× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

ঢাকায় কুকুর বেশি নাকি কম

ঢাকায়-কুকুর-বেশি-নাকি-কম
এক বাচ্চার সঙ্গে খেলছে মা কুকুর। বাকিগুলো ব্যস্ত দুধ খাওয়ায়। ছবিটি রাজধানীর জোয়ার সাহারা থেকে তোলা। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ঢাকায় প্রতি একশজনে পথ কুকুরের সংখ্যা ০.৩, সারাবিশ্বে গড় ৫.৫

‘পুরো হাউজিং (মোহাম্মদপুরের চান মিয়া হাউজিং) এর রাস্তায় চিল্লাইয়া চিল্লাইয়া ডাকতেছিলাম। কারণ, আমি জানি আমার ডাক কানে গেলে ও আশেপাশে থাকলেও আসবে। দেখলাম একদম চিপা অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসতেছে। ওরে দেখে কান্না করে দিছি। মাথায় হাত দেয়ার সাথে সাথে হেসে দিছে।’

চান মিয়া হাউজিং এ থাকেন ফারিহা আজাদ বৃষ্টি। পথের ধারের এক কুকুরকে আপন করে নিয়েছেন তিনি। আদর করে নাম দিয়েছেন লাল্লু। তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না বলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে কিছুক্ষণ পর ফিরে স্বস্তি।

‘ভাবছিলাম হয়তো সিটি করপোরেশনের লোকেরা অন্য কুকুরদের পাশাপাশি ওরেও নিয়ে গেছে। ওরে খাইয়ে দিয়ে, পাশের এক দারোয়ানকে রিকোয়েস্ট করে আসছি। কেউ ধরতে আসলে যেন বলে, তারা লাল্লুকে পালেন। ও খুবই শান্ত বাচ্চা, কারো ক্ষতি করে না।‘
ঢাকায় কুকুর বেশি নাকি কম

‘জানি না কতদিন বা কতক্ষণ ওরে এমন নজরে নজরে রাখতে পারব‘-লাল্লুদের জন্য ভীষণ দুশ্চিন্তায় বৃষ্টি।

রাজধানীতে পথ কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে – এই যুক্তিতে সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৩০ হাজার কুকুর সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পরিচ্ছন্নকর্মীরা কুকুর ধরা শুরুও করে। তবে এখন দৃশ্যমান তৎপরতা বন্ধ।

পশুপ্রেমীরা এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না। তারা একে অমানবিক ও অযৌক্তিক বলছেন। পরিচিত কুকুরগুলোর খোঁজ নিচ্ছেন তারা হন্যে হয়ে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কুকুর নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পর জনস্বার্থে কুকুর অপসরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।‘

প্রশ্ন হচ্ছে, ঢাকায় কুকুরের সংখ্যা কি আসলেই অনেক বেড়ে গেছে? সংখ্যাটি কত হওয়া বাঞ্ছনীয়?

জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কমিউনিকেবল ডিজিজেস কন্ট্রোল ইউনিটের (সিডিসি) একটি হিসাব বলছে, সারা দেশে জনসংখ্যার বিপরীতে কুকুরের যে গড় অনুপাত, তার তুলনায় রাজধানীতে কুকুরের সংখ্যা কম।

জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে সিডিসি বেওয়ারিশ কুকুরকে টিকা দিয়ে থাকে। ফলে কুকুরের সংখ্যার হিসাব তাদের করতে হয়। এই কর্মসূচির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সারাদেশে প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে একটি করে কুকুর আছে। এই অনুপাত বহাল থাকলে দেড় কোটি জনসংখ্যার ঢাকা শহরে কুকুর থাকার কথা দেড় লাখ।

অথচ সিডিসির জলাতঙ্ক নির্মুল কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় কুকুরের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৫১২টি; এর মধ্যে উত্তরে ২২ হাজার ২৫৩ এবং দক্ষিণে ২৬ হাজার ২৫৯টি। অর্থাৎ ঢাকায় প্রতি ১০০ জনে কুকুরের সংখ্যা ০.৩ এর কম।

২০১৩ সালে অক্সেফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত ‘ফ্রি রেঞ্জিং ডগস অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন’ বইতে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে কুকুরের সংখ্যা ৯০ কোটি। এর মধ্যে মালিকহীন কুকুরের সংখ্যা ৪৩ কোটির মতো। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনের বিপরীতে পথ কুকুর আছে পাঁচটির বেশি।

