আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন কপ২৯ শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র মতবিরোধের কারণে তা ১২তম দিনে গড়িয়েছে। সূত্র: বাসস
সম্মেলনের মূল আলোচনা বর্তমানে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ নিয়ে তীব্র বিতর্কের মাঝে থমকে আছে। শনিবারের মধ্যে একটি নতুন খসড়া প্রস্তাবনা আসার কথা থাকলেও আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ও তা বণ্টন নিয়ে অবস্থান এখনও পরিষ্কার হয়নি। এটি সম্মেলনটির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার কপ২৯ সম্মেলনে উপস্থাপিত নতুন খসড়া প্রস্তাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ২০৩৫ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জলবায়ু অর্থায়নের বার্ষিক লক্ষ্য ২৫০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। তবে এই লক্ষ্য ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রয়োজনীয় ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বার্ষিক অর্থায়নের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো।
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই প্রস্তাবনাকে ‘অপ্রতুল’ ও ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘যারা ইতোমধ্যে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন, তাদের জন্য ঋণের বদলে অনুদান জরুরি। অন্যথায় তাদের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়বে।’
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রতিনিধি টিনা স্টেগ এই খসড়াকে ‘লজ্জাজনক’ অভিহিত করে এই প্রস্তাবনাকে বৈশ্বিক জলবায়ু সুবিচারের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন।
জলবায়ু অর্থায়নে প্রস্তাবিত টেক্সটকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, ‘এই খসড়া টেক্সট জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করা দেশগুলোর জন্য অসম্মানজনক। আমাদের জন্য বাস্তব অর্থনৈতিক সহায়তা প্রয়োজন, যা আমাদের অভিযোজন এবং ক্ষয়-ক্ষতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সবুজ অর্থনীতিতে ন্যায্য রূপান্তরে সহায়তা করবে।’
প্রস্তাবনায় ২০৩০ সালের মধ্যে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কথা বলা হলেও এর মধ্যে উন্নত দেশগুলোর জন্য বছরে ২৫০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকি অর্থায়ন আসবে বেসরকারি বিনিয়োগ ও অন্যান্য উৎস থেকে। তবে আফ্রিকা, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং জি৭৭+চায়না গোষ্ঠীর মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো এই প্রস্তাবকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে আরও বেশি, নির্দিষ্ট ও প্রাপ্তিযোগ্য সহায়তার দাবি করেছে।
বেসরকারি সংস্থা ও পরিবেশ আন্দোলনকারীরা খসড়া প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করতে বলছেন। তারা দাবি করছেন, যে কোনো আর্থিক সহায়তা প্রক্রিয়ায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।
শুক্রবার রাতে কিছু পরিবেশ আন্দোলনকারী সম্মেলনস্থলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেখানে তারা স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) ও ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপ (এসআইডিএস) দেশগুলোর জন্য আরও তহবিল দাবি করেন।
বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশ অভিযোজন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলের জন্য আরও অর্থায়নের জোর দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই তহবিলগুলোকে ‘অত্যন্ত জরুরি’ উল্লেখ করে বলেন, ‘এই তহবিলগুলোকে যথাযথভাবে অনুদান হিসেবে দেয়া না হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো আর্থিক চাপে পড়বে এবং তাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ব্যাহত হবে।’
সম্মেলনে চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) নিজেদের সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চীন ঘোষণা করেছে, তারা বছরে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যা তাদের জলবায়ু পরিকল্পনাগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হবে।
ইউএই আরও ১৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার নতুন তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে, যা তাদের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
অতিরিক্ত দিনে গড়ানোর কারণে বাকুতে কপ২৯ সম্মেলন কেন্দ্রে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে, যা সম্মেলনের কার্যক্রম ব্যাহত করছে।
আয়োজক দেশ আজারবাইজান পরিবহন ও অন্যান্য সেবা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন অধিবেশন ও আলোচনায় যোগ দিতে পারছেন না। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি ও আন্দোলনকারীরা এই অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং তা দ্রুত নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।
