× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
The temperature in Dhaka has dropped by more than 6 degrees in a day
google_news print-icon

ঢাকায় এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৬ ডিগ্রির বেশি

ঢাকায়-এক-দিনে-তাপমাত্রা-কমেছে-৬-ডিগ্রির-বেশি
কুয়াশার চাদরে মোড়ানো রাজধানীর হাতিরঝিল। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন একই সময়ে তা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এ সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ। ঢাকায় মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পৌষের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে প্রকৃতি। সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। উত্তরের জনপদে বইছে কনকনে বাতাস। সিলেট অঞ্চলে শ্রীমঙ্গলে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

শীতের এমন আয়োজনে ঢাকা শহর এতোদিন ছিল অনেকটাই ব্যতিক্রম। কয়েকদিন ধরে নগরে ঠাণ্ডা অনুভূত হলেও এর প্রভাব ছিল মূলত রাতে। দিন থেকেছে রৌদ্রকরোজ্জ্বল। ফলে শীতটা সেভাবে টের পাওয়া যায়নি।

এবার ঠান্ডা অনুভব করতে শুরু করেছে রাজধানীবাসীও। পৌষের ১৯তম দিনে এসে মঙ্গলবার জবুথবু নগরবাসী। একদিনের প্রভাবে ঢাকায় তাপমাত্রা কমে গেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৬ ডিগ্রির বেশি
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর বিপণি বিতান ও ফুটপাতে শীতবস্ত্রের দোকানে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা

মঙ্গলবার ঢাকার জনজীবন অনেকটাই শীতকাতর। সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন পুরো শহর। হাতিরঝিল কুয়াশায় ঢাকা। দুপুরের দিকেও ঝিল ঘিরে মানুষের উপস্থিতি ছিল। তবে অন্যদিনের তুলনায় কম। কনকনে ঠান্ডায় ভিড় বেড়েছে চায়ের দোকানে। অনেকেই বলাবলি করছিলেন, শৈত্যপ্রবাহের কারণেই বুঝি বেড়েছে শীতের প্রভাব।

মঙ্গলবার বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নগরীর পথঘাটে মানুষের চলাচলও কমে আসে। কাজ না থাকলে মানুষ খুব একটা ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রেও দর্শনার্থী কম দেখা গেছে।

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন বিপণি বিতান ও ফুটপাতে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। আর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, শৈত্যপ্রবাহ আছে শুধু বৃষ্টির জন্য বিখ্যাত শ্রীমঙ্গলে। দেশের আর কোথাও এর তেমন একটা প্রভাব নেই।

ঢাকায় এত ঠান্ডা কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক নিউজবাংলাকে জানালেন, রাজধানী ঢাকায় একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমে গেছে অন্তত ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সঙ্গে আছে হিমেল হাওয়া। সেজন্য ঠান্ডাটা তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।

ঢাকায় এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৬ ডিগ্রির বেশি
কুয়াশার কারণে রাজধানীতে মঙ্গলবার দুপুরেও ছিল সন্ধ্যার আধো অন্ধকার। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল ছাড়া দেশে আর কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। সিলেটের এই জনপদে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে দিনের তাপমাত্রা অনেক কমে গেছে। আর সেজন্য বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।

‘রাতের তাপমাত্রা গত কয়েকদিন ধরেই কম রয়েছে। দিনে সূর্যালোক থাকায় সেটা তীব্রভাবে টের পাওয়া যায়নি। তবে আজ (মঙ্গলবার) দেশের অনেক জায়গায় ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। আর ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন একই সময়ে তা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এ সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ। ঢাকায় মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সারা দেশের মধ্যে কুমিল্লা ও রাজশাহীর বদলগাছীতে মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। এছাড়া বেশিরভাগ অঞ্চলে তাপমাত্রা ১২ থেকে ২৩ ডিগ্রির ঘরে উঠা-নামা করেছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে, ২৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় এক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৬ ডিগ্রির বেশি
শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু শ্রীমঙ্গলের জনজীবন। ছবি: রিপন দে

হঠাৎ করে তাপমাত্রা এতোটা কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ‘ভারতের দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার অঞ্চলে একটা কুয়াশা অঞ্চল ছিল। সেটি ধীরে ধীরে বেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এজন্য শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। এই প্রভাব আরও চার থেকে পাঁচদিন থাকবে।’

আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য মাত্রার কোনো শৈত্যপ্রবাহের আলামত নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা কমতে পারে। জানুয়ারি মাসে এক থেকে দুটি মাঝারি ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস থাকলেও সেটি অনুভূত হবে আরও পরে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
‘ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো গাড়ি চালাতে পারি না’
শীতে কাঁপছে দিনাজপুর
শীতের ছুটিতে জবির ছাত্রী হল খোলা
ভিড় বাড়ছে শীতের কাপড়ের দোকানে
মাঝারি কুয়াশা আরও ২ দিন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Unhealthy air quality in Dhaka during the holidays is second to none

ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে দ্বিতীয়

ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে দ্বিতীয় অস্বাস্থ্যকর বাতাসে ঢাকার বাসিন্দাদের চলাচল। ফাইল ছবি
আজ সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৮০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাতাসের নিম্ন মানে প্রথম সারিতে রয়েছে ঢাকা।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ১৮০ স্কোর নিয়ে ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে দ্বিতীয় ছিল ঢাকা।

একই সময়ে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই ও ভারতের দিল্লি।

ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে দ্বিতীয়

আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২২ দশমিক ৩ গুণ বেশি।

নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।

কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।

আইকিউএয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।

১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।

র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।

আজ সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৮০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

আরও পড়ুন:
বৃষ্টির পরও ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, বাইরে মাস্ক পরার পরামর্শ
কর্মচঞ্চল ঢাকায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে ষষ্ঠ
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, নিম্ন মানে সপ্তম

মন্তব্য

জীবনযাপন
Dhaka air is unhealthy

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ অস্বাস্থ্যকর বাতাসে ঢাকার বাসিন্দাদের চলাচল। ফাইল ছবি
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে টানা তিন দিন ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর ছিল। মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রেই ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান তৃতীয়।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র‌্যাঙ্কিংয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৬৭ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।

একই সময়ে যথাক্রমে ১৮৬ ও ১৭২ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।

আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৪ গুণ বেশি।

এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।

নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।

কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।

আইকিউএয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।

১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।

র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।

আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৬৭। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে টানা তিন দিন ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর ছিল। মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রেই ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।

একই সময় ১০০টি দেশের এ তালিকায় ২৫ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা আফগানিস্তানের কাবুলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।

আরও পড়ুন:
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, বাইরে মাস্ক পরার পরামর্শ
কর্মচঞ্চল ঢাকায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে ষষ্ঠ
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, নিম্ন মানে সপ্তম
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে পঞ্চম

মন্তব্য

জীবনযাপন
Sundarban crocodiles roam in Pirojpur with satellite tags

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানোর পর সুন্দরবনের খালে অবমুক্ত করা হয় কুমির। ছবি: সারোয়ার আলম দীপু
গবেষণার জন্য চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় সুন্দরবনের নদী ও খালে। সেগুলোর মধ্যে তিনটি সুন্দরবনেই বিচরণ করছে। বাকি কুমিরটি মংলা, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ হয়ে মাত্র ১১ দিনে প্রায় একশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। বুধবার সেটির অবস্থান ছিল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালির একটি নদীতে।

সুন্দরবনের লোনা পানির চারটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানোর পর দেখা যাচ্ছে, এর তিনটি সুন্দরবনে ফিরে গেলেও একটি বহু পথ ঘুরে এখন বরিশাল বিভাগের জেলা পিরোজপুরের নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কুমিরের আচরণ ও গতিবিধি জানতে সম্প্রতি চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি সুন্দরবনের বিশাল এলাকায় চলে যায়। তবে একটি কুমির বন ছেড়ে মংলা, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ হয়ে পিরোজপুরে ঢুকে পড়েছে।

মাত্র ১১ দিনে প্রায় একশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে কুমিরটি। গায়ে বসানো স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কুমিরটি বুধবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালির একটি নদীতে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের আশা, নির্দিষ্ট সময় পর আবারও সুন্দরবনে ফিরে আসবে। তবে আপাতত সে তার নিজের জন্য নিরাপদ পরিবেশ খুঁজছে।

স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে ১৬ মার্চ কুমিরটি অবমুক্ত করা হয়েছিল সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্টে। এরপর এটি মংলা, রামপাল, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ হয়ে পিরোজপুরে ঢুকেছে।

বন সংরক্ষক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত এই গবেষণার মাধ্যমে তাদের আচরণ ও বসবাসের পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করেছি। যে কুমিরটি বনের বাইরে গেছে সে হয়তো তার বসবাসের জন্য সুবিধাজনক জায়গা খুঁজছে।’

কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে নদীতে অবমুক্ত করার কাজটি যৌথভাবে করছে বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)। তাদের সহযোগিতা করছে, জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিআইজেড)।

