× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

সংগ্রামী প্রান্তিকের নেতা

সংগ্রামী-প্রান্তিকের-নেতা
বাঙালি ও মুসলমান – এই দুই পরিচয়ের মধ্যেও কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। তিনি এই দেশের সকল মানুষের সকল জনগোষ্ঠীর নেতা ছিলেন। তবে যাদের কথা তিনি সবচেয়ে বেশি শিরোধার্য করেছিলেন, তারা হলেন এ দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। অথবা বিশ-পঁচিশ বছরের আন্দোলনের ফলও নয়। আমরা শেখ মুজিবকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাকে কিছুটা বৃত্তে আবদ্ধ করে ফেলি। আমরা তাকে বা বাঙালি জাতীয়তাবাদের নেতা হিসেবে দেখি। কিন্তু তার পরিচিতি এর চেয়ে অনেক বড়।

বাঙালি ও মুসলমান – এই দুই পরিচয়ের মধ্যেও কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। তিনি এই দেশের সকল মানুষের সকল জনগোষ্ঠীর নেতা ছিলেন। তবে যাদের কথা তিনি সবচেয়ে বেশি শিরোধার্য করেছিলেন, তারা হলেন এ দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী প্রান্তিক হয়ে যায়। কখনও তারা হিন্দু কখনও তারা অন্য কিছু। সেই কারণেই বিভিন্ন সময় যারা প্রান্তিক হয়েছেন, শেখ মুজিব তাদের পক্ষে গেছেন। প্রান্তিক মানুষের পক্ষের ইতিহাস যদি আমরা দেখি, তবে দেখব, যে শ্রেণি থেকে তিনি প্রান্তিক মানুষের আন্দোলনের নেতৃত্বে এসেছেন, সেই শ্রেণির সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ ছিলেন শেখ মুজিব। কিন্তু তিনি নিজে প্রান্তিক ছিলেন না।

বঙ্গবন্ধু যা করতে চেষ্টা করেছিলেন, তা হলো, সামগ্রিকভাবে এমন একটি মূলধারা তৈরি করা, যেখানে সকল স্বাধীনতাকামী ও মুক্তিকামী সকল সামাজিক শক্তি একত্রিত হতে পারবে এবং একটা আলাদা রাষ্ট্র গঠন করবে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা কিন্তু এক দিনের নয়। শেখ মুজিবের দলীয় রাজনীতি শুরু হয়েছিল ১৯৩৯ সাল থেকে। পূর্ববঙ্গের যে রাজনীতি, সে রাজনীতিরই প্রতিনিধিত্ব করেন শেখ মুজিব। তিনি ১৯৪৭ সালেও প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তবে তখন ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির মতো অন্যান্য নেতাও ছিলেন।

গোপালগঞ্জে যাত্রা শুরু

আমি মনে করি, শেখ মুজিবুর রহমানের যে গুরুত্ব, তা রয়েছে গোপালগঞ্জের ইতিহাসের মধ্যে।

১৯৩৯ সালে শেখ মুজিবের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দি ও ফজলুল হকের দেখা হয়। তারা একটা মিটিং করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কংগ্রেসের লোকজন মিটিংটা হতে দিচ্ছিল না। তখন শেখ মুজিব তার সহকর্মীদের সাহায্যে মিটিংটা সফলভাবে করেন।

এই যে প্রতিবাদ, এ বিষয়টা আমরা লক্ষ্য করি না। আমরা কেবলমাত্র সাংস্কৃতিক চোখ দিয়ে শেখ মুজিবকে দেখি। তার আত্মজীবনী পড়লে জানা যায় শেখ মুজিবের সঙ্গে সামাজিকভাবে দ্বন্দ্ব অনেক ক্ষেত্রে হচ্ছিল। শেখ মুজিব প্রথম যখন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন, সেটাও ছিল সামাজিক দ্বন্দ্বের কারণে। একদল আক্রমণ করতে এসেছিল, তিনি লাঠি দিয়ে আক্রমণকারীদের একজনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। এমন একজন সবল ও প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন শেখ মুজিব।

এ রাজনীতির পরিবেশটা দেখা দরকার সর্বভারতীয় রাজনীতির চোখ দিয়ে। বাংলাদেশে কোনোদিন সর্বভারতীয় রাজনীতি প্রভাব ফেলতে পারেনি। বাংলাদেশে সর্বভারতীয়তা বলতে যা বোঝায়, অর্থাৎ উত্তর ভারতীয় যে রাজনীতি, তা এসেছে দখলদার হিসেবে। বাংলাদেশের সাথে উত্তর ভারতে সম্পর্ক দখলদার-দখলকৃতের বাইরে আর কিছু ছিল না। সে দখলদার আর্যরা হোক বা মোঘলরা হোক বা পাকিস্তানিরাই হোক। পাকিস্তানও উত্তর ভারতেরই অংশ। অতএব এই যে প্রান্তিক আর কেন্দ্র, এটা আমার কাছে মনে হয় বঙ্গবন্ধু বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কম আলোচিত।

প্রান্তিক মানুষের ভূমিকা

শেখ মুজিবের যে রাজনীতি, সেটা বুঝতে হলে আমাদের প্রান্তিক মানুষের ভূমিকা বুঝতে হবে। ১৭৫৭ সালে ইংরেজদের দখলের পরে প্রথম আন্দোলন করেছে প্রান্তিক মানুষেরা। সেই প্রান্তিক মানুষদের সামনে ছিল ফকির-সন্ন্যাসীরা, যাদের খাজনা দেবার অধিকার ইংরেজরা কেড়ে নিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু মূল শক্তিটা এসেছে কৃষকশ্রেণির কাছ থেকে। কৃষকশ্রেণী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণি হিসেবে ইতিহাসে বারবার আমাদের সামনে উপস্থিত হয়।

