটে ‘দুশ্চিন্তায়’ আওয়ামী লীগ, অন্যদের স্বস্তি
কাউন্সিলর প্রার্থী স্বামীদের ধনে ধনাঢ্য স্ত্রীরা
ভোট-পরবর্তী সহিংসতা, গাজীপুর পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলল ইসি
প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ মেয়র ও ৯ কাউন্সিলর প্রার্থীর আপিল

মন্তব্য

জাতীয়
Why the spread of dengue before the monsoon?

বর্ষা না আসতেই ডেঙ্গুর বিস্তার, কেন?

বর্ষা না আসতেই ডেঙ্গুর বিস্তার, কেন? রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মঙ্গলবারের চিত্র। ছবি: নিউজবাংলা
সাধারণত জুন মাসের পর ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলেও এ বছর মে মাস থেকেই এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় মে মাসেই চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুর এই আগাম প্রকোপের নেপথ্যে বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা।

বর্ষা আসতে আরও বেশ কিছুদিন বাকি। কিন্তু বর্ষার রোগ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ডেঙ্গুর প্রকোপ ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। একইসঙ্গে হাসপাতালে বাড়ছে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

সাধারণত জুন মাসের পর ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিলেও এ বছর মে মাস থেকেই এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় মে মাসেই চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুর এই আগাম প্রকোপের নেপথ্যে বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘আগের বছর ডেঙ্গুর সিজনটা দেরিতে শুরু হয়েছিল। গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এই ধারাটা নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি পর্যন্ত চলে এসেছে।

‘বর্তমান সময়ে এসে সারা বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এর নেপথ্য কারণ হিসেবে যা দেখেছি সেটি হলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নগরায়নের বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত একদমই বৃষ্টিপাত থাকে না। আমরা বার বার বলে এসেছি যে বৃষ্টির সঙ্গে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার একটি সম্পর্ক থাকলেও এখন আর সেটি নেই। ডেঙ্গু এখন আর মৌসম বুঝে হবে না, এটি সারা বছরই বাংলাদেশে থাকবে। বহুতল ভবনগুলোতে পার্কিং স্পেস তৈরি করা হয়েছে। পার্কিংয়ের এই জায়গাতে গাড়ি ধোয়া-মোছা করা হয়। সেখানে যে পানি জমে তাতে আমরা এডিস মশার লার্ভা পাই।

‘একেকটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ ১০-১২ বছর ধরে চলে। নির্মাণাধীন সেসব ভবনের বেসমেন্টে আমরা এডিস মশা পাই। ঢাকায় যেসব জায়গায় পানির সংকট আছে, ওয়াসার পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নেই, সেসব এলাকায় ভবন মালিকরা সার্বক্ষণিক পানির সরবরাহ দেন না। এ অবস্থায় ওইসব ভবনের বাসিন্দারা পাত্রে পানি সংরক্ষণ করে রাখেন। সেখানেও আমরা এডিস মশা পাই।’

কবিরুল বাশার বলেন, ‘এডিস মশার এই যে তিনটি প্রজনন ক্ষেত্রের কথা বললাম সেগুলোর সঙ্গে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্পর্ক নেই। এই ক্ষেত্রগুলো সারা বছর বিদ্যমান। বাংলাদেশের তাপমাত্রা সারা বছরই এডিস মশা প্রজননের উপযোগী। তাই বৃষ্টিহীন সময়েও স্থায়ী প্রজনন ক্ষেত্র থাকার কারণে আমাদের দেশে মৌসুম ছাড়াও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিচ্ছে।

