× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

বিনয়-কুমারের-হাত-কত-লম্বা
দুর্নীতিকে ‘শিল্পের’ পর্যায়ে নেয়া এলজিইডি'র দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বিনয় কুমার ঘোষ। ছবি: নিউজবাংলা
বিনয় কুমার যে জেলাতেই গেছেন সেখানেই প্রতারণা, অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নামমাত্র শাস্তি হয়েছে কখনও কখনও, তবে অদৃশ্য ক্ষমতায় আবার গড়ে তুলেছেন অপকর্মের সাম্রাজ্য। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বরগুনা কার্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে যোগ দেন। এরপর শুরু হয় দুর্নীতির নতুন অধ্যায়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বিনয় কুমার ঘোষ। পদ মেকানিক্যাল ফোরম্যান। ২০১২ সালে সরকারি চাকরি জীবনের শুরুর পর দুর্নীতিকে রীতিমতো ‘শিল্পের’ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন তিনি।

যে জেলাতেই গেছেন সেখানেই প্রতারণা অনিয়মের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নামমাত্র শাস্তি হয়েছে কখনও কখনও, তবে সেসব ‘ম্যানেজ’ করে আবার দোর্দণ্ড প্রতাপে নতুন কোনো জেলায় গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির সাম্রাজ্য।

সবশেষ বরগুনায় ঠিকাদারদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিনয়ের বিরুদ্ধে।

তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে রাঙামাটিতে বদলির আদেশ দেয়া হলেও নতুন কর্মস্থলে তিনি এখনও যোগ দেননি।

বিনয় কুমারের বাড়ি রাজশাহী শহরের রাজপাড়া এলাকায়। ২০১২ সালে এলজিইডির প্রকৌশল শাখার মেকানিক্যাল ফোরম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়ে যোগ দেন জয়পুরহাট কার্যালয়ে। সড়ক নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত এলজিইডির যানবাহন তদারকি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছিল তার।

সেখান থেকেই শুরু লাগামহীন দুর্নীতির। ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার নামে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেন বিনয়। এ অভিযোগে চার বছরের মাথায় তাকে জয়পুরহাট থেকে বদলি করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

সেখানেও বিনয়ের দুর্নীতি ছিল মাত্রাছাড়া। এলজিইডি কার্যালয়ের পরিত্যক্ত মোটরযান, আসবাবপত্রসহ ঠিকাদারি যন্ত্রপাতি নিলামের মাধ্যমে পাইয়ে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে অথবা চাকরি দেয়ার নাম করে, ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির কারণে একবার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ। তবে অদৃশ্য ক্ষমতায় ২০১৮ সালেই আদেশটি প্রত্যাহার হয়। কেবল ইনক্রিমেন্ট স্থগিতের নামমাত্র শাস্তি দিয়ে তাকে বদলি করা হয় বরগুনায়। ২০১৯ সালের সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের বরগুনা কার্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগে যোগ দেন। এরপর শুরু হয় দুর্নীতির নতুন অধ্যায়।

ভাইয়ের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতি

বরগুনায় যোগ দেয়ার পরে শহরের উকিলপট্টির ফুয়াদ জোমাদ্দারের বাসায় সপরিবারে ভাড়া থাকতেন বিনয়। ধীরে ধীরে তিনি সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন স্থানীয় ঠিকাদার ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে। একে একে তাদের অনেকেই আটকে যান তার প্রতারণার ফাঁদে।

ঠিকাদারদের ফাঁদে ফেলতে ‘মেসার্স বিপ্লব এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করেন বিনয়। নিজের ছোটভাই বিপ্লব কুমারের নামে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দাবি করা হলেও নির্ধারিত ঠিকানা রাজশাহীর রাজপাড়ায় এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বিনয়ের স্বজনেরাও নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া।

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

বরগুনায় বিনয়ের প্রতারণার শিকার হয়েছেন রাজধানীর শ্যামলী এলাকার এসআর ট্রেডিংয়ের মালিক ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন সুমন। শুধু তার কাছ থেকেই বিনয় হাতিয়ে নিয়েছেন ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

সুমন নিউজবাংলাকে জানান, গত জানুয়ারিতে স্থানীয় এলজিইডির বরগুনা কার্যালয়ের অকেজো গাড়ি ও যন্ত্রপাতি নিলামের সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় বিনয় পরিচিত ঠিকাদারদের ফোন করে জানান, এই নিলাম থেকে প্রায় কোটি টাকার গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ভাইয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে তিনি কিনতে যাচ্ছেন।

সুমন বলেন, ‘বিনয়ের ফোন পেয়ে আমি বরগুনায় আসি। টাউন হল এলাকার আবাসিক হোটেল প্রিন্স টাওয়ারের কক্ষে তার সঙ্গে আলোচনা হয়। তিনি জানান, গাড়িসহ প্রায় ৭০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতির নিলাম হবে। তিনি নিজের ভাইয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে যে কোনোভাবে সেগুলো কিনবেন।’

