× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Book fair Young people less interested in non fiction
google_news print-icon

বইমেলা: নন-ফিকশনে আগ্রহ কম তরুণদের

বইমেলা-নন-ফিকশনে-আগ্রহ-কম-তরুণদের
অমর একুশে বইমেলায় রোববার একটি স্টলে পছন্দের বই বাছাইয়ে ব্যস্ত কয়েক তরুণী। ছবি: নিউজবাংলা
অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিনে রোববার বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মীরা জানান, কিশোর-তরুণরা ফিকশন বই বেশি কিনছেন। আর যারা নন-ফিকশন বই কিনছেন তাদের অধিকাংশই পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সের।

পৃথিবীব্যাপী পাঠকের কাছে বরাবর ফিকশনের কদর বেশি। কিন্তু হাল আমলে ফিকশনের চেয়ে নন-ফিকশন বইয়ের পাঠক বাড়লেও অমর একুশে বই মেলায় তেমনটা দেখা যাচ্ছে না।

বইমেলায় বিভিন্ন প্রকাশনীতে থাকা বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেলায় এমনিতেই ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি। তার ওপর যেসব পাঠক বই কিনছেন তাদের অধিকাংশের আগ্রহ ফিকশন বইয়ে।

বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, কিশোর-তরুণরা ফিকশন বই বেশি কিনছেন। আর যারা নন-ফিকশন বই কিনছেন তাদের অধিকাংশই পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সের।

সময় প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রিজওয়ান বলেন, “নন-ফিকশনের চেয়ে ফিকশন বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। পুরো মেলায় একই চিত্র। ফিকশন বইয়ের মধ্যে আমাদের প্রকাশনীতে কয়েকটি বই এসেছে। আনিসুল হক স্যারের ‘যখনই জাগিবে তুমি’ আর সুভাস সিংহের ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব ও বাকশাল’ ভালো সাড়া পাচ্ছে।

“আর কিশোর-তরুণরা নন-ফিকশন বই বেশি কিনছেন না। বয়স্ক ব্যক্তি আর গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এসব বইয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”

শব্দশৈলী প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী বলেন, “নন-ফিকশন বই বেশি বিক্রি হচ্ছে না। তারপরও কমের মধ্যে বলতে গেলে রমা চৌধুরীর ‘একাত্তরের জননী’ বইটি ভালো যাচ্ছে। এছাড়া সাইফুল রাজীবের ‘প্রবাসের সাত কাহন’ আর নাফিজ ফুয়াদের ‘পজেটিভ সাইকোলজি অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ’ বইটি কিছু বিক্রি হচ্ছে।”

অনন্যা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ফারুক বলেন, “নন ফিকশনের মধ্যে ভালো বিক্রি হচ্ছে এরকম বই খুব কম। তবে ইমদাদুল হক মিলনের ‘যে জীবন আমার ছিল’ বইটি মোটামুটি সাড়া পাচ্ছে। বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণও চলে এসেছে। আসলে নন-ফিকশন বই কেনার পাঠক খুব কম। যা কিনছে তাদের মধ্যে মধ্যবয়সীই বেশি।”

কথাপ্রকাশ প্রকাশনীর ইনচার্জ জাফিউল ইসলাম বলেন, “এ বছর নতুন কিছু নন-ফিকশন বই এসেছে। এগুলোর মধ্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যারের ‘মুক্তি কত দূরে’, বদিউদ্দীন নাজিরের ‘বই প্রকাশে লেখকের প্রস্তুতি’ সাড়া পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরাই এসব বই কিনছে।”

প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মুশফিক বলেন, “আমাদের প্রকাশনীতে নন-ফিকশন বই সবচেয়ে বেশি। ফিকশন নেই বললেই চলে। তাই নন-ফিকশন বই আমাদের এখানে ভালো বিক্রি হচ্ছে।