কপ২৯ সম্মেলনের চূড়ান্ত ফলাফল জলবায়ু অর্থনৈতিক সহায়তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, যা বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য বাঁচা-মরার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের ন্যায্য হিস্যার জন্য লড়াই করছে এবং প্রত্যাশা করছে এ সম্মেলন থেকে তাদের জন্য একটি কার্যকর সমাধান বের হবে। তাই সবার চোখ এখন আজারবাইজানের দিকে, কপ২৯ কী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবে এবং জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের কিছু অংশে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর ফলে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা (এনডব্লিউএস)।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার হামবোল্ট কাউন্টির ফার্নডেল শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
প্রাথমিকভাবে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে জানালেও পরে এটিকে ৭.০ মাত্রায় উন্নীত করে ইউএসজিএস। সমূদ্রপৃষ্ঠের ৬০০ মিটার গভীরে কম্পনের উৎসস্থল চিহ্নিত করা হয়।
ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক মিনিট পর এনডব্লিউএসের সুনামি সতর্কতার আওতায় পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তত ৫৩ লাখ মানুষ। এরপর ওই এলাকা ও সানফ্রান্সিসকো উপকূল থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেল নর্টে, হামবোল্ট ও মেন্ডোসিনো কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্বল্প মাত্রার আফটারশক হয়েছে।
হামবোল্ট কাউন্টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত হিমেল বাতাস, সন্ধ্যা থেকে সকাল জুড়ে ভারি শিশির কণা। দিনভর সূর্যের আলো থাকলেও তেমন তেজ নেই। আকাশে খণ্ড খণ্ড মেঘের মেলা।
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের প্রকৃতিতে এমন অবস্থা বিরাজ করছে। ক্রমেই নামছে তাপমাত্রা। বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আবহাওয়া অধিদপ্তর হালকা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে বলছে, ডিসেম্বরে তাপমাত্রা এক অংকের ঘরে নেমে যাবে। ডিসেম্বর মাসে মৃদু ও মাঝারি মাত্রার একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
উত্তরের পাহাড় ছুঁয়ে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস আর ভারি কুয়াশার কারণে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা পাঁচদিন ধরে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রিতে বিরাজ করলেও শনিবার তা ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে নেমে এসেছে। দিনের তাপমাত্রাও থাকছে ২৮/২৯ ডিগ্রির ঘরে।
তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। গ্রামগজ্ঞের হাটবাজারগুলোতে সন্ধার পর লোকসমাগম কমে যাচ্ছে। শহরের মানুষজনও তাড়াতাড়ি ঘরমুখী হচ্ছে। অপরদিকে পাড়া-মহল্লা এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতের রকমারি পিঠা-পুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে।
শনিবার ভোর সকাল ৬টায় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যাবেক্ষণাগার কার্যালয়। এর আগে চারদিন ধরে এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার কোল ঘেঁষা জনপদ পঞ্চগড়ে বরাবরই দেশের অন্যান্য জেলার আগে শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। শীতকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকে তেঁতুলিয়ায়। এ সময় আকাশ কিছুটা পরিষ্কারর থাকায় দেখা মেলে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার বর্ণালী লাবণ্য।
এদিকে শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোষক কারিগরদের। বিক্রি বেড়েছে মৌসুমি শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় তুলতে শুরু করেছেন।
জেলায় ভারি কোন শিল্প-কারখানা না থাকায় পাথর শ্রমিকসহ নদী-কেন্দ্রিক মানুষের কাজের ক্ষেত্র কমে গেছে। মহানন্দা নদীর হিম জলরাশি থেকে কষ্ট করে পাথর সংগ্রহ করছে শ্রমজীবী মানুষ।
তাপমাত্রার এই পরিবর্তনে জেলায় শীতজনিত রোগব্যাধি বাড়তে শুরু করেছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের পরিচালক রাজিউর রহমান জানান, শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি বাড়ছে। লোকবল, চিকিৎসক সংকট ও বেডের অভাবে শিশু রোগীদের মেঝে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। বিশেষ মেডিক্যাল টিম গঠন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা দ্রুত কমতে শুরু করেছে। আজ (শনিবার) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনের দিনগুলোতে তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে। আগামী ডিসেম্বর মাসে একাধিক মুদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী জানান, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সব মানুষের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। শীত মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি উপজেলায় দু’হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত বরাদ্দসহ খাদ্য সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:দু’দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। রোববার সকাল ৬টা ও ৯টায় এখানে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন শনিবারও এখানে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে শ্রীমঙ্গলে।’
তিনি বলেন, ‘নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই এখানে কিছুটা বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। দিনের বেলায় সূর্যের তাপে কিছুটা গরম অনুভব হলেও সন্ধ্যা নামলেই প্রচুর শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালবেলা কুয়াশা পড়ছে। একইসঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস।