আইইউসিএন-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘সুন্দরবনের কুমির কোথায় কিভাবে বিচরণ করে তা নিয়ে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। সে কারণেই স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে গবেষণাটি করা হচ্ছে।’

বিশ্বে পাখি, কচ্ছপ, নেকড়েসহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে তাদের আচরণ নিয়ে গবেষণার নজির রয়েছে। তবে বাংলাদেশের কুমির নিয়ে এভাবে গবেষণা এই প্রথম।

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে
স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানো কুমিরগুলোর অবস্থান। ছবি: আইইউসিএন

গবেষণাটি যেভাবে শুরু

লোনা পানির মোট চারটি কুমিরের গায়ে ১৩ থেকে ১৬ মার্চের মধ্যে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়। এর মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী কুমির।

এদের মধ্যে পুরুষ কুমির ‘জুলিয়েট’ সুন্দরবনের করমজলে অবস্থিত দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে ছিল। আর স্ত্রী কুমির ‘মধু’কে সম্প্রতি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ির মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া বাকি দুটি কুমির ফাঁদ পেতে ধরা হয় সুন্দরবনের খাল থেকে। এই চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ স্থাপন করে ছেড়ে দেয়া হয় সুন্দরবনের খালে।

আইইউসিএন এই কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে কুমির গবেষক ড. সামারাভিরা ও পল বেরিকে।

আইইউসিএন-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘গবেষক টিমের পরিকল্পনা ছিল মোট পাঁচটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসানোর। সে অনুযায়ী কাজ শুরু করি আমরা। তবে শেষ পর্যন্ত একটি বাদে মোট চারটি কুমিরের গায়ে বসানো হয় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার।’

যেভাবে বসানো হল স্যাটেলাইট ট্যাগ

১৩ মার্চ সুন্দরবনের করমজলের কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে বাছাই করা হয় জুলিয়েট নামের একটি কুমিরকে। সকালেই সেটির শরীরে ট্যাগ বসানোর কাজ শুরু হয়। ট্যাগ বসানো শেষে কুমিরটিকে ছেড়ে দেয়া হয় সুন্দরবনে করমজলের খালে।

যশোরের চিড়িয়াখানা থেকে আনা ‘মধু’ নামের কুমিরটি আনা হয়েছিলো আগেই। একই দিনে সেটির গায়েও স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে ছাড়া হয় একই খালে।

গবেষক দল জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইল্ড লাইফ কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এই স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার কিট। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি পানির নিচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

কুমিরের গায়ে বসানো এই ট্রান্সমিটার কিটটির মেয়াদ এক বছর। ব্যাটারিচালিত এই যন্ত্রে থাকে একটি ক্ষুদ্র অ্যান্টেনা, যেটি সরাসরি যুক্ত থাকে স্যাটেলাইটের সঙ্গে। ট্যাগ লাগানোর পরই চালু হয়ে যায় এর লোকেশন অপশন। সেটি প্রতি ঘণ্টার আপডেট তথ্য ম্যাপের মাধ্যমে শেয়ার করে।

গবেষক দলের সদস্য দীপু বলেন, ‘কিটটির মেয়াদ এক বছর হলেও চাইলে তা আরও বাড়ানো যাবে।’

এর পরের দুদিন রাতের অন্ধকারে সুন্দরবনের খাল থেকে ফাঁদ পেতে ধরা হয় আরও দু’টি কুমির। সেই দুটির গায়েও একইভাবে বসানো হয় এই স্যাটেলাইট ট্যাগ।

কুমিরের মাথার উপরের অংশে আঁশের মতো স্কেল থাকে। স্যাটেলাইট ট্যাগটি বসানোর জন্য সেখানে ছোট একটি ছিদ্র করতে হয়। ওই ছিদ্রের মধ্যেই বসানো হয় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এই ট্রান্সমিটার চিপ খুব হালকা। ওজন দুই গ্রামেরও কম। এ ধরনের চিপ বসানো হলে তাতে কুমিরের কোনো ক্ষতি হয় না।’

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে
কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যান্সমিটার বসানোর প্রস্তুতি। ছবি: আইইউসিএন

ট্যাগ বসানো কুমিরগুলো এখন কোথায়?

