২৩ বছর ধরে নিঃসঙ্গ আব্দুল আলিম (ছদ্মনাম)। জীবন-সংসার তার বৃদ্ধাশ্রমে বন্দি। দুই সন্তান আছে, কিন্তু তাদের কাছে জায়গা নেই। ঈদ বা কোনো উৎসব এলেই একাকিত্বটা আরও তীব্র হয়। তখন যেন অতীত কাতরতায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় চারপাশ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রবীণ নিবাসে আলিমের মতোই থাকেন ৩০ জন।
তারা সারা জীবন সংসার, সন্তানদের জন্য করে গেছেন; কিন্তু শেষ জীবনে হয়েছেন সেই সংসারেরই বোঝা। একটু স্বস্তি, শান্তি খুঁজতে বৃদ্ধাশ্রমই কিছু মানুষের ভরসা।
এ যেন আরেক পরিবার। আপনজন কেউ নেই তার পরও সবাই আপন।
‘বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান’-এর পরিচালনায় এই প্রবীণ নিবাস। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি পরিচালিত হয়।
এই নিবাসে নারী-পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা থাকার ব্যবস্থা। এখানে মোট ৫০ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে। বর্তমানে ৩০ জন সেখানে আছেন। সবার বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। তাদের দেখভাল করার জন্য রয়েছে প্রবীণ সংঘের পক্ষ থেকে ১০-১২ জন।
পরিবার-পরিজন থেকে দূরে থাকলেও এটি এখন তাদের আরেক পরিবার।
এই প্রবীণ নিবাসে ঈদের দিনটাও তাদের কাছে বিশেষ কোনো দিন মনে হয় না। বরং উৎসব এলেই তাদের বুকটা হাহাকার করে। সন্তানের স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান তারা। আশা করেন সন্তান বা স্বজনরা এই দিনে অন্তত দেখতে আসবেন।
কারও কারও প্রতীক্ষার অবসান ঘটে। কেউ না কেউ দেখা করতে আসেন। আবার কেউ কেউ একাই কাটিয়ে দেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও কেউ আসে না দেখতে। আবার কারও বছরের পর বছর দেখতে আসা তো দূরের কথা, স্বজনদের সঙ্গে ফোনালাপ পর্যন্ত হয় না।
সমাজে প্রতিষ্ঠিত সন্তানের মানহানি হয় সে জন্য গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি অনেক প্রবীণ সদস্য।
পরিবার ছাড়া কেমন কাটে ঈদের দিন জানতে চাইলে এই নিবাসের সুপারভাইজার নুরুন নাহার মিনা বলেন, ‘প্রায় সবারই আত্মীয়স্বজন ও সন্তান থাকলেও তারা আজ একা। কিন্তু এখানে সবাই প্রায় এক বয়সী হওয়ায় সময় ভালোই কেটে যায়। ঈদের দিন সকাল থেকে ফোনে অনেকে খোঁজ নেন। দুপুরে অনেকে দেখা করতে আসেন।’
কেউ ইচ্ছে করে এখানে থাকেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক-দুজন আছেন যারা প্রবীণ না হয়েও এই নিবাসে এসেছেন। স্বামী চাকরি করতেন, অবসরের আগেই মারা গেছেন। তার পর থেকে একা। সন্তানরা অন্য দেশে থাকে। ফোনে বা ভিডিও কলে কথা বলেন তারা।’
নিবাসে একজনকে এক রুমে থাকা-খাওয়া বাবদ দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। আর ডাবল বেডের রুমে আট হাজার টাকা। এই খরচ প্রবীণ সদস্য বা তার পরিবারের সদস্যরা বহন করেন।
রুটিন অনুযায়ী নিবাসের পক্ষ থেকে প্রবীণদের খাবার দেয়া হয়। দিবস বা উৎসবে থাকে বিশেষ খাবারের আয়োজন। কেউ ইচ্ছে করলে রান্না করেও খাওয়ার সুযোগ আছে।
এ ছাড়া রয়েছে নামাজের জন্য আলাদা কক্ষ। পড়ার জন্য লাইব্রেরি। বসার কক্ষসহ টিভি দেখার ব্যবস্থা। জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স।
নিবাসের কেয়ারটেকার, নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদ বা বছরের যেকোনো দিনে প্রবীণরা চাইলে বাইরে যেতে পারেন। আবার কেউ কেউ রান্না করে খান। বাজার করার জন্যও বের হতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রার বুকে কিছু তথ্য লিখতে হয়।
