সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়িয়েছে সরকার।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে জানান, হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এ সময়ের মধ্য কোটা পূরণ হওয়ার আশা জানিয়ে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার কোথাও কোথাও নির্বাচনের জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রমে সমস্যা হয়েছে। কোথাও কোথাও ব্যাংক সার্ভিস দিতে পারেনি বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। তাই সময় বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত সরকারিভাবে ৯ হাজার ৮৬৩ জন এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে এক লাখ এক হাজার ১৯৩ জন নিবন্ধিত হয়েছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ হবে। এবার গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু করে সরকার। তখন বলা হয়েছিল সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৪২ হাজার ২৯৩ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৬৪ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও কোটা পূরণ না হওয়ায় নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। এরপরেও কোটা পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ৭ মার্চ এবং তৃতীয় দফায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৪৫ হাজার ৬০৫ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৯০ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবে বলে জানানো হয়।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জনের হজে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৮৩ জন সরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন। তবে সরকারি-বেসরকারি উভয় কোটা পূরণ হবে বলে আশা করছেন অতিরিক্ত সচিব মতিউল ইসলাম।
তিনি বলেন, সরকারিতে নিবন্ধনের হার একটু স্লো। কিন্তু বেসরকারি কোটা শেষ হওয়ার পর অনেকে সরকারিতে এসে নিবন্ধন করবেন। আশা করছি সরকারি-বেসরকারি উভয় কোটাই পূরণ হবে।
সবশেষ হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের আর বাড়ানো হবে না।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সরকারিভাবে হজে যেতে এবার খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। আর হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারিভাবে হজে যেতে এবার সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা, এর সঙ্গে যুক্ত হবে কোরবানির খরচ।
গত বছর সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়। প্যাকেজ-১ এর ক্ষেত্রে এবার খরচ বেড়েছে ৯৬ হাজার ৬৭৮ টাকা, প্যাকেজ-২ এ এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৬১ হাজার ৮৬৮ টাকা। বেসরকারিভাবে হজে যেতে গত বছরের থেকে এবার এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৪ টাকা খরচ বেড়েছে।
হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর সুপারিশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত বুধবার কমিটির সভায় বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ধরা হয়েছিল এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন:দিনভর রোজা রেখে ইফতারে চাই এমন কিছু যা প্রশান্তি আনবে দেহ ও মনে। তাই ইফতারে রাখতে পারেন ওট মিল্কের মজাদার স্মুদি। শেফ কুনাল মুথারের ওট মিল্ক স্মুদির রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ
১. ১ গ্লাস চিনি ছাড়া ওট মিল্ক
২. ১ টেবিল চামচ চিনাবাদামের মাখন
৩. ১টি কলা
৪. সামান্য বরফ
প্রস্তুত প্রণালি
ওট মিল্ক, কলা, চিনাবাদামের মাখন এবং বরফ একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। তারপর গ্লাসে ঢেলে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে রাতে তারাবির নামাজ পড়ে থাকেন মুসলিমরা। এ নামাজ ও কিয়ামুল লাইলের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে কি না, তা জানতে চান অনেকে। এ বিষয়ে জবাব দিয়েছে ইসলামি প্রশ্নোত্তরভিত্তিক ওয়েবসাইট ইসলামকিউএ ডটইনফো।
ওয়েবসাইটটিতে একজন প্রশ্নকারী বলেন, ‘আমি কিয়ামুল লাইল ও তারাবির নামাজের মধ্যে পার্থক্য জানতে চাই।’
