দিনভর রোজা রেখে ইফতারে চাই এমন কিছু যা প্রশান্তি আনবে দেহ ও মনে। তাই ইফতারে রাখতে পারেন খেজুরের মজাদার মিল্কশেক। শেফ নিরু গুপ্তার খেজুরের মজাদার মিল্কশেকের রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ
১. ১/৪ কাপ খেজুর কুচি
২. ২ টেবিল চামচ চিনি
৩. ৭২০ মিলিলিটার দুধ
৪. ১ কাপ বরফ কুচি
প্রস্তুত প্রণালি
কুচি করে রাখা খেজুর, চিনি, দুধ একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। তারপর গ্লাসে খেজুরের মিল্কশেক ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কতজন মুসল্লী হজে যেতে পারবেন, তা জানিয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, সরকারিভাবে কতজন ও বেসরকারি এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে কতজন হজে যাবেন, সেই কোটাও নির্ধারণ করেছে সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, আগামী বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৬৮ জন এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ ১৩ হাজার ৪০০ জন হজ করতে পারবেন।
বুধবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে হিজরি ১৪৪৫/২০২৪ সনের হজ আগামী বছরের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর রাজকীয় সৌদি সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর কোটা বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমের বরাদ্দ করা হজযাত্রীর কোটা বিভাজনের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ হাজার ৯৬৮ জন হজযাত্রী এবং তাদের সঙ্গে ২৩০ জন গাইড থাকবেন। ফলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট হজে যাবেন ১০ হাজার ১৯৮ জন।
অন্যদিকে বেসরকারিভাবে হজযাত্রী এক লাখ ১৩ হাজার ৪০০ জন এবং গাইড ও মোনাজ্জেম থাকবেন ৩ হাজার ৬০০ জন। তাই বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে মোট এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ করতে সৌদি আরব যেতে পারবেন।
চলতি বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ কোটার মধ্যে ১৫ হাজার জনের সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাদ বাকি ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনের বরাদ্দ ছিল। তবে সেই কোটা পূরণ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বুধবার ৭৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তাতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত একেকজন রপ্তানিকারক ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
তবে ইলিশ রপ্তানিতে ৮টি শর্ত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- রপ্তানির অনুমতিপ্রাপ্ত পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ; প্রতিটি চালান শেষ হওয়ার পরে পুরো রপ্তানি নথি অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে; কেউ অনুমোদিত পরিমাণের বেশি ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে না; অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং সাব-কন্ট্রাক্টিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না।
দুর্গাপূজা সামনে রেখে এর আগে পাঁচ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাছ আমদানিকারকদের সমিতি কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে এই আবেদন জমা দেয়। আবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে ৪ সেপ্টেম্বর।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর পূজা উৎসব উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে রপ্তানি করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ টন ইলিশ।
আগের বছরগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন:মক্কায় ওমরাহ পালনের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য পোশাক-সম্পর্কিত নিয়ম ঘোষণা করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, নারী ওমরাহ পালনকারীরা ওমরাহ পালনের সময় তাদের পছন্দমতো পোশাক পরতে পারবেন। তবে কিছু নীতি মেনে চলতে হবে।
এক্স পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নারীর পরণের পোশাকটি হতে হবে ঢিলেঢালা এবং নিশ্চিত করতে হবে এটি যেন পুরো দেহকে ঢেকে ফেলে। ওমরাহ পালনকালে কোনো ধরনের অলংকার পরা যাবে না।
সৌদি আরবে চলমান ওমরাহর মৌসুমকে কেন্দ্র করে এ নিয়মগুলো ঘোষণা করা হলো।
এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজ জানিয়েছে, দুই মাস আগে শুরু হওয়া এ বছরের মৌসুমে প্রায় এক কোটি মুসলিম ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় ভ্রমণ করবেন বলে আশা করছে সৌদি সরকার। হজের ঠিক পরপরই ওমরাহ মৌসুম শুরু হয়। করোনা মহামারির কারণে তিন বছর হজ পালনে বিধিনিষেধ থাকার পর এ বছর প্রায় ১৮ লাখ মুসল্লী হজে অংশ নেন।
তিন বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে হজ ও ওমরাহ, উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিনিষেধ এ বছর তুলে নেয়া হয়। গত কয়েক মাসে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক বিদেশি মুসলিমদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা চালু করেছে সৌদি আরব।
যারা শারীরিক ও আর্থিকভাবে হজ পালনে সক্ষম নন, সাধারণত তারাই সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে যান।
এবার ওমরাহ যাত্রীদের ভিসা সহজ করেছে সৌদি আরব। ব্যক্তিগত, ভিজিট ও ট্যুরিস্ট ভিসাধারী ব্যক্তিরা এখন চাইলেই ওমরাহ পালন ও আল রাওদা আল শরিফা (রিয়াজুল জান্নাহ) পরিদর্শন করতে পারবেন। ওখানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কবর রয়েছে। রিয়াজুল জান্নাহ পরিদর্শনের জন্য এখন অনলাইনে ই-অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারছেন ওমরাহ পালনকারীরা।
এ ছাড়া ওমরাহ ভিসার মেয়াদ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ দিন করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ওমরাহ ভিসাধারীরা এখন চাইলে স্থল, আকাশ বা সমুদ্র- যেকোনো পথেই সৌদি আরব ভ্রমণ করতে পারবেন এবং যেকোনো বিমানবন্দর থেকে ফিরে যেতে পারবেন।
সম্প্রতি নারীদের ওমরাহ বা হজের জন্য পুরুষ সঙ্গী বা ‘মাহরাম’ সঙ্গে নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতাও প্রত্যাহার করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন:আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপিত হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ আবদুল হামিদ জমাদ্দার। খবর বাসসের
সভায় ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আকাশে শুক্রবার কোথাও ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার পবিত্র সফর মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা করা হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হবে।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।’
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: বাসস
সরকার প্রধান দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো পদক্ষেপ এবং জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে সব সময় সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট সরকার, স্মার্ট দক্ষ জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আরও এগিয়ে যাবে। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতোমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব স্বাধীনভাবে পালন করবে।
তিনি বলেন, ‘সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্মের অধিকার রক্ষা ও ধর্মীয় উৎসব পালনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সব অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিলেন। জিয়া সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেন, যেই অনুচ্ছেদ আমাদের ধর্মীয় নিরপেক্ষতাকে নিশ্চিত করেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘দেশটি সবার। কারণ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:ড. মুহম্মদ ইউনূসকে ইস্যু করে বিএনপি এবার অশুভ খেলা খেলতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুভ জন্মাষ্টমী উৎসব উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গতবার ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল। এবার তারা ড. ইউনূসকে ইস্যু করে অশুভ খেলা খেলতে চায়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আর সাড়ে ৩ মাস পর জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন সামনে রেখে অশুভ শক্তি নানা খেলা খেলবে। মানবতার ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিন উপলক্ষে আজ আমি তার পাঁচটি উপদেশ বলতে চাই। এক নম্বর উপদেশ- কখনও অতীতকে নিয়ে পড়ে থাকতে নেই। অতীতের শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে৷’