কুমির প্রজনন কেন্দ্রের জুলিয়েট, যশোরের চিড়িয়াখানা থেকে আনা মধু এবং সুন্দরবনের খাল থেকে ফাঁদ পেতে ধরা আরও দুটি কুমিরের গতিপথ পর্যালোচনা করা হচ্ছে অবমুক্ত করার দিন থেকেই।

গতিপথ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর মধ্যে তিনটি কুমিরই আছে সুন্দরবনের মধ্যে। কিন্তু একটি কুমির অন্য পথে চলতে শুরু করেছে।

১৬ মার্চ যে কুমিরটিকে সুন্দরবনের জংলা খাল থেকে ধরে গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়, এর পরদিন থেকেই কুমিরটি সুন্দরবন ছেড়ে ছুটছে লোকালয়ের দিকে।

গত দশ দিনে গতিপথ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কুমিরটি সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্ট থেকে মংলা, রামপাল, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ হয়ে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলায় পৌঁছেছে।

স্যাটেলাইট তথ্য বলছে, বাকি তিনটি কুমিরই এখন অবস্থান করছে সুন্দরবনের মধ্যে নদী ও খালে। এর মধ্যে জুলিয়েট ও মধু হারবাড়িয়া পয়েন্টের কাছাকাছি নদীতে রয়েছে গত কয়েকদিন ধরে। অন্য কুমিরটিকে করমজল থেকে ধরে ট্যাগ বসিয়ে সেখানকার খালে ছাড়া হয়েছিলো। সেটি এখন আশপাশের খালেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তিনটি কুমির সুন্দরবনের মধ্যে থাকলেও একটি কেন এত পথ পাড়ি দিয়ে লোকালয়ের নদীগুলোতে ঢুকে পড়েছে সেটি নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন আছে গবেষক দলেরও।

গবেষক সারোয়ার আলম দীপু বলছেন, ‘লোনা পানির কুমিরগুলো আসলে কোন দিকে মুভ করে সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য আমাদের এক গবেষণার ধারণাকে স্পষ্ট করছে।’

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিচের দিকে সমুদ্রের কাছে নদীতেও অনেক স্যালাইন থাকে। আবার কোনো কুমির যদি কম লবণাক্ততা পছন্দ করে, সে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে আশপাশের নদী-খালগুলোতে যায়।

বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘ওই এলাকার পানিতে লবণাক্ততা কম বলে হয়তো কুমিরটি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কিংবা সে যা খায় সেগুলো হয়তো সে বেশি পাচ্ছে। আর সে কারণে কুমিরটি ওদিকে অগ্রসর হচ্ছে।’

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে
কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যান্সমিটার বসানোর পর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ছবি: সারোয়ার আলম দীপু

কুমির নিয়ে এ ধরনের গবেষণা কেন?

বর্তমানে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবন এলাকাতেই প্রাকৃতিক পরিবেশে লোনা পানির কুমির দেখা যায়। তারপরও এই পরিবেশে লোনা পানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন খুব একটা হচ্ছে না।

আইইউসিএন-এর গবেষক দলটি বলছে, কুমির নিয়ে এর আগে কিছু গবেষণা হলেও বিশদ কোনো কাজ হয়নি। এ কারণেই কুমিরের অভ্যাস আচরণ জানার জন্য এই গবেষণা করা হচ্ছে।

গবেষক দীপু বলেন, ‘কুমির কোন অঞ্চলে ডিম পাড়ে, কোন অঞ্চলে স্ত্রী-পুরুষের সংখ্যা কেমন সেটা জানার জন্য এমন গবেষণার পরিকল্পনা অনেক দিন আগে থেকেই ছিল। এবার প্রথমবারের মতো তা শুরু হয়েছে।’

বিশেষজ্ঞ ও বন কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা লবণাক্ততা বাড়া-কমার কারণেও জীবন-জীবিকায় এক ধরণের প্রভাব পড়ছে। হুমকির মুখে পড়ছে এই বন্যপ্রাণীটি। কুমিরগুলোকে বাঁচাতে তাই এ ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

জিআইজেড-এর ‘ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব সুন্দরবন ম্যানগ্রোভস অ্যান্ড দ্য মেরিন প্রোটেকটেড এরিয়া সোয়াস অফ নো গ্রাউন্ড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি চলছে।

বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘লোনা পানির কুমির নিয়ে এই গবেষণা ফলপ্রসূ হলে মিঠা পানির কুমির নিয়েও এভাবে গবেষণা করা দরকার বলে মনে করি আমরা।’

স্যাটেলাইট ট্যাগ নিয়ে সুন্দরবনের কুমির ঘুরছে পিরোজপুরে
রাতের অন্ধকারে কুমিরের গায়ে বসানো হচ্ছে স্যাটেলাইট ট্যাগ। ছবি: আইইউসিএন

কেন হুমকির মুখে কুমির?

