যেকোনো কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে যেতে পারে। সে রকম হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। খুব সহজেই এটা তোলা যায়।
প্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্র হারানোর ঘটনায় নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। জিডির কপি অনলাইনে আপলোড করে পুনরায় মুদ্রণের (রিইস্যু) জন্য করতে হবে আবেদন।
আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পর আপনার মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে। এরপর অনলাইন থেকে আপনার এনআইডি কার্ডের কপি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
হারানো আইডি কার্ড পেতে ফি দিতে হয়। প্রথমবার হারানোর ক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে পেতে চাইলে ২০০ টাকা ফি দিতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে পেতে চাইলে (সাত দিনের মধ্যে) দিতে হবে ৩০০ টাকা।
দ্বিতীয়বারের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে পেতে চাইলে ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে পেতে চাইলে দিতে হবে ৫০০ টাকা।
পরবর্তী সময়ে যতবার হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র তুলতে যাবেন ততবার ৩০ দিনের মধ্যে পেতে চাইলে দিতে হবে ৫০০ টাকা এবং জরুরি ভিত্তিতে পেতে চাইলে দিতে হবে ১,০০০ টাকা।
এই ফি ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে অথবা ‘সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়’-এর অনুকূলে পে-অর্ডার অথবা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে (ভ্যাটসহ) পরিশোধ করতে হবে।
হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র তোলা ও সংশোধন একই সঙ্গে করা সম্ভব নয়। আগে হারানো কার্ড তুলতে হবে, পরবর্তী সময়ে সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
আরও পড়ুন:চলে এলো পবিত্র রমজান মাস। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া যেমন জরুরি, তেমনি ত্বকের যত্ন নেয়াও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রুক্ষ ত্বক আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ও মেজাজের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
এবার রোজা এসেছে গরমে। রোজায় দীর্ঘক্ষণ পানাহার বর্জন বা কম ঘুম আপনার বর্ণের উজ্জ্বলতা কেড়ে নিতে পারে। তার জায়গায় রেখে যেতে পারে নিস্তেজতা এবং পানিশূন্যতার ছাপ। তাই এ সময় ত্বকের একটু বিশেষ যত্ন নিতে হবে, তা না হলে ঈদের সময়ে আপনার ত্বক দেখাতে পারে শুষ্ক ও মলিন।
এ অবস্থায় কীভাবে আপনি রোজায়ও নিজের ত্বককে সতেজ রাখবেন তা নিয়ে জানিয়েছে দুবাইয়ের লুসিয়া ক্লিনিক। নিউজবাংলার পাঠকদের সামনে তা উপস্থাপন করা হলো।
পর্যাপ্ত তরল পান
ডিহাইড্রেশন আপনার বর্ণকে ক্লান্ত দেখায়, সূক্ষ্ম রেখার মতো অপূর্ণতাগুলিও যেন আরও বেশি লক্ষণীয় করে তোলে। আমরা সবাই জানি, পানিতে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্যের উপকারিতা রয়েছে, তবে রমজানে ত্বকের যত্ন সংরক্ষণে পানির ক্ষমতা আরও বেশি।
তাই ইফতার ও সেহরির মাঝামাঝি সময়ে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন এবং বেশি পানিযুক্ত খাবার খান। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়গুলি যেমন চা, কফি এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ডিহাইড্রেশনের ক্ষতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
এর বদলে খেতে পারেন বিভিন্ন মৌসুমি ফলের জুস।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