তিনি হলেন, সময়টা খুব ভালো নয়। এখানে অসুরের আস্ফালন হচ্ছে। এখানে দুষ্টের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সৃষ্টিকে পালন করতে হবে। এখানে অশান্তির হুমকি আছে। শ্রী কৃষ্ণের উপদেশমতো শান্তি যাতে বজায় থাকে, সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
কাদের বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে এটা প্রমাণ হয়েছে যে শাসক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে সনাতন ধর্মের মানুষের আপন মানুষ রাজনীতিতে অন্তত নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে হিন্দু ভাই-বোনেরা নিরাপদে ছিলেন।
‘এবার আমি ভয় পাচ্ছি- বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অশুভ শক্তি এমন কোনো ঘটনা না ঘটায়, যা হিন্দুদের সঙ্গে বা ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারে। সুতরাং আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো অশুভ শক্তি যেন আপনাদের বাড়িঘরের ক্ষতি করতে না পারে। আমি সবাইকে আহ্বান করব- আপনাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। নিরাপত্তা দিতে হবে। বাসাবাড়ির নিরাপত্তা, মন্দিরের নিরাপত্তা, মণ্ডপের নিরাপত্তা দিতে হবে।
‘আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সতর্ক আছে। আমাদের জনগণকেও সতর্ক থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:শুভ জন্মাষ্টমী, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ অষ্টমী তিথিতে মথুরায় কংসের কারাগারে জন্ম নিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেই পুণ্য তিথির স্মরণে পালন হয় জন্মাষ্টমী।
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, যখনই পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে গিয়ে ধার্মিক ও সাধারণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখনই দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ধর্মের রক্ষার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবতাররূপে ধরায় নেমে আসেন।
দিনটিতে শ্রীকৃষ্ণের পূজাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শ্রীকৃষ্ণের জন্মকাহিনী সম্পর্কে জানা যায়, দ্বাপর যুগে অত্যাচারী রাজা কংসের নৃশংসতায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল মথুরাবাসী (ভারতের)। কংসের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা শুরু করে তারা। ভক্তের ডাকে সাড়া দেন ভগবান।
একদিন আদরের ছোট বোন দেবকী ও তার স্বামী বসুদেবকে নিয়ে রথে চড়ে যাচ্ছিলেন রাজা কংস। এমন সময় দৈববাণী হলো, ‘বোন দেবকীর অষ্টম সন্তানই হবে তোর মৃত্যুর কারণ।’
দৈববাণী শুনে সঙ্গে সঙ্গে বোনকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন রাজা কংস, তবে বসুদেব তাকে এই বলে নিবৃত্ত করলেন, ‘আমাদের দুজনকে কারাগারে আটকে রাখুন। আমাদের সন্তান হলে আপনার হাতে তুলে দেয়া হবে। জন্মের পরই আপনি তাদের হত্যা করে নিজের প্রাণ সংশয় কাটাবেন।’
বসুদেবের যুক্তি কংসের মনঃপুত হলো। তিনি তাদের কারাবন্দি করলেন। তারপর থেকে একে একে ছয়টি সন্তান কংসের হাতে তুলে দেন দেবকি ও বসুদেব, তবে সপ্তম সন্তান হাতে নেয়ার পরই সে হাসতে হাসতে শূন্যে ভেসে যায়। যাওয়ার সময় সে কংসকে ‘তার মৃত্যু অবধারিত’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায়।
পরে ভাদ্র মাসের শুক্লা পক্ষের অষ্টমী তিথির রাতে অষ্টম সন্তানের জন্ম দেন দেবকি। সে রাত ছিল ঝড়-ঝঞ্চাপূর্ণ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কারাগারের ফটকে কোনো রক্ষী সে সময় পাহারায় ছিল না।
এমন সময় এক দৈববাণীতে সদ্যোজাত ছেলেসন্তানকে নিরাপদে গোকুলে নন্দ-যশোদা দম্পতির কাছে রেখে আসতে বলা হয়। এ সময় কারাগারের দরজাও খুলে যায়। ফলে বসুদেব ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছেলেকে নিয়ে গোকুলে যশোদার পাশে রেখে আসেন। আর সঙ্গে নিয়ে আসেন যশোদার সদ্যোজাত মেয়েকে।
পরে গোকুলেই বড় হতে থাকেন শ্রীকৃষ্ণ। পরবর্তী সময়ে দ্বারকার রাজা হয়ে তিনি যুদ্ধে মথুরারাজ কংসকে পরাজিত ও হত্যা করেন।
সেই থেকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ভাদ্র মাসের শুক্লা অষ্টমীতে জন্মাষ্টমী পালন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তারা বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়, তখনই ধর্ম সংস্থাপনের জন্য ভক্তের প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে ঈশ্বর অবতার রূপে পৃথিবীতে আসেন। ষড়গুণ অর্থাৎ শৌর্য, বীর্য, তেজ, জ্ঞান, শ্রী ও বৈরাগ্যসম্পন্ন পূর্ণাবতাররূপে প্রকাশিত হন কৃষ্ণ।
