পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস।
নগরের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন আলমগীর খানকাহ থেকে রোববার সকালে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জামেয়া মাদ্রাসার মাঠ পেরিয়ে আসার পরই এ মিছিল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
গাউসে জামান হজরতুলহাজ আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহের (মজিআ) নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই জুলুস নগরীর মুরাদপুর, চকবাজার, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি প্রদক্ষিণ করে ফের মুরাদপুর হয়ে বিবিরহাট মাদ্রাসা ময়দানে এসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিন ভোর থেকেই চট্টগ্রাম ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জামেয়া ময়দানে এসে জড়ো হতে থাকেন ভক্তরা। বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মানুষ বিবিরহাট, মুরাদপুর থেকে জুলুসে যোগ দেন।
করোনার কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে জুলুস উদযাপন করা হলেও এবার করোনার বাধা ছিল না। এতে দুই বছর পর আগের মতো নবীপ্রেমী লাখো মানুষ অংশ নিচ্ছে এই জুলুসে।
জুলুস উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন এলাকা সেজেছে রঙিন সাজে। নানা ব্যানার-ফেস্টুন ও আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে সড়কের দুইপাশ।
জুলুসে নেতৃত্বদানকারী আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহের (মজিআ) জন্য সাজানো হয়েছে বিশেষ গাড়ি। সেই গাড়িতে অন্যদের মধ্যে আছেন আনজুমান এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান।
আয়োজক সংস্থা আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, জুলুস পর্যবেক্ষণে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের একটি ম্যানেজমেন্ট টিম থাকবে।
তিনি জানান, বিশ্বনবীর আগমনী দিবসে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে চট্টগ্রামে যে জুলুস পালন করা হয়, সেখানে লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করে। এমন জুলুস পৃথিবীর আর কোথাও হয় কি না জানা নেই। এটিকে সবচেয়ে বড় জুলুসের স্বীকৃতি দিতে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের জন্য একটি আবেদন করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার তাদের একটি ম্যানেজমেন্ট টিম পর্যবেক্ষণে থাকবে।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ জশনে জুলুসের আয়োজন করা হচ্ছে ১৯৭৪ সাল থেকে।
আরও পড়ুন:কাদিয়ানিদের ‘ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা’ বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ। এতে ধর্মীয় নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে ওই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এর পর যারা নিজেদের নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্র্রতি একাত্মতা পোষণ করছি।’
রেজিস্ট্রারি মাঠে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
দুপুরের পর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত জনতা স্লোগান দেয় ‘নবীর পরে নবী নাই, সংসদে আইন চাই’, ‘কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’ ইত্যাদি। অনেকে এসব দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।
আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।
বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।
প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিমদের অনেকে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের অমুসলিম বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানি বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে ইসলামের একজন নবী ঈসা ও ইমাম মাহদি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত।
পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সৌদি আরবে পৌঁছানোর আগে ও পরে করণীয় বিষয়ে হজযাত্রীদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
গালফ নিউজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হজব্রত পালনকে নির্বিঘ্ন করতে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নিজ দেশের বিমানবন্দরে করণীয়
১. ভ্রমণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র নিয়ে বিমানবন্দরে যেতে হবে।
২. যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগেজ বা নির্ধারিত ব্যাগে রাখতে হবে।
৩. প্রতিটি লাগেজ নির্ধারিত আকারের হতে হবে। উড়োজাহাজে তোলার আগে প্রতিটি লাগেজ আলাদাভাবে শনাক্ত করার চিহ্ন থাকতে হবে।
যেসব সামগ্রী বহন করা যাবে না
১. প্লাস্টিক ব্যাগ, পানির বোতল, তরল বস্তু এবং মোড়ানো বা বাঁধা নয় এমন লাগেজ বা ব্যাগ বহন করা যাবে না।
