যুক্তরাষ্ট্রে বাতিল হলো গর্ভপাত অধিকার আইন। দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার ঐতিহাসিক এ রায় দেয়। এতে দেশজুড়ে গর্ভপাতকে বৈধতা দেয়া ১৯৭৩ সালের আইনি সিদ্ধান্ত ‘রো বনাম ওয়েড’ আর থাকছে না। ফলে প্রতিটি রাজ্যই এখন নিজস্বভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে পারবে।
রায়ে বিচারকরা জানান, সংবিধান গর্ভপাতের অধিকার দেয় না। সিদ্ধান্তের পক্ষে সমর্থন দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে তিনজন।
এ রায়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে। প্রজনন অধিকারের সমর্থকরা বলছেন, লাখ লাখ নারী গর্ভপাত পরিষেবাগুলো নিতে পারবেন না।
প্রজনন অধিকার সংগঠন গুটমাচার ইনস্টিটিউট বলছে, ১৯৭৩ সালের আইনি নজির উল্টে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৪টির বেশি রাজ্যে এখন গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে নিম্ন আয়ের নারীর ওপর প্রভাব ফেলবে।
BREAKING: The Supreme Court just overturned Roe v. Wade, ending our constitutional right to abortion. We know you may be feeling a lot of things right now — hurt, anger, confusion. Whatever you feel is OK. We’re here with you — and we’ll never stop fighting for you.
— Planned Parenthood (@PPFA) June 24, 2022
বিচারকরা জানান, আগের আইনে ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত বৈধ ছিল। এটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই।
রো বনাম ওয়েডের রায়ে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, সংবিধানের অধীনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার একজন নারীর গর্ভাবস্থা বন্ধ করার ক্ষমতাকে রক্ষা করে।
সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯২ সালের সাউথইস্টার্ন পেনসিলভানিয়া বনাম ক্যাসি প্ল্যানড প্যারেন্টহুড নামে একটি রায়ে গর্ভপাতের অধিকারকে পুনরায় নিশ্চিত করেছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, গর্ভপাতের বিষয়ে ‘অযথা বোঝা’ চাপিয়ে দেয়া আইনগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রক্ষণশীল বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো বলেন, ‘রো এবং প্ল্যানড প্যারেন্টহুড বনাম কেসি ভুল ছিল। এটি অবশ্যই বাতিল করা উচিত।
‘আমরা মনে করি যে রো এবং কেসিকে অবশ্যই বাতিল করা উচিত। সংবিধানে গর্ভপাত উল্লেখ নেই। এ ধরনের অধিকার সাংবিধানিক বিধান দ্বারা সুরক্ষিত নয়।’
বিচারপতি ক্লারেন্স থমাস, নিল গর্সুচ, ব্রেট কাভানাফ এবং অ্যামি রায়ের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে দেয়া তিন বিচারপতি ট্রাম্পের নিয়োগপ্রাপ্ত।
উদারপন্থি বিচারপতি স্টিফেন ব্রেয়ার, সোনিয়া সোটোমায়র এবং এলেনা কাগান ভিন্নমত পোষণ করেন।
তারা জানান, ‘এটা আদালতের জন্য দুঃখের খবর। তবে লাখ লাখ আমেরিকান নারী আজ একটি মৌলিক সাংবিধানিক সুরক্ষা হারিয়েছেন। আমরা ভিন্নমত পোষণ করছি।’
জনমত জরিপ দেখা গেছে, বেশির ভাগ আমেরিকান গর্ভপাতের অধিকারকে সমর্থন করেন।
গত মাসের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথিতে ঐতিহাসিক গর্ভপাত অধিকার আইন বাতিল হতে পারে বলে আভাস মিলেছিল। রাজনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো সেই নথি প্রকাশ করেছিল।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় সাউথ সুদানে অপহরণ হওয়া বাংলাদেশ পুলিশের এসআই আশেকুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় আনুমানিক সন্ধ্যা ছয়টায় একটি গোষ্ঠী তাকে অপহরণ করে। পরবর্তীতে কাল রাতেই মিশন কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মনজুর রহমান বলেন, ‘সাউথ সুদানের মালাকাল টিম সাইটে নিয়োজিত পুলিশ কম্পোন্যান্টের সাথে নিয়মিত নিরাপত্তা টহলকালে এ ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘সাব-ইন্সপেক্টর মো. আশেকুর রহমান সুস্থ আছেন। তিনি ইনডিভিজুয়াল পুলিশ অফিসার (আইপিও) হিসেবে শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন।’
এছাড়া সাউথ সুদান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশের সকল শান্তিরক্ষী সুস্থ ও নিরাপদে রয়েছেন বলেও এসময় জানান তিনি।
চলতি বছরের ২১ এপ্রিল আইপিও হিসেবে দক্ষিণ সুদানে যান আশেক। এসপি থেকে এসআই পর্যন্ত বিভিন্ন পদের মোট ১১ জন সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ওই দলে।
