বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে নবগঠিত ক্ষয়ক্ষতি তহবিল আশার আলো দেখাচ্ছে। সম্মেলনের প্রথম দিনেই কার্যকর করা এই তহবিলে অর্থায়নে আশানুরূপ অগ্রগতি দেখা গেছে।
তহবিলে গত এক সপ্তাহে ৭০০ মিলিয়ন বা ৭০ কোটি ডলার জমা পড়েছে। চাহিদার তুলনায় এটি অতি নগণ্য। তারপরও গঠনের পর থেকে উন্নত দেশগুলো একে একে এগিয়ে আসছে এই তহবিলে অর্থায়নের ক্ষেত্রে, যা বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য আশার খবর।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলের দেশগুলো তাদের আর্থিক ও অ-আর্থিক ক্ষতির জন্য এই তহবিল থেকে অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।
অবশ্য এই তহবিল থেকে অর্থ পেতে বাংলাদেশকে আরও কমপক্ষে আট মাস অপেক্ষা করতে হবে। কারণ বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এই তহবিল ব্যবহারের মতো প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। এজন্য জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকে এই তহবিলের অর্থ ব্যবহারের জন্য দ্রুত প্রস্তুতি গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি নিরূপণের বিষয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করছে। এই সমীক্ষা শেষ হলে জানা যাবে, বাংলাদেশে কোনো খাতে কী পরিমাণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। সেটি নিরূপনের পর বাংলাদেশ নবগঠিত ক্ষয়ক্ষতি তহবিল থেকে অর্থ পাওয়ার আবেদন করতে পারবে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও এলডিসি গ্রুপের লস অ্যান্ড ড্যামেজ সমন্বয়কারী এম হাফিজুল ইসলাম খান ইউএনবিকে বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি তহবিলের কার্যক্রম শুরু হতে আরও ৮ মাস সময় দরকার হবে। এই তহবিল পরিচালনায় গঠিত পরিচালনা পরিষদ আগামী বছরের জানুয়ারিতে প্রথম সভায় বসবে। আর এই পরিষদই ক্ষয়ক্ষতি তহবিলের অর্থ দেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
‘বাংলাদেশ প্রস্তুতির অভাবে বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে পারছে না। তাই ক্ষয়ক্ষতি তহবিলের অর্থ পাওয়ার জন্য দক্ষ জনবল ও কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করতে হবে।’
দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম শেষে গত বছর মিসরের রাজধানী শার্ম আল শেখে ২৭তম জলবায়ু সম্মেলনে ঐতিহসিক ক্ষয়ক্ষতি তহবিল গঠন করা হয়। ফলে অর্থবিহীন এই তহবিলকে কার্যকর করা ছিল একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু এবারের ২৮তম জলবায়ু সম্মেলনের প্রথম দিনেই এ কঠিন কাজটি সহজ করে দেয় আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত কপ২৮ সভাপতির তহবিল দেয়ার ঘোষণা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী বলেন, কপ২৮ সম্মেলনের সভাপতি আয়োজক দেশের পরিবেশমন্ত্রী সুলতান আল জাবের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়ে এই তহবিলকে কার্যকর করার প্রস্তাব করেন। প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা সর্বসম্মতিক্রমে ঐতিহাসিক এই তহবিলকে কার্যকর করার প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এরপর অন্য দেশগুলোও এই তহবিলে অর্থায়নে এগিয়ে আসে।
এ পর্যন্ত এই তহবিলে ৭০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ জমা পড়েছে। আরব আমিরাতের ১০ কোটি ডলার ছাড়াও জার্মানি ১০ কোটি ডলার, ইতালি ১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ফ্রান্স ১০ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যুক্তরাজ্য ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার, অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ ১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্র ১ কোটি ৭৫ লাখ ডলার দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া এই তহবিলে কোনো অর্থ না দিলেও তারা আবার জলবায়ু অর্থায়নে ফিরে এসেছে। দেশটির সাবেক সরকার জলবায়ু অর্থায়নে অস্ট্রেলিয়াকে প্রত্যাহার করে নিলেও বর্তমান সরকার শুক্রবার প্যাসিফিক দেশগুলোর জন্য ১৫ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। তবে এই অর্থ এখনও প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত দশেগুলোর প্রয়োজন ১০০ বিলিয়ন থেকে ৫৮০ বিলিয়ন ডলার। সে তুলনায় অর্থপ্রাপ্তি চাহিদার মাত্র দশমিক ২ শতাংশ।
মির্জা শওকত বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে যেসব দেশ অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই ফান্ড পরিচালনায় বিশ্বব্যাংককে অ্যাকসেস দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা খুব একটা সন্তুষ্ট না হলেও সবাই রাজি হয়েছে। বিশ্বব্যাংক আগামী চার বছর ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করবে।’
‘২৫ সদস্যের একটি গভর্নিং বডি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কাজ হবে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে তহবিল নিয়ে আলোচনা করবে।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাডাপটেশন ফান্ড দ্বিগুন করার বিষয়ে এই কপে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ গুরুত্বারোপ করেছে। তবে ন্যাশানাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানের (ন্যাপ) ড্রাফট টেক্সট অ্যাডাপট করতে পারিনি। একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের জুন মাসে জার্মানির বন সেশনে আমরা এই টেক্সটটা দিয়ে কাজ করব।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক আমিনুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘তহবিলে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে তা অতি নগণ্য। আবার এই অর্থ উন্নত দেশগুলো কবে দেবে তার সময়সীমা সংক্রান্ত কোনো রূপরেখা নির্ধারণ করেনি।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি তহবিলে অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতির কারণে ধনী দেশগুলো বিপদাপন্ন দেশগুলোর জন্য বিশেষায়িত অভিযোজন তহবিলের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ দিচ্ছে না। চলতি কপে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা থাকলেও মাত্র ২১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এটা গত বছরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম। অভিযোজন তহবিলে অর্থ বরাদ্দ না বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর বিপদ আরও বাড়বে।’
আরও পড়ুন:সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা হবে।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয় সংক্রান্ত সেমিনার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে। পাটের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। টেকসই ব্যবস্থার জন্য জেডিপিসি, এসএমইএফ, জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’
‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই—এই ধারণা ঠিক নয়। সরকারের সব উদ্যোগ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অ
নুষ্ঠানে বক্তব্য দেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি; ঢাকা নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ; ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকি উজ জামান; ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ; বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।
সময় পরিবেশ উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।
কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।
তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।
এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।
উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।
‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’
সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এসব উদ্যানকে প্রকৃতির সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কেউ এ সংক্রান্ত কার্যকর প্রস্তাব দিলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বার্ষিক বোটানিক্যাল কনফারেন্সের উদ্বোধন অধিবেশনে ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।’
উপদেষ্টা জানান, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না। এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি।
তিনি আরও জানান, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
আরও পড়ুন:পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকার ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্ষার আগে আপাতত ছয়টা খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে সক্ষম হব এবং খুব শিগগিরই আরও চারটা খাল দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ শুরু করব এবং এই বর্ষার আগেই বাকি আরও ৯টির কাজ শুরু হবে।
‘অর্থাৎ, এ বছরের মধ্যেই ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
রাজধানীর বাউনিয়ায় (পুলিশ স্টাফ কলেজের পেছনে) রবিবার ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসির আওতাধীন ছয়টি খাল দখল ও দূষণমুক্ত করে খালকেন্দ্রিক ব্লু নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হয়তো এই ১৯টি খালকেন্দ্রিক মাস্টার প্ল্যান করে ফেলা হবে। কোথায় কোথায় আমাদেরকে একদম সুনির্দিষ্ট আরও কিছু কাজ করতে হবে, সেটা ঠিক করে আগামী বাজেটকে সামনে রেখে কাজগুলো ঠিক করে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থের সংস্থান করতে পারব বলে আশা করি।’
খালের পাড়ে চাষাবাদ করা যায় কি না তা নিয়ে একটা পরিকল্পনা আছে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খালের পাড়গুলোতে সবুজ ফিরিয়ে আনতে পারি কি না আর খালের মধ্যে মাছ আনা যায় কি না, এটা আমরা দেখতে চাচ্ছি। সেটা কেমন করে ফিরিয়ে আনব, কেমন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনা যায়, সেই চেষ্টাটা আমরা করব। এটা আমাদের মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক উদ্যোগ হলেও নগরবাসীকে এ কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলোর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। খালগুলো হবে প্রাণকেন্দ্র।
আজ দখল ও দূষণমুক্ত কার্যক্রমের জন্য উদ্বোধন হওয়া ছয়টি খাল হচ্ছে বাউনিয়া খাল, রূপনগর খাল, বেগুনবাড়ী খাল, মান্ডা খাল, কালুনগর খাল ও কড়াইল লেক। এ ছয় খালের মোট দৈর্ঘ্য ২৩.৬৬ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:পরিবেশ রক্ষার প্রত্যয় নিয়ে দেশে যাত্রা শুরু করল অ্যাপ্লায়েড ক্লাইমেট থিয়েটার-বাংলাদেশ তথা অ্যাক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সংস্থার।
রাজধানীর উত্তরায় রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় এর যাত্রা শুরু হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে থিয়েটারকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে সংস্থাটি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পারফর্মিং আর্টস একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এটি জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর আয়োজন করা হয় জলবায়ু সচেতনতাবিষয়ক সেমিনার। এতে বক্তব্য দেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপিং সাস্টেইনেবিলিটি তথা ল্যান্ডসের চেয়ার এসথার ফেরি-কেনিংটন, এরগন থিয়েটার কোম্পানির কো-আর্টিস্টিক ডিরেক্টর রবিন লায়ন্স, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান ড. সাইদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান।
সেমিনার শেষে মঞ্চস্থ হয় ‘ড্রট ইন দ্য ফেইট অফ ফারমার’ নাটক।
নজরুল সৈয়দের রচনা ও আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় নাটকটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের জীবনে আসা প্রতিকূলতা এবং তা মোকাবিলার সংগ্রাম তুলে ধরে।
নাটকের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন বন্ধন সাহা। পরিবেশনায় ছিলেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘থিয়েটারের শক্তি মানুষের আবেগকে আলোড়িত করার, উপলব্ধিকে চ্যালেঞ্জ করার এবং কর্মে উদ্বুদ্ধ করার মধ্যেই নিহিত।
‘অ্যাক্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাই, যা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা তুলে ধরবে না; বরং মানুষকে একটি টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তার জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’
বৈশ্বিক ও স্থানীয় অংশীদারত্ব
অ্যাক্ট বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ও এরগন থিয়েটারের সহযোগিতায় কাজ করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ, হেলথ সিকিউরিটি ফাউন্ডেশন ও কারিগরি সহযোগী বাইটকুইলের সঙ্গে কাজ করবে।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে জনগণকে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের জনবহুল রাজধানী ঢাকা রোববার সকাল ৯টার দিকে একিউআই স্কোর ২৭৫ নিয়ে বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, আজ রোববারের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর, মিসরের কায়রো ও ভারতের কলকাতা যথাক্রমে ২৮৬, ২৫৬ ও ২০০ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:জনবহুল রাজধানী ঢাকা শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে একিউআই স্কোর ২২২ নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, এদিনের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের কাবুল, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারায়েভো ও মিসরের কায়রো যথাক্রমে ২২৮, ২১৫ ও ২১৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়।
একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য