স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে নানা ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। সেই লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানা থাকলে যে কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করতে পারবেন এবং দ্রুত সেবা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন। ডিউক হেলথের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। চলুন দেখে নেই।
-
স্ট্রোকের লক্ষণগুলো মনে রাখতে হলে আমাদের আগে এই দুটি শব্দ মনে রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে ‘BE FAST’। চলুন জেনে নেই বি ফাস্ট দ্বারা কী বোঝানো হচ্ছে।
-
১. বি’তে Balance বা ভারসাম্য। স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ফলে মাথা ঘোরা বা মাথা ভারী হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। স্ট্রোক আক্রান্ত রোগী দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে পারেন না। ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলেন।
-
২. ই’তে Eyes বা চোখ। স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। অনেক সময় একসঙ্গে দুটি দৃশ্য কিংবা একেবারে অন্ধ হয়ে যান।
-
৩. এফ’তে Face Drooping বা মুখ ঝুলে পড়া। স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের অর্ধেক (বিশেষ করে মুখের এক পাশের নিচের অর্ধেক) নিচু বা ঝুলে যেতে পারে। কথা বলতে গেলে মনে হবে মুখের একপাশ অবশ হয়ে পড়ছে।
-
৪. এ’তে Arm Weakness বা বাহু দুর্বলতা। স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির হাত অবশ বা প্যারলাইসিস হয়ে যেতে পারে। কোনো কিছু ধরতে বা তুলতে অসুবিধা বোধ করতে পারেন।
-
৫. এস’তে Speech Difficulty বা কথা বলতে সমস্যা হওয়া। স্ট্রোক হলে রোগী কথা বলতেও সমস্যায় পড়েন। কথা বলতে গিয়ে তোতলাতে পারেন কিংবা কথা বলা একেবারেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
-
৬. টি’তে Time to call 999 বা জরুরি সেবায় ফোন করার সময় এসেছে বোঝায়। ওপরের লক্ষণগুলো কারও মধ্যে দেখতে পেলে দ্রুত জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নিন। মনে রাখবেন, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো রোগী চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুবরণও করতে পারে। এ কারণেই বলা হয় ‘টাইম ইজ ব্রেইন’।
আরও পড়ুন:প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে রোববার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় রাজধানীতে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে তুরাগ নদেও চলে বিসর্জন।
প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সড়কে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়াতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।
পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে বিজয়া শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাটে পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেয়া হয়। তবে এখানে পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এই শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে।
রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ ও মিষ্টিমুখ করেন।
সারা দেশে এ বছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ছিল ২৫২টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাসমতে- মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এই আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে ৯ অক্টোবর দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গোৎসব।
দেবী দুর্গা এ বছর মর্ত্যে আগমন করেন দোলা বা পালকিতে চড়ে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক, যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এ ছাড়াও দেবী স্বর্গে ফিরে যাবেন ঘোটক বা ঘোড়ায় চড়ে।
শাস্ত্রমতে, দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। ঘোটকে গমন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ-বিগ্রহ, আশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিতবহ।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে, যা তার বাবার গৃহ।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরি এবং আলোকসজ্জা থেকে শুরু করে নানা আয়োজন প্রায় শেষ পর্যায়ে। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। আগামী ১৩ অক্টোবর রোববার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবের।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। সরকার নির্বাহী আদেশে আগামী বৃহস্পতিবার ছুটি ঘোষণা করেছে। আগামী শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিসহ এবার দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটি হতে যাচ্ছে। পরদিন রোববার শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষে সরকারি ছুটি।
