কুমারগাঁওয়ে গ্রিড লাইনে দুর্ঘটনার ৩১ ঘণ্টা পর সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে ধীরে ধীরে। এতে মিলেছে স্বস্তি। কিন্তু কেমন ছিল গত এক দিনের জীবন?
বাতি জ্বলেনি, কলে ছিল না পানি, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ছিল সীমিত, অস্ত্রোপচার বন্ধপ্রায়, মোবাইল ফোনের চার্জ দেয়াও অনিশ্চিত, ফলে বিপদে পড়লে উদ্ধার করতে কাউকে ডাকবেন, সে সুযোগও ছিল সীমিত।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুমারগাঁওয়ে গ্রিড লাইনে আগুনের পর পুরো একটি দিন বিদ্যুৎহীন সিলেটে জীবন হয়ে যায় কঠিন।
ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, রান্নাও অনিশ্চিত হয়ে যায়। হঠাৎ চাহিদা বাড়ে মোমের, গুণতে হয় বাড়তি অর্থ। বড়রা পরিস্থিতি বুঝতে পারলেও শিশুদেরকে মানানো কঠিন। প্রবীণদের জন্যও কষ্টকর।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকাল থেকেই নগরীর অনেক বাসিন্দাকে বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে দেখা গেছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসার পর আশাবাদী হয়ে উঠে অন্য এলাকার বাসিন্দারা। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, সব এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরতে সময় লাগবে আরও।
হাসপাতালে বিঘ্নিত সেবা
বিদ্যুৎহীনতার কারণে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমিত পরিসরে চলছে প্যাথলজির পরীক্ষা। এতে সেবাপ্রার্থীরা পড়েছেন বিপাকে।
নগরীর জিন্দাবাজার থেকে হাসপাতালে আসা রোগী আনিস মিয়া বলেন, ‘রোগ নির্ণয়ে আজ মূত্র পরীক্ষার কথা ছিল। কিন্তু হাসপাতালে থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে। এখন ক্লিনিকে পরীক্ষা করাতে খরচ হবে বাড়তি টাকা।’
সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাশু লাল রায় বলেন, ‘বিদ্যুৎহীনতার কারণে আমাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থায় আমরা জরুরি সেবাগুলো চালু রেখেছি। গুরুতর রোগী ছাড়া অন্যদের প্যাথলজি পরীক্ষা করা যায়নি। তবে জরুরি বিভাগ বর্হিবিভাগ এবং ওয়ার্ডের কার্যক্রম স্বাভবিক রয়েছে।’
ভেঙে পড়েছে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা
পানি সংগ্রহে নগরীর বিভিন্ন গভীর নলকূপে লাইন ধরে পানি সংগ্রহ করছেন অনেকে। দুপুরে নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় একটি গভীর নলকূপ ঘিরে শতাধিক নারী-পুরুষের ভিড় দেখা যায়। কলস-বালতিসহ নানা পাত্রে নিয়ে পানি সংগ্রহ করতে আসেন তারা।
পানি নিতে আসা বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা অমূল্য দাস বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে বাসায় পানি নেই। দোকান থেকে কিনে নিয়ে পানি খাচ্ছি। কিন্তু রান্না-বান্না, গোসলসহ অন্যান্য কাজের জন্য পানি নিতে এসেছি।’
একই নলকূপ থেকে পানি নিতে আসা গৃহকর্মী আরিফা খাতুন বলেন, ‘এ নিয়ে তিন বার পানি নিতে এসেছি। প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে পানি নিতে হচ্ছে। আজকের মধ্যে বিদ্যুৎ না আসলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।’
নগরীর মিরাবাজার কাস্টঘর চালিবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গভীর নলকূপ ঘিরে পানি নিতে আসা নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। ট্রাকে ভ্যানে করেও পানি বিক্রি করছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ মানবিক উদ্যোগে পাড়ায় পাড়ায় পানি বিলি করে যাচ্ছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর চৌধুরী জানান, ‘নগরীরবাসীর দুর্ভোগ বুঝতে পারছি। আমরা নিজেরাও দুর্ভোগে আছি। কিন্তু বিদ্যুতের কাছে আমরা অসহায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু না হলে পানি বিতরণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে না।’
বিপর্যস্ত মোবাইল সেবা
বিদ্যুৎহীনতায় মোবাইল চার্জ দিতে পারছেন না নগরবাসী। এমন পরিস্থিতিতে কয়েকটি এলাকায় টাকার বিনিময়ে মোবাইল ফোন ও চার্জারলাইটে চার্জ দেয়া হচ্ছে। দাম বেড়েছে মোমবাতিরও।
দক্ষিণ সুরমাকুচাই এলাকায় বিকাশ এজেন্টের দোকানে চার্জ দিতে এসে মঙ্গলবার স্থানীয় আব্দুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। ফলে মোবাইল ফোনেরও চার্জ শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে ৫০ টাকা দিয়ে এখানে চার্জ দিতে এসেছি।’
দোকান মালিক সেবুল আহমদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটরের মাধ্যমে দোকান খোলা রেখেছি। জেনারেটরের তেলের খরচ জোগাতে চার্জ দেয়ার বিনিময়ে টাকা নিচ্ছি।’
নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নগরবাসী। তারা বলছেন, কথা বলতে গেলেই কল ড্রপ হচ্ছে। বারবার ফোন করেও লাভ হচ্ছে না।
জেনারেটরের দোকানে ভিড়
