× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Millions of people take part in processions to celebrate the holy Eid in Miladunnabi in Chittagong
google_news print-icon

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীতে চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে লাখো মানুষ

পবিত্র-ঈদে-মিলাদুন্নবীতে-চট্টগ্রামে-জশনে-জুলুসে-লাখো-মানুষ
সোমবার চট্টগ্রাম নগরীতে বের হওয়া জননে জুলুসে ভক্ত-অনুরাগীর ঢল। ছবি: নিউজবাংলা
জশনে জুলুসের আয়োজক প্রতিষ্ঠান আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের তথ্য অনুযায়ী, আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে শুরু হওয়া এই জশনে জুলুস চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুসে এত বিশাল জমায়েত আর কোথাও হয় না।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস।

সোমবার সকাল ১০টায় ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে জুলুস শুরু হয়।

এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরীফের সাজ্জাদানশীন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ।

জুলুস বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর, মুরাদপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে ডান দিকে মোড় নিয়ে ষোলশহর ২ নম্বর গেট, জিইসি মোড়, লর্ডস ইন হোটেল থেকে ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর বামে মোড় নিয়ে বিবির হাট থেকে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ফিরে আসবে। এ সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

এছাড়া নগরের বিবিরহাট, মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, হামজারবাগ, শুলকবহর, মির্জারপুল রোডের মুখ, বায়েজিদ বোস্তামী রোডের মুখ (শেরশাহ মোড়), বেবি সুপার মার্কেট, প্রবর্তক মোড়ের মুখ, জাকির হোসেন রোডের মুখ, গোলপাহাড় রোডের মুখ ও পুনাক মোড়ে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন করা হয়েছে।

এর আগে ফজরের নামাজের পর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, জিপে করে আলমগীর খানকাহতে আসতে শুরু করেন ভক্তরা। অনেকেই দীর্ঘপথ হেঁটে জুলুসে অংশ নিতে ছুটে এসেছেন। সমস্বরে ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা’ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুসে অংশ নিয়েছেন শিশু থেকে বৃদ্ধরাও। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেই সুন্নিয়া মাদরাসা, বিবিরহাট, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট এলাকা হয়ে পড়ে লোকে লোকারণ্য।

এদিকে জুলুস উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সেজেছে চট্টগ্রাম। নগরীর মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তোরণ। সাঁটানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। সড়কের দুপাশে বিশেষ পতাকাও রয়েছে। বসেছে খাবারসহ বিভিন্ন সামগ্রীর অস্থায়ী দোকান।

বিভিন্ন মোড়ে স্বেচ্ছাসেবীরা বিতরণ করছেন শরবত। জুলুসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।

জশনে জুলুস মিডিয়া কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার জানান, আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) তিনশ’ প্রশিক্ষিত সদস্য এবার জুলুসের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। এর বাইরে গাউসিয়া কমিটির কর্মী ও জামেয়ার হাজার হাজার ছাত্র স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন।

জশনে জুলুসের আয়োজক প্রতিষ্ঠান আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের তথ্য অনুযায়ী, আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে শুরু হওয়া এই জশনে জুলুস চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। ঈদে মিলাদুন্নবীর জুলুসে এত বিশাল জমায়েত আর কোথাও হয় না।

আরও পড়ুন:
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Two committees to withdraw political harassment cases

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে দুই কমিটি

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে দুই কমিটি
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অন্যান্য কারণে সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারে সুপারিশ করার লক্ষ্যে জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অন্যান্য কারণে সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারে সুপারিশ করার লক্ষ্যে জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্র জারির মাধ্যমে রোববার এ দুটি কমিটি গঠন করা হয়।

জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। কমিটির সদস্য পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাগুলোর জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর) এবং সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে- রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিটের সার্টিফায়েড কপি দাখিল করতে হবে। আবেদনপ্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন। আবেদনপ্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন।

পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহপূর্বক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন। জেলা কমিটির কাছে যদি প্রতীয়মাণ হয় যে মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য দায়ের করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওই সুপারিশ মামলার এজাহার ও চার্জশিটসহ আবেদনপ্রাপ্তির ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্দিষ্ট ‘ছক’ অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) ও যুগ্ম সচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের নিচে নয়)। কমিটির সদস্য সচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার উপসচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব/সহকারী সচিব।

মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে- জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সুপারিশগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করবে ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর আওতাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল’ এমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৮-এর ১০ (৪) ধারার বিধানমতে কমিশনের লিখিত আদেশ ব্যতীত প্রত্যাহার করা যায় না। এ কারণে এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হবে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Gomra village of Kankrol

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’ ঝিনাইগাতির গোমড়া গ্রাম জুড়ে কাঁকরোল বাগানের সবুজ সৌন্দর্য। ছবি: নিউজবাংলা
ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

নানা ধরনের সবজির মধ্যে বিশেষ একটি জায়গা দখল করে আছে ‘কাঁকরোল’। আর ব্যাপকভাবে এই সবজির চাষ হচ্ছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ি গ্রাম গোমড়ায়। গ্রামটিতে বসবাসকারী সবাই বিভিন্ন সবজির আবাদ করেন, যার মধ্যে কাঁকরোল অন্যতম। তাই গোমড়া গ্রামটি এখন ‘কাঁকরোল গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

সরজমিনে জানা যায়, এই এলাকায় কয়েক বছর আগেও পানি ও বিদুতের অভাবে বহু জমি পতিত ছিলো। এখন এ দুটি সুবিধা পাওয়ায় আর পতিত পড়ে থাকছে না এসব জমি। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে গ্রামের প্রায় সবাই নিজের কিংবা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মৌসুমী সবজি চাষ করছেন।

শরৎ ঋতুর এই সময়টাতে পুরো এলাকার সবজির ক্ষেত কাঁকরোলে ছেয়ে গেছে। যদিও এসব ক্ষেতে গরম ও শীতের আগাম সবজি বেশি আবাদ করেন স্থানীয়রা। এখানকার উৎপাদিত সবজির মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

গোমড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে এই এলাকায় পানির জন্য প্রায় সব জমিই পতিত থাকতো। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ আসায় পানি সমস্যার সমাধান হয়েছে। আবাদের আওতায় এসেছে অনেক জমি।

‘আমরা মৌসুমভিত্তিক সবজির আবাদ করে থাকি। আমরা এখন সবজির মধ্যে কাঁকরোল লাগিয়েছি। সবজি আবাদ করে এলাকার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।’

কৃষক হরমুজ আলী বলেন, ‘এটা পাহাড়ি এলাকা। এই এলাকায় আমরা সবজির আবাদই করি। আমি ৫০ শতাংশ জমিতে কাঁকরোল লাগাইছি। আমি এবার কাঁকরোল বিক্রি করে অনেকটা লাভবান হয়েছি। পোলাপানের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। পাঁচ সদস্যের সংসার চলছে এই সবজি আবাদ করেই।’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাহাড়ের মানুষ। আগে কী যে কষ্ট করছি! মানষের জমিতে সারাদিন কাম করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাইছি। কোনো কোনোদিন কামও পাইতাম না। এই টাকা নিয়া বাজার করবার গেলে কষ্ট হইছে। এখন বাড়ির পাশে রহমত ভাইয়ের জমিন বাগি (বর্গা) নিয়া শুরু করছি কাঁকরোলের চাষ। এখন আল্লাহর রহমতে নিজেরা ভালা আছি।’

তবে স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ রয়েছে গ্রামের রাস্তা-ঘাট কাঁচা নিয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

কৃষক হারুন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এদিকে কাঁচা রাস্তা হওয়ায় আমরা সবজি বাজারে তুলতে পারি না। নিলেও খরচ অনেক পড়ে যাওয়ায় লাভ কম হয়। সময়মতো বাজারে না নেয়ায় সঠিক দামও পাই না। আমরা কৃষকরা অবহেলিত।’

কৃষক খাইরুল বলেন, ‘এই এলাকার গ্রামীণ রাস্তাগুলো পাকা করলে আমাদের খুব উপকার হবে। আমরা কৃষকরা সবজি আবাদ করে দামটা বেশি পাইতাম। খারাপ রাস্তায় সব গাড়ি সহজে আসবার চায় না। আসলেও ভাড়া বেশি পইড়া যায়। এজন্য লাভটা কম হয়।’

