বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এ মাসে ভোররাতে সেহরি খেয়ে দিনভর পানাহার থেকে দূরে থাকেন মুসলিমরা। এ সময়ে কী কী কারণে রোজা ভেঙে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, তা নিয়ে জানার আগ্রহ আছে অনেকের।
ইসলামি প্রশ্নোত্তরভিত্তিক ওয়েবসাইট ইসলামকিউএ ডটইনফোর এক প্রশ্নোত্তরে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘আল্লাহতায়ালা পরিপূর্ণ হেকমত অনুযায়ী রোজার বিধান জারি করেছেন। তিনি রোজাদারকে ভারসাম্য রক্ষা করে রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন একদিকে যাতে রোজা রাখার কারণে রোজাদারের শারীরিক কোনো ক্ষতি না হয়, অন্যদিকে সে যেন রোজা বিনষ্টকারী কোনো বিষয়ে লিপ্ত না হয়।’
প্রশ্নোত্তরে রোজা বিনষ্টের কারণ নিয়ে বলা হয়, ‘এ কারণে রোজা বিনষ্টকারী বিষয়গুলো দুই ভাগে বিভক্ত। কিছু রোজা বিনষ্টকারী বিষয় রয়েছে, যেগুলো শরীর থেকে কোনো কিছু নির্গত হওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন: সহবাস, ইচ্ছাকৃত বমি করা, হায়েজ (মাসিক ঋতুস্রাব) ও শিঙ্গা লাগানো। শরীর থেকে এগুলো নির্গত হওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়। এ কারণে আল্লাহতায়ালা এগুলোকে রোজা ভঙ্গকারী বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করেছেন যাতে করে এগুলো নির্গত হওয়ার দুর্বলতা ও রোজা রাখার দুর্বলতা উভয়টি একত্রিত না হয়। এমনটি ঘটলে রোজার মাধ্যমে রোজাদার ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং রোজা বা উপবাসের ক্ষেত্রে আর ভারসাম্য বজায় থাকবে না।
‘আর কিছু রোজা বিনষ্টকারী বিষয় আছে, যেগুলো শরীরে প্রবেশ করানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন: পানাহার। তাই রোজাদার যদি পানাহার করে, তাহলে যে উদ্দেশ্যে রোজার বিধান জারি করা হয়েছে সেটা বাস্তবায়িত হবে না।’ [মাজমুউল ফাতাওয়া ২৫/২৪৮]
কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত
ইসলামকিউএ ডটইনফোর প্রশ্নোত্তরে রোজা নিয়ে কোরআনের আয়াত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, “আল্লাহতায়ালা নিম্নোক্ত আয়াতে রোজা বিনষ্টকারী বিষয়গুলোর মূলনীতি উল্লেখ করেছেন:
‘এখন তোমরা নিজ স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু লিখে রেখেছেন তা (সন্তান) তালাশ করো। আর পানাহার করো যতক্ষণ না কালো সুতা থেকে ভোরের শুভ্র সুতা পরিষ্কার ফুটে ওঠে...।’” [সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭]
উত্তরে উল্লেখ করা হয়, ‘এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা রোজা নষ্টকারী প্রধান বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হচ্ছে পানাহার ও সহবাস। আর রোজা নষ্টকারী অন্য বিষয়গুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার হাদিসে উল্লেখ করেছেন।’
হাদিসে রোজা বিনষ্টকারী যেসব বিষয় এসেছে, সে বিষয়ে প্রশ্নোত্তরে বলা হয়, রোজা নষ্টকারী বিষয় ৭টি। সেগুলো হলো শারীরিক সম্পর্ক বা সহবাস, হস্তমৈথুন, পানাহার, যা কিছু পানাহারের স্থলাভিষিক্ত, শিঙ্গা লাগানো কিংবা এ জাতীয় অন্য কোনো কারণে রক্ত বের করা, ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা, নারীদের হায়েজ ও নিফাসের (কোনো নারীর জরায়ু থেকে সন্তান প্রসবের কারণে যে রক্ত বের হয়) রক্ত বের হওয়া।
শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নোত্তরে বলা হয়, “এ বিষয়গুলোর মধ্যে প্রথম হচ্ছে সহবাস। এটি সবচেয়ে বড় রোজা নষ্টকারী বিষয় ও এতে লিপ্ত হলে সবচেয়ে বেশি গুনাহ হয়। যে ব্যক্তি রমজানের দিনের বেলা স্বেচ্ছায় স্ত্রী সহবাস করবে, অর্থাৎ দুই খতনার স্থানদ্বয়ের মিলন ঘটাবে এবং পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ যৌনাঙ্গের ভেতরে অদৃশ্য হয়ে যাবে, সে তার রোজা নষ্ট করল। এতে করে বীর্যপাত হোক কিংবা না হোক। তার ওপর তওবা করা, সেদিনের রোজা পূর্ণ করা, পরবর্তী সময়ে এ দিনের রোজা কাজা করা ও কঠিন কাফফারা আদায় করা ফরজ। এর দলিল হচ্ছে আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিস। তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি ধ্বংস হয়েছি।