দক্ষিণ চীনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক, শিল্প ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গুয়াংজু। এটি প্রাচীন বাণিজ্য বন্দর হিসেবেও পরিচিত। নানা সময়ে নানা সংকটেও বন্ধ হয়নি এই বন্দর।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যয়ে পড়েও দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে গুয়াংজু। ২০২২ সালে গুয়াংজুর জিডিপি ছিল ২ হাজার ৮৮৫ বিলিয়ন ইউয়ান। আগের বছরের চেয়ে বাড়ে ১ শতাংশ। শিল্প, রপ্তানি ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এই অঞ্চল।
গুয়াংজুতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে ক্ষেত্রে ভালো বছর ছিল ২০২২ সাল। শিল্প কারখানায় আগের বছরের তুলনায় বিনিয়োগ বাড়ে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রতি বছর বসন্ত ও শরৎকালে গুয়াংজুতে অনুষ্ঠিত হয় আমদানি ও রপ্তানি মেলা বা ‘ক্যান্টন ফেয়ার’। মেলায় ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চল থেকে অনেক ব্যবসায়ী ও বিদেশি উদ্যোক্তা অংশ নেন।
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে গুয়াংজু বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এই এলাকায় রয়েছে বিশ্বমানের জাদুঘর, সমৃদ্ধ শিল্প ও সংস্কৃতিক কেন্দ্র, ক্যান্টন টাওয়ার ও ক্যান্টনিজ খাবার।
গুয়াংজু বিশ্বব্যাপী পরিবহন ও বাণিজ্য কেন্দ্র। এ ছাড়া একটি প্রতিষ্ঠিত উদীয়মান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত গুয়াংজু।
যেন ফুলের শহর!
চীনের অন্যতম ফুলের শহর গুয়াংজু। বলা যায় আশ্চর্যজনকভাবে সবুজ চার পাশ। বাইয়ান পর্বতের গা ঘেঁষে রয়েছে চীনের বৃহত্তম ল্যান্ড স্কেপ বাগান। এই গার্ডেনের রাস্তার দুই পাশে সারি সারি ফুল, যা সকলকেই মুগ্ধ করে।
হিমশীতল আবহাওয়ায় ফুটে থাকে চেরি ফুল। নানা রং আর রূপ নিয়ে বসন্তকে রাঙিয়ে দিতে প্রতি বছর চেরি ফুল ফোটে। গুচ্ছবদ্ধ ফুলগুলো প্রধানত গোলাপি, সাদা ও লাল রঙের হয়। পাপড়ি ও ফুলের গড়নও বিচিত্র। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে চেরি গাছ থেকে অবিরাম খসে পড়তে থাকে লাল, খয়েরি ও বাদামি পাতা। প্রস্ফুটিত চেরি ফুলকে ঘিরে গাছে গাছে রঙিন প্রজাপতির মেলা বসে।
ক্যান্টন টাওয়ার
গুয়াংজুকে সমৃদ্ধ করেছে ক্যান্টন টাওয়ার। এটি গুয়াংজু নিউ সিটি সেন্ট্রাল অ্যাক্সিস ও পার্ল নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত। হাইক্সিনশা দ্বীপ ও ঝুজিয়াং নিউ টাউনের মুখোমুখি জায়গায় এর অবস্থান। এটি বর্তমানে চীনের সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ টাওয়ার।
ক্যান্টন টাওয়ার ৬০০ মিটার উঁচু, যার মূল অংশের ৪৫০ মিটার এবং এর অ্যান্টেনার ১৫০ মিটার। ড্রাগন বোটে সুন্দর পার্ল নদীতে ভ্রমণ করার সময় ক্যান্টন টাওয়ারটি রংধনুর মতো আলোকিত করে।
ক্যান্টন টাওয়ার একটি দর্শনীয় ভবন এবং সেই সঙ্গে দর্শনীয় স্থানও। এতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাডভেঞ্চার, খাদ্য ও পানীয়, বিয়ের অনুষ্ঠান, নানান সিনেমা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং কেনাকাটাসহ নানা সুবিধা রয়েছে। অনেকেই ক্যান্টন টাওয়ারকে বিখ্যাত পর্যটক আকর্ষণ কেন্দ্র হিসেবেও বলে থাকে। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ গ্রেট টাওয়ারের সবচেয়ে মূল্যবান সদস্য এই ভবন।
পার্ল রিভার নাইট ক্রুজ