যেভাবে চাষ

কাঁকরোলের বীজ কাঁকরোল গাছের নিচে হয়ে থাকে, যা দেখতে মিষ্টি আলুর মতো। মার্চ ও এপ্রিলে এই সবজির চাষ করা হয়। চারা গজানোর ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া সম্ভব। কাঁকরোল লতানো গাছ। স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছে হয় না। তাই বাগানে দু’ধরনের গাছ না থাকলে পরাগায়ন ও ফলন কম হয়।

চাষে খরচ ও লাভ কেমন

কৃষকেরা বলছেন, কাঁকরোল চাষে বিঘাপ্রতি খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় খরচ লাখ টাকার উপরে লাভ হয়ে থাকে।

কাঁকরোলের উপকারিতা

কাঁকরোল অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি৷ এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, ক্যারোটিন, আমিষ, ভিটামিন এ, বি ও সি এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে৷ কাঁকরোলে ভিটামিন সি থাকায় শরীরের টক্সিন দূর করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

কাঁকরোলে আছে বিটা ক্যারোটিন ও আলফা ক্যারোটিন, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না; ত্বককে করে উজ্জ্বল। এছাড়া কাঁকরোলের ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার জানান, পাহাড়ের পাদদেশে কাঁকরোলের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের সবজির আবাদ হয়ে থাকে। সবজি চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই সবজি কৃষক সরাসরি ঢাকার বাজারে পাঠাচ্ছে। সবজির মান ভালো হওয়ায় কৃষক দামও পাচ্ছে ভালো।

‘আমি মনে করি অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তা জমি ফেলে না রেখে মৌসুমভিত্তিক সবজি আবাদ করলে অবশ্যই লাভবান হবে। এ বছর এই উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে কাঁকরোলের আবাদ হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতসহ উফশী চার ধানে নতুন সম্ভাবনা
পেঁয়াজ কেন আমদানি করতে হয়, জানালেন কৃষিমন্ত্রী
তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে মরিচচাষীদের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা
দাবদাহ বাড়াচ্ছে পানির সংকট, আম-লিচু চাষিদের মাথায় হাত
বোরো উৎসবে মেতেছে কুমিল্লা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Asian group next to flood victims

বন্যার্তদের পাশে এশিয়ান গ্রুপ

বন্যার্তদের পাশে এশিয়ান গ্রুপ বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এশিয়ান গ্রুপ। ছবি: সংগৃহীত
এশিয়ান গ্রুপের পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি বন্যার্ত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে। খাবার, কাপড় ও নগদ অর্থ বিতরণ এবং স্বাস্থ্যসেবার পর এখন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর মেরামতের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি।’

দেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যাদুর্গত এলাকায় পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে এশিয়ান গ্রুপ। সম্প্রতি দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তার পর এমন উদ্যোগ এশিয়ান গ্রুপের।

শিল্প গ্রুপটি ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, নগরীর কালুরঘাট ও মোহরা এলাকায় বন্যার্তদের খাবার, কাপড় ও নগদ অর্থ বিতরণ এবং মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। এছাড়া বন্যা-পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

মানবিক এসব কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ সালাম ও পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম।

এ পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ ও মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে বানবাসী মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়েছে। কাপড় দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে।

এছাড়া নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে ১০ হাজারের বেশি মানুষের কাছে। অন্যান্য মানবিক কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে এশিয়ান গ্রুপের পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম বলেন, ‘এসব আমাদের ধারাবাহিক ও নিয়মিত মানবিক কার্যক্রমের অংশ। সাম্প্রতিক আকষ্মিক বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ অন্যান্য জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার লাখ লাখ মানুষ। ব্যাপক প্রাণহানি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জীবনযাপন।

‘আমরা চেষ্টা করেছি বন্যার্ত এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এখন আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর মেরামতের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের এসব মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

আরও পড়ুন:
বন্যা: ফেনীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষতি ৩৮ কোটি ৭২ লাখ টাকার
বন্যা: কুমিল্লায় প্রায় এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত
পানি আগ্রাসনের দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের বিচার দাবি
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী নোয়াখালীর ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ: অক্সফ্যাম
বন্যায় ফেনী-নোয়াখালীর ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

