হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় বাচিক শিল্পী পার্থ ঘোষ।
শনিবার সকালে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৮৩ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথের কর্নকুন্তির কর্ন খ্যাত পার্থ ঘোষের মৃত্যু হয়। কিছুদিন আগেই ক্যানসার আক্রান্ত পার্থর গলায় অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এ ছাড়া তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এদিন ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
২০২১ সালের ২৬ আগস্ট পার্থ ঘোষের স্ত্রী প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষের জীবনাবসান হয়। পার্থ ঘোষ, গৌরী ঘোষের জুটি বাংলা কবিতার আবৃত্তি চর্চা ও শ্রুতিনাটকে স্বনামধন্য।
রেডিওতে উপস্থাপক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন বিখ্যাত এই বাচিক শিল্পী জুটি। শ্রুতিনাটক, আবৃত্তিতে শ্রোতাদের প্রিয় হয়ে ওঠেন পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ দম্পতি।
পার্থ ঘোষের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা দেবতার গ্রাস, বিদায়, শেষ বসন্ত শ্রোতাদের অকুণ্ঠ প্রশংসা লাভ করে।
২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পার্থ ঘোষকে বঙ্গভূষণ সম্মান প্রদান করে। পার্থ ঘোষের মৃত্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক শোক বার্তায় পার্থ ঘোষের পরিবার ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানিয়েছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পার্থ ঘোষের মরদেহ হাসপাতাল থেকে দমদমের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর নিমতলা ঘাট শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শুরুর প্রান্তে দোলাইরপাড় সড়কদ্বীপে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। মাঝে হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতার মুখে ভাস্কর্য স্থাপনের কাজে ছেদ পড়ে।
সে সময় ভাস্কর্যটি অন্য কোথাও স্থাপনের কথাও ভেবেছিল সরকার। কিন্তু এখন আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী দোলাইরপাড় সড়কদ্বীপে নির্ধারিত স্থানেই স্থাপন করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়েছে চীনে। এটি চীন থেকে অনেক আগেই আনা হয়েছে। সেটি রাখা হয়েছে সড়ক ভবনে।
প্রকল্পটির পরিচালক সবুজ উদ্দিন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাঝে কিছু সংকটের কারণে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে কিছুটা জটিলতা থাকলেও এখন আর তেমন কিছু নেই। আমরা দোলাইরপাড়ে নির্ধারিত স্থানেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করব। তবে এতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’
কতটা সময় লাগবে ও কেন সময় লাগছে- এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট আরেকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে জানান, দোলাইরপাড় মোড়ে আগের জায়গাতেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগে সেখানকার একটি মসজিদ স্থানান্তর করা হবে। মসজিদের জন্য নতুন জায়গা ইতোমধ্যেই দেখা হয়ে গেছে।
মসজিদ স্থানান্তরের কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, মসজিদটি সরকারি রাস্তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল, তাই এটির বৈধতা ছিল না। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের সময় মসজিদের বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলতে হয়।
সরেজমিন দোলাইরপাড় মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, টিন দিয়ে আগের মতোই ঘিরে রাখা হয়েছে ভাস্কর্যের জন্য নির্ধারিত স্থানটি। ভাস্কর্যের বেদি পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ। এর ওপরে শুধু ভাস্কর্য স্থাপন বাকি।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার থেকে নেমে সোজা এগোলে দোলাইরপাড় মোড়ে ভাস্কর্যের বেদিটি টিন দিয়ে ঘিরে রাখা। পূর্ব পাশে রাস্তা ঘেঁষে বাইতুশ শারফ জামে মসজিদ। মসজিদটি আগে রাস্তার ওপরই ছিল। