তুমুল পাঠকপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে সাজবে নুহাশপল্লী, হবে হুমায়ূন মেলা।
প্রয়াত এই লেখকের প্রিয় জায়গা ছিল গাজীপুরের নন্দনকানন নুহাশপল্লী। সেখানেই সমাহিত রয়েছেন লেখক। শনিবার রাত ১২টায় সেখানে জ্বালানো হয়েছে মোমবাতি।
নুহাশপল্লীর ম্যানেজার বুলবুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্যারের জন্মদিনে প্রতি বছর যেটা হয়, তেমনটা হবে এবারও। আমরা রাত ১২টা ১ মিনিটে নুহাশপল্লীতে মোমবাতি জ্বালাব।
‘রোববার বেলা ১১টায় শ্রদ্ধা জানানো হবে স্যারের সমাধিতে। আছে কেক কাটার আয়োজনও।’
এসব আয়োজনে হুমায়ূনের স্ত্রী শাওন থাকবেন বলে জানান বুলবুল। এ ছাড়া রোববার সকালে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে হুমায়ূন মেলার আয়োজন করেছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেহের আফরোজ শাওন।
সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি তার দুই সন্তান এবং নুহাশ হুমায়ূনের পরিচালনায় সফলতা নিয়ে কথা বলেন।
শাওন বলেন, ‘কোথাও কোনো অনুষ্ঠানে গেলেই সন্তানদের মিডিয়া ঘিরে ধরে। এ জন্য ওরা এখন মিডিয়ার মুখোমুখি হতে চায় না। তাই বিভিন্ন অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলে।
‘আর নুহাশ তার বাবার নয়, নিজের পরিচয়ে নির্মাণ করছে, যা প্রশংসার দাবিদার।’
এখনও হুমায়ূন আহমেদের পরিচয় বহন করে চলেছেন উল্লেখ করে শাওন বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের লেখা চরিত্রগুলো যে এখন ছড়িয়ে বেড়ায়, দেখতে ভালো লাগে। তিনি শুধু হিমু, রুপাকে তৈরি করেননি; আরও অনেক অনেক চরিত্র রেখে গেছেন, যা আমাদের লাইফস্টাইলে জড়িয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন:রমজান উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন (বিআইআরই)।
গত ১৫ মার্চ এ আলোচনা শুরু হয়, যা চলবে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এটি প্রতি শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আলোচনার প্রথম পর্বে ১৫ মার্চ বিকেল পৌনে পাঁচটায় বাংলায় সুফি দর্শন নিয়ে কথা বলেন তাহমিদাল জামি। দ্বিতীয় পর্বে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে ইসলাম ও ইহজাগতিকতা নিয়ে একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় আলাপ শুরু করেন পারভেজ আলম।
আগামী ২২ মার্চ বেলা তিনটায় আলোচনার তৃতীয় পর্বে বাংলায় বৈষ্ণব ধর্ম নিয়ে কথা বলবেন মুহাম্মদ তানিম নওশাদ। একই বক্তা ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায় চতুর্থ পর্বে বাংলায় খ্রিষ্ট ধর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন।
আলোচনা সিরিজের পঞ্চম পর্বে আগামী ২৯ মার্চ সন্ধ্যা সাতটায় কথা বলবেন অধ্যাপক জিনবোধি মহাথেরো।
সাত পর্বের এ সিরিজের সমাপনী দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম পর্বের আলোচনা হবে। ওই দিন বেলা তিনটা থেকে বাংলার ফকিরি দর্শন নিয়ে আলাপ করবেন অরূপ রাহী। আর সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ ও ইউরোপের ধর্মের পর্যালোচনা বিষয়ে কথা বলবেন গৌতম দাস।
আলাপগুলো দেখা যাবে বিআইআরইর ইউটিউব চ্যানেলের এই লিংকে।
আরও পড়ুন:শেষ হলো বাঙালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। বিদায়ের সুরে পর্দা নামল এবারের অধিবর্ষের বইমেলায়। একইসঙ্গে শুরু হলো আগামী বছরের ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রতীক্ষা।
চলতি বছরের আয়োজনে ৬০ কোটি টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে। নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ৩ হাজার ৭৫১টি। গত বছর মেলায় বিক্রি হয়েছিল ৪৭ কোটি টাকা মূল্যের বেশি। আর নতুন বইয়ের সংখ্যা ছিলো ৩ হাজার ৭৩০টি৷
এবারের মেলায় শুক্রবার (১ মার্চ) পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা ৬০ লাখের কাছাকাছি। নতুন ৬০০ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। মেলায় ৯ শতাধিক স্টল ও ৬৭০টি প্রকাশনী ছিল।
শেষ দিন শনিবার বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা মেলে ভিন্ন চিত্র। অন্তিম দিনে ছিলো না অন্যান্য দিনের মতো ভিড়। অন্য দিনের তুলনায় জমেনি মেলাও। দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। স্টলে স্টলে শুধুই ক্রেতা ও পাঠকের ভিড়। বইপ্রেমীদের ব্যাগ ভর্তি বই কিনতে দেখা যায়। অধিকাংশ পাঠককে হাতে বই নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। বই ছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ ছাড়ছিলেন না কেউই।