এর উত্তরে বলা হয়, “আলহামদুলিল্লাহ। তারাবির নামাজ কিয়ামুল লাইলের অন্তর্ভুক্ত। এ দুইটি পৃথক কোনো সালাত নয়, যেমনটি অনেক সাধারণ মানুষ ধারণা করে থাকেন; বরং রমজান মাসে যে ‘কিয়ামুল লাইল’ করা হয়, সেটাকে ‘সালাতুত তারাবি’ বা বিরতিপূর্ণ নামাজ বলা হয়। কারণ সলফে সালেহিন (সাহাবি, তাবেয়ি, তাবে-তাবেয়িদের প্রজন্ম) যখন এই সালাত আদায় করতেন, তখন তারা প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত অন্তর বিরতি নিতেন।
“কেননা তারা মহান মৌসুমকে কাজে লাগাতে ও রাসুলের হাদিসে [যে ব্যক্তি ইমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রমজান মাসে কিয়ামুল লাইল পালন করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়] (বুখারি ৩৬) বর্ণিত সওয়াব পাওয়ার আশায় নামাজকে দীর্ঘ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন।”
ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ। প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলিমরা হজ পালন করেন। ব্যতিক্রম নন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও। এ ক্ষেত্রে তাদের অবলম্বন করতে হয় বেশ কিছু সতর্কতা।
নির্দেশনা
হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডার্স (ডিপিআরএল) নামের উদ্যোগ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ নিয়ে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রামের যৌথ এ প্রয়াসে সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।
হজ পালনে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডিপিআরএলের পরামর্শগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
১. হজযাত্রার দুই মাস আগেই ডায়াবেটিস চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. প্রয়োজনীয় টিকা তথা ভ্যাকসিন নিতে হবে।
৩. চিকিৎসকের কাছ থেকে পরিপূর্ণ ব্যবস্থাপত্র বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিতে হবে।
৪. জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা করে নিতে হবে। (কমপক্ষে ৪৫ দিনের ওষুধ)
৫. অসুস্থতার দিনে (যেমন: ডায়রিয়া, বমি, সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি) আপনার করণীয় সম্পর্কে চিকিৎসক অথবা হেলথ এডুকেটরের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামল ও ওআরএসের মতো ওষুধ সঙ্গে নিতে হবে।
৬. একটি ভালো গ্লুকোমিটার, স্ট্রিপ, লেনসেট ও অ্যালকোহল সোয়াব সঙ্গে নিতে হবে।
৭. ইনসুলিন ব্যবহার করলে ইনসুলিন ভায়াল, পেন, সিরিঞ্জ ও নিডল সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। যদি ঠান্ডা জায়গায় রাখার ব্যবস্থা না থাকে মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে, সে ক্ষেত্রে আলাদাভাবে প্রয়োজনমতো ইনসুলিন নিয়ে যাবেন। বাকি ইনসুলিন মক্কায় আপনার ফ্রিজে রেখে যাবেন।
৮. হাইপোগ্লাইসেমিয়া চিকিৎসার জন্য দ্রব্যাদি, যেমন: গ্লুকোজের ট্যাবলেট, চকলেট, জেল বা জেলি, জুস, মিষ্টি বিস্কুট বা কেক সঙ্গে রাখতে হবে।
৯. খাবার খেতে বা পেতে দেরি হলে তা মোকাবিলার জন্য শর্করাজাতীয় পানীয় সঙ্গে রাখুন, তবে অত্যধিক শর্করাজাতীয় পানীয়, ফ্রুট জুস ও খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
১০. আরামদায়ক ও সঠিক মাপের জুতা সঙ্গে নিতে হবে।
পায়ের যত্নে করণীয়
১. সবসময় নরম, বদ্ধ ও আরামদায়ক স্যান্ডেল বা কাপড়ের জুতা ব্যবহার করা উচিত।
২. নতুন জুতা না পরা ভালো। অভ্যস্ত হতে সময় লাগে এমনকি পায়ে ফোসকা পড়তে পারে। হজের দুই-তিন মাস আগে কেনা জুতা, যা পায়ে ফিট হয়ে গেছে, তাই পরা ভালো।
৩. পা ধোয়া, অজু বা গোসল করার পরে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পায়ের আঙুলের ফাঁকে ভেজা না থাকে। টিস্যু পেপার দিয়ে পা শুকিয়ে নিন। পায়ে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকলে তাওয়াফ ও সা’ঈ করার সময় নরম মোজা ব্যবহার করতে পারেন।
৪. যেকোনো ভিড়ের সময় পা সাবধানে রাখা উচিত।
৫. পা পরিষ্কার ও নখ কেটে ছোট করা উচিত।
৬. প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পায়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগানো উচিত।
৭. প্রতিদিন পা পর্যবেক্ষণ করুন। বিশেষ করে ওপরের দিক, পায়ের আঙুলের ফাঁকে, পায়ের তলা এবং গোড়ালি ভালোভাবে পরীক্ষা করা জরুরি।
৮. যদি কখনও পায়ে আঘাত লাগে বা ক্ষত সৃষ্টি হয়, তবে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
