বাংলাদেশসহ ১১৪টি দেশের ৩৪৪ জন শিল্পীর ৪৯৩টি শিল্পকর্ম নিয়ে ‘১৯তম এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০২২’-এর পর্দা উঠছে বৃহস্পতিবার।
এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলন বিস্তারিত তুলে ধরেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বিগত ৪০ বছর ধরে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিল্পযজ্ঞ এশিয়ান আর্ট বিয়েনাল আয়োজন করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক জানান, মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ ১১৪টি দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি ১৪৯ জন এবং বিদেশি শিল্পী রয়েছেন ৩৪৪ জন।
প্রদর্শনীতে চিত্রকলা, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, স্থাপনাশিল্প ও নতুন মাধ্যমের শিল্পকর্মসহ মোট ৪৯৩টি বাছাইকৃত শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে।
এই কর্মযজ্ঞের জুরি বোর্ডের সদস্যরা হলেন, জগথ ভিরাসিংহে (শ্রীলঙ্কা), নারসেরিন টর (তুরস্ক), ইয়োনা ব্লাজউইক (যুক্তরাজ্য) ও জেরুস ল সুহান (পোল্যান্ড)। জুরি বোর্ডের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী।
এতে মোট পুরস্কার রয়েছে ৯ টি। এর মধ্যে গ্র্যান্ড পুরস্কার ৩টি। যেগুলো প্রতিটির পুরস্কার মান ৫ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হবে।
সম্মানসূচক পুরস্কার রয়েছে ৬টি। প্রতিটির পুরস্কার মান ৩ লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাসব্যাপী এই প্রদর্শনীটি চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিক প্রতিনিধিদের দাবি ন্যূনতম মাসিক বেতন ২০ হাজার ৪০০ টাকা। আর মালিক প্রতিনিধিরা বিদ্যমান অবস্থা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা বাড়িয়ে ন্যূনতম বেতন ১০ হাজার ৪০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন।
রাজধানীর পল্টনে রোববার ন্যূনতম মজুরি বোর্ড কার্যালয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লার কাছে জাতীয় পোশাক শ্রমিক কর্মচারি লীগ (জেজিএসকেএল) সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ও পোশাক মালিকদের প্রতিনিধি মো. সিদ্দিকুর রহমান নিজ নিজ পক্ষ থেকে প্রস্তাব পেশ করেন।
উভয় পক্ষের প্রস্তাব পাওয়ার পর বোর্ড চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষের প্রস্তাবে বেশ ব্যবধান রয়েছে। শ্রমিক পক্ষ চাচ্ছে ২০ হাজার ৪০০ টাকা। আর মালিক পক্ষ দিতে চাচ্ছে ১০ হাজার ৪০০ টাকা চাচ্ছে।
‘মজুরি বোর্ডের পঞ্চম সভা অনুষ্ঠিত হবে ১ নভেম্বর। ওই বৈঠকে ব্যবধানটা কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হবে।’
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রস্তাবে সব সময়ই পার্থক্য থাকে। বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা এবং শিল্প উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে আমরা এই প্রস্তাব করেছি।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তারপর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে মজুরি বাড়াতে হবে।
তবে যেহেতু চেয়ারম্যান শ্রমিক ও মালিকদের প্রস্তাবিত মজুরির ব্যবধান কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করব এবং পরবর্তী বৈঠকে তাদের জানাব।’
এছাড়া বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) শ্রমিকদের জীবনমান মূল্যায়ন করে ন্যূনতম বেতন ১৭ হাজার ৫৬৫ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের প্রাণবন্ত শিল্প জগৎকে তুলে ধরতে যাত্রা শুরু করেছে ‘প্ল্যাটফর্মস’।
রাজধানীর গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডের ‘আলোকি’তে শুক্রবার ভিন্ন ধারার প্ল্যাটফর্মটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
শিল্পের জগতে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রায়ানা হোসেন প্রতিষ্ঠা করেন প্ল্যাটফর্মস। সেই প্রতিশ্রুতি থেকে দেশের শিল্পী ও শিল্প জগতে এরই মধ্যে এই প্ল্যাটফর্ম নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
প্ল্যাটফর্মসের জমজমাট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিল প্রদর্শনী, যাতে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় ও প্রাণবন্ত শিল্প জগতের চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। প্রদর্শনীতে বেশ কেয়কজন শিল্পীর ৫০টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছিল। শিল্প প্রদর্শনীর পাশাপাশি একটি যন্ত্রসংগীত অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, চিত্রশিল্পী মোহাম্মদ ইউনুসসহ আরও অনেকে। এ ছাড়া চলচ্চিত্র ও বিভিন্ন অঙ্গনের তারকরা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলেন।