এ ধারাবাহিকতা ১৭৬০-১৮৫৭ এর আন্দোলনগুলোয় ক্রমাগতভাবে চলে এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম কথিত হলো কৃষকের আন্দোলনের ইতিহাস। এটাকে বাদ দিয়ে আমরা ইয়াং বেঙ্গল মুভমেন্ট পড়ি, বেঙ্গল রেনেসাঁস পড়ি। কলকাতার যে দালালি সংস্কৃতি, ব্যবসা সংস্কৃতি, জমিদার সংস্কৃতি - সেগুলোর চর্চা করি আমরা। এই সংস্কৃতি ও এই ইতিহাসের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি কোনোভাবেই মিলতে পারে না। তিনি কোনোদিন দালালিকে গ্রহণ করেন নি, কোনোদিন নিজের সুবিধার জন্য দেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন নি।

ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন থেকে এটা বোঝা যায়। ফকির ও সন্ন্যাসীদের খাজনা দিত গ্রামের মানুষ। মুসলমানরা ফকিরকে দিত ও হিন্দুরা সন্ন্যাসীকে দিত। অতএব দুটি জনগোষ্ঠীর একসাথে থাকার অভিজ্ঞতা ছিল। এই পরিবর্তনটা শুরু হয় ১৭৯৩ সালের পরে যখন জমিদারি ব্যবস্থা অনেকটা সবল হয়ে যায়। এর আগে ১৭৬০-১৭৯৩ পর্যন্ত ৩৩ বছরে অনেক আন্দোলন হয়েছে। সেই আন্দোলনগুলো হিন্দু-মুসলমান যৌথভাবে করেছে। কিন্তু ১৭৯৩ এর পর থেকে এটা কমতে থাকে। বাংলার হিন্দু মধ্য ও উচ্চবিত্তরা নিজেদের আলাদা করতে থাকে। এর কারণ তারা ইংরেজদের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখানকার, অর্থাৎ পূর্ববাংলার, মুসলমান জনগোষ্ঠীদের মধ্যে কোনো মধ্যবিত্ত শ্রেণি ছিল না। আর যারা ছিল, তারা বাংলার মধ্য ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। অতএব তাদের দালালি করার সুযোগ কম ছিল। এটাও ঐতিহাসিক বাস্তবতা।

ফরায়েজী আন্দোলনে দেখা যায়, সৌদি আরবের ওহাবি আন্দোলন থেকে শিখে এসে এখানে বলছে যে, এদেশের মানুষেরা মুসলমান নয়। তারা হিন্দু জমিদারদের আক্রমণ করছে এবং বলছে, এদেশের মুসলমানরাও মুসলমান না। কিন্তু তারা যখন যুদ্ধ করতে যাচ্ছে, তখন সেই মুসলমান প্রজাদেরই সহায়তা নিচ্ছে, যাদের মুসলমান বলতেও তারা রাজি ছিল না। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, যে-ই প্রতিবাদ করুক, যে-ই আন্দোলন করুক, কৃষকের সহায়তা তাদের নিতেই হয়। অতএব কৃষকই ইতিহাস পাল্টানোর প্রধান শক্তি।

১৮৫৭ সালের পরে সর্বভারতীয়ভাবে মুসলমান মধ্যবিত্ত তৈরি শুরু হলো। কৃষকেরা তখন এতটাই শক্তি প্রয়োগ করতে পারছে যে তাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মুসলমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণির সাথে প্রতিযোগিতায় নামে, যার ফলে ইংরেজদের ওপরে চাপ বেড়ে যায়।

ইংরেজদের ভূমি সংস্কার আইনের ইতিহাস দেখলে জানা যায়, খুব অদ্ভুতভাবে ইংরেজরা উনিশ শতকের শুরু থেকেই কৃষকদের কিছু সুবিধা দেবার চেষ্টা করেছে। এর কারণ হলো জমিদাররা ইংরেজদের প্রতি আনুগত্য দেখানো ছাড়া আর কিছু করেনি। জমিদারি ব্যবস্থা অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই ব্যর্থ ছিল।

এ কারণে ১৮১১ সালে পত্তনি প্রথা তৈরি হলো। পত্তনি প্রথার মাধ্যমে নতুন এক শ্রেণি তৈরি হলো। তারা হলো মধ্যসত্বভোগী শ্রেণি। এই মধ্যসত্বভোগী শ্রেণি একটা বড় ভূমিকা পালন করে ইতিহাসে। কারণ সে কৃষককে জানে, আবার জমিদারকেও জানে। মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে সে দুইদিকে খেলছে। এই সুবিধা নিয়ে মধ্য শ্রেণির কৃষক, জোতদারশ্রেণি, তালুকদার এরা সবল হয়ে গেল। এই সবলতার কারণে তারা রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে শুরু করল। তাদের শক্তিও বেড়ে চলল। ইংরেজরা ভাবল এদের সামাল দিতে হলে কিছু সুবিধা দিতে হবে, সমঝোতা করতে হবে। অতএব ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ।