নিয়মিত ভালো মানের একটি ময়েশ্চারাইজার দিনে অন্তত দুইবার ব্যবহার করুন। আপনার ত্বক যত শুষ্ক হবে, আপনার পণ্য তত সমৃদ্ধ হওয়া উচিত। ফেসিয়াল মিস্ট বা তেল ব্যবহার করতে পারেন, সেই সঙ্গে টোনারও।
ত্বকের ধরন নির্বিশেষে আপনার রুটিনে সানস্ক্রিন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন। রমজানের সময় সূর্যের এক্সপোজার দুর্বল ত্বকের জন্য আরও বেশি চাপের হতে পারে।
বারবার ফেসওয়াশ করবেন না
শুষ্ক ত্বক বা গরমের জন্য অনেকে বারবার ফেসওয়াশ করেন, যা মোটেও ঠিক না। দিনে দুইবারের বেশি ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিৎ না, এতে মুখ আরও শুকনা হয়ে যেতে পারে। তবে তিন, চারবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুতে পারেন।
খাদ্যতালিকায় ফলমূল ও শাকসবজি
সুন্দর ত্বকের যত্নের রেসিপিটি সঠিক উপাদান দিয়ে শুরু হয়। আপনি রোজা রাখার সময়ও যদি উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর ত্বক চান তবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খান।
চিনি, প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণাক্ত আইটেম পরিহার করুন যা আপনাকে ডিহাইড্রেটেড করতে পারে। এ ছাড়া দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে যান যদি আপনার স্কিনে ব্রেকআউটের প্রবণতা বেশি থাকে। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত এবং ভাজা-পোড়া খাবার খাওয়া সীমিত করতে হবে।
ফল, শাকসবজি, বাদাম এবং মাছ আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিৎ। এ খাবারগুলি উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ভালো, তাছাড়া আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য দুর্দান্ত।
আরও পড়ুন:গরম মানেই ডিহাইড্রেশন, চিকেন পক্স, জ্বর, ঠান্ডা, পেটের সমস্যা-এ রকম নানা অসুস্থতা। সঙ্গে চুল পরা, ঘামাচি, এলার্জির বাড়তি উপদ্রব তো আছেই। তাই এই তাপদাহে নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখতে প্রয়োজন সঠিক খাবার গ্রহণ, আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন এবং নিয়মিত ত্বকের যত্ন।
খাবারে সতর্কতা
সুস্থ থাকতে প্রথমেই চলে আসে খাবারের ব্যাপারে সতর্কতা। তাই কী কী খাবার খেলে প্রচণ্ড গরমেও সুস্থ থাকতে পারবেন সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার নেটওয়ার্ক (এনএইচএন)-এর সিনিয়র পুষ্টিবিদ তাকলিমা আক্তার।
প্রথমেই প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে গরমে। কারণ এই সময় শরীর থেকে ঘাম এর সাথে লবণ চলে যায়। এতে ডিহাইড্রেশন হয়। তার জন্য পানি, শরবত, ডাবের পানি, এবং ঘরে তৈরি ফলের জুস পান করুন। সবুজ শাকসবজি, ফল, নারকেল বেশি করে খেতে শুরু করুন।
ময়দার রুটি না খেয়ে লাল আটার রুটি খান। এটা বেশি স্বাস্থ্যকর। ব্রেকফাস্টে গম জাতীয় খাবার যেমন নুডলস, ব্রেড, ছাতু রাখতে পারেন। কড়াইশুঁটি, ব্রকোলি, ফুলকপি, অঙ্কুরিত ছোলা, খেজুর, পেঁয়াজ, রসুন, বিট- লাল ও সবুজ রঙের সবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন। তবে পরিমাণমত খাবেন। সঙ্গে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, কিসমিস, এগুলো ড্রাই ফ্রুট হিসেবে খেতে পারেন।
ডেয়ারি উপাদানের মধ্যে পানি মিশিয়ে দুধ, মাখন, টক দই খেতে পারেন। সব ধরনের ভাত, রাইস কেক, রাইস পাস্তা রাখতে পারেন ডায়েট চার্টে। দুধ চা বা কফির বদলে গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যেস শুরু করুন। রং চা খেতে পারেন। আর অবশ্যই দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। আর কর্মজীবীদের যেহেতু দৈনন্দিন জীবন একটা রুটিনে বাধা তাই খাবারের ক্ষেত্রেও একটা রুটিন অনুসরণ করুণ।