নিবাসে ঈদের দিন সকালে থাকে মিষ্টান্নসহ বিভিন্ন খাবার। যাদের বাইরে গিয়ে নামাজ পড়ার সক্ষমতা আছে, তারা জামাতের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন।
কেউ অসুস্থ হলে কী করেন জানতে চাইলে কেয়ারটেকার আব্দুস সাত্তার জানান, অসুস্থ হলে প্রাথমিকভাবে বিনা মূল্যে প্রবীণ হাসপাতালে সেবা দেয়া হয়। যদি বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে বাইরের হাসপাতালে নেয়া হয়। তখন পরিবারের সদস্যদের ফোনে জানানো হয়।
আরও পড়ুন:উহ্! তোমার চেহারার সঙ্গে কী অদ্ভুত মিল লোকটার, ঠিক যেন মায়ের পেটের আপন ভাই বা বোন। জীবনে এমন কথা অনেকেই অনেকবার শুনে থাকেন। তবে বেশির ভাগ সময়েই এসব শুধু কথার কথা। একজনের চেহারার সঙ্গে আরেকজনের পুরোপুরি মিল খুঁজে পাওয়া সহজ কোনো ঘটনা নয়।
তবে তাই বলে এমন ঘটনা একেবারেই যে ঘটে না, তা কিন্তু বলা যাবে না। নিজের মতো দেখতে কাউকে খুঁজে পেলে আপনি হয়তো ভিরমি খাবেন, কিন্তু মেনে নিতে শিখুন ওই মিল থাকা ব্যক্তিটি আসলে আপনার ‘ডপলগ্যাঙার’।
সোজা কথায় ডপলগ্যাঙার হলো দুজন একই রকম দেখতে মানুষ, যাদের মধ্যে জন্মসূত্রে কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি খুব বিরল হওয়ায় অনেকে এটি অতিপ্রাকৃত ঘটনাও মনে করেন।
২৩ বছর ধরে বিশ্বের নানা প্রান্তে এই ডপলগ্যাঙার জুটি খুঁজে বেড়াচ্ছেন কানাডিয়ান ফটোগ্রাফার ফ্র্যাঙ্কোস ব্রুনেল। তার প্রধান শখ বা লক্ষ্য হলো, যত বেশি সম্ভব ডপলগ্যাঙারদের ছবি তোলা।
আই অ্যাম নট অ্যা লুক অ্যালাইক নামের একটি প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রুনেল। এর আওতায় ডপলগ্যাঙারদের পরিচয়, সম্পর্ক এবং অনুভূতিগুলো চমৎকারভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে।
ব্রুনেলের সাদাকালো ছবিগুলো সবই বলতে গেলে খুব সাধারণ। সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, সাদাকালো নেগেটিভ ফিল্মে তিনি তুলে এনেছেন গোটা দুনিয়া চষে খুঁজে পাওয়া ডপলগ্যাঙারদের ছবি। ছবির জুটিগুলো আশ্চর্যরকমভাবে দেখতে এক।
দুই দশকের বেশি সময়ের চেষ্টায় ব্রুনেল বিশ্বের ৩০টি শহরে আড়াই শ ডপলগ্যাঙারকে পেয়েছেন।
এবার এসব ছবি দিয়ে একটি বই প্রকাশের কাজ করছেন ব্রুনেল। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে তার।
ফ্র্যাঙ্কোস ব্রুনেলের বাড়ি কানাডার মন্ট্রিলে। আই অ্যাম নট অ্যা লুক অ্যালাইক প্রকল্পের পাশাপাশি দ্য সেভেন এসেনশিয়াল টুলস ফর দ্য ক্রিয়েটিভ ফটোগ্রাফি শিরোনামে তার একটি বইও আছে।
আরও পড়ুন:লেবুর খোসা অনেক কাজের কাজি। এটাকে ফেলে না দিয়ে অন্য কাজেও ব্যবহার করতে পারেন। টেস্ট অব হোম ডটকমের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে লেবুর খোসা আর কী কী কাজে ব্যবহার করা যায়। চলুন দেখে নেই।
-
একটা কাপে লেবুর খোসা নিয়ে তাতে ভিনিগার দিন। এভাবে রাখুন তুই সপ্তাহ। এবার এই মিশ্রণটা দিয়ে পরিষ্কার করতে পারবেন ঘরোয়া জিনিস। যেমন- হাঁড়ি পাতিল, আয়না, ঘরের মেঝে ইত্যাদি।
-
লেবুর খোসা ও দারুচিনি একটি পাত্রে নিয়ে তাতে পানি ঢালুন। রেখে দিন ঘরের কোণে। দারুণ সুবাস ছড়াবে সে। ঘর থাকবে ফ্রেশ।
-
রান্না ঘরের সিঙ্ক থেকে দুর্গন্ধ আসছে? চিন্তার কিছু নেই। লেবুর খোসা দিয়ে ঘষে ঘষে সিঙ্কটা পরিষ্কার করুন। গন্ধ চলে যাবে।
-
কফি বা চায়ের কাপে দাগ বসে গেছে? তাহলে লেবুর খোসা, বরফ এবং মোটা লবণ দিয়ে মগের মধ্যে ঘষুন। দাগ চলে যাবে।
-
পোষা বিড়াল অনেক সময় ঘরের টবগুলো নষ্ট করে। গাছ থেকে বিড়ালকে দূরে রাখতে গাছের গোড়ায় লেবুর খোসা রাখুন। লেবুর খোসা বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে ওরা লেবুর গন্ধ সহ্য করতে পারে না।
-
