রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলার কাছাকাছি বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ৫ কিলোমিটার অদূরে এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি।
কানাইঘাট ভারতের মেঘালয় ও আসাম সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত। ভূমিকম্পের কারণে ভারতের ওই দুই রাজ্যও কেঁপে ওঠে।
তবে সিলেট আবাহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানান, কম্পনটির উৎপত্তিস্থল ভারতের আসাম ও মেঘালয় অঞ্চল।
সোমবার রাত ৮টা ৪৯ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটি কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিলে। সিলেটে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় এখানে ঝাঁকুনিও অনুভূত হয়েছে বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেল ৫ দশমিক ৫।
সিলেট ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বলে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রায়ই এখানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। সোমবার রাতের ভূমিকম্পের কারণে নগরজুড়ে আতংকে দেখা দেয়। নগরের বাসিন্দাদের অনেকে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
নগরের জিন্দাবাজার এলাকার বাসিন্দা বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী বলেন, ‘ভূমিকম্পে সিলেটে জোরালো ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় ঝাঁকুনি ছিল এটি। ৯ তলার ওপর থেকে কম্পনটা বেশ বড়ই মনে হলো।’
তবে এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষিত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
মঙ্গলবার দুপুরে সাভারের তালবাগ এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম সরাসরি বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে ভারতের তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হেনে আস্তে আস্তে ভুবনেশ্বরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এটা শক্তি হারিয়েছে এবং বাংলাদেশে এটার কোনো প্রভাব পড়বে না, যার জন্য আমরা কোনো প্রস্তুতি নেইনি। এর প্রভাবে বাংলাদেশে হয়ত আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে ও বৃষ্টিপাত হবে।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যখাত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেক্টরে আমরা নানা রকম যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি, এইসব যন্ত্রপাতিও জলবায়ুবান্ধব হওয়া উচিত। তা না হলে চিকিৎসা সেবায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।’
মঙ্গলবার দুপুরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন-২০২৩ (কপ ২৮)-এর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এটিএসিএইচ কর্তৃক আয়োজিত ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ: সাপ্লাই চেইন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিগত দশকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন এবং জলবায়ুবান্ধব যন্ত্রপাতি কেনা, সাপ্লাই এবং ব্যবহারের কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ব স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিনির্মাণে বিজ্ঞানসম্মত এবং যেসব যন্ত্রপাতি জলবায়ুর ক্ষতি করে না সেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি ডব্লিউএইচও এবং এটিএসিএইচকে জলবায়ুবান্ধব যন্ত্রপাতি সাপ্লাই এবং হাসপাতাল বিনির্মাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
এরপর তিনি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ‘স্যালিনিটি কিউসড বাই ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইটস ইম্প্যাক্ট অন এনসিডিএস অ্যান্ড এসআরএইচআর’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির। তিনি তার উপস্থাপনায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন, বিশেষ করে, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা এবং এর প্রভাবে এসব এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া এর প্রভাবে গর্ভবতী মায়েদের নানা রকম সমস্যা হয়, যার কারণে উপকূলীয় এলাকায় মাতৃমৃত্যু বেড়ে যায় বলে জানান।
মন্ত্রী বলেন ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পরিবর্তন, বিশেষ করে, লবণাক্ততা বেড়ে যায়। এর ফলে নানা ধরনের রোগ বৃদ্ধি পায়। এতে বিশেষ করে অসংক্রামক রোগ এবং মহিলা ও নারীদের নানা স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে। তার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ নিয়েছে।’
এক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মন্ত্রী উন্নয়ন সহযোগীদের জলবায়ুবান্ধব স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিনির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
এ সময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যখাতের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে হবে।’
সে সময় এবং এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সচিব স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মামুনুর রশিদ এবং আরও অনেকে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সুইডেন অ্যাম্বাসি, ঢাকা ফার্স্ট সেক্রেটারি ডেনিয়েল নোভাক। অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে ছিলেন মিস খুশবু পাওডেল, প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর, আইপাস, নেপাল এবং ডা. হুসাইন রশিদ, আঞ্চলিক উপদেষ্টা, ওয়াশ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত দুবাইয়ে জলবায়ু সম্মেলন ২০২৩ (কপ-২৮) অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:দেশকে রক্ষায় নদীগুলোকে বাঁচানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিজ কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে সোমবার ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা ও দূষণ রোধে প্রণীত মহাপরিকল্পনার আলোকে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সভায় তিনি এ তাগিদ দেন। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে।’
