আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে রোববার কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা করছে হিন্দু সম্প্রদায়। মনে করা হয়, এ পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসেন।
লক্ষ্মী পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় সবার বাড়িতে করা হলেও অনেকেই প্রতিমার পরিবর্তে অন্য আয়োজনে দেবীর আরাধনা করেন। কেউ পূজা করেন লক্ষ্মীসরায়, আবার কেউ স্থাপন করেন ঘট। পূজার আয়োজনে কেন এই ভিন্নতা তা নিয়ে পূজারী, পুরোহিত ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।
টাঙ্গাইলের সদরের ধানাপাড়া গ্রামে উত্তম কুমার ঘোষের বাড়িতে প্রতিবছরই লক্ষ্মীপূজা হয় সরায়।
কারণ জানতে চাইলে উত্তম কুমার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি আমাদের বংশপরম্পরায় করা হয়ে থাকে। আমরা শুনেছি তিন ভাবে লক্ষ্মীপূজা করা হয়ে থাকে- ঘট, পট ও মূর্তিতে। আমাদের বাড়িতে সরায় করা হয়।’
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুরের প্রতাপ রায়ের বাড়িতে এই পূজা করা হয় মূর্তিতে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানা নেই প্রতাপ রায়ের। তিনিও বলছেন বংশপরম্পরায় প্রতিমায় পূজার রীতি চলে আসায় তিনি এর বাইরে যাননি।
ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার ডুমাইন বোস বাড়িতে লক্ষ্মী পূজায় প্রতিমা ও ঘট দুটিই রয়েছে। এই বাড়ির মৌসুমি রায়ও বললেন ‘বংশপরম্পরায় মেনে চলা রীতির কথা।’
প্রতিমা ছাড়াও যত রূপে পূজিত লক্ষ্মী
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মাটির লক্ষ্মী প্রতিমায় ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ করে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা করেন অনেকে। ‘কোঃ’ শব্দের অর্থ- ‘কে’, আর ‘জাগর’ শব্দের অর্থ ‘জেগে আছে’। সবমিলিয়ে কোজাগরী শব্দের অর্থ হলো ‘কে জেগে আছে?’
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এই পূর্ণিমার রাতে জেগে থাকতে হয়। মনে করা হয়, এ দিন রাতে দেবী পৃথিবীতে এসে ভক্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশীর্বাদ করেন। এ জন্য বাড়ির দরজা খুলে রেখে সারারাত জেগে লক্ষ্মীর আরাধনা করতে হয়। ভক্তরা বিনিদ্র থেকে লক্ষ্মী পূজা করেন বলে এ রাতকে বলা হয় কোজাগরী পূর্ণিমা।
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজায় প্রতিমা ছাড়াও নানারূপে দেবীর আরাধনা করা হয়, যার একটি হলো লক্ষ্মীসরা বা লক্ষ্মীপট।
বাংলাপিডিয়ায় বলা হয়েছে, লক্ষ্মীপটের উদ্ভব বাংলাদেশে। লক্ষ্মীসরা মোটামুটি চার রকমের। এর মধ্যে ঢাকাই সরার উদ্ভব ঢাকা অঞ্চলে। এ সরার চারদিকের কিনারা খানিকটা উঁচু, মাঝখানের অংশটি খুব উঁচু নয়। এর উপরে সাদা রঙের প্রলেপ দেয়া থাকে। নারায়ণ ও লক্ষ্মীকে এই সরায় পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থায় আঁকা হয়। তাদের হাতে থাকে ফসলের শীষ।
এছাড়া আছে ফরিদপুর অঞ্চলের ফরিদপুরী সরা। এ ধরনের সরায় প্রতিমা আঁকায় স্থানবিভাজন ও পটভূমি সাদা রাখা হয়। ঢাকাই সরার মতোই এই সরার কানাটি শুধু উঁচু করা হয় না।
ফরিদপুরের একটি গ্রাম সুরেশ্বরে তৈরি হয় আরেক ধরনের সরা, যার নাম সুরেশ্বরী সরা। এই সরার গোলাকার জায়গা পাঁচটি খাড়া প্যানেলে ভাগ করা হয়। মধ্যভাগের প্যানেলে থাকেন প্রধান দেবী দুর্গা। এই প্যানেলের ওপরের ছোট প্রকোষ্ঠে আঁকা হয় দুর্গার স্বামী শিবকে। বাম পাশের দুই খাড়া প্রকোষ্ঠে লক্ষ্মী ও গণেশ এবং ডানদিকে সরস্বতী ও কার্তিককে আঁকা হয়।