পেঁয়াজ রসুন কাটার পর হাতে গন্ধ থেকে যায়। এটা দূর করতে লেবুর খোসার সাহায্য নিতে পারেন। এক টুকরা লেবুর খোসা ঘষে নিন হাতে। গন্ধ চলে যাবে।
-
লেবুর খোসা কুচি করে পানীয় অথবা তরকারিতে মিশিয়ে নিতে পারেন। এর ফলে খাবারে আলাদা ধরনের স্বাদ পাবেন।
-
ওভেনের ভেতরে থাকা গন্ধ দূর করতে পারে লেবুর খোসা। একটি বাটিতে পানি ও লেবুর খোসা নিয়ে ওভেনে গরম করুন।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিন্ন স্বাদের পাহাড়ি খাবার খাওয়াতে ছয় দিনব্যাপী ‘পাহাড়ি খাদ্য উৎসব’-এর আয়োজন করেছে টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা হোটেল। এতে সাহায্য করছে ইকো ট্রাভেলার্স ও রাঙামাটি রাজবন বিহার।
হোটেলটির ‘কাসবাহ’ রেস্তোরাঁয় সোমবার রাতে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন চাকমা সার্কেলের উপাধি রাজা দেবাশীষ রায়।
তিনি জানান, এই আয়োজন চলবে আগামী ২১ মে পর্যন্ত। উৎসব চলাকালীন ছয় দিন প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে কাসবাহ রেস্তোরাঁয় দুই হাজার ৪৯৯ টাকায় এ আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সুস্বাদু খাবারে আগ্রহীরা।
দেবাশীষ রায় বলেন, ‘সবাই দূর পাহাড়ের মানুষ। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনপদ তাদের আবাসস্থল। সেখানকার প্রকৃতি, পরিবেশ আর সংস্কৃতি দেশের সমতলভূমি থেকে ভিন্ন। ভিন্নতর তাদের খাবার-দাবারও। পাহাড়ের এসব ভিন্ন খাবারের স্বাদ এখন পাবেন সমুদ্রপাড়ের হোটেলেও।’
উৎসবে শতাধিক খাবারের পসরা বসানো হয়। তার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলার জনপ্রিয় খাবারই ছিল অর্ধ-শতাধিক।
এতে আয়োজন হয় বেম্বু চিকেন, পাচন (চিংড়ির সঙ্গে সবজি), বাচ্চুরি (বাঁশের তরকারি), হাঙ্গারা সুগরে (কুমড়া দিয়ে কাঁকড়া), মংশো মরিচ (মুরগি এবং মরিচ ভর্তা), হুরো হুরবো (মুরগি সালাত), মাচ হ্যাবাং (শৈল মাছের ঝোল), বিনি চালের পায়েস, ঝুম লাড্ডু ও কলা পিঠাসহ ৫০ ধরনের খাবারের।
বিখ্যাত রাঁধুনি মিলরয় নানায়াক্কারা ও রাঙ্গামাটির বিনীতা চাকমা অনুষ্ঠানটিতে খাবার প্রদর্শন করেন।
এ ছাড়াও ৬টি স্টলে তিন পার্বত্য জেলার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তৈরি কাপড়, আচারসহ বিভিন্ন প্রসাধনীও তুলে ধরা হয়।
রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্টের এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে দেবাশীষ রায় বলেন, ‘একটি খাবার একটি সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। এটা আমাদের সংবিধানেও রয়েছে। কিন্তু এর মাধ্যমে পাহাড়ের প্রথাগত সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে চাই। এ আয়োজনের মাধ্যমে দেশের ও দেশের বাইরের লোকজনও পাহাড়ের খাবার সম্পর্কে জানতে পারবেন।’
রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাভিদ আহসান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের এ আয়োজনের লক্ষ্য হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতিতে তুলে ধরা। এখন থেকে এই পাহাড়ি খাদ্যের স্বাদ পাবেন আমাদের হোটেলে আসা অতিথিরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন পার্বত্য জেলার খাবার সম্পর্কে দেশের অনেক মানুষের অজানা। তাদের জানানোর পাশাপাশি বিদেশিদের কাছেও আমাদের এই দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক আজিম শাল, সহকারী মহাব্যবস্থাপক নাভিদ আহসান চৌধুরীসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:কৃষি খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনা ও সম্প্রসারণে দিনব্যাপী ‘জুসি ফেস্ট’ আয়োজন করতে যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তা ফোরাম।
