মানুষের বদলে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ অহরহ আমরা শুনতে পাই। মাসের পর মাস যেভাবে কাউকে দেখছেন, হয়ত হঠাৎ করেই তিনি হয়ে যেতে পারেন ‘অচেনা’। আচরণ থেকে শুরু করে বদলে যায় অনেক কিছুই।
মানুষের এই হঠাৎ ‘বদল’ বিস্ময়কর হলেও বিজ্ঞান বলছে, বদলে যাওয়াটা কোনো সহজ কিছু নয়। এখনকার ‘অচেনা’ মানুষটি হয়ত তার নিজ স্বভাবেই আছেন, তাকে চেনার ভুলটি করেছিলেন আপনিই।
তবে কিছু ক্ষেত্রে মানুষ সত্যিই বদলায়। আর সেই বদলানোর কাজটি সফল করতে দরকার ব্যক্তির সচেতন চেষ্টা এবং বেশ কঠোর পরিশ্রম। এই কাজটি খুব কম মানুষই পারেন, ফলে বেশিরভাগ মানুষ জীবন কাটিয়ে দেন একমুখী বৈশিষ্ট্য নিয়ে। তাদের সেই সহজাত বৈশিষ্ট্যকে অনেক সময় আমরা চিনতে ভুল করি বলেই পরে ভাবি, ‘মানুষটি বদলে গেছে’।
মানুষ কি আসলেই বদলে যেতে পারে?
জীবনে পরিবর্তন ঘটানো সহজ বিষয় নয়। সাধারণ আচরণগুলোকে অনুসরণ করা যে কোনো মানুষের জন্য অনেক সহজ। তবে এর মানে এই নয়, পরিবর্তন একেবারেই সম্ভব নয়। মানুষের স্বভাবের ওপর বেশ কিছু বিষয়ের প্রভাব আছে, এগুলো হলো- জেনেটিকস, ব্যক্তিত্ব ও প্রেরণা।
এমন অসংখ্য গল্প আছে যেখানে মাদকাশক্তি দূর করে কেউ স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন, চিড় ধরা সম্পর্ককে অত্যন্ত সুখী সম্পর্কে পরিণত করেছেন কিংবা স্বার্থপর কেউ নিজের জীবনকে সম্পূর্ণভাবে অন্যের মঙ্গলে উৎসর্গ করেছেন।
অন্তত ২০০টি গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষ তার ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনে সক্ষম হন। সুতরাং প্রশ্নটি আসলেই এটা নয় যে, মানুষ বদলাতে পারে কি না। আসল প্রশ্ন হলো, কেন কেউ বদলান, আর বাকিরা বদলান না।
প্রত্যেকেরই এমন ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে তারা উন্নতি করতে পারেন। তাই জীবনে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনে হোক বা নিজের জন্য অন্য কারো উপর নির্ভর করা হোক- পরিবর্তন আনা সম্ভব।
জৈবিকভাবে মানুষ কি বদলাতে পারে?
মনোবিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন সাইকোলজি টুডের মতে, মানুষ যা করে তার বেশিরভাগের পেছনে জিনগত বৈশিষ্ট্য দায়ী। আমরা যেভাবে চিন্তা করি তার ওপর পরিবেশের প্রভাব রয়েছে, তবে এমন জৈবিক কারণও আছে যা প্রায় ৭০ শতাংশ পার্থক্যের জন্য দায়ী।
অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন, পরিবেশের প্রভাবের চেয়ে জিনগত কারণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটি তত্ত্ব অনুযায়ী, যারা জৈবিক প্রাধান্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন তারা সেসব সামাজিক ধারা অনুসরণ করেন, যেগুলো তাদের জিনে গভীরভাবে প্রোথিত। এ জন্যই প্রবাদ রয়েছে, ‘একটি চিতা তার চামড়ার কালো ফোটা কখনও বদলাতে পারে না।’ এর অর্থ হল পরিবেশ কাউকে তার জৈবিক বৈশিষ্ট্যের বিপরীত কিছু ঘটাতে বাধ্য করতে পারে না।
সাইকোলজি টুডের নিবন্ধটিতে বলা হয়েছে যে, ‘জৈবিকভাবে প্রভাবিত’ ব্যক্তিকে ‘জৈবিকভাবে নির্ধারিত’-এর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। এর মানে হলো, সমাজে নেতিবাচক আচরণকে অপরিবর্তনীয় হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়।
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রোগ্রাম করা রয়েছে। তবু আশা করা যায়, সমাজ ও পরিবেশ নেতিবাচক আচরণকে পুনঃপ্রোগ্রাম করতে পারে এবং খারাপ অভ্যাস দূর করতে পারে।
ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ
গবেষকরা মানুষের ব্যক্তিত্বের পার্থক্যগুলোকে পাঁচটি প্রধান বৈশিষ্ট্যে ভাগ করেছেন। এগুলোকে প্রায়ই বড় পাঁচটি ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এগুলোর রয়েছে অভিজ্ঞতার জন্য উন্মুক্ততা, বহির্মুখীনতা, স্নায়বিকতা, বিবেক ও সম্মতি।