এদিন ব্যস্ত সময় পার করেন বিক্রেতা ও প্রকাশকরা। সঙ্গে ছিলেন লেখকরাও। মেলার শেষ দিন হওয়ায় বই গোছাচ্ছেন কর্মীরা। প্রদর্শনী থেকে বইগুলো প্যাকেজিং করে বিদায়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়া চলতে থাকে সন্ধ্যার পর থেকেই। তবে বাংলা একাডেমির নির্দেশনায় কোনো প্রকাশনীই এদিন অবশিষ্ট বই মেলা থেকে নিয়ে যেতে পারেনি।
বেশ কয়েকজন বিক্রয়কর্মী জানান, মেলায় শেষ দিন দর্শনার্থী কম হলেও বেচাকেনা ভালো হয়েছে। যারা স্টলে আসছেন তাদের প্রায় সবাই বই কিনেছেন। কেবল ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
মেলায় আসা লিমন ইসলাম লিটন বললেন, ‘শেষ দিন মেলায় এসেছি। প্রথম দিকে একবার এসেছিলাম। এখন শুধু তালিকা ধরে বই কিনেছি। এবারের মেলায় এখনও আগের ফিকশনগুলোই চলছে। তবে বইমেলা বেশ ভালো চলেছে বলে মনে হয়েছে।’
শব্দশৈলী প্রকাশনীর প্রকাশক ইফতেখার আমীন বলেন, ‘মেলার সময় বাড়ানোর কারণে বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। আজ (শনিবার) বই কেনেননি এমন ক্রেতা মেলায় চোখে পড়েনি। প্রবন্ধ, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাস্থ্যবিষয়ক ও বাচ্চাদের নৈতিকতার বই বেশি বেচাকেনা হয়েছে।’
অনুপম প্রকাশনীর প্রকাশক মিলন কান্তি নাথ বলেন, ‘বইমেলার সময় বৃদ্ধি করায় বড় বড় প্রকাশনীগুলো লাভবান হয়েছে। আমাদের বেচাকেনা বেশ ভালোই হয়েছে। ক্রেতারা এসেছেন, বই কিনেছেন। এবারের বইমেলা বেশ ভালোভাবেই গেল।’
এদিকে অমর একুশে বইমেলার ৩১তম দিনে শনিবার মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিন মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৯টি।
বিকেল ৫টায় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলামের লিখিত প্রতিবেদন পাঠ করেন একাডেমির উপ-পরিচালক ড. সাহেদ মন্তাজ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম নাহিদ ইজাহার খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ।
বক্তব্য দেন সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ লিমিটেড-এর সিএমও মীর নওবত আলী।
সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে সম্প্রতি বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘এবার ছিল অধিবর্ষের বইমেলা। নির্ধারিত ২৯ দিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অতিরিক্ত দুদিন যুক্ত হয়ে ৩১ দিনের দীর্ঘ বইমেলা শেষ হয়েছে। ২০২৪-এর বইমেলা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় ছিল বিস্তৃত, ব্যাপক ও বর্ণাঢ্য।
‘শীতে শুরু হয়ে বইমেলা স্পর্শ করেছে বসন্ত-বাতাস। একুশের রক্তপলাশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্চের চেতনার রং।’
সদস্য সচিব তার প্রতিবেদনে বলেন, ‘মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এবারের বইমেলায় শেষ দিন পর্যন্ত প্রায় ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। বাংলা একাডেমি বিক্রি করেছে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকার বই।’
ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা বাঙালির ভাষা, শিল্প-সাহিত্য ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। বইমেলার মাধ্যমে প্রতিবছর আমরা আমাদের সৃজনশীলতাকে উদযাপন করি। এই মেলা আমাদের আবেগের, জাতিসত্তার, ভাষা-সাহিত্য ও ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসার মেলা।
বেগম নাহিদ ইজাহার খান বলেন, ‘বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। এই মেলা দেখতে দেখতে চার দশক অতিক্রম করে এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব বাঙালির কাছে যেমন ঠিক তেমনই বিশ্বের জ্ঞানপিপাসু মানুষের কাছেও একুশের বইমেলা এক অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত।’
মীর নওবত আলী বলেন, ‘বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলার সঙ্গে সহযোগিতায় থাকতে পেরে বিকাশ লিমিটেড আনন্দিত ও গর্বিত।’
খলিল আহমদ বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা কেবল বই বিক্রির জায়গা নয়; দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রাণের মেলা। সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় এবারের মেলা সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।’
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলা আমাদের জাতীয় জীবনের এক অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক ঘটনা। তথ্য-প্রযুক্তির বিপুল বিকাশের পরও মুদ্রিত বইয়ের আবেদন যে কোনোমতেই ফুরিয়ে যায়নি তার প্রমাণ একুশে বইমেলায় ক্রমবর্ধমান জনসমাগম।
গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান
অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে ২০২৩ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য কথাপ্রকাশ-কে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ দেয়া হয়।
২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে মনজুর আহমদ রচিত ‘একুশ শতকে বাংলাদেশ: শিক্ষার রূপান্তর’ গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশন, মঈন আহমেদ রচিত ‘যাত্রাতিহাস: বাংলার যাত্রাশিল্পের আদিঅন্ত’ গ্রন্থের জন্য ঐতিহ্য এবং আলমগীর সাত্তার রচিত ‘কিলো ফ্লাইট’ প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকস-কে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ দেয়া হয়। ২০২৩ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ দেয়া হয় ময়ূরপঙ্খি-কে।
এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্যপ্রকাশ (প্যাভিলিয়ন), নিমফিয়া পাবলিকেশন (২-৪ ইউনিট) ও বেঙ্গল বুকস (১ ইউনিট)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ দেয়া হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. শাহাদাৎ হোসেন এবং উপ-পরিচালক সায়েরা হাবীব।
আরও পড়ুন:অমর একুশে বইমেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল দুদিন আগে বৃহস্পতিবারই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে দুদিন। বর্ধিত সেই সময় শেষ হচ্ছে আজ।
তবে যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল সে অনুযায়ী বই বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের ভাষ্য, বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা পাঠকদের আলোড়িত করেছে। এ অবস্থায় মেলা শেষ হওয়ার আগের দিন শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও ভিড় ও বিক্রি ছিল কম।
আবার অনেকে বলছেন, মেলার সময় বাড়ানোর তথ্যটা যে পরিমাণে প্রচার হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তাই অনেকে জানেনই না যে মেলার সময় বেড়েছে।
সাধারণত প্রাণের অমর একুশে বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা একদিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেয়ার। তাদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে বইমেলার সময় দুদিন বাড়ানো হয়।
এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরকেও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।
এ ছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচা-বিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।
এদিকে বেশি ভালো বিক্রির প্রত্যাশায় মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি তোলা হলেও বইয়ের বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। পাঠক সমাগমও ততোটা বাড়েনি। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা এজন্য ভিন্ন ভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন।
শুক্রবার মেলায় কথা হয় তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাউসার হোসেনের সঙ্গে। বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেচাবিক্রি শুক্র-শনিবারের মতো তো হচ্ছেই না, নরমাল দিনের মতোও বলা যাচ্ছে না। অনেকে হয়তো জানেনই না যে মেলা দুদিন বেড়েছে। আবার এটাও হতে পারে- যারা বই কেনার তারা ২৯ তারিখের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন।’
মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী তামিম হোসেন বলেন, ‘বিক্রি বা ভিড় অনেক কম। নগণ্যই বলা যায়। হতে পারে মেলার সময় বাড়ার খবরটা মানুষের মাঝে পৌঁছাতে যত প্রচার করা দরকার ছিল ততোটা প্রচার হয়নি। ফেসবুক থেকে মানুষ আর কতটাই বা নিউজ জানতে পারে।’
ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি হাসেম আলী বলেন, ‘বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে। মালিক পক্ষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল তার ধারেকাছেও নেই বেচাবিক্রি। অর্ধেকেরও কম হবে বলে মনে হচ্ছে।’
তবে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে আজ পাঠক ও ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরাও সেরকম প্রত্যাশা করে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড অনেকের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে। মেলায় হয়তো তার প্রভাবটা পড়েছে। আশা করি আজ ভালো বিক্রি হবে।’
