সাংবাদিক শারমিন নিরা। বাসা মগবাজারের দিলু রোডে। সকাল থেকে অ্যাসাইনমেন্ট, রিপোর্ট তৈরির কাজে ব্যস্ত। জীবনসঙ্গী সাইফুর রাসেল সরকারি চাকুরে। সন্তানের দেখাশোনার কেউ নেই, তাই দিতে হয়েছে ডে কেয়ার সেন্টারে।
কিন্তু এটি খুঁজে পাওয়া সহজ কাজ ছিল না। কিলোমিটার ছয়েক দূরে নিকেতন এলাকায় একটি সেন্টারের খোঁজ পান এক সহকর্মীর কাছ থেকে। সেখানেই প্রায় পাঁচ বছর ধরে রাখছেন সন্তান অতল আনন্দকে।
নিরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেন্টারটিতে ছুটি হয় সন্ধ্যার আগে। কোনো কোনো দিন সাড়ে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তখন বাচ্চাকে আনার বিষয়টা কঠিন হয়ে যায়। রাসেলকে বলি, সে নিজে যায়, অথবা ব্যবস্থা করে।’
‘বাসার আশপাশে কোনো সেন্টার থাকলে অনেক ভালো হতো। বেইলি রোডে মহিলা সমিতিতে একটি খুঁজেও পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটার পরিবেশ দেখে আর দেয়া হয়নি।’
মিতা পাল ইংলিশ মিডিয়ামের একটি কোচিং সেন্টারে ক্লাস করাতেন। সন্তান জন্ম নেয়ার পর বাধ্য হন চাকরি ছাড়তে। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে অনলাইনে পেজ খুলে মেয়েদের ফ্যাশন আইটেম বিক্রি করে আয় করতে থাকেন।
মিতার মতো কর্মজীবী নারীদের সন্তান লালনপালনে চাকরি ছাড়তে হতো না যদি না দিনের বেলায় শিশু লালনপালনের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার সহজলভ্য হতো।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিসে ডে কেয়ার সেন্টার করার তাগাদা এসেছে একাধিকবার। তবু এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। এমনকি এ নিয়ে কর্মকর্তারা কিছু বলতেও চাইছেন না।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত মহাখালী ডে কেয়ার সেন্টারের কার্যালয়। ছবি: নিউজবাংলা
আড়াই কোটি মানুষের এই নগরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে চাহিদার তুলনায় সংখ্যাটি একেবারেই অপ্রতুল।
কেন মানসম্মত কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলা যাচ্ছে না, আর যেগুলো আছে, সেগুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা কেন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না- এই প্রশ্নে ডে কেয়ার সেন্টারের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কোনো কথাই বলতে চাইলেন না।
সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ফাতেমা ফেরদৌসীর কাছে প্রশ্ন রাখলে তিনি পাঠান অফিসের প্ল্যানিং শাখায়।
সম্প্রতি চালু করা দ্য ডেইলি স্টার-এর ডে কেয়ার সেন্টার। ছবি: নিউজবাংলা
সেই শাখায় যাওয়ার পর বেনুআরা নামের এক কর্মকর্তা কথাই বলতে চাইলেন না। ডে কেয়ার সেন্টার নিয়ে কী পরিকল্পনা, সে বিষয়ে কথা বলতে হলে তাদের মহাপরিচালক বরাবর দরখাস্ত দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বললেন, দরখাস্ত মঞ্জুর হলেই কেবল তিনি কথা বলবেন।
যে কয়টি ডে কেয়ার সেন্টার আছে, সেগুলোর মধ্যে যে যে সমস্যা আছে, তা হলো শিশুদের যত্নের মতো পর্যাপ্ত লোকবল ও সুযোগ-সুবিধা নেই। উন্নত বিশ্বে ডে কেয়ার সেন্টারে প্রাক-প্রাথমিকে পড়াশোনাও করা হয়। কিন্তু দেশে হাতে গোনা এক-দুটিতে আছে এই সুবিধা। আবার সেন্টারগুলো এমন সময়ে বন্ধ হয়, যে সময়ে বাবা-মায়ের পক্ষে সন্তানকে নিয়ে যাওয়া কঠিন, আবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে দুদিন, কিন্তু সব অফিসে ছুটি দুদিন নেই।
গুলশানের একটি ডে কেয়ার সেন্টার ‘এবিসি ডে কেয়ার’ এ শিশুরা। ছবি: সংগৃহীত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল বাবা-মায়ের স্বস্তি দিতে নয়, একসঙ্গে অনেক শিশুর বেড়ে ওঠা তাদের সামাজিকীকরণের জন্যও জরুরি। এতে অর্থ খরচ হলেও বিকল্প হিসেবে ঘরে সহকারী রাখার যে খরচ, সে তুলনায় কম।
যা কিছু আছে তার মান নিয়েও আপত্তি
ডে কেয়ার সেন্টার পাওয়া সহজ নয়। আবার পাওয়া গেলেও মান নিয়ে আছে প্রশ্ন।
যেমন: শারমিন নিরা তার বাসা থেকে খানিক দূরে বেইলি রোডে মহিলা সমিতির একটি ডে কেয়ার সেন্টার খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার পরিবেশ দেখে আর দেয়া হয়নি।
এই সেন্টারটিতে মূলত নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানদের রাখা হয়। এমন একটি সেন্টারে অতলকে রাখা হলে তার মানসিক বিকাশের কী হবে, এ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন এই সংবাদকর্মী।
পরে নিকেতনেরটা কীভাবে খুঁজে পেলেন?
