× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
Goddess comes with happiness and prosperity on Saturday
google_news print-icon

সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে দেবীর আগমন শনিবার

সুখ-সমৃদ্ধি-নিয়ে-দেবীর-আগমন-শনিবার
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুত মণ্ডপ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতিতে) চেপে। গজ বা হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হলো শুভ। মনে করা হয়ে থাকে, দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন, তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির প্রতীক।

ষষ্ঠীতে বোধনের মধ্য দিয়ে শনিবার শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। গত দুই বছরে করোনা মহামারির বিবর্ণ সময় ও সর্বশেষ পূজায় কুমিল্লায় সহিংসতাকে উতরে এবারের দুর্গোৎসব জমজমাট করতে সারা দেশে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

গতবারের চেয়ে এ বছর বেড়েছে মণ্ডপের সংখ্যা, জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেবীবন্দনায় পুরোপুরি প্রস্তুত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতি) চেপে। গজ বা হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হলো শুভ। মনে করা হয়ে থাকে, দেবী যদি গজে চড়ে মর্ত্যে আসেন, তাহলে তিনি সঙ্গে করে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির প্রতীক।

আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্য ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় মনোকামনা পূর্ণ হওয়া বোঝানো হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য-শ্যামলা। কিন্তু সেই সঙ্গে অতিবর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও দেখা যায়।

পঞ্জিকা অনুযায়ী, শনিবার মহাষষ্ঠীর সকালে হবে দুর্গাদেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠিবিহিত পূজা, সন্ধ্যায় হবে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস।

রোববার মহাসপ্তমীবিহিত পূজা, সোমবার মহাষ্টমীবিহিত পূজা, মঙ্গলবার মহানবমীবিহিত পূজা এবং বুধবার দশমীবিহিত পূজা সমাপন ও প্রতিমা বিসর্জন হবে।

পূজা উদযাপন পরিষদের হিসাবে দেশে এবার প্রায় ৩২ হাজার ১৬৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। এই সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৫০টি বেশি। ঢাকা মহানগরে এবার পূজা হবে ২৪১টি মণ্ডপে, যা গতবারের চেয়ে ছয়টি বেশি। গতবার সারা দেশে পূজামণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি।

প্রসঙ্গত, গত বছর সারা দেশে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে শারদীয় উৎসব শুরু হয়। সার্বিক পরিস্থিতিও ছিল সন্তোষজনক। এর মধ্যে কুমিল্লায় একটি মন্দিরে হনুমান মূর্তির পায়ের কাছে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরিফ রাখার মতো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে তা প্রাণঘাতী অবস্থায় রূপ নেয়। সহিংসতায় নিহত হন পাঁচজন। ওই সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাও ঘটে। হুমকিতে পড়ে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

এ বছরের মণ্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারির স্বার্থে মণ্ডপকেন্দ্রিক সিসিটিভি ক্যামেরাও বসছে। তবে গ্রামের মণ্ডপগুলোতে এই নিরাপত্তা সুবিধা থাকছে না।

পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এবার আশাবাদী। সরকার আন্তরিক, প্রশাসনও আন্তরিক। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি আছে।

‘সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছি। সব মণ্ডপে নজরদারির ব্যবস্থাটা রাখতে বলা হয়েছে। এবার সব মন্দিরে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যারা ২৪ ঘণ্টা পাহারায় থাকবেন।’

এই আগে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ, এ কথা বলা যাবে না। ঘটনা ঘটতে পারে, তবে আমরা এবার খুব সচেতন। সর্বোচ্চ সিসিটিভির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রামে বিভিন্ন বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

ঢাকায় পূজা

ষষ্ঠীতে ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপে, ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগের লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন মণ্ডপে ষষ্ঠীপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি শেষ। এবার পূজা নিয়ে আমাদের খুব উদ্দীপনা রয়েছে। মেলা কমবেশি থাকবে। এবার আরতি প্রতিযোগিতা থাকবে।’