মন্তব্য

জীবনযাপন
The child who drowned in Feni was brought to Dhaka by BGB helicopter

ফেনীতে ডুবে যাওয়া শিশু বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায়

ফেনীতে ডুবে যাওয়া শিশু বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় ফেনীর পরশুরামে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুকে উদ্ধার শেষে মুমূর্ষু অবস্থায় বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। ছবি: সংগৃহীত
বিজিবি এয়ার উইংয়ের উপমহাপরিচালক খবর পাওয়ামাত্র পরিবারের লোকজনসহ শিশুটিকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন। পরে সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সযোগে শিশুটিকে সিএমএইচে যাওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি শঙ্কামুক্ত।

বন্যাদুর্গত ফেনীর পরশুরামে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে গিয়ে বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া মুমূর্ষু শিশুকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নিয়ে এসেছে বিজিবি।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় ফেনীর পরশুরাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত অসহায় বানভাসি মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য বিজিবি হেলিমিশন পরিচালিত হয়। এ সময় বিজিবির এয়ার উইং-এর উপমহাপরিচালক কর্নেল মো. মঈনুল ইসলামের কাছে খবর আসে যে পার্শ্ববর্তী অন্তপুর গ্রামের প্রবাসী কাজী নুরুল আমিনের দেড় বছর বয়সী শিশু নাজমুল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিবারের লোকেরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর শিশুটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে।

এহেন পরিস্থিতিতে বিজিবি এয়ার উইং-এর উপমহাপরিচালক তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের লোকজনসহ শিশুটিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে নিয়ে আসেন। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সযোগে শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত।

প্রসঙ্গত, বিজিবির হেলিকপ্টারযোগে দুটি হেলিমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই হাজার কেজি ত্রাণসামগ্রী ফেনীর পরশুরাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলগাজী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের হিঙ্গুলা হাসানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
নোয়াখালীতে আবারও বাড়ছে বন্যার পানি, মৃত্যু ৫
বন্যায় দেশের ১১ জেলায় ৫২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
বন্যার পানিতে ভাসছিল শিশুর মরদেহ
বন্যার্তদের জন্য এক দিনের বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের
সশস্ত্র বাহিনীর ত্রাণ কার্যক্রমের সমন্বয়কারী মেজর ওয়াসিম আকরাম

মন্তব্য

জীবনযাপন
School is closed if bus service is not started

‘বাসসেবা চালু না করলে স্কুল বন্ধ’

‘বাসসেবা চালু না করলে স্কুল বন্ধ’ বুধবার ঢাকার বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বাসসেবার উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। ছবি: নিউজবাংলা
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্কুলে বাসসেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। সে জন্য বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। স্কুলগুলো বলছে, কোনো একটা স্কুলে বাস চালুর পর কী হয় তা দেখতে চায় তারা।’

ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বাসসেবা চালুর তাগিদ দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। বাসসেবা চালু না করলে স্কুল বন্ধেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বুধবার ঢাকার বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বাসসেবার উদ্বোধন করেন মেয়র। এ সময় তিনি বলেন, যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্কুলে বাসসেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। সে জন্য বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। স্কুলগুলো বলছে, কোনো একটা স্কুলে বাস চালুর পর কী হয় তা দেখতে চায় তারা।

মেয়র বলেন, ‘আমরা এটা শুরু করতে পারছিলাম না। দফায় দফায় বৈঠক করতে হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে, ডিএমপির সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা প্রত্যেকটি স্কুলের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা বলেছে চালু হওয়ার পর তারা দেখতে চায়। আমরা তো চালু করে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যারা ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় স্কুল গড়ে তুলেছেন, আপনাদের কিন্তু সময় এসেছে স্কুলবাসে আসার। নইলে কিন্তু আমরা আপনাদের স্কুল বন্ধ করে দিতে বাধ্য থাকব। এভাবে শিক্ষামন্ত্রীও আমাদের বলে গেছেন। সহযোগিতা করেন, নইলে আমাদের কঠোর হতে হবে।’

মেয়র বলেন, ‘আপনারা একেকটি বাচ্চার কাছ থেকে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা ফি নিচ্ছেন। কিন্তু কোনো স্কুলবাস চালু করছেন না। আপনারা আবাসিক এলাকায় স্কুল করেছেন, গাড়ির আধিক্যে ওই এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার সব স্কুলে বাস চালু করতে হবে।’