প্ল্যাটফর্মস কী
প্ল্যাটফর্মস এমন এক ওয়েবসাইট, যেখানে দেশের চিত্রশিল্পীরা তাদের চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শন ও বিক্রি করতে পারবেন। দেশ ও দেশের বাইরের শিল্পপ্রেমীরা চাইলেই খুব সহজেই প্ল্যাটফর্মস ওয়েবসাইট থেকে তাদের পছন্দের শিল্পকর্মটি কিনতে পারবেন। প্রাথমিক অবস্থায় প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীনসহ অন্তত ২৫ শিল্পীর শিল্পকর্ম ওয়েবসাইটে স্থান পেয়েছে। এটি প্রতিনিয়তই বাড়তে থাকবে বলে আশা করছে প্ল্যাটফর্মস কর্তৃপক্ষ।
প্ল্যাটফর্মসের প্রতিষ্ঠাতা রায়ানা হোসেন তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘প্ল্যাটফর্মস আমাদের অনেক কষ্টের ফসল। বাংলাদেশের শিল্পী কমিউনিটির জন্য এটি নিবেদিত। প্ল্যাটফর্মসের উদ্বোধন বাংলাদেশের শিল্প জগতের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
‘শিল্পীদের নিজেদের প্রতিভার প্রকাশ ও বিশ্বের সঙ্গে তা শেয়ার করার মতো একটি প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাংলাদেশের সমৃদ্ধ শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের বাস্তব প্রতিফলন।’
আয়োজনে দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের পাশাপাশি ছিল সুমন ওয়াহিদ, সুলেখা চৌধুরী ও সোমা সুরভী জান্নাতের মতো উদীয়মান শিল্পীদের শিল্পকর্মও।
প্ল্যাটফর্মসের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুন:প্রায় ১০ বছর পরিত্যক্ত থাকার পর অবশেষে পুরোনো রূপে ফিরছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদাস্মৃতি ভবন।
বুধবার বিকেলে সারদা হলের সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেন সিলেটে সিটি করপোরেশন (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এ সময় প্রায় ৮৬ বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে জানান তিনি।
দশ বছর ধরে সারদা হলকে ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল সিসিক। দীর্ঘদিন সিসিকের মালামাল স্তূপ করে রাখায় নষ্ট হয়ে পড়ে এই ভবনের মঞ্চসহ পুরো মিলনায়তন। সংস্কৃতিকর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভবনটিকে পুরোনো রূপে ফেরাতে সংস্কারকাজ করছে সিসিক।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সংস্কারকাজের অংশ হিসেবে সারদা হল মিলনায়তনের মঞ্চ নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ছাদে নতুন ঢালাই দেয়া হয়েছে। এখন চলছে রঙের কাজ। দুই-এক দিনের মধ্যে দর্শক সারির আসন বসানো হবে।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত জানান, ২০ সেপ্টেম্বর সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট ৪০ বছরে পদার্পণ করবে। এ উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর হবে তিন দিনব্যাপী নাট্য প্রদর্শনী। সারদা হলেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, তার আগেই হলটির সংস্কার সম্পন্ন করার ব্যাপারে মেয়র আশ্বাস দিয়েছেন।
রজত বলেন, ‘এই সংস্কারকাজের পরও সংস্কৃতি চর্চার জন্য আরও কিছু কাজ করতে হবে। মঞ্চে লাইট, সাইন্ড সিস্টেম ও পুরো হলে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসাতে হবে। আমরা আশা করছি দ্রুততম সময়ে এগুলো সম্পন্ন হবে।’
এই ভবনকে সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবিতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা। ওই সমাবেশে হাজির হয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আশ্বাস দিয়েছিলেন, নভেম্বরের মধ্যে মিলনায়তনটি চালু করা হবে, তবে মেয়রের আশ্বাস সত্ত্বেও নভেম্বরে চালু হয়নি মিলনায়তনটি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সারদা হল থেকে নিজেদের মালামাল সরিয়ে এটির সংস্কারকাজ শুরু করে সিটি করপোরেশন।
এ প্রসঙ্গে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, সারদা হল এই অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী মিলনায়তন, যেটি কেবল সংস্কৃতি চর্চার জন্য একটি পরিবারের পক্ষ থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল। অথচ এই ভবনটি দখল করে সিটি করপোরেশন তাদের পরিত্যক্ত মালামালের ভাগাড়ে পরিণত করেছিল। এ ছাড়া সারদা হল কমপ্লেক্স দখল করে বিভিন্ন সময়ে সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন নির্মাণ করেছে।
রজত বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সারদা হল সংস্কার করে এটি সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছি। একই সঙ্গে এই এলাকায় গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে একটি কালচালার কমপ্লেক্স নির্মাণেরও দাবি আমাদের।’