মিডিয়াইন্ডিয়া নামে একটি সংস্থা জানাচ্ছে, ভারতে পথ কুকুরের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। অর্থাৎ প্রতি ১০০ জনে প্রায় তিনটি কুকুর রয়েছে।
ঢাকায় কুকুর বেশি নাকি কম
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ফারিহা আজাদ বৃষ্টি মোহম্মদপুরে তার বাড়ির আশেপাশের কুকুরগুলোর নিয়মমিত যত্ন নেন।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাবে কলকাতায় মালিকহীন কুকুরের সংখ্যা দেড় লাখের মতো।

সরকারি হিসাব ধরলে সারা বিশ্ব, এমনকি সারা দেশের অনুপাতের চেয়ে ঢাকায় কুকুরের সংখ্যা কম হওয়ার বিষয়টি জানা আছে কি না- এমন প্রশ্ন উপেক্ষা করে যান ঢাকা দক্ষিণের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের।

প্রাণী সংগঠন অভয়ারণ্য-এর প্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়া আহমেদ বলেন, ‘ঢাকায় কুকুরের সংখ্যা কমে গেছে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে লোকসমাবেশে কুকুর বেশি চোখে পড়ছে। তার মূল কারণ, পশুর প্রতি মানুষের প্রেম। মানুষ তাদের কাছে ডাকছে, খাওয়াচ্ছে, আদর করছে। কুকুররাও তাই মানুষের কাছাকাছি চলে আসছে।‘

কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কুকুরগুলোকে

এই প্রশ্ন নিয়েও আছে ধোঁয়াশা। নগরভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাণীগুলোকে মাতুয়াইলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, যদিও এর সত্যতার প্রমাণ মেলেনি।

মাতু্য়াইলবাসী বলছে, গত ১৫ থেকে ২০ দিনে তারা নতুন কোনো কুকুর এলাকায় দেখতে পায়নি।
মাতুয়াইল ল্যান্ডফিলে (ময়লা ফেলার ভাগাড়) বোতল কুড়াচ্ছিল রুহুল আমিন। সেও জানায়, নতুন কোনো কুকুর তার চোখে পড়েনি।

‘এই এলাকার সব কুত্তা আমি পালি, তাদের খাওয়াই। রাজ্জাক, টম, কিটু এরা সব আমার কুত্তা। এহানে আমি কোনো নতুন কুত্তা দেহি নাই। থাকলে আমি সবার আগে জানতাম।‘

স্থানীয় এক মুদি দোকানি শরিফ মিয়া বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের গাড়ি থেইকা কুকুর নামাই গেছে এমন কিছু দেহি নাই। কারো থেইকা শুনিও নাই।‘

মাতুয়াইলের ল্যান্ডফিল্ডের ইনচার্জ আব্দুল্লাহ হারুনও বলেছেন, ঢাকা থেকে অপসরণ করা কুকুর মাতুয়াইল নিয়ে আসার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

মাতুয়াইলে না নিলে কুকুরগুলো কোথায় নেওয়া হচ্ছে? ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছেরের জবাব নেই। বলেন, ‘অফিশিয়ালি-আন অফিশিয়ালি আমাকে যতটুকু বলার অনুমতি দেয়া আছে আমি তা জানিয়েছি। এর বাইরে আমি কিছু বলতে পারব না।’
ঢাকায় কুকুর বেশি নাকি কম
অসুস্থ পথ কুকুরের খোঁজ পেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন মোহাম্মদপুর এনিমেল রেসকিউ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাবিরা কিয়াফাত।

অপসারণ বা নিধনই কি সমাধান

কুকুর শহরের বাইরে ফেলে দিয়ে আসলে এর প্রতিক্রিয়া কী হবে, সেটা নিয়েও ভাবছেন পশুপ্রেমীরা। নতুন পরিবেশে খাদ্য সংকটে প্রাণীগুলো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে কি না, সেটা নিয়েও আছে দুশ্চিন্তা।

অবশ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘মালিকানাহীন কুকুরদের স্থানান্তর করতে আমরা একটি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। আমরা সেগুলোকে অন্য জেলাগুলোতে পাঠিয়ে দেব। এমন এলাকায় পাঠাব যেখান থেকে তারা খাবার সংগ্রহ করতে পারে।’

কুকুর অপসারণের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করা সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’ এর প্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়া আহমেদ বলেন, ‘কুকু্রের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল উপায় হলো বন্ধ্যাত্বকরণ। আমরা যখন এই প্রস্তাব দেই তখন উত্তর সিটি সাড়া দিলেও, দক্ষিণ সিটি আগ্রহ দেখায়নি।

