ঐতিহ্যগতভাবে ভারতীয় নারীদের ‘আদর্শ স্ত্রী’ এবং ‘মা’ হিসেবে দেখার চল রয়েছে। সমাজ তাদের এভাবেই বড় করে তোলে। শেখানো হয় জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হচ্ছে বিয়ে।
তবে এমন দৃষ্টিভঙ্গিতে আঘাত করতে শুরু করেছেন ভারতের বিপুলসংখ্যক নারী। সংসারের বেড়াজালে আটকে না থেকে স্বাধীন বা সিঙ্গেল জীবন বেছে নিচ্ছেন তারা।
এমন ২৪ নারীর সঙ্গে সম্প্রতি মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন বিবিসির সাংবাদিক গীতা পান্ডে। এসব নারীর সবাই ভারতের শহুরে সিঙ্গেল নারীদের একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্য।
গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীময়ী পিউ কুন্ডু বলেন, ‘আসুন আমরা নিজেদের বিধবা, ডিভোর্সি বা অবিবাহিত হিসেবে বর্ণনা করা বন্ধ করি। আসুন নিজেদের গর্বের সঙ্গে সিঙ্গেল বলি।’
করতালিতে উল্লাস করলেন নারীরা
ভারতীয় সমাজে বিয়েনির্ভরতার ঝোঁক প্রবল। অনেকেই একা বা সংসারে না জড়ানোকে ‘কলঙ্ক’ ভাবেন।
ভারতের গ্রামাঞ্চলে অবিবাহিত নারীদের পরিবারের বোঝা হিসেবে দেখা হয়। লাখ লাখ বিধবা নারীকে প্রতিবছর বৃন্দাবন এবং বারানসীর মতো পুণ্যস্থানে নির্বাসনে পাঠানো হয়।
শ্রীময়ী পিউ কুন্ডুর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়া নারীদের বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা। কেউ শিক্ষক, কেউ চিকিৎসক আবার কেউ আইনজীবী। এ ছাড়া সাংবাদিক, উদ্যোক্তা, লেখক, অধিকারকর্মীও আছেন এই দলে। তাদের কেউ স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন, কেউ বিধবা আবার কেউ কেউ বিয়েই করেননি।
শহুরে ধনী সিঙ্গেল নারীরা এখন ভারতের জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। ব্যাংক, গয়না প্রস্তুত, ভোগ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান এবং ট্রাভেল এজেন্সির মতো খাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
আধুনিক সংস্কৃতিও অনেক নারীকে একা থাকার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। বলিউডের সিনেমা কুইন, পিকু কিংবা ওয়েব শো ফোর মোর শট প্লিজ-এ কেন্দ্রীয় চরিত্রে সিঙ্গেল নারীকে দেখা গেছে। এসব সিনেমা বাণিজ্যিকভাবে দারুণ সফল।
অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বলা হয়, সব নারীর (বিবাহিত/অবিবাহিত) গর্ভপাতের সমান অধিকার রয়েছে। এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছে নারীবাদী সংগঠনগুলো।
তবে এসবের পরও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি খুব একটা বদলায়নি। কুন্ডু বলেন, ‘অবিবাহিত থাকা আসলে বিত্তশালীদের জন্যও সহজ কিছু নয়। সব সময় তারাও নানা প্রশ্নের মুখে পড়েন।
‘একজন অবিবাহিত নারী হিসেবে আমি বৈষম্য ও অপমানের সম্মুখীন হয়েছি। মুম্বাইতে যখন একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিতে চেয়েছিলাম, তখন হাউজিং সোসাইটির সদস্যরা আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কী মদ খান? আপনি কি যৌনতায় সক্রিয়?’
কয়েক বছর আগে কুন্ডুর মা তাকে বিয়ে দিতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। অভিজাত একটি সাইটে তিনি পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। অবশেষে এক ছেলের সঙ্গে দেখা করেন কুন্ডু।
কুন্ডু বলেন, ‘প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমি কুমারী কি না?