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের সময় রাস্তা সম্প্রসারণের সময় এর বেশির ভাগ অংশই ভাঙা পড়ে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজি মো. আজাদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তা নির্মাণের সময় আমাদের এই মসজিদটি ভাঙা পড়েছিল। পরে হেফাজতের আন্দোলনের সময় এটি পুনর্নির্মাণের দাবি উঠেছিল। তখন এটি আবার ব্যবহারোপযোগী করে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু ছয়-সাত মাস আগে এমপি সাহেব আমাদের ডেকে বললেন, আমাদের মসজিদটা আরও বড় করে বানিয়ে দেবে সরকার। এ জন্য পাশেই একটা জায়গা দেখা হয়েছে। আমরাও এই বিষয়ে কোনো আপত্তি করিনি, কারণ যদি আরও বড় মসজিদ হয়, তাহলে বেশি মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তা বড় করার জন্য মসজিদ ভাঙা হয়েছিল। তাই এখন নতুন মসজিদ করে দেয়া হচ্ছে।’
যা ঘটেছিল ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনে
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকার প্রবেশমুখ রাজধানীর দোলাইরপাড় মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
২০২০ সালের নভেম্বরে দোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে দেশে নানা ঘটনা ঘটে। কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ধর্মভিত্তিক দলগুলো ভাস্কর্যকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে এটি প্রতিরোধে মাঠে নামে। এই দলগুলোর বক্তব্য ছিল আক্রমণাত্মক। প্রথমে মাঠে নামে চরমোনাইয়ের পিরের দল ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির ফয়জুল করীম। পরে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক হুমকি দেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বর পরিস্থিতি তৈরি করবেন। সর্বশেষে হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবেন।
এরই মধ্যে ৪ নভেম্বর প্রথম প্রহরে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটি ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। এরপর স্থানীয় একটি মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্র-শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুরুতে চুপ থাকলেও পরে সরকার সমর্থকরা মাঠে নামে। মৌলবাদী গোষ্ঠীকে প্রতিহতের ঘোষণা দেয়া হয়। রাজনৈতিক শক্তির পাশাপাশি প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সারা দেশে একযোগে সমাবেশ করে ভাস্কর্যবিরোধীদের সতর্ক করে দেন। জাতির পিতার সম্মান অক্ষুণ্ন রাখার শপথও নেয়া হয় সেখানে।
আরও পড়ুন:খ্যাতিমান ব্যক্তিরা সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও তাদের অবয়বে বানানো ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে রাজশাহী নগরীর উপশহর এলাকার সেলিব্রিটি গ্যালারিতে। ভাস্কর্যগুলো বানিয়েছেন মৃণাল হক। এ ভাস্করের কাজগুলোকে তুলে ধরা এবং বিশ্বের বিশিষ্ট মানুষদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানোর উদ্দেশ্যে এম আমিনুল হক লাইব্রেরি অ্যান্ড কালচারাল সেন্টারে এই আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের রাজসিক বিহার ভাস্কর্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ডেন জুবিলি টাওয়ারসহ অনেক ভাস্কর্যের শিল্পী মৃণাল হক। ২০২০ সালের ২২ আগস্ট তিনি মারা যান। তিনি দেশজুড়ে রেখে গেছেন বহু শিল্পকর্ম। এর অনেকগুলোই ছিল তার নিজের সংরক্ষণে।
এসব শিল্প যেন হারিয়ে না যায় সেই লক্ষ্যে তার বোন আভা হক রাজশাহীতে নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন শিল্পী মৃণাল হকের সেলিব্রিটি গ্যালারি। দুই তলা ভবনের দুটি তলা জুড়ে রয়েছে জনপ্রিয় সব ব্যক্তিত্বের ভাস্কর্য। আর নিচ তলায় গড়ে তোলা হচ্ছে আভা হকের স্বামীর নামে এম আমিনুল হক লাইব্রেরি। লাইব্রেরির কাজ এখনও চলমান। তবে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে উন্মুক্ত করা হয়েছে সেলিব্রিটি গ্যালারি।
উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলল বিশ্বের জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের ভাস্কর্য।
দ্বিতীয় তলায় উঠতেই মাথার ওপরে দেখা যাবে স্পাইডারম্যান। মনে হতে পারে সেটি মাথার ওপরে লাফিয়ে পড়বে। দ্বিতীয় তলার প্রথম ঘরটিতে ঢুকেই দেখা মিলবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্য।