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘কিসে তোমাকে ধ্বংস করল?’ সে বলল, ‘আমি রমজানে (দিনের বেলা) স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি।’ তিনি বললেন, ‘তুমি কি একটি ক্রীতদাস আজাদ করতে পারবে?’ সে বলল, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাহলে লাগাতার দুই মাস রোজা রাখতে পারবে?’ সে বলল, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তাহলে ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়াতে পারবে?’ সে বলল, ‘না’। [হাদিসটি সহিহ বুখারি (১৯৩৬) ও সহিহ মুসলিমে (১১১১) এসেছে]
স্ত্রী সহবাস ছাড়া অন্য কোনো কারণে কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব হয় না।”
হস্তমৈথুনের বিষয়ে উত্তরে বলা হয়, “দ্বিতীয়: হস্তমৈথুন। হস্তমৈথুন বলতে বোঝায় হাত দিয়ে কিংবা অন্য কিছু দিয়ে বীর্যপাত করা। হস্তমৈথুন যে রোজা ভঙ্গকারী এর দলিল হচ্ছে হাদিসে কুদসিতে রোজাদার সম্পর্কে আল্লাহর বাণী: ‘সে আমার কারণে পানাহার ও যৌনকর্ম পরিহার করে।’ সুতরাং যে ব্যক্তি রমজানের দিনের বেলা হস্তমৈথুন করবে তার ওপর ফরজ হচ্ছে তওবা করা। সে দিনের বাকি সময় উপবাস থাকা এবং পরবর্তী সময়ে সে রোজাটির কাজা পালন করা। আর যদি এমন হয়, হস্তমৈথুন শুরু করেছে বটে, কিন্তু বীর্যপাতের আগে সে বিরত হয়েছে, তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে; তার রোজা সহিহ। বীর্যপাত না করার কারণে তাকে রোজাটি কাজা করতে হবে না। রোজাদারের উচিত হচ্ছে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী সবকিছু থেকে দূরে থাকা এবং সব কুচিন্তা থেকে নিজের মনকে প্রতিহত করা। আর যদি মজি (কাম রস) বের হয়, তাহলে অগ্রগণ্য মতানুযায়ী এটি রোজা ভঙ্গকারী নয়।’
পানাহারের বিষয়ে উত্তরে বলা হয়, “তৃতীয়: পানাহার। পানাহার বলতে বোঝাবে মুখ দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে পৌঁছানো। অনুরূপভাবে নাক দিয়ে কোনো কিছু যদি পাকস্থলীতে পৌঁছানো হয়, সেটাও পানাহারের পর্যায়ভুক্ত। এ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তুমি ভালো করে নাকে পানি দাও যদি না তুমি রোজাদার হও।’ [সুনানে তিরমিজি (৭৮৮), আলবানি সহিহ তিরমিজিতে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন] সুতরাং নাক দিয়ে পাকস্থলীতে পানি প্রবেশ করানো যদি রোজাকে ক্ষতিগ্রস্ত না করত, তাহলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালো করে নাকে পানি দিতে নিষেধ করতেন না।”
পানাহারের স্থলাভিষিক্ত রোজা বিনষ্টকারী বিষয় নিয়ে উত্তরে বলা হয়, “চতুর্থ: যা কিছু পানাহারের স্থলাভিষিক্ত। এটি দুটি বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। ১. যদি রোজাদারের শরীরে রক্ত পুশ করা হয়। যেমন: আহত হয়ে রক্তক্ষরণের কারণে কারও শরীরে যদি রক্ত পুশ করা হয়, তাহলে সে ব্যক্তির রোজা ভেঙে যাবে। যেহেতু পানাহারের উদ্দেশ্য হচ্ছে রক্ত তৈরি। ২. খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ইনজেকশন পুশ করা। কারণ এমন ইনজেকশন নিলে পানাহারের প্রয়োজন হয় না। [শাইখ উছাইমীনের ‘মাজালিসু শারহি রমাদান’, পৃষ্ঠা ৭০] তবে, যেসব ইনজেকশন পানাহারের স্থলাভিষিক্ত নয়; বরং চিকিৎসার জন্য দেয়া হয়, উদাহরণস্বরূপ ইনসুলিন, পেনিসিলিন কিংবা শরীর চাঙা করার জন্য দেয়া হয় কিংবা টিকা হিসেবে দেয়া হয়, এগুলো রোজা ভঙ্গ করবে না; চাই এসব ইনজেকশন মাংশপেশিতে দেয়া হোক কিংবা শিরাতে দেয়া হোক। [শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিমের ফতোয়াসমগ্র] তবে, সাবধানতাস্বরূপ এসব ইনজেকশন রাতে নেয়া যেতে পারে।
“কিডনি ডায়ালাইসিসের ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকে রক্ত বের করে সে রক্ত পরিশোধন করে কিছু কেমিক্যাল ও খাদ্য উপাদান (যেমন: সুগার ও লবণ ইত্যাদি) যোগ করে সে রক্ত পুনরায় শরীরে পুশ করা হয়। এতে করে রোজা ভেঙে যাবে।”
