ধরা যাক হিরো আলমকে আপনার প্রচণ্ড অপছন্দ, তার হেড়ে গলায় গাওয়া রবীন্দ্রসংগীতে গা জ্বলে যায়, পুলিশ ডেকে মুচলেকা নিলে খুশিতে আটখানা হন; কিন্তু তার পরও হিরো আলম কেন আপনার মাথায় গেঁথে থাকেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন হিরো আলমের কর্মকাণ্ড উঁকিঝুঁকি মেরে দেখেন, আর সুযোগ পেলেই তীব্র কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন?
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, যাকে পছন্দ নয়, তাকেও অনুসরণের পেছনে মানুষের বিশেষ মানসিক উদ্দীপনা কাজ করে। এর মানে হলো, যাকে আপনি চূড়ান্ত অপছন্দ বা ঘৃণা করছেন তিনিও আপনার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
অপছন্দের মানুষের কাণ্ডকারখানা সংগোপনে দেখার এই প্রবণতাকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘হেট ওয়াচিং’, বাংলায় যার অর্থ হতে পারে ‘বিদ্বেষমূলক দর্শন’। অক্সফোর্ড ল্যাঙ্গুয়েজের সংজ্ঞা অনুসারে, এটি এমন এক ধরনের কর্মকাণ্ড, যা মূলত উপহাস বা সমালোচনার মাধ্যমে আনন্দ পেতে মানুষ করে থাকে।
নেটফ্লিক্সে এমিলি ইন প্যারিস সিরিজটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার শেষ নেই। অথচ এ সিরিজটি নেটফ্লিক্সে সবচেয়ে বেশি দেখা সিরিজের অন্যতম। সিরিজটি আসার ২৮ দিনের মধ্যেই এটি দেখেছে ৫ কোটি ৪০ লাখের বেশি পরিবার। আর এই বিপুল ভিউকে গুরুত্ব দিয়ে সিরিজটির তৃতীয় সিজন শিগগিরই আসছে নেটফ্লিক্সে।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা অনেকেই ঘৃণা করতে প্রচণ্ড ভালোবাসি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উত্থানের সঙ্গে এই প্রবণতার অনেক বেশি বিস্তার ঘটেছে। যাদের মোটেই পছন্দ করি না, এমন অসংখ্য মানুষকে আমরা অনুসরণ করি। লাল চুলের কোনো টিকটকারকে সমালোচনায় ধুয়ে দিতে আমরা হাজির করি তার বিভিন্ন সময়ের ‘আপত্তিকর’ কর্মকাণ্ড।
ম্যানিলার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জে আর ইলাগান বলছেন, ‘দূর বা কাছ থেকে ঘৃণা করার এই প্রবণতা সব সময়েই ছিল। তবে এখন আমরা যে ধরনের ঘৃণা নিয়ে বেশি কথা বলছি, সেগুলো মূলত পাবলিক কন্টেন্ট, পাবলিক পারসন এবং এ ধরনের আরও বেশ কিছু বিষয়কেন্দ্রিক।’
ইলাগানের মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগে ঘৃণামূলক অনুসরণ একটি সাম্প্রতিক প্রবণতা। এই প্ল্যাটফর্মগুলো সুপরিচিত ব্যক্তিত্বদের প্রতি ঘৃণা উদ্গিরণের পথ সহজ করে দিয়েছে।
তিনি বলছেন, ‘বিষয়টি বেশ বিরক্তিকর অনলাইন বন্ধুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। বিরক্তিকর হলেও আপনি নিয়মিত তাদের ওপর চোখ রাখেন। মনে মনে ভাবেন- ওরা বিশেষ কিছু হয়ে যাননি। তার পরও তাদের ওয়ালে স্ক্রল করা ঠেকিয়ে রাখতে পারেন না।’
বিরক্তিকর মনে করেও কেন আমরা এটা করি? বিদ্বেষমূলক দর্শন এবং ঘৃণামূলক অনুসরণে কেন এত আসক্তি? এমন প্রশ্নে ইলাগান বলছেন, এই আসক্তির সঙ্গে মানুষের জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক বিভিন্ন কারণের গভীর সংযোগ রয়েছে। কাউকে ঘৃণার পেছনে লুকিয়ে আছে গভীর মানসিক আনন্দ।
জৈবিকভাবে ঘৃণা মন ভালো রাখে!