আরও পড়ুন:দিনভর রোজা রেখে ইফতারে চাই এমন কিছু যা প্রশান্তি আনবে দেহ ও মনে। তাই ইফতারে রাখতে পারেন আপেল চিয়া সিডের মজাদার স্মুদি। শেফ বৈশালী লুথরা জলির আপেল চিয়া সিডের মজাদার স্মুদির রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ
১. ১টি আপেল
২. ১ কাপ দই
৩. ১ চা চামচ পিনাট বাটার (অপশনাল)
৪. ১ চা চামচ চিয়া সিড
প্রস্তুত প্রণালি
কেটে রাখা আপেলের টুকরা, দই, পিনাট বাটার ও চিয়া সিড একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। তারপর গ্লাসে ঢেলে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য ও পানীয় বর্জন করেন মুসলিমরা। এ সময়ে পানাহার, শারীরিক সম্পর্ক কিংবা ইচ্ছাকৃত বমির মতো কারণে রোজা ভেঙে যায়। আবার এমন কিছু কারণ রয়েছে, যেগুলোতে ভঙ্গ হয় না রোজা।
কোন কোন কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না, তা জানিয়েছে ইসলামি প্রশ্নোত্তরভিত্তিক ওয়েবসাইট ইসলামকিউএ ডটইনফো। ওই সাইটে এক প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়, এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো রোজা নষ্ট করে না।
১. এনিমা ব্যবহার, চোখে কিংবা কানে ড্রপ দেয়া, দাঁত তোলা, কোনো ক্ষতস্থানের চিকিৎসা নিলে রোজা ভঙ্গ হয় না। [মাজমুউ ফাতাওয়া শাইখুল ইসলাম (২৫/২৩৩, ২৫/২৪৫)]
২. হাঁপানি রোগের চিকিৎসা কিংবা অন্য কোনো রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে জিহ্বার নিচে যে ট্যাবলেট রাখা হয়, সেটা থেকে নির্গত কোনো পদার্থ গলার ভেতরে চলে না গেলে সেটা রোজা নষ্ট করবে না।
৩. মেডিক্যাল টেস্টের জন্য যোনিপথে যা কিছু ঢোকানো হয়, যেমন: সাপোজিটরি, লোশন, কলপোস্কোপ, হাতের আঙুল ইত্যাদি।
৪. স্পেকুলাম বা আইইউডি বা এ জাতীয় কোনো মেডিক্যাল ডিভাইস জরায়ুর ভেতরে প্রবেশ করালে।
৫. নারী বা পুরুষের মূত্রনালি দিয়ে যা কিছু প্রবেশ করানো হয়, যেমন: ক্যাথিটার, সিস্টোস্কোপ, এক্সরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত রঞ্জক পদার্থ, ওষুধ, মূত্রথলি পরিষ্কার করার জন্য প্রবেশকৃত দ্রবণ।
৬. দাঁতের রুট ক্যানেল করা, দাঁত ফেলা, মেসওয়াক দিয়ে কিংবা ব্রাশ দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে রোজা ভঙ্গ হবে না যদি না কোনো ব্যক্তি কিছু গলায় চলে গেলে সেগুলো গিলে ফেলে।
৭. গড়গড়া কুলি ও চিকিৎসার জন্য মুখে ব্যবহৃত স্প্রের কারণে রোজা ভাঙবে না যদি কোনো কিছু গলায় চলে এলেও ব্যক্তি সেটা গিলে না ফেলে।
৮. অক্সিজেন, অ্যানেসথেশিয়ার জন্য ব্যবহৃত গ্যাস রোজা ভঙ্গ করবে না যদি না রোগীকে এর সঙ্গে কোনো খাদ্য-দ্রবণ দেয়া হয়।
৯. চামড়া দিয়ে শরীরে যা কিছু প্রবেশ করলে। যেমন: তেল, মলম, ওষুধ ও রাসায়নিকযুক্ত ডাক্তারি প্লাস্টার।
১০. ডায়াগনস্টিক ছবি তোলা কিংবা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হৃৎপিণ্ডের ধমনিতে কিংবা শরীরের অন্য কোনো অঙ্গের শিরাতে ছোট একটি টিউব প্রবেশ করানোতে রোজা ভঙ্গ হবে না।
১১. নাড়িভুঁড়ি পরীক্ষা করার জন্য কিংবা অন্য কোনো সার্জিক্যাল অপারেশনের জন্য পেটের ভেতর মেডিক্যাল স্কোপ প্রবেশ করালেও রোজা ভাঙবে না।
১২. লিভার কিংবা অন্য কোনো অঙ্গের নমুনাস্বরূপ কিছু অংশ সংগ্রহ করলেও রোজা ভাঙ্গবে না, যদি এ ক্ষেত্রে কোনো দ্রবণ গ্রহণ করতে না হয়।
১৩. গ্যাসট্রোস্কোপ পাকস্থলীতে ঢোকানো হলে রোজা ভঙ্গ হবে না যদি না সঙ্গে কোনো দ্রবণ ঢোকানো হয়।
১৪. চিকিৎসার স্বার্থে মস্তিষ্কে কিংবা স্পাইনাল কর্ডে কোনো চিকিৎসা যন্ত্র কিংবা কোনো ধরনের পদার্থ ঢোকানো হলে রোজা ভঙ্গ হবে না।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখেন ডায়াবেটিস রোগীরা। এ ক্ষেত্রে মাসজুড়ে তাদের বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
রোজার মাসে ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ ডায়াবেটিস প্রিভেনশন থ্রো রিলিজিয়াস লিডারস তথা ডিপিআরএল।
এটি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের যৌথ প্রয়াস। এতে আর্থিক সহযোগিতা করেছে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশন।
ডিপিআরএলের নির্দেশনা
