বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার ব্যাপকভাবে কমাতে চায় সরকার। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এখন তা বাস্তবায়নের পথ খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু এটি বাস্তবায়ন করতে হলে পরিকল্পনায় থাকা ২৬টি প্রকল্প বাতিল করতে হবে সরকারকে। এগুলোর কতটি বাতিল করা সম্ভব হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ সম্পর্কে সরকারি সূত্রগুলো একটি বিষয় স্পষ্ট করেছে, যা-ই করা হোক, তা বিদ্যুৎ খাত মহাপরিকল্পনা (পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান বা পিএসএমপি) পর্যালোচনা করে সংশোধনের মাধ্যমে করা হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে পুরোপুরি সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, কীভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে আনা যায়।’
সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ হচ্ছে, কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাপী তেল-গ্যাসের দাম কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা আর সস্তা জ্বালানি বিকল্প নয়। আমদানি করা কয়লার এখন দাম বেশি। নৌপথ ও বন্দরের সীমাবদ্ধতার কারণে কয়লা আমদানির প্রক্রিয়া ঝুঁকিপূর্ণ। সেই সঙ্গে নবায়নযোগ্য বিকল্পের ব্যয় ক্রমশ কমে আসছে।
বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট ২৯টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্প-পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, রামপাল ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট এবং মাতারবাড়ি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট পর্যালোচনার আর সুযোগ নেই। কারণ, পায়রা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে চালু হয়েছে। রামপাল বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাতারবাড়ি প্রকল্পের কাজও অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পটি শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নয়। এর সঙ্গে রয়েছে একটি কয়লার টার্মিনাল নির্মাণ এবং সমুদ্র থেকে এই টার্মিনাল পর্যন্ত কয়লাবাহী জাহাজ চলাচলের উপযোগী একটি খাল খনন। এই কাজগুলোর বাস্তবায়ন অনেকটাই এগিয়েছে।
তাই সরকারের পর্যালোচনার বিষয় হবে অবশিষ্ট ২৬টি প্রকল্প। এই প্রকল্পগুলোর মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ২০ হাজার মেগাওয়াট। সরকারি সূত্র বলছে, এগুলোর মধ্যেও এমন কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে যেগুলো পর্যালোচনার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে। যেমন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা দ্বিতীয় পর্যায়; দেশীয় প্রতিষ্ঠান রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) এবং চীনের নরিনকোর যৌথ উদ্যোগে পায়রার পাশেই বাস্তবায়নাধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি প্রকল্প, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বাস্তবায়নাধীন ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রকল্প প্রভৃতি।
এই প্রকল্পগুলোর অর্থায়ন এবং ইপিসি (ইরেকশন, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন) ঠিকাদার নির্ধারিত হয়ে আছে। এ ধরনের প্রকল্প বাতিল করতে গেলে সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এসব প্রকল্পের বিনিয়োগকারী এবং ইপিসি ঠিকাদারেরা চুক্তির ‘ফোর্স মেজার্স’ ও বিমা ক্লজের আওতায় ক্ষতিপূরণ দাবি করবে। আরও কিছু প্রকল্পে ইকুইটি বিনিয়োগ হয়েছে। সেগুলো বাতিল করতে গেলেও সরকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তবে কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো বাতিল করার সুযোগ রয়েছে।
প্রায় ২০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার যে প্রকল্প সরকার পর্যালোচনা করতে চায় বলে জানা যাচ্ছে, তার মধ্যে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রকল্পে বিনিয়োগকারী ও ইপিসি ঠিকাদার হচ্ছে চীনা কোম্পানি। আর ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট প্রকল্পের সঙ্গে আছে জাপানি কয়েকটি কোম্পানি।
চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অফ চায়না ৬ হাজার মেগাওয়াট; চায়না এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন ৪ হাজার মেগাওয়াট; (চীনের) ফার্স্ট নর্থ-ইস্ট ইলেকট্রিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট; চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট এবং চায়না হুয়ানদিয়ান ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রকল্পের বিনিয়োগকারী ও ইপিসি ঠিকাদার।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া মহেশখালী এলাকায় কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগে সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এগুলো বাতিল করা অবশ্য অপেক্ষাকৃত সহজ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জ্বালানি খাতের পর্যবেক্ষকদের মতে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাপক হারে কমানোর সরকারি উদ্যোগ এসব বিনিয়োগকারীদের জন্য, বিশেষ করে চীন ও জাপানি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ দুশ্চিন্তার বিষয় হবে। এ বিষয়টি উপেক্ষা করে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে না। সুতরাং সরকার শেষ পর্যন্ত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কতটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সরকারের এই নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী তা আনুমোদন করলে মন্ত্রণালয় বা তার অধীনস্ত কোনো সংস্থা বা একটি কমিটি গঠন করে কোন কোন প্রকল্প বাতিল করা যায় এবং তার ফলে সরকারকে কী দায়দায়িত্ব নিতে হবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাদের সুপারিশ সরকার অনুমোদন করলে তখন তা বাস্তবায়ন করা হবে।