লোকজন কীভাবে চিন্তা করে এবং আচরণ করে তার ব্যাখ্যা এসব বৈশিষ্ট্য থেকে পাওয়া যায়। সাইকোলজি টুডেতে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, গবেষকরা হেক্সাকো নামের ষষ্ঠ ধাপের নতুন একটি মডেল তৈরি করেছেন। এটি মূল পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সততা ও নম্রতার বৈশিষ্ট্যকে যোগ করে।
পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের ভূমিকা
পরিবর্তনটি যদি একটি বড় পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়, যেমন এপিডি (অসামাজিক) বা এনপিডি (আত্মপ্রেম), সেক্ষেত্রে পরিবর্তন শুধু পেশাদার কারও তত্ত্বাবধানে সম্ভব। কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপিতে (সিবিটি) নেতিবাচক আচরণের পুনঃপ্রোগ্রামিং জড়িত। তবে শক্তিশালী চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধ থাকার পরও এপিডি ও এনপিডির মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়া চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।
এ পদ্ধতিগুলো সফল হলে আপনার ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আসবে। সেক্ষেত্রে বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা অবাক হয়ে ভাবতে পারেন, মানুষ সত্যিই কীভাবে বদলে যায়।
বড় ধরনের পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারকে বাদ দিয়ে, কীভাবে ও কী কারণে মানুষ পরিবর্তন হয় তার গবেষণা আশাব্যঞ্জক। ১৬ সপ্তাহের মধ্যে ‘একটি নতুন ব্যক্তিত্ব তৈরি’ করা সম্ভব কিনা ও সেটি কতটুকু তা দেখার একটি পরীক্ষা চালিয়েছিল আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এর ফল মোটামুটি মানের হলেও, একটি জিনিস লক্ষ্য করা গেছে। দেখা গেছে, তাদের পরিবর্তনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি যারা তাদের ‘বাস্তব জীবনে’ বা ব্যক্তিত্বের কয়েকটি দিকে সত্যিকারের পরিবর্তন করতে চেয়েছিল।
মানসিক স্বাস্থ্য ডিজঅর্ডার ও ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন
বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার এমন এক ব্যধি যেটাতে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। সাইকোলজি টুডের মতে, বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি একটি দীর্ঘস্থায়ী মানসিক অসুস্থতা, যার মধ্যে গুরুতর মেজাজ ও মানসিক অস্থিরতা অন্তর্গত।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা এই অসুস্থতাটিকে সাইকোসিস ও নিউরোসিসের সীমানায় বলে বর্ণনা করেন। উপসর্গগুলোতে হাত-পা কাটা ও আত্মহত্যার প্রচেষ্টার মতো নিজেকে আঘাত করার অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
ব্যক্তিত্বের পরিবর্তনের তীব্রতার কারণে, মনে হতে পারে, বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোনো আশা নেই। তবে ব্যধিটি প্রায়ই থেরাপি ও ওষুধ দিয়ে সফলভাবে চিকিত্সা করা যেতে পারে।
মানুষ কীভাবে বদলাতে পারে?
বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডারের সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষ সত্যিই বদলে যায়। বর্ডারলাইন ব্যক্তিত্ব গুরুতর মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে।
খাওয়ার ডিজঅর্ডার হলো আরেকটি সমস্যা যা ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন ঘটায়। সাইকোলজি টুডে খাওয়ার ডিজঅর্ডারকে মনস্তাত্ত্বিক অসুস্থতা হিসাবে বর্ণনা করেছে। যেটি অস্বাস্থ্যকর, বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
খাওয়ার ডিজঅর্ডার মানসিক অস্থিরতা নিয়ে আসে, কারণ এটি স্বাভাবিক পরিপাক চক্রকে বিপর্যস্ত করে। খাওয়ার ডিজঅর্ডারের চিকিত্সা করা চ্যালেঞ্জিং, তবে অনেক লোক থেরাপি ও সহায়ক গ্রুপে যোগ দেয়ার পর সফল হন।
পরিবর্তন করা কি নিরাপদ?
