× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

জীবনযাপন
In Dinajpur the budget for the puja is tight
google_news print-icon

দিনাজপুরে এবার পূজার বাজেটে টান

দিনাজপুরে-এবার-পূজার-বাজেটে-টান
শেষ মুহূর্তে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের কারিগররা। ছবি: নিউজবাংলা
পূজা কমিটির সদস্যরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। চলতি বছর বাজারে জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনুদানের পরিমাণও কমে এসেছে। ফলে কমেছে পূজার বাজেট।

ঢাক, কাসর, শঙ্খ আর উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা। এরই মধ্যে দিনাজপুর জেলায় শুরু হয়েছে আয়োজন। তবে গত দুই বছর করোনার মহামারির ধকল আর চলতি বছরের অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বাড়লেও তাতে কমে এসেছে বাজেটের পরিমাণ।

পূজা কমিটির সদস্যরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। চলতি বছর বাজারে জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনুদানের পরিমাণও কমে এসেছে। ফলে কমেছে পূজার বাজেট।

প্রতিমা কারিগররা বলছেন, চলতি বছর কাজের পরিমাণ ভালো থাকলেও কম খরচে ভালো কাজ উপহার দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডেকোরেটর শ্রমিকদেরও কথা একই রকম।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা ও মণ্ডপ প্রস্তুতের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন ডেকোরেটর শ্রমিক এবং প্রতিমা কারিগররা। প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি রয়েছে মাটি চড়ানো ও রং-তুলির কাজ। অন্যদিকে মন্দিরের প্রবেশদ্বার প্রস্তুত করাসহ মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ করছেন ডেকোরেটর শ্রমিকরা।

মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই পূজা চলবে দশমী অর্থাৎ আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

দিনাজপুরে এবার পূজার বাজেটে টান

দিনাজপুর পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর জেলায় তিনটি মণ্ডপ বেড়েছে। গত বছর জেলায় ১ হাজার ২৬১টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এবার ১৮টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় পূজা কমিটি থেকে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির সমাবেশ এবং জেলায় বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজায় প্রতিটি মণ্ডপে আনসারের পাশপাশি টহলে থাকবে পুলিশ ও র‌্যাব।

রাজবাড়ী জেলা থেকে দিনাজপুরে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে এসেছেন অনুপ সরকার। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০২০ সালে প্রতিমা তৈরি করার জন্য দিনাজপুরে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময় করোনা থাকায় আসা হয়নি। ঈশ্বরের কৃপায় এবার এসে কাজ করছি। গতবারের তুলনায় সাড়া ভালো পেয়েছি।

‘এবার একটি বিষয় লক্ষ্য করছি। সব জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় এবার প্রতিমার সরঞ্জামের দাম বেশি। আর তাই খরচও বেশি। আবার অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, পূজার আয়োজকরা গত বছর যে কাজ ১০০ টাকায় করিয়েছেন, এবার সেই কাজ ৮০ টাকায় করাতে চাচ্ছেন। আবার করতেও হচ্ছে। কিন্তু কথা হলো ১০০ টাকার কাজ ৮০ টাকায় করে দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেখা যাক কী হয়।’

স্থানীয় প্রতিমা কারিগর স্বপন পাল বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর প্রতিমা তৈরি করে তেমন ভালো আয় হয়নি। এবার চিন্তা করলাম, ভালো কাজ হবে। কিন্তু এবার জিনিসের দাম বেশি। ফলে কম দামে ভালো কাজ প্রত্যাশা করছেন আয়োজকরা, যা দিতে গিয়ে দ্বিধায় পড়তে হচ্ছে। আমরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছি না।’

দিনাজপুরে এবার পূজার বাজেটে টান

ভুবন রায় নামে এক ডেকোরেশন শ্রমিক বলেন, ‘এবার দুটি কাজ ধরেছি। প্রতিটি দেড় লাখ টাকা করে। কিন্তু গতবার দুটি কাজ করেছি প্রতিটি ২ লাখ টাকা করে। এবার কাজ করতে গিয়ে একটাই সমস্যা: আয়োজকরা বলছেন, কমের মধ্যে একটি ভালো কাজ চাই। আমরা পড়ছি দ্বিধায়। কাজের চাপ পূর্বের থেকে বেড়েছে। কিন্তু দাম বাড়েনি।’

সদর উপজেলার কাঁটাপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় দাস তিতুন বলেন, ‘গত বছর পূজার বাজেট ছিল ২ লাখ টাকা, আর এবার দেড় লাখ। কারণ এবার অনুদানের পরিমাণ কমে গেছে। গতবার যে ব্যক্তি ১ হাজার টাকা দিয়েছেন, এবার তার ইচ্ছা থাকলেও সেই পরিমাণ টাকা দিতে পারছেন না। করোনার ধকল কাটতে না কাটতেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। তাই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে পূজার বাজেট কমিয়ে আনতে হয়েছে। তারপরেও একটু চিন্তায় আছি, বাজেট অনুযায়ী অনুদান উঠবে কি না।’

দিনাজপুর পূজা উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার বলেন, ‘অনেকেই দেখা যায়, লক্ষ্মী পূজা পর্যন্ত প্রতিমা রাখে। সে ক্ষেত্রে আমরা সেটির দায়ভার নেব না। তারা যদি নিজ দায়িত্বে রাখতে চায় তবে রাখতে পারবে।’

আরও পড়ুন:
কালীমন্দিরের টিন কেটে প্রতিমা ভাঙচুর
চট্টগ্রামে মণ্ডপে হামলার অভিযোগে আটক ৬৫
প্রতিমা বিসর্জন না দিয়ে চট্টগ্রামে হরতালের ডাক
সিঁদুররাঙা মুখে দেবীকে বিদায়ের প্রস্তুতি
মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরছেন দেবী দুর্গা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

জীবনযাপন
Advance train ticket sales started online only on March 24
ঈদযাত্রা

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট শুধুই অনলাইনে, বিক্রি শুরু ২৪ মার্চ

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট শুধুই অনলাইনে, বিক্রি শুরু ২৪ মার্চ কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনে ঈদযাত্রা। ফাইল ছবি
রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী জানান, ঈদযাত্রার কোনো টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করা হবে না। রেলওয়ের ওয়েবসাইট, রেল সেবা অ্যাপ ও সহজ ডটকমের প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সকালে ও পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট বিকেলে বিক্রি হবে। উত্তরাঞ্চলের ট্রেন ছাড়বে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৪ মার্চ ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে। তা চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। আর ফিরতি টিকিট বিক্রি ৩ এপ্রিল শুরু হয়ে চলবে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত। সব টিকিট বিক্রি হবে অনলাইনে।

ঈদযাত্রা কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে বুধবার রেল ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আগে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী। তিনি জানান, ঈদের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে।

রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। টিকিট কালোবাজারি রোধে নেয়া হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ।

