যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টুইটার হ্যান্ডেলে ফলোয়ার ২ কোটি ৩০ লাখ। তবে এসব ফলোয়ারের অর্ধেকের বেশি নাকি ভুয়া!
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান- স্পার্কটোরোর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এ তথ্য। বুধবার খবরটি প্রকাশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমে।
টেসলার মালিক ইলন মাস্ক টুইটার কেনার বিষয়টি স্থগিতের সিদ্ধান্তের মধ্যেই এ প্রতিবেদন প্রকাশ হলো। ৪৪ বিলিয়ন ডলারে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি কেনার প্রস্তাব করেছিলেন মাস্ক। এতে রাজিও হয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ। তবে শেষমেশ কেনার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন ইলন মাস্ক।
টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে উদ্বেগের কারণে মাস্ক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুয়া এসব অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রপাগান্ডা ছড়ানোয় ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই তো টুইটার কেনার প্রস্তাবের আগে মাধ্যমটির সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছিলেন মাস্ক।
স্পার্কটোরোর বিশ্লেষণ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল @POTUS-এর প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ ফলোয়ারের অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয়। এটি হোয়াইট হাউসে (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয়) বাইডেনের মোট ফলোয়ারের ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ!
ভুয়া বা নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলো কোন জায়গা থেকে খোলা হয়েছে, সেগুলোর প্রোফাইল ছবি, তার মধ্যে কতগুলো নতুন বা পুরোনো এসবের মাপকাঠির ভিত্তিতে সমীক্ষাটি চালিয়েছে স্পার্কটোরো।
যেসব অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বা যেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার হচ্ছে না, রোবটচালিত বা স্প্যাম, সেগুলোকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাইডেনের পূর্বসূরি বারাক ওবামা প্রথমবারের মতো অনলাইনে লাখ লাখ আমেরিকানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের জন্য @POTUS অ্যাকাউন্ট চালু করেছিলেন। ক্ষমতা ছাড়ার আগে ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অ্যাকাউন্টটি হস্তান্তর করেছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের @POTUS45- অ্যাকাউন্টটি নিরীক্ষা করে দেখা যায়, তার অনুসারীর ৪২ দশমিক ৪ শতাংশই ভুয়া।
তবে বাইডেনের ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্টটি প্রেসিডেন্টের হ্যান্ডেলের চেয়ে যে খুব স্বচ্ছ, তা কিন্তু নয়। @JoeBiden-এ ৩ কোটি ২০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে বাইডেনের; যেগুলোর ৪৩ শতাংশই ভুয়া। @POTUS- অ্যাকাউন্ট থেকে এখানে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ বেশি ভুয়া অনুসারী রয়েছে।
টুইটার বলছে, তাদের দৈনিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্তত ২২৯ ব্যবহারকারী। কর্তৃপক্ষ বলছে, ৫ শতাংশের কিছু বেশি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ভুয়া।
টেসলার মালিক মঙ্গলবার এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই ধনকুবের দাবি করেছেন, ২০ শতাংশ টুইটার অ্যাকাউন্ট ভুয়া। টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পরাগ আগারওয়াল তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
টুইটে মাস্ক লেখেন, ‘আমার অফারটি টুইটারের এসইসি ফাইলিং সঠিক হওয়ার ওপর ভিত্তি করে ছিল। তবে টুইটারের সিইও প্রকাশ্যে ৫ শতাংশের প্রমাণ দেখাতে অস্বীকার করেছেন।
‘যতক্ষণ তারা এর প্রমাণ দেখাতে পারবে না, ততক্ষণ কোনো চুক্তি হবে না।’
কদিন আগে স্পার্কটোরোর সমীক্ষায় উঠে আসে, টেসলার মালিক ইলন মাস্কের টুইটার ফলোয়ারদের মধ্যে ২৩ শতাংশের বেশি অ্যাকাউন্টই ভুয়া।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলে রকেট ও ড্রোন হামলার পর ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসরায়েলের ঘনিষ্ট দুই মিত্র হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর তেহরানের ওই আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক যুদ্ধের ইন্ধন যোগাতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদন থেকে এ খবর জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি অফিস অফ ফরিন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) জানিয়েছে, ১৩ এপ্রিলের হামলায় ব্যবহৃত ড্রোন উৎপাদনে জাড়িত ইরানের ১৬ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া ইরানের সামরিক বাহিনী ও অন্যান্য নিষিদ্ধ গোষ্ঠীকে সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করার অভিযোগ এনে দেশটির ইস্পাত উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত পাঁচটি সংস্থা ও গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাহমান গ্রুপকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওএফএসি।
