হজযাত্রীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বহির্মুখী বিমান ভাড়ার ওপর আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এ ছাড়া যাত্রী নিরাপত্তা ফি, এম্বারকেশন ফি ও এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি’র ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এনবিআর সোমবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
সৌদি আরবগামী বিমান টিকিটের ওপর চার হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দেয়ার বিধান ছিল। হজযাত্রীদের জন্য এটি মওকুফ করা হলো।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যা আগের বছরের খরচের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
সরকার গত ৩০ অক্টোবর আগামী বছরের জন্য দুটি পৃথক সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। স্ট্যান্ডার্ড হজ প্যাকেজ-১-এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড হজ প্যাকেজ-২ বাবদ পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এর ফলে প্রত্যেক হজযাত্রী যথাক্রমে এক লাখ নয় হাজার ১৪৮ টাকা এবং ১১ হাজার ৭১০ টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে হজ পালনের সুযোগ পাবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন পরিকল্পিতভাবে অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘এই অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে অন্যায়ভাবে চিত্রিত করছে।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শনিবার করা এক পোস্টে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও অধিকার গোষ্ঠীগুলোকে তিনি বাংলাদেশে এসে এ বিষয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
শফিকুল বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। আমরা আশা করি, শীর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ এবং উদারপন্থি সংবাদপত্রগুলো কাউন্সিল দ্বারা প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনকে বিশ্বাস না করে তারা নিজেরা তদন্ত করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এসব মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে কেউ কেউ বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানোর বা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা এ ধরনের বার্তার প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
শফিকুল বলেন, ‘আমরা আশা করি আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠী, যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করবে; যেভাবে তারা তদন্ত করেছিলেন ২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যার বিষয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন যে অতিরঞ্জিত, তা প্রমাণিত হয়েছে নেত্র নিউজের একটি প্রতিবেদনে।’
নেত্র নিউজ একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট এবং নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের জন্য তাদের খ্যাতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম নেত্র নিউজের প্রতিবেদনের পর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অন্তত একটি বিবৃতি দেবে। কারণ, তাদের প্রকাশিত অতিরঞ্জিত প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করেছে একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট, কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা কোনো বিবৃতিও দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে নয়জন হিন্দু সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু এটা কোনোভাবেই সত্য নয়। তারা কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়নি, বরং তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুর পেছনে রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত এবং অন্যান্য কারণ ছিল।
‘এই একই সময়ে একই কারণে আরও বহু মানুষও নিহত হয়, যারা হিন্দুও নয়, সংখ্যালঘু নয়, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী হামলার প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ মিলিয়নেরও বেশি বার উদ্ধৃত করা হয়েছে। বিশেষ করে এটা প্রচার করছে শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী একটি হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতীয় মিডিয়া এবং ভারতীয় ভাষ্যকাররা।
‘তারা বাংলাদেশ নিয়ে ভুল মেসেজ তৈরি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদের তীরে পাঁচদিনের জোড় ইজতেমা আজ মঙ্গলবার সকালে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। মোনাজাত পরিচালনা করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজেনের সাফল্য কামনা করে দোয়া করা হয়। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ২০ মিনিটে মোনাজাত শেষ হয়।
ঢাকা, গাজীপুর ও আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি সকাল থেকে ময়দানে এসে মোনাজাতে শরিক হন। আর এর মধ্য দিয়ে তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম)-এর পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
তুরাগ তীরে এর আগে আজ ফজর থেকে হেদায়েতি বয়ান চলে। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। বয়ান তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন।
বয়ানে আল্লাহপাকের রাস্তায় তাবলিগকারীদের জন্য দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য দেয়া হয়। এরপর নসিহতমূলক বক্তব্য পেশ করেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা। তার বক্তব্য তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।
