জমি কেনা ও নিবন্ধন সহজ করতে যে একগাদা পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার, তার মধ্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ উদ্যোগটি হলো, এখন থেকে আট দিনে জমির নামজারি সম্পন্ন হবে। সোমবার এ প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
প্রস্তাবে বলা হয়, জমি নিবন্ধনের সর্বোচ্চ আট দিনের মধ্যে নামজারি করতে এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) সফটওয়্যারের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত জেনে নেবেন। একইভাবে দলিল নিবন্ধের আগে সাব-রেজিস্ট্রাররা তথ্য জানবেন এসি ল্যান্ড অফিস থেকে।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ১৭টি উপজেলায় পাইলট ভিত্তিতে এ কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে এক বছরের মধ্যে সারা দেশেই তা বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা, দুর্নীতি ও অনিয়ম কমে যাবে।
সরকারের এ সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী সন্দেহ নেই। কিন্তু এক বছরের মধ্যে এটি সারা দেশে চালু করার মতো বাস্তব অবস্থা বা সামর্থ্য কি আছে? পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে মনে হতে পারে, সরকারের এ পদক্ষেপ উচ্চাভিলাসী। কারণ, এটি বাস্তবায়ন করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো প্রয়োজন হবে।
যে এসি ল্যান্ড ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এ যুগান্তরকারী পদক্ষেপটি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা, সেসব অফিসে কম্পিউটার অপারেটরের পদই নেই। ফলে প্রশিক্ষিত লোকবল ছাড়া উমেদার (বহিরাগত লোক) দিয়ে কম্পিউটারের কাজ চালাতে হচ্ছে। তাদের পারিশ্রমিক এসি ল্যান্ড কিংবা সাব-রেজিস্ট্রারদের পকেট থেকে মেটাতে হচ্ছে। এমনকি কম্পিউটারের সরঞ্জাম, কাগজ, কালি ছাড়াও এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই।
ঢাকা এবং তার আশপাশের কয়েকটি এসি ল্যান্ড ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থানে উমেদার দিয়ে কম্পিউটারের কাজ করানো হচ্ছে। এসি ল্যান্ড অফিসে কম্পিউটার কাম অফিস সহায়ক নামে একটি পদ থাকলেও সেখানে কোনো লোকবল নেই। কোথাও কোথাও লোকবল থাকলেও তাকে বিভিন্ন অফিসিয়াল রেজিস্ট্রার, চিঠিপত্র লেখা ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। অপর দিকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এ ধরনের কোনো পদই নেই।
রাজধানীর ক্যান্টমেন্ট এসি ল্যান্ড অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, চারজন উমেদার (নাম- বিল্লাল, রানা, শাহজাদা, হানিফ) কম্পিউটার নিয়ে বসে আছেন। অনলাইনে নামজারি ফরম পূরণের কাজ করছেন।
একজন উমেদার বললেন,‘নামজারি এবং অন্যান্য সেবা প্রার্থীদের আর্থিক সহযোগিতায় পেট চলছে। এটা ঘুষ বলতে পারেন, আবার বকশিসও বলতে পারেন।’
সরকারি বরাদ্দ না থাকায় এভাবে জোড়াতালি দিয়ে এসি ল্যান্ড অফিসের কম্পিউটার কার্যক্রম চলছে। নগরীর গুলশান ও তেজগাঁওয়ের গুরুত্বপূর্ণ এসি ল্যান্ড অফিসেও একই চিত্র দেখা গেছে।
এসব উমেদারদের পারিশ্রমিক কিভাবে জোগাড় হয় জানতে চাইলে এসি ল্যান্ড অফিসের কানুনগো আবদুল হান্নান সদুত্তর দিতে পারেননি। বললেন, ‘অফিস থেকে ম্যানেজ করে ওদেরকে বেতন দেয়া হয়। এর জন্য সরকারি কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না।’
নামজারির ক্ষেত্রে এসি ল্যান্ড অফিসের সহযোগী দপ্তর হিসেবে কাজ করে দেশের তহশিল অফিসগুলো। দলিল পর্চা ও দখল যাচাই বাছাই করে তহশিলদার (সহকারি ভূমিকর্তা) প্রতিবেদন দেয়ার পরই তা এসি ল্যান্ড মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে ইব্রাহিমপুর তহশিল অফিসে কর্মরত সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন ‘কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও নামজারির ক্ষেত্রে জমির দখল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বা উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্ত করে নিশ্চিত করেন। তাছাড়া পর্চায় ছবি থাকে না বলে অনেকে নকল মালিক সেজে জমির নামজারি করে অন্যত্র বিক্রি কিংবা ব্যাংক থেকে মোটা অংকের ঋণ তুলে নেয়। জমির সঠিক মালিকের বিষয়টিও তহশিল অফিসগুলো নির্ণয় করে থাকে।’
ঢাকা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের ১০টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ঘুরে দেখা গেছে, এর কোনোটাতেই কম্পিউটার অপারেটরের পদ নেই। উমেদার কিংবা এক্সট্রা মোহরার ও মোহরার দিয়ে কম্পিউটারের কাজ করানো হচ্ছে। যেহেতু পদ নেই, যার কারণে কম্পিউটার কেনা, রক্ষণাবেক্ষণ বা কালি কাগজ কিনতে হয় নিজেদের পকেট থেকে।
বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন (বিআরএসএ) মহাসচিব জাহিদ হোসেন বলেন, ‘নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতাধীন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারির তালিকায় কম্পিউটার অপারেটর নামে কোনো পদ নেই। এ কারণে এ ক্ষেত্রে লোকজন ও আর্থিক বরাদ্দ থাকার কোনো প্রশ্ন ওঠে না। একজন সাব-রেজিস্ট্রার, একজন কেরানি (অফিস সহকারী), একজন টিসি মোহরার, দুইজন মোহরার এবং কিছু এক্সটা মোহরার নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের লোকবল কাঠামো।’
বিআরএসএ-এর একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের রেজিস্ট্রি অফিসে যে জনবল রয়েছে, তা দিয়ে অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রি করা সম্ভব নয়। কারণ অফিসে আইটি সেকশন তথা কম্পিউটার অপারেটরের পদই নেই। এজন্য আইন মন্ত্রণালয় ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নিয়ে একটি পাইলট প্রকল্প করে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে। এ লক্ষ্যে ১৯৫০ সালের প্রজাস্বত্ব আইনের কিছু ধারা পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন করার চিন্তা ভাবনাও করা হচ্ছে।
ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বলেন,‘দলিল নিবন্ধন ও নামজারির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার ব্যবহার একটি যুগান্তরকারী পদক্ষেপ। তবে তা চালু করার আগে কম্পিউটারে প্রশিক্ষিত লোকবল প্রয়োজন। সে জন্য পদ সৃষ্টি করে পর্যাপ্ত লোক নিয়োগ দিতে হবে। তা না হলে হয়রানি বাড়বে। কাজের গতি ধীর হয়ে গেলে রেজিস্ট্রি অফিসে আসা সেবাপ্রার্থিরা নানা ভোগান্তির শিকার হবেন।’
একাধিক সাব-রেজিস্ট্রার ও এসি ল্যান্ড নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রশিক্ষিত পর্যাপ্ত লোকবল না থাকলে নামজারি কিংবা জমি নিবন্ধন দীর্ঘসূত্রতায় পড়বে। এতে কাগজপত্র যাচাই করে তাৎক্ষণিকভাবে দলিল নিবন্ধন হবে না। দাখিল করা দলিল যাচাই করতেই তিন দিন লেগে যাবে।
অন্যদিকে নামজারির কাগজপত্র যাচাই বাছাই করতেও অনেক সময় লেগে যাবে। এ ক্ষেত্রে জমির দখল দেখা কিংবা সঠিক ব্যক্তি নির্ণয় করা কঠিন হবে। এর জন্য অবশ্যই ভূমি ও রেজিস্ট্রেশন আইনের কিছু ধারার পরিবর্তন ও সংযোজনের দরকার পড়বে।
কাজ এক, মন্ত্রণালয় তিন
অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্বচ্ছভাবে নামজারি এবং দলিল নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট গ্রহণযোগ্য সনাক্তকরণ নথি হিসাবে কাজ করছে। কিন্তু এসি ল্যান্ড বা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে তা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই।
একইভাবে কোনো এসি ল্যান্ড দলিল এবং সাব-রেজিস্ট্রার আরওআর কিংবা নামজারি খাজনার কাগজপত্র তাক্ষণিক যাচাই বাছাই করতে পারেন না। এজন্য তাদেরকে ম্যানুয়েল ও সময়সাপেক্ষে পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। এ সুযোগে অনেক ভুয়া মালিক জমির নিবন্ধন ও নামজারি করার সুযোগ পাচ্ছে।
ভূমি সংস্কার নিয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করা ভূমি বিশেষজ্ঞ শামসুল হুদা বলেন, ‘জমি রেজিস্ট্রেশন হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। আবার এর নামজারি হয় ভূমি মন্ত্রণালয়ে। নামজারির দায়িত্বে থাকা মাঠ পর্যায়ে কর্মরত মূল কর্মকর্তা এসি ল্যান্ডদের নিয়ন্ত্রণকারি মন্ত্রণালয় হলো জনপ্রশাসন। ফলে সমন্বয়হীনতা আর জবাবদিহির জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এসব সমস্যা সবার আগে দূর করতে হবে।’
তিনি মনে করেন, দ্রুত দলিল নিবন্ধন আর নামজারি যাই করা হোক না কেন, ভূমি প্রশাসনটি সবার আগে একই ছাতার নিচে আনতে হবে। দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, দেশে ‘ল্যান্ড ক্যাডার’ ও ‘ল্যান্ড কমিশন’ গঠন করা। তা বাস্তাবায়ন হলে দ্রুত কাজ ও করা যাবে। আবার কর্মকর্তা কর্মচারিদের মধ্যে জবাবদিহিও আসবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি, দেশে মৎস্য কিংবা পোস্টাল ক্যাডার থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ বড় সেক্টর হওয়ার পরও দেশে ‘ল্যান্ড ক্যাডার’ সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এসি ল্যান্ড বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা এসি ল্যান্ডদের দায়িত্ব। কিন্তু অফিস ডিজিটালাইজড করতে হলে যে আইটি সাপোর্ট দরকার তার কোনোটাই নেই। লোকবল তো নেইই। এমনকি ইন্টারনেট বিলটা পর্যন্ত কর্মকর্তাদের নিজেদের পকেট থেকে দিতে হয়। ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণে কাজে নানা ঝামেলা হয়। আগে ম্যানুয়েলি নামজারির দরখাস্ত গ্রহণ করতে সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট লাগলেও এখন অনলাইনে তা শেষ করতে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যায়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য