‘মে মাসে যখন বৃষ্টি হয়েছে তখন এডিস মশা নতুন প্রজনন ক্ষেত্র পেয়েছে। প্রকৃতিতে যেহেতু এডিস মশা ছিলোই, তাই এদের প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। তাই মে মাসেই ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়ে গেছে, যেটা আমাদের দেশে আগে কখনোই ছিল না।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ব্যান-ম্যাল এবং ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) ইকরামুল হক বলেন, ‘এডিস মশা বংশ বিস্তারের জন্য যে আবহাওয়া দরকার বাংলাদেশে এখন সেটিই বিরাজ করছে। বিগত ৫০ বছরের ইতিহাসে শীর্ষ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে এ বছরের মার্চ-এপ্রিলে। বলা হচ্ছে, দেশের গড় যে তাপমাত্রা তার চেয়ে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে ডেঙ্গু চার থেকে পাঁচ গুণ বাড়তে পারে।

‘গত বছরের তুলনায় এবার মে মাসেই ডেঙ্গু রোগী পাঁচ গুণ বাড়ার প্রথম কারণ আবহাওয়া পরিবর্তন। দ্বিতীয়ত, বাতাসে যে আর্দ্রতা থাকে, সেটি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে ৫০-৮০ শতাংশ। সেটা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে ২৫-৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য খুবই সহায়ক। অর্থাৎ আমাদের দেশের তাপমাত্রা এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী।

‘এই আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের সব উষ্ণ দেশেই পড়ছে। আর এর প্রভাবে সেসব দেশেও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সার্ভে করে দেখেছি, ঢাকা শহরে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। সেসব নির্মাণস্থল এবং বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে হঠাৎ বৃষ্টিতে পানি জমে থেকে এডিস মশার প্রজনন বাড়ছে।’

আরও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু
ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু
ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন দিনে হাসপাতালে আরও ১৪ রোগী
মৃত্যুহীন দিনে হাসপাতালে ৬৫ ডেঙ্গু রোগী
ডেঙ্গুতে ৬৭ জন হাসপাতালে

মন্তব্য

জাতীয়
Clay house of peace

প্রশান্তির মাটির ঘর

প্রশান্তির মাটির ঘর গরম ও শীতে আরামে থাকা যায় নরসিংদীর মাটির ঘরগুলোতে।ছবি: নিউজবাংলা
হারিসাংগান গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী ছিদ্দিকুর রহমান ছিদ্দিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইট-পাথরের তৈরি বিল্ডিংয়ের মেয়াদ আছে, তবে আমাদের মাটির ঘরের কোনো মেয়াদ নাই।’ 

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার হাড়িসাংগান গ্রামের ‘প্রফেসর হাউজ’ নামের বাড়িতে দেখা মিলবে চারটি মাটির ঘর। এগুলোর বয়স প্রায় ১৫০ বছর। ইটের প্রাচীরওয়ালা বাড়ির ভেতরে মাটির ঘরগুলো যেন ছবির মতো।

ঘরগুলোর একটিতে রয়েছে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা। আরেকটি ঘর লেখাপড়ার জন্য। বাকি দুটি পারিবারিক কাজে ব্যবহার হয়।

মাটির ঘর নিয়ে কথা হয় হারিসাংগান গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী ছিদ্দিকুর রহমান ছিদ্দিকের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইট-পাথরের তৈরি বিল্ডিংয়ের মেয়াদ আছে, তবে আমাদের মাটির ঘরের কোনো মেয়াদ নাই।’

তিনি বলেন, ‘গরমের সময় গরম লাগে না। শীতের সময় শীত লাগে না। মাটির ঘরে থাকা খুবই আরামদায়ক। টিনের চাল দিয়ে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি মাটির ঘর নির্মাণের খরচ দেড় লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়।’

হারিসাংগান গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী মাটির ঘর নির্মাণশ্রমিক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘আমরা যেসব মাটির ঘর নির্মাণ করেছি, তা ইটের ঘরের চেয়ে পাকাপোক্ত। এই ঘরগুলো ভূমিকম্প হলেও ভেঙে পড়ে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার জন্মের আগ থেকেই মাটির ঘরের প্রচলন ছিল এই গ্রামে। জমি থেকে এঁটেল মাটি সংগ্রহ করে, সিমেন্ট যেভাবে গুলিয়ে নেয়া হয়, ঠিক সেভাবে মাটিগুলো কাদায় পরিণত করা হয়।