আরামদায়ক পোশাকে
গরমে আরামের পোশাক হিসেবে সুতি কাপড়ের কোনো বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে কে-ক্র্যাফট এর প্রধান উদ্যোক্তা শাহনাজ খান বলেন, সুতি কাপড়ের তৈরি পোশাক শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। এ ছাড়া হালকা রঙের সুতি ও ভয়েল কাপড়ের পোশাক রোদ ও তাপ কম শোষণ করে বলে শরীরকে স্বস্তি দেয়। গরমে আমাদের অনেকেরই অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এ সময়টা সুতি কাপড়ের সালোয়ার কামিজ, ঢিলেঢালা ফতুয়া পরা উচিত।
তিনি বলেন, যারা অনেক গরম পরিবেশে কাজ করেন, তারা সুতি বা তাঁতের তৈরি কাপড়ের পোশাক পরতে করতে পারেন। স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটির মেয়েরা, যাদের প্রতিনিয়ত বাইরে যাওয়া আসা করতে হয়, ক্লাস করতে হয়, তারা এই গরমে সুতির সালোয়ার-কামিজ এবং ফতুয়া ও পালাজো পরতে পারেন। অফিসেও একই রকম পরতে পারেন। আর যারা শাড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তারা এই গরমে পিংক, আকাশি, হালকা নীল, লেমন এরকম হালকা রঙের সুতি শাড়ি, টাঙ্গাইলের শাড়ি অথবা ব্লক-বাটিকের ট্রেন্ডি শাড়ি বেছে নিতে পারেন। ছেলেরা সুতি শার্ট, পাঞ্জাবি বা ফতুয়া বেছে নিন। সেই সঙ্গে গরমে আরাম পেতে আপনি চোখ বুজে নির্ভর করতে পারেন চিরন্তন রং সাদার সঙ্গে হালকা যেকোনো রঙের কম্বিনেশনের পোশাক।
নিজের যত্নে
তীব্র গরমে প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। পানি তো বেশি খেতে হবেই। সেই সঙ্গে নিজের চলাফেরায় আলাদা খেয়াল রাখা দরকার। বিশেষ করে কর্মজীবীরা বাইরে বের হওয়ার কারণে শরীর, ত্বক ও চুলেও এর প্রভাব পরে।
বাইরে বের হওয়ার আগে প্রথমে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে তার দশ মিনিট পর সানস্ক্রিন দিয়ে বিশ মিনিট পর বের হন। সাথে ব্যাগে এক প্যাকেট ফেসিয়াল ওয়াইপ, পকেট পারফিউম রেখে দিন। বাইরে থেকে ফিরে মুখে এক টুকরো বরফ ঘষে নিন। এতে ত্বকে ঠান্ডা ভাব বজায় থাকে। এছাড়া ঠান্ডা শশা ও তরমুজের রস লাগাতে পারেন।
গরমে বেশি মেকআপ একদমই মানায় না। তাই যেটুকু না করলেই না যেমন কাজল, আইলাইনার আর মুখে ফেসপাউডার লাগাতে পারেন। রোদের তীব্রতা বেশি থাকলে দিনে দু বার গোসল করে নিতে পারেন। সকালে বের হবার সময় এবং বাসায় ফিরে। এতে আরামবোধ হবে। ত্বকও সতেজ থাকবে।
দিনে যতবার সম্ভব মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। তোয়ালে দিয়ে না মুছে পানিগুলো ত্বককেই শোষন করতে দিন। স্ক্রাবিং এর জন্য লেবুর রস ও চিনি, চালের গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। ব্রণ থাকলে নখ লাগাবেন না কখনোই। আর সব সময় ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার রাখুন। গরমে চুলের অবস্থাও কিন্তু নাজুক হয়ে যায় রোদের তীব্রতায়। তাই চুলের ব্যাপারেও অবহেলা করা একদম ঠিক হবে না। গরমে মাথার ত্বক ঘামে তাই চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। শাওয়ার শেষে চুল ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।
এই গরমে নিজের খাদ্যাভ্যাস, চলাফেরার নিয়মানুবর্তিতার ওপরই নির্ভর করে আপনার সুস্থতা ও ভালো থাকা। তাই এই বৈরি আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে নিজের প্রতিটি ব্যাপারেই সতর্ক থাকুন।
আরও পড়ুন:ত্বকে লাবণ্য ফেরানোর পাশাপাশি রোদে পোড়া দেহের যত্নে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। হলুদ দিয়ে তৈরি হয় সাবান, যা প্রসাধনী হিসেবে বেশ কার্যকর।
ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করার পাশাপাশি প্রসাধনী হিসেবে হলুদের তৈরি সাবানের উপকারিতা নিয়ে জানিয়েছেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের রূপ বিশেষজ্ঞ শাহীনা আফরিন মৌসুমি। পরামর্শগুলোর তার ভাষায় পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
সুপ্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের যত্ন ও নানা রোগের ওষুধ হিসেবে হলুদ ব্যবহার হয়ে আসছে। নানা আয়ুর্বেদিক গুণ থাকা কাঁচা হলুদ, শুকনো হলুদ গুঁড়ো বিভিন্ন উপায়ে আমরা ব্যবহার করি দৈনন্দিন জীবনে।
রোদে পোড়া ত্বকের জন্য হলুদ খুবই উপকারী। ত্বকের ধরন অনু্যায়ী হলুদের ব্যবহার একটু ভিন্নভাবে করতে হয়।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকের জন্য প্রথমে হলুদের রসটাকে বের করে নিতে হবে। তারপর সেটা দুই থেকে তিন মিনিট চুলায় ফুটিয়ে নিতে হবে। এর সঙ্গে বেসন ও ডিমের কুসুম মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে যায়।
তৈলাক্ত ত্বক
এ ক্ষেত্রেও একইভাবে হলুদের রস ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর মুলতানি মাটি নিয়ে হলুদের রসে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার সঙ্গে এক চামচ পুদিনা পাতা ও এক চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে হাত ও মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মিশ্র ত্বক
মিশ্র ত্বকের যত্নটা একটু ভিন্নভাবে নিতে হয়। কারণ এ ধরনের ত্বক একটু বেশি স্পর্শকাতর হয়। সে জন্য আগের মতোই হলুদের রস নিয়ে তার মধ্যে দেশি সবুজ মুগডাল ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর একে পেস্ট করে তুলসী পাতার রস ও কেওলিন পাওডার মিশিয়ে মুখ ও হাত-পায়ে লাগাতে পারেন। এতে যেমন ত্বকের কালচে ভাব দূর হবে, তেমনি হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।
আর সব ধরনের ত্বকেই হলুদের রসের সঙ্গে ব্রাউন সুগার নিয়ে স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে ব্ল্যাকহেডস দূর হয়।
কখন ব্যবহারে বেশি উপকার
হলুদ সবসময় রাতে ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের যেকোনো প্যাক লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে একটা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিলে ত্বকের সজীবতা বাড়ে। আর হলুদের রস বা গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলেও ত্বক ভেতর থেকে উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়।
আরও পড়ুন:ব্যস্ত নগরে সকালের ঘুমটা অনেকেরই ভেঙেছে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিতে। তাড়াহুড়ো করে অফিসের পথ ধরতে হয়েছে চাকরিজীবীদের। বাসাতেও আছেন কেউ কেউ। নাস্তাটাও হয়তো একভাবে সারা হয়েছে।
সকাল বাড়তে বাড়তে হওয়া দুপুরের দিকে যদি এমন ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে পাতে পড়ে খিচুড়ি! মন্দ হতো না কিন্তু। হতে পারে সেটি ভুনা ইলিশ খিচুড়ি। এ নিয়েই তাই রেসিপি দিয়েছে সংবাদমাধ্যম এই সময়।
কী লাগবে
২ কাপ পোলাও চাল, ৬ টুকরো ইলিশ মাছ, ৩ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, ৮ চা চামচ সরিষার তেল, প্রায় এক কাপ মুগ ডাল, এক কাপ মসুর ডাল, ৩ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়ো, পরিমাণমতো কাঁচা মরিচ ও লবণ, ৪ থেকে ৫টি এলাচ, ৪টি লবঙ্গ, ২টি দারুচিনি
রান্না হবে যেভাবে