রেলওয়ের মহাপরিচালক জানান, ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০। এবারও ঈদযাত্রার কোনো টিকিট কাউন্টারে বিক্রি করা হবে না। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেই শতভাগ টিকিট বিক্রি হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট, রেল সেবা অ্যাপ ও সহজ ডটকমের প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।

সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। সার্ভারের ওপর চাপ কমাতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট আলাদা সময়ে বিক্রি করা হবে। ঈদে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন চলতে পারে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি জানান, পূর্বাঞ্চলের টিকিট সকালে ও পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট বিকেলে বিক্রি করা হবে। কমলাপুর থেকে চাপ কমাতে দেশের উত্তরাঞ্চলের ট্রেন রাজধানীর বনানীর ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছাড়া হবে। জয়দেবপুর স্টেশন থেকেও কিছু ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। বিশেষ ট্রেনের পাশাপাশি নিয়মিত রুটের ট্রেনগুলোতে কোচের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের সাপ্তাহিক বিরতি প্রত্যাহার করা হবে। ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা পূরণে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ৫০টি এমজি ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি বিজি কোচসহ মোট ৮৬টি কোচ যাত্রীবাহী সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ২৪৮টি (পূর্বাঞ্চলে ১৩২ ও পশ্চিমাঞ্চলে ১১৬টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেনে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছেঅ

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর জানান, নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ট্রেন পরিচালনা নিশ্চিত করে যাত্রী সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় ডিভিশনাল ও জোনাল কন্ট্রোলে পৃথক মনিটরিং সেল গঠন করে কর্মকর্তাদের ইমার্জেন্সি ডিউটি দেয়া হবে। সময়ানুবর্তিতা রক্ষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জংশন স্টেশন এবং সিগন্যাল কেবিনে কর্মকর্তা ও পরিদর্শকদের তদারকির মাধ্যমে ট্রেন অপারেশন পরিচালনা করা হবে।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ট্রেন সিডিউল অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে রেলপথ পেট্রলিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। রেল সেতুগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেয়া হবে বিশেষ ব্যবস্থা।

মহাপরিচালক জানান, ৩ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর নীলসাগর ও চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের পরিবর্তে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন থেকে চলাচল করবে। ওই দুটি ট্রেন বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না। ঈদের দিন বিশেষ ব্যবস্থাপনায় কিছু মেইল এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। তবে কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।

আন্তঃদেশীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন ৭ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। শুধু মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন জলপাইগুড়ি থেকে ১৭ এপ্রিল চলাচল করবে।

ঈদের আগে ৮ এপ্রিল রাত থেকে ঈদের পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্য সব গুডস ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Books that are selling well at book fairs

মেলায় যেসব বই ভালো বিক্রি হচ্ছে

মেলায় যেসব বই ভালো বিক্রি হচ্ছে
বইমেলায় নবীন ও তরুণ জনপ্রিয় লেখকদের বই বিক্রির শীর্ষে থাকলেও হারিয়ে যাননি কিংবদন্তি লেখকরা। তরুণ জনপ্রিয় লেখকের ভীড়ে ভালো বিক্রি হচ্ছে তাদের বইও।

নতুন করে দুইদিন সময় না বাড়ানো হলে বৃহস্পতিবারই হতো অমর একুশে বইমেলার শেষদিন। তবে সময় বাড়ানোয় আরও দুদিন চলবে বইমেলা। ইতোমধ্যে সব বই মেলায় চলে এসেছে। ফলে শেষ সময়ে এসে পাঠকরা সহজেই খুঁজে নিতে পারছেন তাদের পছন্দের বই।

বইমেলায় নবীন ও তরুণ জনপ্রিয় লেখকদের বই বিক্রির শীর্ষে থাকলেও হারিয়ে যাননি কিংবদন্তি লেখকরা। তরুণ জনপ্রিয় লেখকের ভীড়ে ভালো বিক্রি হচ্ছে তাদের বইও।

এবারের বইমেলায় কোন বইগুলো সবচেয়ে ভালো বিক্রি হয়েছে- জানতে চাইলে প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, “সর্বোচ্চ বিক্রিত তিনটি বইয়ের নাম বলতে বললে যে তিনটি বইয়ের নাম আসবে, সেগুলো হলো- আনিসুল হক স্যারের ‘কখনো আমার মাকে’, আসিফ নজরুল স্যারের ‘আমি আবু বকর বলছি’, আনু মোহাম্মদ স্যারের ‘অর্থশাস্ত্র’ বইটি।

“এছাড়া আরও দুইটি বইয়ের নাম বলা যাবে, মহিউদ্দিন আহমেদ স্যারের ‘প্লাবনভূমির মহাকাব্য পলাশী থেকে পাকিস্তান’ এবং জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী স্যারের ‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড’।”

তিনি জানান, ‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড’৭/৮ দিন আগে বইমেলায় এসেছে। এরই মধ্যে তিনবার স্টক আউটও হয়ে গেছে।

অন্বেষা প্রকাশনীর কর্মী আবদুল্লাহ বলেন, “ড. আমিনুল ইসলাম স্যারের ‘১০১ ইনট্রোডাকশন টু বাংলাদেশ’, ইসমত আর প্রিয়ার ‘আমার শুধু মানুষ হারায়’, সুজন দেবনাথের ‘হেমলকের নিমন্ত্রণ’, আরিফুর রহমানের ‘সাউদার্ন ভ্যালি ওয়ে’ আর জুনায়েদ ইসলামের ‘ক্রিমসন অ্যান্ড দ্য রেড ডোর’ সবচেয়ে ভালো বিক্রি হচ্ছে।”

মিজান পাবলিশার্সের বিক্রয়কর্মী ইমন বলেন, “নিমাই ভট্টাচার্যের ‘মেমসাহেব’, ফারজানা ছবির ‘জলছবি’ আর অভিনেত্রী রওনক বিশাখা শ্যামলীর ‘তুমি নয়নতারা’ বইগুলো সবচেয়ে ভালো বিক্রি হয়েছে।”

‘তুমি নয়নতারা’ বইয়ের স্টক শেষ হয়ে যাওয়া এবং মেলা বর্তমানে শেষ পর্যায়ে হওয়াতে প্রকাশনী নতুন কোনো মুদ্রণে যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর পরিচালক সিরাজুল কবীর চৌধুরী বলেন, ‘সবচেয়ে বিক্রিত বইগুলোর নির্দিষ্ট নাম না বলি। তবে উপন্যাসের কাটতি বেশি। আর কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদের বই তো আছেই। এছাড়া সাদাত হোসাইন, মৌরি মরিয়মসহ আরও যেসব লেখক ফেসবুকে পজিটিভ লেখালেখি করেন, তাদের বই ভালো বিক্রি হচ্ছে।’

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স-এর বিক্রয় প্রতিনিধি শারাফাত লস্কর বলেন, “অরুণ কুমার বিশ্বাসের ‘ব্রাউন পেপার’, দন্ত্যস রওশনের ‘নির্বাচিত কিশোর উপন্যাস’‘, মশিউর রহমান শান্তর ‘ঘোর’, ড. মোহাম্মদ আমীন স্যারের ‘যতিচিহ্নের গতি-প্রকৃতি’, সাগরিকা নাসরিনের ‘আধখানা বসতি তাহার’ এবং আবদুল গাফফার রনির ‘প্যারাডক্স’ বইগুলো আমাদের প্রকাশনী থেকে ভালো বিক্রি হচ্ছে।”

