আফগানিস্তানের সঙ্গে মিল রেখে রোববার ঈদ উদযাপন করেছে চাঁদপুর ও পটুয়াখালীর কিছু মুসল্লি। আর সৌদি আরবকে অনুসরণ করে সোমবার ঈদ উদযাপন করেছে বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার মানুষ।
দেশের বিভিন্ন দরগাহ শরিফের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিবছর রোজার ঈদ উদযাপন করে থাকেন। এ নিয়ে বিতর্কও আছে। এক পক্ষ বলছে, চাঁদ একটি জায়গায় দেখা গেলেই চলে; আরেক পক্ষ বলছে, নিজ নিজ ভূখণ্ডে চাঁদ দেখতে হবে- এটাই ধর্মের বিধান।
সোমবার যারা ঈদ পালন করেছেন তারা চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাগীরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী। পৃথিবীর কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে তার সঙ্গে মিল রেখে তারা রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাসহ যাবতীয় ধর্মীয় আচার পালন করেন।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীর শতাধিক গ্রামে সোমবার ঈদ হয়েছে।
চন্দনাইশ এলাহাবাদ জাহাঁগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের প্রচলন করেন।
লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফকে অনুসরণ করে বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলেই ঈদ পালন করে থাকি।
‘সেই হিসেবে আজ আমাদের গ্রামে ঈদ হচ্ছে। তাছাড়া আমরা রমজানও একদিন আগে শুরু করেছিলাম। শুধু আমরা না, আশেপাশের আরও কয়েকটি উপজেলায় আজ ঈদ হচ্ছে।’
মমতাজিয়া দরবারের শাহজাদা মাওলানা মতি মিয়া মনছুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হানাফি মাজহাবের অনুসারী হিসেবে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলেই আমরা ঈদ উদযাপন করে থাকি। আমাদের দরবারের অনুসারী ৬০ গ্রামের মানুষ আজকে চট্টগ্রামে ঈদ পালন করছে।
‘চট্টগ্রামের বাইরেও দরবারের অনুসারীরা আছেন, তারাও ঈদ উদযাপন করছেন। আমাদের রোজাও শুরু হয়েছে একদিন আগে। দুইশ বছর ধরে এটা চলে আসছে।’
তিনি জানান, সোমবার সকাল ৯টায় মমতাজিয়া দরবার শরিফ প্রাঙ্গণে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজে ইমামতি করেছেন দরবারের পীর মাওলানা শাহ্ছুফি সৈয়দ মোহাম্মদ আলী শাহ।
বরিশাল
বরিশাল মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার ঈদ উদযাপন করেছে সোমবার। জেলার প্রায় অর্ধশত মসজিদে সকাল ৯টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হরিনাফুলিয়ার চৌধুরীবাড়ি শাহসুফী মমতাজিয়া জামে মসজিদের সভাপতি মমিন উদ্দিন কালু বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডে আগাম ঈদ উদযাপন করছে প্রায় ১ হাজার পরিবার।’
২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠী হাজী বাড়ীর জাহাগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আমীর হোসেন জানান, এই ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাগরদী, তাজকাঠীসহ আশপাশের প্রায় ৫০০ পরিবারে ঈদ আজ (সোমবার)। সকাল ৯টায় ঈদের নামাজ হয় জাহাগিরিয়া শাহসুফী মমতাজিয়া জামে মসজিদে।
বরিশাল নগরীসহ জেলার ৫০টি মসজিদে চন্দনাইশ দরবারের অনুসারীরা ঈদের নামাজ পড়িয়েছেন।
বাবুগঞ্জের খানপুরা, কেদারপুর, মাধবপাশাসহ ৫-৬টি গ্রামের হাজারের বেশি পরিবারে সোমবার ঈদ হয়েছে। জেলার মুলাদী, হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন, পতাং, লাহারহাট গ্রামেও এদিন ঈদ উদযাপন করেছেন জাহাগিরি সুফী দরবারের প্রায় ২ হাজার অনুসারী।
শেরপুর
জেলার ৭ গ্রামে সোমবার উদযাপন হয়েছে ঈদুল ফিতর।
শেরপুর সদর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ চরখারচর, বামনেরচর, গাজীরখামার গিদ্দাপাড়া, নকলা উপজেলার চরকৈয়া এবং ঝিনাইগাতি উপজেলার বনগাঁও চতল গ্রামে সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে ঈদের নামাজ হয়।
প্রত্যেকটি জামাতে দুই থেকে তিনশ মুসল্লি অংশ নেন। নারীদেরও কিছু জামাতে দেখা গেছে।
জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী পশ্চিমপাড়া ও গোবিন্দনগর ছয়আনি পাড়ার লোকজন অবশ্য আফগানিস্তানের সঙ্গে মিল রেখে রোববার ঈদ উদযাপন করেন।
লালমনিরহাট
কালীগঞ্জে উপজেলার তিন ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক মানুষ সোমবার সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সোমবার সকালে সেখানে ঈদের জামাত হয়।
মুন্সীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘কোরআন থেকে জেনেশুনে এই ঈদ আমরা পালন করে আসছি। এখানে কোনো ভুল নেই। আমাদের মতো দেশের সকল মানুষের ঈদ পালন করা উচিত। তাহলে ঈদের আনন্দ আরও বেড়ে যাবে।’
কালীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম রসূল জানান, সৌদির সঙ্গে মিল রেখে কাকিনা-তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবিদে ১৬০ জন, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বোতলায় ৬০ জন ও পানি খাওয়ার ঘাট এলাকায় প্রায় ১২০ জনসহ প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ সোমবার ঈদ করেছে।
ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা মোড়ের গোলাম হযরতের মিল চত্ত্বরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সোমবার হয়েছে ঈদের জামাত।
ঝিনাইদহ সদর, হরিণাকুন্ডু ও চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলা থেকে প্রায় শতাধিক মুসল্লি তাতে অংশ নিয়েছেন।
ইমাম মাওলানা রেজাউল ইসলাম জানান, সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মুসল্লিরা একস্থানে সমবেত হয়ে ঈদ জামাতের নামাজ আদায় করেছেন।