বাইপোলার ডিজঅর্ডার হলো এক ধরনের মানসিক ব্যাধি, যেখানে কারও ব্যক্তিত্ব দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। সাইকোলজি টুডের মতে, কিছু লোক এখনও বাইপোলার ডিজঅর্ডারকে ম্যানিক ডিপ্রেশন হিসেবে উল্লেখ করেন।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলোর মধ্যে হুটহাট মেজাজের পরিবর্তন রয়েছে, যা গুরুতর মানসিক অস্থিরতা ও হতাশার মধ্যে পরিবর্তিত হতে থাকে। ম্যানিয়ায় আক্রান্তের সময় বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভোগা ব্যক্তি মানসিক অস্থিরতা অনুভব করেন। এর মধ্যে রয়েছে বিরক্তি, রাগ, বিষণ্নতা এবং কখনও কখনও অতিউচ্ছ্বাসের মিশ্রণ।
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে থেরাপিস্টরা বাইপোলার ডিজঅর্ডার নির্ণয় করেন; বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভোগা ব্যক্তিদের জন্য থেরাপি এবং/অথবা ওষুধ দেয়া হয়।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারকে বাইপোলার ওয়ান বা বাইপোলার টু হিসাবে ভাগ করা যেতে পারে। সাইকোলজি টুডে বাইপোলার ওয়ানে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এমনভাবে ভাগ করেছে, যাদের অন্তত একটি ম্যানিক এপিসোড রয়েছে, যার কারণে হাসপাতালে নেয়ার দরকার হয়।
বাইপোলার ওয়ানে একটি বড় বিষণ্নতামূলক পর্ব থাকে, কিন্তু এটি স্থায়ী হয় না। যাদের বাইপোলার টু আছে তাদের হাইপোম্যানিয়ার সঙ্গে অন্তত দুই সপ্তাহ স্থায়ী বিষণ্নতার পর্ব থাকে। হাইপোম্যানিয়া হলো একটি হালকা বা মাঝারি ধরনের ম্যানিয়া, যার জন্য সাধারণত হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না।
আমরা কত দ্রুত বদলাতে পারি?
মনঃস্থিতি স্থায়ী হওয়ার সময় ও কত ঘন ঘন তা পরবর্তিত হয়- সেটা ব্যক্তিভেদে বদলায়। মেজাজের ওঠানামা ঘন ঘন ও বছরে অন্তত চারবার হলে একে র্যাপিড সাইক্লিং বলা হয়। চরম মানসিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে র্যাপিড সাইকেল সামলানো অত্যন্ত কঠিন।
মনোবৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাইপোলার ডিজঅর্ডার নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা যায়। থেরাপি ও ওষুধ দিয়ে এর চিকিৎসাও সম্ভব। বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্তদের সঙ্গে তাদের পরিবারকেও এ রোগের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়।
দীর্ঘমেয়াদি এ রোগীকে সামলানো কষ্টসাধ্য এবং মনে হতে পারে- আক্রান্ত ব্যক্তি আর বদলাবেন না। তবে, সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে বাইপোলার ডিজঅর্ডারের রোগীও বদলাতে পারেন।
নিজেকে বদলাতে চাইতে হবে
শুধু কথায় নয়, পরিবর্তনের সচেতন আকাঙ্ক্ষা থাকা জরুরি। মানুষ লেগে থাকলে সত্যিই পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। তবে অনেক সময় ধরে বদলাতে চাওয়ার পরেও একজনের আচরণ পরিবর্তিত না হলে তার বদলানোর সম্ভাবনা কম।
চিকিৎসকের সাহায্য নেয়ার পদক্ষেপ থেকে প্রমাণিত হয়, কারও কারও বদলে যাওয়ার ইচ্ছা সত্যিই আছে।
একজন পেশাদার থেরাপিস্ট বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সাহায্য করেন। তার উদ্দেশ্য থাকে রোগীর চিন্তাভাবনার ধরনে পরিবর্তন ঘটানো। পাশাপাশি রোগীকে মানসিক চাপ মোকাবিলা করার উপায় শিখতে সহায়তা করা।
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শোনালেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-এর প্রধান নভোচারী জোশেফ এম আকাবা। কথা ও গল্পে শিক্ষার্থীদের সামনে মহাশূন্যের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এই যশস্বী মহাকাশচারী।
রোববার ‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অসীম শূন্যতায় কাটানো সময়ের গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন নাসার এই নভোচারী।
জোশেফ এম আকাবা একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন শিক্ষক। তিনি অনেক বার মহাকাশ মিশনে অংশ নিয়েছেন। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ৩০৬ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এছাড়াও তিনি দুবার মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ অনুষ্ঠানটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নাসার একজন দক্ষ মহাকাশচারীর বাস্তব অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নাসার বিভিন্ন মিশন সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পেয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জোশেফ এম আকাবা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়, মহাকাশ অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সহ এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ডাটা অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর ডিন প্রফেসর মাহবুবুল আলম মজুমদার। আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান।
নাসার প্রধান মহাকাশচারী তার বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন যে আমি তাদের অনুপ্রেরণা। কিন্তু আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আপনাদের জ্ঞান অর্জনের তৃষ্ণা আমাকে অভিভূত করেছে।’
নভোচারী আকাবা তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘একমাত্র লেখাপড়ার মাধ্যমেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব।’
মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহীদের তিনি নাসার ওয়েবসাইট ভিজিটের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের উচিত নাসার ওয়েবসাইটটা ফলো করা। কারণ সেখানে অসংখ্য সুযোগ এবং পরামর্শ রয়েছে।’
জোশেফ আকাবা শিক্ষার্থীদের ভুলকে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ভুলকে ভয় পেলে চলবে না। ভুল মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।’
তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নিজ জীবন ও চ্যালেঞ্জের গল্প বলেন এবং কীভাবে সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছে সেসব তুলে ধরেন।
সুন্দর এই পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাসার প্রধান নভোচারী বলেন, ‘আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।’
নাসার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আকাবা বলেন, ‘নাসার লক্ষ্য হলো অজানা সীমানার বাইরে অনুসন্ধান চালানো। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অনেকদূর যেতে পারব। এজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
মহাকাশ নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কৌতূহল আর উচ্ছ্বাস দেখে আকাবা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অচিরেই এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ নাসার আর্টেমিস স্কোয়াডে অংশ নেবেন।’
পুরো অনুষ্ঠানে আকাবা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অফ কমিউনিকেশন্স-এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের মহাকাশ গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মহাকাশচারীদের তালিকায় একদিন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নাম থাকবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিন প্রফেসর আরশাদ এম চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারপারসন প্রফেসর সাদিয়া হামিদ কাজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
আরও পড়ুন:বন্য খেজুর থেকে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল।
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এ অধ্যাপক।
গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষিসম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’
উৎপাদিত ভিনেগারটির দেশের বাজারে প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে।
‘বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে, যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানীং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য।
‘এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়, তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহলকে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’
গবেষক আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে, রসের ঘনত্ব যত বেশি হয়, তত বেশি অ্যালকোহল ও অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।’
গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসভিয়ারের নামী সাময়িকী অ্যাপ্লায়েড ফুড রিসার্চে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।
ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয় জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলিম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।
এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মানব বসতির পৃথিবী, সূর্য ও বৃহস্পতি গ্রহ একই সরলরেখায় অবস্থান করবে আগামীকাল শনিবার। এদিন সারারাত বৃহস্পতি আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এই অবস্থানকে বলা হয় ‘জুপিটার্স অপজিশন’। এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের কৌতূহলকে বাড়িয়ে দেয়।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, শনিবার বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুক্রবার পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে বৃহস্পতি। এই দূরত্বে বৃহস্পতিকে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে।
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।
ধারণা করা হচ্ছে, এক বিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র প্রাণী ও জলজ অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে প্রবালটিতে। এর মাধ্যমে জলজ প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এই বিশাল প্রবাল। সদ্য আবিষ্কৃত এই জলজ বিস্ময়টি এখন পর্যন্ত জানা বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক প্রবাল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোরাল বা প্রবাল এক ধরনের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে, পুঞ্জিভূত হয়ে গঠিত হয় বিশাল প্রবাল প্রাচীর। সঙ্গে যুক্ত হয় শৈবাল, মৃত জলজ প্রাণীর দেহাবশেষ ও পলিপ। সব মিলিয়ে জীবন্ত প্রাণীর তৈরি এক আশ্চর্য স্থাপনা এই প্রবাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য। আজারবাইজানের বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর মধ্যেই, সমুদ্র তলদেশের অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈজ্ঞানিক অভিযান চালায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
অনেকটা দৈবক্রমেই প্রবালটি আবিষ্কার করেন ন্যাট জিও’র ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে স্বচ্ছ পানিতে ছেলেকে নিয়ে ডুব দেন তিনি। প্রথমে এটিকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মনে করে এগিয়ে গেলেও পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বুঝতে পারেন জীবন্ত প্রাণীদের তৈরি অসামান্য সৌন্দর্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।
গবেষকদের ধারণা, বিশ্বের বৃহত্তম জলজ প্রাণী নীল তিমির চেয়েও আকারে অনেকটা বড় এই প্রবাল।
এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে থাকা ‘বিগ মামা’ প্রবালটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিল। তবে নতুন সন্ধান পাওয়া প্রবালটি ‘বিগ মামা’র চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। ৩৪ মিটার দীর্ঘ প্রবালটি এতটাই বিশাল যে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাবে এটি।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য