মেলা শেষের আগের দিনে ২১৯ নতুন বই
এদিকে মেলার শেষ সময়েও নতুন বই নিয়ে আসছেন প্রকাশকরা। শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিনেও নতুন বই এসেছে ২১৯টি।
শুক্রবার হওয়ায় এদিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় আর শেষ হয় রাত ৯টায়। তবে এদিন ছিল না কোনো শিশুপ্রহর। শনিবারও থাকবে না কোনো শিশুপ্রহর।
মেলার শুরু থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থেকেছে আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন। বর্ধিত দুই দিনে তা-ও থাকছে না। এই সময়টাতে মূলত বই বিক্রিই মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের।
সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান
শনিবার সমাপনী দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:অমর একুশে বইমেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল দুদিন আগে বৃহস্পতিবারই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে দুদিন। বর্ধিত সেই সময় শেষ হচ্ছে শনিবার।
তবে যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল সে অনুযায়ী বই বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের ভাষ্য, বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা পাঠকদের আলোড়িত করেছে। এ অবস্থায় মেলা শেষ হওয়ার আগের দিন শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও ভিড় ও বিক্রি কম।
আবার অনেকে বলছেন, মেলার সময় বাড়ানোর তথ্যটা যে পরিমাণে প্রচার হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তাই অনেকে জানেনই না যে মেলার সময় বেড়েছে।
সাধারণত প্রাণের অমর একুশে বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা একদিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিলো মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেয়ার। তাদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে বইমেলার সময় দুদিন বাড়ানো হয়।
এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিলো জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরকেও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিলো সন্তুষ্টির ছাপ।
এছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচাবিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।
এদিকে বেশি ভালো বিক্রির প্রত্যাশায় মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি তোলা হলেও বইয়ের বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। পাঠক সমাগমও ততোটা বাড়েনি। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা এজন্য ভিন্ন ভিন্ন কারণ তুলে ধরেছেন।
শুক্রবার মেলায় কথা হয় তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাউসার হোসেনের সঙ্গে। বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বেচাবিক্রি শুক্র-শনিবারের মতো তো হচ্ছেই না, নরমাল দিনের মতোও বলা যাচ্ছে না। অনেকে হয়তো জানেনই না যে মেলা দুদিন বেড়েছে। আবার এটাও হতে পারে- যারা বই কেনার তারা ২৯ তারিখের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন।’
মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী তামিম হোসেন বলেন, ‘বিক্রি বা ভিড় অনেক কম। নগণ্যই বলা যায়। হতে পারে মেলার সময় বাড়ার খবরটা মানুষের মাঝে পৌঁছাতে যত প্রচার করা দরকার ছিল ততোটা প্রচার হয়নি। ফেসবুক থেকে মানুষ আর কতটাই বা নিউজ জানতে পারে।’
ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি হাসেম আলী বলেন, ‘বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে। মালিক পক্ষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিল তার ধারেকাছেও নেই বেচাবিক্রি। অর্ধেকেরও কম হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে মেলার ১৫-১৬তম দিন থেকে যদি সময় বাড়ানোর ঘোষণা আসত তাহলে হয়তো প্রতি শুক্র-শনিবারের মতোই আজ বিক্রি হতো।’
তবে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার হিসেবে আজ পাঠক ও ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ার কথা ছিলো। আমরাও সেরকম প্রত্যাশা করে মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড অনেকের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে। মেলায় হয়তো তার প্রভাবটা পড়েছে। আশা করি আগামীকাল (শনিবার ভালো বিক্রি হবে।’
মেলা শেষের আগের দিনে ২১৯ নতুন বই