অন্যদিকে, ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ইরানি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে যুক্তরাজ্য।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে জানা যায়। এ হামলায় সাত বছর বয়সী এক ইসরায়েলি শিশু মারাত্মক আহত হয়। এর বাইরে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ইতোমধ্যে ইরানের জবাবের পাল্টা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের অবশ্যই নিজেদের সুরক্ষা করার অধিকার রয়েছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের সামরিক তৎপরতাকে নিরুৎসাহিত করে, দেশটির ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ চালিয়ে যেতে ওএফএসিকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন বলেছেন, ‘যারা ইরানকে হামলায় ইন্ধন দেয় ও তা সমর্থন করে, তাদের সবাইকে এটি স্পষ্ট করতে চাই যে, সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে।’
ট্রেজারি বিভাগের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ইরানের বাণিজ্যিক গ্রেডের মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স শিল্পের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স খাতে ইরানের রাশ টেনে ধরতেই তাদের এ সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটির বাইরে উৎপাদিত প্রযুক্তি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
ইসরায়েলে হামলার পর এ অঞ্চলে ইরানের কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে চলতি সপ্তাহেই সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র। তার পরপরই বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাল ওয়াশিংটন।
ইসলামী প্রজাতন্ত্রের দেশ ইরান ও এর নেতাদের আর্থিক শাস্তির মুখোমুখি করতেই ক্যাপিটল হিলে তড়িঘড়ি করে এসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারাও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে তেহরানের মিত্র দেশগুলো তথা গাজা, ইয়েমেন ও লেবাননে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সরবাহের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
এ বিষয়ে ইইউ-এর পররাষ্ট্র নীতি বিভাগের প্রধান জোসেফ বরেল বলেছেন, ‘তেহরানকে শাস্তি দিতে ও ইসরায়েলের ওপর ভবিষ্যত হামলা প্রতিরোধে সহায়তায় বিদ্যমান ইইউ নিষেধাজ্ঞা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও প্রসারিত করা হবে।’
তবে একইসঙ্গে ইসরায়েলকেও সংযমী হতে বলেছেন তিনি।
বরেল বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি, মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক যুদ্ধ, যা বিশ্বের বাকি অংশ বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। তাই যেকোনো মূল্যে আমাদের এটি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।’
আরও পড়ুন:ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে শুক্রবার। লোকসভার ৫৪৩টি আসনে সাত দফায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গের রয়েছে ৪২টি আসন। শুরুর দিনে এই রাজ্যে তিনটি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। আসন তিনটি হলো-কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার।
বাকি ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হচ্ছে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে। একইসঙ্গে এদিন ভোটগ্রহণ হবে অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভার ৬০টি ও সিকিমের ৩২টি আসনে।
ভারতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো হলো- পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, ত্রিপুরা, তামিলনাড়ু, সিকিম, রাজস্থান, পদুচেরি, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, মণিপুর, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, লাক্ষাদ্বীপ, জম্মু ও কাশ্মীর, ছত্রিশগড়, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৩০৩, কংগ্রেস ৫২, সমাজবাদী পার্টি ৫, বহুজন সমাজ পার্টি ১০, তৃণমূল ২২, ডিএমকে ২৩, ওয়াইএসআর কংগ্রেস ২২ ও টিডিপি ২টি আসনে জয় পেয়েছিল।
গত নির্বাচনে গোটা দেশে নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির ৪০ জন, তৃণমূলের ৯ জন, কংগ্রেসের ৬ জন, ওডিশার বিজেডির ৫ জন মিলিয়ে সর্বমোট ৭৮ জন।
এ বছর ভারতে প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন (১৮-১৯ বছর বয়সী) এক কোটি ৮০ লাখ ভোটার।
ইসরাইলে ইরানের হামলাকে ‘সীমিত আকারের’ বর্ণনা করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, যদি ইরান বড় কোনো হামলা করতে চাইত, তাহলে ইহুদি শাসকগোষ্ঠীর (ইসরাইল) কিছুই অবশিষ্ট থাকত না।