“এ বছর নতুন আসা নন-ফিকশন বইয়ের মধ্যে মহিউদ্দিন আহমেদের ‘একাত্তরের মুজিব’, ‘ইতিহাসের বাঁকবদল একাত্তর ও পঁচাত্তর’ আর আনিসুল হকের ‘লেখক সঙ্গ’ ভালো বিক্রি হচ্ছে। আর পুরনো বইয়ের মধ্যে আকবর আলি খানের ‘পুরোনো সেই দিনের কথা’ ভালো বিক্রি হচ্ছে। এই বইগুলো ওল্ড এইজ এবং মিড এইজের পাঠকরা বেশি কিনছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কমসংখ্যকই এই বইগুলোর ক্রেতা।”

রোববার ছিল অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিন। এদিন নতুন বই এসেছে ৭৫টি। বিকেল সাড়ে ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘গোবিন্দ চন্দ্র দেব এবং ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজী আজিজুর রহমান এবং আমিনুর রহমান সুলতান। আলোচনায় অংশ নেন খান মাহবুব, হাসান অরিন্দম, শিহাব শাহরিয়ার, পাপড়ি রহমান ও রাজীব কুমার সরকার। সভাপতিত্ব করেন আবু মো. দেলোয়ার হোসেন।

এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কামরান হাসান, ফজলুর রহমান, জেবউননেছা ও শিবুকান্তি দাশ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন নূরুন্নাহার শিরীন, সরকার মাসুদ, কাজী আসাদুজ্জামান, কাজী আনারকলি, হাসান শরীফ এবং আসাদ কাজল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন রাশেদ হাসান, রূপশ্রী চক্রবর্তী, দেবাশিস কর ও ঝর্ণা পারুল।

সোমবারের সময়সূচি

সোমবার অমর একুশে বইমেলার ২০তম দিন। এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নুরুননবী শান্ত। আলোচনায় অংশ নেবেন মিহির মুসাকী, বেলাল হোসেন ও হোসেন আল মামুন। সভাপতিত্ব করবেন লুবনা মারিয়াম।

আরও পড়ুন:
৩ বই না রাখার শর্তে আদর্শকে মেলায় স্টল বরাদ্দের নির্দেশ
বইমেলায় রচনা পারভীনের ‘ঋষি শূন্যতায় সমর্পণ’
বইমেলায় কবি আজিম হিয়ার ‘নিরন্ন আললা’
প্রথম ছুটির দিনেই জমজমাট বইমেলা
বই মেলায় স্টল বরাদ্দ চেয়ে রিট

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Srimangale Garo community celebrate the Wangala festival

শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসবে মাতলো গারো জনগোষ্ঠী

শ্রীমঙ্গলে ওয়ানগালা উৎসবে মাতলো গারো জনগোষ্ঠী
শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া গারো লাইনে রোববার গারো সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী এই উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গারো জনগোষ্ঠী তাদের নতুন ফসল সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করেন।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া গারো লাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গারো জনগোষ্ঠীর ওয়ানগালা উৎসব। রোববার সকালে ওয়ানগালা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে গারো সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী এই উৎসবে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় গারো জনগোষ্ঠী তাদের নতুন ফসল সৃষ্টিকর্তার নামে উৎসর্গ করেন।

ওয়ানগালা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় একসময় জুম চাষের মাধ্যমে বছরে মাত্র একটি ফসল ফলতো। তখন ওই জুম বা ধান ঘরে তোলার সময় গারোদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’-কে উৎসর্গ করে এ উৎসবের আয়োজন করা হতো।

মূলত গারোরা ছিল প্রকৃতিপূজারী। সময় পরিক্রমায় গারোরা ধীরে ধীরে খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর তাদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রথাটি এখন ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে একত্রে পালন করা হয়। এক সময় তারা তাদের শস্য দেবতা মিসি সালজংকে উৎসর্গ করে ‘ওয়ানগালা’ পালন করলেও এখন তারা নতুন ফসল কেটে যিশু খ্রীষ্টকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করে থাকেন।

ওয়ানগালা উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রীতম দাস প্রমুখ।

আরও পড়ুন:
নেচে-গেয়ে উদযাপিত হলো গারোদের ‘ওয়ানগালা’ উৎসব
ওয়ানগালায় মুখরিত গারো পাহাড়