এদিকে মেলার শেষ সময়েও নতুন বই নিয়ে আসছেন প্রকাশকরা। শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিনেও নতুন বই এসেছে ২১৯টি।
শুক্রবার হওয়ায় এদিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় আর শেষ হয় রাত ৯টায়। তবে এদিন ছিলো না কোনো শিশুপ্রহর। শনিবারও থাকবে না কোনো শিশুপ্রহর।
মেলার শুরু থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থেকেছে আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন। বর্ধিত দুই দিনে তা-ও থাকছে না। এই সময়টাতে মূলত বই বিক্রিই মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের।
সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান
শনিবার সমাপনী দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:অমর একুশে বইমেলায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে স্পর্শ ফাউন্ডেশনের ‘স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা’। বলা যায়, প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়মে আটকে পড়া দৃষ্টিবঞ্চিতদের তারা আলো বিতরণ করছে।
দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে স্পর্শ ব্রেইলের স্টলে এসে হাত দিয়ে স্পর্শ করে বই পড়ছেন। আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের বই পড়ার সেই দৃশ্য সবার নজর কাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ বই দেখছেন, কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পড়া শুনছেন। আবার কেউ কৌতূহলী মন নিয়ে ব্রেইল পদ্ধতি সম্পর্ক জানতে চাইছেন। সব প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন স্পৰ্শ ব্রেইল প্রকাশনীর স্টলের সহযোগীরা।
স্পর্শ ব্রেইলের স্বেচ্ছাসেবক রবিউল হাসানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বই বিক্রি নয়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা যে পড়তে পারে সে তথ্য জানাতেই মেলায় স্টল নিয়েছে স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনী। ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা ১৯টি ব্রেইল বই প্রকাশ করেছে। আর ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত তারা বই প্রকাশ করেছে ১৫০টি।
ব্রেইল বই লেখা আর পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে স্টলের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘ব্রেইল বই পড়ার জন্য ছয় ডটের একটি কোড নম্বর থাকে। বাংলার প্রতিটি বর্ণ এই ছয় ডট দিয়ে লেখা। ব্রেইল বই পড়তে হলে তাদের এই ছয় ডটের কোড শিখতে হয়। এরপর তারা পৃষ্ঠায় থাকা ছাপ হাত দিয়ে স্পর্শ করে বুঝতে পারে কোন বর্ণ দিয়ে কী শব্দ লেখা হয়েছে।’
ব্রেইল বই তৈরির খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক রবিউল হাসান বলেন, ‘ব্রেইল বই করার আলাদা পদ্ধতি আছে। এগুলো একটু ব্যয়বহুল। ব্রেইল বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা কিনতে ৭ থেকে ৯ টাকা পড়ে যায়। আর আছে প্রিন্টিং-মুদ্রণ ব্যয়।’
তিনি বলেন, সাধারণ বইয়ের এক পৃষ্ঠার সমান আমাদের ব্রেইল বইয়ের ৩-৪ পৃষ্ঠা। একটি বইয়ের খরচ নির্ভর করে কত পৃষ্ঠার বই হচ্ছে তার ওপর। বইগুলো দেশেই তৈরি করা হয়। আমাদের ব্রেইল পেইজ আছে। যেকোনো বই দিলে আমরা করে দিতে পারি।’
বই তৈরির খরচ নির্বাহ কীভাবে করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা আছেন। তাদের সাহায্য-সহযোগিতায় আমরা এসব বই প্রকাশ করি।’
কপিরাইট পাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কপিরাইট নিয়ে আমাদের এখনও কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। যেহেতু আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করি, কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান না, তাই কপিরাইট পেতে আমাদের সমস্যা হয় না। লেখকদের বললে তারা দিয়ে দেন।’
রবিউল বলেন, ‘এ বছর আমরা যেসব ব্রেইল বই প্রকাশ করেছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। এছাড়া প্রসিদ্ধ বইয়ের মধ্যে গত বছর আমরা করেছি ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ বইটি। ‘চাঁদের পাহাড়’, হুমায়ূন আহমেদের কিছু প্রসিদ্ধ বইয়েরও ব্রেইল বই প্রকাশ করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি এগিয়ে আসুক। তারা ঘোষণা দিয়ে সব প্রকাশনীর জন্য বাধ্যতামূলক করুক যে, বইমেলায় স্টল দিতে হলে প্রতিটি প্রকাশনীর একটি করে ব্রেইল বই প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই প্রতিবছর আমরা পাঁচ থেকে ছয় হাজার বই পেয়ে যাব।