বুধবার তিনি ইরানের রেভলুশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) বার্ষিক প্যারেডে দেয়া ভাষণে এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন।
রাইসি বলেন, ‘এই হামলার জবাবে ইসরাইল যদি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আক্রমণও চালায়, তাহলে তার জবাব হবে বিশাল ও কঠোর।’
ইসরাইল-ইরান সংকট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যখন একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের হুমকি বিরাজ করছে, সে সময়ই এই হুংকার দিলেন ইব্রাহিম রাইসি।
সিরিয়ায় গত ১ এপ্রিল ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। এসব অস্ত্রের বেশির ভাগ ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো।
হামলায় দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। এ হামলায় সাত বছর বয়সী এক ইসরায়েলি শিশু মারাত্মক আহত হয়েছে। এর বাইরে বড় ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ওই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে বার বার বিরত থাকার আহ্বান জানানো হলেও জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইসরাইল।
শনিবারের ওই হামলার প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। তিনি জানান, ওই হামলার নাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রু প্রমিজ’। একইসঙ্গে ইসরাইল থেকে সম্প্রতি যে হুমকি দেয়া হচ্ছে তার জবাব কঠোর ও অগ্নিঝরা হবে বলে পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
১৩ই এপ্রিল ইসরাইলে ইরানের চালানো হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওই অপারেশনের পরে বিশ্ববাসী দেখেছে যে, ‘ট্রু প্রমিজ’ ইহুদি রাষ্ট্রের মিথ্যা আধিপত্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে।”
ভাষণে ইসরাইলি মিত্রদের উদ্দেশে বলেন, ‘যেসব দেশ এই নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে, তারাও তাদের জাতির কাছে লজ্জিত হবে।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে দুই বছরে ৫০ হাজারের বেশি সেনা সদস্য হারিয়েছে রাশিয়া। এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছে বার্তা সংস্থা বিবিসি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মৃত সেনাদের তথ্য সংগ্রহ করে আসছেন বিবিসির প্রতিবেদকরা।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে। এরপর থেকে বিবিসি রাশিয়া, স্বাধীন মিডিয়া গ্রুপ মিডিয়াজোনা ও স্বেচ্ছাসেবীরা মৃতের সংখ্যা গণনা করে আসছে। এই পরিসংখ্যান তৈরিতে কবরস্থানে সেনাদের কবর, বিবিসির অফিসিয়াল রিপোর্ট, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ওপেন সোর্স থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।=
বিবিসি অনুসন্ধান অনুসারে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে ২৭ হাজার ৩০০ জনের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে। তবে সেনা নিহতের সংখ্যা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি রাশিয়া।
বিবিসি বলছে, সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রুশ কর্তৃপক্ষের দেয়া সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা আট গুণ বেশি। যদিও বিবিসির বিশ্লেষণে পূর্ব ইউক্রেনে রুশ-অধিকৃত দোনেস্ক ও লুহানস্কে মৃতের সংখ্যা হিসাবে নেয়া হয়নি। সেটি হিসাবে নিলে রাশিয়ার পক্ষে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হবে।
অন্যদিকে বিবিসি ও মিডিয়াজোনার সঙ্গে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবীরা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া জুড়ে ৭০টি কবরস্থানে নতুন সামরিক কবর গণনা করছেন। কবরস্থানগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে।
ছবি এবং ভিডিও থেকে বোঝা যায় যে এই নতুন কবরগুলোর বেশিরভাগই ইউক্রেনে নিহত রুশ সেনা ও অফিসারদের।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) স্যামুয়েল ক্র্যানি-ইভান্স বলেন, ‘২০২২ সালে যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া জটিল সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য তার পেশাদার ও অভিজ্ঞ সেনাদের ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।
‘যুদ্ধের মধ্যে সেই অভিজ্ঞ সেনাদের অনেকের মৃত বা আহত হওয়ায় তাদের স্থানে অল্প প্রশিক্ষণ বা সামরিক অভিজ্ঞতা আছে এমন স্বেচ্ছাসেবক, বেসামরিক এবং বন্দিদের ব্যবহার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পেশাদার সেনারা যা করতে পারে, বিকল্প সেনারা তা করতে পারে না।’
আরও পড়ুন:মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়। এ ঘটনায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যায় স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কবলে পড়ে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