‘সেটা না করে এভাবে অপসরণ করে হিতে বিপরীত হবে। অপসরণকৃত কুকুরগুলো ট্রমাটাইজ হয়ে থাকবে। সেক্ষেত্রে মানুষের ক্ষতি বরঞ্চ বেশিই হবে।’

রিট করা আরেক সংগঠন পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিবুল হক এমিল বলেন, ‘অপসরণ কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাছাড়া কুকুরদের তার পূর্ব অবস্থানে ফিরে আসার চান্স থাকে। নতুন পরিবেশে অনেক সময় স্থানীয় কুকুরেরা অভিযোজন করতে পারে না। তাই অপসরণকৃত কুকুরগুলো আক্রমণাত্মক আচরণ করবে।’

শহরে কুকুরের সঙ্গে সহাবস্থানের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার প্রচারণা চালানো যেতে পারে বলেও মনে করেন এমিল। বলেন, ‘মানুষ এখনও ভাবে, কুকুর কামড়ালে পেটে বাচ্চা হয়, নাভিতে ১৫-২০টা ইনজেশকন দেয়। এই ধারণাগুলো যে ভুল, সে তথ্য সঠিকভাবে জানালে অর্ধেক মানুষের কুকুরভীতি চলে যাবে।'

মোহাম্মদপুর এনিমেল রেসকিউ গ্রুপের সভাপতি সাবিরা কেয়াফাত বলেন, ‘মাথা ব্যথা হলেই মাথা কেটে ফেলেন আপনারা? তাহলে, কুকুর নিধনকেই একমাত্র সমাধান হিসেবে কেন দেখছেন?

‘কুকুরের ক্ষতি করতে না চাইলে তারা কখনো কাউকে আক্রমণ করে না। তারা নিজেরাই অসহায়।‘

অবশ্য কুকুর অপসারণের দাবিতেও সোচ্চার বেশ কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন। ঢাকায় বছরে ৭০ হাজারের বেশি মানুষকে কুকুর কামড়াচ্ছে- এই যুক্তি তুলে বেওয়ারিশ কুকুর অপরারণের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন হয়েছে।

কুকুর নিধনের পক্ষে দফায় দফায় মানববন্ধন করছেন ‘আমরা সচেতন ঢাকাবাসী’ নামে একটি সংগঠন। দ্রুত কুকুর নিধনের ব্যবস্থা না নিলে জানুয়ারিতে বৃহত্তর আন্দোলনে করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা।

একটি মানববন্ধনে রাকিব হাসান নামে একজন বলেন, ‘অনেকেই এই বেওয়ারিশ কুকুরের জন্য মায়া কান্না কাঁদছেন। এগুলো লোক-দেখানো। কারণ কুকুর তাদের উত্যক্ত করে না। তারা জার্মান শেফার্ড নিয়ে গাড়িতে ঘোরেন। আমরা যারা জনসাধারণ, কুকুরের যন্ত্রণায় বাসা থেকে বের হতে পারি না, বাচ্চাদের খেলতে পাঠাতে পারি না, আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।’

রিটের পর কুকুর ধরা বন্ধ

কুকুর অপসারণ বন্ধের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর অভিনেত্রী জয়া আহসান এবং দুই প্রাণী কল্যাণ সংগঠন ‘অভয়ারণ্য‘ ও ’পিপল ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার’ যৌথভাবে আবেদনটি করেছে।
আবেদনের ওপর শুনানি শুরু না হলেও এরপর থেকে কুকুর ধরা বন্ধ আছে।

আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী সাকিব মাহবুব বলেন, প্রাণীকল্যাণ আইন-২০১৯ এর ধারা ৭ অনুযায়ী, বেওয়ারিশ কুকুরসহ কোনো প্রাণীকে অপসারণ, স্থানান্তর ও ফেলে দেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন

জাতীয়
Trying to occupy the center will be stopped CEC

কেন্দ্র দখলের চেষ্টা রুখে দেওয়া হবে: সিইসি

কেন্দ্র দখলের চেষ্টা রুখে দেওয়া হবে: সিইসি

আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এ ধরনের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

রাজশাহীর আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আজ শনিবার তিনি বলেন ‘যারা ভোটকেন্দ্র দখলের স্বপ্ন দেখছেন, তাদের সেই স্বপ্ন এবার দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে, আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত’।

নির্বাচনী প্রস্তুতির অগ্রগতি সম্পর্কে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমজানের আগে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন,‘ নির্বাচন বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা কিছু বলছি না। সংবিধান অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব পালন করছি’।

নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিইসি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমানে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির কোনো সুযোগ নেই। তাই প্রচলিত আইন মেনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আইনের পরিবর্তন হলে কমিশন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করবে। এই মুহূর্তে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বদলির কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সিইসি জানান, নির্বাচন কমিশনের তালিকাভুক্ত প্রশিক্ষিত কর্মকর্তার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ৭০০ জন। এদের অনেকেরই নির্বাচন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে আগের নির্বাচনগুলোতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, তাদের এবারের নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না।

‘নির্বাচন কমিশনের ওপর সরকারের কোনো চাপ নেই’ উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘কোনো হস্তক্ষেপ করা হলে, আমি পদত্যাগ করব, দায়িত্বে থাকব না।’

রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নির্ভর করছে সস্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ার ওপর।

রাজশাহী অঞ্চলে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সিইসি বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে সভা শেষ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন।

মন্তব্য

জাতীয়
All preparations are being taken for the next national election Home Advisor

আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ শনিবার বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র হিমাগার, কেন্দ্রীয় বীজ পরীক্ষাগার ও সবজি বীজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি যেভাবে নেওয়া দরকার, আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি নিতে কোন অসুবিধা হবে না। এখন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যম সবাই নির্বাচনমুখী। এটি বাধাগ্রস্ত করতে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না।

বাজারে সবজির দামের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। আবার বাজারে আলুর দাম কিন্তু কম। আমাদের দেশে গবেষণার কাজ আরো জোরালো হলে বিদেশ থেকে বীজ আলু আর আনতে হবে না, তখন আলুর উৎপাদন খরচ আরো কমে আসবে।

তিনি বলেন, সরকারি মাধ্যমে আলু ক্রয় করা হবে, দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে যেন কৃষক ন্যায্যমূল্য পান।

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, এটি চলমান প্রক্রিয়া।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগের তুলনায় এখন সীমান্ত অনেক বেশি সুরক্ষিত আছে এবং সীমান্ত এলাকায় যারা বসবাস করেন তারাও অনেক সচেতন।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে মানুষ মত প্রকাশ করতে পারতো না কিন্তু এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেক কিছুই লিখতে পারছেন।

মন্তব্য

জাতীয়
Thakurgaon Model will be followed to free Barisal Child Labor Labor Secretary

বরিশালকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে ঠাকুরগাঁও মডেল অনুসরণ করা হবে: শ্রম সচিব

বরিশালকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে ঠাকুরগাঁও মডেল অনুসরণ করা হবে: শ্রম সচিব

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘ঠাকুরগাঁও মডেল’ অনুসরণ করে বরিশাল জেলাকে সম্পূর্ণরূপে শিশুশ্রম মুক্ত করা হবে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজে নিয়োজিত না রাখার পাশাপাশি তাদের নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর উপর জোর দেন তিনি।

শুক্রবার বরিশালের শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিশু শ্রম নিরসনে তারুন্যের ভুমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। কোনো শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকবে না। তারা বইখাতা নিয়ে স্কুলে যাবে।”

শ্রম সচিব আইএলও'র অর্থায়নে ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত ঠাকুরগাঁও জেলার ‘চাইল্ড লেবার মনিটরিং সিস্টেম (সিএলএমএস)’ মডেলকে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ আখ্যায়িত করেন। তিনি জানান, জাতীয় পর্যায়ে এই মডেল অনুসরণ করে বরিশাল জেলাসহ অন্যান্য জেলাতেও শিশুশ্রম নিরসনের কার্যক্রমকে গতিশীল করা হবে।

শ্রম সচিব তরুণ সমাজ ও এনজিওগুলোর প্রতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। তরুণরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে সমাজকে শিশুশ্রম মুক্ত করতে পারে। এখানে উপস্থিত সকলে যদি ১ জন শিশুরও দায়িত্ব নেন, তাহলেও বরিশাল জেলা অনেকাংশে শিশুশ্রম মুক্ত হবে।”

তিনি আরও জানান, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন দুস্থ শ্রমিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ জন শ্রমিক ও তার পরিবারকে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফাউন্ডেশন হতে ২৫ লক্ষ টাকার অর্থ সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।

বরিশালের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীন এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওসার। এছাড়াও বরিশাল জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুধীজন, এনজিও কর্মী ও তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

জাতীয়
The governments strict warning will be immediately taken legal action to promote Sheikh Hasinas statement

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে সরকারের কঠোর সতর্কবার্তা, তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে সরকারের কঠোর সতর্কবার্তা, তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের প্রচার শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির হুমকি তৈরি করে।

শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার কিছু গণমাধ্যম আইন অমান্য করে শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য সম্প্রচার করেছে, যেখানে তিনি মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং অনলাইন আউটলেটগুলোতে ফৌজদারী অপরাধে দণ্ডিত অপরাধী এবং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত পলাতক আসামী শেখ হাসিনার অডিও সম্প্রচার এবং প্রচার ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। তা ছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ঘৃণা ছড়ায় প্রাক্তন স্বৈরশাসকের এমন বক্তব্য সম্প্রচার নিষিদ্ধ করে।

আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, কিছু গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার আইন ও আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের একটি ভাষণ প্রচার করেছে যেখানে তিনি মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এধরনের অপরাধমূলক প্রচারকর্মে জড়িত গণমাধ্যমের কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি এবং দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য কেউ ভবিষ্যতে প্রকাশ করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের জাতির ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমরা অপ্রয়োজনীয় বিভ্রান্তি তৈরির ঝুঁকি নিতে পারি না। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শত শত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীর গণহত্যার নির্দেশ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগের পরে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং বর্তমানে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন রয়েছে। তদুপরি, বাংলাদেশের আইন অনুসারে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং একই সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ অনুসারে, যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন যারা তাদের নেতাদের কার্যকলাপ বা বক্তৃতা প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে।

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে সরকার বিবৃতিতে বলছে, ‘প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক নীতির উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করার জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশের জনগণ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রথমবারের মতো সত্যিকার অর্থে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা, এমন একটি সময়ে, সংবাদ মাধ্যমগুলোকে শেখ হাসিনার অডিও এবং তার বক্তৃতাগুলো, যা বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি, এগুলো প্রচার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা এবং দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করার আহ্বান জানাই। তার মন্তব্য, বক্তৃতা এবং তার যেকোনো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার, পুনঃপ্রচার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি তৈরি করে। এটি কেবল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার জন্য কাজ করে। এ ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ অমান্যকারী যেকোনো সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের আইনের অধীনে আইনি জবাবদিহিতার আওতায় পড়বে।’

মন্তব্য

জাতীয়
I will not be in any position in the post government government in February
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমে ড. ইউনূসের নিবন্ধ

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন, পরবর্তী সরকারের কোনো পদে আমি থাকব না

যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেসারাট নিউজে নিবন্ধ লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এতে প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আর নির্বাচন শেষেই তিনি রাষ্ট্রের সব দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। নির্বাচনে যে সরকার গঠিত হবে সেটির কোনো পদেই থাকবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি।

ড. ইউনূস লিখেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করেছি : জাতীয় নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতে হবে। এরপর যে সরকার আসবে সেখানে নির্বাচিত বা নিযুক্ত করা কোনো পদে আমি থাকব না।’

তিনি বলেছেন, ‘আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের সঙ্গে তাদের পরিকল্পনাগুলো বলতে পারবে। আমাদের মিশন হলো, সব বৈধ ভোটার যেন তাদের ভোট দিতে পারে, যারা প্রবাসে আছেন তারাও। এটি একটি বড় কাজ। কিন্তু আমরা কাজটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

প্রফেসর ইউনূসের নিবন্ধটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

এক বছর আগে, এই মাসেই বাংলাদেশের হাজার হাজার সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ শিক্ষার্থী, যাদের পেছনে ছিল সমাজের সব স্তরের অগণিত মানুষের সমর্থন, আমাদের জাতির ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিল। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, যা শেষ পর্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল, তার মাধ্যমেই তারা একজন স্বৈরাচারকে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়তে বাধ্য করে।

এরপর যে ক্ষমতার শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে ছাত্রনেতারা আমাকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ জানায়। এই সরকারের দায়িত্ব ছিল দেশকে স্থিতিশীল করা এবং গণতন্ত্রের নতুন পথ তৈরি করা। শুরুতে আমি রাজি হইনি। কিন্তু যখন তারা জোর করল, তখন আমি তরুণদের জীবন উৎস্বর্গের কথা ভাবলাম, আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারলাম না। ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, সুশীল সমাজের নেতাদের নিয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা পরিষেদের সঙ্গে আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করি।

এই গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল সরকারি চাকরিতে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা থেকে। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম ‘জেনারেশন জেড’ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়েছিল। এই বিপ্লব তরুণদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে উঠেছে, যা দেখায় কীভাবে তারা মানবজাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো—যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং বৈষম্য—মোকাবিলার জন্য এগিয়ে আসতে পারে।