‘তবে শিগগিরই জেঁকে বসবে শীত। আগামি তিন দিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। রাত ও দিনে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।’
এদিকে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সর্দি-কাশি, অ্যাজমাসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, ‘খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া চলতি আবহাওয়ার সময় শিশু ও বয়স্করা ঘর থেকে বের না হওয়া উত্তম। বিশেষ প্রয়োজনে বের হতে হলে অবশ্যই গরম কাপড় পরতে হবে।’
এছাড়া ধুলাবালি থেকে রেহাই পেতে মাস্ক ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি। সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি কম হলেও আউটডোরে প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নিজেদের মধ্যে পলিটিকাল ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু নদীর পানির হিস্যা নীতি ছিল। ভারতের কোনো যুক্তিই নেই আমাদের পানি না দেয়ার। এটা নিয়ে ভারতকে চাপ দিতে হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উজানে যৌথ নদীর পানি প্রত্যাহার: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, বাংলাদেশ।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতে যখন পানির চাপ থাকে তখন আমাদের এদিকে স্লুইস গেটগুলো খুলে দেয়। আবার ওখানে যখন পানির স্বল্পতা থাকে তখন গেটগুলো বন্ধ করে দেয়।
‘তারা ইচ্ছেমতো এটা করছে। আর সেজন্য আমরা পানি পাচ্ছি না। এতে করে আমাদের চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। দিন দিন মরুভূমির মতো হয়ে হচ্ছে। গ্রাউন্ড ওয়াটার লেভেল নেমে যাচ্ছে। আমরা আর কত সহ্য করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং। এগুলোতে জনগণের সাপোর্ট প্রয়োজন। শুধু ফারাক্কা নয়; অভিন্ন আরও যে ৫৪টি নদী আছে, সেগুলো থেকে যাতে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি পায় সেজন্য আমরা কাজ করব।’
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
আরও পড়ুন:জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনে চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি ও ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। সূত্র: ইউএনবি
বৈঠকে অবশিষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধানে উভয় পক্ষের সহযোগিতায় একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক চুক্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেন, ‘অনেক সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে।’
এছাড়া উভয় পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে কপ-২৯-এ একটি অর্থবহ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চুক্তি নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
বৈঠকে এলডিসি মন্ত্রীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তাদের মূল অবস্থান তুলে ধরেন।
ইইউ মন্ত্রীরা এলডিসি দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়গুলো স্বীকার করেন এবং জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন, কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং গ্লোবাল স্টকটেক প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠক কপ২৯-এর চূড়ান্ত আলোচনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘কপ সম্মেলনে আমাদের নিগোসিয়েটরদের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি। কে কত টাকা পেল বা পেল না- এমনটি হলে আমাদের ঐক্য দুর্বল হবে। আর ঐক্য ভেঙে গেলে সেটি আমাদের সবার জন্যই ক্ষতিকর হবে।’
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর কপ-২৯ সেন্টারে ইউএনবিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
ঐক্যটা কী ধরনের জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীদের যে মিটিং হয় সেই প্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে। তাহলে এটি একটি অর্জন হবে। বাংলাদেশসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো- আমরা যারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তাদের ঐক্য থাকলে তা এই কপ-২৯ এর বড় একটি অর্জন হবে।’
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এবারের কপ বেশ হতাশা এবং উদ্বেগের।’
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে কত টাকা পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থ যদি বলেন, একটা পরিমাণ, যে পরিমাণ পাওয়ার কথা সেই পরিমাণ পাওয়া যাবে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত। অর্থের পরিমাণ থেকে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে অর্থের মানটাতে। অর্থটা ঋণ হিসেবে আসবে নাকি কার্বন ক্রেডিট হিসেবে আসবে, অর্থটা সরাসরি সাহায্য হিসেবে জাতিসংঘের গ্যারান্টি চাই। আমরা যদি অর্থের মানটাতে সমঝোতায় পৌঁছতে পারি, তাহলে একটা জয় হিসেবে ধরে নিতে পারব।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আশা আপনার একরকম, আমার একরকম। আপনি হয়তো ভাবছেন এক দশমিক তিন বিলিয়ন টাকা নিয়ে গেলে আমরা ভাল হয়ে যাব। আমি ভাবছি এই মুহূর্তে যদি টাকার অঙ্ককে কেন্দ্র করে আমাদের ঐক্যটা ভেঙে যায়- তাহলে এটা অনেক বড় একটা ক্ষতি হবে। আর যদি ঐক্যটা ধরে রাখতে পারি সেটা আমার ও আমাদের আশার জায়গা। অর্থের মানের ব্যবস্থার সিদ্ধান্তে আসতে পারি এবং সেটি পাবলিকস ফান্ডিং হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থের মানের দিকে জয়ী হতে পারলে বিশাল জয় হবে। বাংলাদেশের নাগরিক যারা ফেনী, কুমিল্লা, শেরপুর বা সিলেটে বন্যা আক্রান্ত শিশু- প্রতি জনের ৯০ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় আছে। মানে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সময় প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেই প্রকল্প ঋণের বোঝা মাথায় রয়েছে। তাই অর্থের মানটাই লাভ করতে পারলে বড় জয় হবে।’