মন্তব্য

জীবনযাপন
Seng Kutsnem festival of Khasias

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব। ছবি: নিউজবাংলা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় আদিবাসী খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের ১২৫তম বর্ষবিদায় ও ১২৬তম নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়ায় আদিবাসী খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের ১২৫তম বর্ষবিদায় ও ১২৬তম নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খাসিদের আয় ও জীবিকার প্রধান উৎস পান চাষ। চলতি মৌসুমে পানের ব্যবসা মন্দা ও আর্থিক সংকটের কারণে ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ আয়োজন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিল খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। তবে পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় বেশ আড়ম্বরের সঙ্গেই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের আয়োজনে শনিবার আদিবাসী খাসিদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘সেং কুটস্নেম' অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবকে ঘিরে পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উপলক্ষে নানা রঙের পোশাক পরে খাসিরা নাচগান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। মাঠের এক পাশে খাসিদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মেলা বসে। মাঠের একপাশে সুপারি গাছের পাতা দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হয়। তবে এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় আয়োজন কিছুটা কম ছিল। কারণ একেবারে শেষ সময়ে এসে প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছরের ২৩ নভেম্বর মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। খাসিয়ারা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও সাজসজ্জায় সেজে নেচে–গেয়ে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন।

‘সেং কুটস্নেম’ উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন।

অনুষ্ঠানস্থলে মাঠ জুড়ে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরি জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন।

এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ অংশ নেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।

হেলেনা পতমী বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর আমাদের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি করে আসছি। অনুষ্ঠানটি ঘিরে আমরা খাসি সম্প্রদায়ের সবাই একসঙ্গে জমা হয়ে উৎসবে মেতে উঠি।’

খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘সেং কুটস্নেম’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পতমী বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমরা অনুষ্ঠানটি করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সেং কুটস্নেম আয়োজন করি।’

খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুছিয়াং বলেন, ‘সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। দেশ–বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন। খাসি সেং কুটস্নেম বা বর্ষবিদায় খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন উৎসব।’

আরও পড়ুন:
ঐতিহ্যবাহী ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসবে মাতলেন খাসিয়ারা
মৌলভীবাজারে মণিপুরী গারো ও খাসিয়াদের উৎসব, চলছে প্রস্তুতি
ইউটিউবারের উদ্যোগে অবশেষে খাসিয়াপুঞ্জিতে বসল প্রাথমিক বিদ্যালয়
ইনফো হান্টারের ভিডিও: খাসিয়াপুঞ্জিতে পানির দুর্ভোগ লাঘবের ব্যবস্থা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Mass Uprising Graffiti Exhibition

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শনিবার শুরু হয়েছে গ্রাফিতি প্রদর্শনী। ছবি: সংগৃহীত
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেয়।’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক অনুপ্রেরণামূলক দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র বা গ্রাফিতি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বিশ্বব্যাংক। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী।

সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য ছাত্র, তরুণ ও যুবসমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো এই আয়োজন শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শুরু হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু
পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে শনিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

‘পেইন্ট দ্য স্কাই, মেক ইট ইওরস: ফিউচার বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ অব দ্য ইয়ুথ’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে তিনি একটি প্রকাশনারও মোড়ক উন্মোচন করেন।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) আবদৌলায়ে সেক, কান্ট্রি ডিরেক্টর ও প্রতিনিধি (এশিয়া ও প্যাসিফিক) ড. ভ্যালেন্টাইন আচানচো এবং বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া দেশি-বিদেশি শিল্পানুরাগীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে প্রদর্শনী গ্যালারি।

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক তার বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণরা যে মূল ভূমিকা পালন করে তার স্বীকৃতি বিশ্বব্যাংক বরাবরই দিয়ে এসেছে।

‘একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়।’