নিরা বলেন, ‘যখন কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তখন এক কলিগকে বললাম। দিদিই খোঁজ দিলেন এটির। তার বাচ্চাও এখানে থাকত।’
গুলশানে ‘এবিসি ডে কেয়ার’ এ একটি শিশু কাগজ দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড বানাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
নিরার পরিবারের একটি প্রাইভেট কার আছে, যে কারণে বাচ্চাকে আনা-নেয়া করা খুব একটা কঠিন হয় না। যদি না থাকত- এই প্রশ্নে নিরা হেসে বলেন, ‘জানি না, খুব কঠিন হতো।’
আরেক কর্মজীবী নারী উর্মি দে। সরকারি কর্মকর্তা। বাড়ির পাশে ডে কেয়ার সেন্টার খুঁজে না পেয়ে বাড়ি থেকে আনিয়েছেন সহকারী।
তিনিও বললেন, মানসম্পন্ন ডে কেয়ার সেন্টার থাকলে তার এবং সন্তান রূপকথার জীবনটা আরও সহজ হতো।
উর্মি বলেন, ‘আমি হাতিরঝিলের পাশে মহানগর এলাকায় থাকি। সেখানে তো নেইই, অফিসের আশপাশেও ভালো কোনো ডে কেয়ার নেই। একটা ছিল, সেখানে পরিবেশ ভালো লাগেনি। বাচ্চার দেখাশোনার ব্যাপারে যত্নশীলতা কম মনে হয়েছে।
‘গুলশানে যেগুলো আছে সেগুলোর খরচ আকাশছোঁয়া। তাই বাধ্য হয়ে এভাবে বাসায় রাখতে হয়।’
বাসায় সহকারী রেখে মানসিক যাতনা
বাসায় সহকারী রেখে দূর থেকে সব পর্যবেক্ষণ করা সহজ নয়। শিশুর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে জন্য পুরো বাসা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এনেছেন উর্মি। কিন্তু এর ঝক্কি ঝামেলা কম নয়।
তিনি বলেন, ‘অফিস থেকে এভাবে সিসি ক্যামেরায় বাচ্চাকে দেখাও অনেক চাপের। সব সময় অন রাখা সম্ভব হয় না। এই ফাঁকে বাসার মেয়েটি আমার বাচ্চাকে দারোয়ানের কাছে রেখে বাসায় চলে গিয়েছিল। দারোয়ান ফোন করায় দৌড়ে বাসায় যেতে হয়েছে অফিস থেকে।
‘আমার ওয়াশরুমেও সিসি ক্যামেরা রাখতে হয়েছে। এটা একটা মায়ের জন্য অনেক দুঃখজনক। কারণ ওয়াশরুমে নিয়ে আমার বাচ্চাকে মারধর করেছিল মেয়েটি। একটাই বাচ্চা আমার। সেই ট্রমা থেকে আমি আর বাচ্চা নেয়ার সাহস পাইনি।’
নানা সময় ঘরে একা থাকা গৃহকর্মীর হাতে শিশুর নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে নির্মম পিটুনির বিষয়টি ধরা পড়ার পর একাধিক গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে যেসব বাসায় এই পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নেই, সেসব বাসায় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক কষ্টের বিষয়টি জানাও যায় না।
অভিজাত এলাকায় মানে ভালো, কিন্তু অর্থের চাপ
গুলশানের একটি ডে কেয়ার সেন্টার এবিসি ডে কেয়ার। সেখানে নিজের দুই সন্তানকে রাখেন কর্মজীবী মা তানজিদা ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সার্ভিস খুব ভালো। প্রি-স্কুল রয়েছে। তবে খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি। তবু কোনো উপায় তো নেই আর।
‘সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাচ্চাকে রাখি। বাসার কাছে হওয়ায় এবং অফিসের দূরত্বও কম হওয়ায় আমার অসুবিধা হয় না। কিন্তু যাদের বাসা দূরে এবং এ রকম বেসরকারি ডে কেয়ারের খরচ বহন করাও অনেকের জন্য কঠিন। আমি মনে করি, প্রতিটি অফিসেই ডে কেয়ার থাকা উচিত। ডে কেয়ারের সংখ্যা বাড়লে মেয়েরা আরও কর্মমূখী হবে।
‘সরকারিভাবে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো দরকার। কারণ বাসায় যখন অপরিচিত কারও কাছে সন্তানকে রেখে আসা হয়, সে ক্ষেত্রে মা অনেক অনিরাপত্তায় ভোগেন। সেখানে সুযোগ সুবিধাসহ এবং সামর্থ্য অনুযায়ী ডে কেয়ারে রাখতে পারলে মায়েরা নিশ্চিন্তে কাজে যেতে পারবেন। কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের সংখ্যা আরও বাড়বে।
‘শুধু বাচ্চাকে নিরাপদে রাখতে না পারার অনিশ্চয়তার জন্য চাকরি ছাড়ার কথা ভাবতে হবে না।’
এবিসি ডে কেয়ারের স্বত্বাধিকারী সোনিয়া আকরাম জানান, ঢাকায় তাদের পাঁচটি শাখা আছে, যার তিনটিই গুলশানে। বাকি দুটির একটি ধানমন্ডি ও একটি তেজগাঁও এলাকায়।
চাহিদা থাকলেও আর বাড়াচ্ছে না কেন- এমন প্রশ্নে এবিসির কো-অর্ডিনেটর লীনা ইসলাম বলেন, ‘এটা একদমই আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা বাইরে প্রকাশ করতে চাই না।’
সময়সীমা ও সপ্তাহে দুই দিন ছুটিও এক সমস্যা
মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত মহাখালী ডে কেয়ারে গিয়ে দেখা গেল, শিশুরা খেলা করছে। সেখানকার শিক্ষক সাথী বৈদ্য জানান, ৪ মাস বয়সী থেকে শুরু করে ৬ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের তারা রাখেন।
কিন্তু সেখানে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাখার সুযোগ, যেটি কর্মজীবী নারীর জন্য সংকট তৈরি করেছে। কারণ, অফিস সময় কারও ৫টা, কারও ছয়টা পর্যন্ত। ছুটি শেষে এখানে আসতে আসতেই ডে কেয়ার সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়।
এখানে মূলত যাদের আয় কম, তাদের বাচ্চাদেরই দেখা গেল। সাথী বৈদ্য জানান, বাবা-মার আয় এবং বাচ্চার বয়সের ওপর নির্ভর করে সরকার ভর্তুকিও দেয়। বাবা-মা মায়ের সম্মিলিত আয় ৫০ হাজার টাকার কম হলে এই সুবিধা পাওয়া যায়।
তবে শুক্র ও শনিবার এর সঙ্গে সরকারি সব বন্ধের দিন সেন্টারটি বন্ধ থাকে। কিন্তু বেসরকারি বেশির ভাগ অফিসেই সাপ্তাহিক ছুটি এক দিন। ফলে বাকি এক দিনের দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
শনিবার মায়েরা বাচ্চাকে কোথায় রাখবে- এই প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারলেন না সাথী।
আধুনিক জীবনে ডে কেয়ার কেন জরুরি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডে কেয়ার পাশ্চাত্য সমাজের একটি ধারণা। যেন মায়েরা নিশ্চিন্তে তাদের সন্তানকে সেখানে রেখে কাজে যেতে পারে। আমাদের সরকারি নীতিমালায় অনুযায়ী প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই ডে কেয়ার রাখার নির্দেশনার কথা বলা হয়েছিল। তবে সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। সেক্ষেত্রে মনিটরিং করা হচ্ছে কি না বা কেন হচ্ছে না তার কোনো ব্যাখ্যা সরকার দিয়েছে বলে আমরা জানি না।’
তিনি বলেন, ‘একজন মা তার কর্মক্ষেত্রে বা আশপাশে ভালো ডে কেয়ার পেলে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারবেন। পাশাপাশি অফিসে ডে কেয়ার থাকলে কাজের সময়টুকুতে সন্তানকে দেখাশোনার ব্যাপারটাও সহজ হবে।’
কেবল কর্মজীবী মায়েদের কথা ভেবেই নয়, শিশুদের সামাজিকীকরণের জন্যও এসব ডে কেয়ার সেন্টার জরুরি বলে মনে করেন এই শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘সব শিশুই যেন বাইরের জগতের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, অন্য শিশুদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার মানসিকতা যাতে তৈরি হয়, সে জন্যও দিবাযত্ন কেন্দ্র জরুরি।’
নির্বাচন কমিশন কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত (টিওটি) প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য সিইসি এ কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের উদ্দেশে করে বলেন, ‘এই ম্যাসেজটা আপনাদের দিতে চাই যে, আপনারা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে আইন অনুযায়ী নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। তা ছাড়া আমরাও আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব বা হুকুম দেব না। আপনারা ধরে রাখতে পারেন, রিলেভেন্ট টু ইলেকশন (নির্বাচন সম্পর্কিত) যে আইন প্রচলিত আছে সেই আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। একটা সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারার চেষ্টা করবেন।’
সিইসি বলেন, আমরা কামনা করি, আপনারা আইনসম্মতভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে (প্রফেশনালি) কাজ করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই দেশের এই দুরবস্থার মূল কারণ হলো, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল, সেই জাতি তত সভ্য। সভ্য দুনিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সর্বস্তরের মানুষ আইন মেনে চলবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করবে। যে গন্ডির মধ্যে আমার কাজ থাকবে সেখানেই আমি আইনকে বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইব আপনারা আইনদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন।’