গুয়াংজুর আটটি অঞ্চলের মধ্যে পার্ল রিভার নাইট ক্রুজ পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়। এটি ফ্লাওয়ার সিটি স্কোয়ারের কাছাকাছি এবং এটি অবস্থিত হাইক্সিনশা দ্বীপের পূর্ব দিকে। এই দ্বীপেই ১৬তম এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী এবং সমাপনী অনুষ্ঠান হয়েছিল।
ক্যান্টন টাওয়ার থেকে পার্ল নদী পর্যন্ত দুই পাশের পানির সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন মানুষ। পর্যটকরা যখন শিপে উঠেন, তখন তারা গুয়াংজুর ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিতি হন। গুয়াংজুর হাজার বছরের ইতিহাস ধীরে ধীরে তাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হয়।
পর্যটকরা হাজার বছরের ইতিহাসসহ বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত গুয়াংজুর পরিবর্তন দেখতে পান। শিপে বুফে ডিনারের সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছা করলে পর্যটকরা ক্যান্টন টাওয়ার, হাইক্সিনশা দ্বীপ, গুয়াংজু ব্রিজ, লিয়েডে ব্রিজ, শিংঘাই কনসার্ট হল, হাইয়িন ব্রিজ, হোচিমিন স্কয়ার ইত্যাদি উপভোগ করতে পারেন।
ক্যান্টনিজ অপেরা আর্ট মিউজিয়াম
এটি লিউয়ান শহরে অবস্থিত। জাদুঘরটি উত্তর ও দক্ষিণ ভাগে বিভক্ত। দক্ষিণ তীরে বেসিক প্রদর্শনী হল, থিম প্রদর্শনী হল, থিয়েটার, মনোরম উদ্যান রয়েছে। উত্তর তীরটি ক্যান্টনিজ অপেরা শিল্প সংরক্ষণের জন্য রাখা৷ দক্ষিণ তীরের নৈসর্গিক বাগানে লিংনান গার্ডেন-স্টাইলের অ্যান্টিক বিল্ড একটি ক্রস বরাবর সাজানো রয়েছে। ওয়ানশা লেকের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন কারুকাজ। অলঙ্করণের মধ্যে রয়েছে কাঠের ওপর খোদাই, ইট খোদাই, মৃৎপাত্রের ভাস্কর্য এবং প্লাস্টিক ভাস্কর্য।
বাগানের কেন্দ্রে একটি ওয়াটারফ্রন্ট স্টেজ রয়েছে। ২০১৭ সালে জাদুঘরটি চায়না কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লুবান পুরস্কার পেয়েছে, যা দেশের নির্মাণ শিল্পে প্রকৌশল মানের উচ্চ সম্মাননা।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের চবাহার কাউন্টিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের সদরদপ্তরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জয়শুল আজল।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালে বিস্ফোরণের এ ঘটনা ঘটে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশন সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরি এবং হাউজিং ইউনিট নির্মাণ করে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসলামি বিপ্লবী হাউজিং ফাউন্ডেশনের দপ্তরে সাউন্ড বোমা বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে।
প্রাদেশিক প্রসিকিউটর মেহদি শামসাবাদি জানান, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
তিনি জানান, নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বিস্ফোরণে ভবনটির একাংশের ক্ষতি হয়েছে।
পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশে বিগত বছরগুলোতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় অনেকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। যেসব গোষ্ঠী এসব হামলা চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছরের ২৬ অক্টোবর সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশের তাফতান কাউন্টির গোহার কুহ এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই হামলারও দায় এ সংগঠন স্বীকার করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য