পৃথিবী যত উত্তপ্ত হচ্ছে, ততই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বিছানা। পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ মানুষের খাদ্য, কেনাকাটা বা ভ্রমণকে যেমন প্রভাবিত করছে, তেমনি তা প্রভাব ফেলছে তার রোমান্টিক এবং যৌন সম্পর্কেও।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালে চালানো একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের প্রায় ৩৮ শতাংশ বিশ্বাস করেন, সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত।
আগের বছর অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তাদের কম সন্তান নেয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
সেক্স থেরাপি অ্যাপ ব্লুহার্টের লরা ভোয়েলস বলছেন, ‘আমার বেশ কিছু ক্লায়েন্ট আছে, যাদের জন্য পরিবেশগত উদ্বেগ একটি সমস্যা। এটি তাদের সম্পর্কের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করেছে।
‘বিশেষ করে তারা কার সঙ্গে ডেট করবে (সেই ব্যক্তি কি পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন?), তারা কোথায় ডেটিং করবে (রেস্তোরাঁটি কি টেকসই উপাদান ব্যবহার করে?), কীভাবে তারা সঙ্গম করে (সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব গর্ভনিরোধক কোনটা?) এবং কীভাবে তাদের সন্তান হবে (তাদের কি দত্তক নেয়া উচিত?) এসব বিষয়ে দারুণ প্রভাব ফেলে পরিবেশ নিয়ে এই উদ্বেগ।’
ফিলিপাইনের ম্যানিলার বাসিন্দা ক্যারি নাকপিলের বয়স ২৬। তিনি সাসটেইনিবিলিটি এবং পরিবেশবিষয়ক একটি পডকাস্ট চালান। এই উদ্বেগগুলো ভীষণভাবে তিনি অনুভব করেন।
নাকপিল সন্তান নিতে চান। পাশাপাশি বিশ্বকে জলবায়ু সংকট থেকে রক্ষা করতেও চান। যদিও তিনি জানেন, এই দুটো একসঙ্গে পাওয়া কঠিন।
একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, উন্নত কোনো দেশে একটি সন্তান নেয়া মানেই বছরে প্রায় ৫৮.৬ টন অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপাদন। পুনরুৎপাদনের চেয়ে পৃথিবীর নবায়নযোগ্য সম্পদের বেশির ভাগই মানুষ ইতোমধ্যে ব্যবহার করছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি কেবল এই ব্যয়কে আরও বাড়াবে।
লরা ভোয়েলস বলছেন, ‘পরিবেশগত প্রভাবের কারণে বা তাদের সন্তানরা জলবায়ু সংকটের প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে অনেকে সন্তান না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। গর্ভবতী হয়ে পড়ার চিন্তায় দম্পতিরা ভীত থাকেন। আর এ উদ্বেগের কারণে তারা সঙ্গমের মুহূর্তকে পুরোপুরি উপভোগ করতে পারছেন না।’
বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বাড়ানোর চেয়ে অনেকেই ভিন্ন পন্থার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তবে ভোয়েলস বলছেন, কারও কারও জন্য কনট্রাসেপটিভ বা গর্ভনিরোধকগুলো পরিবেশ উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের হিসাবে প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন ল্যাটেক্স কনডম উৎপাদন হয়। ব্যবহারের পর যেগুলোর বেশির ভাগই ফেলে দেয়া হয় বিভিন্ন স্থানে। এই কনডম পুনর্ব্যবহার করা যায় না। কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব কনডম উৎপাদনের দাবি করলেও সেগুলো সচরাচর পাওয়া যায় না।
কনডমের বিকল্প অন্যান্য গর্ভনিরোধক পদ্ধতি যেমন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ও ভ্যাসেকটমি রয়েছে। তবে এগুলো সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে না। তাই কেবল ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে’ থাকা দম্পতিদের জন্য এগুলো ভালো বিকল্প হতে পারে। তবে অন্যদের ক্ষেত্রে (বহুগামী) এটা সেরা বিকল্প নাও হতে পারে।
ভোয়েলস তাই জোর গলায় বলেছেন, ‘কনডম ব্যবহারের অপরাধবোধ এড়াতে মানুষের যৌন স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নেয়া একেবারেই উচিত নয়।
‘ধরুন আপনি পরিবেশবান্ধব গর্ভনিরোধক পাচ্ছেন না, কিন্তু জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা মেনে চলছেন। তাহলে নিশ্চিত থাকুন, আপনি আপনার সাধ্যের সবটুকুই ইতোমধ্যে করেছেন।
‘এটা খারাপ না, কারণ এর বিকল্প হলো একটি সন্তানধারণ, যা পরিবেশের জন্য একটি কনডমের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকর।’
অনেকে কোন ধরনের গর্ভনিরোধক ব্যবহার করবেন সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। এই অনুভূতি যৌনতায় আগ্রহ কমিয়ে দেয়ার অন্যতম কারণ।
ভোয়েলস বলেন, ‘আপনি যদি উদ্বিগ্ন থাকেন তবে অন্য কিছুতে মনোযোগ দেয়া খুব কঠিন। আপনার উদ্বেগের শারীরিক লক্ষণগুলো যদি অনুভব করেন, তবে যৌন অভিজ্ঞতা উপভোগ করা বা যৌনতা নিয়ে চিন্তা করার অবস্থায় থাকবেন না আপনি।’
এমন কিছু মানুষ আছে যাদের কাছে যৌনতা একটি চমৎকার স্ট্রেস রিলিভার এবং উদ্বেগ মোকাবিলার পদ্ধতি। তাদের ক্ষেত্রে ইকো-অ্যাংজাইটি বা পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ যৌনতা বাড়াতে পারে।
