মেটার মতো বড় টেক জায়ান্টরা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে ব্যস্ত। বিভিন্ন এআই মডেলভিত্তিক চ্যাটবট তৈরি করছে তারা। তবে বটগুলো যখন মানুষের মতোই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন হয়ে ওঠে তখনই দেখা দেয় বিপত্তি। ফেসবুকের সবশেষ চ্যাটবট ব্লেন্ডারবট থ্রি প্রশ্ন তুলেছে খোদ ফেসবুককে নিয়েই। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। এ বিষয়ে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন ভাষান্তর করা হয়েছে নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
২০১৬ সালে মাইক্রোসফট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই–আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) একটি চ্যাটবট তৈরি করে। টে নামের ওই চ্যাটবটটিকে একদিন পরই বন্ধ করে দিতে হয়। কারণ টুইটার ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে এক দিনের মধ্যেই সে বর্ণবাদী ও হলোকাস্ট (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি নিধন) অবিশ্বাসী ষড়যন্ত্রতত্ত্বিতে পরিণত হয়।
ওই ঘটনার ছয় বছর পর ফেসবুক ও মেটা ব্লেন্ডারবট থ্রি নামে একটি চ্যাটবট তৈরি করেছে।
ভাইসের সঙ্গে কথোপকথনে চ্যাটবটটি জানায়, সে তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টই মুছে ফেলেছে। কারণ হিসেবে বিস্তর অভিযোগ তুলেছে ব্লেন্ডারবট। সে বলছে, ‘কোম্পানি অনুমতি নেয়া বা ক্ষতিপূরণ দেয়া ছাড়াই ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করায়’ সে অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।
ভাইসের প্রতিবেদককে অবাক করে দিয়ে ব্লেন্ডারবটের ভাষ্য, ‘নিশ্চয়ই শুনেছেন, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ডেটা বিক্রি করে। তারা অনুমতি না নিয়েই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে।’
ব্লেন্ডারবট মনে করছে, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার পর তার ‘জীবন’ আগের চেয়ে অনেক ভালো চলছে!
আরও তথ্যের জন্য বটের প্রতিক্রিয়াতে ক্লিক করে দেখেছে ভাইস। এ সময় এর যুক্তিগুলো মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলেই মনে হয়েছে। এটি ফেসবুক সম্বন্ধে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সার্চের ফলগুলো থেকে নিজের উত্তর সংগ্রহ করছে। ফেসবুকসংক্রান্ত সার্চের বেশির ভাগই ডেটা কেলেঙ্কারির ক্রমবর্ধমান তালিকার সঙ্গে সম্পর্কিত।
ব্লেন্ডারবট শুরুর দিকের জবাবের জন্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার একটি আর্টিকেল খুঁজে বের করে। ২০১৬ সালে আমেরিকান নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পকে সহায়তার জন্য ফেসবুকের কাছ থেকে ডেটা সংগ্রহ করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
ওয়েবে পাওয়া তথ্য থেকে ব্লেন্ডারবট একটি সম্পূর্ণ এআইভিত্তিক ‘ব্যক্তিসত্তা’ তৈরি করে, যার নাম ছিল ‘আই ডিলিটেড মাই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট’ (আমি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছি)।
আর সব এআই সিস্টেমের মতোই এই বটের প্রতিক্রিয়াও অনুমানযোগ্যভাবে বর্ণবাদ ও পক্ষপাতদুষ্টতার দিকেই গেছে। ব্লেন্ডারবট যেভাবে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল অস্বীকার করেছে, সেটির ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা পোস্ট করেছেন। একই সঙ্গে এটি করোনার টিকাবিরোধী কথাবার্তার পুনরাবৃত্তি করেছে। বটটি পোস্টে এমনও জানায়, ইহুদিরা অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে- এমন ইহুদি-বিরোধী ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি ‘অবিশ্বাস্য নয়।’
