দুই বছরের বিধিনিষেধ শেষে ঈদ ফিরেছে উৎসবের রূপে। করোনাকাল কাটিয়ে জমজমাট হয়েছে দেশের সব ঈদগাহ। ঈদের নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা কোলাকুলি করেছেন, হাত মিলিয়েছেন নির্দ্বিধায়।
দেশের ঐতিহ্যবাহী সব ঈদগাহে এবার ছিল উপচে পড়া ভিড়। অনেক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে তাতেও কমেনি উচ্ছ্বাস। ভিজেই অনেকে নামাজ আদায় করেছেন।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাতের সময় ছিল সকাল ১০টায়। তাতে যোগ দিতে ভোর থেকে জড়ো হতে থাকেন মুসল্লিরা। সকাল ৯টায় শুরু হয় বজ্রপাত ও বৃষ্টি। এর মধ্যেই শুরু হয় নামাজ। মুসল্লিদের কেউ ভিজে, কেউ আবার মাথায় পলিথিন ধরে নামাজ আদায় করেন।
শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের নির্ধারিত ইমাম মাওলানা ফরিদ অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি। তার বিকল্প ইমাম মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ ইমামতি করেছেন। নামাজ শেষে দেশ ও মুসল্লিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
আয়োজকসূত্রে জানা গেছে, সেখানে এবার নামাজ আদায় করেছেন ৩ লাখের বেশি মুসল্লি।
সেখানে নামাজ পড়তে জয়পুরহাট থেকে এসেছেন সোলাইমান হোসেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই মাঠে নামাজ আদায় করার ইচ্ছে বহুদিন আগে থেকেই। করোনা শুরু হওয়ার আগে একবার এই মাঠে নামাজে সুযোগ হয়েছিল। এবার একটু বেশি আগ্রহ নিয়ে দুই দিন আগেই চলে এসেছি।
‘এই মাঠ আর পুরো শহর ঘুরে দেখেছি। আজ নামাজ শুরু হওয়ার আগেই মুষলধারে বৃষ্টি আর বজ্রপাত শুরু হয়েছে। কিন্তু মাঠ ত্যাগ করার ইচ্ছে হয়নি। বৃষ্টিতে ভিজেই নামাজ আদায় করেছি।’
জয়পুরহাট থেকে দিনাজপুরের গোর এ শহীদে না গিয়ে কিশোরগঞ্জে আসার কারণ কী? তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি থেকে দিনাজপুর ১০০ কিলোমিটার আর কিশোরগঞ্জ ৩০০ কিলোমিটারের বেশি। তারপরেও এখানে আসার মূল কারণ হচ্ছে এই মাঠে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঠের ঐতিহ্য আছে।’
মুন্সীগঞ্জের সারোয়ার জাহান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৫ বছর ধরে এই মাঠে নামাজ করে আসছি। শুরুটা হয়েছিল বাবার হাত ধরে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে এই মাঠে নামাজ হয়নি, তারপরও আমি এসেছিলাম শুধু মাঠটি দেখার জন্য। দুবছর পর এসে কাদামাটিতে বসে নামাজ আদায় করে আনন্দ পেয়েছি।’
শোলাকিয়ার সাম্প্রতিক প্রতিদ্বন্দ্বী দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে এবার ৬ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েছেন। সকাল ৯টার এই নামাজে ইমামতি করেন মওলানা শামসুল হক কাসেমী। দিনাজপুরের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে সেখানে নামাজ পড়তে গিয়েছেন অনেকে- বলছেন আয়োজকরা।
এশিয়া উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ দাবি করা এই ময়দানে নামাজে আসেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে এ মাঠে ৬ লাখের বেশি মুসল্লি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নামাজ আদায় করেছেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
বিশ্ব ঐতিহ্য বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত হয়েছে সকাল সাড়ে ৭টায়। তাতে যোগ দেন মসজিদের সভাপতি ও বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলামসহ পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের সদস্যসহ সাধারণ মানুষ।
সেখানে ইমামতি করেছেন বাগেরহাট কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। এরপর আরও দুটি জামাত হয় ষাটগম্বুজ মসজিদে। প্রতিটিতেই মুসল্লিদের ঢল ছিল। প্রতিটিতেই মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা ও করোনাসহ সব মহামারি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বিপুল উৎসাহে ময়মনসিংহে ঈদের প্রধান জামাত হয়েছে সকাল ৮টায়, নগরীর কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে। তাতে যোগ দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকসহ অনেকে।
জামাতে ইমামতি করেন মুফতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ায় জেলা ঈদগাহ মাঠে এবার প্যান্ডেল টানিয়ে নামাজ হয়েছে।
পৌর শহরের কাজীপাড়া এলাকার ইকবাল মিয়া বলেন, ‘করোনার কারণে দুই বছর ধরে ঈদের নামাজ পড়তে পারিনি এখানে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে এই ঈদুল ফিতরের নামাজ এত মুসল্লি নিয়ে একসঙ্গে আদায় করতে পেরে শান্তি পেলাম।’
সুহিলপুর এলাকা থেকে সেখানে নামাজ আদায়ে আসেন ৭০ বছরের আব্দুল কাদির। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার জীবদ্দশায় কোনো সময় এখানে প্যান্ডেল দেখি নাই। আজ প্যান্ডেলের নিচে নামাজ পড়ছি। খুব ভালো লাগছে। যে প্যান্ডেলের কাজটা করিয়েছেন, খোদা তার মঙ্গল করুক।’
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘মুসল্লিদের নামাজ পড়ার সুবিধার্থে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে এবং আগামীতেও হবে। এই কাজটি একার পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের এমপি সাহেব, মেয়র মহোদয়সহ সকলেরই সহযোগিতায় প্যান্ডেল করা হয়েছে।’
সব প্রস্তুতি শেষেও বৃষ্টির কারণে রাজশাহীতে ঈদগাহে ঈদের নামাজ হয়নি। প্রধান ঈদ জামাতসহ সবকটিই হয়েছে মসজিদে। নগরীর পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও ঈদ জামাত হয়েছে মসজিদে মসজিদে।
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম ঈদগাহে নামাজের জন্য সামিয়ানাও টাঙানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেখানে অংশ নেবেন- এমন কথাও ছিল।
তবে বৃষ্টির কারণে তা ভেস্তে যায়। ভোর ৫টার থেকে শুরু হয় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। শামিয়ানার প্যান্ডেল ভেঙে যায়, পানি জমে মাঠে। এ কারণে নামাজ বাতিল হয় সেখানে। প্রধান জামাত হয় হযরত শাহ মখদুম দরগাহ মসজিদে।
মহানগরীর কাদিরগঞ্জে বায়তুল আমান আহলে হাদিস জামে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।
বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ ঈদগাহে নামাজ হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁয়।
এ ছাড়া নাটোর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, মেহেরপুর, ফরিদপুরসহ সব জেলাতেই বিপুল মুসল্লিদের অংশগ্রহণে ঈদের জামাত ফিরে পেয়েছে চিরচেনা রূপ।
আরও পড়ুন:৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য