জেলা পর্যায়ে এমপিদের পছন্দে এবার কমিটি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।
শনিবার খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বনানীতে তার নিজ কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে কাজী জাফর উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমপি সাহেবদের পছন্দ হয় না, সে কারণে অনেকের নাম বাদ যাচ্ছে। এবার যাতে এগুলো না হয়, সেদিকে আমরা কঠোর ভাবে লক্ষ্য রাখব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলা পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো করতে হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যে অভিযোগ আছে, সেগুলো পরীক্ষা করব। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের জন্য কষ্ট করে এসেছেন, শ্রম দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আমরা কমিটি করব।’
জেলা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের দ্বন্দ্ব নিরসন কীভাবে করা হচ্ছে জানতে চাইলে কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘আমরা একজনের জন্যই কাজ করব। তিনি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। অন্য কারও সার্থে আমরা কাজ করছি না।’
খুলনা বিভাগে জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলো শেষ হতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটা বৈঠক করাই কঠিন। আমাদের যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হয়, তবে প্রত্যেক জেলায় গিয়ে যাচাই-বাছাই করতে হবে। তারপরে কমিটি দিলে একটু সময় লাগবে।’
আগামী দুই মাসের ভিতরে খুলনা বিভাগের জেলা কমিটিগুলো শেষ হবে বলেও জানান জাফর উল্লাহ।
এ সময় আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারী ও স্বজনপ্রীতি ঠেকাতে আমরা কাজ করব । কারণ দলের প্রকৃত পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দেয়া হচ্ছে । কারও পছন্দের জন্য পরীক্ষিত নেতা-কর্মীরা সুযোগ পাবে না, এটা যেন না হয়। নেত্রী এটা শত ভাগ নিশ্চিত করার জন্য আমাদের বলেছেন।'
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের কমিটিতে বিতর্কিতদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিতর্কিতদের কমিটিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে নন্দিত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন সাহসী রাজনৈতিক নেতা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশিষ্ট লেখক ও রাজনৈতিক গবেষক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টনের লেখা ‘শেখ হাসিনা: দ্য মেকিং অফ অ্যান এক্সট্রাঅর্ডিনারি সাউথ এশিয়ান লিডার’ (Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি প্রমুখ।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচনের বিরল সুযোগ পেয়ে আমরা সবাই বেশ সম্মানিত। কেননা যার জীবনালেখ্য নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে, তিনি একজন অসাধারণ ও অমূল্য মানুষ। তিনি আর কেউ নন; আমাদের সবার প্রিয়, অতি পরিচিত, অতি আপন, দেশের মানুষের মধ্যমণি, নন্দিত প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের দেশ পরিচালনার একজন যোগ্য ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু বাংলাদেশেরই অসাধারণ একজন নারী নন, তিনি অত্যন্ত সাহসী রাজনীতিবিদ। পাশাপাশি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজ সমগ্র বিশ্বনেতার কাতারে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সারা বিশ্বে তার সফল কর্মের জন্য নন্দিত। আমরা আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুধু জাতীয়ভাবে বিবেচনা করব না। তিনি আজ বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিচরণ করছেন তার সাহসী সব সিদ্ধান্তের কারণে।’
স্পিকার বলেন, ‘এই বইটিতে লেখক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলা থেকে কীভাবে ধাপে ধাপে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অতিবাহিত করেছেন এবং কীভাবে একজন সফল রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন- তার সঠিক তথ্য দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের মতো একটি ঘটনা যার জীবনে ঘটেছে, শুধু তিনিই বলতে পারবেন তার প্রতি নির্মমতা কতটা গভীর এবং কতটা বেদনাদায়ক। তারপরও শেখ হাসিনা এগিয়ে গেছেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
বঙ্গবন্ধুর মতোই বাংলার মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা অপার। তিনি ’৭৫-এর সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়কে বুকে ধারণ করে, সেই নির্মমতাকে সঙ্গী করে দেশের হতদরিদ্র মানুষের জন্য তার বাবার অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটিই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। যে স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, তার সবই বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবেন বলেই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে আসেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করেন। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তিনি এ বাংলায় রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছেন এবং আস্তে আস্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করেছেন এবং পরবর্তীতে দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। এই যে মহাকর্মযজ্ঞ এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন মানুষ, তার সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই এমন সব বই দরকার।’