আরেকটু সামনে এগোলে মিলবে ছোট্ট একটি ঘর। আলো আঁধারি এই ঘরের আবহ কিছুটা ভূতুড়ে। এখানকার ভাস্কর্যগুলোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতেই এই ঘরের আলো কিছুটা কম। ঘর জুড়ে নীল রং আর ঘরের ভেতরে আক্রমণের ভঙ্গিতে এলিয়েনের দল।
পাশের ঘরটিতে খ্যাতিমানদের ভিড়। এই ঘরে ঢুকতেই শুরুতে দেখা মেলে ফুটবল তারকা মেসির। তিনি বল পায়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তার পাশেই বলিউড কিং শাহরুখ খান। আছে মিস্টার বিন, চার্লি চ্যাপলিন, সাকিরা, মাইকেল জ্যাকসনসহ বেশ কিছু জনপ্রিয় মুখ। এর পরের ঘরে ঢুকতেই চোখে পড়বে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টেবিলে বসে লিখছেন। তার ডান পাশে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বাম পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই ঘরে আরও সব গুরুত্বপূর্ণ মানুষের দেখা মিলবে। ডোনাল ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদি, মহাত্মা গান্ধী, মাদার তেরেসা, চে গেভারা, প্রিন্সেস ডায়ানা, ক্ষুদিরামের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা যাবে এই ঘরে। মৃণাল হক চেষ্টা করেছেন এসব ব্যক্তিত্বকে জীবন্ত করে তুলতে। এ কারণে এখানকার বেশিরভাগ ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে মনে হতে পারে সত্যিই বুঝি গুণী ওই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আপনি ছবি তুলেছেন।
সেলিব্রিটি গ্যালারির তত্ত্বাবধায়ক কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুটি কাজ হবে: প্রথমত শিল্পীর শিল্পকর্মের সঙ্গে মানুষের পরিচয় হবে। এর মাধ্যমে শিল্পীর কর্ম বেঁচে থাকবে। আবার এসব শিল্পকর্ম দেখে দর্শনার্থীরা পৃথিবীর গুণী মানুষদের সম্পর্কে জানবেন। এখানে যেসব ব্যক্তিত্বের ভাস্কর্য আছে, তাদের পরিচয় ও কর্ম সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
‘নিচের লাইবেরির কাজ এখন শেষের পথে। আর এই সেলিব্রিটি গ্যালারিটি গত ঈদের পর উন্মুক্ত করা হয়েছে। এখানে প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। তবে শিশুদের জন্য এটি ফ্রি। এখনও সেভাবে প্রচার হয়নি, তবে যারা জানছেন, তারা অনেকেই আসছেন এখানে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের চিত্রশিল্পী অ্যান্ডি ওয়ারহলের আঁকা হলিউড বিখ্যাত অভিনেত্রী মেরিলিন মনরোর প্রতিকৃতি ১৯ কোটি ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর, স্থানীয় সময় সোমবার নিউ ইয়র্কে নিলামে মনরোর প্রতিকৃতিটি বিক্রি হয়।
বিংশ শতাব্দীর কোনো চিত্রকর্ম এখন পর্যন্ত এত দামে বিক্রি হয়নি। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো শিল্পীর এটিই হচ্ছে সর্বোচ্চ দামে হাঁকানো চিত্রকর্ম।
চিত্রকর্মটি পাবলো পিকাসোর বিশ শতকের বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘ওমেন অব আলজিয়ার্স’-এর আগেরকার সব রেকর্ডকে টপকে গেছে। ২০১৫ সালে ১৭ কোটি ৯৪ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল পিকাসোর শিল্পকর্মটি।
১৯৬২ সালে নিজের বাসায় অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ায় মৃত্যু হয় অভিনেত্রী ও মডেল মেরিলিন মনরোর।
মৃত্যুর পর মনরোর কয়েকটি প্রতিকৃতি আঁকেন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী ওয়ারহল। ১৯৬৪ সালে এই সিরিজের একটি শিল্পকর্ম ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’। উজ্জ্বল কমলা রং এবং চিত্তাকর্ষক অভিব্যক্তিসহ প্রতিকৃতিটি ওয়ারহলের সবচেয়ে আইকনিক এবং বিখ্যাত চিত্রগুলোর মধ্যে একটি হয়ে ওঠে। সেই সময় ওয়ারহলের শিল্পকর্মটি বেশ সাড়া তোলে।
তারকাদের চিত্রকর্মের জন্য বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ওয়ারহলের মৃত্যু হয় ১৯৮৭ সালে।
শিল্পকর্মটি সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান থমাস অ্যান্ড ডোরিস আম্মানের সংগ্রহশালায় ছিল। এটি নিউ ইয়র্কে আয়োজিত নিলামে বিক্রির জন্য তোলে যুক্তরাজ্যের নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি।
মাত্র চার মিনিটের নিলামে চিত্রকর্মটির দাম ওঠে ১৭ কোটি ডলার। এর সঙ্গে কর যুক্ত হয়ে মোট দাম দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৫ লাখ ডলার।