‘আমাদের লক্ষ্য আছে ব্রেইল বইয়ের লাইব্রেরি করার। করপোরেট মালিকরা এগিয়ে এলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হয়। আমাদের এই ব্রেইল স্টলে বেতনভুক্ত কেউ কাজ করে না। সবাই আমরা ফ্রিতে কাজ করি।’
রবিউল আরও বলেন, ‘দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা আমাদের স্টলে এসে বই পড়তে পারে। আর প্রতিবছর আমাদের প্রকাশনা উৎসব হয়। এজন্য মাস জুড়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলে। যারা রেজিস্ট্রেশন করে তাদের মাঝে আমরা এদিন ফ্রিতে বই বিতরণ করি। এবার প্রায় নব্বইজন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। প্রত্যেককে আমরা চার থেকে পাঁচটি বই ফ্রিতে দিয়ে দিয়েছি।’
কেন এই উদ্যোগ জানতে চাইলে অন্য এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ‘দৃষ্টিহীনদের মাঝে সাহিত্যের রস পৌঁছানোই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বইমেলায় শুধু আমাদের এই প্রকাশনীতেই দৃষ্টিহীনদের ব্রেইল বই পাওয়া যায়। আমরা চাই, যারা দৃষ্টিহীন তারাও যেন সাহিত্যের রস থেকে বঞ্চিত না হন।
‘তাদেরও তো ইচ্ছে থাকে যে তারা বিভিন্ন লেখকের গল্প-উপন্যাস পড়বেন। তারা জাফর ইকবাল স্যার, হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে পড়তে চান। কিন্তু এসব বই তো আর ব্রেইলে পাওয়া যায় না। বইমেলার প্রতিটি স্টলে যেন ব্রেইল বই থাকে সেটাই আমাদের সামাজিক আন্দোলনের লক্ষ্য।’
স্টলে এসে ব্রেইল বই পড়ছিলেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর দৃষ্টিজয়ী শিক্ষার্থী মহিনি আক্তার তামিম। তিনি বলেন, ‘এই ব্রেইল পদ্ধতি শিখতে আমার এক মাস সময় লেগেছে। ছয় বছর বয়সে আমি প্রথম স্কুলে ভর্তি হই। তখনই আমার ব্রেইল পদ্ধতি শেখা।’
তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসে আমার পছন্দের অনেক বই পড়ে শেষ করেছি। একমাত্র স্পর্শই আমাদের জন্য ব্রেইল বই সরবরাহ করে। তাই আমরা স্পর্শের কাছে কৃতজ্ঞ।’
দৃষ্টিহীন মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মেলা ঘুরে দেখাল ছাত্রলীগ
এদিকে মদীনাতুল উলূম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মাদরাসার ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বই মেলা ঘুরে দেখিয়েছেন ছাত্রলীগের মাদরাসা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে ২১ জন দৃষ্টিহীন।
কেন এই উদ্যোগ জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে কয়েকবার আমি এই মাদরাসায় গিয়েছি। সেখানে দেখেছি তারা সবসময় কোরআন শরীফ পড়েন। ফ্রি সময়ে অন্য কোনো বই পড়ার সুযোগ তারা পান না। তখন আমি চিন্তা করেছি যে বই না পড়ার কারণে তাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবেন না। তাই আমি ঠিক করেছি তাদের বইমেলা ঘুরে দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ওপর থাকা ব্রেইল বইগুলো উপহার হিসেবে দেবো। সেজন্য আজকে আমি তাদেরকে মেলা ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। আর বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, একাত্তরের ডায়েরি, আমার বন্ধু রাসেদসহ অনেক গল্প ও কবিতার বই যেগুলোর ব্রেইল ভার্সন রয়েছে সেসব উপহার দিয়েছি।’
২৮তম দিনে ৮০ নতুন বই
বুধবার অমর একুশে বইমেলার ২৮তম দিনে নতুন বই এসেছে ৮০টি। এদিন মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠান
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ মুনীর চৌধুরী এবং স্মরণ হুমায়ুন আজাদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন ও অধ্যাপক হাকিম আরিফ।
আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম, অধ্যাপক ইউসুফ হাসান অর্ক, ওসমান গনি ও মৌলি আজাদ। সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কাজী জাহিদুল হক সংকলিত এবং ঐতিহ্য প্রকাশিত মুনীর চৌধুরীর দুষ্প্রাপ্য রচনা বই-উন্মোচনে অংশ নেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ফেরদৌসী মজুমদার, প্রাবন্ধিকদ্বয়, আলোচকবৃন্দ, বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং গ্রন্থটির সম্পাদক কাজী জাহিদুল হক।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মুনীর চৌধুরী শোষিত ও মুক্তিকামী মানুষদের জন্য সুনির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হয়েছিলেন। আমাদের সামনে তিনি বিপ্লবী জীবনের আদর্শ স্থাপন করে গেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি মুনীর চৌধুরী ও হুমায়ুন আজাদের ভালোবাসা ছিল সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত। তাদের জীবন ও কর্ম বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।’
‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন গবেষক ড. মোহাম্মদ হাননান, কবি তারিক সুজাত, কথাসাহিত্যিক সমীর আহমেদ ও শিশুসাহিত্যিক আবেদীন জনি।
বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চে বিকেল ৫টায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘সংস্কৃতি ও সদাচার’ বই নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. মো. হাসান কবীর এবং সম্পাদকীয় পর্ষদের সদস্যবৃন্দ।
বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি
বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার ২৯তম দিন। এদিন বিকেল ৩টায় মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতিসংঘ ও জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের ওপর তার রচিত দু’টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন।
শেখ হাসিনার রচিত বই ‘সকলের তরে সকলে আমরা’-তে তার জাতিসংঘে দেয়া ১৯টি ভাষণ এবং সেগুলোর ইংরেজি অনুবাদ স্থান পেয়েছে। অপর গ্রন্থ ‘আবাহন’-এ স্থান পেয়েছে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতির উদ্দেশে দেয়া তার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যগুলো।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম. নজরুল ইসলাম বই দুটি গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন।
বরাবরের নিয়ম মেনে ২৯ তারিখ অমর একুশে বইমেলা শেষ হলে এটা ছিল মেলার শেষ শুক্রবার। আর সাপ্তাহিক ছুটির এই দিনে এসে মেলা যেন পূর্ণতা পেয়েছে। জমে উঠেছে প্রাণের বইমেলা।
মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, অন্য শুক্রবারের চেয়ে এদিন তুলনামূলক ভিড় একটু বেশি ছিল। বিক্রিও হয়েছে ভালো। তবে মেলা আরও দুদিন বাড়ানোর জন্য প্রকাশকদের যে দাবি সেটি বাস্তবায়িত হলে আরও একটি শুক্রবার পাবে বইমেলা। যদিও আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার প্রবেশপথে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পাঠকদের ঢুকতে হচ্ছে বইমেলায়। মেলার ভেতরের প্রাঙ্গণও দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর। শুক্রবার হওয়ায় অনেকে শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় এসেছেন।
বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলের সামনে ছিলো সব বয়সী পাঠকের ভিড়। কেউ বই দেখছেন, কেউ কিনছেন। আবার কেউ তুলছেন ছবি।
প্রকাশকরা বলছেন, বই না কিনুক, ছবি তোলার জন্য হলেও সবাই যে বইমেলামুখী হচ্ছে এটাই খুশির খবর।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি সোলাইমান বলেন, ‘আজকে শিশু প্রহরের সময় সকালে একটু বিক্রি কম ছিলো। তবে দুপুরের পর থেকে ভালোই বিক্রি হচ্ছে।’
আগামী প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি রবিউল ইসলামও বললেন একই কথা।
মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয় প্রতিনিধি রমিম বলেন, ‘আজ যে মেলার শেষ শুক্রবার তা ভিড় দেখে বোঝা যাচ্ছে। অন্যান্য দিনের তুলনা ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে শুক্রবার হিসেবে ভিড় বেশি হলেও বইয়ের ক্রেতা ততোটা নেই।’
মিরপুর থেকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মেলায় এসেছেন কবির আহমেদ। বললেন, ‘বউ কয়েক দিন ধরে বলছিল মেলায় যাবে। কিন্তু অফিসের ব্যস্ততার কারণে আাসা হয়নি। আজ আবার মেলার শেষ শুক্রবার। আজ না এলে এবার আর আসাই হবে না। তাই ওদের আবদার মেটাতে চলে এসেছি। ভালোই লাগছে।’
এদিকে প্রতিটি ছুটির দিনের মতোই শুক্রবারের শিশুপ্রহর মাতিয়ে রেখেছে সিসিমপুরের হালুম ইকু আর টুকটুকিরা। তাদের সরাসরি দেখে আনন্দের সীমা ছিলো না ছোট্ট সোনামনিদের। তাদের আনন্দ হাসি ফুটিয়েছে সঙ্গে মা-বাবার মুখেও।
উদয়ন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহমিদকে নিয়ে মেলায় সিসিমপুর দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মনির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাসা একটু দূরে হওয়ায় আর বাইরে খেলার পরিবেশ না থাকায় ছেলেরা তেমন খেলতে পারে না। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়েই তাদের থাকতে হয়। শিশুদের মোবাইলের আসক্তি কাটাতে বইয়ের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানো জরুরি। তাই বাচ্চাকে এখানে নিয়ে এসেছি।’
মেলা দুদিন বাড়ানোর দাবি