সব মিলিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত ছুটি থাকছে। টানা চারদিনের সরকারি ছুটি উৎসবের আমেজ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
দেশের সর্বাধিক পূজা অনুষ্ঠিত হওয়া পুরান ঢাকাতে এবারও উৎসবের আমেজে ব্যতিক্রম নেই। সর্বত্র চলছে উৎসব আয়োজনের তোড়জোড়।
সরকারি হিসাব মতে, সারা দেশে এ বছর ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। শুধু রাজধানী ঢাকায়ই এ বছর ২৫২টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজা উদযাপন করা হবে পুরান ঢাকায়। এখানে সূত্রাপুর থানায় ২৬টি, কোতোয়ালি থানায় ২৪টি, ওয়ারিতে ১৮টি, গেন্ডারিয়ায় ১৫টি ও বংশাল থানায় দুটি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে।
পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, কালী মন্দির, নর্থব্রুক হল রোড, মহাকাল শিব বিগ্রহ, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজারসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় শতাধিক প্রতিমা শিল্পী গত এক মাস নির্ঘুম সময় কাটিয়েছেন প্রতিমা তৈরিতে। এখন অপেক্ষা শুধু মণ্ডপে নিয়ে যাওয়ার। তবে কিছু জায়গায় সোমবারও তুলির শেষ আঁচড় চালাতে দেখা গেছে শিল্পীদের। শাড়িও পরানো হয়ে গেছে অনেক প্রতিমার। শিল্পীরা খুঁটিয়ে দেখে নিচ্ছেন কোনো ত্রুটি রয়ে গেল কিনা।
ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে বুধবার শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব। মহাষষ্ঠীতে হবে মায়ের চক্ষুদান। সনাতন সম্প্রদায়ের এই উৎসব ঘিরে রাজধানীর পুরান ঢাকায়ও এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে এখানকার মণ্ডপগুলো বর্ণাঢ্যসাজে সাজানো হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে গত তিন বছর বড় পরিসরে আয়োজন না হলেও এ বছর তা কাটিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে পুরান ঢাকার মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজ সাজ রব।
দুর্গোৎসবকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে নেয়া হচ্ছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে মণ্ডপে মণ্ডপে বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। বৃষ্টি থেকে প্রতিমা বাঁচাতে প্রায় সব মণ্ডপে ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিমা শিল্পী মিন্টু চন্দ্র পাল বলেন, ‘গত দেড় মাস ধরে প্রতিমা তৈরি করেছি। গতকাল কাজ শেষ। অন্য বছরের চেয়ে এবার দুর্গার আশীর্বাদে ভালোই অর্ডার পেয়েছি। বছরে এমনিতে ১৫-২০টি মূর্তি বানাই। এ বছর ৩৬টি বানিয়েছি। আগে একাই সব করতাম। এবার সঙ্গে দু’জন সহকারীও নিয়েছি। তাই কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে।’
শেষ সময়ে প্রতিমায় রঙ-তুলির ছোঁয়া দিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন আরেক শিল্পী পল্টন পাল। ৩৩ বছর ধরে প্রতিমা বানিয়ে আসছেন তিনি। বললেন, ‘এ সময় ভীষণ কাজের চাপ। তবে প্রতিমা তৈরি শেষ। চুন-কালির প্রলেপ দিচ্ছি এখন। এ বছর মোটামুটি ভালো কাজ পেয়েছি। গত বছর করোনায় তেমন সুবিধা করতে পারিনি।’
পুরান ঢাকার ১৩৬, শাঁখারি বাজারে ৫০ বছরেরও অধিক সময় ধরে দুর্গাপূজার আয়োজন করে আসছে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব।
ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক ও কোতোয়ালি থানা পূজা কমিটির সহ-সভাপতি উৎপল কুমার ঘোষ শেখর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে ২০টি পূজা হবে। তার মধ্যে দুটি পারিবারিক পূজা ও বাকি ১৮টি সার্বজনীন। এবার আমাদের ভলেন্টিয়ার থাকবে, সিসি টিভি তো অবশ্যই লাগানো হবে।
‘নির্দেশনা আছে ব্যাগ-বস্তা নিয়ে কেউ মণ্ডপে যেতে পারবে না। বিকৃত মস্তিষ্ক কেউ থাকতে পারবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকবে, আমরাও সর্বদা সচেষ্ট থাকব।’
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘পূজো আমাদের, রক্ষা করব আমরাই। এসবি, ডিবিসহ সাদা পোশাকে পুলিশ হাঁটাচলার মধ্যে থাকবে।