নিলামে সর্বোচ্চ দামে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চিত্রশিল্পীর চিত্রকর্ম বিক্রির রেকর্ড হয়েছিল ২০১৭ সালে। ১৯৮২ সালে জ্যঁ-মিশেল বাসকিয়াতের আঁকা একটি শিল্পকর্ম ১১ কোটি ৫ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।
ক্রিস্টির চিত্রকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স রটার বলেন, ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ যুক্তরাষ্ট্রের পপ চিত্রশিল্পের মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
১৯৫৩ সালে ‘নিয়াগারা’ চলচ্চিত্রের প্রচার-প্রচারণার জন্য মেরিলিন মনরোর একটি স্থিরচিত্রের ওপর ভিত্তি করে ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ আঁকা হয়েছিল।
চিত্রকর্মটির নামকরণ করা হয় একটি ঘটনার ভিত্তিতে। ঘটনাটি হলো, এক নারী পিস্তল নিয়ে ওয়ারহলের স্টুডিওতে ঢুকে মনরোর চারটি ছবিতে গুলি করেন। তবে গুলি থেকে বেঁচে যায় ‘শট সেজ ব্লু মেরিলিন’ চিত্রকর্মটি।
১৯৬২ সালের ৪ আগস্ট ৩৬ বছর বয়সে লস অ্যাঞ্জেলসে নিজের বাসায় অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ায় মৃত্যু হয় মেরিলিন মনরোর।
আরও পড়ুন:মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর কমে যাওয়ায় সারা বছর তেমন একটা বিক্রি হয় না। করোনার কারণে গত দুই বছর বড় পরিসরে পয়লা বৈশাখ পালন না হলেও এবার হচ্ছে।
সে কারণে পয়লা বৈশাখ ও ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে সিরাজগঞ্জের পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের।
সরেজমিন উল্লাপাড়া উপজেলার নেওয়ারগাছা নন্দীগাঁতী গ্রামের পালপাড়া ঘুরে দেখা যায়, দুর্গাপূজা ছাড়া সারা বছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও পয়লা বৈশাখ ও ঈদকে ঘিরে দম ফেলার ফুরসত থাকে না মৃৎশিল্পীদের।
দেখা গেছে, কেউ কেউ মাটি প্রস্তুত করছেন, কেউবা মাটির তৈরি হাঁড়িপাতিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিস বানাচ্ছেন। কেউ কেউ মাটির তৈরি জিনিসপত্রগুলো রোদে শুকানোর পর ভাটায় তা পোড়াচ্ছেন। মাটি তৈরি থেকে শুরু করে মাটির তৈরি জিনিসগুলো সরবরাহ করা পর্যন্ত সব প্রক্রিয়ায় নারী-পুরুষ সমান তালে কাজ করছেন।
একসময় নেওয়ারগাছা নন্দীগাঁতী গ্রামের পালপাড়ায় প্রায় ২০০ পরিবারের হাজারখানেক নারী-পুরুষ এ পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। মাটির জিনিসপত্র আগের মতো ব্যবহার না হওয়ায় অনেকে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। অনেকে ঐতিহ্যের কথা ভেবে এখনও ধরে রেখেছেন।
এই পালপাড়ায় ৩০ পরিবারের প্রায় দেড় শ নারী-পুরুষ এ পেশায় নিয়োজিত।
নেওয়ারগাছা নন্দীগাঁতী গ্রামের পালপাড়ার সত্তরোর্ধ্ব নারী মৃৎশিল্পী ফরিদাসী পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একসময় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। সে সময়ে চাহিদা বেশি থাকায় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বাইরে থেকে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হতো। এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর অনেক কমে গেছে। বাপ-দাদা ও স্বামীর পেশা হওয়ায় সন্তানদের নিয়ে এ পেশা এখনও ধরে রেখেছি।’
একই এলাকার সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, ‘মাটি থেকে শুরু করে জ্বালানির দাম যে হারে বেড়েছে সে তুলনায় জিনিসপত্রের দাম খুব একটা বাড়েনি। দুর্গাপূজার পরই পয়লা বৈশাখ ও ঈদে বিভিন্ন গ্রামীণ মেলায় মাটির তৈরি জিনিস বেশি বিক্রি হয়।
‘বাড়ির সব সদস্য শিশুদের খেলনা থেকে শুরু করে মাটি দিয়ে বিভিন্ন জিনিস তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রতিমা ছাড়া ১০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় শ টাকা পর্যন্ত মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে থাকি।’
লক্ষীরানী পাল বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের এখানে পাইকাররা মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনতে আসেন। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আমরাও বিভিন্ন মেলায় ও ফেরি করে বিক্রি করি। তবে আমাদের এই শিল্পের প্রতি সরকারের কোনো নজর নেই। পাই না কোনো সুযোগ-সুবিধা। রমজান হলেও আশা করছি এ বছর ভালো বিক্রি হবে।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে আল্পনায় রঙিন হচ্ছে সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক। এ ছাড়া দেয়ালে দেয়ালে বাল্যবিয়ে ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন একদল শিল্পী।