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন একটি বই সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জাতীয় চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন এ বইটির আগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, সেটির জন্যও তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি বলব- দুটি বই-ই আমাদের জন্য অমূল্য রচনা। ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের জন্য বইগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পদ হিসেবে আমাদের কাছে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে বইটি লেখার স্মৃতিচারণ করে ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা এই বইটির আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি বই লেখার তাগিদ অনুভব করি। করোনাকালে আমার একজন পরিচিত মানুষ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন যে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই উপহার দেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই জাতির পিতার ওপর লেখা একটি ভালো ইংরেজি বই পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর আমি শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই লেখার অনুমতি চাই। সেটি আমি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে জানাই। এরপর নানাভাবে অনেকের সহযোগিতা পেয়ে বইটি লিখে ফেলি। ওই বই লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনাকে অন্যভাবে আবিষ্কার করি। তখনই আমি তার ওপর আরেকটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। সেটিও আমি যথারীতি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিনকে জানাই।
‘তখন প্রধানমন্ত্রী জানান, তাকে নিয়ে বই লেখা লাগবে না; তার বাবাকে নিয়ে আরও কাজ যেন করি। কিন্তু ওই বইটি লিখতে গিয়ে আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীকে এত ঘটনাবহুল একজন মানুষ মনে হয়েছে, যা আমাকে বেশ আবেগতাড়িত করে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার একজন নেতা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। এটি সারা বিশ্বকে জানাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বইটি লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনার বেশ সান্নিধ্য পেয়েছি। তিনি আমাকে বড় বোনের মতো স্নেহ দিয়েছেন, ছায়াও দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানের একটি বই করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমি তাই করেছি।’
‘এটি শুধু একটি বই নয়। একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে কী কী অধ্যায় পার করে আজকের জায়গায় এসেছেন, তার সবই জানা যাবে বইটি পড়লে। ১৯৭৫-এর পরবর্তী সময়ে একজন শেখ হাসিনা শুধু শোক নিরসনের মধ্য দিয়ে যাননি। তিনি সেই জীবনকে কীভাবে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেছেন এবং নিজেই নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছেন- সব কথা আছে বইটিতে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত তার সমগ্র জীবন বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়- একজন মানুষ হিসেবে শেখ হাসিনা কেমন, একজন মা হিসেবে, নেতা হিসেবে, এমনকি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কেমন- তার সবই আছে বইটিতে।’
‘Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader’ বই হাতে লেখকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা
ডা. মিল্টন বলেন, ‘তাই আমার প্রত্যাশা- বইটি দেশ এবং দেশের বাইরের সব মানুষের কাছে পৌঁছুক। এত ঘটনাবহুল ও বেদনাবহুল একজন মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রামটা কেমন- তা জানতে হলে বইটি পড়তে হবে।’
‘যে শেখ হাসিনাকে চেনেনি, শেখ হাসিনাকে জানেনি, সে আসলে হতভাগা। শেখ হাসিনাকে জানা মানেই আজকের বাংলাদেশ এবং আজকের রাজনীতিকে চমৎকারভাবে অধ্যয়ন করা।’
বাণিজ্যিকভাবে চালুর পরদিনই কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পর ঝুঁকির শঙ্কায় আধ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়েছে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’।
শনিবার সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনে এই ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ গোলাম রব্বানীকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে লাইনের সংস্কারকাজ শুরু করলে কক্সবাজার এক্সপ্রেস আধ ঘণ্টা দেরিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।
গোলাম রব্বানী জানান, শনিবার সকালে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের রামু উপজেলার কাহাতিয়া পাড়ায় রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলার খবর পান তিনি। পরে বিষয়টি রেল অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের সকল স্তরে অবহিত করেন। এরপর রেল প্রকৌশলসহ নির্মাণকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে রেললাইনের বিটের খুলে ফেলা নাট-বল্টু পুনঃসংযোজন ও মেরামত কাজ শুরু করেন নির্মাণ শ্রমিকরা। তা শেষ করে ট্রেন চলাচল করার উপযোগী করতে বেলা সাড়ে ১২টা বেজে যায়।
তিনি বলেন, ‘রেললাইনের এ ত্রুটিপূর্ণ স্থান দিয়ে ট্রেন চলাচলে ঝুঁকি থাকায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ছাড়া সম্ভব হয়নি। পরে রেললাইন চলাচল উপযোগী হওয়ার পর দুপুর ১টায় কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।’
তবে এটি নিছক চুরির ঘটনা, নাকি নাশকতার চেষ্টা- তা নিশ্চিত করতে পারেননি কক্সবাজার রেলের এ কর্মকর্তা।
এদিকে খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রামু উপজেলা ইউএনও ফাহমিদা মোস্তফা ও ওসি আবু তাহের দেওয়ানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান জানান, খবরটি শোনার পর প্রশাসনের কর্মকর্তারাসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাস্থলে রেললাইনের বিটের নাট-বল্টু খুলে ফেলা অবস্থায় দেখা গেছে।
ঘটনাটি নিছক চুরির ঘটনা, নাকি কোনো ধরনের নাশকতার চেষ্টা- তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
আবু তাহের বলেন, ‘ঘটনাটি কারা, কী উদ্দেশ্যে ঘটিয়েছে এবং যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে।’
আরও পড়ুন:আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ দিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম শনিবার জানান, নিবন্ধিত ২৯টি রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৯৬৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৭৪৭ জন।