চাল আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। মাছে সামান্য লবণ-হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিন। এবার ওই তেলেই এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি দিন। গন্ধ বের হলে এতে আদা-রসুন বাটা দিয়ে চাল, ডাল, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে একটু নাড়তে থাকুন (মুগ ডাল কড়াইতে হালকা ভেজে ভাল করে ধুয়ে রাখবেন আগে থেকে)।
চাল-ডাল ভাজা ভাজা হয়ে গেলে পরিমাণ মতো পানি দিন। ফুটতে শুরু করলে স্বাদমতো লবণ দিয়ে দিন। জল প্রায় শুকিয়ে এলে তাতে ইলিশ মাছ ভাজা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখুন। কয়েক মিনিট ভাপে বসানোর পর নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আরও পড়ুন:দুই দিনের শখ, কিন্তু ক্ষতি হয় দীর্ঘদিনের। সাত-পাঁচ না ভেবেই চুলে লাগাচ্ছেন আকর্ষণীয় সব রং, যার কেমিক্যাল চুল থেকে ত্বক সব ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক। তাই চুল কালার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় জানা দরকার তা জানিয়েছেন ভারতের ডা. বি. সি. রায় হাসপাতালের ডার্মাটোলজিস্ট ডা. গৌরব রায়। তার ভাষায় সেগুলো তুলে ধরা হল।
‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা।’ বিদিশার নিশার মতো ঘন কালো চুল এখন অতীত। তিরিশের কোঠায় ঢোকামাত্রই কাঁচা-পাকা চুল এখন অধিকাংশকেই চিন্তায় ফেলছে, এ ছাড়াও কেউ কেউ স্বেচ্ছায় চুলে রং করছেন। কালো আজ আর ভালো নয়, এখন নারীরা রঙিন চুলের নেশায় মেতেছেন। তাই লাল, নীল, হলুদ, সবুজ চুলে বাদ নেই কিছুই। এই পাশ্চাত্য ট্রেন্ড আদৌ কি চুলের জন্য ভালো? শুধু চুলই নয়, শরীরেও কিন্তু এই রং ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
রাসায়নিকযুক্ত হেয়ার কালার ব্যবহারে সতর্কতা
দীর্ঘদিন ধরে কেউ অ্যামোনিয়াযুক্ত হেয়ার কালার বা ডাই ব্যবহার করলে তাদের মধ্যে কোনো জিনিসের গন্ধ না পাওয়ার মতো প্রবণতা দেখা যায়। অ্যামোনিয়াযুক্ত ডাই ব্যবহারের সময় নিশ্বাসের মাধ্যমে সেই গন্ধ ফুসফুসে গিয়ে অ্যাজমা রোগীদের মারাত্মক ক্ষতি করে। রঙে থাকা প্যারাফেলিনিনডায়ামাইন চুলের জন্য ক্ষতিকর, তবে বিভিন্ন গবেষণার তথ্য এই অত্যাধুনিক চুলের রং বা ডাই থেকে ক্যানসার হওয়ার কোনো প্রমাণ দেয়নি।
প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহার
প্রাকৃতিক উপকরণ মেহেদি পাতা, চা বা কফি ফোটানো জল, বিট-গাজরের নির্যাস দিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান অ্যামোনিয়া ও পিপিডি ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে হেয়ার কালার তৈরি করে। এতে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া বা ঝুঁকি থাকে না এবং চুলের কোনো ক্ষতিও হয় না।
চামড়া থেকে একটু দূরে রং লাগানো
ত্বকের চামড়া থেকে সবসময় একটু দূরে রং লাগানো ভালো। রং যাতে ত্বকের সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অ্যামোনিয়াযুক্ত ডাই লাগিয়ে চুল ধোয়ার সময় সেই পানি ত্বকের অন্য জায়গায় লাগলে এবং এতে থাকা কেমিক্যালের ঝাঁজালো গন্ধ নাক, মুখ, চোখ ও চামড়ার মাধ্যমে ভেতরে প্রবেশ করলে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই সবসময় অ্যামোনিয়াহীন রংই ভালো। আপাতদৃষ্টিতে লাল, বাদামি বা কোনও স্থায়ী রংই চুলের জন্য উপকারী নয়।
উপাদানের কথা মাথায় রাখা