তিনি জানান, ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের লক্ষ্য ছিল নদী রক্ষা, নাব্যতা বজায় রাখা ও দূষণ থেকে রক্ষা করা। তার সরকারের প্রথম মেয়াদে নদী ড্রেজিং শুরু হয়েছিল এবং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য পলিমাটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
ড্রেজিংয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের ড্রেজিং করতে হবে এবং নাব্যতা বজায় রাখতে হবে। নদীভাঙন রোধকল্পে আমাদের ড্রেজিং করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একসময় নদী শাসনের নামে উর্বর ফসলি জমিতে বেড়িবাঁধ তৈরি করা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল।
কারখানার বর্জ্যে দূষণ বাড়ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর ধারে যেসব শিল্প-কারখানা গড়ে উঠে, সেগুলোর বর্জ্য সাধারণত নদীতে যায়।
তিনি বলেন, ‘স্যুয়ারেজ লাইনের সমস্ত বর্জ্যও নদীতে যায়, যার ফলে দূষণ বাড়ছে।
‘আমরা যাই করি না কেন, প্রথমেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।’
রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে বাঁচাতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘নদী শাসনের জন্য নদীর গভীরতার কথা বিবেচনায় রাখতে হবে এবং আমাদের অবশ্যই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের লক্ষ্যে নদীর পাশাপাশি একটি বাফার জোন তৈরি করতে হবে।’
সরকারপ্রধান পরিবেশ সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপরেও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবাইকে সব নগরীর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছি। আমরা যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন, সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পানির প্রবাহ সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর। গত কয়েকদিন ধরে দিনের বেলায় গরম থাকলেও রাতে হালকা শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে। রাত পেরিয়ে ভোর হলেই দেখা মিলছে ঘন কুয়াশার।
সন্ধ্যা থেকে তাপমাত্র কমলেও ভোর হতে হতে শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে সীমান্তের এ জেলায়। পাতলা কাঁথা ও কম্বলে হালকা শীত নিবারণ করছে সাধারণ মানুষ। রোববার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ঢেকে ছিল পরিবেশ। হঠাৎ কুয়াশার কারণে বিপাকে পড়তে হয় পরিবহন চালকদের।
ট্রাক চালক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে দিনাজপুরে হালকা শীত গায়ে লাগছে। এরই মধ্যে রোববার ভোর থেকে ঘন কুয়াশা শুরু হয়েছে। এতে করে আমাদের গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। গাড়ির সামনের কয়েক হাত দুরে ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। এতে দুঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।’
চালক আজগার হোসেন বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে গাড়ির সামনের গ্লাস ঘোলা হয়ে যায়। রাস্তার সাদা দাগ দেখে আইডিয়ার ওপর গাড়ি চালাতে হচ্ছে। কুয়াশা ঘন হলে গাড়ি খুবই সাবধানে চালাতে হয়।’
ইজিবাইক চালক আশিক বলেন, ‘ঘন কুয়াশার কারণে একটু আগে আমি রামনগরে অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেছি। সামনে একটি ট্রাক দাঁড়ানো ছিল, কিন্তু আমি কিছুই দেখতে পারি নাই। একবারে ট্রাকের পেছনে গিয়ে ব্রেক করেছি। ব্রেক না করলে দুর্ঘটনা ঘটত।’
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দিনাজপুরে কয়েকদিন ধরে হালকা শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে। কয়েকদিন পর শীত আরও বাড়বে। ঘন কুয়াশা হলে শীত অপেক্ষাকৃত কম অনুভূত হয়। সাধারণত ভোর বেলা এ অঞ্চলে ঘন কুয়াশা দেখা যায়।’
রোববার ভোর ৬টায় দিনাজপুরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত চিংগরিয়া খাল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ খাল বন্দোবস্ত বাতিলের অগ্রগতি জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
চিংগরিয়া খাল রক্ষায় জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পরে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না জানান, চিংগরিয়া খালের ৫.৪৬ একর ভূমি উদ্ধার এবং এ খালের জায়গা ব্যক্তিবিশেষের নামে দেয়া বন্দোবস্ত বাতিলের ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি বিধায় কেন তা অবৈধ, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
একই সঙ্গে খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডকৃত ভূমি উদ্ধারের এবং আইন-বহির্ভূতভাবে খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডকৃত ভূমির শ্রেণি খাল শ্রেণিতে রূপান্তরিত ভূমি রেকর্ড সংশোধনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
ভূমি সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার, পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কলাপাড়া উপজেলা, পটুয়াখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এবং কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অর্ন্তগত কলাপাড়া পৌরসভার ভেতর দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে চিংগরিয়া খাল নামে পরিচিত। খালটি কলাপাড়ার খেপুপাড়া মৌজায় আন্ধারমানিক নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কলাপাড়া পৌরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অংশবিশেষের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার অতিক্রম করে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীর (দোন) সঙ্গে মিশেছে।
কলাপাড়া ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, খালটির মূল স্রোতধারা খেপুপাড়া মৌজার ৪৪৩, ৫২৬ ও ৮৪২ নম্বর দাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ।