ডিপিআরএল বলেছে, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখতে পারবেন কি না, সুস্বাস্থ্যকর খাবার কীভাবে খেতে হবে, দৈনন্দিন কায়িক পরিশ্রম কীভাবে করতে হবে, কীভাবে ঘরে বসে নিজের রক্ত পরীক্ষা করতে হবে, খাবার বড়ি বা ইনসুলিনের মাত্রা কী হবে, শর্করা কমে গেলে ও অন্যান্য অসুস্থতা হলে কী করণীয়, এই বিষয়গুলো চিকিৎসকের কাছ থেকে বিশদভাবে জেনে নিতে হবে। এর বাইরেও ১০টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ডিপিআরএলের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে ডায়াবেটিসের ওষুধ ও রোজা ভেঙে ফেলার প্রস্তুতিতে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে।
১. সারা দিন রোজা রাখার পর এমন খাবার খেতে হবে, যাতে শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. ইফতারের সময় চিনিজাতীয় খাবার খাবেন না। চিনিুমক্ত পানীয় বেছে নিন। পানীয়র সঙ্গে চিনি মেশাবেন না। যদি মিষ্টি পানীয় পছন্দ করে থাকেন, তবে আর্টিফিশিয়াল (ডায়াবেটিসের চিনি) সু্ইটনার, যেমন: ক্যানডেরেল বা সুইটেক্স ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ভাজা খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। যেমন: পরোটা, সমুচা, কাবাব ইত্যাদি।
৪. খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ফলমূল, শাকসবজি, আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।
৫. সেহরির খাবার শেষ সময়ের অল্প কিছু আগে খাওয়া বাঞ্ছনীয়। সেহরির সময় নামমাত্র পরিমাণে খাবার খেয়ে রোজা রাখা উচিত নয়। এমনটি করলে আপনার গ্লুকোজের সঠিক ভারসাম্য বজায় থাকবে না।
৬. রোজার দিনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অতিরিক্ত ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই, তবে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা উচিত। রোজার সময় তারাবিহর নামাজে যে শারীরিক শ্রম হয়, নিয়মিত হাঁটার সমান হওয়ায় রোজার মধ্যে আলাদা করে হাঁটার প্রয়োজন নেই।
৭. রোজার দিনে বিকেলে দৈহিক পরিশ্রমের কাজ না করে বিশ্রাম নেয়া ভালো।
৮. রোজা রেখে ইনসুলিন নেয়া যাবে।
৯. ডায়াবেটিস রোগীর সকালের ওষুধ ইফতারের সময় খেতে হবে। রাতের ওষুধ খেতে হবে সেহরির সময় (রাতের ওষুধের ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক কমিয়ে সেহরির সময় খেতে হবে)। মুখে খাবার ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হবে এবং তা অবশ্যই রোজার আগেই করতে হবে।
১০. নিম্নের বিশেষ অবস্থায় রোজা ভেঙে ফেলতে হতে পারে।
(ক) রক্তের গ্লুকোজ ৭০ মিগ্রা/ডিএল (৩.৯ মিমো/লি)-এর কম হলে
(খ) রক্তের গ্লুকোজ ৩০০ মিগ্রা/ডিএল (১৬.৭ মিমো/লি.)-এর বেশি হলে
(গ) যেকোনো অসুস্থতায়
আরও পড়ুন:জেরুজালেমে মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদে রমজানের প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার মুসল্লি।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের উত্তেজনার মধ্যেই শুক্রবার রমজান মাসের প্রথম জুমা আদায় করেন মুসল্লিরা।
মসজিদ প্রাঙ্গণের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছে জর্ডানীয় ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল।
কাউন্সিলের প্রধান আজম আল খতিব বলেন, শুক্রবার আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ হয় এবং পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেন, জুমায় ৮০ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। তবে জর্ডানীয় ওয়াকফ ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল জানায়, এক লাখ মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র মসজিদটিতে।
ইসরায়েলি পুলিশ জানায়, রমজানের প্রথম জুমার কথা বিবেচনায় এদিন শহরজুড়ে ২৩০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পশ্চিম তীরের নাবলুস শহর থেকে আল-আকসায় নামাজ পড়তে আসেন ৬২ বছরের আবুদ হাসান। তিনি বলেন, মুসলিমদের জন্য বছরের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস রমজান। তাই আল-আকসায় নামাজ আদায় করতে এসেছি।
শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে পেরে তিনি মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রমজানে সহিংসতা হ্রাসে চলতি মাসে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল মিসরে বৈঠকে সম্মত হয়েছে। তবে পশ্চিমতীরে গত বৃহস্পতিবার রমজানের শুরুতেই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি যুবক নিহত হন। গত জানুয়ারি থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতায় ৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য