× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Batighar Prash Braille publication for the visually impaired at the book fair
google_news print-icon

বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা

বইমেলায়-‍দৃষ্টিহীনদের-বাতিঘর-স্পর্শ-ব্রেইল-প্রকাশনা
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইলের স্টলে এসে হাত দিয়ে স্পর্শ করে বই পড়ছেন দৃষ্টিহীনরা। ছবি: নিউজবাংলা
বই বিক্রি নয়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা যে পড়তে পারে সে তথ্য জানাতেই মেলায় স্টল নিয়েছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী। ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা ১৯টি ব্রেইল বই প্রকাশ করেছে। আর ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা বই প্রকাশ করেছে ১৫০টি। দৃষ্টিহীনরা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইলের স্টলে এসে হাত দিয়ে স্পর্শ করে বই পড়ছেন।

অমর একুশে বইমেলায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে স্পর্শ ফাউন্ডেশনের ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’। বলা যায়, প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়মে আটকে পড়া দৃষ্টিবঞ্চিতদের তারা আলো বিতরণ করছে।

দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইলের স্টলে এসে হাত দিয়ে স্পর্শ করে বই পড়ছেন। আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সেই দৃশ্য সবার নজর কাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ বই দেখছেন, কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পড়া শুনছেন। আবার কেউ কৌতূহলী মন নিয়ে ব্রেইল পদ্ধতি সম্পর্ক জানতে চাইছেন। সব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন স্পৰ্শ ব্রেইল প্রকাশনীর স্টলের সহযোগীরা।

বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা
বইমেলার স্টলে দৃষ্টিহীন মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা

স্পর্শ ব্রেইলের স্বেচ্ছাসেবক রবিউল হাসানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বই বিক্রি নয়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা যে পড়তে পারে সে তথ্য জানাতেই মেলায় স্টল নিয়েছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী। ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা ১৯টি ব্রেইল বই প্রকাশ করেছে। আর ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা বই প্রকাশ করেছে ১৫০টি।

ব্রেইল বই লেখা আর পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে স্টলের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘ব্রেইল বই পড়ার জন্য ছয় ডটের একটি কোড নম্বর থাকে। বাংলার প্রতিটি বর্ণ এই ছয় ডট দিয়ে লেখা। ব্রেইল বই পড়তে হলে তাদের এই ছয় ডটের কোড শিখতে হয়। এরপর তারা পৃষ্ঠায় থাকা ছাপ হাত দিয়ে স্পর্শ করে বুঝতে পারে কোন বর্ণ দিয়ে কী শব্দ লেখা হয়েছে।’

ব্রেইল বই তৈরির খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক রবিউল হাসান বলেন, ‘ব্রেইল বই করার আলাদা পদ্ধতি আছে। এগুলো একটু ব্যয়বহুল। ব্রেইল বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা কিনতে ৭ থেকে ৯ টাকা পড়ে যায়। আর আছে প্রিন্টিং-মুদ্রণ ব্যয়।’

তিনি বলেন, সাধারণ বইয়ের এক পৃষ্ঠার সমান আমাদের ব্রেইল বইয়ের ৩-৪ পৃষ্ঠা। একটি বইয়ের খরচ নির্ভর করে কত পৃষ্ঠার বই হচ্ছে তার ওপর। বইগুলো দেশেই তৈরি করা হয়। আমাদের ব্রেইল পেইজ আছে। যেকোনো বই দিলে আমরা করে দিতে পারি।’

বই তৈরির খরচ নির্বাহ কীভাবে করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা আছেন। তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় আমরা এসব বই প্রকাশ করি।’

কপিরাইট পাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কপিরাইট নিয়ে আমাদের এখনও কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। যেহেতু আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করি, কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান না, তাই কপিরাইট পেতে আমাদের সমস্যা হয় না। লেখকদের বললে তারা দিয়ে দেন।’

বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা

রবিউল বলেন, ‘এ বছর আমরা যেসব ব্রেইল বই প্রকাশ করেছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। এছাড়া প্রসিদ্ধ বইয়ের মধ্যে গত বছর আমরা করেছি ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ বইটি। ‘চাঁদের পাহাড়’, হুমায়ূন আহমেদের কিছু প্রসিদ্ধ বইয়েরও ব্রেইল বই প্রকাশ করেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি এগিয়ে আসুক। তারা ঘোষণা দিয়ে সব প্রকাশনীর জন্য বাধ্যতামূলক করুক যে, বইমেলায় স্টল দিতে হলে প্রতিটি প্রকাশনীর একটি করে ব্রেইল বই প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই প্রতিবছর আমরা পাঁচ থেকে ছয় হাজার বই পেয়ে যাব।

‘আমাদের লক্ষ্য আছে ব্রেইল বইয়ের লাইব্রেরি করার। করপোরেট মালিকরা এগিয়ে এলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হয়। আমাদের এই ব্রেইল স্টলে বেতনভুক্ত কেউ কাজ করে না। সবাই আমরা ফ্রিতে কাজ করি।’

রবিউল আরও বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা আমাদের স্টলে এসে বই পড়তে পারে। আর প্রতিবছর আমাদের প্রকাশনা উৎসব হয়। এজন্য মাস জুড়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলে। যারা রেজিস্ট্রেশন করে তাদের মাঝে আমরা এদিন ফ্রিতে বই বিতরণ করি। এবার প্রায় নব্বইজন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। প্রত্যেককে আমরা চার থেকে পাঁচটি বই ফ্রিতে দিয়ে দিয়েছি।’

কেন এই উদ্যোগ জানতে চাইলে অন্য এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘দৃষ্টিহীনদের মাঝে সাহিত্যের রস পৌঁছানোই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বইমেলায় শুধু আমাদের এই প্রকাশনীতেই দৃষ্টিহীনদের ব্রেইল বই পাওয়া যায়। আমরা চাই, যারা দৃষ্টিহীন তারাও যেন সাহিত্যের রস থেকে বঞ্চিত না হন।

‘তাদেরও তো ইচ্ছে থাকে যে তারা বিভিন্ন লেখকের গল্প-উপন্যাস পড়বেন। তারা জাফর ইকবাল স্যার, হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে পড়তে চান। কিন্তু এসব বই তো আর ব্রেইলে পাওয়া যায় না। বইমেলার প্রতিটি স্টলে যেন ব্রেইল বই থাকে সেটাই আমাদের সামাজিক আন্দোলনের লক্ষ্য।’

স্টলে এসে ব্রেইল বই পড়ছিলেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর দৃষ্টিজয়ী শিক্ষার্থী মহিনি আক্তার তামিম। তিনি বলেন, ‘এই ব্রেইল পদ্ধতি শিখতে আমার এক মাস সময় লেগেছে। ছয় বছর বয়সে আমি প্রথম স্কুলে ভর্তি হই। তখনই আমার ব্রেইল পদ্ধতি শেখা।’

তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসে আমার পছন্দের অনেক বই পড়ে শেষ করেছি। একমাত্র স্পর্শই আমাদের জন্য ব্রেইল বই সরবরাহ করে। তাই আমরা স্পর্শের কাছে কৃতজ্ঞ।’

বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা
ছাত্রলীগের উদ্যোগে বুধবার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বইমেলা ঘুরিয়ে দেখানো হয়। ছবি: নিউজবাংলা

দৃষ্টিহীন মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মেলা ঘুরে দেখাল ছাত্রলীগ

এদিকে মদীনাতুল উলূম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাদরাসার ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বই মেলা ঘুরে দেখিয়েছেন ছাত্রলীগের মাদরাসা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে ২১ জন দৃষ্টিহীন।