‘এটি একটি প্রশ্ন, যা অবিবাহিত নারীদের প্রায়ই করা হয়।’
তবে ভারতের মতো দেশে নারীর পক্ষে একা থাকাটা কঠিন কিছু হওয়ার কথা ছিল না। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে ভারতে ৭ কোটি ১৪ লাখ নারী সিঙ্গেল জীবন যাপন করছেন। সংখ্যাটি ব্রিটেন বা ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।
সময়ের সঙ্গে ভারতে সিঙ্গেল নারীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, সেটা ২০০১ সালে আদমশুমারির সঙ্গে তুলনা করলেই বোঝা যায়। সেবার সিঙ্গেল নারীর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ১২ লাখ। ১০ বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে ৩৯ শতাংশ।
করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালের আদমশুমারি হয়নি। কুন্ডু বলেন, ‘ভারতে সিঙ্গেল নারীর সংখ্যা এখন ১০ কোটি ছাড়াবে।’
সিঙ্গেল নারীর সংখ্যা বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ অবশ্য বিয়ের বয়স। শিক্ষার প্রসার বাড়ায় অল্প বয়সে বিয়ের হার অনেকটাই কমেছে। আগে বয়স ২০ পার হলেই তড়িঘড়ি করে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতেন অভিভাবকরা। এখন সেই প্রবণতা অনেক কমেছে।
পাশাপাশি বিধবার সংখ্যাও বেড়েছে অনেক। কারণ গড় আয়ু বিবেচনায় পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি দিন বাঁচেন।
কুন্ডু বলেন, ‘অনেক নারী এখন কেবল পরিস্থিতির কারণে নয়, নিজেই অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এই পরিবর্তনকে আমাদের মেনে নেয়া উচিত।
‘আমি অনেক নারীকে চিনি, যারা অবিবাহিত থাকতেই চান। বিয়ের ধারণাকে তারা প্রত্যাখ্যান করেন। তারা বিয়েকে একটি পুরুষতান্ত্রিক আচরণ মনে করেন।’
কুন্ডুর মা মাত্র ২৯ বছর বয়সে স্বামীকে হারান। সে সময় তাকে অনেক বৈষম্যের শিকার হতে হয়; যা কুন্ডুর মনে ভীষণ দাগ কাটে।
কুন্ডু বলেন, ‘বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দেখছি সমাজে পুরুষহীন একজন নারী কেমন অসহায়। তাকে বেবি শাওয়ার কিংবা কাছের কারও বিয়েতেও এড়িয়ে যাওয়া হতো। কনের সামনে যেতেও বারণ করা হতো; কারণ বিধবার ছায়াকে অশুভ মনে করা হয়।’
৪৪ বছর বয়সে কুন্ডুর মা প্রেমে পড়েছিলেন এবং ফের বিয়ে করেন। সে সময়েও সমাজের ‘ক্রোধের’ মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে।
কুন্ডু বলেন, ‘দুঃখ, কান্নাকাটি আর নিঃসঙ্গতাই কেন একজন বিধবা নারীর ভাগ্যে থাকবে? সমাজ খালি এটাই ভাবে, একজন বিধবা কীভাবে ফের বিয়ে করার সাহস পায়!’
মায়ের এমন অপমান কুন্ডুর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিয়ে করতে মরিয়া হয়ে বড় হয়েছি। আমি একটি রূপকথায় বিশ্বাস করেছিলাম। ভেবেছি বিয়ে আমার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে এবং নিজের সমস্ত অন্ধকার দূর করবে।’
কুন্ডুর জীবনেও প্রেম এসেছিল... দুইবার, তবে দুটিই ভেঙে যায়। এতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন কুন্ডু। ২৬ বছর বয়সে বিয়ে একপ্রকার ঠিক ছিল। তবে সেবার কুন্ডু বুঝতে পারেন, প্রথাগত বিয়ে তার জন্য নয়। কারণ এখানে বিয়ে বলতে নারীকে এক পুরুষের অধীনে জীবন পার করতে হয়।
কুন্ডু বলেন, ‘এটি এমন একটি যা সংস্কৃতি, ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং বিয়ের ভিত্তি হলো- সম্মান, গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বীকৃতি।’
ভারত এখনও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ থেকে বের হতে পারেনি। দেশটির ৯০ শতাংশের বেশি বিয়ে পারিবারিকভাবে ঠিক করা হয়। একজন মেয়ে কাকে বিয়ে করবেন সে সম্পর্কে খুব কম ক্ষেত্রেই তার মতামত দেয়ার সুযোগ থাকে। তিনি আদৌ বিয়ে করতে চান কি না, সে প্রশ্ন তো দূরের কথা।
দিল্লির কাছে গুরুগ্রামের (গুরগাঁও) বাসিন্দা ভাবনা দাহিয়া। ৪৪ বছরের ভাবনা বিয়ে করেননি। তিনি বলেন, ‘সমাজে পরিবর্তন আসছে। অবিবাহিত নারীর সংখ্যা বাড়ছে।
‘আমরা সমুদ্রের একটি বিন্দু হতে পারি, তবে অন্তত এখন একটি বিন্দু তো আছে।
‘ঐতিহ্যগতভাবে বেশির ভাগ বিবাহিত নারীর কথোপকথনে থাকে স্বামীর ক্যারিয়ার, তার পরিকল্পনা, সন্তানের স্কুল নিয়ে। একজন নারীরও একটা আলাদা জীবন আছে। সেই জীবনে অনেক পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। সেই আচরণগুলোয় এখন পরিবর্তন আসছে।’
লিবিয়া থেকে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করা আরও ১২৩ অনিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিককে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বাংলাদেশির সবাই বুরাক এয়ারের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে (ইউজেড ০২২২) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
উল্লেখ্য, প্রত্যাগতদের অধিকাংশই মানবপাচারের শিকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম-এর প্রতিনিধিরা তাদের স্বাগত জানান ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইউরোপে পৌঁছানোর উদ্দেশে অনিবন্ধিতভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। লিবিয়ায় অবস্থানকালে তাদের অনেকেই মানব পাচারকারীদের দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।
সরকারি কর্মকর্তারা এসব অভিবাসীকে পরামর্শ দেন, যেন তারা অন্যদের এই ধরনের বিপজ্জনক ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ভবিষ্যতে এমন যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন।