ইলাগান বলছেন, ঘৃণা, ভালোবাসা ও উপভোগ হলো শক্তিশালী মানসিক প্রতিক্রিয়া। কখনও কখনও সত্যিকারের হুমকির অনুপস্থিতিতেও মানুষ শক্তিশালী মানসিক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়। এ সময় মস্তিষ্কের মাধ্যমে নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসৃত হয়ে থাকে।
এই নিউরোট্রান্সমিটার সাধারণত সেরোটোনিন, ডোপামিন এবং অক্সিটোসিন। সাধারণভাবে এরা ‘সুখী হরমোন’ হিসেবে পরিচিত, যা ইতিবাচক অনুভূতির জন্ম দেয়। বিশেষ পরিস্থিতিতে ঘৃণাও আমাদের মস্তিষ্কে ভালো অনুভূতির জন্ম দিতে পারে। যেমন ২০২০ সালে লকডাউনের সময় বেশ কয়েকটি দেশে নেটফ্লিক্সের রিয়েলিটি শোর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। ঘরবন্দি অবস্থায় অনেকে মানসিক আমোদের জন্য এ ধরনের অনুষ্ঠানের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন।
কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, দৃশ্যত অপ্রীতিকর হলেও মানুষ কোনো আবেগ অনুভবে সক্ষম হলে নিজেকে সুখী ভাবতে থাকে। যেমন, ফেসবুকে কোনো উদ্ভট মিম দেখে মেজাজ খিঁচড়ে যাওয়ার পর হাতের ফোনটি দেয়ালে ছুড়ে মারার পর বেশ ভালো বোধ করে মানুষ।
এই একই কারণে বিষাক্ত ইতিবাচকতা শেষ পর্যন্ত মনের জন্য কিন্তু বিষাক্ত। কোনো কিছু খারাপ লাগলে সেটি প্রকাশ না করা মানে হলো, নিজের আবেগকে গলা টিপে দমন করা। আর তাই কাউকে ভালো না লাগলে তার মিথ্যা প্রশংসায় মেতে ওঠার কোনো কারণ নেই।
আমরা অন্যের সঙ্গে নিজেদের তুলনা পছন্দ করি
ইলাগান বলেন, বিদ্বেষমূলক দর্শন বা ঘৃণামূলক অনুসরণের ক্ষেত্রে আমরা মানসিকভাবে অনুসরণকারীর সঙ্গে নিজেদের তুলনায় উৎসাহী হই। এর ফলে মনের মধ্যে ভালো বা খারাপ অনুভূতি জন্ম নিতে পারে।
তিনি বলেন, নাটক বা চলচ্চিত্রের চরিত্রগুলোর সঙ্গে হরহামেশা আমরা এই তুলনা করে থাকি। তবে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। কারণ হিসেবে ইলাগান বলছেন, মানুষ সহজাতভাবে ভয়ারিস্টিক। ভয়ারিস্টিক বৈশিষ্ট্যের মানুষ অন্যের দুঃখ-যন্ত্রণা বা বিপদগ্রস্ত অবস্থায় আনন্দিত হয়। এমনকি অন্যের যৌনতা বা নগ্নতা দেখে নিজেও যৌন আনন্দ অনুভব করে।
ইলাগানের মতে, অন্যের সঙ্গে দুভাবে আমরা নিজেদের তুলনা করে থাকি। এর মধ্যে ঊর্ধ্বগামী তুলনা হলো, যখন আমরা নিজেদের তুলনায় আপাতদৃষ্টে উচ্চ অবস্থানের কারও সঙ্গে নিজেকে মেলাই। এটি ঈর্ষাকে উসকে দিতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত ঘৃণার দিকে ধাবিত হয়। আমাদের মুখ থেকে তখন বের হতে পারে, ‘ওহ, উনি খুব ভালো করছেন? ঠিক আছে, তবে তিনি যা করছেন আমার তা পছন্দ নয়।’
আবার আপাতদৃষ্টে ‘নিম্ন’ অবস্থানে থাকা ব্যক্তির সঙ্গেও আমরা নিজেদের তুলনা করি। ফেসবুক বা টুইটারে তাদের পোস্ট আমাদের মনে বিরক্তি বা ঘৃণার জন্ম দেয়। এই ঘৃণা একই সঙ্গে আমাদের মনে নিজেদের ‘ভালোত্বের’ অনুভূতি তৈরি করে। বিষয়টি ঠিক কোনো ট্রেনের ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখার অনুভূতির মতো। দেখতে কষ্ট হয়, কিন্তু ওই ট্রেনে না থাকা নিয়ে মনে স্বস্তিও কাজ করে।
ঘৃণা সামাজিক বন্ধনও বাড়ায়
ঘৃণা সব সময় বিচ্ছিন্নতা বাড়ায়, সেটি কিন্তু বলা যাবে না। হিরো আলমকে নিয়ে নিজের মনোভাব জানাতে ফেসবুকে কতবার স্ট্যাটাস দিয়েছেন একবার ভাবুন। হতে পারে তাকে আপনি পছন্দ করছেন না, কিন্তু সেই বিদ্বেষ প্রচার করতে আপনি কোনো না কোনোভাবে ফেসবুকেই যাচ্ছেন। আপনার স্ট্যাটাসে বন্ধুরা কী প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, সেটাও দেখছেন মনের আনন্দ নিয়ে।