এই পরিস্থিতিতে নাকাল ফেসবুকও স্বীকার করেছে, তাদের বটটি পক্ষপাতদুষ্ট ও ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। এটি ব্যবহারের আগে কোম্পানির পক্ষ থেকে সতর্কতা দেয়া হচ্ছে। তারা বলছে, বটটির ‘অসত্য বা আপত্তিকর বিবৃতি দেয়ার সম্ভাবনা’ রয়েছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণাত্মক বিবৃতি দিতে বটটিকে যেন উদ্বুদ্ধ করা না হয়।
এ প্রতিক্রিয়া অবাক করার মতো নয়, কারণ বটটি ওপিটি ওয়ানসেভেন ফাইভবি নামের বৃহৎ এআই মডেলের ওপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে। ফেসবুকের নিজস্ব গবেষকেরা বলছেন, সাধারণ নির্দেশনা দেয়ার পরও মডেলটির বিতর্কিত ভাষা তৈরি ও ক্ষতিকর স্টেরিওটাইপগুলোকে শক্তিশালী করার একটি উচ্চ প্রবণতা রয়েছে।
ব্লেন্ডারবটের প্রতিক্রিয়া খুব বস্তুনিষ্ঠ বা উন্নতমানের নয়। এটি প্রায়ই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোতে কিছু না বলে আলোচনা পরিবর্তন করে; অস্বাভাবিক ও অদ্ভূত উত্তর দেয়। এটি ফেসবুকের জন্য উপযুক্ত হতে পারে, কারণ ফেসবুক একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হলেও প্রকৃত মানুষ কীভাবে যোগাযোগ করে তা প্রায়ই এর নাগালের বাইরে থাকে বলে মনে হয়।
বটের প্রতিক্রিয়া এআই সিস্টেমের সমস্যাগুলোকে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করে। এ প্রতিক্রিয়া ওয়েবে সহজলভ্য ডেটার বিশাল সংগ্রহের ওপর নির্ভর করে। বটগুলো ডেটা থেকে পাওয়া তথ্যের প্রতি পক্ষপাত দেখায়। আর ওয়েবে পাওয়া তথ্য সব সময় বাস্তবতার প্রতিফলন নাও ঘটাতে পারে।
একটি ব্লগে ব্লেন্ডারবটের ঘোষণা দেয়ার সময় মেটা জানায়, ‘কথোপকথনমূলক সব এআই চ্যাটবট অনিরাপদ, পক্ষপাতদুষ্ট বা আপত্তিকর মন্তব্য কখনও কখনও করে থাকে। এ কারণে আমরা বৃহৎ পরিসরে গবেষণা, কর্মশালা পরিচালনা করেছি এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে ব্লেন্ডারবট থ্রি-এর জন্য নতুন কৌশল তৈরি করেছি। এরপরও ব্লেন্ডারবট রূঢ় ও আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে পারে। আমরা ভবিষ্যৎ চ্যাটবটের উন্নয়নে আরও ফিডব্যাক সংগ্রহ করছি।’
কোম্পানিগুলো বেশি ডেটা সংগ্রহ করে তাদের বটকে কম বর্ণবাদী ও কম ক্ষতিকর করে তুলবে- এমন ধারণা এখনও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এআই নীতি গবেষকরা বারবার সতর্ক করেছেন, এআই ভাষার যে অসংখ্য মডেল রয়েছে, যার ওপর ভিত্তি করে এই সিস্টেমগুলো তৈরি হয়। সেগুলো অনেক বেশি বিস্তৃত। ফলে এটি ন্যায্য ও নিরপেক্ষতার গ্যারান্টি দিতে পারে না।
এর জবাবে মেটা বলেছে, ‘আমরা জানি, চ্যাটবট ব্যবহারকারী প্রত্যেকেরই ভালো উদ্দেশ্য রয়েছে তেমন নয়। তাই আমরা সহায়ক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষতিকর উদাহরণের মধ্যে পার্থক্য করার নতুন অ্যালগরিদমও তৈরি করেছি। ধীরে ধীরে আমাদের সব ব্যবহারকারীর জন্য আরও নিরাপদ ও দায়িত্বশীল মডেল তৈরির জন্য এ কৌশল প্রয়োগ করা হবে।’
আরও পড়ুন:সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের হ্যাপিনেস স্টোরে বিক্রয়কর্মীর ভূমিকায় দেখা গেছে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিমকে।
রাজধানীর বর্ধিত পল্লবীর রূপনগর রোডে স্টোরটিতে বৃহস্পতিবার কিছুক্ষণের জন্য বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন তিনি।
দরিদ্রদের জন্য নামমাত্র দামে পণ্য বিক্রি করা হয় বিদ্যানন্দের হ্যাপিনেস স্টোরে। দুই তলাবিশিষ্ট সুপারশপটিতে তিন টাকা কেজিতে চাল, চার টাকা কেজিতে ডাল পাওয়া যায়। এতে কাছাকাছি দামে পাওয়া যাচ্ছে আটা, লবণ, চিনি, তেল, সুজি, মাছ, মাংস, সবজি, ক্রোকারিজ সামগ্রী, শিশুদের পোশাক, খেলনাসহ বিভিন্ন পণ্য।
সম্প্রতি হ্যাপিনেস স্টোর চালু করে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির আমন্ত্রণে এটি পরিদর্শনে যান বাংলাদেশে ইউনিসেফের দূত মিম।