অনন্ত সর্বশক্তিমান সত্তায় শাশ্বত সত্যরূপে শ্রীকৃষ্ণকে বিষ্ণুর সবচেয়ে অপরূপ অবতার বলে মনে করা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় জগতের সব সুখ লাভ হয়; মঙ্গল হয় পরিবার, দেশ ও সমাজের। তাই তো শুধু মথুরা নয়, শ্রীকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র বৃন্দাবন থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই তিথিটি ভক্তিভরে পালন করে থাকেন।
তাদের বিশ্বাস, এই দিনটিতে ব্রত পালন করলে মনের ময়লা দূর হয়; সৎগুণের জয় হয় এবং এর ফলস্বরূপ মৃত্যুর পর জীবাত্মার মুক্তি হয়।
শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলা হয়, ‘যে যেভাবে আমায় আরাধনা করে, আমি সেইভাবে তাকে কৃপা করি।’ এ বিশ্বাসেই মহাকাল ও মহাজগৎ ব্যাপ্ত শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় মত্ত বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। অভ্যুত্থানম ধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্। পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুস্কৃতাম্। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।’
অর্থাৎ, ধর্মের গ্লানি ও অধর্মের বৃদ্ধির তাৎপর্য হলো ভগবতপ্রেমী, ধর্মাত্মা, সদাচারী, নিরপরাধ মানুষের ওপর নাস্তিক, পাপী, দুরাচার, বলবান ব্যক্তিদের অত্যাচার বৃদ্ধি পাওয়া। মানুষের মধ্যে সদগুণ, সদাচার অত্যন্ত কমে গিয়ে দুর্গুণ-দুরাচার অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। আর যখনই এমন পাপাচার শুরু হয় পৃথিবীতে, তখনই শ্রীকৃষ্ণ দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ, সাধুর রক্ষা, ধর্ম সংস্থাপনে অবতাররূপে পৃথিবীতে আসেন।
নিজের জন্ম নিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘আমার জন্ম-মৃত্যু সাধারণ মানুষের মতো নয়। মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং মারা যায়, কিন্তু আমি জন্মরহিত হয়েও আবির্ভূত হই এবং অবিনশ্বর হয়েও অন্তর্ধান করে থাকি। আবির্ভূত হওয়া এবং অন্তর্হিত হওয়া—দুটিই আমার অলৌকিক লীলা।’
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে বলেন, ‘আমি জন্মহীন, অব্যয় আত্মা, ভূতগণের ঈশ্বর হয়েও নিজ প্রতীকে আশ্রয় করে আত্মমায়ায় জন্মগ্রহণ করি।’
যিনি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ, তিনিই ভগবান। বেদে তার পরিচয় ব্রহ্ম। আমাদের ষড় ইন্দ্রীয়, আমাদের ক্ষুদ্র মন, আমাদের সংকীর্ণ বুদ্ধি এসবের বহু ঊর্ধ্বে তিনি। তাকে পাওয়া আমাদের সাধ্যের বাইরে, তবে তাকে পাওয়ার জন্য ভক্তের নিরন্তর আকুলতা সৃষ্টিকর্তার মনেও দোলা না দিয়ে পারে না। এ সমস্যার সমাধান করলেন তিনি নিজেই নিত্য ও অনুগ্রহ শক্তির প্রেরণায়।
গীতার ৭/১০ অধ্যায়ে অর্জুনকে শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘হে পার্থ, আমাকে সর্বভূতের সনাতন বীজ বলিয়া জানিও। আমি বুদ্ধিমানদিগের বুদ্ধি এবং তেজস্বীগণের তেজস্বরূপ।’
৪/১১ অধ্যায়ে শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘যে যেভাবে আমায় আরাধনা করে, আমি সেইভাবে তাহাকে কৃপা করি।’
এ বছর জন্মাষ্টমী তিথির বিস্তার ২ দিন ধরে। পঞ্জিকা অনুসারে ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর পড়েছে জন্মাষ্টমী তিথি। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী তিথি শুরু হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে। আর তা শেষ হবে ৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টা ১৪ মিনিটে।
পুরাণ অনুসারে, ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষে রাত ১২টায় রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। এই বিশ্বাস অনুসারে, ৬ সেপ্টেম্বর গৃহস্থরা জন্মাষ্টমীর ব্রত পালন করতে পারেন, তবে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী, তারা জন্মাষ্টমী পালন করবেন ৭ সেপ্টেম্বর।
যেহেতু জন্মাষ্টমীর পূজা রাতে হয়, তাই ৬ সেপ্টেম্বর তারিখটিই অনেকে বেছে নিচ্ছেন জন্মাষ্টমী পালনের জন্য। জন্মাষ্টমী পূজার শুভক্ষণের বিষয়টি যদি আসে, তবে তা ৬ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২ মিনিটে শুরু হয়ে চলবে ১২টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য