স্কুল বাসসেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়ায় উত্তর সিটিকে ধন্যবাদ জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন একটি যুগান্তকারী কাজ শুরু করেছে। তারা বাস সার্ভিস চালু করেছে এবং প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলব, কীভাবে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ সেবা গ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে কাজ করুন।’

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার নামিদামি বিভিন্ন স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে। এতে যানজট তৈরি হচ্ছে। স্কুলগুলোকে বাসসেবা চালু করতে বাধ্য করতে হবে।’

ঢাকা উত্তর সিটি জানিয়েছে, শুরুতে তিনটি রুটে চলবে দ্বিতল বাস। স্কুল থেকে ওই পথ ধরেই শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে আসবে স্কুল বাসগুলো। এক নম্বর রুট- কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বসুন্ধরা গেট, নদ্দা, নতুনবাজার, গুলশান হয়ে বনানী বিদ্যানিকেতন। দুই নম্বর রুট- ১০০ ফুট সড়কের বসুন্ধরা গেট, ছোলমাইদ, ফ্যামিলিবাজার, নতুনবাজার, বাঁশতলা, শাহজাদপুর, নতুনবাজার, গুলশান হয়ে বনানী বিদ্যানিকেতন। তিন নম্বর রুট- উত্তর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে থেকে হোসেন মার্কেট, বাড্ডা লিঙ্ক রোড, গুলশান ১ নম্বর, মহাখালী টিবিগেট, ওয়্যারলেস গেট, আমতলী হয়ে বনানী বিদ্যানিকেতন পর্যন্ত।

এই স্মার্ট বাস ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। অ্যাপের মাধ্যমে ই-বুকিং দিতে পারবে তারা। অ্যাপের মাধ্যমেই বাসের গতিবিধি দেখতে পারবেন অভিভাবকরা। প্রতিটি বাসের ভেতর বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বনানী বিদ্যানিকেতনে শিক্ষার্থী প্রায় ৪ হাজার ৮০০। শুরুতে ৪৬০ জন অভিভাবক সন্তানকে স্কুলবাসে নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। অভিভাবকরা আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত দেখবেন সব ঠিক আছে কি না, তারপর তারা এ ব্যবস্থায় আসবেন। সব শিক্ষার্থী পরিবহনে ২০টি দ্বিতল বাস নামানো হবে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Eco friendly wooden houses made in Bagerhat are going to Europe

বাগেরহাটে তৈরি পরিবেশবান্ধব কাঠের বাড়ির গন্তব্য ইউরোপ

বাগেরহাটে তৈরি পরিবেশবান্ধব কাঠের বাড়ির গন্তব্য ইউরোপ বাগেরহাট সদরের প্রত্যন্ত গ্রাম কররীতে ন্যাচারাল ফাইবার-এর কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে কাঠের বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
পরিবেশের ক্ষতি করে না এমন পণ্য ব্যবহার করে ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে ১২০টি বসতবাড়ি তৈরির অর্ডার পান বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ আহমেদ। এরপর থেকে পরিবেশবান্ধব বসতবাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেয় তার প্রতিষ্ঠান ন্যাচারাল ফাইবার।

বাগেরহাটের প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি কাঠের বা‌ড়ি বেলজিয়ামে রপ্তানি হ‌চ্ছে। বাড়ির কাঠামো, দেয়াল, দরোজা-জানালা এমনকি ছাদও কাঠ দি‌য়ে তৈরি করা হ‌চ্ছে। সে সুবাদে নতুন বাজার ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এটি হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি পথ। সূত্র: ইউএনবি

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই উদ্যোগ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ন্যাচারাল ফাইবার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ আহমেদ।

পরিবেশের ক্ষতি করে না এমন পণ্য ব্যবহার করে ইউরোপের দেশ বেলজিয়াম থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে ১২০টি বসতবাড়ি তৈরির অর্ডার পান বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ আহমেদ। এরপর থেকে পরিবেশবান্ধব বসতবাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেয় তার প্রতিষ্ঠান ন্যাচারাল ফাইবার।