আবার ধরুন হাওয়া সিনেমা ভালো লাগেনি। ওই সিনেমার দুর্বলতাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তুলে ধরে বন্ধুদের সমর্থন পেতে তাদের আপনি যেতে বলছেন সিনেমা হলে।
ইলাগান বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি, একসঙ্গে মিলেমিশে কোনো মানুষকে ঘৃণা করা বেশ মজাদার। আপনাদের একজন সাধারণ শত্রু আছেন এবং এটি আপনারা সবাই মিলে বলতে পারছেন।’
এ কারণেই সবচেয়ে বাজে চলচ্চিত্রের অভিযোগ তুলেও লোকজন দ্য রুম দেখতে বানের পানির মতো সিনেমা হলে ছুটে গেছে এবং মুভি চলার সময় পর্দায় দল বেঁধে চামচ ছুড়ে মেরেছে।
নৃতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদরাও মনে করেন, গালগল্প এক ধরনের আঠার মতো, যা সমাজকে একত্রিত রাখে। এ কালে এর মাত্রা অনেক প্রকাশ্য হয়েছে। কিছু লোক তাদের ঘৃণার প্রকাশকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক বেশি ‘দর্শনীয়’ করে তুলতে চান, যাতে বন্ধুরাও এতে যোগ দিতে পারেন।
বিদ্বেষমূলক দর্শন বা ঘৃণামূলক অনুসরণ কি খারাপ?
ইলাগানের মতে, দুই ধরনের বিদ্বেষী মানুষ রয়েছেন। কেউ কেউ সত্যিকারের খারাপ বিষয়বস্তুতে আহত হয়ে সেটি ঘৃণা করেন। আবার এমন মানুষও আছেন, যারা বিষয়বস্তু যা-ই হোক না কেন, ঘৃণার উপাদান খুঁজে পান।
‘আপনি প্রথম ধারাটির মানুষ হলে চিন্তার কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে আপনার ঘৃণা যৌক্তিক।’
ইলাগান বলছেন, ‘কখনও কখনও লোকজন অনলাইনে যা করেন সত্যিই তা বেশ হাস্যকর। এ ক্ষেত্রে সমালোচনার মুখে পড়ার যৌক্তিক কারণ থাকে। তাই কোনো কিছু পোস্ট করার আগে নিজের সক্ষমতা ও পরিস্থিতি জেনেবুঝে নিন।’
মাত্রা ছাড়া ঘৃণা বা বিদ্বেষ সম্পর্কেও সতর্ক করছেন ইলাগান। তিনি বলছেন, ‘ঘৃণার প্রকাশ নিজের কতটা কাজে আসছে সেটি বোঝাও জরুরি। আপনাকে বুঝতে হবে, নিজের খারাপ লাগা প্রকাশ করে একটু স্বস্তি পেতেই এটা করছেন, নাকি অপছন্দের ব্যক্তিকে একেবারে খারিজ করে দিতে চাইছেন।’
ক্রমাগত ঘৃণা ছড়ানোর কারণে শেষ পর্যন্ত আপনি নিজেই একজন ‘ঘৃণিত ব্যক্তিতে’ পরিণত হতে পারেন। আপনার সব কথাই হয়ে পড়তে পারে অযৌক্তিক। তাই নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য এমন অস্বাস্থ্যকর অবস্থা সম্পর্কেও সতর্ক থাকা জরুরি।
সর্বশেষ কথা হলো, বিদ্বেষপ্রবণতা মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। মন ঝরঝরে রাখতে কখনও কখনও মৃদুমন্দ ঘৃণার দাওয়াই হয়ে উঠতে পারে অতুলনীয়।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে “জুলাই ২০২৪: বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান” শীর্ষক এক সেমিনার আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ বৃহস্পতিবার বিভাগীয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহার সভাপতিত্বে সেমিনারে জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, জুলাই শুধু একটি গণ-অভ্যুত্থান নয়, বরং এটি বৃহৎ পরিবর্তনের একটি সম্ভাবনার প্রতীক। এর মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, একারণে কাজে-কর্মে, চলনে-বলনে সর্বত্র তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল গোটা একটি শহর। রোমান সাম্রাজ্যের ওই শহরের নাম ‘আয়নারিয়া’। সে ১৮০ সালের কথা। প্রায় দুই হাজার বছর পর এসে হারিয়ে যাওয়া শহরটির সন্ধান মিলেছে। বহু পরিশ্রম করে সাগরতলে শহরটি খুঁড়ে বের করেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। পর্যটকেরা এখন ডুব দিয়ে দেখে আসতে পারেন শহরটির প্রাচীন সব নিদর্শন।