‘মধু মাসে রসনা বিলাসে, চল সবে মাতি উৎসবে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামী শনিবার ঢাকার মিরপুরের পল্লবী সেতারা কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব। যেখানে অংশ নেবেন দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তারা।
নারী উদ্যোক্তা ফোরামের সভাপতি রাফিয়া আক্তার বলেন, ‘দেশের নারী উদ্যোক্তাদের বাজার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও অফলাইনে ট্রেনিংসহ সচেতনতামূলক নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি আমরা। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটির সহযোগিতা এটিকে আরও গতিশীল করেছে।’
জুসি ফেস্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তা পরিচিতি, উদ্যোক্তা অ্যাওয়ার্ড প্রদান, পণ্য প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার পাশাপাশি আরও থাকছে কৃষিভিত্তিক সেশন ছাড়াও নারী উদ্যোক্তাদের সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক সেশনও।’
এটি সবার জন্য উন্মুক্ত বলেও জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশে ফেসবুকভিত্তিক নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক প্রচার ও প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তা ফোরাম। অনলাইন ছাড়াও অফলাইন উদ্যোক্তাদের ডিজিটালাইজেশনেও কাজ করছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন:চলতি বছর যারা হজে যাবেন তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সৌদি সরকারের নীতি অনুযায়ী ২০২২ সালের হজযাত্রীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে। পাসপোর্টে হজযাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ) সঠিকভাবে উল্লেখ রয়েছে কিনা তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যারা হজে যাবেন তাদের জন্য বেশ কয়েকটি নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনাধীন বিদ্যমান নিবন্ধিত হজযাত্রীদের নিবন্ধন পয়েন্ট বা কেন্দ্রের মাধ্যমে (পাসপোর্ট চেঞ্জ অপশন ব্যবহার করে) পাসপোর্ট পরিবর্তনের আবেদন করে তথ্য হালনাগাদ করতে হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদেরও স্ব স্ব এজেন্সির মাধ্যমে (পাসপোর্ট চেঞ্জ অপশন ব্যবহার করে) ন্যূনতম ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি মেয়াদসংবলিত পাসপোর্টের তথ্য হালনাগাদের আবেদন করতে হবে। সময়-স্বল্পতার কারণে এজেন্সিভিত্তিক হজযাত্রীর সংখ্যা নির্ধারণের সুবিধার্থে পাসপোর্টের মেয়াদ জটিলতার কারণে হজযাত্রীর প্যাকেজ স্থানান্তর বা নিবন্ধন স্থানান্তর কার্যক্রম ব্যাহত হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর ভিসাযুক্ত পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম নম্বর, মক্কা বা মদিনার আবাসনের ঠিকানাসংবলিত প্রিন্টেড স্টিকার সংযুক্ত করতে হবে। প্রিন্টেড স্টিকার সংযুক্ত করা সম্ভব না হলে কমপক্ষে হাতে লেখা তথ্য সংযুক্ত করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীদের জেদ্দা বা মদিনা বিমানবন্দর থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট এজেন্সির হজ কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি বাতিল করে দিতে পারে।