বঙ্গভঙ্গ একটা উপরাষ্ট্র

বঙ্গভঙ্গকে আমার মনে হয় একটা উপরাষ্ট্র, যা আমাদের আজকের বাংলাদেশের ভৌগোলিক সূত্র। এখানে ইংরেজরা যেমন কলকাতার প্রভাবকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে, তেমনভাবে মুসলমানদের যে দালালশ্রেণি ছিল, বলা যায় সুবিধাভোগী শ্রেণি, তাদের সুবিধা দিতে চেষ্টা করেছে। তাই তাদেরকে সামাল দেয়ার একটা চেষ্টা ছিল। একই সাথে যে কথাটা একেবারেই উচ্চারিত হয় না, কৃষক সমাজকেও তারা খুশি করার চেষ্টা করেছে। কৃষকরা ছিল জঙ্গি ও প্রতিবাদী। কৃষকরা ছিল বঙ্গভঙ্গের পক্ষে।

পূর্ববঙ্গ যদি আলাদা হয়ে যায়, কলকাতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে জমিদার, পাওনাদারদের কেউই সবল অবস্থায় থাকতে পারবে না। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে কলকাতার বাবুসমাজ প্রতিবাদ করে স্বদেশী আন্দোলন করে।

কৃষকেরা স্বদেশী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। পরবর্তীকালে যখন বঙ্গভঙ্গ রদ করা হলো, কৃষক এর প্রতিবাদ করে আন্দোলন করেছে। এই যে দুইটা বঙ্গ – পূর্ব ও পশ্চিম, তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে ১৯০৫-১৯১১ সালের মধ্যে। তখন রাজনীতি কেন্দ্রীয় হয়ে গেল অর্থাৎ দিল্লির হাতে চলে গেল। এর পরের ঘটনা ১৯২৩-১৯২৪ সালের।

১৯২৩ সালের বেঙ্গল প্যাক্ট এই উঠতি শ্রেণিদের সুবিধা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইল। কিন্তু এর প্রতিবাদ করল মধ্যবিত্ত হিন্দু শ্রেণি। কারণ তারা তাদের সুবিধা ছেড়ে দিতে নারাজ। এই চেষ্টাটা ব্যর্থ হয়। কিন্তু ১৯১১ সালের পরে কোনো যৌথ প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ১৯০৯ সালে কৃষক যখন ভোটাধিকার পেল, তখন পরিস্থিতি পাল্টে যায়। কারণ কৃষক যাকে পছন্দ করে না, সে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকেরাই ক্ষমতায় এল। তারা হলো মুসলিম লীগ ও কৃষক প্রজা পার্টি। এই পরিবর্তনের মানেই হলো উপরাষ্ট্র রাজনীতির প্রতিষ্ঠানিকরণ I

লাহোর প্রস্তাব ও বাংলাদেশ
১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবে যখন বলা হচ্ছে ‘একটা আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হবে’ তখন বঙ্গের যে চিত্র ছিল, তার সঙ্গে সর্বভারতীয় ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগের’ চিত্র এক নয়, তারা একই মানুষ নয়। এই পার্থক্যটা অনেক মানুষ লক্ষ্য করেন না। তারা পাকিস্তানের বিরোধিতা করতে গিয়ে সকল মানুষকে এক ধরনের ‘পাকিস্তানি’ মনে করেন। এটা আমার মতে একটা ভ্রান্তি।

১৯৪০-১৯৪৬ পর্যন্ত একই রকম অবস্থা ছিল। ১৯৪৬ সালে নির্বাচনের পরে জিন্নাহ দেখল যে সব ভোট তাদের বাক্সে। যারা বিরোধিতা করেছিল, এমনকি ফজলুল হকসহ অন্য নেতারা, তারা তাদের দলসহ সম্পূর্ণরূপে ধুলিস্যাত হয়ে যায়। জিন্নাহ তখন ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব অস্বীকার করে বললেন ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের’ বিষয়টা টাইপিং ত্রুটি ছিল, আমার মনে হয় জিন্নাহ অসততা করেছেন। কারণ ১৯৪০-১৯৪৬ পর্যন্ত বহু বার ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের’ কথা আলোচিত হয়েছে। ভুল থাকলে তখনই তো কথাটা উঠত। আমি মনে করি জিন্নাহের এই অসততার সবচেয়ে বড় দাম দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে ১৯৭১ সালে।

১৯৪৬-১৯৪৭ এর সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের তরুণরা খুব ক্ষুব্ধ ছিল। এই ক্ষুব্ধ তরুণদের একজন ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তখন আন্দোলন করছেন, বস্তি পাহারা দিচ্ছেন, যেন দাঙ্গাকারীরা আক্রমণ করতে না পারে। এই বস্তির গরিব মানুষগুলোর সঙ্গে, পূর্ব বাংলার প্রান্তিক মানুষগুলোর সঙ্গে শেখ সাহেবের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।

৪০-এর দশকেই আমাদের স্বাধীনতার সূত্রপাত
১৯৪৭ সালে আবুল হাশিম প্রস্তাব দিলেন, আমরা আলাদা বাংলা করব। বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব মুসলিম লীগ করেনি, করেছে কংগ্রেস। নেহেরুর চাপে যৌথ বঙ্গ আন্দোলন ধ্বংস হয়েছে। পাকিস্তান-ভারতের বাইরে আমরা হচ্ছি তৃতীয় বাস্তবতা। আমরা আলাদা হয়েছি, স্বাধীন হয়েছি ঊনিশশ চল্লিশেই।

১৯৪৭ সালে ‘ইনার গ্রুপ’ নামের ছোট একটা দল ছিল, যারা স্বাধীন দেশ চাইছিল। সে দলের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন মোয়াজ্জেম আহমেদ চৌধুরী। তিনি মুসলিম লীগ করতেন ও শেখ সাহেবের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যখন মিটিং করতাম, শেখ সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছিল।’ আমি আবারও বলছি পাকিস্তান তখনও হয়নি। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের বিপক্ষে ছিলেন। যে মানুষটা ভাবতেন পূর্ব পাকিস্তান একটা কলোনি হবে, সেই শেখ মুজিবকে আমরা পাকিস্তানি বানাই কী করে? শেখ সাহেব কখনওই পাকিস্তানি ছিলেন না।