কেন এই উদ্যোগ জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে কয়েকবার আমি এই মাদরাসায় গিয়েছি। সেখানে দেখেছি তারা সবসময় কোরআন শরীফ পড়েন। ফ্রি সময়ে অন্য কোনো বই পড়ার সুযোগ তারা পান না। তখন আমি চিন্তা করেছি যে বই না পড়ার কারণে তাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবেন না। তাই আমি ঠিক করেছি তাদের বইমেলা ঘুরে দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ওপর থাকা ব্রেইল বইগুলো উপহার হিসেবে দেবো। সেজন্য আজকে আমি তাদেরকে মেলা ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। আর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, একাত্তরের ডায়েরি, আমার বন্ধু রাসেদসহ অনেক গল্প ও কবিতার বই যেগুলোর ব্রেইল ভার্সন রয়েছে সেসব উপহার দিয়েছি।’

বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা

২৮তম দিনে ৮০ নতুন বই

বুধবার অমর একুশে বইমেলার ২৮তম দিনে নতুন বই এসেছে ৮০টি। এদিন মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

অনুষ্ঠান

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ মুনীর চৌধুরী এবং স্মরণ হুমায়ুন আজাদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন ও অধ্যাপক হাকিম আরিফ।

আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম, অধ্যাপক ইউসুফ হাসান অর্ক, ওসমান গনি ও মৌলি আজাদ। সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কাজী জাহিদুল হক সংকলিত এবং ঐতিহ্য প্রকাশিত মুনীর চৌধুরীর দুষ্প্রাপ্য রচনা বই-উন্মোচনে অংশ নেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ফেরদৌসী মজুমদার, প্রাবন্ধিকদ্বয়, আলোচকবৃন্দ, বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং গ্রন্থটির সম্পাদক কাজী জাহিদুল হক।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মুনীর চৌধুরী শোষিত ও মুক্তিকামী মানুষদের জন্য সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হয়েছিলেন। আমাদের সামনে তিনি বিপ্লবী জীবনের আদর্শ স্থাপন করে গেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি মুনীর চৌধুরী ও হুমায়ুন আজাদের ভালোবাসা ছিল সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত। তাদের জীবন ও কর্ম বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।’

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন গবেষক ড. মোহাম্মদ হাননান, কবি তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যিক সমীর আহমেদ ও শিশুসাহিত্যিক আবেদীন জনি।

বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চে বিকেল ৫টায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘সংস্কৃতি ও সদাচার’ বই নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. মো. হাসান কবীর এবং সম্পাদকীয় পর্ষদের সদস্যবৃন্দ।

বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি

বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার ২৯তম দিন। এদিন বিকেল ৩টায় মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আরও পড়ুন:
ছাত্রলীগ পুলিশের বিরুদ্ধে ফ্রিতে দোকান নিয়ে বিক্রির অভিযোগ
প্রাণের বইমেলায় পূর্ণতা এনে দিল শেষ শুক্রবার
‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’ একটি নতুন ভাবনা
বইমেলায় বৃষ্টির হানা
একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বইমেলায় জনস্রোত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
There will be trade fairs across the country in future Chief Advisor

আগামীতে দেশজুড়ে বাণিজ্য মেলা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

আগামীতে দেশজুড়ে বাণিজ্য মেলা হবে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি: পিআইডি
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জেলা-উপজেলা থেকে সেরা উদ্ভাবন আনতে পারলেই হবে প্রকৃত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। বাণিজ্য মেলা মানুষকে নিজের উদ্যোগ ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরার সুযোগ দেয়। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

আগামীতে দেশজুড়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, ‘আগামীতে বাণিজ্য মেলা হবে দেশজুড়ে। বিদেশিদের নিয়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয় মেলা হবে। উপজেলা থেকে সেরা উদ্ভাবন আনতে পারলেই হবে প্রকৃত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই উদ্যোক্তা। মানুষের কাজই হলো নিজের মনমতো কাজ করা। বাণিজ্য মেলা মানুষকে নিজের উদ্যোগ ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরার সুযোগ দেয়। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রস্তুতি সারা বছর ধরে চলবে। জেলায়-উপজেলায় তরুণ-তরুণী, বয়স্ক-বয়স্কা উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। সেখান থেকে তিন-চারজন করে সেরা উদ্যোক্তা বাছাই করা হবে। তারা চূড়ান্তভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করবেন। এদের সব ব্যয় সরকার বহন করবে।’