ঢাকা মহানগরে মোট ২৪১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এর মধ্যে সূত্রাপুর থানায় সবচেয়ে বেশি ২৫টি মণ্ডপে, কোতোয়ালি থানায় ২১টি, ওয়ারীতে ১৬টি, গেন্ডারিয়ায় ১৪টি, হাজারীবাগে ১৩টি, তুরাগে ১২টি, বাড্ডায় ১০টি, বনানীতে ৯টি, মোহাম্মদপুরে ৯টি, দারুসসালাম ও গাবতলীতে ৮টি, ডেমরায় ৮টি এবং তেজগাঁও থানায় ৬টি মণ্ডপ রয়েছে।’

পুরান অনুযায়ী, ব্রহ্মার বর পেয়ে মানুষ ও দেবতাদের অজেয় হয়ে উঠেছিলেন মহিষাসুর। ফলে তাকে পরাজিত করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর যে মহামায়ারূপী নারী শক্তি তৈরি করেন তিনিই দেবীদুর্গা। দশভূজা দুর্গা টানা ৯ দিন যুদ্ধ করে মহিষাসুরকে বধ করেন।

আরও পড়ুন:
পূজার নিরাপত্তায় বাড়িছাড়া ৫০ যুবক ঘিরে শঙ্কা পুলিশের
নানুয়ার দীঘিরপাড়ের মণ্ডপে এবার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা
বিদেশি কাস্টিং ইউনিটের সঙ্গে কথা হওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন না পূজা
গ্রামের মণ্ডপে বসছে না সিসিটিভি ক্যামেরা
দুর্গাপূজা ঘিরে চট্টগ্রামের ডিসির হুঁশিয়ারি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
In three years the money donated to Pagla Mosque has increased three times

তিন বছরে সোয়া তিন গুণ বেড়েছে পাগলা মসজিদে দানের টাকা

তিন বছরে সোয়া তিন গুণ বেড়েছে পাগলা মসজিদে দানের টাকা সাধারণত প্রতি তিন মাস পর পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শেষে টাকার পরিমাণ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। ছবি: নিউজবাংলা
ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটিতে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় দুই কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। আর ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল আগের সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মেলে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা। সেই হিসাবে তিন বছরের বেশি সময়কালে মসজিদটিতে দানের টাকা বেড়েছে সোয়া তিন গুণের বেশি।  

মনের বাসনা পূরণের আশায় কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে প্রতিনিয়ত টাকা, অলংকারের মতো বিভিন্ন বস্তু ও হাঁস, মুরগির মতো জীবিত প্রাণী দান করেন স্থানীয়সহ অন্য জেলার লোকজন।

সাধারণত প্রতি তিন মাস পর দানবাক্সগুলো খুলে গণনা শেষে টাকার পরিমাণ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এ ঘটনাটি দেশজুড়ে থাকে আলোচনায়।

দানবাক্স গণনার পর প্রতিবারই টাকার পরিমাণটা সাধারণত আগের মাসের চেয়ে বেশি হতে দেখা যায়। গত তিন বছরের হিসাবে দেখা যায়, কিছু ব্যতিক্রম বাদে প্রতিবারই বেড়েছে দানের টাকা।

কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে গড়ে ওঠে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাধীন জায়গা দাঁড়িয়েছে তিন একর ৮৮ শতাংশে।

তিন বছরে সোয়া তিন গুণ বেড়েছে পাগলা মসজিদে দানের টাকা

তিন বছরের কোন সময়ে কত টাকা দান

পাগলা মসজিদে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি দানবাক্সের টাকা গণনা করা হয়েছিল। চলতি বছরের ২০ এপ্রিল গণনা করা হয় টাকা।

ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটিতে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি দানবাক্স খুলে পাওয়া যায় দুই কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। আর ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল আগের সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মেলে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা। সেই হিসাবে তিন বছরের বেশি সময়কালে মসজিদটিতে দানের টাকা বেড়েছে সোয়া তিন গুণের বেশি।

মসজিদটিতে ২০২১ সালের ১৯ জুন পাওয়া যায় দুই কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৯৪ টাকা। একই বছরের ৬ নভেম্বর পাওয়া যায় রেকর্ড পরিমাণ তিন কোটি সাত লাখ ৭০ হাজার ৫৮৫ টাকা।

পরে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিল তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা। এ ছাড়া ওই বছরের ৩ জুলাই পাওয়া গিয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। একই বছরের ২ অক্টোবর মেলে তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা।

তিন মাস এক দিন পর ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। ২০টি বস্তায় তখন চার কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