বাংলাদেশে লোনা পানির কুমির সুন্দরবনের বাইরে দেখা যায় না। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণীর একটি তালিকা তৈরি করে। ‘আইউসিএন রেড লিস্ট’ নামে পরিচিত ওই তালিকায় লোনা পানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশেই লোনা পানির কুমির দেখা যায়। এর বাইরে অন্য যেসব কুমির রয়েছে তার অধিকাংশই চিড়িয়াখানাগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোনা পানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন তেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

তাই কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০০ সালে সুন্দরবনের করমজলে বন বিভাগের উদ্যোগে কুমির প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।

কুমির প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আজাদ কবীর বলেন, ‘এ পর্যন্ত কয়েক দফায় এই প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেয়া লোনা পানির দুই শতাধিক কুমির ছাড়া হয়েছে সুন্দরবনের খালগুলোতে। এর মধ্যে লোনা পানির কুমির ১০৭টি আর মিষ্টি পানির কুমির আছে মাত্র তিনটি।’

গবেষক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, পানিতে লবণাক্ততা হ্রাস-বৃদ্ধি, নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরা, নৌযান চলাচল বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কারণে সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা দিন দিন কমছে।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘আমাদের নদীগুলোর মধ্যে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জাল ফেলে মাছ ধরা হয় না। মিঠা পানির কুমিরগুলো জালে ধরা পড়ে। অনেক কুমির এ কারণে হারিয়ে গেছে। একই কারণে হুমকিতে আছে লোনা পানির কুমিরও।’

বর্তমানে সুন্দরবনে কতগুলো কুমির আছে তা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া গেলেও এ নিয়ে সঠিক কোনো জরিপ বা তথ্য নেই বন বিভাগ কিংবা গবেষকদের কাছে। কেননা বিভিন্ন সময় যে গবেষণা হয়েছে সেসব তথ্যে বেশ গরমিল রয়েছে।

গবেষক সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘একটি গবেষণা তথ্য বলছে সুন্দরবনে কুমির আছে দেড়শ’ থেকে দুশ’টি। আরেক গবেষণার তথ্য বলছে আড়াইশ’ থেকে তিনশ” লোনা পানির কুমির আছে সুন্দরবনে। সঠিক কোনো তথ্য কারও কাছে নেই।’

এই গবেষক একটি ধারণা দিয়ে বলেন, ‘সুন্দরবনে কুমির বসবাসের পরিবেশ ও ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কুমির অনেক কম রয়েছে।’

তবে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তিনি বলছেন, ‘সুন্দরবনের নদী ও খালে বর্তমানে দুশ’র বেশি কুমির নেই।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘পর্যটক বৃদ্ধি, মাছ ধরাসহ নানা কারণে আস্তে আস্তে কুমির যে বন থেকে সরে যাচ্ছে তার একটি উদাহরণ হতে পারে এই গবেষণা। যেমনটি দেখা গেছে স্যাটেলাইটের তথ্যেও।’

আরও পড়ুন:
৩৮ কোটিতে কুমিরের খামার বেচে পি কে হালদারের ঋণ শোধের চেষ্টা
পালিয়ে যাওয়া ৭০ কুমির ধরতে অভিযান, ভয়ে বাসিন্দারা
নগরবাসীর সৌভাগ্য ফেরাতে কুমিরকে বিয়ে করলেন মেয়র
৭২ বছরের খামারির দেহ ছিন্নভিন্ন করে ফেলল ৪০ কুমির
কুমিরের পেটে মিলল নিখোঁজ জেলের মরদেহ

মন্তব্য

জীবনযাপন
On the fourth working day of the week the wind low means the second cover

সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে দ্বিতীয় ঢাকা

সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে দ্বিতীয় ঢাকা অস্বাস্থ্যকর বাতাসে ঢাকার বাসিন্দাদের চলাচল। ফাইল ছবি
আজ সকাল ১০টা ১১ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৯৬। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে সকালের একটি সময়ে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ছিল ঢাকার বাতাস।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ১০টা ১১ মিনিটে ১৯৬ স্কোর নিয়ে ১২২টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে দ্বিতীয় ছিল ঢাকা।

একই সময়ে প্রথম ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের দিল্লি।

সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে দ্বিতীয় ঢাকা

আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৮ দশমিক ৩ গুণ বেশি।

নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।

কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।

আইকিউএয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।

১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।

র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।

আজ সকাল ১০টা ১১ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৯৬। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

আরও পড়ুন:
কর্মচঞ্চল ঢাকায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে ষষ্ঠ
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, নিম্ন মানে সপ্তম
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে পঞ্চম
দ্বিতীয় রোজায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, তালিকায় চতুর্থ

