সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দোল পূর্ণিমা বা হোলি উৎসব আজ মঙ্গলবার।
বাংলাদেশে এই উৎসবটি ‘দোলযাত্রা’, ‘দোল পূর্ণিমা’ নামেও পরিচিত। দোলযাত্রা ও গৌর পূর্ণিমায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন মন্দিরে পূজা, হোম যজ্ঞ, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দোল উৎসব ও কীর্তনের হওয়ার কথা রয়েছে।
দোলযাত্রা হিন্দু বৈষ্ণবদের উৎসব। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, এ দিন শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে রাধিকা এবং তার সখীদের সঙ্গে আবির খেলেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি। এ কারণে দোলযাত্রার দিন এ মতের বিশ্বাসীরা রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ আবিরে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় তারা রং খেলার আনন্দে মেতে ওঠেন।
বিশ্বের অনেক স্থানে উৎসবটি শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা নামে অধিক পরিচিত হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মাদ্রাজ, উড়িষ্যা প্রভৃতি স্থানে দোল উৎসব এবং উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারত ও নেপালে ‘হোলি’ নামে পরিচিত। কোন কোন স্থানে এ উৎসবকে বসন্ত উৎসবও বলা হয়। পুষ্পরেণু ছিটিয়ে রাধা-কৃষ্ণ দোল উৎসব করতেন। সময়ের বিবর্তনে পুষ্পরেণুর জায়গায় এসেছে ‘আবির’।
‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লোহিত্য, আমার পাপ হরণ করো’ মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা পাপমুক্তির বাসনায় লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে অংশ নিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাতীর্থ অষ্টমী স্নানোৎসব। দুদিনব্যাপী এ উৎসবে নদের ১৮টি ঘাটে ১০ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে বলে জানিয়েছে উৎসব উদযাপন পরিষদ। এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ,নেপাল ও ভুটান থেকে পুণ্যার্থীরা স্নানোৎসবে যোগ দিয়েছেন।
শুক্ল তিথি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ৯টা ১৭ মিনিটে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহা অষ্টমীর স্নানোৎসব। দু’দিনব্যাপী এই উৎসব ঘিরে লাখো পুণ্যার্থীর পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে লাঙ্গলবন্দের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা।
ভারতের কলকাতা থেকে আগত পুণ্যার্থী জ্যাতি রানী বলেন, ‘তীর্থযাত্রীরা লাঙ্গলবন্দে আসেন পাপ মোচনের জন্য। একই বাসনা নিয়ে বহুদূর থেকে এখানে ছুটে এসেছি। আয়োজনের সব কিছুই সুন্দর। তবে যানজট আর বৃষ্টিতে ভোগান্তি হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জের লাল মোহন চন্দ বলেন, ‘যানজট পার করে হলেও পরিবারের সবাই আসতে পেরেছি। তবে বৃষ্টিতে পরিবার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। এখানে স্নান করার ইচ্ছে ছিলো বহু বছরের। জীবনে যত পাপ আছে তা থেকে মুক্তি পেতে প্রার্থনা জানিয়েছি মহাভাগ ব্রহ্মপুত্রের কাছে।’
নারায়ণগঞ্জের পালপাড়া থেকে আগত প্রাপ্তি সাহা বলেন, ‘পুরো পরিবার নিয়ে স্নান করেছি রাজ ঘাটে। প্রার্থনা করেছি- ভালো থাকুক সবাই। মঙ্গল হোক দেশ ও জাতির।’
মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা পূবালী রায় বলেন, ‘একে হলো বৃষ্টি, তার ওপর সড়কে যানজট। তাই ট্রলার পথই আমরা বেছে নিয়েছি। আমাদের গ্রামসহ আশপাশের ৫০টির বেশি নৌযান এসেছে লাঙ্গলবন্দে। প্রতি বছরই আমরা এখানে আসি। তবে গেল কয়েক বছর করোনা মহামারির কারণে বড় পরিসরে উৎসব হয়নি। এবার অনেক মানুষ এসেছে। তাই ট্রলার ঘাটে ভিড়তেও সময় লেগেছে। তবুও ভালো লাগছে স্নান সম্পন্ন করতে পেরে।’