‘দেবীর সঙ্গে আমরা কারও তুলনা করি না। পূজার আরাধনার জন্যই পূজা করি। দেবির জন্য পূজা করছি, বড় আনুষ্ঠানিকতা করছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাজেট ৮-১০ লাখ টাকা। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায় মন্দা। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা নেই। সার্বিক অবস্থায় সবাই আমরা উদ্বিগ্ন। মায়ের নিকট এসবেরই পরিত্রাণ চাইবো।’
তাঁতীবাজার শিব মন্দির পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীরেন ঘোষ বীরা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর মায়ের আরাধনার সব ব্যবস্থা করে থাকি। এবারও ব্যত্যয় ঘটবে না। ষষ্ঠীর দিন রাতে আমরা মণ্ডপে প্রতিমা তুলব। আশা করছি আমাদের এবারের দুর্গাপূজা ভালোই কাটবে।’
কোতোয়ালি থানা পূজা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও তাঁতীবাজার শিব মন্দির পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ গগন বলেন, ‘মায়ের প্রতিচ্ছবি দিয়ে প্রতিমা করা হয়। দুর্গা মায়ের আসল রূপই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দুর্গাপূজায় এবার ভক্তিমূলক গান বেশি বাজবে। কারও যেন কোনো সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা হবে।’
সঙ্ঘমিত্র পূজা কমিটির কোষাধ্যক্ষ পিয়াল নাগ বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিসি টিভি লাগাতে বলা হয়েছে। সময়মতো লাগানোও হয়ে যাবে। এবার প্রতিটি মণ্ডপের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানানো হয়েছে।’
নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকায় এসব কর্মকাণ্ড করার সাহস কারও নেই। অন্ততপক্ষে শাঁখারীবাজারে কেউ এসব করতে আসবে না। এমন দুঃসাহস কারও হয়নি। আমরা সার্বক্ষণিক মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। মায়ের প্রতিমা রক্ষায় সর্বদা নিজেদের নিয়োজিত রাখব।’
নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক মু. এনামুল হাসান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোবাইল টিম এখন থেকেই কাজ করছে।
‘আমরা পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ইতোমধ্যে মিটিং করেছি। কিভাবে নির্বিঘ্নে নিরাপত্তার মাধ্যমে আমরা পূজা সমাপ্ত করতে পারব সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
দুর্গাপূজায় মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। আমার থানায় মাত্র দুটি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। তাও আবার এক ছাদের নিচেই। তবু পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পূজার সমন্বয়ক কমিটি করা আছে। তারা সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করবে। ভলেন্টিয়াররা তো আছেই। সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে।’
সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্গাপূজায় আমাদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে আমাদের একজন অফিসার থাকবেন। পূজা উদযাপন কমিটি ভলেন্টিয়ার টিমসহ হিন্দু-মুসলিম মিলে সম্প্রীতি টিম গঠন করা হয়েছে। মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম দিন পর্যন্ত শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন:আকাশপথের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে জাহাজে হজযাত্রী পাঠানোর বাংলাদেশের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে সৌদি সরকার।
সৌদি আরবের জেদ্দায় রোববার বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় সৌদির হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী তাওফিক ফাউযান আল রাবিয়া এই সম্মতির কথা জানান। এর আগে সমুদ্রপথে হজযাত্রী পাঠানোর বিষয়ে প্রস্তাব দেন ধর্ম উপদেষ্টা।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
উপদেষ্টার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, সমুদ্রপথে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পাঠানোর ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের কোনো আপত্তি নেই। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকেও জাহাজ কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে সাগরপথে জাহাজযোগে দুই থেকে তিন হাজার হজযাত্রী পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