মন্তব্য

জীবনযাপন
Why jelly fish wandering on the beach at this time

সৈকতে এ সময়টাতেই কেন জেলি ফিশের বিচরণ

সৈকতে এ সময়টাতেই কেন জেলি ফিশের বিচরণ কুয়াকাটা সাগর সৈকতে ভেসে আসা জেলি ফিশ। ছবি: নিউজবাংলা
সাগর-কন্যা কুয়াকাটার সৈকত জুড়ে মৃত জেলি ফিশের ছড়াছড়ি। পনের দিন ধরে চরগঙ্গামতি পয়েন্টসহ আশপাশের সৈকত এলাকা সয়লাব হয়ে গেছে মৃত জেলি ফিশে। এগুলো এভাবে পড়ে থাকলে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা করছেন অনেকে। বিপাকে পড়েছেন জেলেরাও। তারা সাগরে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারছেন না।

সাগর-কন্যা কুয়াকাটার সৈকত জুড়ে আবারও মৃত জেলি ফিশের ছড়াছড়ি। গত পনের দিন ধরে চরগঙ্গামতি পয়েন্টসহ আশপাশের সৈকত এলাকা সয়লাব হয়ে গেছে মৃত জেলি ফিশে। গত বছরও এখানে একই চিত্র দেখা গেছে এবং তা এই সময়টাতেই।

জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা হাজার হাজার জেলি ফিশ সৈকতের বালুতে আটকে মারা যাচ্ছে। কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের তুলনায় চরগঙ্গামতি পয়েন্টে পর্যটক কম থাকায় এটি কারও বড় মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে না। তবে এগুলো এভাবে পড়ে থাকলে পরিবেশ দূষিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। ইতোমধ্যে জিরো পয়েন্টের আশপাশ এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সৈকত জুড়ে জেলি ফিশের বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্থানীয় জেলেদেরও। কারণ তারা ঠিকভাবে সাগরে জাল ফেলতে পারছেন না। এসব পয়েন্টে জাল ফেললেই জীবিত জেলি ফিশ আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। জেলি ফিশে জাল আটকে যাচ্ছে।

সৈকতে এ সময়টাতেই কেন জেলি ফিশের বিচরণ
কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে আসা জেলি ফিশ মরে পরিবেশ দূষণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

মৃত জেলি ফিশগুলোর কোনোটা দেখতে চাঁদের মতো আবার কোনোটা অক্টোপাসের মতো। সৈকত থেকে এগুলোকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা।

পটুয়াখালী জেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলি ফিশ সমুদ্রের এক আজব প্রাণি। এগুলোকে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন বছর আগের ডাইনোসর যুগের প্রাণি হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন বিজ্ঞানীরা।

‘জেলি ফিশের মাথা, হৃৎপিণ্ড, লেজ, মেরুদণ্ড বা হাত-পা বলে কিছু নেই। সম্পূর্ণ নরম দেহ বা জিলেটিনাস দেহ নিয়ে এটা গঠিত। বিভিন্ন প্রজাতির জেলি ফিশ পৃথিবির সব সাগর, মহাসাগর, হ্রদ বা লেগুনে বিস্তৃত রয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে এগুলো টিকে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জেলি ফিশ প্রকৃতপক্ষে লোনা পানির প্রাণি। এরা সাধারণত সাঁতার কাটার উপযুক্ত নয়। কারণ এদের সাঁতার কাটার কোনো দৈহিক শক্তি বা অঙ্গ নেই। তবে উল্লম্বভাবে সামান্য চলাচলে ভার্টিকেল প্রোপালশন সিস্টেম রয়েছে, যার মাধ্যমে এগুলো পানির গভীর থেকে উপরে এবং উপর থেকে গভীরে গমনাগমন করতে পারে। পার্শ্বীয় চলাচল বা সামন্তরাল পথ ভ্রমণে এরা মোটেই উপযুক্ত নয়। তাই জেলি ফিশ পানির স্রোত বা বাতাসের গতির ওপর নির্ভরশীল থাকে।

সৈকতে এ সময়টাতেই কেন জেলি ফিশের বিচরণ

‘সমুদ্রের স্রোত, জোয়ার বা সামদ্রিক বাতাসের তোড়ে এগুলো সমুদ্র থেকে উপকূলে বা সমুদ্রতীরে বা বিচে এসে আটকে পড়ে। স্রোতের বিপরীতে যাওর অক্ষমতার জন্য এখানেই এদের জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে থাকে।