নগরীর বিভিন্ন জেনারেটর মেরামতের দোকানে হঠাৎ ব্যস্ততা বেড়েছে। অনেকই পুরনো ও নষ্ট জেনারেটর মেরামত করতে নিয়ে আসছেন।
নগরীর জল্লারপাড় এলাকায় এমন একটি দোকানে জেনারেটর নিয়ে এসেছেন দারিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আকমল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাসায় আইপিএস আছে। তাই দীর্ঘ দিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও এই জেনারেটর সারানো হয়নি। কিন্তু গতকাল রাতে আইপিএসের চার্জ শেষ হয়ে গেছে। এদিকে বাসায় অসুস্থ বৃদ্ধ ও শিশুরা রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে জেনারেটর মেরামত করতে এসেছি।’
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ বিমানবন্দরে
বিদ্যুৎ বন্ধের কারণে ফ্লাইট উঠানামায় সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমেদ। তবে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী জেনারেটর রয়েছে। বিদ্যুৎতের বিকল্প জেনারেটর দিয়ে কাজ চালিয়েছে সিলেটে যেহেতু শীত কিছুটা শুরু হয়ে গেছে তাই আমরা এসি বন্ধ রেখেছি।
কী বলছে বিদ্যুৎ বিভাগ
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে আগুনে পুড়ে যাওয়া জাতীয় গ্রিড লাইনের যন্ত্রগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। তবে সংস্কার শেষ হতে কতক্ষণ লাগতে পারে এখনও নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তারা।
আগুনে দুটি ট্রান্সমিটার একটি ফিড একটি কন্ট্রোল প্যানেল পুরো পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পুড়ে যাওয়া ট্রান্সমিটারগুলোর বদলে ঢাকা থেকে নতুন দুটি ট্রান্সমিটার নিয়ে আসা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির উপসহকারী প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘আমাদের সংস্কার কাজ মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। পিডিবির কাজ শেষ হলেই আমরা সীমিত আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে পারবো।’
সিলেটের বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার মোক্কামেল হোসেন বলেন, ‘আমার দ্রুত নষ্ট হওয়া ট্রান্সমিটার দুটি পুনঃস্থাপন করতে পারব বলে আশা করছি। এরপর ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। তবে একসঙ্গে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হবে না। প্রথমে আমরা হাসপাতাল বিমানববন্দনসহ অতিগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করার চেষ্টা করব।’
পুলিশ প্রশাসন সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভবনে পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেনের কাছে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব জমা দেয়া হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সচিব এস এম জহিরুল ইসলাম দলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব জমা দেন।
প্রসঙ্গত, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেছিল বিএনপি।
দেশে চলমান অস্থির সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস ঐক্যের যে ডাক দিয়েছেন তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতারা। তারা দেশি-বিদেশি নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান ধর্মীয় নেতারা।
বৈঠক থেকে বের হয়ে রমনা সেন্ট ম্যারিজ ক্যাথেড্রালের প্রধান পুরোহিত অলভার্ট রোজারিও বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) রাজনৈতিক দলগুলো যে কথা বলেছে তার সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করেছি। আমরা একটা স্পর্শকাতর সময় পার করছি। এই সময়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
‘ইসকনের ঘটনায় মানুষের মনে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তা দূর করতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা কষ্টে আছেন, যাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে তাদের অনেকেই আজ আসেননি। তাদেরকে নিয়ে যেন প্রধান উপদেষ্টা বসেন আমি সে কথা বলে এসেছি।’
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় বলেন, ‘দেশে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে। আমরা যেন মিলেমিশে থাকতে পারি। এটা আমাদের ঐতিহ্য। সে বিষয়ে যেন প্রধান উপদেষ্টা ব্যবস্থা নেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) আমাদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন।’
গারো পুরোহিত জনসন মুরি কামাল বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেসব মিডিয়া অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের আমরা প্রতিরোধ করবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করবো।’
রমনা হরিচাঁদ মন্দিরের সহ-সম্পাদক অবিনাশ মিত্র বলেন, ‘আমরা যারা বাংলাদেশে আছি, আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু বিভেদটা কোথায়?