মাওলা ব্রাদার্সের মারিহা বিনতে আলী বলেন, “আমাদের প্রকাশনীর সব বই ভালো বিক্রি হচ্ছে। তবে আহমদ ছফার ‘যদ্যপি আমার গুরু’, ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী’, উপন্যাসসমগ্র, শাহাদুজ্জামানের ‘ক্রাচের কর্ণেল’ ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘খোয়াবনামা’ বেশি বিক্রি হচ্ছে।”

ঐতিহ্য প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী বলেন, “আফতাব হোসেনের ‘বখতিয়ার’, ইফতেখার আমিনের অনুবাদ বই ‘ট্রাভেলস অব ইবনে বতুতা’, সাব্বির জাদিদের ‘আজাদির সন্তান’, মহিউদ্দিন আহমদের ‘চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ’ আর ‘তেহাত্তরের নির্বাচন’ বইগুলো ভালো বিক্রি হচ্ছে।”

বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই রাখার দাবি

আগামী বছর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে বইমেলা হবে না মর্মে একটি গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

বলা হচ্ছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড তৈরির অংশ হিসেবে কিছু প্রকল্পের কাজ মার্চ মাস থেকেই শুরু করতে চাইছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তাই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়া হবে বইমেলা।

যদিও মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো ঘোষণা আসেনি, তবে প্রকাশকদের দাবি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ থেকে বইমেলা যেন না সরানো হয়। সরানো হলে বইমেলা না হওয়ারই নামান্তর সেটি।

এ বিষয়ে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী ফাতিমা বুলবুল বলেন, ‘অমর একুশে বইমেলা আমাদের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির অংশ। এর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো এলাকা জড়িয়ে আছে।

‘শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে সবাই বইমেলায় আসে। এখানে বইমেলা হওয়ায় আলাদা একটি আবহ অনুভূত হয়। তাই বইমেলার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প কোনো জায়গা থাকতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘বইমেলায় অন্যত্র সরিয়ে নিলে মেলার প্রাণটাই থাকবে না। তার চেয়ে বইমেলা না হওয়াই ভালো। বইমেলাকে তো আর বাণিজ্যমেলার সঙ্গে তুলনা করা যাবে না।’

বইমেলায় কবি সামাদের ‘সিলেক্টে‌ড পোয়ে‌মস’

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে দে‌শব‌রেণ‌্য কবি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের নতুন বই ‌‘সিলেক্টেড পো‌য়েমস’-এর তৃতীয় সংস্করণ। এবারের মেলায় অনন্য এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে অন্যন্যা প্রকাশনী। উপমহা‌দে‌শের প্রখ‌্যাত চিত্রশিল্পী যো‌গেন চৌধুরীর চিত্রকর্ম অবলম্ব‌নে বইয়ের প্রচ্ছদ অংকন করেছেন খ্যাতিমান শিল্পী ধ্রুব এষ।

দ্বিভাষিক এই কাব‌্য সংকলন‌টি ইং‌রে‌জি ভার্সন নতুন ক‌রে সম্পাদনা ক‌রে‌ছেন যুক্তরা‌ষ্ট্রের বিখ‌্যাত দুই ক‌বি জে‌মি প্রক্টর শু এবং সাইমন জে অর্টিজ। আগের সংস্করণের স‌ঙ্গে তি‌রিশ‌টি নতুন অনুবাদ যুক্ত করা হ‌য়ে‌ছে বর্তমান সংস্কর‌ণে।

কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য অধ্যাপক সামাদ ২০২৪ সালে একুশে পদক, ২০২০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। জাতীয় কবিতা পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ সামাদ ২০১৭ সাল থেকে পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।

২৯তম দিনে ১২৭টি নতুন বই

বইমেলার ২৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ১২৭টি।

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুন, পুঁথিগবেষক জালাল খান ইউসুফী, কথাসাহিত্যিক মাহমুদুন নবী রনি এবং কবি রনি রেজা।

শুক্রবারের কর্মসূচি

শুক্রবার অমর একুশে বইমেলার ৩০তম দিন। মেলা শুরু হবে সকাল এগারোটায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত।

আরও পড়ুন:
বইমেলায় ‍দৃষ্টিহীনদের বাতিঘর স্পর্শ ব্রেইল প্রকাশনা
জমে উঠেছে শেষ সময়ের বইমেলা
বইমেলা ২ দিন বাড়ল
ক্যাটালগ দেখে ‘পছন্দের’ বই সংগ্রহে বইপ্রেমীরা

মন্তব্য

জীবনযাপন
Book lovers collect their favorite books by looking at the catalogue

ক্যাটালগ দেখে ‘পছন্দের’ বই সংগ্রহে বইপ্রেমীরা

ক্যাটালগ দেখে ‘পছন্দের’ বই সংগ্রহে বইপ্রেমীরা ছবি: নিউজবাংলা
মেলা একদম শেষপর্যায়ে চলে আসায় এরই মধ্যে প্রায় সব নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ফলে প্রকাশনীর ক্যাটালগ বা তালিকা দেখে নিজেদের পছন্দের সব পাঠকের বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে বই কিনতে দেখা যাচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী আজকের দিনের পর আর মাত্র তিন দিন আছে প্রাণের মেলার সময়। তিন দিন পরই শেষ হয়ে যাবে মাসব্যাপী চলা বইয়ের এ উৎসব। তবে আগামী ১ ও ২ মার্চ শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুই দিন বইয়ের মেলা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন প্রকাশকরা। এ জন্য বাংলা একাডেমিকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক বিক্রেতা সমিতি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ-কালের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। তবে সেই দুই দিন সময় না বাড়ানো হলে আপাতত দৃষ্টিতে বইমেলা ২৯ ফেব্রুয়ারিই শেষ হচ্ছে।

তাই মেলা একদম শেষপর্যায়ে চলে আসায় এরই মধ্যে প্রায় সব নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ফলে প্রকাশনীর ক্যাটালগ বা তালিকা দেখে নিজেদের পছন্দের সব পাঠকের বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে বই কিনতে দেখা যাচ্ছে।

বরাবরের মতো এবারও শেষ দিকে বেড়েছে বই বিক্রি। কারণ হিসেবে প্রকাশকরা বলছেন, সাহিত্যপ্রেমীরা মেলার শুরু থেকে বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে তালিকা সংগ্রহ করে শেষ দিকে এসে বই কেনা শুরু করেন। এরই মধ্যে মেলা থেকে তাদের ব্যাগ ভর্তি করে বই কিনতে দেখা গেছে।

বইমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলায় এখন যারা আসছেন তাদের বেশির ভাগই বইয়ের ক্রেতা। পাঠকদের বড় একটি অংশ মেলায় বই কিনছেন নিজের পছন্দ করা বইয়ের তালিকা ধরে ধরে। মেলায় প্রকাশনী স্টলগুলোতে কিছুক্ষণ পরপরই পাঠক আসছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই তালিকা ধরে বই কিনতে আসছেন মেলায়। এক প্রকাশনী থেকে বই সংগ্রহ শেষে ছুটছেন অন্য প্রকাশনীতে। তাদের অনেকেই পছন্দের তালিকার বই কিনতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকেই দেখেশুনে বই কিনতে দেখা গেছে।

মেলায় আগত পাঠক-দর্শনার্থী জানান, বিভিন্ন প্রকাশনী ঘুরে ক্যাটালগ দেখে এতদিন নতুন বইয়ের তালিকা সংগ্রহ করেছেন তারা। মেলা শেষপর্যায়ে আসায় এরই মধ্যে প্রায় সব নতুন বই চলে এসেছে। ফলে এখন আর শুধু দেখা নয়, এবার তারা পছন্দের বইগুলো কেনা শুরু করেছেন তারা।

আগামী, অন্যপ্রকাশ, সময়, প্রথমা, পাঞ্জেরী, অন্বেষা, ইত্যাদি, বাতিঘর, অনন্যা, কাকলী, উৎস, দিব্য, বিদ্যা, পুথিনিলয়, অ্যাডর্ন, পার্ল, ইউসিবিএল, কথাপ্রকাশ, শোভাসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রকাশনার প্যাভিলিয়ন ও স্টল ঘুরেও দেখা গেছে বইয়ের বিক্রির হিড়িক। সেখানেও দেখা গেছে তালিকা ধরে ধরে পাঠ করা বই কিনছেন।

আজ বইমেলায় ছিল ছুটির দিন। পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে সরকারি এ ছুটির দিনে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মেলায় যেন জনস্রোত তৈরি হয়েছিল। পাঠক-দর্শনার্থীর ভিড়ে বইয়ের বেচাকেনাও হয়েছে বেশ। এতে একদিকে প্রকাশকদের মুখে যেমন হাসি ফুটেছে তেমনি পাঠকদের কাছে নিজের বইটি তুলে দিতে পেরে সন্তুষ্ট লেখকরাও।

রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে বইমেলায় ঘুরতে আসা আদিবা জাহান নওমি বলেন, ‘এবারের বইমেলায় শুরুর দিকে একবার এসে ঘুরে গেছি। তখন প্রকাশনীগুলো থেকে তাদের ক্যাটালগ সংগ্রহ করেছিলাম। বাসা থেকে এবার পছন্দ করা বইগুলোর তালিকা করে নিয়ে এসেছি। এখন ক্যাটালগ থেকে তালিকা ধরে ধরে বই কিনেছি। বেশ কিছু বই কেনা বাকি রয়েছে। শেষ দিন হয়ত আবার আসা হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা নূর ঐশী বলেন, বইমেলা তো হলের পাশেই যখন ইচ্ছে হয় যাওয়া যায়। তবে মেলার শুরুর দিকে দুয়েকটি বই কিনছিলাম। আর এখন পছন্দের তালিকা থেকে বই কিনতে এসেছি। মেলা থেকে নিজের পছন্দের অন্তত ১০টি বই কিনবেন বলেও জানান তিনি।

বইমেলা থেকে বড় মেয়ের জন্য হুমায়ূন আহমেদের কোথাও কেউ নেই বইটি কিনেছেন ঢাকা জজ কোর্টের সাংবাদিক হীরক পাশা। তিনি জানান, নিজের পছন্দের বিষয় ইতিহাস ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণের বেশ কিছু বই কিনেছেন তিনি। স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা, ছেলে আবরার ও ছোট মেয়ে আরিফা কিনেছে যথাক্রমে ধর্মীয় বই, নাসিরুদ্দিন হোজ্জার গল্প ও ছোটদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, মেলার শেষ দিকে প্রচুর পাঠক এখন তালিকা ধরে ধরে বই কিনছেন। এ ধরনের পাঠক-ক্রেতাই এখন বেশি। সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় বই ক্রয়ের দিক থেকে পাঠকদের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে।

বেচাকেনার হালচাল নিয়ে মৃদুল প্রকাশনীর প্রকাশক এম সহিদুল ইসলাম বলেন, এখন মেলার অন্তিম সময় চলছে। বলা চলে বই বিক্রির মোক্ষম সময় এখনই। আমরা পাঠকদের চাহিদা অনুযায়ী বই বিক্রি করছি। পরিবারের সবাই এমনকি বইপ্রেমীরা বুক লিস্ট ধরে ধরে এখন বই কিনছেন।

বইয়ের চাকচিক্য ও অধিক মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাগজের মূল্য তো অত্যধিক। তা ছাড়া কাগজের ওপর শুল্কও কমানো হচ্ছে না। বই লেখা, ছাপানো, মুদ্রণ খরচ কিন্তু কম নয়। আর চাকচিক্যের যে বিষয়টি বলছেন সেটি আসলে বই বিক্রির একটি পন্থাও বটে। কাগজ মানসম্মত না হলে অনেক পাঠক বই কিনতেও চায় না।

বইমেলার ২৬তম দিন সোমবার মেলা শুরু হয় দুপুর ১২টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এই দিনে নতুন বই এসেছে ২৪৬টি। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মেলায় এদিন মানুষের ঢল নামে। এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: আবুবকর সিদ্দিক এবং স্মরণ: আজিজুর রহমান আজিজ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ফরিদ আহমদ দুলাল ও কামরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মামুন মুস্তাফা, তৌহিদুল ইসলাম, মো. মনজুরুর রহমান ও আনিস মুহাম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি আসাদ মান্নান।

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক সরকার আবদুল মান্নান, কবি ইউসুফ রেজা, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক দিলওয়ার হাসান এবং কথাসাহিত্যিক মোস্তফা তারিকুল আহসান।

বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চে বিকেল ৫টায় সাম্প্রতিক বাংলা কবিতা বিষয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন সঞ্জীব পুরোহিত, তারেক রেজা, জাহিদ সোহাগ, আফরোজা সোমা, আহমেদ শিপলু, রাদ আহমদ এবং সৈয়দ জাহিদ হাসান। সঞ্চালনা করেন ফারহান ইশরাক ও খালিদ মারুফ।

এ ছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মুহাম্মদ সামাদ, শামীম রেজা, রহিম শাহ, নভেরা হোসেন এবং ইমরান পরশ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ম ম জুয়েল, আরিফ হাসান, আলম আরা জুঁই, খোদেজা বেগম। এ ছাড়া ছিল জয়দুল হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সাহিত্য একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, মুশতাক আহমেদ লিটনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা কুঁড়ি’ এবং শাহিনুর আল-আমীনের পরিচালনায় সংগঠন ‘সম্প্রীতি সংস্কৃতি বন্ধন’-এর পরিবেশনা।

গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪

২০২৩ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য কথা প্রকাশকে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে মনজুর আহমদ রচিত একুশ শতকে বাংলাদেশ: শিক্ষার রূপান্তর গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশন, মঈন আহমেদ রচিত যাত্রাতিহাস: বাংলার যাত্রাশিল্পের আদিঅন্ত গ্রন্থের জন্য ঐতিহ্য এবং আলমগীর সাত্তার রচিত কিলো ফ্লাইট প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকসকে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খিকে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে। ২০২৪ সালের অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্যপ্রকাশ (প্যাভিলিয়ন), নিমফিয়া পাবলিকেশন (২-৪ ইউনিট), বেঙ্গল বুকস (১ ইউনিট)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারগুলো হস্তান্তর করা হবে।

আগামীকালকের বইমেলা

বইমেলার ২৭তম দিন মঙ্গলবার মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: সেলিম আল দীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন লুৎফর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রশীদ হারুন ও জাহিদ রিপন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ।

আরও পড়ুন:
প্রাণের বইমেলায় বিদায়ের সুর

মন্তব্য

জীবনযাপন
The Dogs of Khalishapur and Rakibs thesis is a fresh idea

‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’ একটি নতুন ভাবনা

‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’ একটি নতুন ভাবনা
লেখক চমৎকার বইটিতে নানা অণুগল্পের মধ্য দিয়ে ওই সব ভয়ঙ্কর কুকুর-মানবদের চরিত্র পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।

সাংবাদিক মুস্তফা মনওয়ার সুজনের ‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’ উপন্যাস নিয়ে কিছু কথা পাঠকদের সামনে তুলে ধরার খুব ইচ্ছা থেকেই লিখতে বসা। লেখকের সঙ্গে যোগাযোগে সুবাদে বইটি লেখার শুরুর আগেই আলোচনা এবং পরে পান্ডুলিপি থেকেই পড়ার সুযোগ হয়েছে। এতে আমাদের প্রত্যেকের জীবনের চিরন্তন সত্য কিছু ঘটনা উপস্থাপন করেছেন লেখক।

বইটি না পড়লে বা না ধরলে আসলে চমৎকার কিছু বিষয় জানা থেকে পাঠকরা বঞ্চিত হবেন। আমি মনে করি, বইটি সবারই পড়া উচিত।

আমরা যদি বইমেলা থেকে সবসময় শুধু বিখ্যাত লেখকদের বই কিনি আর পড়ি, তাহলে এতসব অসাধারণ লেখাগুলো অজানাই থেকে যাবে। নতুন লেখক বা আরেকজন হুমায়ুন আজাদ কিংবা হুমায়ূন আহমেদ অথবা তার চেয়ে বেশি কেউ সৃষ্টি হবে না।

তবে নিশ্চয়ই বলছি না, বিখ্যাত লেখকদের বই কেউ পড়বেন না। অবশ্যই কিনবেন এবং পড়বেন। পাশাপাশি নতুন লেখকদের ভালো ভালো বইগুলোও স্পর্শ করতে হবে, দেখতে হবে ভেতরে কী আছে। তবেই তারা লিখতে উৎসাহ পাবেন, নাহলে তো আর লেখক সৃষ্টি হবে না।

সাংবাদিক মুস্তফা মনওয়ার সুজনের খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস বইটি পড়ে মনে হয়েছে, এটি পড়ে পাঠক মজা পাবেন এবং ভাববেন।

বইটিতে লেখক যা বলতে চেয়েছেন তা অনেকটা এরকম- আমরা প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ দ্বারা পরিবেষ্টিত। এরমধ্যে কিছু মানুষ থাকে মুখোশ পরা, মুখোশটা মুখের সেঙ্গ খুব কৌশলে নিখুঁতভাবে মেশানো, সহজে দেখা যায় না। চারপাশটা ঘিরে তাদের বিচরণ। আমরা খুব বেশি খেয়াল না করলে বুঝতে পারি না, এদের ভেতর হিংস্র এক কুকুরের বাস। তারা প্রতি মুহূর্তে বন্ধুবেশে মানুষের চরম ক্ষতি করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে; অনেকটা অজগর সাপের মতো।

এ প্রসঙ্গে আমার বন্ধু শারমিন মিলির একটি গল্প বলি। গল্পটি এরকম- এক লোক একটি অজগর সাপ পোষেন। তো এক পর্যায়ে দেখা গেল, অজগরটি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সাপের মালিক বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন। তিনি চিকিৎসককে জানালেন, সাপটি এরকম ছিল না, তাকে খুবই ভালোবাসত, সবসময় তাকে জড়িয়ে ধরে থাকত, কিন্তু এখন যেন কেমন হয়ে গেছে! তখন চিকিৎসক হেসে বলেন, সাপটি আসলে তাকে কখনোই ভালোবাসেনি। সারাক্ষণ যে জড়িয়ে থাকত, সেটি আসলে প্রতি মুহূর্তে সে দেখত- তিনি সাপটির খাওয়ার উপযোগী হয়েছেন কি না। বইটি অজগরের গল্প বার বার মনে করিয়ে দিয়েছে।

লেখক চমৎকার বইটিতে নানা অণুগল্পের মধ্য দিয়ে ওই সব ভয়ঙ্কর কুকুর-মানবদের চরিত্র পাঠকদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। উপন্যাসটিতে রকিব, অংকন, কেয়া, ফাহমিদাসহ বেশ কিছু চরিত্র দাঁড়িয়েছে, সেসব বাংলা উপন্যাসে নতুন মাত্র। উপন্যাসটি পড়ে বারবার মনে হয়েছে- চরিত্র সৃষ্টির নয়া কারিগরের আবির্ভাব হলো।

আমি হলফ করে বলতে পারি, ‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’ পড়লে পাঠকের অবশ্যই অনেক ভালো লাগবে। বইটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক রকম আকর্ষণ বা মাদকতা আছে। অসাধারণ এক কাহিনী। আমি পাঠক হিসেবে, আহ্বান জানাই- পাঠকরা যেনো বইমেলায় গিয়ে মনোবৈজ্ঞানিক উপন্যাসটি সংগ্রহ করেন এবং সময় নিয়ে বইটি পড়েন।

‘খলিশাপুরের কুকুরগুলো ও রকিবের থিসিস’-এর প্রকাশক বেহুলা বাংলা। অমর একুশে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ২২৪ নম্বর স্টলে গেলেই মিলবে, এছাড়া রকমারি তো আছেই।

লেখক: সাংবাদিক

আরও পড়ুন:
ফটোগ্রাফি নিয়ে ভিন্নধর্মী বই ‘বিখ্যাত ছবির পেছনের গল্প’
বইমেলায় মীরাক্কেল খ্যাত রাশেদের ‘ফিলিং চিলিং’

মন্তব্য

জীবনযাপন
Rain attack at book fair

বইমেলায় বৃষ্টির হানা

বইমেলায় বৃষ্টির হানা হঠাৎ বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েন বইমেলার বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
মেলার প্রথম দিন থেকেই লেখকবৃন্দ বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া তাদের বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করে চলছেন। বৃহস্পতিবার ২২তম দিন পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২ হাজার ৪০৭টি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতা, উপন্যাস আর গল্পের বই।