এরপর রমজানের কারণে চার মাস পর ৬ মে দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১৯টি বস্তায় রেকর্ড পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালংকার, হীরা ও বিপুল পরিমাণ রুপা পাওয়া গিয়েছিল। ওই বছরের ১৯ আগস্ট খোলা হয়েছিল এ মসজিদের আটটি দানবাক্স। তখন রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সাড়ে ১৩ ঘণ্টায় ২০০ জনেরও বেশি লোক এ টাকা গণনা শেষে রেকর্ড পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পান।

একই বছরের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল দানবাক্সগুলো। তখন রেকর্ড ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। ওই সময়ে পাওয়া যায় বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার।

পাগলা মসজিদে আটটি দানবাক্স থাকলেও তখন থেকে একটি বাড়ানো হয়।

গত বছরের পর এবার ৪ মাস না যেতেই আলোচিত ও ঐতিহাসিক মসজিদটির দানবাক্সে সব রেকর্ড ভেঙে মেলে পৌনে আট কোটি টাকা।

দান করেন কারা

দিনের পাশাপাশি গভীর রাতে গোপনে অনেকে দান করে থাকেন পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলোতে। টাকা, অলংকারের পাশাপাশি প্রতিদিন মসজিদে দান করা হয় হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল। কারা দান করেন এসব টাকা এবং কোন খাতে ব্যয় হয় এসব অর্থ, সে তথ্য জানার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা।

পাগলা মসজিদের নৈশপ্রহরী মো. মকবুল হোসেন এ মসজিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন ২৭ বছর ধরে, যার ভাষ্য, ‘শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে এসে দান করেন। টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলও দান করেন অনেকে। করোনার শুরুতে যখন জনসমাগম বন্ধ ছিল, তখনও অনেকে গভীর রাতে এসে দানবাক্সে দান করেছেন।’

তিনি জানান, অতীতে এ মসজিদে কেবল আশপাশের এলাকার মানুষ দান করতেন। আর এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন এসে টাকা-পয়সা দান করেন। এ ছাড়া বিদেশিরা অনেক সময় আসেন। পুরো মসজিদ ঘুরে দেখে যাওয়ার সময় দানবাক্সে বৈদেশিক মুদ্রা দান করেন।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। আর এ বিষয়টির কারণেই এখানে দান করেন তারা।

তিন বছরে সোয়া তিন গুণ বেড়েছে পাগলা মসজিদে দানের টাকা

টাকা ব্যয় হয় যেসব খাতে

পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, প্রতি মাসে পাগলা মসজিদের স্টাফ বাবদ ব্যয় হয় পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০২১ সালে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত ১২৪ জন ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য এবং অসহায় ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের জন্য ১৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও করোনাকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

তিনি জানান, পাগলা মসজিদের টাকায় ২০০২ সালে মসজিদের পাশেই একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এ মাদ্রাসায় ১৩০ জন এতিম শিশু পড়াশোনা করছে। মসজিদের টাকায় তাদের যাবতীয় ভরণপোষণ ও জামাকাপড় দেয়া হয়ে থাকে। ওয়াকফ এস্টেটের অডিটর দিয়ে প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে পাগলা মসজিদের আয়-ব্যয়ের অডিট করা হয়।

শওকত উদ্দিন জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্স পরিচালনার জন্য ৩১ সদস্যের কমিটি রয়েছে। এ কমিটিতে জেলা প্রশাসক সভাপতি এবং কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়াও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, আইনজীবী, সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই কমিটিতে আছেন।

অতীতে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসায় দান করা হলেও বর্তমানে সেটি বন্ধ রয়েছে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণ করা হবে। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অনুদান বন্ধ রয়েছে।

বিপুল পরিমাণ দানের টাকার বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদ এ এলাকার মানুষের একটি আবেগের স্থান, যে কারণে আমরা প্রতিবারই দান হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়ে থাকি।

‘আমরা মানুষের স্বপ্ন ও ইচ্ছা অনুযায়ী বর্তমান মসজিদের স্থানে একসাথে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে এমন একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণ করব। আধুনিক স্থাপত্যের এ মসজিদ নির্মাণে অচিরেই নকশা চূড়ান্ত করাসহ কাজ শুরু হবে।’