তিনি বলেন, ‘তরুণরা আমাদের পথপ্রদর্শক। তারা জাতিকে পথ দেখাবে। দুনিয়াকে পথ প্রদর্শন করবে। একটা সময় আসবে যখন বাংলাদেশে তরুণরা কী করছে তা দেখতে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে তরুণরা আসবে। তারা বাংলাদেশের তরুণদের কাছ থেকে বুদ্ধি নিতে আসবে, শিখতে আসবে। জয়েন্ট ভেঞ্চার করতে আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় তরুণদের জন্য একটা পৃথক অংশ থাকবে। এখানে ২৫ বছরের কম বয়সী উদ্যোক্তা যারা তারা আসবে। তারা কে কী করে তা সেখানে দেখাতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘অসংখ্য কাজ করে এই তরুণরা। অত্যন্ত চমৎকার বুদ্ধি দিয়ে ব্যবসা নিজে সৃষ্টি করেছে। এদের দেখানো এজন্য প্রয়োজন যে এদের দেখার পর প্রত্যেকের মাথায় সুড়সুড়ি আসবে।

‘মেলার উদ্দেশ্য হলো সুড়সুড়ি দেয়া। বিশেষ করে তরুণদের মাথার মধ্যে সুড়সুড়ি দেয়া। একটা অংশ হবে তরুণদের জন্য। তাদের মধ্যে মেয়েদের একটা অংশ হবে। সেখানে তারা কত ধরনের প্রোডাক্ট করছে তা একে অন্যকে দেখাবে। ছেলেরা মেয়েদেরটা দেখবে, মেয়েরাও ছেলেদেরটা দেখবে। দেখে দেখে আরও বুদ্ধি বের হবে। বুদ্ধিতে বুদ্ধিতে ঘষা দিলে আরও বুদ্ধি বের হয়।’

প্রতি বছরের মতো এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করছে। এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল ও প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো ই-টিকিটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।

আরও পড়ুন:
বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনই আসল সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে
‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ হচ্ছে, নেতৃত্বে ড. ইউনূস
মূল্যস্ফীতি শিগগির কমে আসবে, প্রধান উপদেষ্টার আশাবাদ

মন্তব্য

জীবনযাপন
The chief adviser inaugurated the trade fair

বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা বুধবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন। ছবি: পিআইডি
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো জানায়, রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এই মেলায় ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে মেলায় থাকছে জুলাই চত্বর, ছত্রিশ চত্বর ও তারুণ্যের প্যাভিলিয়ন। ই-টিকিটের ব্যবস্থা থাকায় প্রবেশ পথে রয়েছে ভিন্ন ব্যবস্থা।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরের উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিসিএফসি) এই মেলা উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিশ্বের ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকছে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে মেলায় থাকছে জুলাই চত্বর, ছত্রিশ চত্বর ও তারুণ্যের প্যাভিলিয়ন। ই-টিকিটের ব্যবস্থা থাকায় প্রবেশ পথে রয়েছে ভিন্ন ব্যবস্থা।

এবার প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।

মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় থাকছে শিশু পার্কও।

এছাড়া মেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে তৈরি করা হয়েছে জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বর। সঙ্গে দেশের তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধকরণে তৈরি করা হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।

প্রসঙ্গত, মাসব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Srimangale Garo community celebrate the Wangala festival

শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসবে মাতলো গারো জনগোষ্ঠী

শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসবে মাতলো গারো জনগোষ্ঠী
শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া গারো লাইনে রোববার গারো সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী এই উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গারো জনগোষ্ঠী তাদের নতুন ফসল সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করেন।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া গারো লাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গারো জনগোষ্ঠীর ওয়ানগালা উৎসব। রোববার সকালে ওয়ানগালা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে গারো সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী এই উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গারো জনগোষ্ঠী তাদের নতুন ফসল সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করেন।

ওয়ানগালা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় একসময় জুম চাষের মাধ্যমে বছরে মাত্র একটি ফসল ফলতো। তখন ওই জুম বা ধান ঘরে তোলার সময় গারোদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’-কে উৎসর্গ করে এ উৎসবের আয়োজন করা হতো।