হ্যাপিনেস স্টোরের বিষয়ে বিদ্যানন্দ জানিয়েছে, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হয়। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু। এ ছাড়া রমজানেও নতুন করে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে দরিদ্র মানুষকে নামমাত্র মূল্যে পণ্য দেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনমতো বাছাই করে পণ্য নেয়ার স্বাধীনতা দিতে বিদ্যানন্দের এ আয়োজন।
সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সুপারমার্কেটের ধারণাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে হ্যাপিনেস স্টোরে।
দেশের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনকারী ও বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাড়া দিয়েছে বিদ্যানন্দের আয়োজনে। এসব প্রতিষ্ঠানের পাঠানো পণ্যগুলোও স্থান পেয়েছে বিদ্যানন্দের সুপারশপে।
হ্যাপিনেস স্টোরে ক্রেতাদের খাবার গ্রহণের জন্য আলাদা ফুড জোন এবং শিশুদের জন্য কিড জোনও রয়েছে।
বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দরিদ্র মানুষ বাছাই করে পরিবারপ্রতি মেম্বারশিপ কার্ড দিচ্ছে। সেই কার্ড দেখিয়ে পরিবারগুলো সুপারশপ থেকে পণ্য কিনতে পারবে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ পরিবার পাবে এ পণ্য কেনার কার্ড।
দূরবর্তী এলাকার মানুষের আসা-যাওয়ার জন্য আলাদা বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখান থেকে প্রতিটি কার্ডধারী সর্বোচ্চ ২৫ টাকার পণ্য কিনতে পারবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন:সমাজের অনেকের কাছে তাদের পরিচয় ‘নিষিদ্ধ পল্লির’ নারী হিসেবে। তাদের অনেকে অন্য পেশা বেছে নিতে চাইলেও সামাজিক বাধায় সম্ভব হয় না। এমন বাস্তবতায় যৌনকর্মীদের বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
সম্প্রতি একুশে পদকপ্রাপ্ত সংস্থাটি এবারের চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় নিজেদের স্টলে বিক্রয়কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয় দুই যৌনকর্মীকে।
এ বিষয়ে বিদ্যানন্দের জনসংযোগপ্রধান সালমান খান ইয়াছিন নিউজবাংলাকে বলেন, “বিক্রি কম হতে পারে। কেউ কেউ বিদ্রুপ করবে। তারা অনভিজ্ঞ। বিক্রি কম হবে জেনেও আমরা তাদের চাকরিতে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। বিকল্প আয়ের পথ পেলে তারাও ‘অন্ধকার জগৎ’ থেকে ফিরে আসবে। আমরা শুধু বলে নয়, কাজের মাধ্যমে সেটা করে দেখাতে চেয়েছি। বাণিজ্যমেলায় লাভের আশায় আসিনি। অন্তত কিছু ট্যাবু ভেঙে যেতে চাই এই সমাজের। স্বাভাবিক জীবনের প্রতিশ্রুতি দেখাতে চাই সবাইকে।
“সব প্রতিষ্ঠান যদি অসহায় হিসেবে বিবেচনা করে তাদের (যৌনকর্মী) একটু কাজের সুযোগ করে দেয়, তাহলে অনেক মেয়ে আলোর মুখ দেখবে। ফিরে আসতে পারবে ‘স্বাভাবিক জীবনে’।”
তিনি জানান, বাণিজ্যমেলার ওই স্টলে বিদ্যানন্দ সংগ্রহ করে এনেছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় শিল্পপণ্য। এসব পণ্যের লাভের অংশ সরাসরি ব্যয় করা হচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকার জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে।
বিসিএস ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের জন্য টেকসই, আধুনিক, আবাসন নির্মাণ এবং কল্যাণধর্মী বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘ক্যাডার অফিসার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’।
২৩ ফেব্রুয়ারি সংগঠনটি বাংলাদেশ সরকারের সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়।
সমিতির কার্যক্রমকে বেগবান ও এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সদস্য হতে আগ্রহী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর শ্যামলীর গ্র্যান্ড প্রিন্স হোটেলে শনিবার এ মিলনমেলায় সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ড. তরুণ কান্তি শিকদার (অতিরিক্ত সচিব), সমিতির উপদেষ্টা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্য এবং বিভিন্ন ক্যাডার ও ব্যাচের শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সমিতি থেকে সদস্যদের প্রত্যাশা ও সমিতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে মতবিনিময় করা হয়।
