করোনাভাইরাসে নারীর চেয়ে পুরুষের মৃত্যু বেশি সারা বিশ্বেই। বাংলাদেশে এই অনুপাত আরও বেশি।
করোনাভাইরাসজনিত রোগে (কোভিড-১৯) বিশ্বে যত মানুষ মারা গেছেন তাদের ৭৩ শতাংশ পুরুষ; ২৭ শতাংশ নারী। তবে বাংলাদেশে পুরুষের মৃত্যু হার ৭৭ শতাংশেরও বেশি।
বাংলাদেশে পুরুষের মৃত্যুর হার বিশ্বের গড় তো বটেই, প্রতিবেশী ভারত-পাকিস্তানের চেয়েও বেশি।
এর কারণ কী, তা নিয়ে বাংলাদেশে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়নি। ফলে সুনির্দিষ্টভাবে কারণ বলার সুযোগ নেই। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তাদের ধারণা থেকে কিছু কারণের কথা বলছেন।
শনিবার পর্যন্ত সারা বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিন কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ২৩৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে ১১ লাখ ১০ হাজার ৫৩৬ জন।
দেশের স্বাস্থ্য অধিদফতের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে করোনাভাইরাসে মোট শনাক্তের সংখ্যা তিন লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫। মারা গেছে পাঁচ হাজার ৬৪৬।
নিহতদের মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৩৪৫ জন, আর নারী এক হাজার ৩০১ জন। শতাংশ হিসেবে পুরুষের মৃত্যুর হার ৭৬ দশমিক ৯৬। নারীর ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭৪ লাখ ৩২ হাজার ৬৮০ জন। এর মধ্যে মারা গেছে এক লাখ ১৩ হাজার ৩২ জন। এদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৭০ শতাংশ; ৩০ শতাংশ নারী।
পাকিস্তানে তিন লাখ ২২ হাজার ৪৫২ জন রোগীর মধ্যে মারা গেছে ছয় হাজার ৬৩৮ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৭২ শতাংশ, নারী ২৮ শতাংশ।
সারা বিশ্বেই করোনায় মৃত্যু তাদেরই বেশি, যাদের কঠিন রোগ বা (কো মরবিডিটি) রয়েছে। ডায়াবেটিক, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপারটেনশন, দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগ, মেদবাহুল্য যাদের রয়েছে, তারাই মারা যাচ্ছেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশে আরও বেশি হারে পুরুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে অস্বাস্থ্যকর জীবনাচরণ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ফুসফুসে ক্যান্সার, কিডনি রোগের আধিক্যের বিষয়ে বলেছেন একজন বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসব রোগ নারীদের তুলনায় পুরুষের বেশি। এ ছাড়া মদ ও ধূমপানের অভ্যাসও তাদের মধ্যেই বেশি।
আবার রোগে আক্রান্ত হলেও পুরুষদের চিকিৎসা নেয়ার প্রবণতা কম- বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরুষের থেকে নারীর বেশি থাকে। তবে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে পুরুষের মৃত্যুর হার কেন বেশি- এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসা সহজ নয়। কারণ, আমার জানা মতে এ বিষয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই। তবে আবাহাওয়াজনিত কারণে পুরুষের মৃত্যুর হার বেশি হতে পারে।’
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ২৪৫ ও নারী ৪৭৬ জন।
সেই হিসাবে মারা যাওয়াদের ৭৯ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ নারী।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারী থেকে পুরুষদের মৃত্যুর কারণ পুরুষরা অসংক্রামক রোগে বেশি ভোগে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, লিভারের ক্যান্সার, স্ট্রোক পুরুষদের বেশি আক্রান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেশাজাতীয় দ্রব্য পুরুষ বেশি গ্রহণ করে থাকে। ফলে করোনা আক্রান্ত হয়ে পুরুষদের মৃত্যু ঝুঁকিও বেশি থাকে। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের পুরুষরা করোনায় বেশি মারা যায় কেন, এই বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব না।’
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোববার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৮ জন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯৫ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯৬ হাজার ৭০৬ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ নারী।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে দেশে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৯৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৫২৯ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬ হাজার ২২৮ জন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬২ জন। এদিকে নতুন পাঁচজনসহ ডেঙ্গুতে চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২২ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৫০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯২ হাজার ৭০২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শুক্রবার নিয়মিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনই নারী। একই সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যত্র হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৫১৭ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৭০ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দু’জন পুরুষ ও বাকি তিনজন নারী।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫১৪ জন। একই সময়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৮৮৪ জন।
চলতি বছরে দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পাঁচশ’ ছাড়িয়ে গেল। সবশেষে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬২৯ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪৫ জন পুরুষ ও ২৫৯ জন নারী। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৬৮৫ জন।
আর সবশেষ এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৮৪২ জন ডেঙ্গু রোগী।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার এই সময়কালে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৮২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৭ জন। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪০৫ জন ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১ ডিসেম্বর রোববার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯২ হাজার ৩৫১ জন। তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
মন্তব্য