আরও পড়ুন:সবচেয়ে কম বয়সে বিশ্বের সব দেশ ঘুরে গিনেস গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডর্সে নাম ওঠা লেক্সি আলফোর্ড বিশ্ব ভ্রমণে বেরিয়ে নানা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী এই তরুণী তার ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি শেয়ার করেছেন সেসব অভিজ্ঞতা। কেমন ছিল ভ্রমণ, কোথায় খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে; এতে জানিয়েছেন সে কথা।
ডেইলি মেইল বলছে, লেক্সি মন্দ অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি তালিকা করেছেন ১০টি দেশের। এতে বাংলাদেশের নাম আছে ৯ নম্বরে।
বাংলাদেশসহ ওই ১০টি দেশে তিনি নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। এসব দেশ নারীদের ভ্রমণের জনটা কতাটা নিরাপদ, কথা বলেছেন সে প্রসঙ্গেও। তিনি বলেন, মৃত্যুর ইচ্ছা না থাকলে এসব দেশ ভ্রমণ করা উচিত নয়।
লেক্সির মতে তালিকায় এক নম্বরে থাকা আফগানিস্তান একটি সুন্দর দেশ। আফগানিস্তানের ঐতিহ্য, খাবার কিংবা ইতিহাস সবই তাকে মুগ্ধ করেছে। তবে তালেবান ক্ষমতায় বসার পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ এ দেশ।
লেক্সির করা তালিকায় বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। অনভিজ্ঞদের এ দেশে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত এখানে ছোটখাটো অপরাধ, পকেটমার এবং ডাকাতির মতো হিংসাত্মক অপরাধের হার খুবই বেশি।
লেক্সি বলেছেন, এসব অপরাধ প্রায় প্রতিটি দেশেই ঘটে, তবে মনে রাখবেন, যেহেতু এখানে খুব কম পর্যটক, সেজন্য আপনি যখনই রাস্তায় থাকবেন তখন আপনিই হবেন অপরাধীদের টার্গেট।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নারীদের ভ্রমণের জন্য একটি অস্বস্তিকর এবং কঠিন জায়গা। গড়ের তুলনায় এখানে যৌন হয়রানির প্রবণতা বেশি।
এতকিছু সত্ত্বেও বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য একটি অনন্য সাধারণ জায়গা বলে মনে করেন এই পর্যটক। বিশেষ করে সুন্দরবনসহ বেশকিছু জায়গা ঘোরার জন্য অসাধারণ।
লেক্সির তালিকায় ১০ নম্বরে আছে উত্তর কোরিয়ার নাম।
দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’ এখন রাজধানীর মহাখালীতে।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে স্বপ্নর নতুন এ আউটলেট উদ্বোধন করা হয়।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির হেড অব রিটেইল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সাইফুল আলম রাসেল, স্বপ্নর রিজিওনাল হেড অব অপারেশন্স আশরাফুল ইসলাম, রিজিওনাল ম্যানেজার অপারেশন্স নাসিরুল কবির, হোটেল জাকারিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া ও পরিচালক মো. আলী হোসেন মিয়াসহ অনেকে।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘স্বপ্ন এখন দেশের ৫৬টি জেলায়। মহাখালীর নতুন এই আউটলেটে আমাদের সেবার পরিসর আরও বিস্তৃত হবে। আশা করছি স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পরিবেশে গ্রাহকরা নতুন এই আউটলেটে নিয়মিত বাজার করবেন।’
স্বপ্নর অপারেশনস ডিরেক্টর আবু নাছের জানান, উদ্বোধন উপলক্ষে স্বপ্নর পক্ষ থেকে গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মাসব্যাপী আকর্ষণীয় সব অফার। বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি ছাড়াও থাকছে নগদ মূল্যছাড়।
নতুন আউটলেটের ঠিকানা: হোল্ডিং নম্বর ৩৫, বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়ক (হোটেল জাকারিয়ার নিচে), মহাখালী, ঢাকা।
মহাখালীর আউটলেটের হোম ডেলিভারির জন্য যোগাযোগের নম্বর: ০১৪০১-১৮৮১২১।
আরও পড়ুন:বৈশ্বিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপে জোর দিয়ে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সংঘর্ষ বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ বয়ে আনবে।
সিঙ্গাপুরে এশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা সম্মেলন সাংগ্রি-লা সংলাপে অংশ নিয়ে রোববার এ কথা বলেন তিনি।
লি শাংফুর ভাষ্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিকাশের জন্য পৃথিবী যথেষ্ট বড় জায়গা।
তিনি বলেন, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিভিন্নভাবে (দেশ দুটি) আলাদা, কিন্তু এ কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানো এবং সহযোগিতা গভীর করার ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষেত্র ও সাধারণ আগ্রহ সৃষ্টিতে দুই পক্ষ বিরত থাকতে পারে না।
‘এটি অনস্বীকার্য যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মারাত্মক কোনো সংঘর্ষ বা বিরোধ হবে বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ।’