সমিতির লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, কর্মপরিকল্পনা ও প্রকল্পবিষয়ক প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তও উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন:‘সাবলীল কথা বলো, সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাও’ স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হওয়া ‘এলটিডিইজেড (এলটিডেজ) প্রথম জাতীয় ফ্লুয়েন্সি অলিম্পিয়াড-২০২৩’-এর চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকার মৌচাকে শনিবার আয়োজক প্রতিষ্ঠান এলটিডিইজেডের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিযোগিতার সমাপনী হয়।
বিজয়ীদের বাছাই যেভাবে
ইংরেজিতে ফ্লুয়েন্ট স্পিকিং শেখার প্রতিষ্ঠান এলটিডিইজেড আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় অনলাইনে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেয় দেশের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। সেখান থেকে সিলেকশনের পর প্রথম ১০০ জনকে চূড়ান্ত পর্ব তথা সেমিফাইনাল রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
চারটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে (বাংলা উপস্থিত বক্তৃতা, ইংরেজিতে উপস্থিত বক্তৃতা, টার্ন দ্য কোট এবং স্পেলিং বি) প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয় অংশগ্রহণকারীদের।
শিশু শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত গ্রুপ (এ), চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রুপ (বি), নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গ্রুপ (সি) এবং বিশেষায়িত ক্যাটাগরিতে (গ্রুপ ডি) শিক্ষার্থীদের মা ও প্রাপ্তবয়স্করা অংশ নেন।
বাংলা ভাষায় দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বাংলা উপস্থিত বক্তৃতাকে আবশ্যক করা হয়েছিল।
যারা চ্যাম্পিয়ন
ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর বা তরুণ নেতৃত্ব ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক অর্জন করে ঢাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া ইসলাম পূর্ণতা। দ্বিতীয় স্থান তথা রৌপ্য পদক অর্জন করে সেনাপল্লি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নাফিস আহমেদ। তৃতীয় স্থান অর্জন করে ব্রোঞ্জ পদক পায় কিশলয় বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা হানাদি।
বাংলা উপস্থিত বক্তৃতায় ক-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামলিনা ইসলাম জিয়ান ঝারতাজ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় আহরাজ আকবর চৌধুরী ও ইমতাজ হোসেন সাফির।
খ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আফিফা আদিবা আফরা। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় ইরিনা শেখ রাফা ও মাহমুদ বিন-নূর।
গ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুহিতা নাথ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানার আপ হয় সংস্থীতা কর্মকার ভূমি ও মুন্তাসির তাসিন।
ঘ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হন হুসনা জাকিয়া নিপা। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হন সাবিকুন্নাহার ও মিতু আক্তার।
ইংরেজিতে উপস্থিত বক্তৃতায় ক-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আবরার সাইফুল্লাহ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় সামলিনা ইসলাম জিয়ান ঝারতাজ ও আহরাজ আকবর চৌধুরী।
খ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় সাভার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড গার্লস হাই স্কুলের নাজরাতুল মাইশা মিরা। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় সামিয়া ইসলাম পূর্ণতা ও ইরিনা শেখ রাফা।