সীতাকুণ্ড থেকে আগত পুরোহিত কৃষ্ণ কুমার সাহা জানান, হিন্দু ধর্মের শাস্ত্রীয় পুরানমতে, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে গোসল করে পাপমুক্ত হন। লাঙ্গল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে বহ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। পৌরাণিক এ কাহিনীকে স্মরণ করে প্রতি বছর চৈত্র মাসে মহাতীর্থ অষ্টমীতে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে তীর্থযাত্রীরা পুণ্য লাভের আশায় জড়ো হন।
দু’দিনব্যাপী স্নান উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের নির্বাহী সদস্য শিখন চন্দ সরকার। তিনি বলেন, ‘এ বছর দশ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে লাঙ্গলবন্দে। সব রকম আয়োজন সফল হওয়ায় খুশি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।’
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান জানান, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়৷ পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সমন্বয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তীর্থস্থানের তিন কিলোমিটার এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। কোনো ধরনেন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এবার শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হচ্ছে উৎসব। তবে পুণ্যার্থী বেশি হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট লেগে যায়। মহাসড়কের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাত থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবারের পাশাপাশি পানি পান থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। রোজা শীতকালে হলে তৃষ্ণার অনভূতি কম হয়, তবে গ্রীষ্মকালে রোজায় দেহে পানিশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি হয়, যা থেকে হতে পারে অবসাদ ও বমি বমি ভাব।
কাতারের প্রধান অলাভজনক স্বাস্থ্যসেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন জানিয়েছে, সাধারণত শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক, ডায়াবেটিস, কিডনি বা অন্যান্য দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত কিংবা সূর্যের নিচে শারীরিক ব্যায়াম করা লোকজন পানিশূন্যতার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন।
রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়
হামাদ মেডিক্যাল করপোরেশন পানিশূন্যতা এড়াতে সাতটি পরামর্শ দিয়েছে।
১. ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে আট থেকে ১২ কাপ পানি পান করুন। ঠান্ডা পানির তুলনায় দ্রুত শোষণ হয় বলে কুসুম গরম পানি পান করা যেতে পারে।
২. রোজায় পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিদিন স্যুপ খেতে পারেন। শরীরে তরলের চাহিদা পূরণের ভালো উৎস হতে পারে খাবারটি।
৩. তরমুজ, টমেটো, শসা, আঙুরের মতো ফল ও সবজিতে অনেক পানি থাকে, যা তৃষ্ণা কমাতে সাহায্য করে।
৪. ইফতারে উচ্চ মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এ ধরনের খাবার শরীরে পানির চাহিদা বাড়ায়। এ ছাড়া সালাদ ও তরকারিতে লবণ কম দেয়া উচিত। বেশি পরিমাণে লবণ খেলে বাড়তে পারে তৃষ্ণা।
৫. গবেষণায় দেখা যায়, প্রচুর চিনি থাকায় মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে তৃষ্ণা বাড়ে। এর পরিবর্তে ফল খেতে পারেন, যা দেহে তরলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি তৃষ্ণাও মেটায়।
৬. ক্যাফেইন শরীরের তরল শুষে নিয়ে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে রমজানে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। এ ধরনের পানীয়র মধ্যে এনার্জি ও কার্বনযুক্ত পানীয়, চা ও কফি রয়েছে। ধূমপান মুখকে শুষ্ক করে তৃষ্ণা বাড়ায়। এ কারণে ধূমপানও এড়িয়ে চলুন।
৭. গরমের দিনে সূর্যতাপে ব্যায়াম করলে প্রচুর পরিমাণে পানি পানের চাহিদা তৈরি হয়। এ কারণে রোজায় ব্যায়ামের সবচেয়ে ভালো সময় হলো ইফতারের পর। কারণ ইফতারের মধ্য দিয়ে শরীর পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয়র মাধ্যমে শক্তি পায়। রোজা ভেঙে ব্যায়াম করলে শরীর থেকে ঝরে যাওয়া তরলের চাহিদা পূরণের জন্যও পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখেন ডায়াবেটিস রোগীরা। এ ক্ষেত্রে মাসজুড়ে খাবারের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ে তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। সতর্কতার সঙ্গে খাদ্যগ্রহণ কিংবা চলাচল করলে তারা অনেক বিপদের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