ব্যবসায়ী মোস্তাফিজ আহমেদ জানান, বেলজিয়ামের একটি ইকো পার্কের জন্য ক্রেতারা অর্ডার দিয়েছেন। পরিবেশবান্ধব কাঠের তৈরি এমন ১২০টি বসতঘর তাদের প্রয়োজন। আগামী দুই বছরের মধ্যে এসব ঘর বেলজিয়ামের ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে, দেশি মেহগনি কাঠ দিয়ে এসব ঘর তৈরি করতে হবে। এছাড়া এসব বাড়ির কাঁচামাল বায়োগ্রেডিবল বা পরিবেশে মিশে যায় এমন হতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো পণ্য চলবে না।’

বাগেরহাটে তৈরি পরিবেশবান্ধব কাঠের বাড়ির গন্তব্য ইউরোপ
বাগেরহাটে ন্যাচারাল ফাইবার-এর কারখানায় তৈরি করা কাঠের বাড়ির ভেতরের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

আশপাশের এলাকা থেকে সংগ্রহ করা কাঠ দিয়ে বসতবাড়ি তৈরি করা হয় এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কররীতে নিজস্ব কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে কাঠের এসব বসতবাড়ি। শ্রমিকরা তৈরি করছেন বসতঘরের দরোজা-জানালা, ফ্রেম ও দেয়াল। সবশেষে শ্রমিকদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় রং ও পালিশের মাধ্যমে শেষ করা হচ্ছে নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব কাঠের বসতবাড়িগুলোর নির্মাণ কাজ।

এই ঘর ১১ মিটার লম্বা এবং সোয়া চার মিটার চওড়া। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি এই বাড়ির বিভিন্ন অংশকে ছোট আকারে খণ্ড খণ্ড করা হয়। এর ফলে পুরো বাড়িটিকে স্বল্প স্থানে পরিবহন করা সহজ হয়। পরে এই খণ্ডগুলো জুড়ে দিলে সহজেই যেকোনো জায়গায় স্থাপন করা যায়।

কারখানার কাঠমিস্ত্রি মোজাহিদ বলেন, ‘আমাদের প্রথমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারপর ডিজাইন দেখে সম্পূর্ণ একটি বসতঘর তৈরি করেছি। এরপর কোম্পানি ও বিদেশি লোকজন তা দেখে পছন্দ করছে। এখন আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিটি বাড়ি তৈরিতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। এখানে প্রায় দুইশ’ শ্রমিক কাজ করছে।’

কারখানার শ্রমিক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগে কখনও এই ঘর তৈরি করিনি। এখন দেখছি খুবই সুন্দর হয়েছে ঘরগুলো।’

সাইফুল নামে অপর এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের হাতে তৈরি কাঠের ঘর বিদেশে যাচ্ছে, এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা এই ঘর তৈরি করতে পেরে আনন্দিত।’

বাগেরহাট ন্যাচারাল ফাইবারের কনসালট্যান্ট মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা শাহিন বলেন, ‘সম্পূর্ণ স্থানীয় কাঠ মেহগনি দিয়ে তৈরি বসতঘর যদি মোংলা দিয়ে রপ্তানি করা হতো তাহলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হতো। কিন্তু আমাদের পণ্য পাঠাতে হয় চট্রগ্রাম বন্দর থেকে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি- এই রপ্তানি কাজে আমরা যেন মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারি।’

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের বাগেরহাটের শিল্পনগরী কর্মকর্তা ইউনুস আর রাফি বলেন, ‘এ ধরনের পণ্য বিদেশে গেলে আমাদের দেশের সুনাম বাড়বে। দেশীয় পণ্য বিদেশের বাজারে রপ্তানি করতে ইচ্ছুক উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

এর আগে কারখানাটিতে তৈরি কাঠের বিভিন্ন পণ্য বেশ সাড়া ফেলেছিল ইউরোপের বাজারে। সেসময় প্রতিষ্ঠানটিতে তৈরি হতো কাঠের সাইকেল, সানবেড, হোটেল বেড, কুকুর-বিড়ালের খেলনাসহ পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্য। তবে বর্তমানে শুধু কাঠের বাড়ি তৈরি করছে প্রতিষ্ঠানটি।

মন্তব্য

p
উপরে