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

প্রদর্শনীতে উপস্থিত জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট ও কমিক বুক আর্টিস্ট সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময় বাসস-কে বলেন, ‘একটি বিপ্লবের পর এই দেয়াল লিখন বা গ্রাফিতিগুলো আমাদের বাংলা সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠে। ম্যুরাল, গ্রাফিতি কিংবা কার্টুন যেহেতু সমাজের নেতিবাচক দিকগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে থাকে তাই এগুলো নিয়ে এতোদিন সেভাবে কোনো উৎসব হয়নি। তবে এখন হচ্ছে। আর তা তরুণদের ব্যাপারে আমাদের ধারণা একেবারে পাল্টে দিয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের আয়োজনে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রদর্শনী শুরু

প্রদর্শনীতে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ ১২টি জেলার তরুণ-যুবাদের আঁকা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত দেয়াল লিখন এবং দেয়ালচিত্র স্থান পেয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে।

আরও পড়ুন:
ঢাবিতে হেঁটে গ্রাফিতি দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা, করলেন প্রশংসা
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী চিত্রপ্রদর্শনী
ফ্লাইওভারের পিলারে ডিএনসিসির দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি

মন্তব্য

জীবনযাপন
Biswa Ijtema is the final date announcement in two phases

বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বেই, চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা

বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বেই, চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা ফাইল ছবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজাম (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারী) আয়োজন করবেন। আর ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন।

রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পবিত্র হজের পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জমায়েত আয়োজনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেয়া হয়েছে কোন পর্ব কাদের অধীনে আয়োজন করা হবে।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি শূরায়ী নেজামের অধীনে এবং দ্বিতীয় পর্ব ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থীদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজাম (মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারী) আয়োজন করবেন। আর আগামী ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন।

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ হস্তান্তর প্রসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ বিভাগীয় কমিশনার ঢাকার নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দেবেন। আর দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই কমিটি থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন এবং ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।

বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানা যায় বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এর আগে জানিয়েছিলেন যে বিশ্ব ইজতেমা এবার এক পর্বে আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত দুই পর্বেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই জামাত।

আরও পড়ুন:
তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার
ইজতেমায় আসার পথে মুসল্লির মৃত্যু
দুপক্ষকে একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান
ইজতেমায় মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: আইজিপি

মন্তব্য

জীবনযাপন
The government wants to organize the World Ijtema together on Turag shore

তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার

তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করতে চায় সরকার টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের একাংশ। ফাইল ছবি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ইজতেমা দুই ভাগ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মতেরও কিছুটা ভিন্নতা আছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।’

রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিগত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে এবার সরকার বিশ্ব ইজতেমা একীভূতভাবে এক পর্বে আয়োজন করতে চাইছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ইজতেমা দুই ভাগ হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে মতেরও কিছুটা ভিন্নতা আছে। আমরা তাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে বিশ্ব ইজতেমা একসঙ্গে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (উভয় পক্ষ) কাছে অনুরোধ করব- আপনারা নিজেদের মধ্যে যে সমস্যা আছে সেটা যদি নিজেরাই সমাধান করতে পারেন তাহলে ভালো হয়। আর যদি নিজেরা সমাধান করতে না পারেন আমরা আপনাদের সঙ্গে বসব। কীভাবে দু’পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে বিশ্ব ইজতেমা একটা করা যায় সেই চেষ্টা করব।’

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের অন্তর্বিরোধের কারণে গত কয়েক বছর ধরে দুই পর্বে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। সবশেষ গত বছরও প্রথম পর্বে শুরায়ে নিজাম অনুসারী মুসল্লিরা এবং দ্বিতীয় পর্বে নিজামুদ্দিন অনুসারী মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেন।

টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এই ইজতেমায় অংশ নেন। এছাড়া সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, কাতার, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের অসংখ্য মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিতে আসেন।

আরও পড়ুন:
দুপক্ষকে একসঙ্গে ইজতেমা আয়োজনের আহ্বান

মন্তব্য

জীবনযাপন
Kalpa ship floating festival in Bankkhali river

বাঁকখালীতে ভাসল ‘কল্প জাহাজ’