খালটি কলাপাড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খাল। পাঁচ হাজার পৌরসভাবাসীর কাছে এ খালের গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষিকাজ, পানি নিষ্কাশন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য পানির একমাত্র উৎস এ খাল।
কলাপাড়া পৌরসভাটি উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষাকাল ও জলোচ্ছ্বাসের সময় সমুদ্রের নোনা পানিতে এখানকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ডুবে যায়। লবণাক্ত এ পানি এ খাল দিয়েই দ্রুত নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি কলাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস খাল হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি খাল হিসেবে পরিবর্তন করে।
পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) উল্লেখিত খালের অংশবিশেষ ব্যক্তিবিশেষের কাছে দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়। বন্দোবস্ত গ্রহীতারা খালের অংশে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় খাল ভরাট করে নির্মাণ করেন বিভিন্ন স্থাপনা, যে কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আনে বেলা।
আরও পড়ুন:ফিলিপাইনের দক্ষিণের মিন্দানাও অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পের পর মিন্দানাও দ্বীপে সুনামি সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সুনামি সতর্কতা ব্যবস্থা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩৭ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ফিলিপাইনের হিনাতুয়ান শহরের ২১ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। ভূপৃষ্ঠের ৩২ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে।
অন্যদিকে, মিন্দানাওয়ে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৫ ছিল বলে জানিয়েছে ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি)। তাদের তথ্যানুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৩ কিলোমিটার গভীরে।
ফিলিপাইনের উপকূলীয় শহর হিনাতুয়ানের পুলিশ প্রধান রেমার্ক জেনতালান বলেছেন, ভূমিকম্পের পর শহর এবং আশেপাশের এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল এখনও কোথাও হতাহত হওয়া বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পায়নি।
ভূমিকম্পের পর ফিলিপাইনের সিসমোলজিক্যাল এজেন্সি-ফিভল্ক্স থেকে দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মধ্যরাতে সুনামি আঘাত হানতে পারে এবং তা কয়েকঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।
এ ঘটনায় জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমের উপকূলীয় অঞ্চলেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের টেলিভিশন এনএইচকে থেকে প্রকাশিত সতর্কতামূলক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্প আঘাত হানার প্রায় আধাঘণ্টা পর (জাপানের স্থানীয় সময় রোববার ১:৩০ মিনিট) সমুদ্র থেকে প্রায় এক মিটার উঁচু ঢেউ জাপানের দক্ষিণপশ্চিম উপকূলে উঠে আসতে পারে।
এর আগে, গত ১৭ নভেম্বর ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে দেশটির সারাঙ্গানি, কোটাবাটো এবং দাভাও প্রদেশে অন্তত আট প্রাণহানি ঘটে, আহত হন আরও ১৩ জন। ভূমিকম্পে দেশটিতে অর্ধ-শতাধিক বাড়িঘর এবং অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ারে’ অবস্থিত ফিলিপাইনে প্রায়শই ভূমিকম্প হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপসংস্থা রিং অব ফায়ারকে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আরও পড়ুন:জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সমন্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং কপ-২৮ বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. হাছান মাহমুদ। সূত্র: বাসস
ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে দুবাইতে কপ-২৮ সম্মেলনের সাইডলাইনে ‘রাইজিং উইথ দ্য টাইড: ট্র্যাকিং রিফর্মস ইন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার ফর এক্সিলারেটেড ডেভেলপমেন্ট-পজিটিভ ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্যভাবে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই আহ্বান জানান।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম এবং ২০টি ভালনারেবল দেশের জোট সিভিএফ-ভি ২০-এর বর্তমান চেয়ারম্যান ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো আডো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফোরামের পরবর্তী চেয়ারম্যান বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে, ফোরামের থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ এবং প্রথম মহাসচিব মোহাম্মদ নাশিদ।
ঘানার প্রেসিডেন্ট এই ফোরামে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বের দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সিভিএফ-ভি ২০ ফোরামে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো সহনীয়তা ও সক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়েছে। সে সময়ে বৈশ্বিক জয়েন্ট মাল্টি ডোনার ফান্ড গঠন এবং দেশে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ প্রণীত হয়েছে।”
জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানের অধীনেই প্রতি বছর দেশের প্রয়োজন ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
‘বাংলাদেশ উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ নয়, বরং এর অসহায় শিকার। তবু বঙ্গবন্ধু-কন্যার পরিকল্পনামাফিক ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ ৪০ শতাংশ সবুজ শক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে চলেছে।’
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ পরে কপ-২৮ প্রেসিডেন্সি গোলটেবিল বৈঠকে ‘অ্যাক্সিলারেটিং ওয়াটার অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ বৈঠকে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য