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন। সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের উপরে নির্ভর করে। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এই সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সাথে সমন্বয় করতে হবে। জেলার যে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে ওটার সাথে সমন্বয়। এই সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি করতে হবে। এই দায়িত্বটা আপনাদের কাঁধে নিতে হবে। যেকোনো ক্রাইসিস হলে আপনারা চেষ্টা করবেন শুরুতেই যাতে এটার সমাধান করা যায়।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, আমরা সাহসী হব, তবে অতি সাহসী না। অতীতে অতি উৎসাহী হয়ে অনেকে অনেক কিছু করেছেন। এবার এসব করা যাবে না।
তিনি বলেন, আগের প্রশিক্ষণ ভুলে গিয়ে এখন যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেটি নিতে হবে। আগের নির্বাচন আমরা সবাই মিলে নষ্ট করেছি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আপনাদের প্রতি ম্যাসেজ হচ্ছে সামনের নির্বাচন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সঠিক কাজ করবেন, ইসি আপনাদের সঙ্গে আছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক কোনো কাজ করলে সাংঘাতিক পেরেশানিতে পড়বেন। আর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য যা যা সহায়তা লাগে তা আমরা দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাহসের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। চাকরির মান-মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমাদের না করার কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনের একটা আবহ সৃষ্টি করতে হবে।’
মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সুশৃঙ্খল পরিবেশ ভালো নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। মোবাইল কোর্ট আয়নার মতো স্বচ্ছ হতে হবে। পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। এখন থেকে মোবাইল কোর্ট রেগুলার করতে হবে। এই নির্বাচনে যারা ভালো দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন মাঠে যারা আছেন তারা যেন তাদের আচরণবিধি মেনে চলেন। প্রশাসন কঠোরভাবে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাবে। এবারের নির্বাচনে সমন্বিতভাবে মাঠ প্রশাসন যে, একটা দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি তা আমরা দেখিয়ে দেব।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, তামাকমুক্ত সমাজ গঠনে জনমত ও জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা, ‘তরুণ চিকিৎসকদের ভূমিকা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, একজন ধূমপায়ী চিকিৎসক রোগীকে ধূমপানে বাঁধা দিলে তিনি গ্রহণ করবেন না। তাই চিকিৎসকদেরকে ধূমপান পরিহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় ও এসেম্বলিতে তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময়েও এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা তামাকমুক্ত বিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্মসূচি পরিচালক শেখ মোমেনা মনি, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, সিটিএফকে, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. ফারজানা রহমান মুনমুন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এই পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিমার বাইরে করা পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, ওষুধ, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে স্পষ্ট যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে কেবল ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা কার্গো ভিলেজে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি বলেছে, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, ফলমূল, হিমায়িত খাদ্য ও অন্যান্য রপ্তানিকারক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি চুক্তি ও অর্ডারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইএবি সভাপতি বলেন, আগুনের ঘটনাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে।
এ সময় কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধ শিল্পের জন্য আলাদা শীততাপনিয়ন্ত্রিত গুদাম স্থাপন, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ ও সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুদাম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ, গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
মন্তব্য