তিনি জানান, প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এর অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া দানের টাকায় জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।

দানের টাকায় আন্তর্জাতিক ইসলামি কমপ্লেক্স

মেয়র পারভেজ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

আরও পড়ুন:
বেনাপোল ছেড়ে ভোমরায়, নেপথ্যে...
ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করবে টিসিবি
তিন দিনের মধ্যে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে: প্রতিমন্ত্রী
ভারত থেকে আরও ৩০০ টন আলু আমদানি
নারীর দান করা দুই হাত জোড়া লাগল পুরুষের শরীরে

মন্তব্য

জীবনযাপন
7 crore 78 lakh taka in the donation box of Pagla mosque breaking all records

সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে টাকা গণনা শুরু হয় শনিবার সকালে, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ছবি: নিউজবাংলা
ডিসি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলেছে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি টাকা।

দিনভর গণনা শেষে কিশোরগঞ্জের আলোচিত মসজিদটিতে এ পরিমাণ অর্থ পাওয়ার কথা শনিবার রাত দুইটার দিকে জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

তিনি আরও জানান, শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে বস্তুায় ভরে মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়। পরে দিনভর গণনা শেষে সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদের ৯টি দানবাক্স প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। রমজানের কারণে এবার বাক্সগুলো খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে ডিসি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে আসেন দূরদুরান্ত থেকে।

টাকা গণনা কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৭০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া যায়।

ঐতিহাসিক এ মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা পাওয়াটা তখন ছিল রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

মসজিদে নগদ টাকা ছাড়াও নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ। দানবাক্সে টাকার সঙ্গে থাকে বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান অলংকারও।

পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডিসি। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া।

মেয়র পারভেজ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূইয়া জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে মসজিদে মুসল্লিদের চলাচল এবং নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকলেও দান অব্যাহত ছিল।

তিনি আরও জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়। তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এ দানের টাকা থেকে সহায়তা করা হয়েছে।

মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করে থাকেন এ মসজিদে। যারা দান করতে আসেন, তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পর তাদের আশা পূরণ হয়েছে। তাই এখানে দান করেন তারা।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন:
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৬,৩২,৫১,৪২৩ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে আছে শত শত চিঠিও
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ১৫ বস্তা টাকা

মন্তব্য

জীবনযাপন
The number of donations in Pagla Masjid is being counted without records

পাগলা মসজিদে দানের অঙ্ক রেকর্ড ছাড়াল, গণনা চলছে

পাগলা মসজিদে দানের অঙ্ক রেকর্ড ছাড়াল, গণনা চলছে শনিবার পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে পাওয়া টাকা গণনা চলছে। ছবি: নিউজবাংলা
শনিবার মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়ার পর গণনা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গণনায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গণনা শেষ হতে রাত ১০টা বাজবে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া টাকার পরিমাণ রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়ার পর গণনা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গণনায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার ঘটনা দীর্ঘদিনের। তবে এর আগে ২০২৩ সালে পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ অর্থ। ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলার পর ২৩টি বস্তায় ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

ঐতিহাসিক এই মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এতো টাকা পাওয়াটা তখন ছিল নতুন রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে। তবে টাকার সুনির্দিষ্ট অংকটা জানতে আরও বেশকিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কেননা গণনা শেষ হতে রাত ১০টা বাজতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

সন্ধ্যা সাড়ে টার দিকে রুপালী ব্যাংকের এজিএম রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ৯টি দানবাক্স রয়েছে। এগুলো প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। পবিত্র রমজানের কারণে এবার খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।

টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।

দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেছেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছেন দূর-দুরান্ত থেকে।

মসজিদটিতে নিয়মিত টাকা ছাড়াও অলঙ্কার, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদটি গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন একর ৮৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন:
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৬,৩২,৫১,৪২৩ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে আছে শত শত চিঠিও
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ১৫ বস্তা টাকা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Millions of devotees meet in Brahmaputra on Ashtami Tithi