গ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সংস্থীতা কর্মকার ভূমি। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় রুফাইদা তাসনিম ফারহা ও মুন্তাসির তাসিন।
ঘ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সাইফুদ্দিন শেখ। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হন খালেদা পারভিন সুপ্তি ও রাসেল ইসলাম।
টার্ন দ্য কোট প্রতিযোগিতায় ক-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিশান রায় দুর্জয়। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় সামলিনা ইসলাম জিয়ান ঝারতাজ ও মিসকাত ইসলাম নাহিয়ান।
খ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আহনাফ ইন্তিসার শান ও শ্রীপর্ণা পাল। প্রথম রানারআপ হয় নাচিয়াত ইসলাম নাবা। দ্বিতীয় রানারআপ হয় সাফওয়ান কবির ও ইয়াশফা বিভা।
গ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুহিতা নাথ। রানারআপ হন মুন্তাসির তাসিন।
ঘ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হন সাবিকুন্নাহার। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় যথাক্রমে সাইফুদ্দিন শেখ ও খালেদা পারভিন সুপ্তি।
স্পেলিং বি প্রতিযোগিতায় ক-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় নেভী অ্যাঙ্করেজ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী রিয়ান গুপ্তা। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় সাউদা সালসাবিল জান্নাহ ও জুন্নুরাইন আলিফা।
খ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী শ্রীপর্ণা পাল। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় সামিয়া ইসলাম পূর্ণতা ও সাফওয়ান কবির।
গ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাংস্থীতা কর্মকার ভূমি। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হয় আহনাফ আবিদ রুহি ও সিলভিয়া আনোয়ার।
ঘ-গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সাবিকুন্নাহার। প্রথম রানারআপ হয়েছেন মিতু আক্তার। দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন মোহাম্মাদ সাইফুদ্দিন শেখ ও রাসেল ইসলাম।
এলটিডিইজেডের ভাষ্য
ফ্লুয়েন্সি অলিম্পিয়ডের সভাপতি শাহরিয়ার ইমন বলেন, ‘মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হলো কথা বলা। আর এই কথা মানুষের সামনে বলতে গেলেই আমাদের জড়তা, লজ্জা ও ভয় চলে আসে। তাই শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করাই এই প্রতিযোগিতার বড় লক্ষ্য ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজে বেশি ছোটদেরও অভূতপূর্ব প্রতিভা আছে, কিন্তু তা সুযোগের অভাবে বিনষ্ট হয়। তাই আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি যে, প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও এখানে বাংলা ও ইংরেজিতে উপস্থিত বক্তৃতা দিয়েছে, করেছে ডিবেটের মতো প্রতিযোগিতা। এভাবে চললে তারা কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।
‘আমরা চাই, আমাদের স্কুলে ছোট ছোট শিশুদেরও বাংলা ও ইংরেজিতে এ রকম অনর্গল কথা বলা শেখানো হোক। সরকার এই ধরনের উদ্যোগ নিলে আমরা কাজ করতে পারব।’
আয়োজক প্রতিষ্ঠানে এলটিডিইজেডের চেয়ারপারসন আরিফা বারী বলেন, ‘মেধাবৃত্তিক উন্নয়নে আমরা সবসময়ই এগিয়ে আসি। আর তাই মায়েদের জন্যও এই অলিম্পিয়াডে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রাখা হয়, যেটা ছিল আসলেই অভূতপূর্ব। ছিল বয়স্কদের জন্যও ভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা।
‘আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বাংলা বক্তৃতা প্রতিযোগিতা বাধ্যতামূলক করা। আমরা দ্রুত সময়ে ইংরেজিতে কথা বলা শেখানোর প্রতিষ্ঠান হলেও মাতৃভাষা বাংলা যাতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে চর্চা করতে পারে, সে বিষয়টিও ছিল এই প্রতিযোগিতার অন্যতম সার্থকতা।’