অনেকটা সাদামাটা দেখতে ‘গণকীসরা’ সাধারণত ব্যবহৃত হয় নিম্নবর্ণের হিন্দু সমাজের লক্ষ্মীপূজায়। এই সরার পটভূমি ঘন লাল। উপরের অর্ধাংশ অপেক্ষাকৃত বড়। এই সরার কানায় কালো রং ব্যবহার করা হয়। এই পটের প্রধান দেবীমূর্তি হলেন দুর্গা ও তার পরিবার। নিচের প্যানেলে থাকে লক্ষ্মী ও তার বাহন পেঁচা।
লক্ষ্মীঘট
অনেকে পোড়ামাটির ঘটেও লক্ষ্মী পূজা করে থাকেন। লক্ষ্মীর মুখ সম্বলিত পোড়া মাটির ঘটে চাল বা নদীর জল ভরে একে লক্ষ্মীর প্রতীক হিসেবে জলচৌকিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আড়ি লক্ষ্মী
অনেক বাড়িতে সাবেক প্রথা মেনে আড়ি লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। একটি ছোট বেতের ঝুড়িতে নতুন ওঠা ধান ভরে, ধানের ওপরে লাল কাপড় মুড়ে দুটি সিঁদুর কৌটো রাখা হয়। এই ঝুড়িটিকেই লক্ষ্মীর রূপ হিসেবে কল্পনা করা হয়। গৃহবধূরা উপবাস করে, জলচৌকিতে প্রতিষ্ঠা করা আড়ি লক্ষ্মীকে পূজা করেন। পাশাপাশি লক্ষ্মীর ব্রতকথা ও পাঁচালি পাঠ করা হয়।
বের লক্ষ্মী
কচি কলাগাছের ছাল লম্বা ও সমান করে কাটার পর সেগুলো পাকিয়ে নারকেল গাছের নতুন কাঠি দিয়ে আটকে দেয়া হয়। এভাবে নয়টি বের তৈরি করা হয়। কলাগাছের বেরগুলোর গায়ে তেল-সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকা হয়। এরপর জলচৌকিতে আলপনা দিয়ে তার উপর চোঙাকৃতি বেরগুলো রাখা হয়। বেরগুলোতে পাঁচ ধরনের শস্য ভরে এর ওপর একটি শিষ-ডাব রেখে লাল কাপড়ে মুড়ে দেয়া হয়।
সপ্ততরী
অনেক জায়গায় লক্ষ্মীর আসনে সপ্ততরী বসিয়ে আরাধনা করা হয়। সপ্ততরী হলো সাতটি কলার খোল দিয়ে তৈরি সাতটি নৌকা। সেই নৌকায় রাখা হয় হলুদ, চাল, ডাল, হরিতকি, খুচরা পয়সা ও টাকা। প্রাচীনকালে নৌকায় ব্যবসাবাণিজ্য চলত, সেখান থেকেই এসেছে ‘সপ্ততরী’কে লক্ষ্মী হিসেবে পূজা করার রীতি।
বেঁধে দেয়া কোনো নিয়ম নেই
লক্ষ্মীপূজার আয়োজনে ভিন্নতার ক্ষেত্রে ধর্মীয় কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলে জানান ঢাকার সিদ্ধেশরী কালী মন্দিরের পুরোহিত ননী গোপাল গাঙ্গুলী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লক্ষ্মীপূজার বিভিন্ন ধরন মূলত বংশপরম্পরার মেনে চলা রীতির কারণে হয়ে থাকে। তবে সব ক্ষেত্রেই পূজার মন্ত্র এক।’
ফরিদপুরের পুরোহিত শংকর কুমার চট্টপাধ্যায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোন বাড়িতে পূজা হচ্ছে মূলত তার ওপরে পূজার ধরন নির্ভর করে। আলাদা কোনো কারণ নেই। আমরা সব ধরনের লক্ষ্মীকে একই মন্ত্রে পূজা করে থাকি।
‘মূলত প্রতিমাতে পূজা করাকে ষোড়শোপচার বলা হয়ে থাকে। আর ঘটে বা সরায় পূজা করাকে পঞ্চোপচার বলা হয়। এর বাইরে রয়েছে দশোপচার। এই তিন ভাবেই লক্ষ্মী পূজা করা হয়ে থাকে।’
পঞ্চোপচারের নিয়ম উল্লেখ করে তিনি জানান, এতে উপাচার হিসেবে গন্ধ, পুষ্প, ধুপ, দীপ ও বস্ত্র দেয়া হয়।
গবেষক পাভেল পার্থ অবশ্য মনে করছেন লক্ষ্মী পূজায় প্রতিমা, ঘট বা সরা ব্যবহারের রীতি মূলত আঞ্চলিক সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত।
তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চল বলতে কিন্তু জেলা বোঝায় না। এটি নদী অববাহিকার বিষয়। যেমন ভোলা, বরিশাল অঞ্চল মেঘনা অববাহিকায়। সেখানে সরার প্রচলন আছে। যেসব অঞ্চলে সরা বা পটচিত্রের প্রচলন ছিল সেখানেই মূলত সরায় লক্ষ্মী পূজার রীতি বেশি দেখা যায়।’
সুরমা অববাহিকা অর্থাৎ সিলেট অঞ্চলে বা বৃহত্তর হাওড় অঞ্চলে সরায় পূজার রীতি দেখা যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই অঞ্চলে লক্ষ্মী পূজায় ঘটের ব্যবহার বেশি, প্রতিমা দিয়েও পূজা করা হয়। আবার দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরা ও ঘট দুটিতেই পূজা প্রচলিত। তবে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে প্রতিমা দিয়ে পূজা বেশি দেখা যায়।’
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য