সৌদি হজ ও উমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী হজযাত্রীদের জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতিকে আপগ্রেড করার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেন। তিনি হজ এজেন্সির মালিক বা তাদের প্রতিনিধির অনুকূলে মুনাজ্জেম (মাল্টিপল) ভিসা ইস্যুর ব্যাপারেও ধর্ম উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।
এছাড়া রুট টু মক্কা কর্মসূচির আওতায় ২০২৩ ও ২০২৪ সালে হজযাত্রীদের বেশ কিছু লাগেজ হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও মন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টাকে আশ্বাস দেন।
এ বছর সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি এজেন্সিকে কমপক্ষে দুই হাজার হজযাত্রী পাঠানোর কোটা নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে ধর্ম উপদেষ্টা ২০২৪ সালের মতো এজেন্সিপ্রতি ২৫০ জন কোটা পুনর্নির্ধারণের অনুরোধ জানালে সৌদি মন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন।
এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রীকে সহায়তা করেন সে দেশের হজ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক ডেপুটি মিনিস্টার ড. হাসান আল মানাখেরা এবং হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বদর আল সেলামি।
এ সময় বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ব্রিগেডিয়ার রাকিবুল্লাহ, জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ মঈনুল কবির, জেদ্দা হজ মিশনের কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম ও হজ কনসাল মুহাম্মদ আসলাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে ৯ অক্টোবর বুধবার। শুভ মহালয়ায় দেবীর আবাহন শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দেবী বরণের প্রস্তুতি। প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে রং-তুলির আঁচড় শেষে প্রতিমা মণ্ডপে নেয়ার প্রস্তুতি।
দুর্গোৎসবে মন্দিরে আগত দর্শনার্থীদের নজর কাড়তে সাজসজ্জায় নানা উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন মন্দিরে চলছে থিমভিত্তিক সাজসজ্জার কাজ। সারাদেশে বইছে উৎসবের আমেজ। সায়ংকালে ধূপের ধোঁয়া, ঢাক-ঢোল, উলুধ্বনি আর কাঁসর-মন্দিরার সঙ্গে ভক্তিমন্ত্রে মেতে ওঠার অপেক্ষায় পূজামণ্ডপ।
সরকারি হিসাবে এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। বুধবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব। এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও ১৩ অক্টোবর রোববার দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এই উৎসবের।
কৈলাশ থেকে এ বছর দেবী দুর্গা মর্ত্যে আগমন করবেন দোলায় চড়ে। আর স্বর্গলোকে ফিরে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে।
সরেজমিনে রাজধানীর ভিন্ন মন্দিরে দেখা গেছে, বরাবরের মতোই পূজার জোর প্রস্তুতি চলছে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালি মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন, লালবাগ ঋষিপাড়া মন্দির, রাজারবাগ কালিমন্দির, শাঁখারি বাজার মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে।
রং-তুলির কাজে দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ ফুটিয়ে তোলায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। তাদের নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় কৃত্রিম জীবন পাবেন দেবী দুর্গা, শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুরসহ অন্যান্য প্রতিমা।
কোনো কোনো প্রতিমায় পরানো হচ্ছে শাড়ি, হাতের বালাসহ নানা গহনা। পাশাপাশি আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, মণ্ডপ ও তার আশপাশে সাজসজ্জার কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত পূজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। দুর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবম্বীদের মধ্যে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। কেউ কেউ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পূজাকে সামনে রেখে সারা দেশে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকার তার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
রমনা কালি মন্দিরের পুরোহিত হরিচাঁদ চক্রবর্তী জানান, আগামী ৯ অক্টোবর সকাল ৮টা ৪৪ মিনিটের মধ্যে মহাষষ্ঠী কল্পনারম্ভ শেষ করতে হবে। শায়ণকালে দেবীর অধিবাস ও আমন্ত্রণ। ১০ অক্টোবর সকাল ৭টা ৫৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের মধ্যে দেবীর মহাসপ্তমী পূজা শেষ করতে হবে।