জোড় ইজতেমা চলাকালে অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে চারজন মুসল্লি মারা গেছেন। তারা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর থানার মো. শহিদুল ইসলাম, ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার দুলালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম আকন্দ, রংপুর কোতোয়ালি থানার বৌরাগীপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে হায়দার আলী ও দিনাজপুর সদরের মস্তপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে কাউসার আলী।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেছে ২৯ বস্তা টাকা। তিন মাস ১৩ দিনে দানবাক্সে এবার মিলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ।
শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শুরু হয়। দিনভর গুনে দেখা গেছে, সেখানে জমা পড়েছে আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২৮ বস্তা টাকা। তখন দিনভর টাকা গণনা শেষে পাওয়া যায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
ঐতিহাসিক এই মসজিদে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন অনেকে।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল ৭টায় দানবাক্সগুলো খোলা হয়। পরে দানবাক্সের টাকা বস্তায় ভরা হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বস্তা থেকে টাকাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মেঝেতে ঢেলে শুরু হয় গণনা। গণনা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূইয়া বলেন, ‘টাকা গণনায় অংশ নেন পাগলা মসজিদ মাদ্রাসার ১৩০ জন ও আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ১৫৫ জন ছাত্র, পাগলা মসজিদের ৩৬ জন স্টাফ, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ১০ জন সদস্য, ১০ জন আনসার সদস্য, ২০ জন পুলিশ, পাঁচজন র্যাব সদস্য এবং জেলা প্রশাসনের ২০ জন।’
তিনি জানান, এবার দানবাক্স খোলার সময় পার হয়ে যাওয়ায় একটি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে আগে নয়টি দানবাক্স থাকলেও এখন দুটি বাড়ানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়ার পাশাপাশি অসহায় এবং জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তা করা হয়।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, দানবাক্স খোলা থেকে শুরু করে বস্তায় ভরা এবং গণনা শেষে ব্যাংকে সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনি সশরীরে উপস্থিত থেকে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, ছয় তলাবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য একটি মেগা প্রকল্প করা হবে। এতে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ অর্ধলাখ মুসল্লি যাতে একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এরকম আকর্ষণীয় একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সে সঙ্গে একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে । তারা যাচাই-বাছাই করে নকশা চূড়ান্ত করে দিলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে। এতে প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। মনের আশা পূরণের জন্য তারা এই দান করে থাকেন।
দানবাক্স খোলার পর থেকেই টাকা গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় জমান উৎসুক মানুষ। তাদের একজন শেখ বোরহান উদ্দিন বাজিতপুর উপজেলার বাসিন্দা।
বোরহান বলেন, ‘মানুষের মুখে আর বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকায় পাগলা মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়া টাকার কথা শুনি। গতবার দেখতে এসেছিলাম। এবারও নিজ চোখে দেখতে এসেছি। এত পরিমাণ টাকা একসঙ্গে কখনও দেখিনি।’
গণনায় অংশ নেয়া হেফজখানা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইমদাদুল্লাহ জানান, দানবাক্স খোলার পর থেকে গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান করেন।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, যেগুলোর গণনা চলছে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ৯টি দানবাক্স আছে, যেগুলো সাধারণত তিন মাস পরপর খোলা হয়। এবার খোলা হয় তিন মাস ১৪ দিন পর।
৯টি দানবাক্স ছাড়াও এবার দুটি ট্রাংক যুক্ত করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে সকাল সাতটার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
ডিসি ফৌজিয়া খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল সাতটার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ৯টি দানবাক্স ও দুটি ট্রাংক খোলা হয়। এসব দানবাক্সে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
এসপি মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। টাকা গণনা শেষে ব্যাংকে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মী ছাড়াও আছেন মাদ্রাসার ২৮৫ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য।
দানবাক্স খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।
এর আগে ১৭ আগস্ট সকালে মসজিদটির ৯টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬। সেই সঙ্গে মিলেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না।
মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের পাশাপাশি নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষ।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়ায় তিন একর ৮৮ শতাংশে।
আরও পড়ুন:সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে এটাই শেষ। এর পর আর কোনো সময় বৃদ্ধি করা হবে না।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্ধিত এই সময়ের মধ্যে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে। একইসঙ্গে হজ প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করার জন্য সম্মানিত হজযাত্রীগণকে অনুরোধ করা হলো।