বাঁকখালীতে ভাসল ‘কল্প জাহাজ’ বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীর পূর্ব রাজারকুল ঘাটে আয়োজন করা হয় কল্প জাহাজ ভাসানো উৎসব। ছবি: নিউজবাংলা
কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীর পূর্ব রাজারকুল ঘাটে আয়োজন করা হয় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কল্প জাহাজ ভাসানো উৎসব। অপূর্ব কারুকাজে তৈরি একেকটি দৃষ্টিনন্দন জাহাজ নৌকায় বসিয়ে ভাসানো হয় নদীতে। বিকেল গড়াতেই উৎসব বর্ণীল হয়ে ওঠে হাজারো দর্শনার্থীর অংশগ্রহণে।

ফানুস উড়ানোর বর্ণিল আয়োজনে আকাশ রাঙানোর পর এবার প্রবারণায় কল্প জাহাজ ভাসানোর আনন্দে মেতেছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়। অপূর্ব কারুকাজে তৈরি একেকটি দৃষ্টিনন্দন জাহাজ নৌকায় বসিয়ে ভাসানো হয় নদীতে। জাহাজগুলো যাচ্ছে নদীর এপার থেকে ওপারে। আর সেই জাহাজে চলছে শত শত প্রাণের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। নদীর দুই পাড়েও উৎসবে মেতেছেন হাজারও নর-নারী।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীর পূর্ব রাজারকুল ঘাটে আয়োজন করা হয় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কল্প জাহাজ ভাসানো উৎসব। দুপুরে শুরু হওয়া এ উৎসব বিকেল গড়াতেই বর্ণীল হয়ে ওঠে হাজারো দর্শনার্থীর অংশগ্রহণে।

বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে যুগ যুগ ধরে বাঁকখালী নদীতে কল্প জাহাজ ভাসা উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। এবার ভাসানো হয় পাঁচটি কল্প জাহাজ।

বাঁকখালীতে ভাসল ‘কল্প জাহাজ’

কক্সবাজার শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে রামু উপজেলা সদর পার হয়েই বাঁকখালী নদীর ঘাট। বিকেল ৩টায় এই ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, লোকারণ্য নদীর দুই পাড়। গান-বাজনা, কীর্তন ও ফানুস ওড়াউড়িতে মেতে উঠেছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষরা।

পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠের নৌকার ওপর বসানো হয়েছে একেকটি কল্প জাহাজ। ইঞ্জিন নৌকাও দেখা গেল দুটি জাহাজে। পানিতে ভাসছে মোট পাঁচটি কল্প জাহাজ। মূলত বাঁশ, কাঠ, বেত ও রঙিন কাগজে রঙের কারুকাজে জাদি, হাঁস, ময়ূর, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব কল্প জাহাজে। চমৎকার নির্মাণশৈলী আর বৈচিত্র্যে ভরা প্রতিটি জাহাজই যেন স্বকীয়তায় অনন্য।

ভাসমান এসব জাহাজে চলছে বৌদ্ধ কীর্তন। কেউ নাচছে, কেউ গাইছে; আবার কেউ ঢোল, কাঁসরসহ নানা বাদ্য বাজাচ্ছে। শিশু-কিশোরদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধভাঙা!

আয়োজকরা জানালেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অংশগ্রহণকারী জাহাজের সংখ্যা কম। দেশের

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন। যে কারণে অনেক গ্রামে এবার জাহাজ তৈরি করা হয়নি।

চট্টগ্রাম থেকে প্রবারণায় শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন পূজা বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘প্রায় সময় চট্টগ্রামেই প্রবারণা উদযাপন করি। উৎসব বলতে গেলে ওখানে শুধু ফানুস উড়ানো হয়। কিন্তু এই জাহাজ ভাসানোর আনন্দ সত্যিই অসাধারণ।’

বাঁকখালীতে ভাসল ‘কল্প জাহাজ’