আলমডাঙ্গা থেকে নামাজ পড়তে আসা রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘সহি হাদিসের আলোকে বিগত ১৪ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে হরিণাকুন্ডুতে ঈদ জামাত হয়েছে।’
ঈদ জামাত কমিটির সভাপতি বজলুর রহমান বলেন, ‘ওআইসিসহ সকল মুসলিম উম্মাহ আজকে ঈদের নামাজ আদায় করছেন। সে কারণে আমরা ঈদের নামাজ আদায় করছি। আমরা রাসুলের সুন্নাহ অনুসরণ করে চলি। রাসুল যেভাবে চলতে বলেছেন, আমরা সেভাবে চলি।
‘কোন দেশে কখন ঈদ হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। রাসুল (সা:) বলেছেন তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ, চাঁদ দেখে রোজা ভাঙো। কোন দেশে কখন দেখতে হবে এমন কোনো নিয়ম নাই। পৃথিবীর যে কোনো সময় যেখানেই চাঁদ দেখা যাবে তখন থেকে রোজা রাখা এবং রোজা ভাঙার নিয়ম রয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুরে ১১টি গ্রামে সোমবার হয়েছে ঈদ। রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, হোটাটিয়া, শরশোই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপা ও সদর উপজেলার বশিকপুরসহ ১১টি গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি ঈদ উদযাপন করেছেন।
রামগঞ্জের খানকায়ে মাদানিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় ও নোয়াগাঁও বাজারের দক্ষিণ-পূর্ব নোয়াগাঁও ঈদগাহ ময়দানসহ বিভিন্ন স্থানে সোমবার সকাল ৮টায় ছোট-বড় ঈদের জামাত হয়েছে।
দিনাজপুর
এই জেলার ৫ উপজেলায় আগাম ঈদ উদযাপন করেছেন হাজারো মুসল্লি।
দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড়স্থ পার্টি সেন্টারে সোমবার সকাল ৮টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়ে। তাতে ৩ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন। ইমামতি করেন চিরিরবন্দর উপজেলার নাজিরা বাজার মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মাওলানা মোখলেসুর রহমান।
সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন কমিটির সভাপতি মোকবুল হোসেন বলেন, ‘এবার জেলার ১৩ থানায় প্রায় ৪৪টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি জামাতে ২ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন।’
একই সঙ্গে চিরিরবন্দর উপজলার রাবার ড্যাম এলাকা, কাহারোল উপজেলা জয়নন্দ গ্রাম, ১৩ মাইল এলাকা, বিরামপুর উপজেলার বিনাইল ইউনিয়নের আয়রা বাজার জামে মসজিদ, জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর জামে মসজিদ এবং বিরল উপজেলার বালান্দোর গ্রামে আগাম ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ভাদড়া, বাউকোলা, ভাড়–খালী, তলুইগাছা গ্রামসহ জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ঈদ হয়েছে সোমবার।
সদরের বাউকোলা পূর্বপাড়া মসজিদে ঈদের জামাত হয় সকাল ৮টায়। নারীরাও সেখানে নামাজ আদায় করেছেন। ইমামতি করেছেন মাওলানা মহব্বত আলী।
নামাজ শেষে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সবখানেই একই দিনে ঈদ উদযাপিত হওয়া উচিত। শাওয়াল মাসের চাঁদ রোববার সন্ধ্যায় দেখা গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিশ্বায়নের এ যুগে মুহূর্তের মধ্যে সব তথ্য বিশ্বে প্রকাশ পাচ্ছে। তাই সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আমরা আজকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি।’
ঈদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সাতক্ষীরায় ঈদ পালন করতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয় না। ২০১৫ সালে আমরা একটু নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছিলাম। সেই সময়ে সদর থানার ওসি ইনামুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছিলেন। প্রশাসন ও সাধারণ মানুষসহ কারও কাছ থেকে আমরা অসহযোগিতা পাই না।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের মোমিন টৌলা ও চর বাগান মাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করেছেন সোমবার।
সকাল ৮টায় মোমিন টোল গ্রামে ঈদের নামাজে ৫০-৬০ জনের মতো অংশ নেন। এতে ইমামতি করেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। সকাল ৯টায় চর বাগান পাড়া গ্রামে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৩০-৪০ জন। এ জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা কাউসার হোসেন।
দেবীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান জানান, সব মিলিয়ে ১০০ পরিবারে সোমবার ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
ফরিদপুর
বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গার ১৩ গ্রামে সোমবার ঈদ হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০ টায় ৬টি গ্রামে ঈদের জামাত হয়েছে।
আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বোয়ালমারীর কাটাগড় গ্রামের মাহিদুল হক সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পুর্বপূরুষ থেকে আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা মির্জাখিল পীরের তরিকাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার হযরত ইয়াছিন আলী (রহ.) পীরের অনুসারী। আমরা যারা মির্জাখিল পীরের অনুসারী তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে থাকি।’
‘সব মিলিয়ে হাজার তিনেক মানুষ আছেন যারা আমরা চট্রগ্রামের অনুসারী। নতুন প্রজন্মের অনেকে এ নিয়ম মানতে চায় না। আগে প্রায় বিশ হাজার মানুষ ছিল।’
সোমবার ঈদ হয়েছে নোয়াখালি, বাগেরহাট, টাঙ্গাইল ও শরিয়তপুরের কয়েক গ্রামেও।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য