‘প্রথমে নিচের অংশে তিন ফুট চওড়া করে দুই ফুট চওড়া দেয়াল তৈরি করা হয়। ১২ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করা হয়। তার ওপর টিনের ছাউনি দেয়া হয়। মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের তিন-চার মাসের বেশি সময় লাগে। এ ছাড়া কিছু স্থানে দোতলা পর্যন্ত মাটির ঘর নির্মাণ করেছি আমরা।’

ঘরগুলোর মালিক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাড়িসাংগান গ্রাম বাংলাদেশের মাঝে একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এই গ্রামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, যা লেখাপড়ায় বছরের বছর ধরে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।’

মাটির ঘরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাটির ঘর গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলে পরিচিত। এ ঘর শীত ও গরম মৌসুমে আরামদায়ক। তাই আরামের জন্য গ্রামের দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি অনেক বিত্তবান মানুষ মাটির ঘর তৈরি করে থাকছেন হাড়িসাংগান গ্রামসহ অন্যান্য গ্রামে।’

আরও পড়ুন:
নরসিংদীতে সংঘর্ষ: ছাত্রদলের আরেক নেতার মৃত্যু
শীতলক্ষ্যায় নিখোঁজ: খালার পর উদ্ধার ভাগ্নির মরদেহ

মন্তব্য

জাতীয়
Where will Anwaruzzaman get the monthly income of 24000 votes?
সিলেট সিটি নির্বাচন

মাসে আয় ২৪ হাজার, ভোটের খরচ কোথায় পাবেন আনোয়ারুজ্জামান

মাসে আয় ২৪ হাজার, ভোটের খরচ কোথায় পাবেন আনোয়ারুজ্জামান সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাজ্যে চাকরি করে। তারা সবাই আমার নির্বাচনী খরচ মেটাতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া প্রবাসী অনেক বন্ধুবান্ধবও অনুদান দেবে। সবার সহায়তায়ই আমি নির্বাচনী ব্যয় মেটাব, তবে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ব্যয়ের বেশি আমি খরচ করব না।’   

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন দলটির যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে থাকা এই ব্যবসায়ীর বছরে আয় মাত্র ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা। এ হিসেবে তার মাসিক আয় ২৪ হাজার টাকা।

নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায় আয়ের এমন হিসাবই দিয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

আয় যৎসামান্য হওয়ায় নির্বাচনের বিপুল ব্যয় তিনি কীভাবে মেটাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হলফনামায় উল্লেখ করা তার আয়ের হিসাবের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সিলেটে একজন মেয়র প্রার্থী সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবেন, তবে বড় দলের প্রার্থীরা কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে থাকেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দেয়, তবে এটা কেউই মানেন না। আদতে অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীও কোটি টাকার ওপরে ব্যয় করেন।

‘আর মেয়র প্রার্থীদের ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব পাওয়াই তো দুষ্কর। সিলেটের মেয়র প্রার্থীদের আয় যদি আসলেই এত কম হয়, তাহলে তিনি নির্বাচনের এই বিপুল ব্যয় মেটাবেন কী করে?’

সিলেটে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ জন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইকালে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

প্রার্থী ছয় জন হলেও আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই তিনজনের মধ্যে আনোয়ারুজ্জামানের আয়ই সবচেয়ে কম।

নিজের তেমন কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য নেই উল্লেখ করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের অনুদানেই তিনি নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বলেন, ‘আমি পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে থাকি। সেখানে আমার ভাইদের ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়া আমি একটি রেস্টুরেন্টের ব্যবসায় অংশীদার। নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় যুক্তরাজ্যে আয়ের তথ্য আমি হলফনামায় উল্লেখ করিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও সন্তানরা যুক্তরাজ্যে চাকরি করে। তারা সবাই আমার নির্বাচনী খরচ মেটাতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া প্রবাসী অনেক বন্ধুবান্ধবও অনুদান দেবে।