আমরা ভাগ্যবান যে তারা ‘তাদের পালা আসার জন্য’ অপেক্ষা করেনি। যখন সভ্যতা অনেক দিক থেকে ভুল পথে চালিত হচ্ছে, তখন তারা বুঝতে পেরেছিল যে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।

স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে আমাদের উত্তরণের একটি স্পষ্ট প্রমাণ ছিল যখন দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকী বাংলাদেশকে তাদের ‘২০২৪ সালের সেরা দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করে। আমরা তখন অর্থনীতি পুনর্গঠন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং চুরি যাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমরা তখনো বুঝতে পারিনি বিশ্ব আমাদের এই অগ্রগতিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করছে। ডেসারেট নিউজ আমাদের এই যাত্রার চমৎকার কাভারেজ দিয়েছে, যা আমরা গভীরভাবে উপলব্ধি করি।

আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার ছিল গণঅভ্যুত্থানে যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল এবং যারা গুরুতর আহত হয়েছিল—সেই হাজার হাজার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। এরসঙ্গে আমরা বিগত সরকার ও তার সহযোগীদের লুট করা অর্থ উদ্ধারেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে সাবেক স্বৈরাচারী সরকার বছরে ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে। এই অর্থ পুনরুদ্ধার করার জন্য যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

যখন আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন অব্যবস্থার মাত্রা দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছিল না। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল। অর্থনীতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। গণতন্ত্র ভেঙে পড়েছিল।

সরকারি কর্মচারীরা, যারা ক্ষমতাসীন দলের প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য না দেখানোর কারণে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, তারা ন্যায়বিচার চেয়েছিলেন।

ধীরে ধীরে আমরা পুনর্গঠন শুরু করেছি। যেসব রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারের প্রতিরোধ করেছিল, তাদের পাশাপাশি নতুন গঠিত দলগুলোও নতুন ধারণা, শক্তি এবং কর্মপ্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনী, যারা ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালাতে দেয়নি, তারা তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।

আমি এটি স্পষ্ট করে দিয়েছি: আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি এরপরের সরকারের কোনো নির্বাচিত বা নিযুক্ত পদে থাকব না।

আমাদের প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের কাছে তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পারবে। বিদেশে বসবাসকারী নাগরিকসহ সব যোগ্য নাগরিককে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া একটি বিশাল কাজ। কিন্তু আমরা এটি সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতেও পরিবর্তন এনেছি। যেন আমাদের প্রতিবেশী এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক জোরদার করা যায়।

বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে, বাংলাদেশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির একটি মূল কেন্দ্র হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আমরা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞ।

রুবিওরে সঙ্গে সম্প্রতি আমার একটি ফলপ্রসূ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে, যা আমাদের উভয় দেশের বাণিজ্যের জন্য ইতিবাচক ছিল।

যুক্তরাজ্য, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘও আমাদের সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। আমরা এই পথে একা নই।

নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল এবং নাগরিকদের নিয়ে একটি ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছি। সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি সাংবিধানিক সংশোধনী আনা। যা এমন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে যাতে বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরাচারী শাসনে ফিরে না যায়।

বাংলাদেশ যদি শেষ পর্যন্ত এমন একটি দেশে পরিণত হয় যেখানে দেশের সব মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে। তবে তা হবে লাখ লাখ বাংলাদেশির দৃঢ়তা, কল্পনা এবং সাহসের ফল।

এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমাদের সঙ্গে যারা আছেন তাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে। তারাই আমাদের সর্বোত্তম আশা—এবং সম্ভবত আমাদের শেষ আশা।

মন্তব্য

জাতীয়
Authorization of Visa Exemption Agreement with Pakistan

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

পাকিস্তানের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি অনুমোদন

সরকারি এবং কূটনীতিক পাসপোর্টে পারস্পারিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরও ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি পাঁচ বছরের জন্য করা হবে । এর ফলে যারা অফিসিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন, তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিসিয়াল এবং কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন— তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোন ভিসা ছাড়াই। এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এ বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।

মন্তব্য

জাতীয়
Authorization of the draft of the Revenue Policy and Revenue Management Amendment Ordinance

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়ার অনুমোদন

উপদেষ্টা পরিষদের ৩৯তম বৈঠকে আজ ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীগণের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করা হয়।

এছাড়া, উপদেষ্টা পরিষদকে সংস্কার কমিশনসমূহের সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে