টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুক্রবার বাদ ফজর বিশ্ব ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এবার একদিন আগেই শুরু হয়ে গেছে মূল আনুষ্ঠানিকতা।
বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বাংলাদেশের মাওলানা রবিউল ইসলাম আগত মুসল্লিদের উদ্দেশে আম বয়ান করেন। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নেয়া মুসল্লিরা বয়ান শোনেন।
ইজতেমার প্রথম পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতি জহির ইবনে মুসলিম জানান, ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান ইতোমধ্যে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকেই ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশপাশের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আরও মুসল্লিরা ময়দানের উদ্দেশে আসছেন। তাই শীর্ষ মুরব্বিদের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একদিন আগেই বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
ইজতেমার কর্মসূচিতে থাকছে আম ও খাস বয়ান, ছয় উছুলের হাকিকত, দরসে কোরআন, দরসে হাদিস, তাশকিল, তালিম। এছাড়াও থাকবে বিষয় ও পেশাভিত্তিক আলোচনা, নতুন জামাত তৈরি, চিল্লায় নাম লেখানো এবং যৌতুকবিহীন বিয়ের মতো আনুষ্ঠানিকতা।
তাবলিগ মারকাজের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইজতেমা ময়দানের ১৩টি প্রবেশপথ দিয়ে লাখো মুসল্লি ময়দানে প্রবেশ করছেন। বাস, ট্রাক, পিকআপ, ট্রেন ও নৌ-পথে আসছেন তাবলীগের সাথীরা। মুসল্লিদের পদচারণে পুরো টঙ্গীতে ধর্মীয় আবহ তৈরি হয়েছে। যেদিকে চোখ যায়, শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত মুসল্লি। করোনার কারণে দুই বছর ইজতেমা আয়োজন না হওয়ায় এবার মুসল্লিদের আগ্রহ তুলনামূলক বেশি।
নিরাপত্তা
ইজতেমা উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এক হাজার একশ’ পুলিশ সদস্য।
হকারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়াও রুফটপ, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভি মনিটরিং, ডগ স্কোয়াডসহ খিত্তায় খিত্তায় পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন। সার্বিকভাবে ইজতেমা সফল করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
চিকিৎসা ব্যবস্থা
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুজ্জামান বলেন, আগত মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবায় ১১টি মেডিক্যাল ক্যাম্প, ৬টি বিশেষজ্ঞ টিম, একটি ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম কাজ করছে।
এছাড়াও কোভিড ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে দৈনিক ৫ হাজার র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট ও ৫ হাজার করোনার টিকা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ করোনায় আক্রান্ত এল তাকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে নেয়া হবে। বিদেশি মেহমানদের জন্য সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিন বছর পর আবার শুরু হচ্ছে প্লাস্টিক মেলা। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ২২ ফেব্রুয়ারি বসছে চার দিনব্যাপী এই আয়োজন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) ১৫ তম আয়োজন এবারের মেলা। সবশেষ ২০১৯ সালে ১৪তম মেলার আয়োজন করে সংগঠনটি।
রাজধানীর পল্টনে বিপিজিএমইএ’র নিজস্ব কার্যালয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি সামিম আহমেদ। এ সময় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন ও কাজী আনোয়ারুল হক, সাবেক সভাপতি ইউসুফ আশরাফ, ফেরদৌস ওয়াহেদ এবং শাহেদুল ইসলাম হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
২৫ ফেব্রুয়ারি মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এবং প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এবারের মেলায় চীন, তাইয়ান, ভারত, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানসহ মোট ১৯টি দেশের ৪৮০টি কোম্পানির ৭৮০টি স্টল বা বুথ থাকবে। এটা আগের আয়োজনের চেয়ে ৬২ শতাংশ বেশি।
মেলায় মেশিনারিজ, মোল্ড, কাঁচামাল উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেবে।
সামিম আহমেদ বলেন, ‘মেলায় নতুন পণ্য এবং প্রযুক্তির সমাবেশ আগের চেয়ে ভালো থাকবে বলে আশা করছি। ১৫ ধরনের প্ল্যাস্টিক পণ্য নিয়ে মেলায় অংশ নেবে প্রতিষ্ঠানগুলো। মেলায় সরাসরি পণ্য অর্ডারের পাশাপাশি ৫ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ মেশিনারিজ পণ্য বিক্রির অর্ডার পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা আমাদের।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে আমরা প্লাস্টিক পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না। আর কিছুদিন এই অবস্থা চললে প্লাস্টিক পণ্যের দাম আরও বাড়বে। তখন হয়তো পণ্য উৎপাদন বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্লাস্টিক খাত। কারণ পণ্য উৎপাদনে ৫০ শতাংশ সময়েই প্রয়োজন হয় বিদ্যুতের। আরও কষ্টের বিষয় হচ্ছে, বেশি দাম দিয়েও নিয়মিত বিদ্যুৎ মিলছে না।’
আরও পড়ুন:‘বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে। যাই হোক না কেন বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে না করতে পারবে না।’
ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গকে উদ্দেশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক এমডি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রোববার বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশ তিনটি বিষয়ে খুব ভালো করেছে- নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের ওপর বিনিয়োগ ও পরিবেশ। তবে আরও ভালো করতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করতে হবে। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় রিফর্মগুলো করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমদ কায়কাউস, মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) আহসান এইচ মনসুর এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (মিগা) ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমদ।
উদযাপন অনুষ্ঠানের ফাঁকে সম্মেলন কেন্দ্রটির কার্নিভাল হলে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ও বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যৌথভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া ফটো প্রদর্শনী ‘এ জার্নি টুগেদার’ উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীটি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিজ চোখে দেখতে বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের এমডি শনিবার দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছেন। বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর।
তিন দিনের এই সফরে ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এ ছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের জ্যেষ্ঠ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেহরিন আহমেদ মাহবুব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থানকালে অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ ঢাকা ও কক্সবাজারে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সুন্দর সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করতেই মূলত তিনি ঢাকায় এসেছেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন।’
২৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানান মেহরিন।
সংবাদ সম্মেলনে আসছেন বিশ্বব্যাংক এমডি
বিকেল ৫টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন:জাবের অ্যান্ড জুবায়েরের বসন্ত-গ্রীষ্মকালের এই আন্তর্জাতিক ফেব্রিক মেলা শুরু হচ্ছে রোববার। প্রতিষ্ঠানটির এটি ১২তম আয়োজন। ছয়দিনব্যাপী এই মেলা চলবে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর দু’বার করে জাবের অ্যান্ড জুবায়ের এই আন্তর্জাতিক কাপড়ের মেলার আয়োজন করে আসছে। একটি মেলা আয়োজিত হয় বসন্ত-গ্রীষ্মকালের আন্তর্জাতিক বাজারকে লক্ষ্য রেখে। আর অন্যটি শীত-শরৎকালের বাজারকে ঘিরে।
এবারের মেলায় প্রদর্শিত বেশিরভাগ ফ্যাব্রিক্সই পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উপাদানে তইর। মোট ২০০টি নতুন ডিজাইনের কালেকশন এবং ৪০টি নতুন কাপড় উদ্ভাবন নিয়ে আসছে এবার জাবের অ্যান্ড জুবায়ের।
ইতোমধ্যে অনেক বিদেশি ক্রেতা ও প্রতিষ্ঠান মেলায় আসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে। আয়োজক প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশা, এবারের আয়োজনে ব্যাপকসংখ্যক বিদইশ ক্রেতাদের সমাগম ঘটবে।
রেজিস্ট্রেশন করতে নিচে দেয়া লিংকটি ক্লিক করতে হবে:
https://www.znzfashion.com/registration
আরও পড়ুন:বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে শুক্রবার। রোববার আখেরি মোনজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে এবারের আয়োজন।
এই পর্বে ইজতেমায় আগতদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রাজধানী ও আশপাশের ১১টি পয়েন্টে ডাইভারশন দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডাইভারশন পয়েন্টগুলো রোববার ভোর ৪টা থেকে কার্যকর হবে। এই সময়ে যানবাহন কোন পথে চলবে তারও নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হলো- ধউর ব্রিজ, ১৮ নং সেক্টর পঞ্চবটী ক্রসিং, পদ্মা ইউলুপ, ১২ নং সেক্টর খালপাড়, মহাখালী ক্রসিং, হোটেল রেডিসন ব্লু ক্রসিং, প্রগতি সরণি (বিশ্বরোড), কুড়াতলী ফ্লাইওভার লুপ-২, মহাখালী ফ্লাইওভার পশ্চিম পাশ, মিরপুর দিয়াবাড়ী বাসস্ট্যান্ড ক্রসিং ও আশুলিয়া বাজার ক্রসিং।
যেসব পথে যানবাহন চলবে
আখেরি মোনাজাতের আগের রাত অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি রাত ২টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউর ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।