‘সবার সহায়তায় আমি নির্বাচনী ব্যয় মেটাব, তবে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ব্যয়ের বেশি আমি খরচ করব না।’

যুক্তরাজ্যের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, লন্ডনের একটি রেস্তোরাঁয় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর অংশীদারত্ব রয়েছে। এ ছাড়া সেখানে তার আর কোনো দৃশ্যমান ব্যবসা নেই।

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয়ের মধ্যে কৃষি খাত থেকে আসে ১ লাখ টাকা। এর বাইরে বাড়ি/দোকান ভাড়া থেকে ৪৭ হাজার ৫৪২ এবং ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা আয় হয়।

আনোয়ারুজ্জামানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। এর বাইরে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দুটি টিভি, একটি রেফ্রিজারেটর, দুটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এবং দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও দুটি আলমারি আছে।

তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪৭ ভরি স্বর্ণালংকার। আনোয়ারুজ্জামানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে তিন বিঘা কৃষিজমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, একটি দালান ও একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে, তবে তার কোনো দায় বা দেনা নেই।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের আয়ও সামান্যই, তবে আনোয়ারুজ্জামানের চেয়ে একটু বেশি। বছরে তার আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। মাহমুদুল হাসানও পেশায় ব্যবসায়ী।

নির্বাচনী ব্যয়ের উৎস সম্পর্কে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমার কর্মীদের কোনো টাকা দিতে হয় না। তারা নিজেদের খরচেই প্রচার চালাচ্ছেন। দল থেকেও সহায়তা করা হচ্ছে, তবে বাদবাকি খরচও আমার একার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না। আমার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের সহায়তায়ই আমি নির্বাচনী খরচ মেটাব।’

হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মাহমুদুল হাসানের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে মাহমুদুলের যৌথ মালিকানায় বাণিজ্যিক দোকান ও বাড়ি আছে। এসব সম্পদের ৬ ভাগের ১ অংশ তার।

সিলেটের প্রধান তিন প্রার্থীর মধ্যে আয় ও সম্পদে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুল। শিল্পপতি বাবুলের বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা।

বাবুলের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। পাশাপাশি অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার একটি বিএমডব্লিউ, একটি টয়োটা প্রাডো, চারটি কার্গো ভ্যান, আটটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। বাবুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি দালান ও টিনশেড বাড়ি আছে। তার ৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকার ঋণ আছে।

নিজের আয় আর প্রবাসী আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা থেকেই নির্বাচনী ব্যয় মেটাবেন বলে জানিয়েছেন নজরুল ইসলাম বাবুল।

হলফনামায় উল্লেখ করা প্রার্থীদের আয় ও সম্পদের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুজন, সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘সিলেটের প্রধান তিন প্রার্থীই ব্যবসায়ী। বিশেষত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী স্বপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। সেখানে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। ফলে তার আয় এত কম হওয়া বিশ্বাসযোগ্য নয়। নির্বাচন কমিশন চাইলে এখনও এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করে দেখতে পারে।’

হলফনামায় প্রবাসে আয়ের তথ্য প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপের দাবি জানিয়ে ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এখনকার প্রার্থীদের বিদেশেও অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য থাকে। তা ছাড়া সিলেট অঞ্চলে নির্বাচনে অনেক প্রবাসীও প্রার্থী হন, কিন্তু প্রবাসে আয়ের হিসাব তারা দেন না। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনেরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ফলে ভোটাররা তাদের ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য জানতে পারেন না।’

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। এবার নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন, নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ এবং ট্রান্সজেন্ডার ৬ জন।

আরও পড়ুন:
ভোট-পরবর্তী সহিংসতা, গাজীপুর পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলল ইসি
প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৩ মেয়র ও ৯ কাউন্সিলর প্রার্থীর আপিল
প্রয়োজনে সংসদ নির্বাচনে আরও কঠোর হবে ইসি
‘প্রিয় ভাই’ এরদোয়ানকে নিয়ে যা লিখলেন কাতারের আমির
নিঃস্বার্থ কাজে এরদোয়ানের জয়: পুতিন