পানির নিচে খুঁজে পাওয়া শহরটির অবস্থান ইতালির ইসকিয়া দ্বীপের উপকূলে। ডুবসাঁতার ছাড়াও তলদেশে কাচ লাগানো নৌযানে চেপে শহরটির রোমান স্থাপনাগুলোর ধ্বংসাবশেষ দেখা যাবে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে রয়েছে রোমানদের ব্যবহৃত বড় পাত্র, মোজাইক, মুদ্রা, একসময় সাগরের তীরে গড়ে তোলা বাসাবাড়ির অংশ—এমনকি রোম সাম্রাজ্যের বাসিন্দাদের তৈরি কাঠের একটি নৌকাও।
শহরটির অস্তিত্ব নিয়ে প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় সত্তরের দশকে। ইসকিয়ার উপকূলে মাটির পাত্রের কিছু অংশ পেয়েছিলেন কয়েকজন ডুবসাঁতারু। তখন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা কিছু অনুসন্ধানও চালিয়েছিলেন। তবে কাজ এগোয়নি। পরে ২০১১ সালে স্থানীয় কয়েকজন নাবিক ও ইতিহাসপ্রেমী আবার অনুসন্ধান শুরু করেন। তাঁদের হাত ধরেই খোঁজ মেলে সাগরের তলদেশের ২ মিটার নিচে থাকা শহরটির।
খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫০ শতকের দিকে ইসকিয়া গ্রিক সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। পরে খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২ শতকে দ্বীপটি নিয়ন্ত্রণে নেয় রোমানরা। নাম দেওয়া হয় আয়নারিয়া। ধারণা করা হয়, ১৮০ সালে আগ্নেয়গিরির লাভায় তলিয়ে গিয়েছিল শহরটি। এরপর ধীরে ধীরে কালের গর্ভে হারিয়ে যায়।
এর আগে ৭৯ সালে অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংস হয়েছিল রোমান সাম্রাজ্যের পম্পেও নগরী। এই শহর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলেও আয়নারিয়ার ধ্বংসের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
ভারতের বিহারে ‘ডাইনি বিদ্যা চর্চার’ অভিযোগে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর দেহগুলো পুড়িয়েও দেওয়া হয়। তবে তাদের কাউকে জীবিত অবস্থায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করছে পুলিশ। গত রোববার রাতে পূর্ণিয়া জেলার তেতগামা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ণিয়া জেলার তেতগামা গ্রামটি মূলত ওরাঁও আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসতি। সদর পূর্ণিয়ার সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি পাঁচজনকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। তারা জীবিত অবস্থায় পুড়েছিলেন, নাকি মৃত্যুর পর আগুন দেওয়া হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, নিহত পরিবারের ১৬ বছর বয়সি এক কিশোর সেদিন বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়। সে আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল। পরে সে পুলিশকে খবর দেয় এবং চারজন প্রধান অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করে। এদের মধ্যে তিনজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসডিপিও শর্মা বলেন, চারজনের নাম এফআইআরে রয়েছে। তিনজনকে ধরা হয়েছে। তবে আমরা মনে করছি, পুরো গ্রামই হয়তো এ ঘটনায় জড়িত। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত বলছে, ‘ঝাড়ফুঁক’ বা লোকজ চিকিৎসা নিয়ে বিরোধ থেকেই এ হামলা হয়েছে। নিহত বাবুলাল ওরাঁও এসব চর্চা করতেন বলে জানা গেছে।
কয়েকদিন আগে একই গ্রামের রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারে একটি শিশুর মৃত্যু হয় এবং আরেকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপরই বাবুলালের পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
এ ঘটনার বিষয়ে বিরোধীদল আরজেডির নেতা তেজস্বী যাদব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। রাজধানীতে কেউ জবাবদিহির দায়িত্ব নিচ্ছে না। পূর্ণিয়া থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রাজেশ রঞ্জন বলেন, আমরা যখন মঙ্গলে যাচ্ছি, তখন এখানকার মানুষ ডাইনি সন্দেহে গণহত্যা চালাচ্ছে- এটা লজ্জার।
বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, বিহারে গরিব, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কেউই নিরাপদ নয়। এটি স্পষ্টত জঙ্গলরাজ।
পাকিস্তানের লাহোরে খাঁচা থেকে বেরিয়ে দেওয়াল টপকে এক নারী ও দুটি শিশুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে একটি পোষা সিংহ। পরে সেটির মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচ ও সাত বছর বয়সী শিশু দুটিসহ আক্রান্ত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জোহান শহরের একটি গ্রামের খামারবাড়ি থেকে সিংহটি পালিয়ে যায়। এরপর একটি গলির মোড়ে ওই নারী ও শিশুদের আক্রমণ করে।
শহরের নিরাপত্তা ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, লাফ দিয়ে একটি কংক্রিটের দেওয়াল পার হচ্ছে সিংহটি। এরপর পেছন থেকে এক নারীর ওপর আক্রমণ করে মাটিতে ফেলে দিয়েছে সেটি। তখন ওই খামারবাড়ি থেকে এক ব্যক্তিকে লাঠি হাতে দৌড়ে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
তিনি সিংহটির কবল থেকে ওই নারীকে রক্ষা করেন। লোকটির তাড়া খেয়ে ছুটে সামনের সড়কে গিয়ে শিশুদুটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি।
সিংহের আক্রমণে শিশুরা মুখমণ্ডল ও বাহুতে আঘাত পেয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)। তারা বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে বলে খবরে বলা হয়েছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে লাহোর পুলিশ জানিয়েছে, খামারবাড়িতে একটি উন্মুক্ত খাঁচা থেকে সিংহটি পালিয়ে যায়। পরে এটিকে ধরে নিয়ে আসেন এর মালিক। বন্য প্রাণীটিকে একটি গাড়িতে তুলে অন্য একটি জেলায় পালিয়ে যান তিনি।
লাহোর পুলিশ অপারেশনসের উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ ফয়সাল কামরান বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সিংহটিকেও ধরে এনে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিংহ পোষার বৈধ অনুমোদন ছিল না ওই ব্যক্তির। পাকিস্তানের বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে তার বিচার করা হবে। এতে তার সাত বছরের কারাদণ্ড কিংবা সাড়ে সতেরো হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
পাঞ্জাবের বন্যপ্রাণী ও পার্ক বিভাগের প্রধান রেঞ্জার সৈয়দ কামরান বুখারি বলেন, ‘আটক তিনজনকেই কঠিন সাজার মুখোমুখি হতে হবে। এভাবে বন্যপ্রাণী আটকে রাখা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।’
পাকিস্তানে বন্যপ্রাণী পোষা মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটিতে বন্যপ্রাণী পোষা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়, তবে তার জন্য অনুমোদন নিতে হয়। আর সিংহের মতো বড় কোনো বন্যপ্রাণী পুষতে হলে তা শহরের বাইরে করতে হবে বলে নিয়ম রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে কুখ্যাত খুনিদের একজনের চামড়ায় বাঁধানো একটি বইয়ের সন্ধান মিলেছে একটি জাদুঘরের কার্যালয়ে। ১৮২৭ সালে ইংল্যান্ডে সাফোকের পোলস্টিডে রেড বার্ন গুদামঘরে প্রেমিকা মারিয়া মার্টেনকে খুন করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন উইলিয়াম কর্ডার নামের এক ব্যক্তি। তার চামড়া দিয়েই বইটি বাঁধানো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাফোকের ময়সেস হল মিউজিয়ামে এই বই একইরকম অন্য আরেকটি বইয়ের সঙ্গে প্রদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