আশুলিয়া থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহন আব্দুল্লাহপুরে না এসে ধউর ব্রিজ ক্রসিং দিয়ে ডানে মোড় নিয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সব ধরনের যানবাহন মহাখালী ক্রসিং-এ বামে মোড় নিয়ে বিজয় সরণি-গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে।
কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী বড় বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানগুলোকে হোটেল র্যাডিসন গ্যাপে ডাইভারশন দেয়া হবে। উল্লিখিত যানবাহনগুলোকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে প্রগতি সরণি ক্রসিং-আব্দুল্লাহপুর-ধউর ব্রিজ-আশুলিয়া ক্রসিং-মিরপুর মাজার রোড থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক, চিড়িয়াখানা থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক এবং পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে নিকুঞ্জ-১ গেটের সামনে ডাইভারশন দেয়া হবে।
প্রগতি সরণি থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহনকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে লুপ-২ এ ডাইভারশন দেয়া হবে।
২২ জানুয়ারি উত্তরার বাসিন্দা, বিমান যাত্রী ও বিমান ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সব ধরনের যানবাহনের চালকদের বিমানবন্দর সড়ক পরিহার করে বিকল্প হিসেবে মহাখালী, বিজয় সরণি হয়ে মিরপুর-গাবতলী সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় একটি বড় মাইক্রোবাস পদ্মা ইউলুপ, ২টি মিনিবাস নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকার গেট এবং ১টি বড় মাইক্রোবাস কুড়াতলী লুপ-২ এ ফ্রি পরিবহন সার্ভিসের জন্য ভোর ৪টা থেকে মোতায়েন থাকবে।
গাড়ি পার্কিং
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ডিএমপি যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছে।
খিলক্ষেত থেকে আদুল্লাহপুর হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে কোন যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।
ইজতেমায় আগতদের যানবাহন নিম্নবর্ণিত স্থানগুলোতে (বিভাগ অনুযায়ী) যথাযথভাবে পার্কিং করতে হবে-
ক) ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ পার্কিং: ১৬ নং সেক্টর এলাকাধীন বিজিএমইএ ভবন, ১০ নং, ১১ নং ৫ নং ব্রিজের ঢাল।
খ) সিলেট বিভাগ পার্কিং: উত্তরা ১৫ নং সেক্টর, ২ নং ব্রিজের ঢাল থেকে উলোদাহা মাঠ পর্যন্ত।
গ) খুলনা বিভাগ পার্কিং: উত্তরা ১৭ ও ১৮ নং সেক্টরের খালি জায়গা (বউবাজার মাঠ)।
ঘ) রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ পার্কিং: প্রত্যাশা হাউজিং।
ঙ) বরিশাল বিভাগ পার্কিং: ধউর ব্রিজ ক্রসিং সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশন।
চ) ঢাকা মহানগরী পার্কিং: ৩০০ ফুট রাস্তা এলাকায় খালি জায়গা।
নির্ধারিত পার্কিং স্থানে মুসল্লিবাহী যানবাহন পার্কিংয়ের সময় অবশ্যই গাড়ির চালক/হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং মালিক ও চালক একে অপরের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখবেন; যাতে বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে পারস্পরিক যোগাযোগ করা যায়।
আরও পড়ুন:আর মাত্র ১০দিন। এরপরই শুরু হবে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বই মেলা।
এবারের বইমেলায় ৫৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। আর মোট স্টল থাকছে ৮৫৭টি। এসবের মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠান ও ৭১০টি ইউনিট। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠান থাকবে ১০৩টি আর ইউনিট থাকবে ১৪৭টি।
সব মিলে মেলায় এবার প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৪টি।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ শনিবার বইমেলার সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনামাফিকই এগিয়ে যাচ্ছে। যথা সময়ে যেন মেলা শুরু করা যায় সেজন্য আমরা এটা সার্বক্ষণিক মনিটরে রাখব।’
কে এম খালিদ বলেন, ‘বইমেলার জন্য একটা নীতিমালা আছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে তাদের সেই নীতিমালা মানতে হবে। যদি কেউ নীতিমালার বাইরে যায় তাদের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এই ফোর্সের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে একটা অফিসও আমরা করে দিয়েছি।’
টাস্কফোর্সের কারণে মুক্ত চিন্তার কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যার যার মত সে প্রকাশ করবে। কিন্তু একটা জিনিসি মাথায় রাখতে হবে। কারও বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ বা অগ্রহণযোগ্য কিছু আমরা চাই না। এটি মুক্ত জায়গা। আমাদের প্রাণের মেলা। এখানে আমরা চাই না কেউ কাউকে নিয়ে কোনো ধরনের কটাক্ষ করুক।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় সশরীরে এসে মেলা উদ্বোধন করবেন। এখন পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্তই রয়েছে। তিনি উদ্বোধন ও পরিদর্শন শেষে মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।’
আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ নিয়ে কে এম খালিদ বলেন, ‘বইমেলার নিয়ম-নীতির বাইরে আমরা যেতে পারব না। তারা যদি নিয়মনীতির মধ্যে আসে তাহলে তাদের ব্যাপারে আামাদের যে সিদ্ধান্ত সেটি তাদের জানানো হবে।’
বইমেলার নিয়ম-নীতি সংস্কারের জন্য আদর্শ প্রকাশনী যে দাবি তুলেছে সেটির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংস্কার সময়ের ব্যাপার। তাৎক্ষণিক চাইলে তো আর হবে না।’
তিনি বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে কুৎসা বা অপবাদ রটানো মুক্ত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না। সমাজ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতির পিতা- এসবের ব্যাপারে কোনো আপোষ করা যাবে না।’
‘এখন মুক্ত চিন্তার দোহাই দিয়ে যদি জাতির পিতাকে কটাক্ষ করে কোনো বই লেখা হয় তাহলে সেই বই....। গত বছর আদর্শের বইতে আপত্তিকর কিছু বিষয় ছিল। সেসব বিষয়ে তাদের আপত্তি জানানো হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানকে মেলার নিয়ম মেনে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন:আসন্ন অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় এখন পর্যন্ত স্টল বরাদ্দ পায়নি আদর্শ প্রকাশনী। এ ঘটনায় উদ্বেগ, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বই মেলা কোনো সরকার বা একক দলের নয়। অথচ ভিন্ন মতের কারণেই বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এ ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।
‘বাংলা একাডেমি একুশের বইমেলায় মুক্ত বুদ্ধি চর্চার উপযুক্ত স্থান হিসেবে যুগ যুগ ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে। সরকারবিরোধী ও ভিন্নমতের বই প্রকাশের অভিযোগে আদর্শ প্রকাশনীকে আসন্ন বই মেলায় স্টল বরাদ্দ না দেয়াটা খুবই উদ্বেগজনক এবং নিন্দনীয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একুশে বইমেলা দল-মত নির্বিশেষে সবার প্রাণের মেলা হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল। কিন্তু তিনটি ভিন্ন মতের বইয়ের জন্য ছয় শতাধিক বই প্রকাশকারী সংস্থা আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ স্থগিত করার মাধ্যমে বাংলা একাডেমী ভিন্ন মত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হলো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগেও কয়েকবার বাংলা একাডেমী একুশের বই মেলায় ভিন্নমতের বই প্রকাশের কারণে প্রকাশনা সংস্থার স্টল স্থগিত বা বাতিল করেছে।
‘আমি বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষকে একুশের বইমেলাকে দলীয়করণ না করার আহ্বান জানাই এবং আসন্ন বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীসহ ভিন্নমতের বই প্রকাশকারী অন্যান্য প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে তাদের স্টল বরাদ্দের আহ্বান জানাই, যাতে বই মেলা দল-মত নির্বিশেষের সবার প্রাণের মেলা হিসেবে পুনরায় বিবেচিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর টঙ্গীর তুরাগ তীর। শুক্রবার বাদ ফজর মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও একদিন আগেই শুরু হয়েছে মাওলানা সা’দ কান্ধলবী অনুসারী মুসল্লিদের বিশ্ব ইজতেমা।
বিশ্ব ইজতেমার ৫৭তম আয়োজন রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার বাদ আসর পাকিস্তানের মাওলানা হারুন কোরাইশী আগত মুসল্লিদের উদ্দেশে আম বয়ান করেন। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নেয়া মুসল্লিরা বয়ান শোনেন। আজ ইজতেমা ময়দানে দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মাওলানা সা’দ কান্ধলবীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সা’দ কান্ধলবী জুমার জামাতে ইমামতি করবেন।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইতোমধ্যে ৫০টি দেশের ৪ হাজার ৬০০ বিদেশি মেহমান ইজতেমা ময়দানে এসে উপস্থিত হয়েছেন। ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিস্তিন থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক মুসল্লি ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন। মাওলানা সা’দ কান্ধলবীর তিন ছেলে এবং জামাতাও ময়দানে এসে উপস্থিত হয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে বুধবার রাত থেকেই জামাতবদ্ধ মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। দেশের ৬৪টি জেলার মুসল্লিরা তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল রয়েছেন। কোন জেলার মুসল্লি কোন খিত্তায় অবস্থান করবেন সে দিকনির্দেশনাও ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে। ময়দানে মুসল্লিদের অবস্থানও জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় (ভাগে) বিভক্ত করা হয়েছে। খিত্তা পরিচালনার জন্য রয়েছেন খিত্তার জিম্মাদাররা।
দ্বিতীয় পর্বে শতাধিক দেশের প্রায় ১০-১২ হাজার বিদেশি মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বিরা। দেশি-বিদেশি ইসলামী চিন্তাবিদ ও ওলামায়ে কেরামগণ ছয় উসুল যথা-ঈমান, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমীন, তাসহীহে নিয়ত, দাওয়াত ও তাবলীগ সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক মূল্যবান বয়ান রাখছেন। মূল বয়ান সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হচ্ছে।