২. কাপড়ে মোড়ানো ও ঢাকা বাক্স বহন করা যাবে না।
সৌদিতে আগমনের পর
১. সৌদিতে পৌঁছার পর কোনো হজযাত্রীর কাছে ৬০ হাজার রিয়ালের বেশি নগদ অর্থ কিংবা এর চেয়ে বেশি মূল্যের সামগ্রী থাকলে, সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি মুদ্রা, উপহারসামগ্রী, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, অলংকার ও মূল্যবান ধাতু।
২. সৌদি আরবে প্রবেশ কিংবা দেশটি থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে শুল্ক ঘোষণাপত্র পূরণের ওপর জোর দিয়েছে হজ মন্ত্রণালয়। যেসব হজযাত্রী ৬০ হাজার রিয়ালের বেশি বিদেশি মুদ্রা কিংবা এর চেয়ে বেশি মূল্যের সামগ্রী বহন করবেন, তাদের ক্ষেত্রে শুল্ক ঘোষণা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
৩. হজ মন্ত্রণালয় কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, যেসব হজযাত্রী শুল্ক ঘোষণাপত্র পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
আরও পড়ুন:সময়মতো ভিসা না হওয়ায় রোববার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ধরতে পারেননি ১৪০ জন হজযাত্রী। ভিসা জটিলতা সমাধানের পর তাদেরকে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে সোমবারের মধ্যে সৌদি আরবে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হজ ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ।
বিমান বাংলাদেশ জানিয়েছে, এই ফ্লাইট মিস করার কারণে প্রত্যেক যাত্রীকে ৪০০ ডলার করে অতিরিক্ত দিতে হবে। সে হিসাবে ১৪০ জন হজযাত্রীকে বাড়তি ৫৬ হাজার ডলার গুনতে হবে, টাকার অংকে যা ৬০ লাখের বেশি।
প্রশ্ন উঠেছে, এই অতিরিক্ত অর্থ সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের দিতে হবে, নাকি সময়মতো ভিসা দিতে না পারা এজেন্সিকে তা বহন করতে হবে।
হজক্যাম্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘হজযাত্রীরা ইতোমধ্যে সব খরচ পরিশোধ করেছেন। সময়মতো ভিসা দিতে না পারলে এই সমস্যার দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির। ফলে অতিরিক্ত যে ডলার বিমানকে দিতে হবে তা এজেন্সিকেই বহন করতে হবে।’
রোববার সন্ধ্যায় হজক্যাম্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) সাইফুল ইসলাম জানান, ভিসা না হওয়া ১৪০ জনের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ১৩৬ জনের ভিসা হয়ে গেছে। বাকিদেরও ভিসা হয়ে যাবে।
ফ্লাইট মিস করা প্রতি যাত্রীর জন্য ৪০০ ডলার করে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রোববার ১৪০টি আসন ফাঁকা রেখে বিমানের নির্ধারিত ফ্লাইটটি সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে। এখন যেসব যাত্রী ফ্লাইট মিস করেছেন তাদের সবাইকে একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানো সম্ভব নয়।
‘বিমানের সিডিউল ফ্লাইটে মদিনা পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে সবাইকে একসঙ্গে পাঠানো যাবে না। এজন্য যাত্রীপ্রতি অতিরিক্ত চারশ’ ডলার করে খরচ দিতে হবে।’
রোববার বিকেলে রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, বেলা ২টা ২০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওই ১৪০ হজযাত্রীর সৌদি আরবের জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে এসে তারা জানতে পারেন, তাদের ভিসা হয়নি। এ অবস্থায় তাদের না নিয়েই বিমানের নির্ধারিত ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ফ্লাইট মিস হওয়া হজযাত্রীদের একজন গাজিউর রহমান বলেন, ‘হজ এজেন্সি জান্নাত ট্রাভেলসের মাধ্যমে তাদের সৌদি আরবে যাওয়ার কথা ছিল। এজেন্সির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে সময়মতো ভিসা হয়নি।’
এ বিষয়ে হজ এজেন্সি জান্নাত ট্রাভেলসের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:৪১৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে চলতি বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩০০১ ।
শনিবার গভীর রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে যায়। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২০ মিনিটে জেদ্দায় পৌঁছায়।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিমানের আরও ৪টি ফ্লাইট আজ দিনের বিভিন্ন সময়ে জেদ্দার উদ্দেশে হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকা ছাড়বে।
ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল উদ্দিন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিমসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে হজযাত্রীদের বিদায় জানান।
ওই সময় বিমান প্রতিমন্ত্রী হজযাত্রীদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকার জন্য দোয়া কামনা করেন।