মেহেদির রং সবসময়ই হালকা হওয়া উচিত। ‘ফেনল’ সমৃদ্ধ যেকোনো চুলের রং ব্যবহারে চুল রুক্ষ ও নষ্ট হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে চুলে রং করলে তা ত্বকের সংস্পর্শে এলে এগজিমার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া এ ধরনের কৃত্রিম রঙে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড থাকে যা চুলের মেলানিন তথা প্রাকৃতিক কালো রংকে ভেঙে দেয়। ফলে চুল সাদাটে হয়ে যায়। সে জন্য চুলে রং বাছাই করার আগে অবশ্যই উপাদানের কথা মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর এ স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে হলে আমাদের নিয়মিত শরীরচর্চার বিকল্প নেই। শরীরচর্চার মাধ্যমে আমরা যেমন স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে পারি, তেমনি নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। পাশাপাশি আমরা তারুণ্য দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে পারি।
এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মিস্টার বাংলাদেশ এবং ফিটনেস কোচ সাকিব নাজমুস। সে পরামর্শগুলো তার ভাষায় তুলে ধরা হলো পাঠকদের সামনে।
বর্তমান সময়ের যুবকরা শরীরচর্চায় অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে ও সুঠাম দেহের অধিকারী হয়ে নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করার দিকে ঝুঁকছেন। আকর্ষণীয় মাসল ফিটনেসের জন্য একজন যুবকের বেশ কিছু বিষয়ে নজর দেয়া উচিত।
ওয়ার্কআউট
নিজেকে ফিট করতে চাইলে রেগুলার ওয়ার্কআউটের বিকল্প নেই। আমরা রেগুলার ওয়ার্কআউটের মাধ্যমে মাসল ও শারীরিক গঠনের পরিবর্তন আনতে পারি। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ওয়ার্কআউট করা উচিত।
ওয়ার্কআউটের ক্ষেত্রে আমরা যারা ওজন কমাতে চাই, তাদের কার্ডিওর ওপর ফোকাস বেশি দেয়া উচিত। আর যারা আমরা মাসল গেইন করতে চাই, তাদের প্রতিদিন একটি করে বড় মাসলের সঙ্গে একটি ছোট মাসলের ওয়ার্কআউট করা উচিত। আর আমাদের ওয়ার্কআউট অবশ্যই ভালো কোনো প্রশিক্ষকের মাধ্যমে করা উচিত।
প্রশিক্ষকের সঙ্গে নিজের বর্তমান কন্ডিশন ও টার্গেটের ওপর ভিত্তি করে চার্ট তৈরি করে নিতে হবে।
ডায়েট
ওয়ার্কআউটের পাশাপাশি আমাদের ডায়েটের ওপর শতভাগ ফোকাস করতে হবে। আমাদের শারীরিক পরিবর্তনের বেশির ভাগই নির্ভর করে ডায়েটের ওপর।
পরিপূর্ণভাবে ডায়েট অনুসরণ না করে আমরা কখনোই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। এ জন্য আমরা নিউট্রেশন স্পেশালিস্টের মাধ্যমে বর্তমান কন্ডিশন ও আমাদের টার্গেটের ওপর নির্ভর করে ডায়েট কী হবে, তা নির্ধারণ করে নিতে পারি।
ঘুম
শরীরচর্চা যারা করেন তাদের জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। এ জন্য প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। কারণ ঘুমের মাধ্যমে আমাদের মাসলগুলা রেস্ট পায়। পাশাপাশি আমাদের মাসলগুলো রিকভার হয়। এ ছাড়া রাতে আমাদের ঘুমের মাধ্যমে আমাদের ন্যাচারাল টেস্টোস্টেরন তৈরি হয়। আর এই রিকভারি ও ন্যাচারাল টেস্টোস্টেরন তৈরি আমাদের মাসল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ফুড সাপ্লিমেন্ট
আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যভ্যাসে অনেক ক্ষেত্রে মাসল বৃদ্ধির জন্য যে নিউট্রেশনগুলা দরকার হয়, তা পাই না। এ জন্য আমাদের শরীরে অনেক রকম নিউট্রিশনের ঘাটতি রয়ে যায়। তা আমাদের শরীরচর্চায় মাসল বাড়ানো বা ওজন বাড়ানো বা কমানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এ জন্য আমরা সহায়ক হিসেবে ফুড সাপ্লিমেন্ট নিতে পারি। ফুড সাপ্লিমেন্টের মধ্যেও অনেক ভাগ আছে। যার যার বডি কন্ডিশন ও টার্গেট অনুযায়ী তার ফুড সাপ্লিমেন্ট চার্ট হবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের যার যার নিজের বডি কন্ডিশন ও টার্গেট অনুযায়ী আমাদের ওয়ার্কআউট চার্ট, ডায়েট চার্ট ও ফুড সাপ্লিমেন্ট চার্ট ভিন্ন হবে।
