বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজাকে বলা হয় সার্বজনীন। এই সার্বজনীনতা শুধু উৎসবে সবার অংশগ্রহণেই সীমিত নয়, দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণও সংগৃহীত হয় নানা জায়গা থেকে।
প্রতিমা তৈরি ও পূজায় ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করা মাটি। সমাজের একদম প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এবং মূল সমাজে ‘নিষিদ্ধ’ যৌনকর্মীদের দানের মাটিও মিশে আছে প্রতিমা ও দেবী বন্দনায়।
প্রতিমা শিল্পী ও পূজা সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, চণ্ডী পুরাণের নির্দেশনা অনুসারে দেবী দুর্গার প্রতিমা বানানো ও পূজা করা হয়। সেখানে ‘বেশ্যাদ্বার’ বা যৌনপল্লীর মাটি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
পুরান ঢাকার বাংলাবাজার জমিদার বাড়ির প্রতিমা তৈরি করেছেন বলাই পাল। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেবীর প্রতিমা তৈরিতে পাঁচ ধরনের মাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে যৌনপল্লীর মাটিও রয়েছে।’
ঢাকার শিল্পীরা কোথা থেকে এই মাটি সংগ্রহ করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব জায়গায় অনেক আগে যৌনকর্মীরা থাকত সেখানকার মাটি আমরা সংগ্রহ করে রাখি। প্রতিবছর প্রতিমা তৈরিতে সেগুলো ব্যবহার করি।’
ঢাকায় আগে ইংলিশ রোড ও কুমারটুলি এলাকায় যৌনকর্মীরা থাকতেন উল্লেখ করে এই প্রতিমা শিল্পী বলেন, ‘আমরা সেখানকার মাটি সংগ্রহ করে রেখেছি। সেই মাটি অল্প পরিমাণে প্রতিমায় ব্যবহার করি।’
ঢাকার সিদ্ধেশরী কালী মন্দিরের পুরোহিত ননী গোপাল গাঙ্গুলি অবশ্য দাবি করছেন প্রতিমায় যৌনকর্মীদের বসতির মাটি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নেই, তবে এই মাটি পূজার ঘট বসাতে অবশ্যই প্রয়োজন।
ননী গোপাল গাঙ্গুলি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মায়ের (দুর্গা) প্রতিমা তৈরিতে এই মাটি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রতিমার সামনে ঘট বসানোর জন্য আটটি স্থানের মাটি লাগে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বেশ্যাদ্বার মৃত্তিকা (মাটি)।
‘এই মাটি ছাড়া পূজা করার কোন অর্থ নেই। এটা বাধ্যতামূলক।’
অন্য সাতটি জায়গার মাটির বিষয়ে তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো হলো গজদন্ত মৃত্তিকা (হাতির দাঁতে লেগে থাকা মাটি), পর্বতের মৃত্তিকা, নদীর দুই ধারের মৃত্তিকা, গঙ্গার দুই কূলের মৃত্তিকা, চৌমাথার মৃত্তিকা, রাজবাড়ির মৃত্তিকা, সাগরের নীচের মৃত্তিকা।’
তবে এসব মাটির সবগুলো বাংলাদেশে সব সময় পাওয়া যায় না বলেও জানান এই পুরোহিত।
তিনি বলেন, ‘পূজায় এখন যা ব্যবহার করা হয় তার সবই আসে ভারত থেকে। কলকাতা থেকে এগুলো নিয়ে আসা হয়। মূলত ঢাকার শাঁখারীবাজার এলাকায় পূজার সব উপকরণ বিক্রি করা হয়। সেখান থেকেই সবাই কিনে নিয়ে পূজায় ব্যবহার করেন।’
দুর্গাপূজায় এসব বিশেষ মাটি ব্যবহারের কথা চণ্ডী পুরাণ, বিষ্ণু পুরান, পুরোহিত পার্বণ, ব্রহ্মপুরাণে উল্লেখ আছে বলে জানান পুরোহিত ননীগোপাল।
বাংলাদেশ সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি বিশেষ স্থানের (যৌনপল্লী) মাটি লাগে। এটা কমবেশি সবাই মেনে আসছে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরেও এই নিয়ম মানা হয় বলেই আমি জানি।’
তবে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমা শিল্পী সুকুমার পালের দাবি, তিনি বৈষ্ণব রীতি মেনে চলেন। এই রীতিতে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে যৌনপল্লীর মাটি ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয়।
ফরিদপুরের মধুখালীর পুরোহিত শংকর কুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, দুর্গা প্রতিমায় যৌনকর্মীদের বসতিসহ বেশ কয়েকটি জায়গার মাটি ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। তবে সেই মাটি পেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় বলে অনেকে অন্য পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