কলেজছাত্রী প্রেরণা বড়ুয়া স্বস্তি বলেন, ‘এটি আমাদের প্রাণের উৎসব। এই উৎসব মূলত বৌদ্ধদের হলেও প্রতি বছর এটি অসাম্প্রদায়িক মিলনমেলায় পরিণত হয়।’

চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক সংগীত বড়ুয়া বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে আমরা এই উৎসব উদ্‌যাপন করে আসছি। জাহাজ ভাসানোর প্রায় ১৫-২০ দিন আগে থেকে বৌদ্ধ গ্রামগুলোতে জাহাজ তৈরির আনন্দ শুরু হয়। বিশেষ করে গ্রামের শিশু-কিশোরেরা এই উদ্যোগ নিয়ে থাকে। প্রতিবছর প্রবারণার পরদিন আমরা বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসানোর আনন্দে মেতে উঠি।’

উৎসবে আসা রামু সরকারি কলেজের শিক্ষক মানসী বড়ুয়া বলেন, ‘শত বছর ধরে চলে আসা এই উৎসব আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার তাগিদ দেয়। এই উৎসব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হলেও সবার অংশগ্রহণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়।’

রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, ‘প্রায় দুশ বছর আগে থেকে এই জাহাজ ভাসা উৎসবের প্রচলন হয় পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে। সে দেশের মুরহন ঘা নামক স্থানে একটি নদীতে মংরাজ ম্রাজংব্রান প্রথম এই উৎসবের আয়োজন করেন। শত বছর ধরে রামুতে মহাসমারোহে এই উৎসব হয়ে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধ রাজগৃহ থেকে বৈশালী যাওয়ার সময় নাগ লোকের অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন নাগেরা চিন্তা করলেন বুদ্ধপূজার এই দুর্লভ সুযোগ তারা হাতছাড়া করবে না। সঙ্গে সঙ্গে নাগলোকের পাঁচশত নাগরাজ পাঁচশ’ ঋদ্ধিময় ফণা বুদ্ধ প্রমুখ পাঁচশ’ ভিক্ষুসংঘের মাথার ওপর বিস্তার করল।

‘এভাবে নাগদের পূজা করতে দেখে দেবলোকের দেবতারা, ব্রহ্মলোকের ব্রহ্মরা বুদ্ধকে পূজা করতে এসেছিলেন। সেদিন মানুষ, দেবতা, ব্রহ্মা, নাগ সবাই শ্বেতছত্র ধারণ করে ধর্মীয় ধ্বজা উড্ডয়ন করে বুদ্ধকে পূজা করেছিলেন। বুদ্ধ সেই পূজা গ্রহণ করে পুনরায় রাজগৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। সেই শুভ সন্ধিক্ষণ হচ্ছে শুভ প্রবারণা দিবস।’

মূলত চিরভাস্বর এই স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য বাংলাদেশের বৌদ্ধরা বিশেষ করে রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায় প্রবারণা পূর্ণিমায় বাঁকখালী নদীতে ‘স্বর্গের জাহাজ’ ভাসিয়ে প্রবারণা উদ্‌যাপন করে।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া।

উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিথুন বড়ুয়া বোথামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কক্সবাজার-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল।

আরও পড়ুন:
জাহাজ ভাসা উৎসব, সম্প্রীতির মিলনমেলা
কল্প জাহাজ ভাসিয়ে সম্প্রীতির আহ্বান
সত্য-সুন্দরের আশায় উড়ল ফানুস
প্রবারণার ফানুসে উড়ল বুদ্ধের চুল ওড়ানোর স্মৃতি

মন্তব্য

জীবনযাপন
Organized public wedding at Dhabir Hall

ঢাবির হলে গণবিয়ের আয়োজন

ঢাবির হলে গণবিয়ের আয়োজন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে গণবিয়ের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে পাত্রকে অবশ্যই এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হতে হবে। উপস্থিত রাখতে হবে দুই পরিবারের অভিভাবকদের। ২০ সেপ্টেম্বর হল প্রাঙ্গণে এই গণবিয়ের আয়োজন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে গণবিয়ের আয়োজন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তবে পাত্রকে অবশ্যই এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হতে হবে। আর উপস্থিত রাখতে হবে দুই পরিবারের অভিভাবকদের।