কোভিডের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫৭ হাজার মুসল্লিকে হজে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে সৌদি সরকার। আগামী ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরুর কথা রয়েছে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপানায় হজে যাবেন প্রায় চার হাজার মুসল্লি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন প্রায় ৫৩ হাজার। এবার যারা হজ করতে যাবেন তাদের পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় খরচ করতে হবে ১ লাখ টাকারও বেশি। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথম প্যাকেজে খরচ হবে মোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। এটি ২০২০ সালের তুলনায় ১ লাখ ২ হাজার ৩৪০ টাকা বেশি। আর দ্বিতীয় প্যাকেজে খরচ হবে ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। এটি ২০২০ সালের তুলনায় ১ লাখ ২ হাজার ১৫০ টাকা বেশি।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে খরচ হবে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা। হজ এজেন্সিস অফ বাংলাদেশের (হাব) ঘোষণা করা এই প্যাকেজের বাইরে কোরবানির জন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা সৌদি আরবে গিয়ে সেখানকার সরকারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।
এ বছর ঢাকা থেকে যেসব হজযাত্রী সৌদি আরবে যাবেন তাদের সৌদি প্রান্তের শতভাগ ইমিগ্রেশন ঢাকাতেই সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন:আকি রহমান জন্মেছেন বাংলাদেশে। আর বেড়ে উঠেছেন যুক্তরাজ্যে। দুই দেশেরই নাগরিক তিনি। তাই এভারেস্টের চূড়ায় গিয়েও উড়ালেন দুই দেশের পতাকা।
বাংলাদেশ আর যুক্তরাজ্যের পতাকা মিলিয়ে বিশেষ এই পতাকাটি ছেলের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন আকি রহমানের মা রহিমা বেগম।
গত শুক্রবার পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন বাঙালি বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ। আকি রহমান নামে পরিচিত হলেও তার আসল নাম আখলাকুর রহমান।
রোববার সন্ধ্যায় বেস ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন আকি। নেপালে কয়েকদিন অবস্থানের পর ফিরে যাবেন যুক্তরাজ্যে। আকির মা রহিমা বেগমও যুক্তরাজ্যর বাসিন্দা। তবে বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
সোমবার রহিমা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আকির বয়স যখন দেড় বছর তখন তাকে আমি যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাই। এরপর থেকেই ও সেখানে বসবাস করছে। কিন্তু এতো বছরেও সে নিজের জন্মভূমিকে ভোলেনি। তাই এভারেস্টের চূড়ায় উঠেও সে যুক্তরাজ্যের পাশপাশি বাংলাদেশের পতাকাও উড়িয়েছে। দুই দেশের পতাকাকে যুক্ত করে বিশেষ এই পতাকাটি আমিই তাকে তৈরি করে দিয়েছি।’
ছেলের এভারেস্ট জয় এবং সুস্থভাবে ফিরে আসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রহিমা বেগম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই তার পাহাড় চড়ার শখ। বিশ্বের অনেকগুলো পাহাড়ে সে চড়েছে। আমরাও এ কাজে তাকে উৎসাহ দিয়েছি।’
আকি রহমানের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়ায়।
সেখানে থাকা তার চাচাতো ভাই শামীনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় আকি বেস ক্যাম্পে ফিরে এসেছেন। এরপর আমাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। দুতিন দিন পর তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরে যাবেন।’
২০২০ সালের অক্টোবরে ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এলব্রুস পর্বত জয় করেন আখলাকুর। তিনিই প্রথম বাঙালি হিসেবে এলব্রুস পর্বত জয়ের রেকর্ড করেন।