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘কত টাকা পেলাম বা পেলাম না এটা জরুরি না। কারণ কত টাকা পেলাম তা বড় কথা নয়। বরং এক-তৃতীয়াংশ ভূমি যদি পানির নিচে চলে যায়, তার জন্য কত টাকা প্রয়োজন সেটি বড় বিষয়। মিটিগেশন করে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে আমাদের জোর দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যত টাকা আমাদের তার ৫০ ভাগ বন্যা আক্রান্ত মানুষগুলোর ঋণ খাপ খাইয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এই জায়গায় জয়ী হতে পারলে একটা ফল আসবে। আরেকটা আশার জায়গায় এই প্রক্রিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাহলে বছরে একবার না দুবার কিভাবে টাকা আসবে সেটা করা যাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি- আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া উচিত। অনেক টাকা চাই না, এর চেয়ে বরং যে সমস্যাটা আছে তার সমাধান চাই। বাংলাদেশের মতো দেশগুলো যারা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কায় আছে, তাদের অবস্থান এমন হওয়া উচিত। বিভিন্ন দেশ জীবাশ্ম জ্বালানিকেন্দ্রিক যে উন্নয়ন করছে তা পরিবর্তন করতে হবে।’
রিজওয়ানা বলেন, ‘সরকার বর্তমানে জ্বালানি নীতিমালা পর্যালোচনা করছে এবং জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক উৎপাদন থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। উচ্চ আমদানি শুল্ক পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশে সৌরশক্তি প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট বায়ু দূষণ আমাদের বড় পরিবেশগত সমস্যা। তাই এখনই নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের সঠিক সময়।
‘আর্টিকেল-৬ নিয়ে অনেক বিবাদ আছে। কার্বন আমাদের আর্টিকেল-৬ একটি অস্ত্র। উন্নত বিশ্ব যদি মনে করে যার যার দেশে কার্বন নিঃসরণ করবে তাহলে অনেক ক্ষতি হবে।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের জলবায়ু বাস্তবতা একরকম। তাই জলবায়ুর যে ভঙ্গুরতা আছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা কমাতে পারি কি না সেটিও দেখতে হবে। কোন জায়গায় কমাতে হবে- এটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এডাপটেশনে বেশি, নাকি মেডিকেশনে বেশি নইক লস অ্যান্ড ড্যামেজের কাজ বেশি করতে হবে, কাজ করার কী কী ক্ষেত্র আছে- এসব দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটির প্রথম দুটি মিটিং হয়েছে এবং পরবর্তী মিটিংটি বাংলাদেশে হবে জানুয়ারিতে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘মিটিগেশন নিয়ে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। টেকনোলজিগুলোর কথা বলি আমরা। আমাদের দেশে দুর্যোগের সময় যে পূর্ব সতর্কতা দরকার তা যেন আমরা আগেই জানতে পারি। সেজন্য টেকনোলজির সহায়তা লাগবে। যে টেকনোলজি আমাদের দরকার, সেটির জন্য আমাদের সাহায্য প্রয়োজন আছে।’
বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা দেশের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রায় ১০ শতাংশের (২১.০৪ মিলিয়ন টন সিও২-সমমান) জন্য দায়ী। শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন ৬ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৭৩ শতাংশ অপরিশোধিত অবস্থায় ল্যান্ডফিলে জমা হয়। ফলে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পুনঃউৎস আহরণ কেন্দ্র, ওয়েস্ট-টু-এনার্জি প্ল্যান্ট এবং স্যানিটারি ল্যান্ডফিল স্থাপনে জাপানের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে মোট জ্বালানি ব্যবহারের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তবে এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন।
চীনকে বাংলাদেশে সোলার ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট স্থানান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যা আমদানিনির্ভরতা কমাবে। এছাড়া সোলার প্যানেলের ওপর কর কমানোসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ‘আপডেটেড এনডিসি বাস্তবায়নে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যার মধ্যে ৩২ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ নিজস্ব উদ্যোগে অর্জন করবে। তবে, বাকি অংশ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশ আগামী বছর এনডিসি ৩ দশমিক শূন্য জমা দেয়ার পরিকল্পনা করছে।’
এদিকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) মির্জা শওকত আলী শুক্রবার ইউএনবিকে জানান, গত ১১ নভেম্বর শুরু হওয়া কপ২৯ সম্মেলন শুক্রবার শেষ হওয়া কথা থাকলেও বলা যাচ্ছে না। কারণ শুরু থেকে এবং পরে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা নিয়ে ফাইনাল টেক্সট এখনও বের হয়নি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য