ভোয়েলস বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, “এ ধারণা ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে’ থাকাদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ‘সত্য’ হতে পারে। তাদের গর্ভবতী হওয়া বা কনডম ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তা করতে হয় না।”
তবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কগুলোও পরিবেশগত উদ্বেগের নাগালের বাইরে নয়। ভোয়েলস বলেন, ‘ইকো-উদ্বেগ আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে সম্পর্ককেও প্রভাবিত করতে পারে। যদি আপনার মধ্যে একজন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে বেশি মনোযোগী হন আর অন্যজন ততটা নন, তবে তা সম্পর্কের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’
ফিরে যাই নকপিলের ঘটনায়। তিনি চার বছর ধরে তার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে থাকছেন। নকপিল বলেন, ‘দুজন মানুষকে একত্রিত করার বিষয়টি বেশ জটিল। তবে যুগল হিসেবে যখন আপনারা একটি সবুজ ভবিষ্যতের দিকে এগোবেন, তখন বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে।’
এ ধরনের যুগলদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন সেক্স থেরাপিস্ট ভোয়েলস। তার পরামর্শ, কোন বিষয়টিকে তারা অগ্রাধিকার দেবে, সে বিষয়ে তাদের খোলামেলা আলোচনা করা উচিত। একে-অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। মতের কিছু অমিল থাকতেই পারে। এগুলোকে মেনে নিতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এ অমিলগুলোকে কীভাবে সহজ করা যায়।
নকপিল জানিয়েছেন, তিনি এবং তার প্রেমিক একটি মধ্যম অবস্থান খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টা এমন না যে আমরা সব সময় সবুজে থাকব। এটা আদর্শবাদী, তবে (আমার বয়ফ্রেন্ড) আমাকে বাস্তববাদী রাখে। এটা চমৎকার যে একটি মধ্যম অবস্থান থেকে চিন্তা করি, যেখান থেকে দুজনের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করে অনেক বিষয়ে ছাড় দিয়ে থাকি।’
নকপিল স্বীকার করেছেন, দৈনন্দিন জীবন এবং সম্পর্কের বাস্তবতার সঙ্গে পরিবেশের যত্নের ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হতে পারে, তবে তিনি এটি বজায় রাখতে আগ্রহী।
‘এই মুহূর্তে জানি না কীভাবে (আমার পরিবেশের বিষয়ে চেতনা) বন্ধ করতে হবে বা আমি কি তা সত্যি চাই?’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এসব উদ্যানকে প্রকৃতির সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কেউ এ সংক্রান্ত কার্যকর প্রস্তাব দিলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বার্ষিক বোটানিক্যাল কনফারেন্সের উদ্বোধন অধিবেশনে ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।’
উপদেষ্টা জানান, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না। এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি।
তিনি আরও জানান, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
আরও পড়ুন:পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকার ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্ষার আগে আপাতত ছয়টা খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে সক্ষম হব এবং খুব শিগগিরই আরও চারটা খাল দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ শুরু করব এবং এই বর্ষার আগেই বাকি আরও ৯টির কাজ শুরু হবে।
‘অর্থাৎ, এ বছরের মধ্যেই ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
রাজধানীর বাউনিয়ায় (পুলিশ স্টাফ কলেজের পেছনে) রবিবার ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসির আওতাধীন ছয়টি খাল দখল ও দূষণমুক্ত করে খালকেন্দ্রিক ব্লু নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হয়তো এই ১৯টি খালকেন্দ্রিক মাস্টার প্ল্যান করে ফেলা হবে। কোথায় কোথায় আমাদেরকে একদম সুনির্দিষ্ট আরও কিছু কাজ করতে হবে, সেটা ঠিক করে আগামী বাজেটকে সামনে রেখে কাজগুলো ঠিক করে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থের সংস্থান করতে পারব বলে আশা করি।’
খালের পাড়ে চাষাবাদ করা যায় কি না তা নিয়ে একটা পরিকল্পনা আছে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খালের পাড়গুলোতে সবুজ ফিরিয়ে আনতে পারি কি না আর খালের মধ্যে মাছ আনা যায় কি না, এটা আমরা দেখতে চাচ্ছি। সেটা কেমন করে ফিরিয়ে আনব, কেমন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনা যায়, সেই চেষ্টাটা আমরা করব। এটা আমাদের মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক উদ্যোগ হলেও নগরবাসীকে এ কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলোর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। খালগুলো হবে প্রাণকেন্দ্র।
আজ দখল ও দূষণমুক্ত কার্যক্রমের জন্য উদ্বোধন হওয়া ছয়টি খাল হচ্ছে বাউনিয়া খাল, রূপনগর খাল, বেগুনবাড়ী খাল, মান্ডা খাল, কালুনগর খাল ও কড়াইল লেক। এ ছয় খালের মোট দৈর্ঘ্য ২৩.৬৬ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:পরিবেশ রক্ষার প্রত্যয় নিয়ে দেশে যাত্রা শুরু করল অ্যাপ্লায়েড ক্লাইমেট থিয়েটার-বাংলাদেশ তথা অ্যাক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সংস্থার।