‘যারা বিভেদ তৈরি করছে তারা আমাদের মধ্যে ঢুকে বিদেশে বসে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। তারা স্বার্থ হাসিল করবে এটা আমরা চাই না। এটা বাংলাদেশ। এখানে আমরা সবাই সমানভাবে মিলেমিশে আছি। কোনো সমস্যা নেই।’
প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রথম দিন ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। পরদিন বুধবার বৈঠক করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ধর্মীয় নেতাদের আহ্বান জানানো হয়েছিল।’
আরও পড়ুন:রাজধানীতে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন। এই সম্মেলন শেষ হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ডিসি সম্মেলন হবে। এখন পর্যন্ত নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সম্মেলনের কার্য অধিবেশনগুলো ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে অন্য ভেন্যুও আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা যায়, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে হবে।
সম্মেলনে প্রতি বছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সম্মেলনে উপদেষ্টা-সচিবদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং সেসব প্রস্তাবের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সরকারের কর্মকাণ্ড মাঠ পর্যায়ে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয় ও উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের দিকনির্দেশনা দিতে আয়োজন করা হয় জেলা প্রশাসক সম্মেলন। কেন্দ্রের নির্দেশনা মাঠ প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি তৃণমূলের বাস্তবতা তুলে আনাও এই সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
সাবেক সরকারি কর্মকর্তা আখতার হোসেনকে চুক্তিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তাকে দু’বছরের জন্য এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে আখতার হোসেনকে ইসির সিনিয়র সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্র দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইসি সচিব শফিউল আজিমকে গত ৩ ডিসেম্বর ওএসডি করে সরকার।
নভেম্বরে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের মাস অক্টোবরে তা ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই হার গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।
এদিকে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ থেকে সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে নভেম্বরে। শহর এবং গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হারও গত মাসে বেড়েছে।
নভেম্বরে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং অক্টোবরে ছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ।
একই সময়ে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। তবে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি নভেম্বর ও অক্টোবরে অপরিবর্তিত ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ ছিল।
অন্যদিকে নভেম্বরে শহরাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
নভেম্বরে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং নভেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
নভেম্বরে মজুরি হার সূচক ছিল ৮ দশমিক ১০ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত ২৩ বিচারপতি।
রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে গিয়ে বৃহস্পতিবার তারা সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে নতুন বিচারপতিদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, নতুন বিচারপতি নিয়োগের ফলে দেশের উচ্চতর আদালতে বিচারিক কার্যক্রম আরও ত্বরান্বিত হবে এবং বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।
বিচারপতিগণ তাদের দক্ষতা ও মেধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবেন বলে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনে বাংলাদেশের নতুন একটি হাইকমিশন স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসনের সূচক বিবেচনায় নিউজিল্যান্ড দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। দেশটি মানব উন্নয়ন সূচকে ১৬তম ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা সূচকে ৩২তম অবস্থানে রয়েছে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এ দেশটি বাংলাদেশি পণ্যের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বাজার হতে পারে।
নিউজিল্যান্ডে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছেন এবং প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন।
ভৌগোলিকভাবে নিউজিল্যান্ড মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় সমবর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত দেশ অস্ট্রেলিয়া থেকে নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করা সর্বদা সম্ভব হয় না।
একইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কনস্যুলার সেবা গ্রহণ করতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিপুল অর্থ ব্যয়সহ নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন। ওয়েলিংটনে বাংলাদেশ হাইকমিশন স্থাপিত হলে নিউজিল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে সরাসরি দূতাবাসের সব ধরনের কনস্যুলার সেবা পৌঁছানো সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তানসহ ৭২টি দেশের কূটনৈতিক মিশন রয়েছে। নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের একটি মিশন স্থাপিত হলে তা দু’দেশের মধ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধির পথ সুগম করবে।
বাংলাদেশের বহুমাত্রিক স্বার্থ তথা রাজনৈতিক, কৌশলগত, বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, প্রবাসী কল্যাণ বিবেচনায় রেখে নিউজিল্যান্ডের রাজধানী ওয়েলিংটনে একটি পূর্ণাঙ্গ মিশন স্থাপন করা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হবে। তবে, এ বিষয়ে যাবতীয় ব্যয় পরবর্তী অর্থবছরে (২০২৫-২৬) নির্বাহ করা হবে।
মন্তব্য