টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের সাইটশৈলা গ্রামে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ইসলামী ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা মুফতি ফিরোজ আহমেদ সিদ্দিকী। বাংলাদেশ ও ভারতের আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই মোফাচ্ছেরে কোরআন মাহফিলে মূল্যবান বয়ান পেশ করেন।
ওয়াজ মাহফিলে কোরআন ও হাদিসের আলোকে বয়ান করেন কালিহাতী উপজেলার সয়া ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মো. আবু জাফর খান।
উদীয়মাণ তরুণ বক্তা হিসেবে জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য দেন ঢাকা থেকে আগত মোফাচ্ছেরে কোরআন হাফেজ মাওলানা মুফতি যোবায়ের আহম্মেদ।
এছাড়াও স্থানীয় অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম ওয়াজ ফরমান।
সাইটশৈলা খানপাড়া নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার উদ্যোগে আয়োজিত এই বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হাজির থেকে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদদের জ্ঞানগর্ভ বয়ান শোনেন।
মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন ফার্স্টসিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখার এভিপি অ্যান্ড ম্যানেজার এইচ. এম সুলতান মাহমুদ।
সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মাহবুব-উল-আলম খান।
মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল বিকেল ৩টায় মাহফিল শুরু হয়ে শেষ হয় রাত পৌনে ১টায়।
মাদরাসার বার্ষিক এই আয়োজনে হিফ্য করা তিন শিক্ষার্থীকে বরকতি পাগড়ি পরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া মাদরাসার নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজানুর রহমান।
প্রেষণে বুধবার রাতে তাকে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ইফার মহাপরিচালক বশিরুল আলমকে গত ২২ সেপ্টেম্বর সরিয়ে দেয়া হয়। তাকে পরবর্তী পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
এরপর ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম অতিরিক্ত হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
রেজানুর রহমান বিসিএস ১৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি বিভিন্ন জেলায় সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে উপসচিব ও যুগ্মসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বিদ্যুৎ বিভাগে যোগদানের আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের একাংশের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন দাওয়াত ও তাবলিগ উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ সাথীরা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার ‘দাওয়াত ও তাবলিগের উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ সাথীবৃন্দ’ শিরোনামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সন্মেলনে কাকরাইল মসজিদের খতিব আজিম উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, “দাওয়াতে তাবলিগ বিশ্বব্যাপী একটি অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ সংগঠন। এ দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে লক্ষ-কোটি মানুষ ইসলামের পথে এসেছেন এবং হেদায়েত লাভ করেছেন। বিশ্বব্যাপী এই দাওয়াতি সংগঠনের বাৎসরিক সম্মেলন বা বিশ্ব ইজতেমা প্রায় ৫৭ বছর ধরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
“আসন্ন বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে একটি চিহ্নিত মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তথাকথিত ‘জুবায়েরপন্থি’ তাবলিগের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ দেশের কতিপয় উলামায়ে কেরামকে বিভ্রান্ত করে ও মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের ব্যবহার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে।”
তিনি বলেন, ‘৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাদের আয়োজিত প্রোগ্রাম থেকে অসংখ্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। অথচ আমরা ৩ নভেম্বর গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের আলেমদের ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছি, তবে জুবায়েরপন্থিদের উসকানিতে কতিপয় অদূরদর্শী আলেম আপসমূলক সমাধানে না এসে তাবলিগ ও বিশ্ব ইজতেমা ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছেন এবং পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার হীনচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আজিম আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমরা তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির সাদ কান্ধলভি ও নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারী তাবলিগ জামাত সম্পর্কে যে অসত্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে, তা নিয়ে সাতটি শর্তের ভিত্তিতে ওপেন চ্যালেঞ্জের প্রস্তাব দিচ্ছি।’
সাত শর্ত
১. দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা আরশাদ মাদানি ও পাকিস্তানের শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানীসহ ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ আলেমরা বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
২. সরকারের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
৩. গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন এবং এটি রেকর্ড ও সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
৪. সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৫. উভয় পক্ষের নির্দিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
৬. বিতর্কটি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
৭. বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
উত্থাপিত দাবি
১. বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
২. বিগত ৭ বছরের বৈষম্য দূর করে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব নিজামুদ্দিন মারকাজের অনুসারী ‘মূলধারার’ তাবলিগি সাথীদের বুঝিয়ে দেয়া।