এদিকে মেলার শেষ দিন ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হওয়ায় দুদিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রকাশকেরা। তাদের বক্তব্য, তাহলে মেলা সাপ্তাহিক ছুটির দিন দুটি পাবে।
অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পাঠকরা বিভিন্ন পেশায় জড়িত থাকায় সরকারি ছুটির দিনগুলোতে মেলায় ওনারা আসার একটু বেশি সুযোগ পান। এবার যেহেতু বৃহস্পতিবারই মেলা শেষ হচ্ছে, তাই দুদিন বাড়িয়ে শুক্রবার আর শনিবারও যদি মেলা থাকে তাহলে পাঠকরা আসার সুযোগ পেতেন। আমাদেরও একটু বেশি ভালো বিক্রি হতো। তাই আমরা চাই মেলার সময় দুটি দিন বাড়ানো হোক।’
তবে ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টল ম্যানাজার আমজাদ হোসেন খান বলেন, ‘মনে হচ্ছে না মেলা দুদিন বাড়ানো হবে। এটি করলে মেলার ঐতিহ্য নষ্ট হবে।’
২৩তম দিনে মেলায় বই এসেছে ১৯৭টি
শুক্রবার মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ১৯৭টি।
সকাল সাড়ে ১০টায় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর।
প্রধান অতিথি ছিলেন নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
ক-শাখায় প্রথম হয়েছে ওয়াফিয়া নূর, দ্বিতীয় আর্লিন আহমেদ সানভী ও তৃতীয় হয়েছে তাইফা জান্নাত; খ-শাখায় প্রথম হয়েছে সৌভিক সাহা, দ্বিতীয় প্রত্যুষা রায় ও তৃতীয় শাফিন উদ্দিন আহাম্মেদ এবং গ-শাখায় প্রথম স্বস্তি চৌধুরী, দ্বিতীয় সপ্তনীল হাওলাদার ঐশী ও তৃতীয় হয়েছে সুয়েত আহমেদ নিহাল।
শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা
ক-শাখায় প্রথম হয়েছে ফারহিনা মোস্তাক আযওয়া, দ্বিতীয় অংকিতা সাহা রুদ্র এবং তৃতীয় ফাবলিহা মোস্তাক আরওয়া। খ-শাখায় প্রথম সমৃদ্ধি সূচনা স্বর্গ, দ্বিতীয় সুবহা আলম ও তৃতীয় অন্বেষা পণ্ডিত এবং গ-শাখায় প্রথম সিমরিন শাহীন রূপকথা, দ্বিতীয় আবদুল্লাহ আল হাসান মাহি ও তৃতীয় হয়েছে তাজকিয়া তাহরীম শাশা।
শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা
ক-শাখায় প্রথম নীলান্তী নীলাম্বরী তিতির, দ্বিতীয় রোদসী আদৃতা এবং তৃতীয় নৈঋতা ভৌমিক। খ-শাখায় প্রথম তানজিম বিন তাজ প্রত্যয়, দ্বিতীয় সুরাইয়া আক্তার ও তৃতীয় রোদসী নূর সিদ্দিকী। গ-শাখায় প্রথম কে. এম. মুনিফ ফারহান দীপ্ত, দ্বিতীয় নবজিৎ সাহা ও তৃতীয় হয়েছে সরকার একান্ত ঐতিহ্য।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মামুন হুসাইন। আলোচনায় অংশ নেন ওয়াসি আহমেদ এবং জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘আমাদের কালের এক আশ্চর্য-নির্লোভ মানুষ আখতারুজ্জামান ইলিয়াস চেনা বাস্তবতাকে প্রসারিত করেন প্রচলিত দৃষ্টি ও বুদ্ধিগ্রাহ্যতার ওপারে। আমাদের আদিকল্প, ইন্দ্রজাল, উপকথা তিনি চিনেছিলেন সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে।’
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত শক্তিমান লেখক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্যদর্শন, সংশীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও নিজস্ব চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জানতে হলে তার সাহিত্য পাঠ একান্ত জরুরি। তিনি ছিলেন সংবেদনশীল ও অনুসন্ধিৎসু একজন লেখক। সমাজের নানা দিকে তার সাহিত্যিক দৃষ্টি ছিল প্রসারিত। তিনি তার চিন্তাশীলতার মধ্য দিয়েই একজন পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠেছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বোধ ছিল শাণিত, ভাষা ঝরঝরে এবং চিন্তা ছিল স্বচ্ছ। নিরন্তর নিরীক্ষার মধ্য দিয়েই তার সাহিত্য অনন্য উচ্চতা লাভ করেছে। নবীন পাঠকদের আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্যপাঠে উৎসাহিত করতে হবে।’
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক, পর্যটক ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, কথাসাহিত্যিক নভেরা হোসেন, কবি কুশল ভৌমিক ও শিশুসাহিত্যিক আহমেদ জসিম।
বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চের আয়োজন
এই মঞ্চে বিকেলে পারস্য সাহিত্যের অনুবাদক ও লেখক অধ্যাপক শাকির সবুর রচিত সমকালীন ইরানের কবি ও কবিতা এবং ফারসি থেকে অনূদিত বুজুর্গে আলাভির তার চোখগুলো বই নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবারের সময়সূচি
অমর একুশে বইমেলার ২৪তম দিন শনিবার মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টায় থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে শিশুপ্রহর।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ: মোহাম্মদ রফিক এবং খালেক বিন জয়েনউদদীন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য