বারানসিতে জ্ঞানবাপী মসজিদে হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব নিয়ে অনেক দিন ধরেই সোচ্চার হিন্দু উগ্রবাদীরা। আদালতেও গড়িয়েছে বিষয়টি। এতে বিতর্কিত নির্দেশনাও দিয়েছে আদালত। এর পরে উত্তর প্রদেশের সন্তুলে জামা মসজিদ নিয়ে একই দাবি তোলার রাজনীতি চলছে। এর জের ধরে সেখানে সংঘর্ষে সম্প্রতি চারজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।
সন্তুলে জামা মসজিদের জায়গায় হিন্দু মন্দির ছিল দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন এক ব্যক্তি। তারপরই আদালত সমীক্ষার নির্দেশ দেয়। আর শুরু হয়ে বিতর্ক, গোলমাল।
প্রথম দিন জরিপের কাজ চললেও দ্বিতীয় দিনে জরিপ শুরু হওয়ার পর প্রবল ক্ষোভ জানাতে থাকেন স্থানীয় মুসলমানরা। এক পর্যায়ে তা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে পরিণত হয়। এখন সেখানে চলছে পুলিশের কড়া পাহারা। তবে উত্তেজনা থামেনি।
এবার রাজস্থানে আজমির শরিফের দরগা নিয়েও অনুরূপ বিতর্ক তুলতে মামলা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজমির শরিফের দরগায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন। শুধু মুসলমানরাই নন, সব ধর্মের মানুষ প্রবল বিশ্বাস নিয়ে এখানে আসেন। এখানে রয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর সূফি সাধক খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির সমাধি। ভারত সরকারের আইনে একটি ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয় এই দরগা।
কিন্তু সর্বধর্মের এই মিলনক্ষেত্র নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। গত বুধবার হিন্দু সেনা নামের একটি সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণু গুপ্ত স্থানীয় আদালতে মামলা ঠুকেছেন। তার দাবি, শিব মন্দিরের ওপর তৈরি হয়েছে এই দরগা। তাই এটিকে ভগবান শ্রী সংকটমোচন মহাদেব বিরাজমান মন্দির বলে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজমির দরগা কমিটি, ভারত সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে নোটিশ জারি করেছেন দেওয়ানি আদালতের বিচারক মন মোহন চান্ডেল। মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক আগামী ২০ ডিসেম্বর শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, দরগা সরিয়ে ফেলারও আর্জি জানানো হয়েছে আদালতের কাছে। একই সঙ্গে ভারত সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে দিয়ে জরিপ করার আবেদন জানানো হয়েছে। আবেদনকারীর আইনজীবী শশী রঞ্জন কুমার সিং আদালতে আবেদনে জানান, দরগার প্রধান ফটকের ছাদের নকশার সঙ্গে হিন্দু মন্দিরের নকশার মিল রয়েছে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হজযাত্রীদের সেবা না দেয়ায় দুটি এজেন্সিকে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা এবং লাকি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এজেন্সি সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজের (হজ লাইসেন্স নম্বর-১২৩৩) বিরুদ্ধে আ. মান্নান সরকার, মো. আশরাফুল আলম ও মো. জহরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন- প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদেরকে হোটেল না দেয়া, নিম্নমানের হোটেলে রাখা, গাইড না দেয়া, জিয়ারা না করানো, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, খারাপ আচরণ করা, কব্জি বেল্ট দেয়া হয়নি।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এজেন্সির স্বত্বাধিকারী ও গ্রুপ লিডারের বক্তব্য পর্যালোচনায় অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজ হজযাত্রী হিসেবে সৌদিতে গমনকারীদের প্রতিশ্রুত সেবা দেয়নি। এর মাধ্যমে এই এজেন্সি ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’ লঙ্ঘন করেছে।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী সাবওয়ে ট্রাভেলস অ্যান্ড হলিডেজকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলো। এই অর্থ অভিযোগকারী তিনজনকে সমান হারে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করে প্রমাণক ধর্ম মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার আদেশ দেয়া হয় প্রজ্ঞাপনে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানার অর্থ অভিযোগকারীদের ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এজেন্সির ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড বন্ধ করার আদেশ দেয়া হয়।
অন্যদিকে, লাকি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের (হজ লাইসেন্স নম্বর-২৬৮) বিরুদ্ধে মোস্তফা কবির হাবিব ও তার স্ত্রী শামীমা আক্তার অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে বলা হয়, সংক্ষিপ্ত প্যাকেজের কথা বলে এজেন্সি তাদের কাছ থেকে প্রাক-নিবন্ধনের জন্য ৬২ হাজার টাকা এবং পাসপোর্টসহ মোট আট লাখ টাকা নেয়। হজযাত্রীদের বিমান টিকিট নিয়ে এজেন্সি ভোগান্তি করেছে। বিমান টিকিট পরিবর্তনের কথা বলে অতিরিক্ত ৯০ হাজার টাকা গ্রহণ ও মক্কায় নিম্নমানের হোটেলে রাখা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে এই এজেন্সির বিরুদ্ধে ‘আচরণ বিধি লঙ্ঘন, চুক্তিবদ্ধ প্রয়োজনীয় সেবা দিতে ব্যর্থতা’ এবং হজযাত্রীদের হয়রানি ও ভোগান্তি করেছেন বলে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১ অনুযায়ী এক লাখ টাকা জরিমানা করা হলো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই অর্থ হজযাত্রীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়ার আদেশ দেয়া হলো।
অন্যথায় এজেন্সির ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড বন্ধ করার আদেশ দেয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য