এই ধারাবাহিকতায় ’৪৭-এর পরে ’৪৮-এ ভাষা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়ে গেল। আন্দোলন এতটাই তীব্র হলো যে ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগ ধুলিস্যাত হয়ে গেল। ’৫২ তে গোলাগোলি পর্যন্ত হলো। ’৫০-এ ভুখা মিছিল হয়েছে।

২০০ বছরের আন্দোলন

আমাদের একটা ‘পাকিস্তানি’ মনোভাব আছে। এই মনোভাবের কারণে আমরা মনে করি ১৯৪৭ এর পরে যে আন্দোলন হয়, সেখান থেকেই বাংলাদেশের জন্ম। কিন্তু তা নয়। এটা দীর্ঘ ২০০ বছরের সংগ্রাম। আমার মতে, এর চরম মুহূর্তটা ৭ মার্চের ভাষণ। ওইদিন বিক্ষুব্ধ শেখ সাহেব বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’।

এই কথার বয়স ২০০ বছর। স্বাধীনতা-মুক্তি কোনো আইনি বিষয় নয়। এটা জনগণের সংগ্রাম।

শেখ সাহেবের কোনো কিছু বলার দরকার ছিল না। বাংলাদেশ তার নিজস্ব গতিতে এগিয়েছে। ১৯৭১ সালেও কৃষকরা তাদের ১০০ ভাগ সমর্থন দিয়েছে। কৃষক এই যুদ্ধটা ধারণ করেছে, লালন করেছে, কারণ এটা ছিল তার ঐতিহাসিক সন্ধান। এ ঐতিহাসিক সন্ধানের নেতৃত্বস্থানীয় হিসেবে তারা শেখ মুজিবকে দেখেছে। অন্য আরও অনেকেই ছিলেন, তবে মূল নেতা শেখ মুজিবুর রহমান।

শেখ মুজিবকে ভাষা দিয়ে, ধর্ম দিয়ে বা রাজনৈতিক দল দিয়ে বৃত্তাবদ্ধ করা যাবে না। তিনি একটা ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে সাদৃশ্য স্থাপন করতে পেরেছিলেন, যেটা ছিল প্রান্তিক মানুষের আহ্বান। এ প্রান্তিক মানুষের নেতৃত্ব দেবার অধিকার তার ছিল বলেই সে মানুষেরা তাকে গ্রহণ করেছিল।

ভারতীয় উপমহাদেশ যে তিনটা রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে, তার বাস্তবতা তিন রকম। পাকিস্তান হয়েছে একটা সামরিক রাষ্ট্র, ভারত হয়েছে একটা উপনিবেশিক এলিট রাষ্ট্র ও বাংলাদেশ হয়েছে একটা গ্রামীণ কাঠামোর রাষ্ট্র। এটা সম্ভব হয়েছে এই নেতৃত্বের কারণে, জনগণের কারণে। জনগণ আর নেতৃত্ব যখন এক হয়, তখন এই ধরনের রাষ্ট্র জন্মানো সম্ভব।

আফসান চৌধুরী: কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও গবেষক

আরও পড়ুন

মুজিব শতবর্ষ
Bangabandhu Corner on Ekushey Television

একুশে টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার

একুশে টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার একুশে টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘জাতির পিতার প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধাবোধ আর দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বসহ গণতন্ত্রের জন্য একুশে টেলিভিশন তাদের প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে।’

বেসরকারি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সোমবার বিকেলে কর্নারের উদ্বোধন করেন।

একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনে একুশে টেলিভিশনের উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘জাতির পিতার প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধাবোধ আর দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বসহ গণতন্ত্রের জন্য একুশে টেলিভিশন তাদের প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে।

‘আজকে একুশে টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করা হলো, সম্ভবত এটি প্রথম কোনো টিভি স্টেশন যেখানে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন হলো। একুশে টেলিভিশনের কলাকুশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন, তাদের নিরলস প্রচেষ্টার মধ্যে দিয়ে এই টেলিভিশন দেশের ক্রান্তিকালে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, এখন যে বন্যা হচ্ছে, সে সময় একুশে টেলিভিশন অত্যন্ত জোরালো ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে একুশে টেলিভিশন বহু অনুষ্ঠান করেছে।’

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনায় কারওয়ান বাজারের জাহাঙ্গীর টাওয়ারে একুশে টেলিভিশন কার্যালয়ের সপ্তম তলায় ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে।

কর্নারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের একটি প্রতিকৃতি রয়েছে। ফাইবারে তৈরি প্রতিকৃতিটির শিল্পী বিপ্লব দত্ত।

এ ছাড়া এখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বই রাখা হয়েছে।

পরে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ একুশে টেলিভিশনের গ্রন্থাগার পরিদর্শন করেন।

মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বই দিয়ে নতুন করে সাজানো হয়েছে গ্রন্থাগারটি।

একুশে টেলিভিশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুকে জানবে, শ্রদ্ধা করবে: জবি উপাচার্য
বঙ্গবন্ধু কর্নারের সামনে গ্যারেজ, আসবাবের স্তূপ
প্রেসক্লাব অফ ইন্ডিয়ায় বঙ্গবন্ধু কর্নার

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
Some people will oppose any success Joy