শংকর কুমার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন সব জায়গার মাটি পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। তাই আমরা শাস্ত্রমতে মন্ত্রের সাহায্যে সাধারণ এলাকার মাটিকে বিশেষ স্থানের মাটি কল্পনা করে ব্যবহার করে থাকি।’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুর্গা প্রতিমা গড়তেও যৌনপল্লীসহ বিভিন্ন জায়গার মাটি ব্যবহারের প্রচলনের তথ্য পাওয়া গেছে।
এর কারণ হিসেবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সমাজ যাঁদের দূরে ঠেলে দিয়েছে, অবজ্ঞা আর বঞ্চনার পাহাড় জমে উঠেছে যাঁদের দেওয়াল বেয়ে, ঘৃণা আর নোংরা দৃষ্টি ছাড়া যাঁদের ভাগ্যে আর কিছুই জোটেনি, তাঁদের ঘরের মাটিই আবার দেবীমূর্তির অপরিহার্য অঙ্গ৷
‘কিন্তু কেন? বলা হয়, পুরুষ মানুষ পতিতালয়ে গিয়ে যখন বারাঙ্গনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়, তখন তিনি জীবনে সঞ্চিত সমস্ত পুণ্য সেখানেই ফেলে আসেন৷ আর সংগ্রহ করেন ঘড়া ভর্তি পাপ৷’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চিরাচরিতভাবে মানুষ বিশ্বাস করেন যে, মানুষের মধ্যে যে কামনা, বাসনা, লালসার বাস... পতিতারা তা নিজেদের মধ্যে নিয়ে নেন। তাঁরা নিজেদের অশুদ্ধ, অপবিত্র করে সমাজকে শুদ্ধ রাখতে চান। পবিত্র রাখতে চান। ফলে হাজার হাজার পুরুষের পুণ্যে বেশ্যাদ্বারের মাটি হয়ে ওঠে পবিত্র৷
‘সে কারণেই এই মাটি দিয়ে গড়তে হয় দেবী মূর্তি৷ এই আচার থেকে বোঝানো হয় যে, নারী মায়ের জাতি। নারীর ঔরসেই পুরুষের জন্ম। নারীকে পতিতা বানায় পুরুষরাই। তাই ঐ পুরুষরাই অপবিত্র। মায়ের প্রতিমা তৈরীতে পতিতালয়ের মাটি দিতে হয় অর্থাৎ যাঁরা এই পরিস্থিতির শিকার তাঁদের সম্মান করতে হবে। নারী কখনও অপবিত্র হতে পারে না, এই ধারণাটিই লুকিয়ে থাকে এই রীতির আড়ালে৷’
দুর্গাপূজা উপলক্ষে #thesecondquestion হ্যাশট্যাগে পশ্চিমবাংলার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, যৌনকর্মীদের কাছ থেকে প্রতিবছর মাটি সংগ্রহ করে দুর্গা প্রতিমা গড়েন শিল্পী, তবে পূজার উৎসবে সেই যৌনকর্মীদের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না।
ভিডিওতে এবারের পূজায় এক যৌনকর্মীর পরিবারকে অংশ নিতে প্রতিমা শিল্পীর আমন্ত্রণ জানানোর দৃশ্য রয়েছে। পূজার সার্বজনীনতাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এই ভিডিওতে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার যৌনকর্মীরা প্রতিবছর দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে মাটি দান করলেও পূজার উৎসবে এখনও তারা ‘নিষিদ্ধ’।
কলকাতার এক যৌনকর্মীর মেয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমি পঞ্চম শ্রেণিকে পড়ার সময় পর্যন্ত আমার মা যৌনপেশায় জড়িত ছিলেন। আমি দেখতাম যৌনকর্মীরা প্রতিমা গড়ার মাটি দান করার সময়ে পুরোহিতের কাছ থেকে কিছু মিষ্টি অথবা টাকা পেতেন। তবে তাদের কখনোই পূজার উৎসবে নিমন্ত্রণ করা হতো না।’
সার্বজনীন দুর্গোৎসব থেকে দূরে সরিয়ে রাখার প্রতিবাদে কলকাতার যৌনকর্মীদের মাঝে প্রতিমার মাটির জোগান দেয়ার অনাগ্রহ বাড়ছে বলেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাবিদ, পুরাণ বিশেষজ্ঞ ও ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি দাবি করছেন, দুর্গা প্রতিমায় যৌনকর্মীদের দান করা মাটি ব্যবহারের বিষয়ে ধর্মগ্রন্থে কিছু বলা নেই। বিশেষ প্রেক্ষাপটে এই চল অনেক পরে তৈরি করা হয়েছে।
নৃসিংপ্রসাদ বলছেন, ‘জমিদারবাড়ির লোকেরা যখন পুজো শুরু করেন, তখন তাঁরাই তৈরি করেছেন। পুরানে এ রকম কোথাও নেই যে, যৌনপল্লির মাটি দিয়েই দুর্গাপুজো হবে।’
নৃসিংহপ্রসাদের কথায়, 'দুর্গাপুজো যেহেতু মহোৎসব, তাই ওই সময় সমাজে জাতিভেদ, অন্তজ শ্রেণি ইত্যাদি মনে রাখা হয় না। এটা হল সবচেয়ে বড় যুক্তি। যেমন, সমাজে নানা অস্পৃশ্যতা রয়েছে, ব্রাহ্মণ নিম্নজাতিকে ছোঁবে না, আবার ডোম যে মাদুর তৈরি করত, তার উপর পেতেই লোকে বসেছে। সে রকমই যৌনপল্লি থেকে মাটি এই কারণেই নিয়ে এসো, যাতে আমরা যৌনকর্মীদের ঘৃণা না করি। তাঁরাও তো সমাজের একপ্রকার উপকার করছেন।
‘চণ্ডীর মধ্যে একটা শ্লোক আছে, স্ত্রেয়ঃ সমৎসা সকলা জগৎসু। অর্থাৎ সব স্ত্রী-ই আমি, অন্য কেউ নেই। দেবী বলছেন, এই যে ব্রাহ্মবাদী ভক্তি, ব্যপ্তি, সর্বত্র তিনি-ই আছেন। তাই যৌনপল্লীর মাটি মিশিয়ে নেওয়া হয় দুর্গাপ্রতিমা তৈরির মাটির সঙ্গে।’
আরও পড়ুন:ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য