শিঙ্গা লাগানো, কাপিং বা হিজামার বিষয়ে ইসলামকিউএ ডটইনফোর উত্তরে বলা হয়, “পঞ্চম: শিঙ্গা লাগানোর মাধ্যমে রক্ত বের করা। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী, ‘যে ব্যক্তি শিঙ্গা লাগায় ও যার শিঙ্গা লাগানো হয় উভয়ের রোজা ভেঙে যাবে।’ [সুনানে আবু দাউদ (২৩৬৭), আলবানি সহিহ আবু দাউদ গ্রন্থে (২০৪৭) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
“রক্ত দেয়াও শিঙ্গা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত। কারণ রক্ত দেয়ার ফলে শরীরের ওপর শিঙ্গা লাগানোর মতো প্রভাব পড়ে। তাই রোজাদারের জন্য রক্ত দেয়া জায়েজ নেই, তবে যদি অনন্যোপায় হয়ে কোনো রোগীকে রক্ত দেয়া লাগে তাহলে রক্ত দেয়া জায়েজ হবে। রক্ত দানকারীর রোজা ভেঙে যাবে এবং সে দিনের রোজা কাজা করবে। [শাইখ উছাইমীনের ‘মাজালিসু শারহি রামাদান’ পৃষ্ঠা-৭১]
“কোনো কারণে যে ব্যক্তির রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তার রোজা ভাঙবে না। কারণ রক্তক্ষরণ তার ইচ্ছাকৃত ছিল না। [স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১০/২৬৪)]
“আর দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা কিংবা রক্ত পরীক্ষা করা ইত্যাদি কারণে রোজা ভাঙবে না। কারণ এগুলো শিঙ্গা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত নয়। কারণ এগুলো দেহের ওপর শিঙ্গা লাগানোর মতো প্রভাব ফেলে না।”
রোজা ভঙ্গের ষষ্ঠ কারণ নিয়ে উত্তরে বলা হয়, ‘ষষ্ঠ: ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা। দলিল হচ্ছে ‘যে ব্যক্তির অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি এসে যায়, তাকে উক্ত রোজা কাজা করতে হবে না, কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করল তাকে সে রোজা কাজা করতে হবে।”[সুনানে তিরমিজি (৭২০), আলবানি সহিহ তিরমিজি গ্রন্থে (৫৭৭) হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
ইবনে মুনজির বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বমি করেছে আলেমদের ঐক্যবদ্ধ অভিমত (ইজমা) হচ্ছে তার রোজা ভেঙ্গে গেছে।’ [আল-মুগনী (৪/৩৬৮)]
যে ব্যক্তি মুখের ভেতরে হাত দিয়ে কিংবা পেট কচলিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করেছে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কিছু শুকেছে কিংবা বারবার দেখেছে, যার একপর্যায়ে তার বমি এসে গেছে, তাকেও রোজা কাজা করতে হবে, তবে যদি কারও পেট ফেঁপে থাকে, তার জন্য বমি আটকে রাখা বাধ্যতামূলক নয়। কারণ এতে করে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে।” [শাইখ উছাইমীনের মাজালিসু শাহরি রামাদান, পৃষ্ঠা ৭১]
মাসিক ঋতুস্রাবজনিত কারণে রোজা ভঙ্গের বিষয়ে বলা হয়, “সপ্তম: হায়েজ ও নিফাসের রক্ত নির্গত হওয়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন নারীদের হায়েজ হয়, তখন কি তারা নামাজ ও রোজা ত্যাগ করে না?’ [সহিহ বুখারি (৩০৪)]। তাই কোনো নারীর হায়েজ কিংবা নিফাসের রক্ত নির্গত হওয়া শুরু হলে তার রোজা ভেঙে যাবে, এমনকি সেটা সূর্যাস্তের সামান্য কিছু সময় পূর্বে হলেও। আর কোনো নারী যদি অনুভব করে যে, তার হায়েজ শুরু হতে যাচ্ছে, কিন্তু সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত রক্ত বের হয়নি তাহলে তার রোজা শুদ্ধ হবে এবং সেদিনের রোজা তাকে কাজা করতে হবে না।
আর হায়েজ ও নিফাসগ্রস্ত নারীর রক্ত যদি রাত থাকতে বন্ধ হয়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি রোজার নিয়ত করে নেন, তবে গোসল করার আগেই ফজর হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আলেমদের মাজহাব হচ্ছে তার রোজা শুদ্ধ হবে।”
উত্তরে বলা হয়, ‘কোনো নারী যদি হায়েজ বন্ধকারী ওষুধ গ্রহণ করার ফলে তার হায়েজের রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং জায়গাটি শুকিয়ে যায়, সে নারী রোজা রাখতে পারবে এবং তার রোজাটি আদায় হয়ে যাবে।’
শর্ত