৩. কাকরাইল মসজিদ ও বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের বৈষম্য দূর করে তাবলিগের মূলধারার সাথীদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া।
৪. ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে মূলধারার দুজন সাথীকে হত্যা ও পরবর্তী সময়ে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ঢাকা নিউ মার্কেটে তিনজন সাথীকে হত্যা ও চার শতাধিক সাথীকে মারত্মক আহত করার দায়ে জুবায়েরপন্থিদের নামে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি।
৫. সারা বাংলাদেশের সব মসজিদে ধর্মীয় উসকানি ও ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত সৃষ্টি হয়, এমন বক্তব্য নিষিদ্ধ করা।
আরও পড়ুন:আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এজেন্সি মালিকরা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকদের ব্যানারে এজেন্সি মালিকরা এ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তথা হাবের বাতিল হওয়া কমিটি মূলত এ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে।
প্যাকেজ ঘোষণা করেন হাবের সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদার। এতে খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা। বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয় ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
হাবের সাবেক মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা করা বেসরকারি হজ প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ নেই। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে লাইসেন্স নিয়ে আমরা কাজ করি। সরকারের প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে আরেকটি প্যাকেজ নীতিগত ও আইনগতভাবে দেয়ার সুযোগ আছে। সেটিই আমরা উপস্থাপন করেছি।
‘আমরা খাবার খরচ যুক্ত করে আমাদের প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। খাবার খরচ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ হয় না।’
আগামী বছর হজের জন্য সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়।
ফারুক আহমেদ সরদার বলেন, ‘হাবের পক্ষ থেকে বারবার বিমান ভাড়ার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য আবেদন করা হয়। আমরা প্রত্যাশা করছি ধর্ম উপদেষ্টা হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বিমান ভাড়া কমানো হলে হজ প্যাকেজের মূল্যও কমানো হবে।
‘তা ছাড়া হজ সংক্রান্ত সব সভায় হাব বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জোরালোভাবে উত্থাপন করে। হাবের জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও যৌক্তিক কারণে ২০২৫ সালের হজে বিমান ভাড়া এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা নির্ধারণ হলেও আমরা এটি যৌক্তিক মনে করি না।’
এ বছর শতভাগ হজযাত্রীর (সিলেট ও চট্টগ্রাম বাদে) সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে হাবের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় হজযাত্রীদের কল্যাণে প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই সম্পন্ন করার জন্য ডেডিকেটেড (শুধু হজযাত্রী পরিবহন) হজ ফ্লাইট হওয়া বাধ্যতামূলক। হজযাত্রী পরিবহনে ডেডিকেটেড ফেরি ফ্লাইটের হিসাব করেই সর্বোচ্চ মূল্যে বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু বিগত বছরগুলোতে ডেডিকেটেড ফেরি ফ্লাইটের ভাড়া নিলেও এয়ারলাইন্সগুলো শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করেছে।’
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৫ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি হজযাত্রীরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে।
আরও পড়ুন:হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ তথা হাবের নির্বাচিত কমিটি বাতিল হওয়ায় আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করেছেন এজেন্সি মালিকরা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে হাবের বাতিল হওয়া কমিটির নেতারা এ আশঙ্কার কথা জানান।
অনুষ্ঠানে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকদের ব্যানারে তারা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আগামী হজের প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাবের বাতিল হওয়া কমিটির সাবেক মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীরা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যমান। গুটিকয়েক হজ এজেন্সির মালিক ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারী ছিলেন। হাবের মতো একটি স্পর্শকাতর জায়গা, যেখানে ৯৫ শতাংশ হজযাত্রী বেসরকারি এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে হজ পালন করে থাকেন, হাব এই বিশালসংখ্যক হজযাত্রী সমন্বয় করে থাকে, সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে হাবে প্রশাসক বসানোর মতো একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে সদস্যরা মনে করেন।’
ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমরা মনে করি, হাবের কমিটির অবর্তমানে, হাব ও হজ এজেন্সির মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দেবে। হাবের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবে যে সেবাগুলো হজযাত্রীদের দেয়া হয়, সেখানে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।’
গত ১৫ অক্টোবর হাবের কমিটি বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে যুগ্মসচিব মোহাম্মদ দাউদুল ইসলামকে হাবের প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
হাবের সাবেক মহাসচিব বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে এ বছর হজের খরচ কমেনি। গত বছরের তুলনায় এবার হজের খরচ বেড়েছে। হজে খরচ মূলত কমানো সম্ভব দুটি জায়গায়–একটি বিমানভাড়া, আরেকটি সৌদি অংশের খরচ।