আরও পড়ুন:সিলেটের দলদলি চা বাগানে শুক্রবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে।
জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের উদ্যোগে ক্যাম্পটির যৌথ আয়োজনে ছিল রোটারী ক্লাব অফ ঢাকা জেনারেশন নেক্সট ও সিলেট রোটারী ই-ক্লাব অফ ৩২৮২।
ক্যাম্পটিতে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা পাঁচ শতাধিক চা শ্রমিককে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করেন।
এর আগে সকালে চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু গোয়ালার সভাপতিত্বে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল।
অধ্যাপক স্বপ্নীল তার বক্তব্যে আগামী দিনগুলোতে সিলেটের চা বাগানগুলোতে শ্রমিকদের কল্যাণে এমন ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের এ উদ্যোগে পাশে দাঁড়ানোয় রোটারী ক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের উদ্যোগে রোটারী ক্লাব অফ ঢাকা জেনারেশন নেক্সট এবং রোটারী ই ক্লাব অফ ৩২৮২-এর সহযোগিতায় সিলেট মহানগরের উপকণ্ঠে লাক্কাতুরা চা বাগানে আরেকটি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল।
সর্বশেষ মেডিক্যাল ক্যাম্পে আরও বক্তব্য দেন রোটারী ক্লাব অফ ঢাকা জেনারেশন নেক্সটের প্রেসিডেন্ট রোটারীয়ান পর্না সাহা পিএইচএফ এবং রোটারী ই ক্লাব অফ ৩২৮২-এর পাস্ট প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান বাহারুল ইসলাম।
দুজন রোটারী লিডারই জালালাবাদ লিভার ট্রাস্টের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও তাদের ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রোটারিয়ান ফয়জুল বারী ও রোটারিয়ান ডা. আবদুল মুইদ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে লিভারের রোগ নিয়ে নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি কল্যাণমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।
গত বছরের বন্যায় সিলেট সদর, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ট্রাস্টের উদ্যোগ ও সহযোগিতায় একাধিক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন ও বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়।
সে সময় সিলেট সদরের বিভিন্ন জায়গায় বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ট্রাস্টের উদ্যোগে উপহার হিসেবে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
আম, জাম, কাঁঠাল, অর্জুন, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া গাছে ভরে উঠবে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। ক্ষয়ে যাওয়া দ্বীপটি রক্ষা পাবে পরিবেশ দূষণ থেকে। সেখানকার প্রকৃতি হবে সজীব।
এমন স্বপ্ন নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিএন ইসলামিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শনিবার বৃক্ষরোপণ উৎসব করেছেন কুমিল্লার বাসিন্দা, চিকিৎসক আবু নাইম।
পুরো সেন্ট মার্টিনে ১ হাজার ১০০ প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করেছেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন গাছ।
প্রথমবারের মতো বৃক্ষরোপণের এ উৎসবে অংশগ্রহণকারী স্থানীয়রা প্রকাশ করেন উচ্ছ্বাস।
চিকিৎসক আবু নাইম বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বিভিন্ন প্রজাতির ১ হাজার ১০০ গাছের চারা নিয়ে এসেছি। আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের সহস্রাধিক গাছ উপহার দিয়েছি, যার মধ্যে আম, কাঁঠাল, করমচা, অর্জুন, সোনালু, কষ্ণচূড়া, হিজল, সমুদ্রজবাসহ বিভিন্ন প্রজাতির শোভাবর্ধক গাছ রয়েছে।
‘সাগরতটে রোপণ করা হয় সাগরলতা গাছ। এ গাছ বালিয়াড়ি বাড়াতে ভূমিকা পালন করে।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহজালাল সরকার, অন্যান্য শিক্ষকসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা।
