তখন ব্রিটিশ আমল। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার প্রায় পুরোটা ও নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের জোতদার ছিলেন শিরিষ চন্দ্র ও সতিশ চন্দ্র। জোতদারি সীমানায় বসবাসকারীরা খাজনা দিতেন তাদের।
এরপর দেশ ভাগ হয়েছে কিন্তু জোতদারদের রেখে যাওয়া সীমানা জটিলতায় এখনও ভুগছে এলাকার পাঁচ গ্রামের মানুষ। এই পাঁচটি গ্রাম এখন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের অধীন, কিন্তু মানচিত্রগত অবস্থান পাশের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের অভ্যন্তরে।
ফলে যুগ যুগ ধরে চলছে নানান প্রশাসনিক জটিলতা। এত বছরেও পাঁচ গ্রামের তিন হাজারের বেশি মানুষের বঞ্চনা দূর করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। অন্য উপজেলার সুযোগ সুবিধা নিলেও তারা ভোট দিচ্ছেন আরেক উপজেলায়। নিজ দেশেই মেনে নিতে হচ্ছে অনেকটা ছিটমহলবাসীর জীবন।
পাঁচটি গ্রামের মধ্যে কৈকুড়ি গ্রামে ২২৫টি খানা, বড়ভিটা গ্রামে ১৫০টি খানা, মরাদিগদারী গ্রামে ৭০ খানা, টেংনার ভিটা গ্রামে ১০০ খানা এবং দিগদারী গ্রামে ৫৫ খানা রয়েছে।
কৈকুড়ি গ্রামের আহম্মেদ হোসেন (৮৫) নিউজবাংলাকে বলেন, এখানে পাঁচ গ্রামের প্রায় সোয়া তিন হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৮০০। বন্যা হলেই আমাদের ভিতরবন্দে আশ্রয় নিতে হয়। সাহায্য সহযোগিতা সেখানকার মানুষই করে, কিন্তু আমরা আরেক ইউনিয়নের বাসিন্দা।’
এসব এলাকার মানুষের লেখাপড়া, বিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিচার-সালিশ, বন্যায় আশ্রয় গ্রহণ সবকিছুই চলে ভিতরবন্দকে আশ্রয় করে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে তাদের ইউনিয়ন ভোগডাঙ্গা। ফলে সামাজিক বেষ্টনির সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত বেশিরভাগ মানুষ।
বিল দিয়ে বিচ্ছিন্ন এ এলাকার রাস্তাঘাট বেহাল। ফলে রোগী পরিবহনসহ যাতায়াত সমস্যা তীব্র। দীর্ঘদিন বঞ্চিত এসব গ্রামের মানুষ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিবর্তন করে নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দেই ঠিকানা পেতে চান।
কৈকুড়ি ছামিনা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের চারদিকে ভিতরবন্দ। এখানকার মানুষের অবস্থা ছিটমহলবাসীর মতো। আমরা ভিতরবন্দের বাসিন্দা হতে চাই।’
তবে এ কথা মানছেন না ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর ইসলাম।
নিউজবাংলার প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘আপনাকে কে কী বলেছে জানি না। তবে ওই এলাকার অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষ আছেন যারা আমার ইউনিয়নে থাকতে চায়। এখনও অনেকে ফোন করে আমাকে জানান, তারা ভিতরবন্দ ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হতে চান না। আমরা ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে দেশ স্বাধীনের আগে থেকে আছি, এখনও এই ইউনিয়নে থাকতে চাই।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে প্রথম জানতে পারলাম। দুই উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অন্যদিকে, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাঁচটি গ্রামের মানুষ খুবই দুর্ভোগে রয়েছে। স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছার মাধ্যমে এর সমাধান হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সংক্ষিপ্ত সফরে শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
দুপুর ২টার দিকে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন তিনি।
বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয় আনোয়ার ইব্রাহিমকে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ওই সময় গান স্যালুট ও গার্ড অফ অনারের মাধ্যমে তাকে সম্মান জানানো হয়।
প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এটিই বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম সফর।
বিমানবন্দর থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমকে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই হোটেলে প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম ও প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, বৈঠকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা সহায়তা, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট খাতগুলো তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আগে দুই নেতার একান্ত বৈঠকও হবে।
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে চা-নাস্তা পর্বের আয়োজন করবেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। তিনি সেখানে পরিদর্শন বইয়ে সই করবেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়া আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে।
এ ছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসিয়ানে বাংলাদেশের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে উত্থাপন করা হবে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, এ সফর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করা এবং টেকসই বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগমন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম উপমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আছেন।
দুই দেশের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গত আগস্টে আনোয়ার ইব্রাহিমকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান অধ্যাপক ইউনূস।
বাংলাদেশে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ মালয়েশিয়া।
পুরোনো বন্ধু অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ফোন করে ব্যক্তিগতভাবে তাকে অভিনন্দন জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।
সন্ধ্যা ছয়টা ২৫ মিনিটে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে চারটি সমুদ্র বন্দরকে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র শুক্রবার আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানায়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বার্তায় আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে বলা হয়, ‘সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
‘এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’
সতর্কবার্তায় চার বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলেদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরে আসছেন শুক্রবার।
বিমানবন্দরে গার্ড অফ অনার দেয়া হবে তাকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বেলা আড়াইটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল থাকবে।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।
পরবর্তী সময়ে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে আলোচনা করবেন, যেখানে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শ্রম অভিবাসন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিস্তৃত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠক বাংলাদেশ চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করবে। পাশাপাশি আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে একটি ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সফরসূচি অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে যৌথ বিবৃতি দেয়া হবে।
ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আনোয়ার ইব্রাহিমই প্রথম সরকারপ্রধান যিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি হবে বিদেশি কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারে পাঁচটি কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্থার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পরে প্রজ্ঞাপনগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আট সদস্যের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্থার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক এবং নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদারকে।
নয় সদস্যের পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনকে।
আট সদস্যের বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবুল নাঈম মমিনুর রহমান।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এই কমিশনটিও আট সদস্যবিশিষ্ট।
এছাড়া আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ সরকারের মধ্যে ‘বন্দি হস্তান্তর’ সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেয়া হয়।
উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে দণ্ডিত ব্যক্তিদের স্থানান্তর চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবও নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এগুলো হয়ে গেলে আমরা মালদ্বীপ বা কাতারে সাজাপ্রাপ্ত আমাদের বাংলাদেশি ভাই-বোনদের ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের সঙ্গে ‘সাজাপ্রাপ্তদের স্থানান্তর’ সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে বাংলাদেশের।
২০১৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালদ্বীপ থেকে ‘বন্দি স্থানান্তর’ সংক্রান্ত একটি খসড়া চুক্তির প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রস্তাবিত চুক্তি সই হলে বাংলাদেশ মালদ্বীপ থেকে সাজাপ্রাপ্ত ও কারাবন্দি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবে।
চুক্তিটি ১০ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে এবং দুই দেশ সম্মত হলে এটি আরও ১০ বছরের জন্য নবায়ন করা যেতে পারে।
উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে দণ্ডিত ব্যক্তিদের স্থানান্তর চুক্তি অনুসমর্থনের প্রস্তাবও নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।
চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফরের সময় দু’দেশের সরকারের মধ্যে এই চুক্তি সই হয়।
চুক্তিটি এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে এবং যদি কোনো অংশ এটি শেষ করার ইচ্ছা প্রকাশ না করে তবে এটি আরও এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে।
নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারত ও নেপালের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বৃহস্পতিবার ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি সই হয়েছে।
চুক্তির আওতায় জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য নেপাল থেকে ভারত হয়ে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), নেপালের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (এনইএ) এবং ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম লিমিটেডের (এনভিভিএন) প্রতিনিধিরা চুক্তিতে সই করেন।
অনুষ্ঠানে নেপালের জ্বালানি, পানিসম্পদ ও সেচমন্ত্রী দীপক খাড়কা, বাংলাদেশের পানিসম্পদ সচিব নজমুল আহসান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই চুক্তি আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের বিষয় নয়; বরং আমাদের দেশগুলোর দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াও।’
এর আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে সিংহ দরবারে সাক্ষাৎ করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। এ সময় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
এই ঐতিহাসিক বিদ্যুৎ চুক্তি সইয়ের সাক্ষী হতে পরিবেশ উপদেষ্টা দু’দিনের সফরে নেপালে অবস্থান করছেন। এটি বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি সম্পর্ক জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
আরও পড়ুন:টাইম ম্যাগাজিনের ‘টাইম-১০০ নেক্সট’ ২০২৪-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের নাম। প্রতি বছর বিশ্বের প্রভাবশালী একশ’ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে থাকে প্রখ্যাত এই সাময়িকী।
তালিকাটি বুধবার (২ অক্টোবর) প্রকাশ করা হয়। এতে উদীয়মান নেতা ক্যাটাগরিতে নাম রয়েছে নাহিদ ইসলামের। সূত্র: বাসস
টাইম ম্যাগাজিনে নাহিদ ইসলাম সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘২৬ বছর না পেরুতেই বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। যেসব ছাত্রনেতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করা নাহিদ ইসলাম তাদের অন্যতম।
‘অনেক প্রতিবাদী নেতার অন্যতম, তিনি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে নির্যাতিত হওয়ার পর আরও ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এর কিছুদিন পরই তিনি শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি পৌঁছে দেন- হাসিনাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।’
টাইম লিখেছে, ‘নাহিদ ইসলাম বলেন- কেউ ভাবেনি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।’
ম্যাগাজিনটি আরও লিখেছে, “তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়তো সামনে অপেক্ষা করছে। নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ‘জেন-জেড উপদেষ্টা’র মধ্যে নাহিদ ইসলাম একজন।
“তাদের কাজ- ক্রমে অধিকতর কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে ক্ষয়িত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে মেরামত করা।”
ম্যাগাজিনটি নাহিদ ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মহামারীর মতো ছড়ানো রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য