বসন্তের শুরুতেই রাজধানীতে হয়েছে ঝুম বৃষ্টি। এর প্রভাব পড়েছে বইমেলায়ও। অবশ্য বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী না হওয়ায় তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি প্রকাশক এবং পাঠকদের।

অল্প সময়ের বৃষ্টিতে মেলায় বেশ কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলেও বইয়ের উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি হয়নি।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কায়সার হোসেন মামুন বলেন, ‘বৃষ্টি হয়েছে একবার, কিন্তু আমাদের বই গুটিয়ে ফেলতে হয়েছে দুইবার। মেঘ এমনভাবে জমেছে যেন মনে হচ্ছে তখনই বৃষ্টি চলে আসবে। এই মেঘ দেখে একবার, আরেকবার বৃষ্টি শুরু হলে বই গুটিয়ে ফেলতে হয়েছে। তবে বইগুলোর কভার ভালো হওয়াতে বৃষ্টির কারণে কোনো বইয়ের ক্ষতি হয়নি।’

বৃষ্টি সময় মেলা ঘুরে বেশ কয়েকটি স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধিদের বই গুটিয়ে ভেতরে বসে থাকতে দেখা যায়। কথা হলে তারা জানান, স্টল যিনি তৈরি করেছেন, তিনি ভালো করে করেননি। বৃষ্টির পর ছাদ চুইয়ে পানি নিচে পড়ছে। তাই বাধ্য হয়েই বই গুটিয়ে তাদের বসে থাকতে হচ্ছে।

মেলার ২২তম দিনে নতুন বই ৭৮টি

বৃহস্পতিবার মেলা শুরু হয় বিকেল তিনটায় এবং চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই এসেছে ৭৮টি।

বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: আসাদ চৌধুরী’ এবং ‘স্মরণ: জাহিদুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে মাহমুদা আকতার এবং কামরুল হাসান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দিলারা হাফিজ, বায়তুল্লাহ কাদেরী এবং মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. মুহম্মদ সামাদ।

প্রাবন্ধিকরা বলেন, কবি আসাদ চৌধুরী ষাটের দশকের বাস্তবতায় একজন ঐতিহ্যমগ্ন কবি। তার কবিতায় জাতীয়তা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকার-চেতনা নান্দনিক সৌকর্যে প্রতিভাত হয়েছে। যার ফলে তার কবিতার মাঝে শৈল্পিক বোধের সঙ্গে স্বজাতির প্রতি সুগভীর ভালোবাসা মূর্ত হয়ে উঠেছে।

বইমেলায় বৃষ্টির হানা
বৃষ্টিতে জবুথবু বইমেলার একটি স্টল। ছবি: নিউজবাংলা

আলোচকবৃন্দ বলেন, সদাবিনয়ী, মিষ্টভাষী কবি আসাদ চৌধুরী গণমানুষের কবি। বাহান্নর চেতনাকে বুকে ধারণ করে স্বদেশের প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে তিনি দেশ, সমাজ ও সংস্কৃতিকে চিত্রিত করেছেন তার কবিতায়।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহম্মদ সামাদ বলেন, ‘কবি আসাদ চৌধুরী ও জাহিদুল হক তাদের কবিতার মধ্য দিয়ে মানুষের প্রতি, দেশের প্রতি, ভাষার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। তাই তাদের কবিতা গণমানুষের ভাষ্য হয়ে উঠেছে।’

এদিন ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি শিহাব সরকার, শিশুসাহিত্যিক তপংকর চক্রবর্তী, গবেষক হোসনে আরা এবং কথাসাহিত্যিক মিলটন রহমান।

মেলায় নতুন কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের সংখ্যা বেশি

মেলার প্রথম দিন থেকেই লেখকবৃন্দ বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হওয়া তাদের বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করে চলছেন। বৃহস্পতিবার ২২তম দিন পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২ হাজার ৪০৭টি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতা, উপন্যাস আর গল্পের বই।

বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে ২২তম দিন পর্যন্ত কবিতার বই এসেছে ৭০৪টি, উপন্যাসের বই এসেছে ৩৬৪টি এবং গল্পের বই এসেছে ২৯৬টি।

বেশ কিছু প্রবন্ধ, ভ্রমণের বই, অনুবাদগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ইতিহাসের, মুক্তিযুদ্ধ, গবেষণাধর্মী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রাজনীতি, রচনাসমগ্র, শিশুসাহিত্য আর ধর্মের ওপর বই তো আছেই।

কবিতা, উপন্যাস ও গল্পের বই বেশি হওয়ার কারণ সম্পর্কে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নতুন লেখকরা তাদের লেখালেখি শুরুই করেন মূলত কবিতা, গল্প আর উপন্যাস দিয়ে। এটি এসব বই বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ।

‘তবে আমি এই বছর বুঝেছি, বিষয়ভিত্তিক বইগুলোর ভালো চাহিদা। তাই তরুণ লেখকদের জন্য আমাদের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন এসব বই নিয়েও লিখেন।’

বইমেলায় বৃষ্টির হানা
ছবি: ফোকাস বাংলা

উপন্যাসের ওপর উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হলো- সাব্বির জাদিদ লিখিত আজাদীর সন্তান, বইটি প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় লিখিত পরিণীতা, দেবদাস এবং পল্লিসমাজ, বই তিনটি পুনরায় প্রকাশ করেছে মিজান পাবলিশার্স। সাদাত হোসাইন লিখিত আগুনডানা মেয়ে, বইটি প্রকাশ করেছ অন্যপ্রকাশ।

প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাংলা একাডেমি প্রকাশিত মোহাম্মদ নুরুল হুদা লিখিত সংস্কৃতি ও সদাচার, পাঠক সমাবেশ প্রকাশিত স্বকৃত নোমান লিখিত বাংলায় ইসলাম: সহজিয়া ও রক্ষণশীল ধারা, অন্যপ্রকাশ প্রকাশিত আবুল কাসেম লিখিত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অর্থনীতি।

কবিতার উল্লেখযোগ্য বইসমূহ হলো- আগামী প্রকাশনী প্রকাশিত শামসুর রাহমানের প্রেমের কবিতা, ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ প্রকাশিত তানজীনা ফেরদৌস লিখিত প্রেমের হুলিয়া জারি হোক তোমার নামে, আসাদ চৌধুরী লিখিত ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত একাত্তরের ৭১ কবিতা।

মুক্তিযুদ্ধের ওপর উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো- সুজন বড়ুয়া লিখিত মুক্তিযুদ্ধের কিশোর উপন্যাসসমগ্র, রফিকুর রশীদ লিখিত মুক্তিযুদ্ধের গল্পসমগ্র, আরেফিন বাদল লিখিত এই যুদ্ধ সেই যুদ্ধ: মুক্তিযুদ্ধের গল্প এবং ড. মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম লিখিত মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর বগুড়া। ড. নুসরাত রাব্বি অনূদিত War Heroines Speak বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আজিজুর রহমান আজিজের লিখা অন্তরে বঙ্গবন্ধু বইটিও প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী।