‘এসো শিল্পীর তুলিতে; স্বাধীনতার রঙ ছড়াই’ এই স্লোগানে শনিবার সকাল থেকে ‘তুলি শিল্পী’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে চলছে এই কার্যক্রম।
সংগঠনটির নিজস্ব অর্থায়ন ছাড়াও উপজেলা পরিষদ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে। গাইবান্ধা-সাদুল্লাপুর পাকা সড়কের আবু হোসেন সরকার স্মৃতি ফলক থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশে এই কার্যক্রম শেষ হবে ৫ এপ্রিল।
‘মাদককে না বলুন’, ‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করুণ’, ‘ধুমপান বিষপান’, যৌতুক দেয়া নেয়া-দুটোই অপরাধসহ জাতীয় স্লোগান জয় বাংলাকে প্রান্তিক মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব (১০ জন) তুলি শিল্পী একত্রিত হয়ে দেশের কিছু ভালো কাজের অংশ হিসেবে এটা করছি। জাতীয় স্লোগান জয় বাংলাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। তা ছাড়া আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বিভিন্ন স্লোগান ও শিল্প কর্মের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনা গড়ে তোলা।’
এই কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়ে মুদি ব্যবসায়ী আমীর আলী বলেন, ‘তুলি শিল্পীরা এক রকম বেকার। ডিজিটাল ব্যানার এসে তাদের কাজ কমেছে। তার পরেও নিজের টাকা শ্রম দিয়ে যে কাজটা করছে, খুব ভালো লাগছে। রাস্তাটাও দেখতে ভালো লাগছে।’
এ বিষয়ে ভাতগ্রাম গ্রামের মুরর্শিদুর রহমান বলেন, ‘এটা একটা মহৎ উদ্যোগ। যদিও বা তুলি শিল্পীদের আমরা কখনও মূল্যায়ন করতে পারি নাই। তাদের পাশে আমাদের থাকা উচিত।’
সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্যাহেল কবীর ফারুক বলেন, ‘আপনারা জানেন, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগানে রূপ দেয়া হয়েছে। এই স্লোগানকে সাদুল্লাপুরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়ার জন্য তারা কাজ করছে।
‘তা ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক বিষয়েও তারা কাজ করছে। এটা মহৎ ও ভালো উদ্যোগ। এ জন্য তাদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহরিয়া খান বিপ্লব বলেন, ‘‘জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠের সেই ৭ মার্চের ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলেই তিনি ‘জয় বাংলা’ বলেছিলেন।
‘‘এই জয় বাংলাই আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল মুক্তিযোযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সেই জয় বাংলার প্রচার যারা করছে তাদের সম্মান জানানো দরকার।’’
উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এই কাজটি চলমান রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু সাদুল্লাপুরে না গোটা জেলায় এই কার্যক্রম বেগবান করতে হবে। আরও বেশি বেশি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:তারিন জাহান না বলে শুধু ডাক নাম তারিন বললেই তাকে সবাই চিনে যান। অভিনেত্রী হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত। তবে তিনি গানও করতে পারেন, নৃত্যেও আছে দখল।
অভিনয়ে তো তাকে দেখাই যায়। তবে বিশেষ আয়োজনে তাকে গান গাইতে ও নৃত্য পরিবেশনাতেও দেখা গেছে।
আসেছে ২৬ মার্চ, স্বাধীনতা দিবস। বিশেষ এ দিনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। সেই বিশেষ অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন তারিন।
এ অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী সম্প্রতি তার নাচের ভঙ্গির কিছু ছবি পোস্ট করেছেন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। সেখানে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, বিটিভিতে ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানের জন্য তার এ পরিবেশনা।
তার নৃত্য পরিচালনা করেছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ এবং সহশিল্পী হিসেবে থাকছে সোহাগ ডান্স ট্রুপের সদস্যরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য