মূলত গারোরা ছিল প্রকৃতিপূজারী। সময় পরিক্রমায় গারোরা ধীরে ধীরে খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রথাটি এখন ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে একত্রে পালন করা হয়। এক সময় তারা তাদের শস্য দেবতা মিসি সালজংকে উৎসর্গ করে ‘ওয়ানগালা’ পালন করলেও এখন তারা নতুন ফসল কেটে যিশু খ্রীষ্টকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করে থাকেন।

ওয়ানগালা উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রীতম দাস প্রমুখ।

আরও পড়ুন:
নেচে-গেয়ে উদযাপিত হলো গারোদের ‘ওয়ানগালা’ উৎসব
ওয়ানগালায় মুখরিত গারো পাহাড়

মন্তব্য

জীবনযাপন
Seng Kutsnem festival of Khasias

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব। ছবি: নিউজবাংলা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় আদিবাসী খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের ১২৫তম বর্ষবিদায় ও ১২৬তম নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় আদিবাসী খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের ১২৫তম বর্ষবিদায় ও ১২৬তম নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খাসিদের আয় ও জীবিকার প্রধান উৎস পান চাষ। চলতি মৌসুমে পানের ব্যবসা মন্দা ও আর্থিক সংকটের কারণে ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ আয়োজন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিল খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। তবে পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ আড়ম্বরের সঙ্গেই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের আয়োজনে শনিবার আদিবাসী খাসিদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘সেং কুটস্নেম' অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবকে ঘিরে পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উপলক্ষে নানা রঙের পোশাক পরে খাসিরা নাচগান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। মাঠের এক পাশে খাসিদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মেলা বসে। মাঠের একপাশে সুপারি গাছের পাতা দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হয়। তবে এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় আয়োজন কিছুটা কম ছিল। কারণ একেবারে শেষ সময়ে এসে প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ২৩ নভেম্বর মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও সাজসজ্জায় সেজে নেচে–গেয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন।

‘সেং কুটস্নেম’ উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন।

অনুষ্ঠানস্থলে মাঠ জুড়ে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরি জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন।

এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।

হেলেনা পতমী বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর আমাদের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি করে আসছি। অনুষ্ঠানটি ঘিরে আমরা খাসি সম্প্রদায়ের সবাই একসঙ্গে জমা হয়ে উৎসবে মেতে উঠি।’

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমরা অনুষ্ঠানটি করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সেং কুটস্নেম আয়োজন করি।’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুছিয়াং বলেন, ‘সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। দেশ–বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন। খাসি সেং কুটস্নেম বা বর্ষবিদায় খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন উৎসব।’

আরও পড়ুন:
ঐতিহ্যবাহী ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসবে মাতলেন খাসিয়ারা
মৌলভীবাজারে মণিপুরী গারো ও খাসিয়াদের উৎসব, চলছে প্রস্তুতি
ইউটিউবারের উদ্যোগে অবশেষে খাসিয়াপুঞ্জিতে বসল প্রাথমিক বিদ্যালয়
ইনফো হান্টারের ভিডিও: খাসিয়াপুঞ্জিতে পানির দুর্ভোগ লাঘবের ব্যবস্থা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Mass Uprising Graffiti Exhibition

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শনিবার শুরু হয়েছে গ্রাফিতি প্রদর্শনী। ছবি: সংগৃহীত
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয়।’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক অনুপ্রেরণামূলক দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র বা গ্রাফিতি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বিশ্বব্যাংক। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী।

সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য ছাত্র, তরুণ ও যুবসমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো এই আয়োজন শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শুরু হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু
পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শনিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

‘পেইন্ট দ্য স্কাই, মেক ইট ইওরস: ফিউচার বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ অব দ্য ইয়ুথ’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে তিনি একটি প্রকাশনারও মোড়ক উন্মোচন করেন।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) আবদৌলায়ে সেক, কান্ট্রি ডিরেক্টর ও প্রতিনিধি (এশিয়া ও প্যাসিফিক) ড. ভ্যালেন্টাইন আচানচো এবং বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া দেশি-বিদেশি শিল্পানুরাগীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে প্রদর্শনী গ্যালারি।