এর আগে হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন উপলক্ষে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সুষ্ঠু হজ পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনার সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লিট আধুনিকায়নের ফলে সক্ষমতা বাড়ায় ২০১৯ সাল থেকে বিমান তাদের নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ পরিবহন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
‘এ বছরও হজযাত্রী পরিবহনে বিমান তাদের ৪টি অত্যাধুনিক ও সুপরিসর বোয়িং-৭৭৭ ইআর এবং ১টি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারসহ মোট ৫টি উড়োজাহাজ ব্যবহার করবে।’
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণেই ২০১৯ সাল থেকে ‘রোড টু মক্কা ইনেশিয়েটিভ’- এর আওতায় হজযাত্রীদের সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন ঢাকায় বিমানবন্দরে সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। এমনকি সৌদি আরবে পৌঁছার পর তাদের লাগেজও নির্ধারিত আবাসনে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এতে হজযাত্রীদের পরিশ্রম, সময় ও কষ্ট লাঘব হয়েছে। হজযাত্রা হয়েছে সহজ ও আরামদায়ক।
“প্রধানমন্ত্রীর এই সফল ও জনবান্ধব কূটনৈতিক উদ্যোগের সম্পূর্ণ সুবিধা যাতে হজযাত্রীগণ পান, সেই ব্যাপারে আমরা সবসময় সচেষ্ট থেকেছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।”
এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে মোট যাত্রীর অর্ধেক ৬১ হাজার ১১১ জনকে পরিবহন করবে বিমান। বাকি হজযাত্রী পরিবহন করবে সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাস।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের আকাশে কোথাও শনিবার ১৪৪৪ হিজরি সনের জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। সে হিসাবে রোববার শাওয়াল মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। আর পবিত্র জিলকদ মাস গণনা শুরু হবে পরদিন সোমবার থেকে।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের সভাকক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
সভায় ১৪৪৪ হিজরি সনের জিলকদ মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা. বশিরুল আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আ. কাদের শেখ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. আবদুল জলিল, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ঢাকা) ইরতিজা হাসান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল হক ভূঞা, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ এবং চকবাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি শেখ নাঈম রেজওয়ান উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর হজের ফ্লাইট রোববার থেকে শুরু হবে।
মৌসুমের প্রথম বিমানটি ৪১৯ হজযাত্রী নিয়ে রোববার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে। খবর বাসসের।
বিমানের মুখপাত্র তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স রোববার ভোর ৩টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে প্রথম হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে।’
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর আশকোনা এলাকার হাজী অফিসে হজ কর্মসূচি-২০২৩ উদ্বোধন করেন।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজ পালন করতে যাচ্ছেন।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির বিধিনিষেধের কারণে গত কয়েক বছর বাংলাদেশীরা কাঙ্ক্ষিত সংখ্যায় হজে যেতে পারছেন না।
করোনার আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলতি বছর করোনা মহামারীর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় গত বছর আবেদন করা অনেকে এবার সুযোগ পান।
আরও পড়ুন:হিজরি ১৪৪৪ সালের হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্পে শুক্রবার এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তিনি। খবর বাসসের।
চলতি বছরের জন্য হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে হজযাত্রীদের কাছ থেকে দেশবাসীর জন্য দোয়া চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বছর হজযাত্রীদের বহনকারী প্রথম ফ্লাইটি শুক্রবার গভীর রাত পৌনে তিনটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়ার কথা রয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জনের। করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজে গিয়েছিলেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে হজে গিয়েছিলেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
হজ ক্যাম্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এতে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য