সবার জন্য একই ওয়ার্কআউট চার্ট, ডায়েট চার্ট ও ফুড সাপ্লিমেন্ট চার্ট হবে না।
শরীরচর্চার মাধ্যমে আমরা তখনই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব যখন আমাদের ওয়ার্কআউট চার্ট, ডায়েট চার্ট, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম বা ঘুম ও ফুড সাপ্লিমেন্ট শতভাগ মেইনটেইন করতে পারব। তার মধ্যে কোনোটা বাদ দিয়ে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না।
আরও পড়ুন:গরম ও বর্ষায় শুধু ত্বকের যত্ন নিলেই শেষ নয়। এ সময় ত্বক ও চুলের পাশাপাশি হাত ও পায়ের নখের যত্নও নিতে হবে। রান্না করলে বা পানি বেশি ব্যবহারে নখের ওপর অনেক প্রভাব পড়ে। নখ ভেঙে যায়, ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয় ইত্যাদি। নেইল পলিশ বা নেইল আর্ট যেটাই করুন না কেন, নখ যদি সুন্দর না হয় তবে কোনো কিছুতেই সুন্দর দেখাবে না। বর্ষায় হাত-পায়ের পাশাপাশি নখের যত্ন কীভাবে নেবেন সে বিষয়ে পরামর্শ জানাচ্ছেন বিন্দিয়ার রুপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।
হাত দিয়ে আমাদের সব কাজ করতে হয়, তাই হাতের নখের বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে। এজন্য পায়ের নখের পাশাপাশি হাতের নখের অতিরিক্ত যত্ন নেয়া প্রয়োজন। তবে এই পুরো পদ্ধতিটি হলো মেনিকিউর-পেডিকিউর এর মাধ্যমেই করতে হয়।
এবার গরমে নখের যত্নের কিছু উপায় জেনে নিই।
• এই সময়ে হাত-পায়ের যত্নের পরিমাণটা বাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ আবহাওয়ার জন্য হাত পা ভেজা থাকে এবং ইনফেকশন হয়। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন মেনিকিউর-পেডিকিউর করতে হবে।
• যেকোনো কাজ শেষে হাতে ময়েশ্চরাইজার লাগাতে ভুলবেন না। এসির মধ্যে থাকলে কিছুক্ষণ পরপর হাত ও পায়ে ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন, এতে হাতের চামড়া ও নখ নরম থাকবে।
• বাইরে থেকে ফেরার পর হালকা কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস বা ভিনেগার ও শ্যাম্পু মিশিয়ে হাত এবং পা ডুবিয়ে রেখে ব্রাশ করে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
• কাজকর্ম সেরে হাতে লেবুর রস, চিনি ও মধু মিশিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। এতে ভালো স্ক্রাবিং হবে ও কালো দাগ উঠে যাবে। নখটাকে ভালো করে বাইরে এবং ভেতর থেকে ব্রাশ করতে হবে।
• জীবাণু থেকে বাঁচতে কয়েক কয়েক ফোটা স্যাভলন অলিভ অয়েল এর সাথে মিশিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ম্যাসাজ করুন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এটা দিনে একবার করুন। খুব অল্প সময়েই নখের বৃদ্ধি দেখতে পাবেন।
• দুধের সর ও হলুদ মিশিয়ে লাগালে হাত ও নখে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ আটকানো যায়। শুধু মুলতানি মাটি বা বেসনের পেস্টও দিনশেষে লাগাতে পারেন হাত ও পায়ে।
• নখ পরিষ্কার করার পর কোণা কেটে ফেলুন এবং বাফারিং কিট দিয়ে বাফার করে ফেলুন। এতে নখের কোণায় ময়লা জমতে পারবেনা এবং মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে।
• ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। ডিমের কুসুম, ফিটকিরি ও টকদই ভালো করে ফেটিয়ে নখে লাগালে নখ উজ্জ্বল হবে।
প্রতিদিন সকালে রোদ নখে লাগান। এতে নখ ভিটামিনি ডি পাবে যা নখের বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। তবে নখে বেশি ইনফেকশন দেখা দিলে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য