হেরিটেজ কর্মকতা ড্যান ক্লার্ক বলেছেন, এই বইগুলোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মূল্য আছে। তাছাড়া, মানুষের চামড়ায় বাঁধানো প্রথম বইটি জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রেখে তিনি কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান।
‘হরিবল হিস্টোরিজ’ রচনা সমগ্রের লেখক টেরি ডেয়ারি অবশ্য এই প্রত্নবস্তুগুলো বীভৎস বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এমন দুটো বই-ই তিনি পুড়িয়ে ফেলতে চান।
সাফোকের পোলস্টিডে ১৮২৭ সালের ওই খুনের ঘটনা জর্জিয়ান ব্রিটেনকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। তখন থেকেই ঘটনাটি বহু সিনেমা, বই, নাটক এবং লোকগীতির বিষয়বস্তু হয়ে আছে।
সবচেয়ে বেশি চাউর হয়েছে কর্ডারের সঙ্গে মার্টেনের প্রেমকাহিনীর সংস্করণ। এই কাহিনীতে বলা আছে, কর্ডার রেড বার্ন -এ দেখা করার জন্য আসতে বলেছিলেন প্রেমিকা মার্টেনকে।
সেখান থেকে পালিয়ে একটি শহরে গিয়ে তারা বিয়ে করবেন বলেও জানিয়েছিলেন কর্ডার। কিন্তু সেই রেড বার্নেই মার্টনকে গুলি করে খুন করেন কর্ডার এবং খড়ের গাদায় পুঁতে দেন লাশ।
১৮২৮ সালের ১১ আগস্ট কর্ডার ধরা পড়েন এবং প্রকাশ্যেই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তার মৃতদেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় এবং চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা হয় বই। সেই বইয়ে লিপিবদ্ধ ছিল কর্ডারের বিচারের কাহিনি।
১৯৩৩ সালে বইটি জাদুঘরে প্রদর্শন করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি জাদুঘরের তত্ত্বাবধায়করা ক্যাটালগ দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন সেখানে আরেকটি বই রয়েছে যেটি এত দিন চোখে পড়েনি।
সেই বইটি জাদুঘরে দান করেছিল একটি পরিবার, যাদের সঙ্গে কর্ডারের দেহ কাটাছেঁড়া করার সার্জনের ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল। বইটি জাদুঘরের গুদামে ছিল না, বরং ছিল কার্যালয়ের বইয়ের শেলফে অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে।
কিন্তু বইটি বাঁধাই করা ছিল অনেক বেশি সনাতনী উপাদান দিয়ে। হেরিটেজ কর্মকর্তা ক্লার্ক বলেন, জাদুঘরে হারানো বই আমরা খুঁজে পেয়েছি। যেটি দশকের পর দশক ধরে দেখা হয়নি।
কর্ডারের চামড়ায় বাঁধানো প্রথম বইয়েরর সঙ্গে দ্বিতীয়টির কিছুটা পার্থক্য আছে। প্রথম বইয়ের চামড়ার মলাট অনেকটাই পূর্ণাঙ্গ। আর দ্বিতীয় বইয়ের কেবল বাঁধাইয়ের জায়গা এবং কোনাগুলোতে চামড়া লাগানো আছে।
মানুষের চামড়া দিয়ে বই বাঁধাই করা ‘এনথ্রোপোডার্মিক বিবলিওপেজি’ নামে পরিচিত। ‘হরিবল হিস্টোরিজ’-এর লেখক টেরি ডেয়ারির মতে, একজন মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার চেয়েও জঘন্য কাজ হচ্ছে মৃত্যুর পর তার দেহ ছিন্নভিন্ন করা। চামড়া দিয়ে বই বাধাঁনো আরও বাড়াবাড়ি।
তবে হেরিটেজ কর্মকর্তা ক্লার্ক বলছেন, ‘দেশজুড়ে প্রতিটি জাদুঘরেই আমরা মানুষের দেহাবশেষ দেখতে পাই।’
সূত্র: বিডিনিউজ
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।