রোজায় লাচ্ছি খেতে ইচ্ছুক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কীভাবে পানীয়টি তৈরি করতে হয়, তা তুলে ধরা হয়েছে বিটিভির এক অনুষ্ঠানে। এ প্রক্রিয়ায় খুব সহজেই লাচ্ছি বানানো যাবে।
উপকরণ
তিনটি খেজুর ও দুই টেবিল চামচ টক দই।
প্রস্তুত প্রণালি
খেজুর কুচি ও টক দই একসাথে মিশিয়ে ব্লেন্ডারে নিয়ে তাতে কিছু বরফকুচি ও অল্প পরিমাণ পানি দিন। এবার ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ জন যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে। ওইসব যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।
জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলটি জেদ্দা থেকে আনুমানিক ৬০০ কিলোমিটার দূরে। সবশেষ পাওয়া খবরে এই দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ জন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করেছেন।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূতাবাস কর্মকর্তারা সার্বিক বিষয় তদারকি করছেন।
এর আগে আরব নিউজ জানায়, সৌদি আরবে বাস উল্টে আগুন ধরে যাওয়ায় অন্তত ২০ ওমরাহ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৯জন।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-খাবারিয়া জানায়, আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে একটি সেতুর ওপর বাসটি উল্টে আগুন ধরে যায়। বাসের যাত্রীরা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা নগরীতে যাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রেক কাজ না করায় সেতুর এক পাশে গিয়ে ধাক্কা খায় বাসটি। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।
সৌদি প্রেসের তথ্যানুযায়ী, ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আকাবা শারের সড়কটি প্রায় ৪০ বছর আগে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়।
দিনভর রোজা রেখে ইফতারে চাই এমন কিছু যা প্রশান্তি আনবে দেহ ও মনে। তাই ইফতারে রাখতে পারেন স্ট্রবেরির মজাদার স্মুদি। শেফ স্নেহা শিন্ডের স্ট্রবেরি স্মুদির রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ
১. ৮টি স্ট্রবেরি
২. ১/২ কাপ দুধ
৩. ১/২ কাপ দই
৪. ৩ টেবিল চামচ চিনি
৫. ২ চা চামচ ভ্যানিলা এক্সট্রাক্ট
৬. পরিমাণমতো বরফ কুচি
প্রস্তুত প্রণালি
কেটে রাখা স্ট্রবেরি, দুধ, দই, চিনি, ভ্যানিলা এক্সট্রাক্ট ও পরিমাণমতো বরফ কুচি একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। তারপর গ্লাসে স্মুদি ঢেলে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:হজে যেতে নিবন্ধনের জন্য পঞ্চম দফায় সময় বাড়িয়েছে সরকার। আগামী ৩০ মে পর্যন্ত হজযাত্রার জন্য নিবন্ধন করা যাবে।
সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এর আগে সৌদি সরকার হজের খরচ কমানোয় সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার খরচ ১১ হাজার ৭২৫ টাকা করে কমিয়ে ২৭ মার্চ পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ছিল সরকার।
এই সময়ের মধ্যেও হজের কোটা পূরণ না হওয়ায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় পঞ্চম দফায় বাড়ানো হলো।
সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সরকারিভাবে ৯ হাজার ৮৯২ জন এবং বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতে এক লাখ ৭ হাজার ৪৮২ জন নিবন্ধিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:রমজান মাসে রাজধানীতে যানজট বাড়বে- এটি বরাবরের চিত্র। তবে টানা বন্ধ থাকায় প্রথম তিনদিন ঢাকার রাজপথে তেমন চিত্র ছিল না। তবে রমজানের প্রথম কর্মদিবস সোমবার ফিরে এসেছে সেই পুরনো চেহারা। যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী। যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে রাস্তায়।
