জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক আব্দুর রহিম ধর্মীয় পোশাক পরতে যে আদেশ জারি করেছেন, সেটি এক দশক আগে হাইকোর্টের একটি রায়ের বিরোধী।
বিষয়টি জেনে হতবাক হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কোন বিধিবলে এবং কোন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ‘বেআইনি’ জারি করা হয়েছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করে তিন দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে জবাব।
স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তাকে (আব্দুর রহিম) এরই মধ্যে শোকজ করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে আপত্তিকর বিজ্ঞপ্তির ব্যাখ্যা না পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কী ব্যবস্থা নেয়া হবে- এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘কেন তিনি এটি করেছেন তদন্ত করা হবে। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে ওএসডি করা হতে পারে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, তিনি গণমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় পারেননি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পর্দার বিষয়ে জারি করা আদেশটি মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তিনি ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। আগামী রোববার শোকজ নোটিসের বিষয়ে অগ্রগতি জানানো হবে।
বুধবার অক্টোবর জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের আদেশটি জারি হয়। এতে ‘পর্দা’ মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, মুসলিম পুরুষ কর্মচারীরের টাকনুর উপরে এবং নারীদের হিজাবসহ টাকনুর নিচে কাপড় পরতে হবে।
আব্দুর রহিম নিউজবাংলাকে বলেছেন, তিনি তার ‘ধর্মীয় অনুভূতি থেকে’ এই আদেশ জারি করেছেন। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেননি।
তিনি এমনও বলেছেন, এই আদেশ আরও আগেই জারি করা উচিত ছিল।
বাংলাদেশের সরকারি চাকরি আইনে, কর্মচারীদের পোশাকের বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে এক দশক আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও হাইকোর্টের দুটি আদেশ অনুযায়ী এই নির্দেশনা স্পষ্টত বেআইনি।
২০১০ সালের ৪ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে কোন ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না।
ওই রায়ে বলা হয়, ‘শালীনতা সাপেক্ষে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরার অধিকার রয়েছে।’
ওই বছরের ২৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বলা হয়, কাউকে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা হলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। কেউ এটি করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মানবাধিকার কর্মী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওনি (আব্দুর রহিম) এটা করতে পারেন না। আধুনিক কোনো রাষ্ট্রে কোনো পোশাক পরতে কেউ না করতে পারবে না আবার বাধ্যও করতে পারবে না।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় মানে আইন। যেহেতু তিনি আদেশ অমান্য করেছেন, হাইকোর্ট ইচ্ছা করলে তার তোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি তার জায়গা থেকে এ ধরনের নোটিস করতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী কারণ ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিস দেয়া হবে।’
কয়েকটি হাসপাতালে আধুনিকায়নের কাজে মহাপরিচালক বর্তমানে ঢাকার বাইরে আছেন।
বেলা সাড়ে চারটার দিকে মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে গিয়ে পরিচালক রহিমকে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।
অফিসের অন্য কর্মকর্তারা জানান, পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গেছেন। তাকে ডাকা হয়েছে। এরপর অফিস বন্ধ হওয়ার আগে তিনি আর কার্যালয়ে ফেরেননি। এরপর ফোনও বন্ধ।
অফিস থেকে বের হতে হতে নিউজবাংলাকে আব্দুর রহিম বলেন, ‘এটা আমি দিতে পারি কি না, এই প্রশ্ন করার আগে আমি আমার ধর্মীয় দায়িত্বের কথা ভেবেছি।’
‘আমাদের দেশ মুসলিম কান্ট্রি, আমাদের দেশে, আমার অফিসে যদি এভাবে সজ্জিত হয় আমার কাছে ভালো লাগবে’-বলেন পরিচালক।
যদি কেউ না মানে তাহলে আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন?- এমন প্রশ্নে পরিচালক বলেন, ‘এটা ধর্মীয় ব্যাপার। কাউকে জোর করা হবে না। কেউ মানলে মানতে পারে, না মানলে নাই।’
তাহলে আদেশ জারির কী আছে, এমনিতে বললেই তো হতো- এমন মন্তব্যের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘আমি আমার ঊর্ধ্বতন জায়গা থেকে এই নির্দেশনা দিয়েছি।’
পরিচালকের কক্ষের সামনে নোটিস বোর্ডে আদেশটি পাওয়া যায়নি। কর্মীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে সেটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আব্দুর রহিম গত ২৬ মার্চ জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ছিলেন।
দৈনিক ভোরের কাগজ প্রকাশনা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পত্রিকাটির মালিকপক্ষ সোমবার একটি নোটিশের মাধ্যমে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
নোটিশে বলা হয়, শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরেই ভোরের কাগজে কিছু সংবাদকর্মী অষ্টম ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন দাবি এবং তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য আন্দোলন করছিলেন। সংবাদকর্মীদের একটি অংশ রোববার সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা এবং বহিরাগতদের নিয়ে ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভোরের কাগজের মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ জারি করে।
সংবাদপত্রটির বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে মালিকপক্ষ বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছোড়ার অনুমোদন পেয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দ্রুত কিনতে পারবে বিজিবি।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সোমবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের সীমান্তে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিজিবির সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। তাই বিজিবিকে অত্যাধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করা হচ্ছে।’
বৈঠকে জানানো হয়, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, অনুপ্রবেশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা মোকাবিলায় বিজিবির কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। এ জন্য সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ব্যবহার করার মতো সরঞ্জামের প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে। বিজিবির ব্যবহারের জন্য এসব সরঞ্জাম কেনার অনুমোদন দ্রুত কার্যকর করা হবে।