নিলামে কেনার পর সমস্ত মালামাল সুমনের কাছে বিক্রির আশ্বাস দেন বিনয়। তবে শর্ত দেন, নিলামের বিপরীতে যত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে, সবটাই সুমনকে পরিশোধ করতে হবে। নিশ্চয়তা হিসেবে বিনয় তাকে এলজিইডি বরগুনা কার্যালয় থেকে তার বেতনের ভাউচার ও নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্ল্যাংক চেক দেবেন। এতে রাজি হন সুমন।

১৩ মার্চ বিনয়কে নগদ সাত লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপর সাত মাসে বিভিন্ন ধাপে সব মিলিয়ে ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেন সুমন। এই টাকা নেয়ার সময় বিনয় এলজিইডির প্যাডে নিজের অফিসিয়াল সিলে ‘বুঝিয়া পাইলাম’ লিখে স্বাক্ষর করেন। ১৩ এপ্রিল সুমনকে তিনি সোনালী ও উত্তরা ব্যাংকে নিজ অ্যাকাউন্টের দুটি ব্ল্যাংক চেক ও এলজিইডির বেতনের ছয়টি ভাউচার দেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ও টাকা নেয়ার কাগজপত্র পেয়েছে নিউজবাংলা।

সমস্ত টাকা পরিশোধের পর এক মাসের মধ্যে নিলামের মালামাল সুমনকে বুঝিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রতি দেন বিনয়। সমঝোতা অনুযায়ী, মালামাল বুঝে না পেলে নিলামের পর বিনয়ের দেয়া চেকের মাধ্যমে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারবেন সুমন।

তবে এখনো সেই মালামাল বুঝে পাননি সুমন, এমনকি ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায় বিনয়ের অ্যাকাউন্টও শূন্য।

সুমন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনয় নিলামের সব টাকা তো নিয়েছেনই, গত নয় মাসে বরগুনায় আসা-যাওয়ায় আমার আরো পাঁচ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। আমি এই প্রতারকের বিচার চাই।’

বরগুনায় ওই একই নিলাম নিয়ে সুমনের মতো প্রতারণার শিকার হয়েছে আরো অনেকে।

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

জুলাই মাসে বরগুনা এলজিইডি গোপনে সেই নিলামের বিজ্ঞপ্তি দেয়। যথারীতি সর্বোচ্চ দরদাতা হয় বিনয়ের ভাইয়ে নামের প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স বিপ্লব কনস্ট্রাকশন’।

বিনয় ১০ লাখ টাকায় সব মালামাল কিনে নিয়ে জালিয়াতি করে বদলে ফেলেন কার্যাদেশের নথিপত্র। বিপ্লব কনস্ট্রাকশনের প্যাডে বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সিল স্বাক্ষর জাল করা এই নথিতে বলা হয়, নিলামে তিনটি টয়েটা প্রাডো পিকআপ, তিনটি ট্রাক, চারটি ট্রাক্টর, ৭৫টি মোটসাইকেল, তিনটি হট মিক্সিং প্ল্যান্ট, ১৮টি রোড রোলার ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি বিক্রি হয়েছে।

বাস্তবে নিলামে ওঠা যানবাহন ও যন্ত্রপাতির সংখ্যা ছিল এর চেয়ে অনেক কম। এই জাল নথি দেখিয়ে নতুন ফাঁদ তৈরি করেন বিনয়।

এগুলো বিক্রির কথা বলে ঠিকাদার উত্তম কুমারের কাছ থেকে ১৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, বাদল নামে একজনের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা, নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়িচালক টিটুর কাছ থেকে চার লাখ টাকা, রোলার ড্রাইভার নাসিরের কাছ থেকে চার লাখ টাকা, ঠিকাদার বশিরের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা, এলজিইডির নৈশ প্রহরী আনসারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা, উত্তরা ব্যাংকের কর্মকর্তা ফখরুলের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকাসহ আরো বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বিনয়।

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

অন্যদিকে, তিনি ১২ লাখ টাকায় নিলামের সব মালামাল গোপনে বিক্রি করে দেন আমতলার পাড়ের ফরহাদ জোমাদ্দারের কাছে।

ঘটনাটি জানাজানির পর চলতি মাসের ৫ তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে একটি ছুটির আবেদন দিয়ে পরিবারসহ লাপাত্তা হন বিনয় কুমার।

তিনি উধাও হওয়ার পরে বেরিয়ে এসেছে দুর্নীতির আরো কাহিনি। জানা যায়, বরগুনা শহরের টাউন হল এলাকার বিকাশ ও নগদের এজেন্ট জুলফিকার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা, একই এলাকার বিকাশ/নগদ ব্যবসায়ী রায়হান সিফাতের কাছ থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ বেশ কিছু বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তাদেরকেও দেয়া হয়েছিল ব্যাংকের চেক, তবে অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় সেগুলোও প্রত্যাখ্যাত হয়।

জয়পুরহাটেও প্রতারণার জাল

জয়পুরহাট এলজিইডিতে ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন বিনয় কুমার ঘোষ। মেকানিক্যাল ফোরম্যান পদে চাকরি করে জেলার অনেক বিত্তবান মানুষের কাছ থেকে সে সময় তিনি হাতিয়ে নেন কয়েক কোটি টাকা।