ধারণা করা হচ্ছে, এক বিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র প্রাণী ও জলজ অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে প্রবালটিতে। এর মাধ্যমে জলজ প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এই বিশাল প্রবাল। সদ্য আবিষ্কৃত এই জলজ বিস্ময়টি এখন পর্যন্ত জানা বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক প্রবাল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোরাল বা প্রবাল এক ধরনের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে, পুঞ্জিভূত হয়ে গঠিত হয় বিশাল প্রবাল প্রাচীর। সঙ্গে যুক্ত হয় শৈবাল, মৃত জলজ প্রাণীর দেহাবশেষ ও পলিপ। সব মিলিয়ে জীবন্ত প্রাণীর তৈরি এক আশ্চর্য স্থাপনা এই প্রবাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য। আজারবাইজানের বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর মধ্যেই, সমুদ্র তলদেশের অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈজ্ঞানিক অভিযান চালায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
অনেকটা দৈবক্রমেই প্রবালটি আবিষ্কার করেন ন্যাট জিও’র ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে স্বচ্ছ পানিতে ছেলেকে নিয়ে ডুব দেন তিনি। প্রথমে এটিকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মনে করে এগিয়ে গেলেও পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বুঝতে পারেন জীবন্ত প্রাণীদের তৈরি অসামান্য সৌন্দর্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।
গবেষকদের ধারণা, বিশ্বের বৃহত্তম জলজ প্রাণী নীল তিমির চেয়েও আকারে অনেকটা বড় এই প্রবাল।
এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে থাকা ‘বিগ মামা’ প্রবালটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিল। তবে নতুন সন্ধান পাওয়া প্রবালটি ‘বিগ মামা’র চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। ৩৪ মিটার দীর্ঘ প্রবালটি এতটাই বিশাল যে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাবে এটি।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে একটি মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে একজনের দান করা দুটি ড্রাগন ফল ৪৫ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রির হয়েছে।
উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার ইসলামিয়া মালিকিয়া মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পতনঊষার ইসলামিয়া মালিকিয়া মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে লিপু সুলতানা চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি দুটি ড্রাগন ফল মাদ্রাসায় দান করেন। মধ্যরাতে মাহফিলের শেষ বক্তা শায়খুল হাদিস মুফতি মুশাহিদ আলী ক্বাসেমী ড্রাগন ফল দুটি প্রকাশ্যে নিলামে তোলেন। নিলামের একপর্যায়ে সর্বোচ্চ দাম হাঁকিয়ে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে ফল দুটি কিনে নেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আলহাজ আলমগীর চৌধুরী।
ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে অংশ নেয়া শ্রোতারা জানান, মাহফিল শেষে দোয়ার আগে ড্রাগন ফল দুটি নিলামে তোলা হয়। দুই হাজার টাকা থেকে নিলাম শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। নিলামে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতা।
পতনঊষার ইসলামিয়া মালিকিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল হাফিজ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মাদ্রাসার ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিলে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী টিপু সুলতান চৌধুরী দুটি ড্রাগন ফল দান করেন। পরে এই দুটি ফল নিলামে তোলা হলে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
‘মূলত এই ফল এত দামে বিক্রি হওয়ার কারণ হলো মাদ্রাসায় সহযোগিতা করা। যিনি ফল কিনেছেন, তিনি হলেন আমাদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তিনি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য