সকালে অফিসমুখো মানুষের চাপে নগরীতে যানজট বেড়ে যায়। মূল সড়ক থেকে অলি-গলি পর্যন্ত ছিল যানবাহনের চাপ। আর বিকেলে অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষের চাপে পুরো নগরীতে নেমে আসে স্থবিরতা। ঢাকায় এমন কোনো সড়ক বা অলিগলি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যেখানে যানজট নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক সোমবার সকাল থেকেই কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় অফিসগামীদের। বেলা বাড়ার সঙ্গে শহরে যানজটের মাত্রাও বাড়ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় গাড়ি আটকে থাকে।
দুপুরের দিকে যানজটের মাত্রা কিছুটা কমে আসে। তবে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে রাস্তায়। ঘরমুখো মানুষকে সড়কে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, বাড্ডা, মহাখালী, হাতিরঝিল, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী ও কালশী এলাকায় ব্যাপক যানজট রয়েছে।
মহাখালী-গুলশান সড়কের একপাশ জুড়ে কেটে ফেলা হয়েছে। এতে এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় তৈরি হয়েছে যানজট। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর অন্যান্য অংশে। যানজটে আটকা পড়ে পথেই ইফতার করতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষকে।
ধানমন্ডি থেকে আসা গাড়ি মহাখালী হয়ে গুলশান-বাড্ডা বা বিমানবন্দর সড়কের দিকে চলাচল করতে পারছে না। একইভাবে যানজটের কারণে অচল হয়ে আছে রমনার সড়কগুলো।
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে কথা হলো মিরপুরগামী এক বাসের যাত্রীর সঙ্গে। তখন বিকেল সাড়ে ৪টা। শাহ আলম নামের ওই যাত্রী জানালেন, মতিঝিল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত আসতেই সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। এরপর থেকে কাকরাইল মোড়ে আটকে আছের প্রায় এক ঘণ্টা ধরে।
তিনি বলেন, ‘রমজানের প্রথম কর্মদিবসে যানজট হতে পারে এমন ধারণা ছিলই। সেজন্য আজ অফিস থেকে একটু আগেভাগেই বের হয়েছিলাম। কিন্তু কাকরাইল পর্যন্ত আসতেই আড়াই ঘণ্টা চলে গেছে। ইফতারের সময়ের আগে মিরপুরে পৌঁছতে পারব কীনা বুঝতে পারছি না।’
ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে থাকায় মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন স্বাধীন পরিবহনের বাসের চালক রহমতুল্লাহ। বাংলা মোটর মোড়ে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আজকে রাস্তায় ঠাডা পড়ছে। গাড়ির চাক্কাই ঘোরে না।’
ট্রাফিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাখালী-গুলশান সড়কে মহাখালীর আমতলী থেকে গাউসুল আজম মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার একটি অংশ কাটা রয়েছে। সে কারণে ওই সড়কে গাড়ি চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে রাজধানীর অন্য সড়কগুলোতে। এছাড়া আজকে রমজান শুরুর পর প্রথম কার্যদিবস। অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকায় যানজটের মাত্রা তীব্র হয়েছে।’
ট্রাফিক মহাখালী জোনের সহকারী কমিশনার আবুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমতলী থেকে গাউসুল আজম মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা কাটা। আমরা গাড়িগুলো বের করে দেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। খুবই ধীরগতিতে গাড়ি চলছে।’
মহাখালীর প্রভাবে রমনা এলাকায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে রাস্তাগুলোতে কোনো অবস্টাগল নেই। তেজগাঁও হয়ে মহাখালী দিয়ে গাড়ি চলাচল থমকে থাকায় এখান থেকে গাড়িগুলো সামনে যেতে পারছে না। সামনের অংশটুকু ক্লিয়ার হয়ে গেলে আমাদের এখানে আটকে থাকা গাড়িগুলো বের হয়ে যেতে পারবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য