রাজধানীর উত্তরায় রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় এর যাত্রা শুরু হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে থিয়েটারকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে সংস্থাটি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পারফর্মিং আর্টস একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এটি জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর আয়োজন করা হয় জলবায়ু সচেতনতাবিষয়ক সেমিনার। এতে বক্তব্য দেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপিং সাস্টেইনেবিলিটি তথা ল্যান্ডসের চেয়ার এসথার ফেরি-কেনিংটন, এরগন থিয়েটার কোম্পানির কো-আর্টিস্টিক ডিরেক্টর রবিন লায়ন্স, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান ড. সাইদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান।
সেমিনার শেষে মঞ্চস্থ হয় ‘ড্রট ইন দ্য ফেইট অফ ফারমার’ নাটক।
নজরুল সৈয়দের রচনা ও আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় নাটকটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের জীবনে আসা প্রতিকূলতা এবং তা মোকাবিলার সংগ্রাম তুলে ধরে।
নাটকের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন বন্ধন সাহা। পরিবেশনায় ছিলেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘থিয়েটারের শক্তি মানুষের আবেগকে আলোড়িত করার, উপলব্ধিকে চ্যালেঞ্জ করার এবং কর্মে উদ্বুদ্ধ করার মধ্যেই নিহিত।
‘অ্যাক্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাই, যা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা তুলে ধরবে না; বরং মানুষকে একটি টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তার জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’
বৈশ্বিক ও স্থানীয় অংশীদারত্ব
অ্যাক্ট বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ও এরগন থিয়েটারের সহযোগিতায় কাজ করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ, হেলথ সিকিউরিটি ফাউন্ডেশন ও কারিগরি সহযোগী বাইটকুইলের সঙ্গে কাজ করবে।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে জনগণকে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের জনবহুল রাজধানী ঢাকা রোববার সকাল ৯টার দিকে একিউআই স্কোর ২৭৫ নিয়ে বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, আজ রোববারের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর, মিসরের কায়রো ও ভারতের কলকাতা যথাক্রমে ২৮৬, ২৫৬ ও ২০০ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:জনবহুল রাজধানী ঢাকা শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে একিউআই স্কোর ২২২ নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, এদিনের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের কাবুল, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারায়েভো ও মিসরের কায়রো যথাক্রমে ২২৮, ২১৫ ও ২১৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়।
একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:বনভূমি ও পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, অবৈধ দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শনিবার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘বন দখলকারীদের প্রতিরোধ করতে কীভাবে কাজ করতে হয়, তা আমরা জানি। আগামী তিন মাসের মধ্যে দখল হওয়া জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
‘জেলা প্রশাসকদের বনের সীমানা নির্ধারণের কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্টের পর থেকে গাজীপুরে দখল হওয়া ৯০ একর বনভূমির মধ্যে ১৬ একর এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বৃক্ষনিধন ও শিল্পকারখানার দূষণ বন্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে ছাড়পত্র দেয়ার আগে সব দিক পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং নবায়নের সময় জনগণের মতামত নিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের অধিনায়ক, ৬৩ বিজিবির অধিনায়ক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভায় প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সভার আগে অনুমোদিত এই প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব করে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
মৌলভীবাজারের সংরক্ষিত লাঠিটিলা বনের পাঁচ হাজার ৬৩১ একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
কিন্তু জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি বাতিলের সুপারিশ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ওই প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে অনুমোদিত প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় পরিকল্পনা কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় দেশের তৃতীয় সাফারি পার্ক স্থাপন প্রকল্পটি বাতিলের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
মন্তব্য