অষ্টমী তিথির স্নানে ব্রহ্মপুত্রে লাখো পুণ্যার্থীর মিলনমেলা

অষ্টমী তিথির স্নানে ব্রহ্মপুত্রে লাখো পুণ্যার্থীর মিলনমেলা লগ্ন শুরুর পর থেকেই গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদে আসতে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তরা। ছবি: নিউজবাংলা
নদে স্নান করতে আসা সবিতা রানী বলেন, ‘দেশ ও দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে, ভগবানের কাছে সেই প্রার্থনা করেছি। এছাড়া সবার উপরে আমরা মানুষ। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে যেন একে অপরের আত্মীয় হিসেবে বসবাস করতে পারি, সেটিও কামনা করেছি।’

ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভ ও পাপমোচনের উদ্দেশ্যে অষ্টমী তিথিতে স্নান করার জন্য লাখো পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদে। হিন্দু ধর্মীয় মতে, চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জগতের সব পবিত্র স্থানের পুণ্য এসে ব্রহ্মপুত্রে মিলিত হয়। এ সময় ব্রহ্মপুত্রের জল স্পর্শমাত্রই সবার পাপমোচন হয়। আর এ জলে স্নান করলে মোক্ষলাভ হয়।

মঙ্গলবার পবিত্র মন্ত্র উচ্চারণ শেষে স্নানকালে ফুল, ধান, দূর্বা, বেলপাতা, হরিতকি ইত্যাদি দেকতার উদ্দেশে নদের জলে অর্পণ করেন পুণ্যার্থীরা। এদিন ভোর ৪টা থেকে স্নানের লগ্ন শুরু হয়। আর পূণ্য স্নানের এই লগ্ন শেষ হয় বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিটে।

আয়োজকরা জানান, লগ্ন শুরুর পর থেকেই গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদের সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামারজানি বন্দর ও ফুলছড়ির উপজেলার অতিপরিচিত বালাসীঘাট ও তিস্তামুখঘাটে আসতে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তরা। তবে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই সব স্থান পূর্ণার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে। লোকজ মেলার আয়োজনে এ স্নান উৎসবে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়। দিনব্যাপী কামারজানি বন্দর, বালাসীঘাট ও তিস্তামুখঘাটের ব্রহ্মপুত্রের বালুচরে ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী মেলা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও সব ধর্মের বিভিন্ন বয়সের বিনোদনপ্রেমী হাজারো মানুষ অংশ নেন।

অষ্টমী তিথির স্নানে ব্রহ্মপুত্রে লাখো পুণ্যার্থীর মিলনমেলা

এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদের বালাসীঘাটে পরিবারসহ ঘুরতে আসা বেসরকারি কোম্পারিতে চাকরিরত শামীম হায়দার বলেন, ‘আমার মেয়ে রিয়া মনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রী আর একমাত্র কন্যাকে নিয়ে মেলায় আসছি। পূজা-অর্চনা দেখলাম, মেলা ঘুরলাম, ভালো লাগল।’

নদে স্নান করতে আসা সবিতা রানী বলেন, ‘আজকের এই দিনে ব্রহ্মপুত্রে স্নান করলে ভগবান সব পাপ মোচন করে দেন। আমি প্রতি বছরই এই দিনে এখানে স্নানে আসি।’

এসময় জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে সবিতা বলেন, ‘দেশ ও দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে, ভগবানের কাছে সেই প্রার্থনা করেছি। এছাড়া সবার উপরে আমরা মানুষ। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে যেন একে অপরের আত্মীয় হিসেবে বসবাস করতে পারি, সেটিও কামনা করেছি।’

স্নান উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি তপন কুমার বলেন, ‘আজ সকাল থেকেই মহা অষ্টমী স্নানে অংশ নিতে ব্রহ্মপুত্র নদে লাখেরও বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে। সড়ক ও নৌপথে নারী-পুরুষ পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিতে আসেন। স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে এ বছর ব্রহ্মপুত্র নদের বালুর ওপর লোকজ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় বাহারি পণ্য, শিশুদের খেলাধুলার হরেক রকম জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীও পাওয়া যাচ্ছে।’

গাইবান্ধা শনি মন্দিরের পুরোহিত সুমন চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পঞ্জিকামতে চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে সনাতন ধর্মের নারী-পুরুষরা পাপমোচনের আশায় পবিত্র অষ্টমী স্নানে অংশ নেন। ভোর থেকেই বিপুল সংখ্যক হিন্দু পুণ্যার্থী ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান সেরে দেবীর পূজার্চনা করেন। এদিন পাপমোচনের প্রার্থনার পাশাপাশি সকলেই আমরা দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনাও করে থাকি।’

