পার্কটির নাম শিশুমেলা। গত দুটি বছরের ঈদে শিশুও ছিল না, ছিল না মেলাও। প্রাণহীন ঈদ কাটিয়ে এবার সেখানে ভিড় উপচেপড়া।
শিশুরা আসছে, রাইডে চড়ছে, তারা হাসছে, খেলছে, ছোটাছুটিতে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে বড়রা।
শিশুমেলার নাম পরিবর্তন করে এখন ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক করা হয়েছে। তবে নাম পরিবর্তন করলেও এখনও এটিকে শিশুমেলা হিসেবেই সবাই চেনেন।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার বিধিনিষেধের খরা কাটিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এ পার্কটিতে প্রাণ ফেরায় পার্কের কর্মীরাও তৃপ্ত। শিশুদের নিয়ে দায়িত্ব পালনের যে আলাদা একটি আনন্দ আছে, সেটি অনেকটাই ভুলতে বসেছিলেন তারা।
বুধবার ঈদের পরদিন শিশুমেলায় গিয়ে দেখা যায়, কোনো শিশু তার বাবার ঘাড়ে চড়ে, কোনো শিশু আবার মায়ের হাত ধরে উচ্ছ্বসিত মনে পার্কে প্রবেশ করছে। ভিড়ের কারণে কখনও কখনও পার্কে ঢুকতেই বেগ পোহাতে হচ্ছিল।
আগের দিন বৃষ্টির কারণে তপ্ত গ্রীষ্মেও আবহাওয়া এখন অনেকটাই সহনীয়। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে, সূর্যের তেজও এত বেশি নয়। ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করাটা শিশুদের জন্য অতটা কষ্টকর হয়নি।
শিশুমেলা পার্কে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার পর এই আইলাম। ভালোই লাগতাছে। সবাই মিইলা আইছি৷ পোলাপানের আনন্দের লাইগা আইছি। গতকাল বাসায় আত্মীয়স্বজন আইছিল। তাই আইজ ঘুরতে আইছি।’
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নেহা ইসলাম ইয়ান নিউজবাংলাকে বলে, ‘ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে। এখানে রাইডগুলো অনেক ভালো। আবার আসব।’
ইয়ানের বাবা মো. সাকিব পেশায় ব্যবসায়ী। এসেছেন গাজীপুর থেকে। দুই বছর করোনাবন্দি ঈদ শেষে এবারই মুক্ত পরিবেশে আনন্দ করছে সন্তান। মেয়ের আনন্দ আরেকটু বাড়াতে এখানে নিয়ে আসা।
সাকিব বলেন, ‘মেয়ের তৃপ্তি দেখার মতো সুখের তুলনা একজন বাবার জন্য আর কী হতে পারে? দুইটা ঈদ তাকে নিয়ে ঘুরতে পারিনি। এখন খুব ভালো লাগছে।’
৩০ বছর ধরে শ্যামলী শিশুমেলা পার্কের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেখভাল করছেন আব্দুল মোমেন৷ জানান, ঈদের দিনের তুলনায় আজ উপস্থিতি বেশি।
করোনায় পার্কের অবস্থা শোচনীয় হয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনায় দুই বছর বন্ধ আছিল। এহন আমরা ঈদ পাইলাম। ভালোই লাগতাছে। প্রাণ ফিইরা আইল।’
এক টিকিট বিক্রেতা জানান, তারা টিকিট দিয়ে কুলাতে পারছেন না। তবে ঠিক কী পরিমাণ বিক্রি হচ্ছে, সেই হিসাব করা হয়নি।
কোন রাইডের কত মূল্য
শ্যামলীর শিশুমেলা পার্কে প্রবেশমূল্য ১০০ টাকা। এ ছাড়া ২০টির ওপর বিভিন্ন ধরনের রাইড রয়েছে।
রাইডগুলোর মধ্যে কিডিরাইটস গেইস, মেরি গো রাউন্ড, চুক চুক ট্রেন, হ্যানি সুইং, সোয়ান অ্যাডভেঞ্চার, প্যারাট্রুপার, মিনি ট্রেইন, টোয়িসট, ব্যাটারি কার, পেন্ডুলাম, ভিডিও গেমস, হেলিকপ্টার কর্নার, বাউন্সি ক্যাসল, ভাইকিং বোট, ড্রাগন রোলার কোস্টার, স্পেইস শাটল, ওয়ান্ডার হুইল, থ্রিডি গ্যালারি, থ্রিডি অ্যাডভেঞ্চার ও বাম্পার কার ও স্পিড এয়ারক্রাফট বেশি জনপ্রিয়।
এর মধ্যে বাম্পার কার ও স্পিড এয়ারক্রাফট টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা ও বাকি রাইডগুলোর টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা।
সব ক্যাটাগরিতে অন অ্যারাইভাল ভিসা চালুর নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. শাহরিয়াজের সই করা এক পরিপত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সুরক্ষা সেবা বিভাগের ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর জারি করা পরিপত্র বাতিল করে ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জারি করা পরিপত্র মোতাবেক আগমনী ভিসা পুনরায় চালু করা হলো।
অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করতে বলা হয়েছে পরিপত্রে।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ অন অ্যরাইভাল ভিসা বন্ধ করা হয়। এর দেড় বছর পর ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে শুধু বাংলাদেশি বংশদ্ভূত বিদেশি নাগরিক, কূটনৈতিক এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অন অ্যারাইভাল ভিসা চালু করা হয়।
নতুন করে পরিপত্র জারির ফলে অনুমোদিত দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীরাও এই সুবিধা পাবেন।
আরও পড়ুন:সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি এবার অধস্তন আদালতের বিচারকদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণের আবেদন না করতে নির্দেশনা এসেছে।
ভ্রমণে বিদেশি মুদ্রার খরচজনিত কারণে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ঠেকাতে বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিচারপ্রার্থী জনগণের দ্রুত বিচারিকসেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব এড়াতে অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন প্রধান বিচারপতি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অবস্থায় অতীব প্রয়োজন ব্যতীত অধস্তন আদালতের বিচারকদের বিদেশ ভ্রমণের আবেদন না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হওয়ায় দেশে রিজার্ভে টান পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিলাসদ্রব্যের আমদানি কমাতে চাইছে সরকার। আমদানিনির্ভর কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা। ইউক্রেনের পক্ষ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা। দুই পরাশক্তির এই লড়াইয়ে বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানির দাম নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গত ১২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের আদেশ জারি করা হয়।
চার দিন পর রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বিদেশ সফরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা ও দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে শঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই পরিস্থিতিতে সরকার জোর দিচ্ছে কৃচ্ছ্রসাধনে। বিলাসপণ্য আমদানিতেও নিরুৎসাহিত করতে হচ্ছে। পাশাপাশি আমদানিনির্ভর প্রকল্পও বেছে বেছে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশের অর্থনীতির গতি সচল রাখতে যেসব প্রকল্প অতি প্রয়োজনীয়, সেগুলোই কেবল চালিয়ে যাওয়া হবে। যেসব প্রকল্প এখনই না করলেও চলে, সেগুলো বাস্তবায়নে ধীরে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের আনাগোনা লেগে থাকে এই পার্কে। কেউ সন্তান নিয়ে আসেন, কেউ বড় পরিবার নিয়ে, আবার কেউ আসেন বন্ধুদের সঙ্গে। ছবি: নিউজবাংলা
আরও পড়ুন:
জীবন ও জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল ওই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের একটি বড় অংশ। তাদের অনেকেই বনের গভীরে গিয়ে মাছ শিকার ও মধু সংগ্রহ করেন।
পর্যটক ও গবেষকরা চাইলে এখন থেকে বনজীবী এসব মানুষের সঙ্গে বনের গভীরে যাওয়ার অনুমতি পাবেন। মূলত বিস্তৃত এই বনে প্রকৃতিকভাবে যে মধুশিল্প গড়ে ওঠেছে তা সচক্ষে দেখার সুযোগ পাবেন তারা। করতে পারবেন গবেষণাও।
সুন্দরবন প্রেমীদের জন্য পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্চে চালু করা হয়েছে এই হানি ট্যুরিজম। বুধবার বেলা ১২টায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্চ কার্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এমএ হাসান বলেন, ‘এই প্রথমবারের মত পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে হানি ট্যুরিজম চালু করা হয়েছে। বনবিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে মৌমাছি ও মধু বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহীরা এখন থেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া মৌয়ালরা কিভাবে মধু সংগ্রহ করেন, তা দেখার জন্যও বনের গভীরে যেতে পারবেন পর্যটকরা।’