ভাষা আন্দোলনের ওপর পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত লেখক-গবেষক বদরুদ্দোজা হারুনের লেখা ‘ভাষাশহিদ আবুল বরকত: নেপথ্যকথা’, প্রয়াত কবি বেলাল চৌধুরীর অমর একুশ বিষয়ক স্মৃতি ও ভাবনার সংকলন ‘একুশের স্মৃতি ও ভাবনা’, প্রথমা থেকে প্রকাশিত ভাষা সৈনিক মর্তুজা বশীরের লেখা ‘একুশের লেখা, একুশের আঁকা’ এবং ঝিঙেফুল থেকে প্রকাশিত গাজী হানিফের ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বইগুলো উল্লেখযোগ্য।

জীবনীগ্রন্থের মধ্যে শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান লিখিত বিজয় প্রকাশ থেকে প্রকাশিত কাজী নজরুলের কারাজীবন, অনুপম প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আবদুল্লাহ আল-মুতীর স্মৃতিকথা ও সাগরপারের চিঠি, পাঠক সমাবেশ থেকে প্রকাশিত আবদুল মমিন চৌধুরী/সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ শত মনীষীর জীবনী।

বইমেলায় বৃষ্টির হানা
ছবি: ফেকাস বাংলা

ইতিহাসের মধ্যে কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত জাহীদ রেজা নূরের ৬ দফা থেকে স্বাধিকার, জ্যোতি প্রকাশ থেকে প্রকাশিত মো. রফিকুল হক আখন্দের বিশ্বজুড়ে আখন্দ বংশ। আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ড. মুকিদ চৌধুরীর জার্মানি: অতীত ও বর্তমান উল্লেখযোগ্য।

রাজনীতি নিয়ে উল্লেখযোগ্য বই পুথিনিলয় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আতিউর রহমানের বাংলাদেশ নেতৃত্বের পরম্পরা ও উন্নয়ন। ভ্রমণবিষয়ক উল্লেখযোগ্য বই অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হাসনাত আবদুল হাইয়ের একদা সোভিয়েত ইউনিয়নে, ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত আশির আহমেদের জাপান কাহিনি (দশম খণ্ড)।

গবেষণাধর্মী বইয়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের দৈনিক ঘটনালিপির ওপর লিখা বই ‘একাত্তরের দিনপঞ্জি’, বিরূপাক্ষ পালের ‘বাংলাদেশের অর্থ খাত ও নীতি-অনীতির দ্বন্দ’, আনু মুহাম্মদের ‘অর্থশাস্ত্র’ উল্লেখযোগ্য।

অনুবাদগ্রন্থের মধ্যে ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত মুমিত আল রশিদের মাজার শরিফ-এর আর্তনাদ এবং কিংডম অফ সোলায়মান উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত কবি সুফিয়া কামালের স্মৃতিকথার অনুবাদ 1971: A Dairy, রিজিয়া রহমানের উপন্যাসের অনুবাদ An Untold Story এবং সেলিনা হোসেনের উপন্যাসের অনুবাদ The Glorious Afternoon উল্লেখযোগ্য।

শুক্রবারের আয়োজন

শুক্রবার মেলা শুরু হবে সকাল এগারোটায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। সকাল এগারোটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত চলবে শিশুপ্রহর।

সকাল সাড়ে দশটায় বইমেলার মূলমঞ্চে রয়েছে অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।

এ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মামুন হুসাইন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ওয়াসি আহমেদ এবং জাফর আহমদ রাশেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।

আরও পড়ুন:
একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বইমেলায় জনস্রোত

মন্তব্য

জীবনযাপন
Crowds at the book fair energized by the spirit of twenty one

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বইমেলায় জনস্রোত

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত বইমেলায় জনস্রোত ছবি: নিউজবাংলা
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য হাজার মানুষ আসেন। যারাই শহীদ মিনারে গিয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রায় সবাই প্রাণের মেলায় ঢুঁ মেরেছেন। স্টল-প্যাভিলিয়নে ঘুরেছেন, বই দেখেছেন এবং কিনেছেনও।

এ যেন মানুষের স্রোত। যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। এতো মানুষ একদিনে বইমেলায় এবার আর কোনো দিনই দেখা যায়নি। অবশ্য এই দিনটির জন্যই তো প্রাণের মেলা। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বলেই এদিন মেলা প্রাঙ্গণে সবচেয়ে বেশি পাঠক-দর্শনার্থী তথা বইপ্রেমীদের উপস্থিতি হয়ে থাকে। বুধবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

সকাল ৮টায় মেলার দ্বার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই পাঠকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল।

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য হাজার মানুষ আসেন। যারাই শহীদ মিনারে গিয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রায় সবাই প্রাণের মেলায় ঢুঁ মেরেছেন। স্টল-প্যাভিলিয়নে ঘুরেছেন, বই দেখেছেন এবং কিনেছেনও।

এদিন মেলার বেশি পাঠক ঢাকার বাইরের বলে প্রকাশক ও বিক্রয়প্রতিনিধিরা জানান। কেননা, শহীদ মিনারে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নানান অঙ্গ-সংগঠনের মানুষজন ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর জন্য যায়। ফলে এ দিন মেলায় এসে তারা পছন্দের লেখকের বই দেখেন এবং কিনেনও।

একুশ মানে বাঙালির ইতিহাসে একই সঙ্গে শোক আবার গৌরবের দিনও। তাই তো এদিনে বইয়ের মেলায় চেতনাসমৃদ্ধ এক অধ্যায়ও বলা যায়। এদিন মেলায় যে সংখ্যক মানুষ দেখা গেছে, সেই তুলনায় বই কেনার মানুষ না বলেও কেউ কেউ উল্লেখ করেন। চারুলিপি প্রকাশনীর ম্যানেজার মাসুম পারভেজ বলেন, ‘মেলায় দর্শনার্থী অনেক কিন্তু ক্রেতা কম। অনেকেই আসছেন বই দেখছেন, পড়ছেন, ছবি তুলছেন কিন্তু আলটিমেটলি কিনছেন না। এটা আমাদের জন্য তো দুঃখজনক বটেই, পাশাপাশি লেখক এবং সংশ্লিষ্টদের জন্যও নেতিবাচক একটা বার্তা।’

তবে ভিন্ন কথাও বলেছেন কেউ কেউ। অন্বেষা প্রকাশনীর শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘বইমেলায় যারাই আসবেন, তারাই যে বই কিনবেন এমনটা না। তবে এই যে বইমেলাকে মাথায় রেখে সবাই আসছেন এটা কিন্তু মেলার জন্য একটা ইতিবাচক দিক।’