ওই বছরের ২২ জুলাই আফ্রিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ তানজানিয়ায় অবস্থিত কিলিমাঞ্জারো পর্বতও প্রথমবারের মতো জয় করেন তিনি। এই পর্বতটির উচ্চতা ৫ হাজার ৮৯৫ মিটার। এটি জয়ের সাত দিন পর দ্বিতীয়বারের মতো ২৯ জুলাই ইউরোপের মন্ট ব্ল্যাঙ্ক পর্বত চূড়ায় ওঠেন।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী মৃত হাজি ইছকন্দর আলীর ছেলে আখলাকুর রহমান প্রায় ৩৬ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তখন তার বয়স ছিল দেড় বছর। লন্ডনের ওল্ডহাম শহরে তিনি বেড়ে ওঠেন। সেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।
এর আগে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পা পড়েছে আরও কয়েকজন বাঙালির। এর মধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১০ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ এ পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন মুসা ইব্রাহীম।
আর বাংলাদেশের প্রথম নারী হিসেবে ২০১২ সালে এভারেস্টে আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই বছর সপ্তাহের ব্যবধানে সেখানে পা রাখেন আরেক বাংলাদেশি নারী ওয়াসফিয়া নাজরীন।
তারও আগে ২০১১ সালে দ্বিতীয় এভারেস্ট বিজয়ী হিসেবে নাম লেখান এম এ মুহিত।
আরও পড়ুন:রাঙ্গামাটিতে নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা।
বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে সকালে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
এরপর জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি থেকে রাজবন বিহার পর্যন্ত গৌতম বুদ্ধের ধাতু প্রদক্ষিণ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়। শোভাযাত্রা শেষে রাজবন বিহারে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়।
প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বিশ্বে শান্তি ও মঙ্গল প্রার্থনায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন করেন। ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কারদান, হাজার বাতিদান, টাকা দান, ফানুসবাতি উৎসর্গ ও দান।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে নানা এলাকা থেকে রাজবন বিহারে আসেন হাজারও পুণ্যার্থী। বুদ্ধের মাথায় পানি ঢেলে তারা সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের পায়ে শ্রদ্ধা জানান।
জল্পনা চাকমা নামের এক পুণ্যার্থী বলেন, ‘বুদ্ধের তিন স্মৃতিবিজড়িত এই দিন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে পরিবার ও নিজের মঙ্গল প্রার্থনার উদ্দেশ্যে বিহারে এসেছি।’
গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপরিনির্বাণ উপলক্ষে প্রতি বছর বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি উদযাপন করেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। রোববার সারা দেশে বুদ্ধপূর্ণিমার উৎসব হলেও রাজবন বিহারে হচ্ছে এক দিন পর।
রাজবন বিহারের বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েকজন ভিক্ষু জানান, রোববার দুপুর ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত থাকে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথি। রোববার বুদ্ধপূর্ণিমা উদযাপন করলে তা বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে পড়ে না। তাই সোমবার সব আয়োজন করা হয়েছে।
এই আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নিখিল কুমার চাকমা ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান ও পঞ্চশীল পাঠ করেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খীসা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য