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক তার বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণরা যে মূল ভূমিকা পালন করে তার স্বীকৃতি বিশ্বব্যাংক বরাবরই দিয়ে এসেছে।

‘একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়।’

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

প্রদর্শনীতে উপস্থিত জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট ও কমিক বুক আর্টিস্ট সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময় বাসস-কে বলেন, ‘একটি বিপ্লবের পর এই দেয়াল লিখন বা গ্রাফিতিগুলো আমাদের বাংলা সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠে। ম্যুরাল, গ্রাফিতি কিংবা কার্টুন যেহেতু সমাজের নেতিবাচক দিকগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে থাকে তাই এগুলো নিয়ে এতোদিন সেভাবে কোনো উৎসব হয়নি। তবে এখন হচ্ছে। আর তা তরুণদের ব্যাপারে আমাদের ধারণা একেবারে পাল্টে দিয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

প্রদর্শনীতে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ ১২টি জেলার তরুণ-যুবাদের আঁকা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত দেয়াল লিখন এবং দেয়ালচিত্র স্থান পেয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে।

আরও পড়ুন:
ঢাবিতে হেঁটে গ্রাফিতি দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা, করলেন প্রশংসা
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী চিত্রপ্রদর্শনী
ফ্লাইওভারের পিলারে ডিএনসিসির দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি

মন্তব্য

জীবনযাপন
Biswa Ijtema is the final date announcement in two phases

বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বেই, চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা

বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বেই, চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা ফাইল ছবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজাম (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারী) আয়োজন করবেন। আর ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন।

রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পবিত্র হজের পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জমায়েত আয়োজনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেয়া হয়েছে কোন পর্ব কাদের অধীনে আয়োজন করা হবে।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি শূরায়ী নেজামের অধীনে এবং দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থীদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজাম (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারী) আয়োজন করবেন। আর আগামী ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন।

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ হস্তান্তর প্রসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ বিভাগীয় কমিশনার ঢাকার নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দেবেন। আর দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই কমিটি থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন এবং ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা যায় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এর আগে জানিয়েছিলেন যে বিশ্ব ইজতেমা এবার এক পর্বে আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পর্বেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই জামাত।

আরও পড়ুন:
তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার
ইজতেমায় আসার পথে মুসল্লির মৃত্যু
দুপক্ষকে একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান
ইজতেমায় মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: আইজিপি

মন্তব্য

জীবনযাপন
The government wants to organize the World Ijtema together on Turag shore

তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার

তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের একাংশ। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ইজতেমা দুই ভাগ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মতেরও কিছুটা ভিন্নতা আছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।’

রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিগত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে এবার সরকার বিশ্ব ইজতেমা একীভূতভাবে এক পর্বে আয়োজন করতে চাইছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ইজতেমা দুই ভাগ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মতেরও কিছুটা ভিন্নতা আছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (উভয় পক্ষ) কাছে অনুরোধ করব- আপনারা নিজেদের মধ্যে যে সমস্যা আছে সেটা যদি নিজেরাই সমাধান করতে পারেন তাহলে ভালো হয়। আর যদি নিজেরা সমাধান করতে না পারেন আমরা আপনাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে দু’পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে বিশ্ব ইজতেমা একটা করা যায় সেই চেষ্টা করব।’

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের অন্তর্বিরোধের কারণে গত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। সবশেষ গত বছরও প্রথম পর্বে শুরায়ে নিজাম অনুসারী মুসল্লিরা এবং দ্বিতীয় পর্বে নিজামুদ্দিন অনুসারী মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন।

টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এই ইজতেমায় অংশ নেন। এছাড়া সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, কাতার, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিতে আসেন।

আরও পড়ুন:
দুপক্ষকে একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান

মন্তব্য

p
উপরে