তিনি জানান, উদ্বোধনের দিনেই ২০ জনের একটি গবেষক দল হানি ট্যুরিজমের আওতায় দুই দিনের জন্য অনুমতি নিয়ে সুন্দরবন প্রবেশ করেছেন। এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক ও মধু ব্যবসায়ীও রয়েছেন।
এমএ হাসান বলেন, ‘এবার মধু সংগ্রহ মৌসুম প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই আগামী মৌসুম থেকেই হানি ট্যুরিজমে ব্যাপক সাড়া পাওয়া আশা করছি আমরা।’
হানি ট্যুরিজম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এমএ হাসানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জ কর্মকর্তা আকমুল হোসেন মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন চট্রগ্রামের মধু গবেষক সৈয়দ মুহাম্মদ মঈনুল আনোয়ারসহ আরও অনেকেই।
আরও পড়ুন:দেশের প্রথম বাজেট এয়ারলাইনস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে এয়ার এশিয়া কনসাল্টিংকে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে উড়ানের অপেক্ষায় থাকা বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাই ঢাকা।
এয়ার এশিয়া কনসাল্টিং মালয়েশিয়াভিত্তিক বিমানসংস্থা এয়ার এশিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
সাধারণত এয়ার এশিয়া কনসাল্টিং এয়ারলাইনসগুলোকে কৌশল নির্ধারণ, বহর পরিকল্পনা, নেটওয়ার্ক কৌশল ঠিক করতে সহযোগিতা করে।
এয়ার এশিয়া কনসাল্টিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুবাশিনি সিলভাদাস বলেন, ‘কম খরচের এয়ারলাইনস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে ফ্লাই ঢাকাকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করতে সহযোগিতা করবে এয়ার এশিয়া। এয়ার এশিয়া এবং ফ্লাই ঢাকা দুই প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চায়।
‘একইসঙ্গে ফ্লাই ঢাকা এয়ার এশিয়ার নেটওয়ার্ক এবং হাব কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের এই অঞ্চলের অন্যান্য গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে পারবে।’
ফ্লাই ঢাকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম ফজলে আকবর বলেন, ‘প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সেরা কম খরচের এয়ারলাইনসের মর্যাদায় থাকা এয়ার এশিয়াকে সহযোগী হিসেবে পেয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। এয়ার এশিয়ার পরামর্শ আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে বলে আমরা আশা করি এবং দেশের সেরা কম খরচের এয়ারলাইনস হিসেবে নিজেদের পরিচয় তৈরি করার আমাদের যে লক্ষ্য রয়েছে তা পূরণ হবে।
‘ফ্লাই ঢাকা গত বছরের অক্টোবরে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) পেয়েছে এবং এই মুহূর্তে এয়ার অপারেটরস সার্টিফিকেট (এওসি) পাওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে ফ্লাই ঢাকা অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে পরিচালনার জন্য উড়োজাহাজ সংগ্রহের ক্ষেত্রেও অনেকটা এগিয়েছে। এয়ার এশিয়ার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে সম্ভবত আমরাই দেশে প্রথম এয়ারবাস এ থ্রিটুজিরো উড়োজাহাজ সফলভাবে অপারেট করতে যাচ্ছি।’
দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়া দুটো বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এগুলো হলো- ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস ও নভো এয়ার। গত বছর ফ্লাই ঢাকা ও এয়ার অ্যাসট্রা নামে আরও দুটো বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন চায়। দুটো এয়ারলাইনসকেই এরই মধ্যে অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
দুই এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলে দেশে বেসরকারি এয়ারলাইনসের সংখ্যা দাঁড়াবে চারে। এর ফলে এভিয়েশন খাতে অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্লাই ঢাকার মূল মালিকানায় রয়েছেন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিনিয়োগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