যেকোনো সফলতা নিয়ে কিছু মানুষ বিরোধিতা করবেই: জয়

যেকোনো সফলতা নিয়ে কিছু মানুষ বিরোধিতা করবেই: জয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: ফেসবুক
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রকস্টার ও গানের সম্রাটরা যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হলো। ১৯৭১ সালের যুদ্ধবিধ্বস্ত সেই দেশটি এখন টেকসই অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’ বাংলাদেশ স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- এক অনুপ্রেরণার ইতিহাস রচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পদ্মা সেতু কিংবা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটই হোক, বাংলাদেশের এমন যেকোনো সফলতা নিয়েই কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিরোধিতা করবে। এমন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

নিজের ফেসবুকে পেজে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার রাতে দেয়া পোস্টে এ মন্তব্য করে তিনি লিখেছেন, “যুদ্ধাপরাধীদের প্রেতাত্মারা যাতে অন্ধকার অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে না পারে, সে জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে।”

গত ৬ মে নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ‘গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টের’ একটি ভিডিও ওই পোস্টে দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ। তার বর্ণনায় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সহায়তায় ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’-এর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি এসব কথা লেখেন।

“১৯৭১ সাল, হাজার হাজার মাইল সাগর দূরত্বের একটি দেশ তার লালসবুজ পতাকা রক্ষায় রক্ত ঝরাচ্ছিল। আর বন্ধুর মুখে সেই দেশটির গল্প গভীরভাবে নাড়া দিল বিশ্ব সংগীতের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একজন শিল্পীকে।

“পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা, অসংখ্য নারীদের ধর্ষণ আর অনাহারে শিশুদের মৃত্যু তাকে মর্মাহত করল। ঠিক তখনই কিছু কাব্যিক শব্দ একটি অবিস্মরণীয় গানের লিরিক আকারে ফুটে উঠল।”

খ্যাতনামা ব্রিটিশ ব্যান্ডদল বিটলসের ভোকাল ও লিড গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসনের গাওয়া ইংরেজি ওই গানটির বাংলা ভাষান্তর নিজের পোস্টে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা।

‘চোখ ভরা বিষাদ নিয়ে আমার বন্ধু আমার কাছে এসেছিল, তার দেশ শেষ হয়ে যাবার আগে পাশে দাঁড়ানো দরকার বলে আমাকে জানিয়েছিল।’

মনে যা এসেছিল, শুধু তাই দিয়ে গানটি রচনা করলেন না বিটলস তারকা জর্জ হ্যারিসন। বরং ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস একটি গণহত্যার শিকার হওয়া বাংলাদেশের জনগণকে সাহায্য করার চিন্তায় মগ্ন তখন।

‘ছুটে গেলেন বব ডিলান এবং এরিক ক্ল্যাপটনের মতো কিংবদন্তিদের কাছে। তারাও বাংলাদেশকে সমর্থন জোগাতে সম্মত হন। আর বাকিটা তো ইতিহাস।

‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশের মাধ্যমে তারা যুদ্ধের শিকার দেশকে সাহায্য করার নজির স্থাপন করেছে। যখনই আমি এটি ইউটিউবে দেখি, এটি আমাকে একটি সোনালি মুহূর্তে ফিরিয়ে নিয়ে যায়'-

“জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশ গানটি গাইছেন, কানে ভাসছে বব ডিলানের ‘হাউ মেনি রোডস অ্যা ম্যান মাস্ট ওয়াক ডাউন (কতটা পথ পেরোলে বলো পথিক হওয়া যায়)’, ঝড়ের মতো তার সেতারে সুর তুলছেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর। একই মঞ্চে সকল তারাদের মেলা!”

বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে সেই মুহূর্তকে আরেকটি কনসার্টের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা তুলে ধরেন জয়।

‘বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রকস্টার ও গানের সম্রাটরা যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশের স্বপ্ন সত্যি হল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধবিধ্বস্ত সেই দেশটি এখন টেকসই অগ্রগতি এবং উন্নয়নের একটি প্রতিকৃতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’

বাংলাদেশ স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কর্মযজ্ঞ পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে আধুনিক প্রযুক্তির বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- এক অনুপ্রেরণার ইতিহাস রচনা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাইকে সোনার বাংলার প্রতিশ্রুতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন, হ্যারিসনের বাংলাদেশ গানটি আরও একবার গাই এবং বিশ্ব আবার শুনুক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়াই হলো এবারের সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের প্রতিশ্রুতি।’

আরও পড়ুন:
অ্যাসোসিও লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেলেন সজীব ওয়াজেদ জয়
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে জয়ের হাত ধরে: কাদের
৫১ বছরে বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র জয়
বাকস্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমাদের কোনো বিবৃতি চান না জয়

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
Discussion cycle in Bangabandhus own college in Calcutta

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর নিজের কলেজে আলোচনা চক্র

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর নিজের কলেজে আলোচনা চক্র বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সাবেক ইসলামিয়া কলেজ বা বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ ভাস্কর্য।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সাবেক ইসলামিয়া কলেজ বা বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজে আয়োজন করা হয় একটি আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রের। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতায় যে কলেজে পড়েছেন, সেই সাবেক ইসলামিয়া কলেজ বা বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজে বিশ্ববরেণ্য এই ছাত্রের জন্ম শতবর্ষের শ্রদ্ধা জানাতে একটি আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়।

শনিবার মৌলানা আজাদ কলেজের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা চক্রে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) সিকদার মোহাম্মদ আশরাফুল রহমান এবং কলেজের অধ্যাপক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ।

সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কাছে বাংলা শুধুমাত্র একটা শব্দ ছিল না। তার কাছে বাংলা ছিল একটা দর্শন। তিনি ছিলেন আমার কাছে একজন শিক্ষক। বাংলা সাহিত্যকে অনুবাদ করে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববন্দিত এই নেতাকে পাকিস্তানের জেলে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে ফাঁসি দেয়ার প্রস্তুতিতে কবরও খোঁড়া হয়েছিল, পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তার দেহ যেন বাংলাদেশের মাটিতে কবর দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার গভীরতা ছিল এতটাই।’

কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর নিজের কলেজে আলোচনা চক্র
আলোচনা চক্রে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন

কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আশরাফুল রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়, তিনি ছিলেন দুই বাংলার বন্ধু। তার মানসিক বিকাশে এই কলেজের একটা অবদান রয়েছে।’

কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন, এই কলেজের ছাত্র সংসদের সভাপতি। কলেজের হোস্টেলে থাকতেন। একটি জাতিকে তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র কিছু অংশ পাঠ করে শোনান কলেজের ছাত্ররা।

কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে তাদের দাবি নিয়ে লড়াই করেছিলেন, কীভাবে ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় কলকাতাসহ অন্যান্য এলাকার দাঙ্গাপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন– বক্তারা তা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধুর আত্মগোপন করা বাড়ির খোঁজ মিলল শ্রীরামপুরে
রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যর্পণ ঠেকিয়েছিল বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
উচ্চফলনশীল জাতের ‘বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান’ চাষে সফলতা
অর্থায়ন জটিলতায় ‘বঙ্গবন্ধু হেলিপোর্ট’
‘কলকাতায় বঙ্গবন্ধু’ তথ্যচিত্র বানাচ্ছেন গৌতম ঘোষ

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
Bedepalli is in the gift house

উপহারের ঘরে হচ্ছে বেদেপল্লি

উপহারের ঘরে হচ্ছে বেদেপল্লি বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য গড়ে উঠছে মুজিববর্ষের উপহারের ঘর। ছবি: নিউজবাংলা
বেদে সম্প্রদায়ের ৫৯ পরিবারের প্রায় ৩০০ লোকের বাসস্থানের ঘরের পাশাপাশি সেখানে নির্মাণ করা হবে মসজিদ, কবরস্থান, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ।

দেশের পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়কে মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে ভূমিহীন ৫৯টি পরিবারকে মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে জমিসহ আধাপাকা বাড়ি দিচ্ছে সরকার।

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদিয়া বাঁওড়ের পাশেই চলছে বিশাল নির্মাণযজ্ঞ। সেখানেই ঠাঁই হবে কালীগঞ্জ উপজেলার ৫৯ পরিবারের প্রায় ৩০০ মানুষের।

দেশের ইতিহাসে বেদে সম্প্রদায়ের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় পল্লি হতে যাচ্ছে। সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে পল্লিটি নির্মাণ হচ্ছে জলাধারের পাশেই।

আগামী জুনের মধ্যেই এ বাড়িগুলো বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করতে পারা যাবে বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

দেশে সমতল পর্যায়ে যে ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আছে তাদের জন্য মুজিববর্ষের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় মিলিয়ে ৬ হাজার ৫০০ গৃহ নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মধ্য সবচেয়ে বড় বেদেপল্লি হতে যাচ্ছে কালীগঞ্জের জগন্নাথপুরে।

শুক্রবার গিয়ে দেখা গেছে, পুরো এলাকা মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। নির্মাণাধীন এলাকাজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে ইট। ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা।

৫৯ পরিবারের প্রায় ৩০০ লোকের বাসস্থানের ঘরের পাশাপাশি সেখানে নির্মাণ করা হবে মসজিদ, কবরস্থান, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ।

যেসব ভূমিহীন বেদেদের বাড়ি দেয়ার জন্য তালিকা করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।

পরম্পরা অনুযায়ী সাপ খেলা দেখান কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের মদিনাপারার শহীদুল ইসলাম। নিজের কোনো জমি নেই, পরের জায়গায় থাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ, ঘর পাইলে ভালো হবে৷ পরিবেশটা একটু ভালো হয়। ঘর পাইলে নাতি-নাতনিদের শিক্ষিত করে বিদ্যান করব, ওই স্বপ্ন দেখছি।

‘বাবা-দাদা আমাগো মূর্খ বানাইয়া থুইয়া গেছে, যদি আমাদের একটু শিক্ষা দিয়া যাইত, তাইলে ভালো হতো। তালিকা নিয়া গেছে, নাম সব নিয়া গেছে।’

উপহারের ঘরে হচ্ছে বেদেপল্লি

একই পাড়ার রঙ্গিলা বেগম গ্রামে গ্রামে ঘুরে ‘দাঁতের পোকা তুলে’ ও শিঙ্গা লাগিয়ে আয়-রোজগার করেন। ২২ বছর বয়সী নারীর রয়েছে দুই সন্তান। স্বামী দেখান বানরের খেলা। যা উপার্জন হয় তা দিয়েই চলে সংসার।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠে-ঘাটে থাকি, এবার একটা ঠিকানা হবে। সামর্থ্য হলে পোলাপানদের লেখাপড়া করামু।’

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝিনাইদহ উপজেলার কালীগঞ্জে বেদেদের জন্য ৫৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বেদে সম্প্রদায় এখনই উল্লসিত তাদের ঘর পাওয়ার বিষয়টি জেনে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বিনির্মাণের জন্য এই প্রকল্পটি সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়নে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি।’