মন্তব্য

জাতীয়
Babul self educated Anwaruzzamans annual income is 3 lakhs
সিলেট সিটি নির্বাচন

আনোয়ারুজ্জামানের বার্ষিক আয় ৩ লাখ, বাবুল ‘স্বশিক্ষিত’

আনোয়ারুজ্জামানের বার্ষিক আয় ৩ লাখ, বাবুল ‘স্বশিক্ষিত’ সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। কোলাজ: নিউজবাংলা
সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে যাছাই-বাছাইকালে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে জানিয়েছেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায়। প্রার্থীদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে থাকা বাবুলের নামে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলাও রয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান স্নাতক পাস। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ ব্যবসায়ী নিজের বার্ষিক আয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা বলে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।

সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে যাছাই-বাছাইকালে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।

মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ও মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন।

এবারের সিটি নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থী হননি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

আরিফ প্রার্থী না হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।

এ তিন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিল্পপতি মো. নজরুল ইসলাম বাবুল। হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা। আর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। আনোয়ারুজ্জামান বিএ (সম্মান) এবং মাহমুদুল হাসান এলএলবি পাস।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের হলফনামায় সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এতে তারা ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।

হলফনামায় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য প্রদানকে ইতিবাচক উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এর ফলে প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটাররা একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে পারেন, তবে প্রার্থীরা হলফনামায় সঠিক তথ্য দিয়েছেন কি না, সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা উচিত। কারণ সিলেটে অনেক প্রবাসীও প্রার্থী হন। প্রবাসেও তাদের অনেক সম্পদ থাকে। সেসব তথ্যও হলফনামায় আসা উচিত।’

আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী

হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজের পেশা ব্যবসা উল্লেখ করে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদই আছে ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। এর বাইরে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দুটি টিভি, একটি রেফ্রিজারেটর, দুটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এবং দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও দুটি আলমারি আছে। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪৭ ভরি স্বর্ণালংকার।

আনোয়ারুজ্জামানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে তিন বিঘা কৃষি জমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, একটি দালান ও একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে, তবে তার কোনো দায় বা দেনা নেই। তার নামে কোনো ফৌজদারি মামলাও নেই।

নজরুল ইসলাম বাবুল

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুলও পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি ফিজা অ্যান্ড কোং লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মেসার্স ফিজা এক্সিমের ব্যবস্থাপনা অংশীদার, পাথর আমদানিকারক ও ‘দৈনিক একাত্তরের কথা’র প্রকাশক। বাবুলের বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা।

বাবুলের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। পাশাপাশি অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি, একটি টয়োটা প্রাডো, চারটি কার্গো ভ্যান, আটটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।

নজরুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি পাকা ও টিনশেড বাড়ি আছে। এ ছাড়া তার ব্যাংক ঋণ আছে পাঁচ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকা।

বাবুলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া অতীতে তার নামে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

মাহমুদুল হাসান

আনোয়ারুজ্জামানের বার্ষিক আয় ৩ লাখ, বাবুল ‘স্বশিক্ষিত’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানও পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অতীতে তার নামে একটা মামলা হলেও বেকসুর খালাস পেয়েছেন। কোনো দায় বা দেনা না থাকা মাহমুদুল হাসানের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।

তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে মাহমুদুলের যৌথ মালিকানায় বাণিজ্যিক দোকান ও বাড়ি আছে। এসব সম্পদের ৬ ভাগের ১ অংশ তার।

আরও পড়ুন:
ভোটারদের সম্মান ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি খোকনের
কেন ভোটে এসেছিলেন, জানালেন জাহাঙ্গীরের মা জায়েদা
‘বড় ভাই’ আজমত উল্লাহর পরামর্শ চান জাহাঙ্গীর
সবাইকে নিয়ে চলতে চান জায়েদা, প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান জাহাঙ্গীর
গাজীপুরে মেয়র পদে কে কত ভোট পেলেন

মন্তব্য

p
উপরে