১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৫২ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমী পূজা ও ৬টা ৫২ মিনিটে আরম্ভ হবে কুমারী পূজা। পরে ৭টা ৪১ মিনিটের মধ্যে সন্ধী পূজা শেষ করতে হবে। ওইদিনই সকাল ৭টা ৪১ মিনিট পর মহানবমী আরম্ভ ও ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহানবমীর বিহিত পূজা শেষ করতে হবে।
১২ অক্টোবর ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে মহানবমীর বিহিত অধিক পূজা শেষ করতে হবে। একই দিন সকাল ৭টা ৩৭ গতে পূর্বাহ্নের মধ্যে দশমী পূজা সমাপনান্তে বিসর্জন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, পূজার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সারা দেশেই কেন্দ্রীয় ও প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে পূজার। ইতোমধ্যে আমরা সারাদেশে নির্দেশনা দিয়েছি ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে পূজা করার জন্য। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে।
ইতোমধ্যে সরকারের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। সেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ আইজিপি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, পূজাকে ঘিরে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিরাপত্তায় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সবার মধ্যে আস্থার মনোভাব রয়েছে। আশা করছি, শারদীয় দুর্গোৎসবে কোনো সমস্যা হবে না।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদী সংলগ্ন ঘাসিয়া চরে দিনদুপুরে হঠাৎই বাড়িতে হানা দিয়েছে বিশাল এক কুমির। বাড়ির খোঁয়াড়ের হাঁস-মুরগির লোভে প্রাণীটি সেখানে আসে বলে ধারণা স্থানীয়দের। এরপর আতঙ্কিত লোকজনের চিৎকারে কুমিরটি বাড়ির লাগোয়া পুকুরে নেমে পড়ে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর চরঘাসিয়া গ্রামের চর ঘাসিয়ায় মজিবুল পাঠান বাড়ির পুকুর থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বন বিভাগের কর্মীরা কুমিরটি উদ্ধার করেন।
বাড়ির কর্তা শাহ আলম মাঝি জানান, কুমিরটিকে তাদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বুধবার ভোরে কুমিরটি বসতবাড়ির পুকুরে নেমে যায়। সারাদিন ওই পুকুরেই ছিল। পরে রাতে কুমিরটি তাদের হাঁস-মুরগি খেতে খোঁয়াড়ে হানা দেয়। তখন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে কুমিরটি ধরে ফেলা হয়। বন বিভাগের লোকজন এসে কুমিরটি নিয়ে যায়।
উপজেলা বন বিভাগের রেঘ্হ সহকারী মতিয়ুর রহমান জানান, কুমিরটি বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সাম্প্রতিক বন্যার সময় থেকে দু’মাস ধরে কুমিরটি মেঘনা নদীর চান্দারখাল এলাকায় বিচরণ করছিলো। নদীতে আরও কয়েকটি কুমির আছে বলে স্থানীয় জেলেরা দাবি করেছেন।
রায়পুর উপজেলা বন কর্মকর্তা চন্দন ভৌমিক জানান, উদ্ধার করা কুমিরটি জেলার সহকারী বন সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। রাতে কুমিরটি ঢাকায় পাঠানো হবে।
দেশজুড়ে চলমান বৃষ্টির আবহ সহসাই বন্ধ হচ্ছে না। আরও সাতদিন অর্থাৎ চলমান অক্টোবর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত মোটামুটি সারা দেশেই হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার দেয়া পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়া বার্তায় আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের জনবহুল রাজধানী শহর ঢাকার বাতাসের মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
সোমবার সকাল ৯টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২২৭ নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে এই নগরী। সূত্র: ইউএনবি
ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা যথাক্রমে ১৮৯, ১৭৮ ও ১৬৫ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
সাধারণত একিউআই স্কোর ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ‘মাঝারি’ পর্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ এবং ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়।
২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয় এবং ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) বলছে- বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হার বেড়ে গেছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য