মন্তব্য

জীবনযাপন
Probable date of Qurbani Eid announced in Saudi

সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরবের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সে হিসাবে এখানে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখ। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

সৌদি আরবে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী এবার (২০২৪ সালে) ১০ জিলহজ বা কোরবানির ঈদ হতে পারে জুন মাসের ১৬ তারিখ।

বাংলাদেশে সাধারণত সৌদি আরবের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সে হিসাবে এখানে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে জুন মাসের ১৭ তারিখ। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।

ধর্মমতে, মহান আল্লাহ মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.)-কে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানির নির্দেশ দেন। আদেশের পর তিনি সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন। এতে আল্লাহ খুশি হন এবং হযরত ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়ে যায়। এই ঘটনাকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনে হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১২ তারিখ পর্যন্ত পশু কোরবানি করে থাকেন।

মন্তব্য

জীবনযাপন
The long vacation is over but the mood is not over in the capital

ঈদ ও নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষ, তবু আমেজ কাটেনি

ঈদ ও নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষ, তবু আমেজ কাটেনি দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে রাজধানীতে ফিরছেন নগরবাসী। কমলাপুর রেল স্টেশন (বাঁয়ে), ফাঁকা ঢাকা ও সদরঘাট লঞ্চঘাটের সোমবারের চিত্র। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি অফিসসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সোমবার খুললেও কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি ছিল কম। নগরীর রাস্তাঘাটও ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ভিড় কেবল বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশনে।

ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ মিলিয়ে লম্বা ছুটি শেষ হয়েছে রোববার। সোমবার ছিল ছুটি শেষের প্রথম কর্মদিবস। রাজধানীর বাস ও রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে নগরে ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে। তবে অফিস-আদালত এখনও স্বাভাবিক সময়ের চিত্র ফিরে পায়নি।

চিরচেনা রূপে ফেরেনি ঢাকা শহরও। রাস্তার পাশের বেশিরভাগ দোকান, শপিং মল বন্ধ। সোমবার রাজধানীর রাস্তায় খুবই কমসংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। যানজট তো দূরের কথা, নগরীর অধিকাংশ রাস্তাই ছিল ফাঁকা।

সোমবার সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি অফিসসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুললেও কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি ছিল কম। একইভাবে সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা।

ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোলাকুলির মাধ্যমে একে অপরকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়।

সকালে মালিবাগ, শান্তিনগর, গুলশান, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মিরপুর ও শাহবাগ এলাকায় স্বল্পসংখ্যক বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও যানবাহনের জটলা দেখা গেছে কেবল বাস, লঞ্চ ও রেল স্টেশন ঘিরে।

ঈদ ও নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষ, তবু আমেজ কাটেনি
দীর্ঘ ছুটি কাটিয়ে নগরে ফিরছে মানুষ। সোমবার কমলাপুর রেল স্টেশনের চিত্র। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

বেসিরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে আবু রায়হান বললেন, ‘রাজধানীতে এখনও ঈদের আমেজ পুরো মাত্রায়। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। রাস্তায় কোনো যানজট বা বিশৃঙ্খলা নেই। রাজারবাগ এলাকা থেকে গুলশানে পৌঁছতে মাত্র ৬ মিনিট সময় লেগেছে। অথচ অন্য সময় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট লাগে।’

সদরঘাটে নগরে ফেরা মানুষের ভিড়

রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সোমবার ঢাকামুখী মানুষের ভিড় দেখা যায়। লম্বা ছুটি শেষে কর্মমুখী মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করায় এদিন যাত্রীর চাপ ছিল লক্ষণীয়। তবে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়নি।

সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের সবলঞ্চ ডেকে পরিপূর্ণ যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভেড়ে। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়েও কিছু লঞ্চ ঢাকার এসে পৌঁছায়। চাঁদপুর, ভোলা, ইলিশা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলোও ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সদরঘাট টার্মিনাল থেকে দেশের ৩১টি নৌপথে নিয়মিত ৭০টি লঞ্চ চলাচল করে। তবে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তা দ্বিগুণের বেশি করা হয়েছে। ঈদের আগে-পরের প্রায় ১৫ দিন ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭৫টিরও বেশি লঞ্চ যাতায়াত করেছে।