পুনর্বাসন সহায়তার অংশ হিসেবে আইওএম প্রত্যেককে নগদ ৬ হাজার টাকা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বর্তমানে লিবিয়ার বিভিন্ন বন্দিশিবিরে আটক থাকা অন্যান্য বাংলাদেশির নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের কাজ চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম যৌথভাবে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।
তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।
সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।
সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে শুক্রবার বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্ত করার কয়েক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে ঘিরে রোনেন বারের ব্যর্থতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, তাকে আর বিশ্বাস করা যায় না।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইএসএ পরিচালক রোনেন বারকে বরখাস্তে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোনেন বারের উত্তরসূরি নিযুক্ত হওয়ার পর অথবা ১০ এপ্রিলের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করবেন।
এর আগে গত রবিবার নেতানিয়াহু বলেন, তার ওপর আস্থার অভাব রয়েছে। তাকে এ পদে রাখা যাবে না। তাই বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বার ১৯৯৩ সালে শিন বেতে যোগ দিয়েছিলেন।
বারের মেয়াদ আগামী বছর শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবরে পূর্ববর্তী ইসরায়েলি সরকার শিন বেতের প্রধান হিসেবে তাকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু নেতানিয়াহুর সরকার এক বছর আগেই তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলা চালানোর আগে থেকেই রোনেন বারের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। গত ৪ মার্চ হামাসের হামলার ওপর শিন বেতের অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:স্কটল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ রিসোর্টে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনপন্থি ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন‘ নামের একটি সংগঠন এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে সংগঠনটি।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে জানানো হয়, ট্রাম্পের গাজা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনি মানুষ ও তাদের সমর্থকরা। এরই জেরে এ হামলা ঘটিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন সংগঠনের সদস্যরা।
টার্নবেরি রিসোর্টটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি রিসোর্টের দেয়ালে লাল রং দিয়ে ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিভিন্ন গ্রাফিতি অংকন করা হয়েছে। রিসোর্টের সবুজ মাঠে লাল রং দিয়ে লেখা হয়েছে ‘গাজা বিক্রির জন্য নয়’।
সংগঠনটির কর্মীরা জানান, ট্রাম্প গাজাকে নিজের সম্পত্তির মতো মনে করে, যা খুশি তাই করতে পারে না। তারই প্রতিবাদ এটা।
তারা বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমাদের প্রতিরোধ থেকে তার নিজের সম্পত্তিও নিরাপদ নয়।’
ফিলিস্তিনিনের এই হামলাকে ট্রাম্প ‘শিশুসুলভ, অপরাধমূলক’ কার্যক্রম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তার পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রাজনৈতিক সমীকরণ ঢেলে সাজাতে উঠেপড়ে লেগেছেন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ উদ্যোগ পৌঁছেছে ইরানের দ্বারপ্রান্তেও।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে চিঠি পাঠিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আলোচনায় না বসলে সামরিক অভিযানের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্কে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি ইরানের নেতাদের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির উদ্দেশে বলেছি, আশা করি আপনি আলোচনায় বসবেন। কারণ, এটি ইরানের জন্য ভালো হবে।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় তেহরানের কল্যাণে সমঝোতাই যুক্তিসঙ্গত হবে।
যদিও ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন। তারা জানিয়েছে, এমন কোনো চিঠির বিষয়ে অবগত নয় তারা।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ট্রাম্পের চিটি পাঠানোর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তিনি শুক্রবার এএফপিকে বলেন, শক্তি প্রয়োগ করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না।
আরও পড়ুন:ইরান ও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন।
নতুন টার্মিনাল ও জাহাজ চালু হওয়ায় মার্চ থেকে চীন তেল আমদানি বৃদ্ধি করবে বলে খবর পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি সত্ত্বেও চীন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘অয়েল প্রাইস’ নামের ওয়েবসাইট।
অয়েল প্রাইসের তথ্য অনুযায়ী, ইরান ও রাশিয়া থেকে চীনের তেল আমদানি দিন দিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ওয়েবসাইটটির উদ্ধৃতি দিয়ে চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া শনিবার এ খবর জানায়।
কয়েকজন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে জানান, চীন তেল ট্যাংকারগুলোতে পরিবর্তন এনেছে যাতে সেগুলো আর নিষেধাজ্ঞার আওতায় না থাকে। এর ফলে রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারবে বেইজিং। ফলে ২০২৫ সালের মার্চ মাসে এই দুই দেশ থেকে চীন বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারবে। এ আমদানি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা চীনা তেল ট্যাংকারগুলো এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য