এছাড়াও বিষয় ও পেশাভিত্তিক আলোচনা, নতুন জামাত তৈরি, চিল্লায় নাম লেখানো এবং যৌতুকবিহীন বিয়ের মতো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে দ্বিতীয় পর্বেও।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমাতেও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দ্বিতীয় পর্বেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন ১১শ পুলিশ সদস্য। হকারদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও রুফটপ, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি টিভি মনিটরিং, ডগ স্কোয়াডসহ খিত্তায় খিত্তায় পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন। সার্বিকভাবে ইজতেমা সফল করতে প্রশাসনের সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
র্যাবের কার্যক্রম
বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তা ও নজরদারির সুবিধার্থে পুরো ইজতেমা ময়দানকে ঘিরে থাকছে র্যাবের অবজারভেশন পোস্ট। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিশ্ছিদ্র করার লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে র্যাবের পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য ২৪ ঘণ্টা বিশ্ব ইজতেমা মাঠে পর্যায়ক্রমে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া একটি প্রধান নিয়ন্ত্রণ কক্ষ পর্যাপ্ত সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করা হবে।
ইজতেমার অভ্যন্তরে ছদ্মবেশে ও বিশেষ পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি ও আভ্যন্তরীণ টহলের মাধ্যমে স্থল ফোর্স, নৌ টহলের পাশাপাশি হেলিকপ্টার যোগে পর্যায়ক্রমে টহল প্রদানের মাধ্যমে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
র্যাবের বোম্ব স্কোয়াড এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রাখা হবে। মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে র্যাবের মেডিক্যাল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
যানবাহন চলাচল ও পার্কিং
বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের নিরাপদ যাতায়াত এবং সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে পুলিশ বিভাগ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন জানান, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু রাখতে এবার নজরদারি তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্তসংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সঙ্গে থাকছে আইপি ক্যামেরাও। ট্রাফিক পুলিশ তিন শিফটে দিনে ও রাতে ২৪ ঘণ্টা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবেন।
চিকিৎসা সেবা
মুসল্লিদের স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে ইজতেমায় দায়িত্ব পালনকারী পর্যাপ্তসংখ্যক চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রয়েছে।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান জানান, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিক্যাল অফিসারদের তালিকা ও ডিউটি রোস্টার করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবায় ১১টি মেডিকেল ক্যাম্প, ৬টি বিশেষজ্ঞ টিম, একটি ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম কাজ করছে। কোভিড ক্যাম্পে দৈনিক ৫ হাজার র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট ও ৫ হাজার করোনার টিকাদেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। বিদেশি মেহমানদের জন্য সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিটি করপোরেশেনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, মুসল্লিদের ওযু, পয়ঃনিষ্কাষণ ও সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ইজতেমা মাঠে স্থাপিত গভীর নলকূপ দ্বারা পাইপলাইনের মাধ্যেমে সুপেয় পানি সরববরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে ৬০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী মাঠে দিন-রাত বর্জ্য অপসারণের কাজ করছে।
ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প
টঙ্গীর মুন্নু গেট এলাকায় মুসল্লিদের জন্য হামদর্দ, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, গাজীপুর সিভিল সার্জন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ইউনানী হারবাল মেডিক্যাল সোসাইটি, যমুনা ব্যাংক ফাউন্ডেশন, শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জনকল্যাণ ফ্রি-মেডিক্যাল ক্যাম্প, ইবনে সিনা, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প বৃহস্পতিবার থেকে মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চিকিৎসা নিতে আসা মুসল্লিদের অধিকাংশই জ্বর, ঠাণ্ডা ও পেটের পীড়াজনিত রোগে আক্রান্ত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য