আর এয়ার অ্যাসট্রার মালিকানায় রয়েছেন এক জাপান প্রবাসী ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ফ্লাই ঢাকা কম খরচের এয়ারলাইন হিসেবে নিজেদের কৌশল গোছাচ্ছে, এটি বাস্তবায়ন হলে তারাই হবে দেশের প্রথম বাজেট এয়ারলাইনস।
বেবিচকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো এয়ারলাইনস ফ্লাইট শুরুর পর প্রথম এক বছর আবশ্যিকভাবে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক বছর পর আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ালের অনুমতি চাইতে পারে এয়ারলাইনস।
গত ২৫ বছরে দেশে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলেও এখন টিকে আছে মাত্র দুটি। এ সময়ের মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে অ্যারো বেঙ্গল, এয়ার পারাবত, রয়্যাল বেঙ্গল, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইনস, বেস্ট এয়ার ও ইউনাইটেড এয়ার।
সর্বশেষ করোনার মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে আরেকটি এয়ারলাইনস রিজেন্ট এয়ার। কয়েক দফা চালুর কথা বললেও আর ফ্লাইটে ফেরেনি এয়ারলাইনসটি।
বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে জিএমজি, রিজেন্ট ও ইউনাইটেড আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও চালাত।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিন্ন স্বাদের পাহাড়ি খাবার খাওয়াতে ছয় দিনব্যাপী ‘পাহাড়ি খাদ্য উৎসব’-এর আয়োজন করেছে টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা হোটেল। এতে সাহায্য করছে ইকো ট্রাভেলার্স ও রাঙামাটি রাজবন বিহার।
হোটেলটির ‘কাসবাহ’ রেস্তোরাঁয় সোমবার রাতে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেলের উপাধি রাজা দেবাশীষ রায়।
তিনি জানান, এই আয়োজন চলবে আগামী ২১ মে পর্যন্ত। উৎসব চলাকালীন ছয় দিন প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে কাসবাহ রেস্তোরাঁয় দুই হাজার ৪৯৯ টাকায় এ আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সুস্বাদু খাবারে আগ্রহীরা।
দেবাশীষ রায় বলেন, ‘সবাই দূর পাহাড়ের মানুষ। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনপদ তাদের আবাসস্থল। সেখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ আর সংস্কৃতি দেশের সমতলভূমি থেকে ভিন্ন। ভিন্নতর তাদের খাবার-দাবারও। পাহাড়ের এসব ভিন্ন খাবারের স্বাদ এখন পাবেন সমুদ্রপাড়ের হোটেলেও।’
উৎসবে শতাধিক খাবারের পসরা বসানো হয়। তার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলার জনপ্রিয় খাবারই ছিল অর্ধ-শতাধিক।
এতে আয়োজন হয় বেম্বু চিকেন, পাচন (চিংড়ির সঙ্গে সবজি), বাচ্চুরি (বাঁশের তরকারি), হাঙ্গারা সুগরে (কুমড়া দিয়ে কাঁকড়া), মংশো মরিচ (মুরগি এবং মরিচ ভর্তা), হুরো হুরবো (মুরগি সালাত), মাচ হ্যাবাং (শৈল মাছের ঝোল), বিনি চালের পায়েস, ঝুম লাড্ডু ও কলা পিঠাসহ ৫০ ধরনের খাবারের।
বিখ্যাত রাঁধুনি মিলরয় নানায়াক্কারা ও রাঙ্গামাটির বিনীতা চাকমা অনুষ্ঠানটিতে খাবার প্রদর্শন করেন।
এ ছাড়াও ৬টি স্টলে তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তৈরি কাপড়, আচারসহ বিভিন্ন প্রসাধনীও তুলে ধরা হয়।
রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্টের এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে দেবাশীষ রায় বলেন, ‘একটি খাবার একটি সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। এটা আমাদের সংবিধানেও রয়েছে। কিন্তু এর মাধ্যমে পাহাড়ের প্রথাগত সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে চাই। এ আয়োজনের মাধ্যমে দেশের ও দেশের বাইরের লোকজনও পাহাড়ের খাবার সম্পর্কে জানতে পারবেন।’
রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাভিদ আহসান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এ আয়োজনের লক্ষ্য হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতিতে তুলে ধরা। এখন থেকে এই পাহাড়ি খাদ্যের স্বাদ পাবেন আমাদের হোটেলে আসা অতিথিরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলার খাবার সম্পর্কে দেশের অনেক মানুষের অজানা। তাদের জানানোর পাশাপাশি বিদেশিদের কাছেও আমাদের এই দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আজিম শাল, সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাভিদ আহসান চৌধুরীসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:আকি রহমান জন্মেছেন বাংলাদেশে। আর বেড়ে উঠেছেন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশেরই নাগরিক তিনি। তাই এভারেস্টের চূড়ায় গিয়েও উড়ালেন দুই দেশের পতাকা।
বাংলাদেশ আর যুক্তরাজ্যের পতাকা মিলিয়ে বিশেষ এই পতাকাটি ছেলের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন আকি রহমানের মা রহিমা বেগম।
গত শুক্রবার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন বাঙালি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ। আকি রহমান নামে পরিচিত হলেও তার আসল নাম আখলাকুর রহমান।
রোববার সন্ধ্যায় বেস ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন আকি। নেপালে কয়েকদিন অবস্থানের পর ফিরে যাবেন যুক্তরাজ্যে। আকির মা রহিমা বেগমও যুক্তরাজ্যর বাসিন্দা। তবে বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
সোমবার রহিমা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আকির বয়স যখন দেড় বছর তখন তাকে আমি যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাই। এরপর থেকেই ও সেখানে বসবাস করছে। কিন্তু এতো বছরেও সে নিজের জন্মভূমিকে ভোলেনি। তাই এভারেস্টের চূড়ায় উঠেও সে যুক্তরাজ্যের পাশপাশি বাংলাদেশের পতাকাও উড়িয়েছে। দুই দেশের পতাকাকে যুক্ত করে বিশেষ এই পতাকাটি আমিই তাকে তৈরি করে দিয়েছি।’
ছেলের এভারেস্ট জয় এবং সুস্থভাবে ফিরে আসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রহিমা বেগম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই তার পাহাড় চড়ার শখ। বিশ্বের অনেকগুলো পাহাড়ে সে চড়েছে। আমরাও এ কাজে তাকে উৎসাহ দিয়েছি।’
আকি রহমানের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়ায়।
সেখানে থাকা তার চাচাতো ভাই শামীনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় আকি বেস ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন। এরপর আমাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। দুতিন দিন পর তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে যাবেন।’
২০২০ সালের অক্টোবরে ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এলব্রুস পর্বত জয় করেন আখলাকুর। তিনিই প্রথম বাঙালি হিসেবে এলব্রুস পর্বত জয়ের রেকর্ড করেন।
ওই বছরের ২২ জুলাই আফ্রিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ তানজানিয়ায় অবস্থিত কিলিমাঞ্জারো পর্বতও প্রথমবারের মতো জয় করেন তিনি। এই পর্বতটির উচ্চতা ৫ হাজার ৮৯৫ মিটার। এটি জয়ের সাত দিন পর দ্বিতীয়বারের মতো ২৯ জুলাই ইউরোপের মন্ট ব্ল্যাঙ্ক পর্বত চূড়ায় ওঠেন।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত হাজি ইছকন্দর আলীর ছেলে আখলাকুর রহমান প্রায় ৩৬ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তখন তার বয়স ছিল দেড় বছর। লন্ডনের ওল্ডহাম শহরে তিনি বেড়ে ওঠেন। সেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।
এর আগে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পা পড়েছে আরও কয়েকজন বাঙালির। এর মধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ এ পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন মুসা ইব্রাহীম।
আর বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে ২০১২ সালে এভারেস্টে আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই বছর সপ্তাহের ব্যবধানে সেখানে পা রাখেন আরেক বাংলাদেশি নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন।
তারও আগে ২০১১ সালে দ্বিতীয় এভারেস্ট বিজয়ী হিসেবে নাম লেখান এম এ মুহিত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য