প্রশ্নোত্তরে বলা হয়, ‘উল্লেখিত বিষয়গুলো হচ্ছে রোজা বিনষ্টকারী, তবে হায়েজ ও নিফাস ছাড়া অবশিষ্ট বিষয়গুলো রোজা ভঙ্গ করার জন্য তিনটি শর্ত পূর্ণ হতে হয়।
১. বিনষ্টকারী বিষয়টি ব্যক্তির গোচরীভূত থাকা। অর্থাৎ এ ব্যাপারে সে অজ্ঞ না হয়।
২. তার স্মরণে থাকা।
৩. জোর-জবরদস্তির শিকার না হয়ে স্বেচ্ছায় তাতে লিপ্ত হওয়া।’
আরও পড়ুন:পবিত্র হজ পালনের জন্য শনিবার পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৭ হাজার ৩৭৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। তাদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২২ হাজার ৬৫০ জন ও সৌদি এয়ারলাইন্স ১৫ হাজার ৫৪১ জন হজযাত্রী পরিবহন করেছে। এছাড়া ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৮ হাজার ৫৪১ জন হজযাত্রী।
ঢাকায় হজ অফিসের এক বুলেটিনে শনিবার জানানো হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮ হাজার ৬৭৫জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৮ হাজার ৬৯৯ জন হজযাত্রী বিভিন্ন হজ ফ্লাইটে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
২১ মে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। বিমানের হজ ফ্লাইট শেষ হবে ২২ জুন।
এবার মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন।
পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুন (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে)।
হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২ জুলাই। শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২ আগস্ট।
এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে মক্কায় একজন নারীসহ ২ জন হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করায় সামাজিক কবরস্থানে এক যুবকের মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছেন গ্রামের সমাজপতিরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দুলাশিয়া আমলীতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার ভোরে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন দুলাশিয়া আমলীতলা গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে ইসলাম উদ্দিন। ওইদিন দুপুরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার ওই এলাকার সামাজিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করতে চাইলে বাধা হয়ে দাঁড়ান গড়াকাটা দক্ষিণপাড়া গ্রামের সমাজপতিরা। পরে দুলাশিয়া আমলীতলা গ্রামের পেছনে নদীর পারে মরদেহ দাফন করেন দুলাশিয়া আমলীতলা গ্রামবাসী।
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আমরা ওই গ্রামে গিয়েছিলাম। মরদেহ দাফনের ব্যাপারে গড়াকাটা দক্ষিণপাড়া গ্রামবাসীকে বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা ওই এলাকার সামাজিক কবরস্থানে ইসলাম উদ্দিনের মরদেহ দাফন করতে দেয়নি।’
কাদিয়ানিদের ‘ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা’ বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ। এতে ধর্মীয় নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে ওই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এর পর যারা নিজেদের নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্র্রতি একাত্মতা পোষণ করছি।’
রেজিস্ট্রারি মাঠে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
দুপুরের পর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত জনতা স্লোগান দেয় ‘নবীর পরে নবী নাই, সংসদে আইন চাই’, ‘কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’ ইত্যাদি। অনেকে এসব দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।
আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।
বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।
প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিমদের অনেকে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের অমুসলিম বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানি বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে ইসলামের একজন নবী ঈসা ও ইমাম মাহদি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত।
পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সৌদি আরবে পৌঁছানোর আগে ও পরে করণীয় বিষয়ে হজযাত্রীদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
গালফ নিউজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হজব্রত পালনকে নির্বিঘ্ন করতে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নিজ দেশের বিমানবন্দরে করণীয়
১. ভ্রমণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র নিয়ে বিমানবন্দরে যেতে হবে।
২. যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগেজ বা নির্ধারিত ব্যাগে রাখতে হবে।
৩. প্রতিটি লাগেজ নির্ধারিত আকারের হতে হবে। উড়োজাহাজে তোলার আগে প্রতিটি লাগেজ আলাদাভাবে শনাক্ত করার চিহ্ন থাকতে হবে।
যেসব সামগ্রী বহন করা যাবে না
১. প্লাস্টিক ব্যাগ, পানির বোতল, তরল বস্তু এবং মোড়ানো বা বাঁধা নয় এমন লাগেজ বা ব্যাগ বহন করা যাবে না।
২. কাপড়ে মোড়ানো ও ঢাকা বাক্স বহন করা যাবে না।
সৌদিতে আগমনের পর
১. সৌদিতে পৌঁছার পর কোনো হজযাত্রীর কাছে ৬০ হাজার রিয়ালের বেশি নগদ অর্থ কিংবা এর চেয়ে বেশি মূল্যের সামগ্রী থাকলে, সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি মুদ্রা, উপহারসামগ্রী, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, অলংকার ও মূল্যবান ধাতু।
২. সৌদি আরবে প্রবেশ কিংবা দেশটি থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে শুল্ক ঘোষণাপত্র পূরণের ওপর জোর দিয়েছে হজ মন্ত্রণালয়। যেসব হজযাত্রী ৬০ হাজার রিয়ালের বেশি বিদেশি মুদ্রা কিংবা এর চেয়ে বেশি মূল্যের সামগ্রী বহন করবেন, তাদের ক্ষেত্রে শুল্ক ঘোষণা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
৩. হজ মন্ত্রণালয় কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, যেসব হজযাত্রী শুল্ক ঘোষণাপত্র পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
আরও পড়ুন:সময়মতো ভিসা না হওয়ায় রোববার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ধরতে পারেননি ১৪০ জন হজযাত্রী। ভিসা জটিলতা সমাধানের পর তাদেরকে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে সোমবারের মধ্যে সৌদি আরবে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হজ ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ।
বিমান বাংলাদেশ জানিয়েছে, এই ফ্লাইট মিস করার কারণে প্রত্যেক যাত্রীকে ৪০০ ডলার করে অতিরিক্ত দিতে হবে। সে হিসাবে ১৪০ জন হজযাত্রীকে বাড়তি ৫৬ হাজার ডলার গুনতে হবে, টাকার অংকে যা ৬০ লাখের বেশি।
প্রশ্ন উঠেছে, এই অতিরিক্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের দিতে হবে, নাকি সময়মতো ভিসা দিতে না পারা এজেন্সিকে তা বহন করতে হবে।
হজক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হজযাত্রীরা ইতোমধ্যে সব খরচ পরিশোধ করেছেন। সময়মতো ভিসা দিতে না পারলে এই সমস্যার দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির। ফলে অতিরিক্ত যে ডলার বিমানকে দিতে হবে তা এজেন্সিকেই বহন করতে হবে।’
রোববার সন্ধ্যায় হজক্যাম্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) সাইফুল ইসলাম জানান, ভিসা না হওয়া ১৪০ জনের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ১৩৬ জনের ভিসা হয়ে গেছে। বাকিদেরও ভিসা হয়ে যাবে।
ফ্লাইট মিস করা প্রতি যাত্রীর জন্য ৪০০ ডলার করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রোববার ১৪০টি আসন ফাঁকা রেখে বিমানের নির্ধারিত ফ্লাইটটি সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে। এখন যেসব যাত্রী ফ্লাইট মিস করেছেন তাদের সবাইকে একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানো সম্ভব নয়।
‘বিমানের সিডিউল ফ্লাইটে মদিনা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে সবাইকে একসঙ্গে পাঠানো যাবে না। এজন্য যাত্রীপ্রতি অতিরিক্ত চারশ’ ডলার করে খরচ দিতে হবে।’