আগে ঢাকা থেকে ৪১টি নৌপথে লঞ্চসহ পণ্যবাহী বিভিন্ন নৌযান চলত। নদী খনন ও ড্রেজিংয়ে অনিয়মের কারণে ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলগামী ১০টি নৌপথ বন্ধ হয়ে গেছে।

সোমবার দুপুরের পর থেকে গ্রিন লাইন-৩ ও সন্ধ্যার পর পারাবত-৯, ১০, ১২ ও ১৮; মানামী, কুয়াকাটা-২, কীর্তনখোলা-২ ও ১০; সুরভী-৮ ও ৯; অ্যাডভেঞ্চার-১ ও ৯; সুন্দরবন-১২ লঞ্চসহ মোট ১৫টি লঞ্চ বরিশাল নদীবন্দর থেকে সদরঘাটে এসে পৌঁছায়।

মানামি লঞ্চের চালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এবার ঈদের আগে যেমন যাত্রীর চাপ ছিলো পরে তেমন হচ্ছে না। সরকারি ছুটি শেষ হওয়ায় অনেকেই এখন ঢাকা ফিরছে। তবে একসঙ্গে সবাই আসছে না। এজন্য উপচেপড়া ভিড় নেই।’

ঈদ ও নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষ, তবু আমেজ কাটেনি
স্বজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। সোমবার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকার চিত্র। ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী আকবর পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী থেকে ফিরেছেন ঢাকায়। তিনি বলেন, ‘এমভি টিপু-১৩ লঞ্চের টিকিট পেয়েছিলাম। তবে লঞ্চে অনেক মানুষের ভিড় ছিলো। ঠিকভাবে ঢাকায় আসতে পেরেছি এটাই অনেক।’

মনপুরা, হাতিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় এসেছে এমভি তাসরিফ-৮। লঞ্চটির কর্মী আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘লঞ্চে পাঁচ-ছয়শ’ মানুষ এসেছে। ছুটি শেষ হওয়ায় মানুষ ঢাকায় ফিরঠে। আরামের যাত্রা লঞ্চ। এজন্য অনেকেই লঞ্চে করে আসেন।’

ভোলার চরফ্যাশন ও বেতুয়া থেকে ঢাকা এসেছে এমভি টিপু-১৩। লঞ্চটি ঘাটে ভিড়তেই দেখা যায় ডেকভর্তি মানুষ। অনেকে দাঁড়িয়েও এসেছেন।

ভোলা থেকে আসা যাত্রী মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘কাপড়ের দোকানে কাজ করি। ঈদের আগের দিনও খোলা ছিল। চাঁদ রাতে ঈদ করতে ঢাকা থেকে বাড়িতে গিয়েছিলাম। ছুটি শেষ, মার্কেট খুলবে। এজন্য চলে আসলাম।’

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বরিশাল অঞ্চলগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রী কমায় ঢাকার সদরঘাটের চেনা রূপ অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিল। ঈদের ছুটির সঙ্গে ফিরেছে চেনা সেই ভিড়। তবে ঈদের পরে ঢাকার সদরঘাটে ভিড় বাড়লেও আগের মতো নেই বলে জানিয়েছেন লঞ্চ-সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সদরঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় থাকলেও ফিরতি যাত্রীর ভিড় ছিলো না। বরিশাল, ভোলার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা লঞ্চগুলোর কর্মীরা যাত্রীদের ডাকাডাকি করছিলেন। অল্পসংখ্যক যাত্রীই লঞ্চে উঠেছেন। বেশ কয়েকটি লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ডেকের সিট অধিকাংশই ফাঁকা। ভেতরে কিছু মানুষ বসে আছে। কেউ আবার কেবিন নিয়ে দরদাম করছেন।’

ডলার কোম্পানির ২৪টি লঞ্চের মালিক ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের লঞ্চ আছে অনেক। কিন্তু সেই অনুপাতে যাত্রী নেই। তাই লঞ্চ কম ছাড়ছে। যেগুলো ছাড়ছে সেগুলোতে ভরেই যাচ্ছে। ঈদের পরও আমরা যাত্রীর চাপ আশা করেছিলাম। কিন্তু তা হয়নি।’

লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘ঈদের আগে যাত্রীর চাপ বাড়ায় আশা পেয়েছিলাম। তবে ঈদের ছুটি শেষে যাত্রীর ভিড় নেই।’

সদরঘাটের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ঈদের পর যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক রয়েছে। নিয়মিত লঞ্চগুলোই চলাচল করছে। অতিরিক্ত কোনো লঞ্চের প্রয়োজন পড়ছে না।’

টার্মিনাল এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সদরঘাট নৌ-থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ‘আজ যাত্রীর চাপ আগের থেকে বেড়েছে। পুলিশ, র‍্যাবসহ আনসার সদস্যরা কাজ করছে। সন্দেহজনক কিছু দেখলে তল্লাশিও করা হচ্ছে।’

ঈদ ও নববর্ষের দীর্ঘ ছুটি শেষ, তবু আমেজ কাটেনি
ঈদ ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সোমবার ঢাকার মতিঝিলের সড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ছবি: নিউজবাংলা

প্রসঙ্গত, ঈদ উপলক্ষে ১০, ১১, ১২ এপ্রিল ছিল সরকারি ছুটি। ১৩ এপ্রিল শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৪ এপ্রিল রোববার ছিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাংলা নববর্ষের ছুটি।

তবে ঈদে ঢাকার বাইরে যাওয়া সরকারি-বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের অনেকেই ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন। ফলে অফিস-আদালত, ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।

স্কুল-কলেজও খুলবে আগামী সপ্তাহে। তারপরই চিরচেনা রূপে ফিরবে রাজধানী ঢাকা।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Baisabi festival of life in the hills begins

পাহাড়ে প্রাণের ‘বৈসাবি’ উৎসব শুরু

পাহাড়ে প্রাণের ‘বৈসাবি’ উৎসব শুরু দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে বৈসাবি। ছবি: নিউজবাংলা
১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালিত হয়ে আসছে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে যথাক্রমে ‘বৈসু’, ‘সাংগ্রাই’ এবং ‘বিজু’ নামে এ উৎসব পালন করে থাকেন। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।

খাগড়াছড়িতে ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চেঙ্গী, ফেনী ও মাইনী নদীতে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক ও প্রাণের উৎসব ‘বৈসাবি’। ফুল বিঝুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে নদীর পাড়গুলো হাজারো তরুণ-তরুণীর মিলনমেলায় পরিণত হয়।

পাহাড়ি সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা হল্লা করে ফুল তুলে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে নদী-খালে ফুল উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের শুভ কামনায় নিজেদের পবিত্রতা কামনা করে। এছাড়া ফুল দিয়ে ঘরের প্রতিটি দরজার মাঝখানে মালা গেঁথে সাজানো হয়।

শুক্রবার চাকমা সম্প্রদায় ফুল বিজু পালন করছেন। শনিবার মূল বিজু আর পরেরদিন রোববার পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করবেন তারা। এ সময় ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। একইসঙ্গে শনিবার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারিবৈসু, বিযুমা ও বিচিকাতাল পার্বন পালিত হবে ফুল বিজু, মূলবিজু ও বিচিকাতাল নামের নিজস্ব বৈশিষ্টে।

রোববার খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হবে বর্ষবরণের র‌্যালী। এসব উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়।

পাহাড়ে প্রাণের ‘বৈসাবি’ উৎসব শুরু

চেঙ্গী নদীতে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে ফুল উৎসর্গে সামিল হয়েছেন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ। বৈসাবি উৎসব দেখতে এসেছেন অনেক পর্যটকও।

১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উসব পালিত হয়ে আসছে। সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে যথাক্রমে ‘বৈসু’, ‘সাংগ্রাই’ এবং ‘বিজু’ নামে এ উৎসব পালন করে থাকেন। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।

চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের পাশাপাশি তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ ১৩ ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠী তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ও অবস্থানকে বৈচিত্র্যময় করে করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে বৈসাবি উৎসব পালন করে থাকে।

বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙ্গালির মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও সুদৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা সকলের।

মন্তব্য

p
উপরে