মাজদিয়া বাঁওড়ের পাশে জায়গাটা নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘরের পাশাপাশি এখানে মসজিদ, কবরস্থান, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটা ঘরে দুইটা রুম আছে, একটা রান্নাঘর, বাথরুম থাকবে। ঘরপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। ঘরের চারপাশে কিছু খোলা জায়গা রেখেছি, তারা যাতে গবাদি পশু পালন এবং গাছ লাগিয়ে পরিবেশটা সুন্দর রাখতে পারে। সার্বিকভাবে এটা যাতে আধুনিক পল্লিনিবাসের সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

যাযাবর জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম বেদে সম্প্রদায় কালীগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিল উল্লেখ করে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবে না। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন কালীগঞ্জ বেদে সম্প্রদায়ের ৫৯ পরিবারকে চিহ্নিত করেছে। জলাধারের সঙ্গে তাদের যে জীবনযাপন ইতিহাস-ঐতিহ্য আছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি পরিবেশ আমরা নির্ধারণ করেছি।’

প্রায় ২ একর জমি অবৈধ দখলদারদের কাছে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দখলমুক্ত করেছি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০ লাখ টাকা। আমরা আশা করছি, এই পরিবারগুলো উন্নত জীবন যাপন করতে পারবে। পুনর্বাসন সম্পন্ন হলে তাদের নতুন প্রজন্ম শিক্ষা স্বাস্থ্যের পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা গ্রহণ করে একটি উন্নত প্রজন্ম পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

১৯৯৭ সাল থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত পুনর্বাসিত পরিবারের সংখ্যা ৭ লাখ ৮ হাজার ৩টি। পরিবারের সদস্য ৫ জন ধরে হিসাব করলে সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৪০ হাজার ১৫ জন।

চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ একক গৃহের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩টি। বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন:
উপহারের ঘরে সেলুন, সচ্ছলতায় মুখে হাসি
স্বাবলম্বী হয়ে উপহারের ঘর ফেরত দিলেন জমির
ভোলায় ১৫০ পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমি-বাড়ি
হাতুড়ি দিয়ে উপহারের ঘর ভেঙে মিডিয়ায় প্রচার
উপহারের ঘর বরাদ্দে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
Bangabandhus arrest in language movement on DU Day list

ঢাবির দিবসের তালিকায় ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার

ঢাবির দিবসের তালিকায় ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার ভাষা আন্দোলনের সময় ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। আন্দোলনের এই পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে ছিলেন। সেদিন তাকে রাজবন্দি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রতি বছর গ্রেপ্তারের এই দিনটিকে এখন থেকে দিবস হিসেবে পালন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
সভায় উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দিবসটি পালনের জন্য প্রস্তাব তোলেন। সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার এবং কারাবরণ করেন। তাই সার্বিকভাবে আমরা মনে করি, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা উচিত। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমি এ আহ্বান করেছি। উপাচার্য এতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।’

ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের তখনকার ছাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয় ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। প্রতি বছর গ্রেপ্তারের এই দিনটিকে এখন থেকে দিবস হিসেবে পালন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে পরিবেশ পরিষদের সভায় এই দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দিবসটি পালনের জন্য প্রস্তাব তোলেন।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার এবং কারাবরণ করেন। তাই সার্বিকভাবে আমরা মনে করি, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা উচিত। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমি এ আহ্বান করেছি। উপাচার্য এতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।’

ঢাবির দিবসের তালিকায় ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে পরিবেশ পরিষদের সভায় এই দিবসটি পালন নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন। ছবি: নিউজবাংলা

আর কী কী আহ্বান জানানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মূল সুর বহু ভাষিকতাকে রক্ষা করা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য।

কিন্তু ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সভা সেখানে চাকমাভাষী, গারোভাষী এবং আদিবাসী যারা রয়েছেন তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই৷ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয় সেটির জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি।

‘এ ছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশ সমুন্নত রাখতে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় চায়ের টংয়ের বাইরে অতিরিক্ত যেসব ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে, সেগুলো সরিয়ে দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভারী যানবাহন বন্ধের বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছি।’

১১ মার্চ দিবসটি উদযাপনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভাষা আন্দোলনের এই পর্বে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে ছিলেন। তাকে রাজবন্দি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেহেতু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রনেতা ছিলেন, সেহেতু আমাদের দায়িত্বের জায়গাটা আরও বেশি। সুতরাং আমরা যখন এটি করব, তখন আমরা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারব, বঙ্গবন্ধুর যে অনবদ্য অবদান ছিল সেটিতে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাব।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘এটি আমাদের মূল্যবোধকে জাগ্রত করবে। ইতিহাসে যাদের অসাধারণ অবদান, তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এসব দিবস আমাদের সুযোগ করে দেয়।’

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচল সীমিতকরণ এবং ভ্রাম্যমাণ, অসহায়, দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের তালিকা প্রণয়ন ও তাদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে বলে সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয়।

ছাত্রনেতাদের আলোচনার সূত্র ধরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিত ও যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

এ ছাড়া প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম সহজীকরণ, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব, সময়, শ্রম ও অর্থের সাশ্রয় ঘটানো এবং সেমিস্টার শিক্ষাকার্যক্রম আরও কার্যকর ও গতিশীল করার লক্ষ্যে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে চারটি ইউনিটের (ক, খ, গ ও চ) অধীনে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়।

শিক্ষার্থীদের বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ প্রদানের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল, পরিকল্পিত ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সহযোগিতা চান। ছাত্র সংগঠনের নেতারা এসব উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ও ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু: ভাষা আন্দোলনের নেপথ্য নায়ক
মুক্তায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
চলে গেলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আবুল হাসেম
বঙ্গবন্ধুর নামে আরেক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সমঝোতা স্মারক

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
Gaming apps are my Bangabandhu