পুলিশ, র্যাব ও আনসারের জন্য নতুন পোশাক নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুনভাবে পুলিশের জন্য আয়রন রঙের পোশাক, র্যাবের জন্য গ্রিন অলিভ এবং আনসারদের জন্য গোল্ডেন হোয়াইট রঙের পোশাক নির্বাচন করা হয়েছে।
সচিবালয়ে সোমবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ, র্যাব ও আনসারদের জন্য তিনটি পোশাক নির্ধারণ করেছি। এসব পোশাক পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করা হবে। যেসব পোশাক রয়েছে, সেসব আস্তে আস্তে বদলে ফেলা হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পোশাক পরিবর্তনে বড় ধরনের অর্থ সংকুলানের সমস্যা হবে না।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী তিন বাহিনী পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় সোমবার তিনি এ তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ, র্যাব, আনসার; তিন বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মন-মানসিকতারও পরিবর্তন হবে বলে আশা করি।’
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘কমিশনের প্রতিবেদন এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তারা যে সুপারিশ করেছে, তা ভালো। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। এর আগে তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’
সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজিবির কাছে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল না থাকায় তা ব্যবহার করা হয়নি। তাদের কাছে আছে মারণাস্ত্র। এখন সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে তা আছে।’
অবৈধ বিদেশিদের সংখ্যা দেশে কমে আসছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দেশে অনেকে অবৈধভাবে বসবাস করছে। সংখ্যাটা আগে ছিল ৪৯ হাজার ২২৬ জন। তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৪৮ জনে।
‘৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দেশত্যাগ করতে হবে। না গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে, তাদের বিষয়েও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না।
‘খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বাজার নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে দুষেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের মিথ্যা তথ্যের কারণেই বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে বর্তমান সরকার।
সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, আলুর উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। যদিও বিগত সরকার আলুর বাম্পার ফলন দেখিয়েছে।
কৃষি সাংবাদিকতাবিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধন শেষে রবিবার সকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এতদিন দেশবাসীকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে; বলেছে, উৎপাদন বেড়েছে।কিন্তু ঘটনা উল্টো, যার ফলে অন্তর্বর্তী সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের জুট চুক্তি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছিল। এর ফলাফল ১৯৭৪ সালে ১০ লাখ মানুষ না খেয়ে মারা গেছে।’
নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে প্রেস সচিব বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হবে। সেই সঙ্গে কী পরিমাণ সংস্কার চায়, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হবে।’
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যাদের হাতে রক্ত আছে, তাদের সবার বিচার হবে। দলটির নেতাদের মধ্যে এখনও কোনো অনুশোচনা নাই।
‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা এই সরকারের নেই। তাদের নিষিদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাজনৈতিক দলগুলো।’
২০২৫ সালের বাজেট জনবান্ধব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যৌক্তিকতা বিবেচনা করেই সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন:সীমান্ত সবসময় সুরক্ষিত বলে রবিবার জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা বেঁচে থাকতে আমাদের সীমান্তে কেউ আসতে পারবে না।’
বিসিএস ক্যাডারভুক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ১৩৭তম সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্স-২০২৪-২৫-এর সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আগের সরকার কিছুটা ছাড় দিত। এখন অধিকার আদায়ে ছাড় দিচ্ছি না। তাই কিছু বিষয়ে ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে ডিজি লেভেলের বৈঠক হবে। সেখানে সমাধান হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ধান ও গাছ কাটা নিয়ে যে বিরোধ চলছে, সেটা দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হবে।’
সিভিল সার্ভিসের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘চাকরি হারানোর ভয় না থাকায় সিভিল সার্ভিস কর্মীদের ক্ষেত্রে সেবায় অনীহা কাজ করে এবং শৃঙ্খলা থাকলে ক্যাডারদের মধ্যে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থাকত না।’
দুর্নীতিকে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দুর্নীতি না কমলে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হওয়ার পর আমার আত্মীয়স্বজন বেড়ে গেছে। আমাদের পরিচয় দিয়ে কেউ সুবিধা নিতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি করলে সেটারও সঠিক তথ্য প্রকাশ করুন।’
ওই সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন:তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানির দিন আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়েছে।
বিষয়টি রবিবার কার্যতালিকার ১৩ নম্বর ক্রমিকে ছিল।
বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করেন। এরপর জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
গত ১ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রিভিউটি ১৯ জানুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য করেন।
আদালতে সেদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ১৬ অক্টোবর রিভিউর (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে এ বিষয়ে রিভিউ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এ ছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও রিভিউ আবেদন করেন। এসব রিভিউ আবেদনের একসঙ্গে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে উত্থাপিত পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য