মেলায় প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশু প্রহর হওয়ায় ওই সময়ে সিসিমপুরের পরিবেশনা থাকে। তবে শুক্র-শনিবারের বাইরে আজ ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে মেলাপ্রাঙ্গণে সিসিমপুর লাইভ শো অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সিসিমপুরের প্রিয় চরিত্র টুকটুকি, হালুম, শিকু, ইকরি উপস্থিত ছিল।

মেলায় ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বেড়েছে আজ। অন্যদিনের তুলনায় এদিন বিক্রি বেশি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা। এদিন অনেকেই বাংলা ভাষা, ভাষা সাহিত্য ও গবেষণামূলক বই কেনার জন্য বিভিন্ন স্টলে গিয়েছেন বলেও কোনো কোনো প্রকাশনার বিক্রয়প্রতিনিধিরা জানান। তবে অনেক পাঠক এই বিষয়ের ওপর বই পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে গাজীপুর থেকে আসা একজন শিক্ষক বলেন, ‘মেলায় বাংলা ভাষা তথা ভাষা সাহিত্যের ওপর লেখা বই খুব কম। তরুণ প্রজন্মকে আমাদের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানানোর জন্য গবেষণামূলক অনেক বই দরকার। এই বিষয়ে প্রকাশকরাই ভালো ভূমিকা রাখতে পারবেন।’

আজ মেলা একুশের চেতনায় বেশ উজ্জীবিত দেখা গেছে। ছেলে-মেয়েদের পোশাকেও ছিল একুশের ছোঁয়া। কালো আর সাদা রঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি কিংবা সালোয়ার-কামিজে তরুণ-তরুণীদের মেলামাঠে দেখতে বেশ প্রাণবন্ত আর উচ্ছ্বসিত দেখা গিয়েছিল। মেলাজুড়ে লেখক-পাঠক-দর্শনার্থী সবার সাজগোজেও প্রবলভাবে ফুটে উঠছে একুশের চেতনা। যেন এদিনে মেলায় আসতে পেরে নিজেদের ভিন্নভাবে জানান দিচ্ছিল পাঠকরা। বাংলা ভাষার গৌরবময় চেতনায় শামিল করেছেন নিজেদের। সব মিলিয়ে আজ একুশের দিন প্রাণের এই সাহিত্য মেলার ২৯ দিনের সেরা দিন একটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।

বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে জানায়, আজ মেলার ২১তম দিনে নতুন বই এসেছে ২৩৪টি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করতে দিনভর নানান কর্মসূচি পালন করে বাংলা একাডেমি। একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল ৮টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। স্বরচিত কবিতাপাঠে প্রায় ১৩৫ জন কবি কবিতা পাঠ করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন কবি শামীম আজাদ। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. সরকার আমিন। আরও বক্তৃতা দেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর।

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি গোলাম কিবরিয়া পিনু, শিশুসাহিত্যিক ওয়াসিফ এ খোদা, কথাসাহিত্যিক মাসউদ আহমাদ এবং শিশুসাহিত্যিক ইমরান পরশ।

আগামীকালকের বইমেলা

আগামীকাল বৃহস্পতিবার মেলার ২২তম দিনে দ্বার খুলবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ: আসাদ চৌধুরী এবং স্মরণ: জাহিদুল হক শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন মাহমুদা আকতার এবং কামরুল হাসান। আলোচনায় অংশ নেবেন দিলারা হাফিজ, বায়তুল্লাহ কাদেরী, খালেদ হোসাইন এবং মনি হায়দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন ড. মুহম্মদ সামাদ।

মন্তব্য

জীবনযাপন
Bangalore International Film Festival Jury Board Chief Bandhan

বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি বোর্ড প্রধান বাঁধন

বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি বোর্ড প্রধান বাঁধন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
১৫তম বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ১৫টি বিভাগে দেখানো হবে ৫০টির বেশি দেশের দুই শতাধিক চলচ্চিত্র। প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকা চলচ্চিত্রগুলো থেকে সেরা কাজ বাছাই করতে প্রধান বিচারক বাঁধনের সঙ্গে জুরি হিসেবে আরও থাকবেন রাশিয়ার নিনা কোচলেইভা, স্পেনের রোজানা আলোনসো, যুক্তরাজ্যের ক্যারি শনেই ও ভারতের সীতারাম।

ভারতের কর্ণাটক চলচ্চিত্র একাডেমি আয়োজিত ১৫তম বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল জুরি হচ্ছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। উৎসবটি কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে ২৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে চলবে ৭ মার্চ পর্যন্ত।

এ বিষয়ে অভিব্যক্তি জানিয়ে বাঁধন বলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক সম্মানের ও আনন্দের। ভীষণ সম্মানিত বোধ করছি। খুব উপভোগ্য একটি কাজ হতে যাচ্ছে বলেই মনে করছি।’

জানা গেছে, এই চলচ্চিত্র উৎসবের ১৫টি বিভাগে দেখানো হবে ৫০টিরও বেশি দেশের দুই শতাধিক চলচ্চিত্র। প্রতিযোগিতা বিভাগে থাকা চলচ্চিত্রগুলো থেকে সেরা কাজ বাছাই করতে প্রধান বিচারক বাঁধনের সঙ্গে জুরি হিসেবে আরও থাকবেন রাশিয়ার নিনা কোচলেইভা, স্পেনের রোজানা আলোনসো, যুক্তরাজ্যের ক্যারি শনেই ও ভারতের সীতারাম।

বাঁধন ও তার জুরিবোর্ড উৎসবের এশিয়ান সিনেমা কম্পিটিশন সেকশনে থাকা চলচ্চিত্রগুলো দেখে সেরা কাজ বাছাই করবেন। উৎসবে ভারতীয় ও কান্নাড়া চলচ্চিত্রের জন্যও প্রতিযোগিতা বিভাগ রয়েছে।

আর অফিশিয়াল জুরিদের পাশাপাশি এই উৎসবে চলচ্চিত্র সমালোচকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিপ্রেসি ও এশিয়াভিত্তিক সংগঠন নেটপ্যাক জুরিরাও থাকবেন।

বাংলাদেশের গুণী অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন এর আগে গত বছর ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ‘আই এম টুমরো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’ও জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

‘রেহানা মরিয়ম নূর’ দিয়ে মূলত আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান বাঁধন। ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসিত হয়। অন্যদিকে বলিউডের সিনেমা ‘খুফিয়া’তে অভিনয় করেও নজর কাড়েন তিনি। এর বাইরে ‘গুটি’ ওয়েব সিরিজে দুর্দান্ত অভিনয় করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

আরও পড়ুন:
বাঁধনকে ‘অল দ্য বেস্ট’ জানালেন অনুরাগ কশ্যপ
বাঁধনের জন্ম ১৯৮৩তে, ‘জীবন শুরু ২০১৭ সালে’
‘অক্টোপাস’ বাঁধনের বর্ণনায় ‘খুফিয়া’র টিজার
ড্রাগ ডিলার সুলতানা হয়ে আসছেন বাঁধন
নেটফ্লিক্সে বাঁধনের ‘খুফিয়া’ ঝলক

মন্তব্য

p
উপরে