কোভিড-১৯ জনিত বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ একই উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত জুন মাসে পাকিস্তান ৭০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক কাসিম প্রকল্প বাতিল করেছে। ভিয়েতনাম বেশ কিছু প্রকল্প বাতিল করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। ভিয়েতনাম এনার্জি ইনস্টিটিউট সে দেশের সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, আগামী এক দশকের মধ্যে চালু হওয়ার মতো ৯ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়েকটি প্রকল্প এবং ২০৩০ সালের মধ্যে চালু হওয়ার প্রক্রিয়াধীন ৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক প্রকল্প বাতিল করার। এই অঞ্চলের প্রধান কয়লা সরবরাহকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া তাদের কয়লা খনির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এমন যে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা সরকারের জন্য যথেষ্ঠ জটিল বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
তবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিম মনে করেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারকে বিশেষ কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। কারণ সরকার যে প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করতে চায় সেগুলোর একটিও এমন স্তরে নেই যে তা বাতিল করলে সরকারকে কোনো দায় নিতে হবে।
ম. তামিম বলেন, ২০১০-১১ সালে মূলত কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছিল। তার ওপর তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশীয় কয়লা ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকার দেশীয় কয়লা ব্যবহারের পথে অগ্রসর হয়নি। আর প্রয়োজনীয় বন্দরের অভাব ও অগভীর সমুদ্রের কারণে আমদানি করা কয়লা দিয়ে সাশ্রয়ী দামে ২০/২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন তখনও অসম্ভব বিবেচনা করা হয়েছে। এখনো হচ্ছে।
ম. তামিম বলেন, এখন বিশ্ব পরিস্থিতি বদলে গেছে। পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের বৈশ্বিক উদ্যোগের কারণে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে। অন্যদিকে গ্যাসের দাম কমেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পরিবেশের দায়সহ আমদানি করা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের তুলনায় আমদানিকৃত এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম বেশি হবে না। সুতরাং সেই পথই যুগোপযোগী।
দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘…১৪৯ টাকা যেটা খোলাবাজারে ছিল, সেটাকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা সর্বোচ্চ খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।
‘আর আমাদের সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার, বোতল যেটা, পেট বোতলে যেটা, যেটার মধ্যে সিল করা থাকে, সেইটা আমাদের নির্ধারিত ছিল ১৬৩ টাকা। সেইখান থেকে বৃদ্ধি করে ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খোলা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর খোলাবাজারে সয়াবিন তেল পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা ছিল। সেটাকে ৮১৮ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পাম অয়েলের দাম নিয়ে টিটু বলেন, ‘সুপার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটার, এটা আগে নির্ধারণ করা ছিল না। এবার আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা লিটার।
‘তো এই চারটা পণ্যের দাম, এইটা কিন্তু আমরা নির্ধারণ করলাম না। আমাদের যারা অ্যাসোসিয়েশনের, তাদের রিকমেন্ডেশনে এবং আমাদের ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদনক্রমে উনারা উনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে চিঠি দিয়ে আগামীকাল থেকে এই মূল্য উনাদের মিল গেট থেকে উনারা কার্যকরী করবে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছিল যে আর কোনো ব্যাংককে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের জন্য ব্যাংক এশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন মাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: ইউএনবি
করাচিভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালনা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের জন্য প্রাপ্ত বাধ্যবাধকতামুক্ত ইঙ্গিতমূলক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার জন্য যথাযথ কার্যক্রম শুরুর জন্য স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের অনুমোদন চাইছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি একীভূতকরণ নিয়ে খুব বেশি আলোচনার অংশ নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দুই ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে।
বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।
ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।
এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য