‘জেলি ফিশ সাধারণত উপযুক্ত লবণাক্ততায় প্রজনন করে থাকে এবং নির্দিষ্ট একটি বয়সে এসে মারা যায়। প্রচুর খাবার, সঠিক অক্সিজেন ও লবণাক্ততা পেলে জেলি ফিশ দ্রুত বংশ বিস্তার করে।

‘কিছু প্রজাতির জেলি ফিশের স্টিং থাকে। আর তাতে ভেনম বা বিষ থাকে; যদিও এই বিষ মৃত্যুঝুঁকির মতো নয়। তবে চুলকানি, লাল বার্ন হয়ে যাওয়া বা কিছু ক্ষেত্রে চোখে লাগলে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।’

এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘কুয়াকাটার বিচে আটকে পড়া এসব জেলি ফিশ সাদা জেলি ফিশ নামে পরিচিত, যার বৈজ্ঞানিক নাম ফাইলোরিজা পাঙটাটা। এরা মোটেই বিষাক্ত প্রজাতির নয়। এদের স্টিং নেই যেখানে বিষ থাকতে পারে। তবে এই প্রজাতির জেলি ফিশের সংস্পর্শে কিছুটা চুলকানি হতে পারে।’

সৈকতে এ সময়টাতেই কেন জেলি ফিশের বিচরণ

প্রতি বছর মার্চ মাসের দিকে সাগর উপকূলে জেলি ফিশের বিস্তারের কারণ সম্পর্কে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মার্চ থেকে জুলাই মাসে সমুদ্রের পানিতে অক্সিজেন ভালো থাকে। পাশাপাশি অনুকূল তাপমাত্রা ও ও লবণাক্ততা প্রজননের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় সাদা জেলি ফিশ এই সময়ে ব্যাপকমাত্রায় প্রজনন করে পপুলেশন ব্লুমস তৈরি করে। পরবর্তীতে সাগরের ঢেউ, স্রোত ও বাতাসের শক্তিতে এগুলো উপকূলভাগে চলে আসতে বাধ্য হয়।

‘এ কারণেই প্রতি বছর মার্চ মাসের শুরুতে বা কিছু ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি এসব জেলিফিশ উপকূলে বিস্তৃত হয়ে পড়ে। তবে তাপমাত্রা কমে গেলে বা সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই এগুলো মারা যাবে।’

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধারণা করা হয়, সাগরে অধিক পরিমাণ মাছ আহরণের কারণেও জেলি ফিশের ব্যাপক বংশ বিস্তার হতে পারে। কারণ অনেক সামুদ্রিক মাছ বা প্রাণি জেলি ফিশ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। তাই সাগরে কিছু প্রয়োজনীয় মাছ কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই জেলি ফিশের সংখ্যা বেড়ে যায়।

বাংলাদেশের সাগর সীমায় সরকার যে ৬৫ দিনের জন্য মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে (২০ মে থেকে ২৩ জুলাই) তা অব্যাহত থাকলে সাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে এবং মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে জেলি ফিশের সংখ্যা বা ব্লুমস প্রাকৃতিক উপায়ে নিয়ন্ত্রণ হবে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
On the second working day of the week the wind low means the third cover

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে তৃতীয় ঢাকা

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে তৃতীয় ঢাকা অস্বাস্থ্যকর বাতাসে ঢাকার বাসিন্দাদের চলাচল। ফাইল ছবি
আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৭৭। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে সকালের একটি সময়ে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ছিল ঢাকার বাতাস।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ১৭৭ স্কোর নিয়ে ১২১টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে তৃতীয় ছিল ঢাকা।

একই সময়ে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর।

সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে বাতাসের নিম্ন মানে তৃতীয় ঢাকা

আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২১ গুণ বেশি।

নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।

কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।

আইকিউএয়ারের র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।

১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।

র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।

তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।

আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৭৭। এর মানে হলো ওই সময়টাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিতে হয় রাজধানীবাসীকে।

আরও পড়ুন:
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে ষষ্ঠ
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, নিম্ন মানে সপ্তম
ছুটির দিনে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, নিম্ন মানে পঞ্চম
দ্বিতীয় রোজায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস, তালিকায় চতুর্থ
ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, বাইরে মাস্ক পরার পরামর্শ