এলো গেমিং অ্যাপস ‘আমার বঙ্গবন্ধু’

এলো গেমিং অ্যাপস ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ বৃহস্পতিবার রমনা রেজিমেন্ট আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি কন্টিনজেন্ট ক্যাডেটরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি: নিউজবাংলা
‘আমার বঙ্গবন্ধু’ অ্যাপসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহজভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এই গেমিং অ্যাপটি ব্যবহারে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম, আদর্শ এবং নেতৃত্বের গুণাবলিতে বলীয়ান হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী একটি জাতি গঠন করা সম্ভব হবে। গেমিং অ্যাপস শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ জীবনী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা হয়েছে অ্যাপভিত্তিক গেম ‘আমার বঙ্গবন্ধু’।

গেমটি সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে। ‘গেমিং অ্যাপস’ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গত ১৬ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিএনসিসি অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনবৃত্তান্ত ও জীবনাদর্শ নিয়ে নির্মিত ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক গেমিং অ্যাপসের উদ্বোধন করা হয়।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রমনা রেজিমেন্ট আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি কন্টিনজেন্ট ক্যাডেটরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পিইউও আতিয়ার রহমান, সিইউও মো. মামুন শেখ, আর্মি স্টাফ এবং বিএনসিসি ক্যাডেটরা উপস্থিত ছিলেন।

‘আমার বঙ্গবন্ধু’ অ্যাপসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহজভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এই গেমিং অ্যাপটি ব্যবহারে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম, আদর্শ এবং নেতৃত্বের গুণাবলিতে বলীয়ান হওয়ার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী একটি জাতি গঠন করা সম্ভব হবে।

‘আমার বঙ্গবন্ধু’ মোবাইল গেমিং অ্যাপটি বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় তৈরি এমন একটি গেম, যা খেলার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনী সহজভাবে জানতে পারবেন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশপ্রেম তথা নেতৃত্বের গুণাবলিতে উজ্জীবিত হবে।

‘আমার বঙ্গবন্ধু’ গেমিং অ্যাপস শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় আগামী ২৬ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করা যাবে।

সর্বপ্রথমে অ্যান্ড্রয়েড গেমিং অ্যাপ ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ ডাউনলোড করে মোবাইলে ইনস্টল করতে হবে। ইনস্টল করে গেমসটি চালু করার পর ইন্টারফেস আসবে। যেখানে একজন প্রতিযোগীকে ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত হতে হবে।

গেমসটি খেলাকালীন দুটি সময় গণনা করার মাধ্যমে বিজয়ী নির্ণয় করা হবে। সেই ক্ষেত্রে এই সময় গণনা করে একটি ডাটাবেজ সার্ভারে জমা হবে এবং সেখান থেকে ওয়েব ইন্টারফেসের মাধ্যমে তা জানা যাবে। পরে বিভিন্ন পর্যায়ে খেলে সফল প্রতিযোগীরা জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু: ভাষা আন্দোলনের নেপথ্য নায়ক
মুক্তায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
চলে গেলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আবুল হাসেম

মন্তব্য

মুজিব শতবর্ষ
International recognition of the March 25 massacre as genocide

২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি গণহত্যা হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে একাত্তরের ২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞ। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক সংস্থা জেনোসাইড ওয়াচের এই ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক সংগঠন ‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ আনন্দ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে সংগঠনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা জেনোসাইড ওয়াচের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

একাত্তরে বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা জেনোসাইড ওয়াচ।

পাকিস্তানিদের ওই বর্বরতার ৫০ বছর পূর্তিতে জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গ্রেগরি এইচ স্ট্যানটন বৃহম্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দেন।

এ ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘জেনোসাইড ওয়াচ এই স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙালিদের ওপর যেসব অপরাধ করেছে, তার মধ্যে ছিল জোনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ।’

সেই সঙ্গে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানসহ জাতিসংঘের সব সদস্য দেশকে পাকিস্তানি বাহিনীর করা সেসব অপরাধকে জোনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’হিসেবে স্বীকার করে নিতে আহ্বান জানান।

এই ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক সংগঠন ‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ আনন্দ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে সংগঠনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা জেনোসাইড ওয়াচের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

এই স্বীকৃতির নেপথ্যে কাজ করা শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে তৌহিদ রেজা নূরকে অভিনন্দন জানানো পাশাপাশি তার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য।

এ বিষয়ে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামজা রহমান অন্তর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা খুবই আনন্দিত ও আবেগ আপ্লুত এই খবরে। এটি নিঃসন্দেহে পাকিস্তান কর্তৃক বাঙালির ওপর একাত্তরে যে জেনোসাইড ঘটানো হয়েছিল সেই নৃশংসতার বিচার তরান্বিত করবে। আমরা পাকিস্তান রাষ্ট্র ও সেই সব গণহত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।’

বাঙালি জাতির মুক্তির আন্দোলনকে শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে তৎকালীন পূব-পাকিস্তানের ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান; শুরু হয় বাঙালির প্রতিরোধ যুদ্ধ।

নয় মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ৩০ লাখ সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। এসময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারে এক কোটি মানুষ পাশের দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শহর থেকে গ্রামে সাধারণ মানুষের ঘর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয় ও লুটপাট করে। এসময় তারা দুই লাখের বেশি নারীকে ধর্ষণ করে। যাকে জেনোসাইড বা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি দিয়েছ গণহত্যা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘জেনোসাইড ওয়াচ’।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া সময়ের দাবি
‘আজও শিউরে উঠি, চোখে পানি এসে যায়’

মন্তব্য

p
উপরে