গণতান্ত্রিক শাসনে থাকা তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর এবং সেমিকন্ডাকটর চিপ রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয় নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয় চীনের। সর্বশেষ শনিবার সংবেদনশীন তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নৌযান, যাকে ‘ইচ্ছাকৃত উসকানির ঝুঁকি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন।
আরও পড়ুন:ভারতের ইতিহাসে বিরতম ট্রেন দুর্ঘটনা। এটিকে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিয়তির পরিহাস কাকে বলে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বাবা-মা কোনোক্রমে রক্ষা পেলেও শেষ হয়ে গিয়েছে তাদের সন্তানরা। নিজে বেঁচে গেলেও এখন সেসব বাবা-মায়ের সব হারানোর বুক ফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাস্থল ও আশেপাশের হাসপাতালগুলো।
৪০ বছর বয়সী লালজি সাগাই। বর্তমানে তার বড় ছেলের ঠাঁই হয়েছে সরো হাসপাতালের মর্গে। আর ছেলের মরদেহ পেতে হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন মা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন বিহারের মধুবনীর বাসিন্দা লালজি সাগাই। উন্নত জীবনের আশা নিয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা।
পেশায় নিরাপত্তাকর্মী লালজি ভেবেছিলেন তার মতোই কাজ করবে দুই সন্তান। কিন্তু নিয়তির লিখন ছিল ভিন্ন।
চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কোচের যাত্রী ছিলেন মা ও দুই ছেলে। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় লালজির ছোট ছেলে ইন্দর বেঁচে গেলেও বড় ছেলে সুন্দরের মৃত্যু হয়।
বালেশ্বরের সরোতে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিজের ছেলের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে লালজি সাগাই বলেন, ‘আমরা ৯ জনের একটি দল চেন্নাই যাচ্ছিলাম। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করি আমি। যেহেতু আমাদের গ্রামে কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, তাই আমি পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয় নিশ্চিত করতে দুই ছেলেকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু নিয়তি আমাদের জন্য এমন কিছু পরিকল্পনা করেছিল, যা আমি দুঃস্বপ্নেও অনুমান করতে পারিনি।’
সাগাই যখন কথা বলছিলেন, কষ্টে তার গলা বুজে আসছিল। বুকফাঁটা কান্না আটকে মধ্যবয়সী মা বলতে থাকেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার বড় ছেলে মারা গিয়েছে। নিজের হাতে ছেলের লাশ সরিয়েছি।’
খরচ যাই হোক, ছেলের মরদেহ নিয়ে গ্রামে ফিরতে চান তিনি।
আরও পড়ুন:ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানাগা স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে আহত ও নিহতের সংখ্যা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটে হাওড়াগামী ব্যাঙ্গালুরু-হাওড়া যশবন্তপুর সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই ট্রেনে ছিলেন বাংলাদেশের কয়েকজন যাত্রীও। দুর্ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে কোনো খোঁজ না পাওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী। তবে দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের কারো নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র জানিয়েছে। তবে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনগুলোতে ঠিক কয়জন বাংলাদেশি যাত্রী ছিলেন ও তাদের মধ্যে কয়জন আহত হয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।
কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, স্থানীয় সাংবাদিকরা হাইকমিশনকে জানিয়েছে যে দুয়েকজন বাংলাদেশি সামান্য আহত হয়েছেন। তারা ওড়িশার সরো সরকারি হাসপাতাল ও বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে দুর্ঘটনার পর থেকে কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর মধ্যে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে তিন জনের একটি দল দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) মারেফত তারিকুল ইসলাম।
কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আহতদের একাংশ কলকাতায় ফিরতে শুরু করেছেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে রাজশাহীর বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সী মো. রাসেলুজ্জামানকে সরো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে নিয়ে স্থানান্তর করা হয়।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সাজ্জাদ আলীও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সে সঙ্গে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না একাধিক বাংলাদেশিকে। নিখোঁজদের মধ্যে পাবনার বাসিন্দা আসলাম শেখ, খুলনার বাসিন্দা রুপা বেগম খান এবং ঢাকার বাসিন্দা খালেদ বিন আওকাত ও ৩৫ বছর বয়সী মোক্তার হোসেন রয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর একটি হটলাইন নম্বর (৯১৯০৩৮৩৫৩৫৩৩) চালু করে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। দেশ থেকে অনেকেই ওই নম্বরে ফোন করে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিচ্ছেন।
উপ-হাইকমিশন তাদের তালিকা তৈরি করছে। হাইকমিশনের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালিকা ধরে তাদের খোঁজ নেবে।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দমাতে পশ্চিমা বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর কাছে আরও অস্ত্র চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। সে সঙ্গে ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে ফের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মলদোভায় ইউরোপিয়ান পলিটিক্যাল কমিটির সভায় ইউক্রেনকে ন্যাটো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ) অন্তর্ভুক্তির জন্য দাবি জানান জেলেনস্কি।
পরে নরওয়ের অসলোতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করা প্রস্তাব উঠলে এর পক্ষে ও বিপক্ষে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর নেতারা।
মলদোভার সভায় জেলেনস্কি বলেন, ‘শুধু ইউক্রেন নয়, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সব দেশগুলোকেই এ দুই জোটে (ন্যাটো ও ইইউ) অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
কারণ হিসেবে, যেসব দেশ কোনো নিরাপত্তা জোটের সঙ্গে নেই, রাশিয়া তাদের গিলে খেতে চায় বলে মন্তব্য করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এ সময় ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছ থেকে আরও সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো (সহযোগিতা) শুধু মানুষের জীবন রক্ষাই করছে না, আক্ষরিক অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজেও সহায়তা করছে।’
রাশিয়াকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই একসময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ মলদোভায় পশ্চিমা দেশগুলো এ সম্মেলন করেছে বলে আল জাজিরার খবরে বলা হয়।
সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক উপস্থিত ছিলেন।
তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি লিথুনিয়ার ভিলনিয়াসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়ে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এ সময় ন্যাটো প্রধান জেন্স স্টলেনবার্গ বলেন, ‘ন্যাটোর পরিসর বাড়াতে মস্কোর যে কোনো মাথাব্যাথা নেই, এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত।’
২০০৮ সালে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত জোটের নেতাদের এমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি যা এ সামরিক জোটে কিয়েভের অন্তর্ভুক্তির গতিকে ত্বরান্বিত করে।
ন্যাটো সদস্যভুক্ত মিত্রদের সঙ্গে জোটে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেছে ইউক্রেন। কিন্তু, এ মুহূর্তে দেশটিকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করলে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো মোড়ল দেশগুলো।
লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেন, ‘১৪ বছর ধরে ন্যাটোর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করছে কিয়েভ। এ সময়ে তারা দুবার আক্রমণের শিকার হয়েছে।
‘ইউক্রেনকে আসলেই ন্যাটোর সদস্যপদ দেয়া যাবে কি না এবং তা করা গেলে ঠিক কিভাবে ও কত সময়ের মধ্যে দেয়া যায়, এ বিষয়ে আমাদের একটি ফলপ্রসু আলোচনা করার সময় এসেছে।’
এ সময় ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দিতে তাড়াহুড়া করা হয়ে যাচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে জার্মানি ও লুক্সেমবার্গ।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্নালেনা বায়েরবক বলেন, ‘ন্যাটোর উন্মুক্ত দ্বার নীতি সবসময়ই রয়েছে। কিন্তু যুদ্ধরত কোনো দেশকে এখন জোটে অন্তর্ভুক্ত করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না।’
তবে হাঙ্গেরি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি (ন্যাটোতে) নিয়ে আসন্ন সম্মেলনে কোনো আলোচনা হবে না।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য