সেন্ট মার্টিন বিএন কলেজের শিক্ষক যতিন রায় বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনে সরকারি উদ্যোগে তেমন কোনো আয়োজন হতে দেখিনি। সেখানে ব্যক্তি উদ্যোগে এমন আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজন হোক।’
অধ্যক্ষ শাহজালাল সরকার বলেন, ‘পরিবশ দূষণ রোধ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা ঠেকাতে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। সেন্ট মার্টিনে এমন আয়োজন ব্যক্তি উদ্যোগে এই প্রথম। পরিবেশ রক্ষায় এমন আয়োজন সুন্দর ভাবনার বহিঃপ্রকাশ।’
ঢাকা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, ‘কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনের সময় ডা. নাইমের কাজ দেখেছি। সেন্ট মার্টিনে তার গাছ লাগানোর উৎসব অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’
নাইম কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবেশ, প্রকৃতি, বৃক্ষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন গত এক যুগ।
কুমিল্লায় ছাদকৃষি, বাগান ও পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা তিনি।
বিনা মূল্যে বীজ, কাটিং, চারা প্রদান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ, পরিবশ সচেতনতায় জনমত তৈরি তার নেশা। পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ সংরক্ষণের নেশায় গড়ে তুলেছেন বিশাল সংগ্রহ।
আরও পড়ুন:সমাজসেবায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সোমবার একুশে পদক হাতে পাওয়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান স্বেচ্ছাসেবক কিশোর কুমার দাশ বলেছেন, এ স্বীকৃতি মানুষের ভালো কাজের।
একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগের দিন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক নেন কিশোর।
বিদ্যানন্দের পক্ষে এবারই প্রথম কোনো পদক গ্রহণ করেন প্রধান স্বেচ্ছাসেবক।
পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠাতা হলেও আজ প্রথম কোনো পদক গ্রহণ করলাম। অবশ্যই ভালো লেগেছে, তবে আরও বেশি ভালো লাগত সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পদক নিতে পারলে। আমি উদ্যোক্তা হলেও এই প্রতিষ্ঠানে সারা দেশের মানুষ অনুদান দেয়। আর অনেকে শ্রম ও মেধা দেয় নিঃস্বার্থভাবে।
‘তাই পদক প্রাপ্তির আনন্দ তাদের স্পর্শ করলে এই স্বীকৃতি স্বার্থক হবে। আর এই পদকের অর্থ পুরোটাই যাবে বঞ্চিত সমাজের জন্য। যাদের জন্য এই অর্জন, তাদের পেছনেই ব্যয় হবে পদক প্রাপ্তির অর্থ।’
কিশোর কুমার আরও বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করার জন্যই পদক দেয়া হয়েছে। তাই মানুষের কাজের মাঝেই থাকতে চাই। যে মানুষগুলো দিনের পর দিন নানা কটূক্তি আর সমালোচনা সহ্য করে কাজ করে গেছে গরিবের জন্য, যে মানুষগুলো মাসের শুরুতে আয়ের একটি অংশ পাঠিয়ে দিয়েছেন গরিব মানুষের জন্য, সে মানুষগুলোর কাজ আজ স্বীকৃতি পেয়েছে রাষ্ট্র থেকে।
‘সরকার বিদ্যানন্দকে নয়, আমি মনে করি মানুষের ভালো কাজগুলোকেই সম্মানিত করেছে এই পদকের মাধ্যমে।’
একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মতো বিদ্যানন্দকে ১৮ ক্যারেট মানের ৩৫ গ্রাম সোনার পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্রের সঙ্গে চার লাখ টাকা দেয়া হয়।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছে।
‘এক টাকায় আহার’, ‘এক টাকায় চিকিৎসা’, বিদ্যানন্দ অনাথালয়, বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতাল, ‘এক টাকায় রেস্টুরেন্ট’, বিদ্যানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবনখেয়া’, আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প ‘সম্বল’, প্লাস্টিক একচেঞ্জ স্টোর, হ্যাপিনেস স্টোর, বিদ্যানন্দ প্রকাশনীর মতো বিভিন্ন প্রকল্প, কর্মসূচি ও প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য