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর হল প্রাঙ্গণে এই গণবিয়ের আয়োজন করা হবে। আয়োজকরা বলছেন, সমাজে বিয়ের বিষয়টিকে সহজ করতে তাদের এই আয়োজন। সেদিন যারা সব শর্ত পূরণ করে বিয়ে করতে চাইবেন তাদের সেদিনের খরচ বহন করবেন হলের অন্য শিক্ষার্থীরা।

এদিকে জহুরুল হক হলের এমন আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে ধুম পড়ে গেছে পাত্রপাত্রী খোঁজার। তবে এখানেও সতর্ক বার্তা দিয়েছেন আয়োজকরা।

আয়োজকদের অন্যতম একজন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, ‘হঠাৎ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়াটাকে নিরুৎসাহিত করছি আমরা। বিয়ে জীবনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই আবেগের বশে কেউ প্ররোচিত হবেন না, আশা করছি। তবে কাউকে নিষেধও করছি না আমরা।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই গণবিবাহের মূল টার্গেট, ক্যাম্পাসে প্রেমিক যুগলদের সম্পর্কটাকে হালাল এবং সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান করা।’

যোগাযোগ করা হলে আল আমিন সরকার বলেন, ‘এটা আমাদের প্রতীকী প্রতিবাদ, যেন সমাজে বিয়ে বিষয়টিকে আরেকটু সহজ করা হয়। ছেলের চাকরি থাকতেই হবে- এরকম বাধ্যবাধ্যকতা যেন বন্ধ করা হয়।’

এই আয়োজনের পরিকল্পনা কীভাবে এসেছে জানতে চাইলে আল আমিন সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আমাদের সবাই একটা ট্রমাটাইজ পরিস্থিতি অতিবাহিত করছি। তাই আগামী ২০ তারিখ আমরা একটা ভোজের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেই। এখানে আমাদের হলের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।

‘পরে মাথায় এলো আমাদের হলের অনেক ভাই প্রেম করেন। বিয়ে বিষয়টিকে অনেক জটিল করে রাখায় অনেকে বিয়ে করতে পারছেন না। তাই গণবিয়ের সিদ্ধান্তটা নেই। তবে পাত্রকে অবশ্যই আমাদের হলের হতে হবে। পাত্রী যে কেউ হতে পারেন। আর অবশ্যই এই বিয়ে হবে দুই পরিবারের অভিভাবকদের অনুমতি এবং উপস্থিতিতে।’

তিনি বলেন, বিষয়টি প্রথমে আমি আমাদের হলের গ্রুপে পোস্ট দেই। ভালো সাড়া পাওয়ার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপে পোস্ট দিয়েছি।’

এখন পর্যন্ত কতজন যুগল আগ্রহ দেখিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্য হলের অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কিন্তু এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় আমরা সেদিকে যাচ্ছি না। তবে আমাদের হলের দুই ভাইয়ের বিয়ে কনফার্ম। ওনারা পারিবারিকভাবে বিয়েটা করবেন আর ঘরোয়াভাবে এটির আয়োজন আমরা হলে করব।’

এদিকে জহুরুল হক হলের এমন আয়োজনের পর হাফসাতুল জান্নাত চৈতী নামের এক শিক্ষার্থী সব পাত্রীকে হাতে মেহেদী লাগিয়ে দেয়া এবং সাজিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন:
ঢাবি উপাচার্যকে সদ্য সাবেকের অভিনন্দন
ঢাবির প্রক্টর হলেন সাইফুদ্দীন আহমদ
ঢাবি উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ
ঢাবির নতুন ট্রেজারার অধ্যাপক জাহাঙ্গীর
ঢাবি উপাচার্য হিসেবে নিয়াজ আহমেদ খানকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন

মন্তব্য

p
উপরে