দেশটির জাতীয় আহওয়া কেন্দ্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আমিরাতের আবুধাবি প্রদেশের ওমান সীমান্তে অবস্থিত আল আইন শহরে ২৫৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ৭৫ বছরে অর্থাৎ ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এটিই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বুধবার সকাল থেকেই জলাবদ্ধতার কারণে দুবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বেশ কিছু ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়।
বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের অন্যতম দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের ফ্লাইট শিডিউল উল্লেখযোগ্য আকারে বিঘ্নিত হয়েছে। অসংখ্য ফ্লাইটকে ভিন্ন দেশে অবতরণ করতে বলা হয়েছে বা আগমন বিলম্বিত করা হয়েছে।
দুবাই ছাড়তে আগ্রহী যাত্রীদের বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ফ্লাইট শিডিউল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে বলা হয়েছে।
বিমানবন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক এক্স অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, ‘অত্যন্ত বৈরি পরিবেশে আমরা বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, আরব আমিরাতের ৭০ বছর বয়সী এক নাগরিক মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন। দেশের উত্তরের রাস আল খায়মাহ প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় তার গাড়িটি ডুবে যায়।
আরব আমিরাতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের কিছু অংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, যার মধ্যে আছে ধসে পড়া সড়ক ও দালান। এগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ওমানে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।
কারাগার থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে।
বুধবার এক সূত্র এএফপিকে এ কথা জানিয়েছে।
সামরিক কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র জানান, গরম আহাওয়ার কারণে দেশটির বয়স্ক কারাবন্দিদের ‘প্রয়োজনীয় যত্ন’ নেয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে ৭৮ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ীর ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ সাময়িক বা সাজা হ্রাসের অংশ কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি অভুত্থানে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। আটক করা হয় সু চি সহ বেশ কিছু নেতাকে।
অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়।
জান্তা সরকার এরই মধ্যে বেশ কিছু মামলায় গোপনে বিচারকাজ শেষ করে কয়েক বছরের কারাদণ্ড হয়েছে অং সান সু চির।
ইসরায়েলে ইরান সরাসরি হামলা চালানোর পর পশ্চিমাসহ অনেক দেশই বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। আরোপ করা হয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা। এবার যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর আরও কঠোর হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে কথা বলেন বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদন জানিয়েছে।
ইয়েলেন বলছেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে ইরানের ওপর। তাদের তেল বাণিজ্যেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে, আমি পুরোপুরি আশা করি যে, আমরা আগামী দিনে ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা দেব।’
ইয়েলেন বলেন, ‘আমরা আমাদের নিষেধাজ্ঞার পূর্বরূপ দেখি না। তবে আমার কাছে ইরানের সন্ত্রাসী অর্থায়ন ব্যাহত করার সব বিকল্প আছে।’
তিনি বলেন, আগেও ট্রেজারি এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট তেল রপ্তানি করার ক্ষমতা হ্রাস করে ইরানের ‘অস্থিতিশীল’ আচরণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে।
ট্রেজারি সেক্রেটারি বলেন, ‘স্পষ্টতই, ইরান কিছু তেল রপ্তানি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আরও কিছু করার আছে। আমি আমাদের প্রকৃত নিষেধাজ্ঞার কার্যক্রমের পূর্বরূপ দেখাতে চাই না, তবে অবশ্যই আমরা সমাধান করতে পারি।’
গত শনিবার ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রথম বারের মতো সরাসরি হামলা চালানো শুরু করে ইরান। শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে এই হামলা হয়।
এই হামলায় একটি সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে আহত হয়েছে এবং একটি সামরিক স্থাপনা সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই হামলার পর পরই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে নানা পক্ষ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য