১৯৩৬ সালে সিলেট শহরের সুরমা নদীর তীরের চাঁদনীঘাট এলাকায় নির্মাণ করা হয় ‘সারদাস্মৃতি ভবন’। সংস্কৃতি চর্চার বিকাশে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী পরিবার ৩৯ শতক জমিতে কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলের আদলে এই মিলনায়তনটি নির্মাণ করে। এরপর থেকে সিলেটের প্রথম এই মিলনায়তনে গান, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরবর্তী সময়ে সিলেট পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়ে আসছে ভবনটি।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরীর বন্দরবাজার এলাকার পুরোনো নগর ভবন ভেঙে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। এ সময় সুরমা নদীর তীরের তোপখানা এলাকায় সিটি করপোরেশন পরিচালিত ‘পীর হাবিবুর রহমান’ পাঠাগারে সিসিকের অফিস অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। আর পাঠাগার বই এনে স্তূপ আকারে রাখা হয় সারদা হলের। এ ছাড়া হলের মূল ভবনের পাশের ছোট ভবনগুলোতে সিসিকের কয়েকটি দপ্তরের কার্যক্রম চালু করা হয়।
সে সময় সিসিকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নগর ভবনের কাজ শেষ হওয়ার পর পুনরায় পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার চালু হবে এবং সারদা হল সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
এরপর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সিসিকের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর স্থায়ী ভবনে নিয়ে আসা হয় সিসিকের কার্যক্রম, তবে স্থায়ী ভবনে আসার প্রায় সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চালু হয়নি পীর হাবিবুর রহমান পাঠাগার। সারদা হলও সংস্কৃতিচর্চার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়নি।
সারদা হলের সংস্কারকাজের দায়িত্বে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী সামসুল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই অব্যবহৃত থাকায় এই মিলনায়তনের অনেক কিছুই ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে। মঞ্চের সব কাঠ নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো সংস্কার করা হয়েছে। বাকি কাজও শেষের পথে।’
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মূল স্থাপনা অবিকৃত রেখেই সারদা হলের সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। দ্রুত এসব কাজ শেষ হলে এটি পুরোনো রূপে ফিরবে বলে আশা করছি।’
আরও পড়ুন:জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) ইউরিয়া উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে যমুনা সার কারখানার গ্যাস সরবরাহ কমানো হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দৈনিক এক হাজার ৭০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছিল৷ কয়েক বছর ধরে গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও মেশিনারিজ ত্রুটির জন্য উৎপাদন কমে এসেছে।
বর্তমান সময়ে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টন পর্যন্ত উৎপাদন হচ্ছিল। এর মধ্যে প্রতিবছর দুই-একবার কর্তৃপক্ষ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করায় এ কারখানায় সার উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে।
এদিকে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটা থেকে কারখানায় গ্যাস সরবরাহে চাপ হঠাৎ কমে যায়। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকে কারখানার ইউরিয়া সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিআইসি। এজন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সার কারখানায় গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
জেএফসিএল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘যমুনা সার কারখানায় উৎপাদিত সারের গুণগত মান অন্য যেকোনো কারখানার চেয়ে ভালো। এই কারখানায় উৎপাদিত সার বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্জলের ২০টি জেলার চাহিদা পূরণ করে আসছে। বর্তমানে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কিত। দ্রুত এখানে প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে উৎপাদন চালুর দাবি জানাচ্ছি আমরা।’
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২ থেকে ৪৩ পিএসআই গ্যাসের চাপ প্রয়োজন। এই চাপ ৯ পিএসআইয়ে নেমে এলে তখন তো আর উৎপাদন সম্ভব হয় না।’
তিনি জানান, কারখানায়র গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস স্বল্পতার কথা জানায়। গ্যাস স্বল্পতায় সোমবার দুপুর থেকেই উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। বর্তমানে বিদ্যুৎ ও ইউটিলিটি উৎপাদন চালু থাকলেও সার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