‘দুটি জায়গার মধ্যে এবার বিমান ভাড়া ২৭ হাজার টাকা কমেছে, কিন্তু টাকার বিপরীতে রিয়ালের বিনিময় মূল্যের তারতম্যের কারণে এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর খরচ বেড়েছে ৪০ হাজার টাকা। এভাবে ধরলে গত বছরের তুলনায় এবার হজের খরচ ১৩ হাজার টাকা বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব হজযাত্রী হজে যান, তাদের বয়স বেশি থাকে। এবার প্যাকেজ অনুযায়ী হারাম শরিফ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বাড়ি হওয়ায় তাদের ভোগান্তি হবে। মিসফালাহ ব্রিজের কাছে তাদের নামিয়ে দেয়া হবে। তাদের এখান থেকে হারাম শরিফ গিয়ে নামাজ পড়ে বাসে উঠে আবার গন্তব্যে যেতে হবে। এটা অনেক কঠিন বিষয়। আমি মনে করি এটি সাধারণ হজযাত্রীদের জন্য কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
ওই সময় হাবের সাবেক কমিটির সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদারসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
হজযাত্রীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বহির্মুখী বিমান ভাড়ার ওপর আবগারি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এ ছাড়া যাত্রী নিরাপত্তা ফি, এম্বারকেশন ফি ও এয়ারপোর্ট নিরাপত্তা ফি’র ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এনবিআর সোমবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
সৌদি আরবগামী বিমান টিকিটের ওপর চার হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দেয়ার বিধান ছিল। হজযাত্রীদের জন্য এটি মওকুফ করা হলো।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যা আগের বছরের খরচের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
সরকার গত ৩০ অক্টোবর আগামী বছরের জন্য দুটি পৃথক সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। স্ট্যান্ডার্ড হজ প্যাকেজ-১-এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড হজ প্যাকেজ-২ বাবদ পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এর ফলে প্রত্যেক হজযাত্রী যথাক্রমে এক লাখ নয় হাজার ১৪৮ টাকা এবং ১১ হাজার ৭১০ টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে হজ পালনের সুযোগ পাবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
আরও পড়ুন:তাবলিগ জামাতের দিল্লির মাওলানা সাদ ও তার অনুসারীদের বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেয়া হলে অন্তর্বর্তী সরকার পতনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাবলীগ জামাতের এক পক্ষের নেতারা। একইসঙ্গে তারা দেশে কওমি মাদরাসা, তাবলিগ জামাত ও ইসলামকে রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার ইসলামী মহাসম্মেলন থেকে তারা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রাজধানীর শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও আলেমদের বিরুদ্ধে সব ধরনের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নয় দফা দাবি ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সম্মেলন শেষ হয়েছে।
লাখো মানুষের উপস্থিতিতে এই সম্মেলন থেকে আলেমরা সরকারের কাছে নয় দফা দাবি ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সাদ কান্ধলভির সমর্থকদের বিচার এবং স্বঘোষিত আমির সাদের বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে। কাকরাইল মসজিদে সাদ সমর্থকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশে কাদিয়ানিদের আনুষ্ঠানিকভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে স্বঘোষিত আমির সাদ ও তার অনুসারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা কোনোভাবেই সেটি হতে দেবো না। তাদের সব ষড়যন্ত্র যে কোনো মূল্যে আমরা ব্যর্থ করে দেবো।’
মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর মধুপুর) বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। আমি বলবো কিসের পরামর্শ, এই সম্মেলন থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সরকারকে এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। ভিন্ন কোনো চিন্তা করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে সহযোগিতা করবো। সরকারকেও আলেমদের সহযোগিতা করতে হবে। নয়তো পূর্ববর্তী সরকারের মতোই তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে।’
সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে সকাল ৯টায় শুরু হয়ে দুপুর ১টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত চলে। মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আলেমসহ হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষের উপস্থিতি ঘটে।
সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার শত শত আলেমও সম্মেলনে যোগ দিলে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, যা সকাল থেকে শুরু হয়।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন হাটহাজারীর খলিল আহমদ কাসেমী, মধুপুরের আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব, আল্লামা আব্দুল রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম, আদিব সাহেব হুজুর, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শেখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শেখ সাজিদুর রহমান, ফরিদাবাদের আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানী, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করিম ও মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী।
এবার বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা ৭, ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সচিবালয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাবলিগের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৈঠকে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা অংশ নিলেও মাওলানা জুবায়েরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হননি।
এর আগে সরকার ইজতেমা একসঙ্গে করার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, কিন্তু তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের অবস্থানের কারণে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে।
মন্তব্য