মন্তব্য

জীবনযাপন
Village after village destroyed by hail in Kaliakore

কালিয়াকৈরে শিলাবৃষ্টিতে তছনছ গ্রামের পর গ্রাম

কালিয়াকৈরে শিলাবৃষ্টিতে তছনছ গ্রামের পর গ্রাম শিলাবৃষ্টিতে ঝাঝরা হয়ে গেছে ঘরের টিনের চাল। ছবি: নিউজবাংলা
স্থানীয়রা জানান, শিলাবৃষ্টিপাতে পরিমাণ এত ভয়বহ ছিল যে, বসতঘরের টিনের চালা ফুটো হয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকছিল ছোট-বড় শিলা। এর সঙ্গে ছিল বৃষ্টির পানিও। এমন ঘটনায় মূহুর্তের মধ্যে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বাড়িঘর; চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। এ সময় কেউ ঘরের খাট-চৌকি, আবার কেউ টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নেন।

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শনিবার রাতে হঠাৎ দুই দফায় ঝড়ো হাওয়া ও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে রাতারাতি তছনছ হয়ে গেছে একাধিক গ্রাম। বসতঘর ও গবাদি পশুর ঘরের টিনের চাল ফুটো হওয়ায় বিপদগ্রস্থ ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ।

অপরদিকে আম ও লিচুর মুকুল, কাঁঠাল, মাঠের বোরো ধান, কলাবাগানসহ মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও কৃষকের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, শনিবার তারাবির নামাজ ও রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন ওই এলাকার বেশিরভাগ মানুষ। রাত পৌনে ১০টার দিকে শুরু হয় ঝড়ো হওয়া ও সঙ্গে শিলাবৃষ্টি। আবারও রাত ১টার দিকে আঘাত হানে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি।

তারা জানান, শিলাবৃষ্টিপাতে পরিমাণ এত ভয়বহ ছিল যে, বসত-ঘরের টিনের চালা ফুটো হয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকছিল ছোট-বড় শিলা। এর সঙ্গে ছিল বৃষ্টির পানিও। এমন ঘটনায় আতকে ওঠেন তারা। মূহুর্তের মধ্যে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বাড়িঘর; চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।

এ সময় কেউ ঘরের খাট-চৌকি, আবার কেউ টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের নিচে আশ্রয় নেন।

কালিয়াকৈরে শিলাবৃষ্টিতে তছনছ গ্রামের পর গ্রাম

শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক লাইন, ঘরের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল। বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দেয়ায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এসব গ্রাম। ফলে বন্ধ রয়েছে রাইস মিল, মশলা গুড়া করার মেশিন, ফ্রিজ, অনেকের মোবাইল ফোনসহ যাবতীয় বিদ্যুৎচালিত ব্যবহার্য জিনিসপত্র। এ অবস্থায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীরা।

দুই দফায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে উপজেলার বহেড়াতলী, গাছবাড়ী, সোনাতলা, কাথাচুড়া, চা বাগান, ঠেঙ্গারবান্দ, বোয়ালী, বর্মণপাড়া, ফুলবাড়িয়া, পাবুরিয়াচালা, বড়ইবাড়ী, কুটামনি, ডাকুরাইল, কোন্দাঘাটা, পিপড়াসিট, গোলুয়া, ঢোলসমুদ্রসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে কৃষকদের অভিযোগ, ফসলি জমির এমন ক্ষতি হলেও কোনো খোঁজখবর নেননি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা।

ঠেঙ্গারবান্দ এলাকার সংবাদকর্মী ইমারত হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ করে রাতে দুই দফায় ঝড় ও ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার ৮০ হাত ঘরের টিনের চাল নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার নয়, গ্রামের বিভিন্ন লোকের ঘরের চাল ফুটো হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ টিনের চাল বদলাতে হবে। টিন না বদলালে কেউ তাদের ঘরে বসবাস করতে পারবে না।’

এই শিলাবৃষ্টিতে ওই এলাকার মানুষের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মহসিন মিয়া বলেন, ‘ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। মাটিতে শিলার স্তুপ জমে গিয়েছিল। এরকম শিলা বৃষ্টি এর আগে কখনও দেখি নাই।’

অপর ইউপি সদস্য মফিজ উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টিতে কিছু কিছু গ্রামে ঘরের টিনের চাল ঝাঝরা হয়ে গেছে। এছাড়া গ্রামের পর গ্রামের মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে মৎস্য খামারিরাও ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সুপাভাইজাররা জানিয়েছেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সব গ্রামের কৃষকের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। চা বাগান গ্রামে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে তা ব্যাপক নয়।’

আরও পড়ুন:
এক ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের মাথায় হাত
বাড়ির আঙিনা-ফসলি মাঠে শিলার ‘কার্পেট’
স্বস্তির বৃষ্টিতে শিলার ক্ষত

মন্তব্য

p
উপরে