পুনরায় উৎপাদন চালুর ব্যাপারে নিশ্চিত বলতে না পারলেও কমান্ড এরিয়ায় সারের ঘাটতি নেই বলে জানান তিনি।
পেরুর উত্তরাঞ্চলে খননকাজের সময় তিন হাজার বছর ধরে অক্ষত অবস্থায় থাকা একটি সমাধির সন্ধান পাওয়া গেছে।
সেই সমাধিতে পাওয়া গেছে তিন হাজার বছরের পুরোনো মৃৎপাত্রের টুকরা ও সিল।
বিবিসির বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্নতাত্ত্বিকরা ধারণা করছেন, সমাধিটি প্যাকোপাম্পার (প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান) কোনো এক পুরোহিতের।
কালো মাটির সঙ্গে মিশ্রিত ছাইয়ের ছয়টি স্তর খনন করে গবেষকরা পুরোহিতের কঙ্কালের সন্ধান পান।
পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা জানা যায়, সিলগুলো দিয়ে ওই সময়ের অভিজাত মর্যাদার লোকদের শরীরে ছাপ দেয়া হতো।
খননকাজে নেতৃত্ব দেয়া ইউজি সেকি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “প্রায় দুই মিটার (২ দশমিক ২ গজ) ব্যাস ও এক মিটার গভীরে পাওয়া সমাধিটির আকার ‘খুবই অদ্ভুত’ ছিল। দেখে মনে হয়েছে শরীরের অর্ধেক অংশ নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। পা দুটো ছিল একটি আরেকটির ওপরে।”
সেকি আবিষ্কারটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
প্যাকোপাম্পা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার ৫০০ মিটার ওপরে, যেখানে খোদাই করা ও পালিশ করা পাথরের নয়টি প্রত্নতাত্ত্বিক ভবন আছে। ধারণা করা হয়, এগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ থেকে ৬০০ বছর আগের।
জাপানের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ এথনোলজি ও পেরুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সান মার্কোসের প্রত্নতাত্ত্বিকরা সম্মিলিতভাবে খননকাজটি পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন:ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অর্থায়নে পরিচালিত পুষ্টিশাসন প্রকল্পের সুফলভোগীদের বদলে যাওয়ার চিত্র নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীতে উপকূলীয় অঞ্চল বাগেরহাটের বাসিন্দাদের পরিবর্তনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
জাপানের টোকিওতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ‘নিউট্রিশন ফর গ্রোথ (এন৪জি)’ নামের শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় কমিশন সব ধরনের অপুষ্টি কমাতে ২০২১-২০২৪ সালের জন্য আড়াই বিলিয়ন (২৫০ কোটি) ইউরো সহায়তার ঘোষণা দেয়।
এ অর্থ জরুরি প্রয়োজন মোকাবিলায় মানবিক সহায়তার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদার দেশগুলোতে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ব্যয় হবে।
ইইউর অর্থায়নে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প ‘কালেকটিভ রেসপনসিবিলিটি, অ্যাকশন অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন’ (সিআরএএন) বাস্তবায়ন করছে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং তাদের অংশীদার ওয়াটারএইড, জেজেএস ও রূপান্তর।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বাংলা পাঠশালার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের তিন সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের সমাপ্তি ঘটেছে ২৬ ফেব্রুয়ারির মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।
ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে শিশুদের চিত্রাংকন কর্মশালা ও ছবি আঁকার আয়োজনের পর ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ছিল ছবির প্রদর্শনী, অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে প্রশংসাপত্র বিতরণ ও আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা সুইস কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক।
ছবি আঁকার কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিশুদের প্রশংসাপত্র দেন জেনেভা বাংলা পাঠশালার পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিয়াজুল হয় ফরহাদ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন রিয়াজুল হক ফরহাদ, এহতেশামুল হক, রিসালাত রহমান, সেগুফতা মোহাম্মদ, তাইফুর রাহান, প্রান্তি, সুনিষ্কা, মাদিহা, নিতু, রেইন, দিলারা, আফসারা, বিভোর ও রোদেলা।
জেনেভা বাংলা পাঠশালার পরিচালকের নেতৃত্বে অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন আরিনুল হক ও ফারানা হক।
অনুষ্ঠানটি উপভোগ করতে জেনেভায় বসবাসরত বাঙালিদের পাশাপাশি অন্য ভাষাভাষীসহ প্রায় ৭০ জন দর্শক-শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে সবার জন্য ছিল নৈশভোজের আয়োজন।
মন্তব্য