ইসি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে সবচেয়ে বেশি ৩০৪টি মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) প্রার্থীরা। লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া জাতীয় পার্টিরও ৩০৪ জন জমা দেন মনোনয়নপত্র।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুটি মনোনয়নপত্র জমা দেয় হারিকেন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে যাওয়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
অন্য দলগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি তথা জেপি (বাইসাইকেল) ২০, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয়, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি তথা ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ছয়, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ১৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল তথা জাসদ (মশাল) ৯১, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ৪৭, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৪, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ১৪২, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯, গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭, বাংলাদেশ মুসলিম লিগ তথা বিএমএল (পাঞ্জা) পাঁচ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট তথা বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬, তৃণমূল বিএনপি (সোনালি আঁশ) ১৫১, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (নোঙ্গর) ৪৯ ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (একতারা) ৮২টি মনোনয়নপত্র জমা দেয়।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর নাগাদ। আপিল নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর।
১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু হবে, যা চলবে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার আবহাওয়ার ছয় নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে নিম্নচাপের অবস্থান নিয়ে বলা হয়, ‘দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।’
নিম্নচাপ কেন্দ্রের আশপাশের অবস্থা নিয়ে বলা হয়, ‘গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।’
বন্দরে সতর্ক সংকেত নিয়ে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার সকালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার আগারগাঁওয়ে অধিদপ্তরের ভূমিকম্প কেন্দ্র থেকে ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ৫.৬।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, বাংলাদেশের রামগঞ্জের আট কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে অনুভূত হয় ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থল এর গভীরতা ১০ কিলোমিটার।
নিউজবাংলার চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, নওগাঁ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, কক্সবাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি আবহাওয়ার পাঁচ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে, যেটি প্রকাশ হয় শনিবার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
‘এটি আজ সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছি। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।’
নিম্নচাপ কেন্দ্রের আশপাশের অবস্থা নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।’
বন্দরে সতর্কবার্তা নিয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার দেশটির সরকারের প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের অন্য কর্মকর্তারা প্রায়ই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশটির জিরো টলারেন্স নীতির ওপর জোর দেন এবং আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো বিশ্বব্যাপী সংঘটিত জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতি অস্বীকার করে চলেন।
‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম-২০২২’-এর বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, বিশেষত আল-কায়েদা অনুমোদিত গোষ্ঠী, জামাত-উল-মুজাহিদীন (জেএমবি) এবং আইএসআইএস অনুমোদিত জেএমবি শাখা, নব্য জেএমবির মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোতে কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে আমলে নেয়ায় ২০২২ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী সহিংসতার অল্প কিছু ঘটনা ঘটেছে।
অক্টোবরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত একটি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে নির্মূলের জন্য অভিযানের ঘোষণা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশ কয়েক ডজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ অনুসারে, গত অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবস্থানকালে আল-কায়েদা অনুপ্রাণিত একটি গোষ্ঠী জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে ব্যাহত করতে র্যাব অভিযান চালায়।
কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, জঙ্গি গোষ্ঠীটি জাতিগত বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে সহযোগিতা করেছিল। কর্তৃপক্ষ বছরের বাকি সময়জুড়ে কয়েক ডজন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সদস্যকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে।
২০১৫ সালে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনে হামলার ঘটনায় প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেলকে গত ২০ নভেম্বর ছিনিয়ে নিয়ে যায় জঙ্গিরা।
কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষিত আল-কায়েদা অনুমোদিত আনসার আল-ইসলামের ২০ সন্দেহভাজন সদস্যকে পালানোর পরিকল্পনা এবং অথবা কার্যকর করতে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করে। ছিনিয়ে নেয়া আসামিরা ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত পলাতক ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাগার ব্যবস্থায় মৌলবাদ থেকে সহিংসতা এবং সন্ত্রাসী নিয়োগ গুরুতর উদ্বেগ হিসেবেই রয়ে গেছে। সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের নির্বাচিত কারাগারগুলোতে বাস্তবায়নের জন্য সহিংসতা থেকে একটি সমন্বিত ‘ডেরাডিকালাইজেশন’ প্রোগ্রাম তৈরি শুরু করে।
মন্তব্য