রোববার বিকেলে রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ২টা ২০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওই ১৪০ হজযাত্রীর সৌদি আরবের জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে এসে তারা জানতে পারেন, তাদের ভিসা হয়নি। এ অবস্থায় তাদের না নিয়েই বিমানের নির্ধারিত ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ফ্লাইট মিস হওয়া হজযাত্রীদের একজন গাজিউর রহমান বলেন, ‘হজ এজেন্সি জান্নাত ট্রাভেলসের মাধ্যমে তাদের সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। এজেন্সির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে সময়মতো ভিসা হয়নি।’
এ বিষয়ে হজ এজেন্সি জান্নাত ট্রাভেলসের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:৪১৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে চলতি বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩০০১ ।
শনিবার গভীর রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে জেদ্দায় পৌঁছায়।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিমানের আরও ৪টি ফ্লাইট আজ দিনের বিভিন্ন সময়ে জেদ্দার উদ্দেশে হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকা ছাড়বে।
ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিমসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে হজযাত্রীদের বিদায় জানান।
ওই সময় বিমান প্রতিমন্ত্রী হজযাত্রীদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার জন্য দোয়া কামনা করেন।
এর আগে হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সুষ্ঠু হজ পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লিট আধুনিকায়নের ফলে সক্ষমতা বাড়ায় ২০১৯ সাল থেকে বিমান তাদের নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
‘এ বছরও হজযাত্রী পরিবহনে বিমান তাদের ৪টি অত্যাধুনিক ও সুপরিসর বোয়িং-৭৭৭ ইআর এবং ১টি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারসহ মোট ৫টি উড়োজাহাজ ব্যবহার করবে।’
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণেই ২০১৯ সাল থেকে ‘রোড টু মক্কা ইনেশিয়েটিভ’- এর আওতায় হজযাত্রীদের সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন ঢাকায় বিমানবন্দরে সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। এমনকি সৌদি আরবে পৌঁছার পর তাদের লাগেজও নির্ধারিত আবাসনে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এতে হজযাত্রীদের পরিশ্রম, সময় ও কষ্ট লাঘব হয়েছে। হজযাত্রা হয়েছে সহজ ও আরামদায়ক।
“প্রধানমন্ত্রীর এই সফল ও জনবান্ধব কূটনৈতিক উদ্যোগের সম্পূর্ণ সুবিধা যাতে হজযাত্রীগণ পান, সেই ব্যাপারে আমরা সবসময় সচেষ্ট থেকেছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।”
এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে মোট যাত্রীর অর্ধেক ৬১ হাজার ১১১ জনকে পরিবহন করবে বিমান। বাকি হজযাত্রী পরিবহন করবে সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাস।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের আকাশে কোথাও শনিবার ১৪৪৪ হিজরি সনের জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সে হিসাবে রোববার শাওয়াল মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। আর পবিত্র জিলকদ মাস গণনা শুরু হবে পরদিন সোমবার থেকে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের সভাকক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
সভায় ১৪৪৪ হিজরি সনের জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আ. কাদের শেখ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ঢাকা) ইরতিজা হাসান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল হক ভূঞা, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ এবং চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য