ভুক্তভোগী কয়েকজনের খোঁজ পেয়েছে নিউজবাংলা। তারা হলেন, জয়পুরহাট শহরের নতুন হাট এলাকার সাবেক কাউন্সিলর মুস্তাকুল ইসলাম মোস্তাক, হারাইল এলাকার জহুরুল ইসলাম, পারুলিয়া এলাকার লিটন হোসেন, কালাই পৌর শহরের বাসিন্দা ইফতাদুল হক, জয়পুরহাট শহরের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান ঝানু।

মুস্তাকুল ইসলাম মোস্তাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনয় এলজিইডি অফিসে চাকরি করার সময়ে আমি ঠিকাদারি করতাম। তিনি আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নেন। পরে সবার অগোচরে এখান থেকে বদলি হয়ে যান। অনেক অনুনয় বিনয় ও মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। বাকি টাকা আজও পাইনি।’

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

জহুরুল অভিযোগ করেন, তিনি বিনয়কে প্রায় ১৮ লাখ টাকা দিয়ে প্রায় সবটাই খুইয়েছেন।

এত টাকা বিনয়কে কেন দিলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এলজিইডি অফিসের মালামাল নিলামে পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই টাকা হাতিয়ে নেন বিনয়। দরবার করে অল্প কিছু ফেরত পেলেও বেশিরভাগ টাকা আর পাওয়া যায়নি।’

অন্যদিকে, লিটন জানান, নিলামের লোভ দেখিয়ে বিনয় তার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নেন। ফেরত না দেয়ায় আদালতে যেতে বাধ্য হন লিটন। আদালত বিনয়ের এক বছরের কারাদণ্ডসহ সাত লাখ টাকা ফেরত দেয়ার আদেশ দিলেও পরে বিষয়টি ঝুলে যায়।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট এলজিইডি কার্যালয়ের অফিস সহকারি আইরিন পারভীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়গুলো অনেক আগের, তাই সব মনে পড়ছে না। তবে বিনয় কুমারের বদলির পর অনেক মানুষ টাকা পাবেন বলে অফিসে এসে মৌখিক অভিযোগ করেছে।’

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

এলজিডি কার্যালয়ের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী এফএম খায়রুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি যোগ দেয়ার পর জানতে পারি বিনয় কুমার ঘোষ বিভিন্ন অনিয়মে যুক্ত ছিলেন। বিষয়টি অনেক আগের হওয়ায় আমার পক্ষে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। তবে যতদূর শুনেছি অফিসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্রের কথা বলে তিনি বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে মালামাল কিনতেন।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পালিয়ে বেড়াতেন বিনয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলজিইডিতে চাকরির প্রায় পুরোটা সময় পাওনাদারদের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছেন বিনয় কুমার। এলজিইডি কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, অল্প সময়ের চাকরির মধ্যেও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

এর মধ্যে শহরের সানশাইন মোটর্সের মালিক দানীউল হকের কাছ থেকেই ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন বিনয়। আরো কয়েকজন ঠিকাদারও প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন অভিযোগের মুখে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বদলি করা হয়।

বিনয় এখন কোথায়

বরগুনা থেকে উধাও হওয়ার পর বিনয় কুমার ঘোষ এখন কোথায় তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

ঢাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারি প্রকৌশলী (প্রশাসন) মানস মণ্ডল নিউজবাংলাকে জানান, বিনয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অধিদফতরের ওয়াকিবহাল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাই তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে বরগুনা থেকে রাঙামাটিতে বদলি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বদলি একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ। কারণ চেয়ারে রেখে কারও সম্পর্কে তদন্ত করলে সেটি প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তার (বিনয়) বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্যই এই বদলি।’

বিনয় কুমারের হাত কত লম্বা

তবে রাঙামাটি এলজিইডি কার্যালয়ের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. শহীদ মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনয় নামে কেউ আমাদের এখানে যোগ দেননি, এ ধরনের যোগদানের কোনো তথ্যও আমাদের কাছে নেই।’

বিনয় কুমার ঘোষের অপকর্মের বিষয়ে মাঠপর্যায়ের অনুসন্ধানের জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল শাখা থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি বরগুনায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সম্প্রতি কথাও বলেছে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. মুহসীন রেজা নিউজবাংলাকে জানান, এই কমিটি চলতি সপ্তাহে সম্ভব না হলেও আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন দেবে। এতে বিনয় দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনে অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ নিয়ে বিনয় কুমারের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তবে তার দুটি মোবাইল ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে এলজিইডি বরগুনা কার্যালয় কোনো কর্মকর্তা বক্তব্য দিতে রাজি হননি। কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ফোরকান আহমেদ কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়েই তড়িঘড়ি করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।

প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন- শাহ আলম খান, ঢাকা; আহসান হাবীব অপু, রাজশাহী; রাজীব হাসান, জয়পুরহাট; আব্দুর রব নাহিদ, চাপাইনবাবগঞ্জ; সুপ্রিয় চাকমা, রাঙামাটি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জাতীয়
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

জাতীয়
Earthquake

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

জাতীয়
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

জাতীয়
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

জাতীয়
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

জাতীয়
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

জাতীয়
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে